চলারপথে রিপোর্ট :
নির্বাচনে সীমাহীন অনিয়ম ও আইন-শৃংখলা বাহিনীর সহযোগীতায় ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে ২০ কেন্দ্রে পুনরায় ভোট গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী এবং বর্তমান চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট রাশেদুল কাওসার ভূইয়া জীবন (আনারস প্রতীক) এবং নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে পরাজিত প্রার্থী ও বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান (তালা প্রতীক) মোঃ মনির হোসেন।
আজ ২২ মে বুধবার দুপুরে অ্যাডভোকেট রাশেদুল কাওসার ভূইয়া জীবনের বাসভবনের সামনে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অ্যাডভোকেট রাশেদুল কাওছার ভূইয়া জীবন অভিযোগ করে গত ২১ মে মঙ্গলবার কসবায় প্রহসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে উপজেলার ৮৩টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে মান্দারপুর ভোট কেন্দ্র, শাহপুর ভোট কেন্দ্রসহ ২০টি ভোট কেন্দ্র থেকে তার এজেন্টদের ( আনারস প্রতীক) বের করে দিয়ে প্রতিপক্ষ ও বিজয়ী প্রার্থী ছাইদুর রহমান স্বপনের (কাপ পিরিচ প্রতীক) সমর্থকরা আইন-শৃংখলাবাহিনীর সদস্যদের সহযোগীতায় ব্যালেট পেপারে সীল মেরেছে।
তিনি বলেন, আমি ও মনির (ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী) বার বার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবিহিত করলেও তারা বিষয়টি আমলে নেয়নি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনের দিন আইন-শৃংখলা বাহিনীর এলোপাথারি মারধোরে তার ৫ শতাধিক কর্মী সমর্থক আহত হয়েছেন। তিনি বলেন, ২০টি ভোট কেন্দ্রের সামনে আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের কর্মী সমর্থকদেরকে মারধোর করে সরিয়ে দিয়ে প্রতিপক্ষের প্রার্থীর কর্মী সমর্থকরা কেন্দ্রে প্রবেশ করে জোরপূর্বক ব্যালেট পেপারে সীল মারে। এসব ঘটনার স্থিরচিত্র ও ভিডিও তার কাছে আছে দাবি করে তিনি প্রহসনের এই ভোটের ফলাফল বাতিল করে ২০টি কেন্দ্রে পুনরায় ভোট গ্রহনের দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে অ্যাডভোকেট রাশেদুল কাওসার ভূইয়া জীবন ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ মনির হোসেন বলেন, উপজেলার বায়েক এলাকার তাদের একজন কর্মীকে প্রতিপক্ষের লোকজন মারধর করে তুলে নিয়ে গেলেও তার কোনো সন্ধান এখনো তারা পাননি। তারা বলেন, প্রতিপক্ষের কর্মী-সমর্থকদের হামলা-মামলার ভয়ে তাদের সমর্থকরা এখন আতঙ্কে আছেন।
সংবাদ সম্মেলনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী (তালা প্রতীক) মোঃ মনির হোসেন, কসবা পৌরসভার সাবেক মেয়র এমরান উদ্দিন জুয়েল, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক আফজাল হোসেন রিমন, যুগ্ম আহবায়ক কাজী মানিক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-দপ্তর সম্পাদক আবু তাহের উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আইন,বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হকের ফুফাতো ভাই, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও উপজেলার কুটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ছাইদুর রহমান স্বপন (কাপ পিরিচ প্রতীক) ৮৫ হাজার ৯৩০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট রাশেদুল কাওসার ভূইয়া জীবন (আনারস প্রতীক) পেয়েছেন ৩৯ হাজার ৯৫৭ ভোট।
অ্যাডভোকেট রাশেদুল কাওসার ভূইয়া জীবন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হকের সাবেক সহকারী একান্ত সচিব ছিলেন।
অপর দিকে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মোঃ শফিকুল ইসলাম (চশমা প্রতীক) ৭৬৫৫৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ মনির হোসেন (তালা প্রতীক) পেয়েছেন ৪৯১৯১ ভোট।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবায় বিজিবির ৬০ ব্যাটালিয়নের উদ্যোগে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মধ্যে ধানের চারা বিতরণ করা হয়েছে। আজ ১৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার বায়েক ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এই ধানের চারা বিতরণ করা হয়।
প্রধান অতিথি হিসেবে ৬০ ব্যাটালিয়নের (সুলতানপুর ব্যাটালিয়ান) অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল এ.এম. জাবের বিন জব্বার, পিএসসি এই ধানের চারা বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানে কৃষকদের মধ্যে ১৭ বিঘা (৫৬১ শতক) জমি চাষাবাদের জন্য আমন ধানের চারা বিতরণ করা হয়।
ধানের চারা বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বায়েক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ বিল্লাল হোসেন, সাংবাদিক খ. ম. হারুনুর রশীদ ঢালী, বিজিবির ৬০ ব্যাটালিয়নের সুবেদার সেলিম সরকার প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মা-ছেলের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল ১৫ জুলাই সোমবার সন্ধ্যার দিকে পৌর শহরের খারপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, খারপাড়া এলাকার সুমন মিয়ার স্ত্রী কুলসুম বেগম (৪১) ও তার ছেলে আরিফ মিয়া (২০)। আহত হয়েছেন মেয়ে সানজিদা আক্তার (১৫)।
পরিবারের সদস্যরা জানান, বাড়িতে নতুন ঘর বানিয়েছেন সুমন মিয়া। নতুন ঘরে বিদ্যুতের সংযোগ প্রদান করা হয়েছে। সুমনের ছেলে আরিফ ইলেক্ট্রিশিয়ান হওয়ায় ঘরে বিদ্যুতের কাজ নিজেই করছিলেন। কাজ করার সময় হঠাৎ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি। এ সময় মা কুলসুম বেগম তাকে বাঁচাতে গেলে তিনিও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। দেখতে পেয়ে আরিফের বোন সানজিদা তাদেরকে উদ্ধার করতে যায়। এ সময় সেও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ছিটকে পড়ে। পরিবারের লোকজনের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন দৌড়ে এসে তিনজনকেই উদ্ধার করে কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মা ও ছেলেকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত সানজিদাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থাও আশংকাজনক।
এ বিষয়ে কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। বিষয়টি খুবই হৃদয় বিদারক। আইনগত বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
চলারপথে রিপোর্ট :
অপহরনের দুইদিন পর টেম্পু বেপারী (২৬) নামে এক যুবককে উদ্ধার ও তিন অপহরণকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গতকাল শনিবার রাতে গ্রেফতার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় অপহরণকারীদের কাছ থেকে মুক্তিপন বাবদ নেয়া নগদ ১ লাখ টাকাও উদ্ধার করা হয়।
আজ ২০ আগস্ট রবিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করে সদর থানা পুলিশ।
উদ্ধারকৃত টেস্পু বেপারী জামালপুর জেলার ইসলামপুর উপজেলার পলবান্ধা বেপারীপাড়ার মোঃ আবদুস সালাম বেপারীর ছেলে। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার কাউতলী গ্রামে ভাড়া বাসায় বসবাস করেন ও তিনি ট্রেনসহ বিভিন্ন এলাকায় হকারি করেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন কসবা উপজেলার বাদৈর গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে মোঃ ফারুক মিয়া (৪৫), একই উপজেলার কুইয়াপানিয়া গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে জাহের মিয়া ওরফে বোচন (৫৫) ও খিদিরপুর গ্রামের হান্নান মিয়ার ছেলে মাহবুবুর রহমান (২৬)।
পুলিশ জানায়, গত ১৭ আগষ্ট বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টার সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার কাউতলী ব্রীজের উপর থেকে টেম্পু বেপারীকে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। পরে অপহরণকারীরা টেম্পু বেপারীর পরিবারের সদস্যদের কাছে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপন দাবি করেন। মুক্তিপনের টাকা না দিলে তাকে হত্যার হুমকি দেয় অপহরণকারীরা। অপহরণকারীদের কথামতো টেম্পু মিয়ার পরিবারের সদস্যরা বিকাশের মাধ্যমে ১ লাখ টাকা মুক্তিপন পাঠায় ও বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করে।
পরে পুলিশ গোপন সংবাদ ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় শনিবার গভীর রাতে কসবা উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় অভিযান চালিয়ে টেম্পু মিয়াকে উদ্ধার ও তিন অপহরণকারীকে গ্রেফতার করে। এ সময় টেম্পু মিয়ার পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে নেয়া মুক্তিপনের ১ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় কসবা উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপহৃত যুবককে উদ্ধার করা হয়। এ সময় মুক্তিপন নেয়া নগদ এক লাখ টাকাসহ তিন অপহরণকারীকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত তিন অপহরণকারী কসবার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে কসবাসহ বিভিন্ন থানায় ৮/১০টি করে মাদকের মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। রবিবার দুপুরে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বাংলাদেশকে অপমান করবে এরকম কিছু সহ্য করা হবে না। এই দেশে কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। আদালতে যে বিচার হবে, সেই বিচারের রায় সকলকে মেনে নিতে হবে।
আজ ১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার দুপুরে কসবা উপজেলার কুটি ইউনিয়নের জাজিয়ারা গ্রামে আশ্রয়ণ প্রকল্পের গৃহহীনদের মাঝে ঘরের চাবি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে এই মর্মে বিশ্বব্যাংক অর্থ বরাদ্দ বন্ধ করে দিয়েছিল। সেদিন আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, আমরা নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতু বানাব এবং সেটি তিনি বানিয়ে দেখিয়েছেন। দুর্নীতি হয়েছে মর্মে বিশ্বব্যাংক কানাডার আদালতে গিয়েছিল। সেখানে প্রমাণিত হয়েছে যে পদ্মা সেতু নিয়ে কোনো ধরনের দুর্নীত হয়নি।
ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ইঙ্গিত করে মন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে মিলে এক সুদখোর পদ্মা সেতু নিয়ে ষড়যন্ত্র করেছিলেন। তিনি এখনো ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন। এ দেশের আপামর জনসাধারণের রক্ত চুষে নিয়ে তিনি বিদেশে কোম্পানি বানিয়েছেন।
আইনমন্ত্রী আরো বলেন, একটি চক্র আছে যারা অন্যায় করলেও তাদেরকে কিছু বলা যাবে না। কিছু বললেই তারা বিদেশি বাবা-মার কাছে গিয়ে লাফালাফি শুরু করেন। আর কিছু টাকা ধরিয়ে দিলে বিদেশিরাও চিঠি লেখালেখি শুরু করে দেন।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন কসবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রাশেদুল কাউসার ভূঁইয়া জীবন, কসবা পৌরসভার মেয়র এমজে হাক্কানী, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান এমএ আজিজ, পৌরসভার সাবেক মেয়র এমরান উদ্দিন জুয়েল প্রমুখ।
পরে আইনমন্ত্রী আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৫২টি পরিবারের মাঝে ঘরের চাবি হস্তান্তর করেন। এ সময় তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকায় ভোট চান।