চলারপথে রিপোর্ট :
আড়াই বছরেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড (বিজিএফসিএল) পরিচালিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস গ্যাস ফিল্ডের ১৪ নম্বর কূপ থেকে পুনরায় জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে।
আজ ২৫ মে শনিবার বিকেল পৌনে ৬টায় জ্বালানি সচিব মো. নূরুল আলম গ্যাস সরবরাহ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এ কূপটি থেকে দৈনিক ১২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। আগামী ১০ বছরে এ কূপ থেকে প্রায় ২৬শ’ কোটি টাকার গ্যাস উত্তোলন করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দৈনিক ২৯ দশমিক ৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন তিতাস গ্যাস ফিল্ডের ১৪ নম্বর কূপটি ২০০০ সালে খনন করা হয়। তবে গ্যাসের সঙ্গে অতিমাত্রায় পানি উঠায় ২০২১ সালের পহেলা নভেম্বর গ্যাস কূপটি বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। তিতাসসহ দেশের পাঁচটি গ্যাস ফিল্ড পরিচালনা করে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড (বিজিএফসিএল) কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি ৫২৩ কোটি টাকা ব্যায়ে তিতাসের ১৪ নম্বর কূপসহ ৭টি কূপ ওয়ার্কওভারের প্রকল্প হাতে নেয় বিজিএফসিএল। এ প্রকল্পের আওতায় গত ১৯ মার্চ তিতাসের ১৪ নম্বর কূপের ওয়ার্কওভার কাজ শুরু করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স)। ৭৫ কোটি টাকা ব্যায়ে ওয়ার্কওভার কাজ শেষে গত ২১ মে কূপটি থেকে পরীক্ষামূলকভাবে গ্যাস উৎপাদন শুরু হয়।
৭টি কূপ ওয়ার্কওভার প্রকল্পের পরিচালক মো. ইসমাইল মোল্লা জানান, ১৪ নম্বর কূপটি থেকে আগামী ১০ বছর পর্যন্ত ৪০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা যাবে- যার বাজারমূল্য প্রায় ২৬শ’ কোটি টাকা। আপাতত দিনে ১২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হবে। পরবর্তীতে উৎপাদনের ওপর নির্ভর করে গ্যাস সরবরাহের পরিমাণ বাড়ানো হবে। বাকি ৬টি কূপের ওয়ার্কওভার কাজ আগামী বছরের ডিসেম্বরে শেষ হবে বলে জানান প্রকল্প পরিচালক।
জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ কার্যক্রমের উদ্বোধন শেষে জ্বালানি সচিব মো. নূরুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে জাতীয় গ্রিডে ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যুক্ত করার লক্ষ্য রয়েছে। এর ফলে শিল্প-কারখানাসহ যে কোনো খাতে গ্যাস সরকরাহ করা যাবে। সরবরাহ পর্যাপ্ত হলে গ্যাসের সংকটও কমে যাবে। সবমিলিয়ে ১০০টি কূপের ওয়ার্কওভার ও খননের পরিকল্পনা রয়েছে। এ কাজটি আগামী বছর থেকেই শুরু হবে বলে জানান তিনি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল বিশ্বরোড মোড়ে অবস্থিত তিতাস গ্যাস ফিল্ডের ১৪ নম্বর কূপে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার ও বিজিএফসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুল হক চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অনলাইন ডেস্ক :
সিদ্ধিরগঞ্জে সহোদর ভাই-বোনদের সংঘর্ষে ৩ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ভাসুর মানিক মিয়ার ধারালো বটির কোপে সাবিনা নামে ভাইয়ের স্ত্রীর হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
চুলায় রান্না ও জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে আজ ৯ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার দুপুর ১ টার দিকে মধ্য সানারপাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেফতার করেছে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ।
আহতরা হলেন ওমর মিয়ার স্ত্রী সাবিনা, বোন চাঁদনী ও ইতি। কবজি বিচ্ছিন্ন সাবিনাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পরে পঙ্গু হাসপতালে নিয়ে গেলেও অবস্থা গুরুতর হওয়ায় সেখানে ভর্তি না করায় তাকে পিজি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে পারিবারিক সূত্র জানায়।
গৃহবধূর কবজি বিচ্ছিন্ন হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি আবু বক্কর জানান, এ ঘটনায় মানিক মিয়া (৪০) ও তার ছোট ভাই সুমন মিয়ার স্ত্রী ফাতেমাকে (৩২) গ্রেফতারা করা হয়েছে।
এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, মধ্য সানারপাড় এলাকার মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে মানিক মিয়া, সুমন মিয়া, ওমর মিয়া, জুবায়ের মিয়া, সুজন মিয়া, বোন চাঁদনী, সুনিয়া ও ইতির মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। পৈতৃক বাড়ি থেকে ৩ ভাই ও ৩ বোনকে বঞ্চিত করে ভোগদখল করতে চায় মানিক ও সুমন। এ নিয়েই মূলত বিরোধ শুরু। তবে ভাইদের মধ্যে বিরোধ চরম রূপ নেয় অবিবাহিত বোন ইতিকে নিয়ে। কেউ তার ভরণ পোষনের দায়িত্ব নিতে চায় না। তবে সৌদি প্রবাসী জুবায়ের মিয়ার দেওয়া অর্থ ও টিউশনি করে ভরণ পোশন ও পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছেন ইতি। ইতিকে নিয়েই সংঘর্ষের সূত্রপাত। জানতে চাইলে আহত ইতি বলেন, আমার বড় ভাই মানিক মিয়া ও সুমন মিয়া আমাকে কোনভাবেই সহ্য করতে পারে না। আমার হাত খরচ বাবদ কিছু খরচ দেয় সৌদি প্রবাসী ভাই জুবায়ের। মাঝে মাঝে ভাই ওমর মিয়া খোঁজ খবর নেয়। তবে তার অর্থিক অবস্থা ভাল না। শুক্রবার দুপুরে গ্যাসের চুলায় সাবিনা ভাবী আমার জন্য খাবার রান্না করতে গেলে বড় ভাবী ফাতেমা গালাগালি শুরু করেন। তখন আমি ও বোন চাঁদনী প্রতিবাদ করলে বড় ভাই মানিক, সুমন ও ভাবী ফাতেমা আমাদের দুই বোনকে মারধর শুরু করেন। একপর্যায় মানিক ভাই ধরালো বটি দিয়ে আমাকে লক্ষ করে কোপ দেয়। তখন সাবিনা ভাবী কোপ প্রতিহত করতে গিয়ে তার হাত কবজি পর্যন্ত কেটে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এস আই হুমায়ূন কবির বলেন, তারা ভাই বোনদের মধ্যে আগে থেকেই জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে। এরই জের ধরে চুলায় রান্নাকে কেন্দ্র করে মারামারি হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি আবু বক্কর জানান, জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে ছোট ভাইয়ের স্ত্রীকে বটি দিয়ে কুপিয়ে হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে ভাসুর। এ ঘটনায় একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে।
অনলাইন ডেস্ক :
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পুকুরে গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে তিন স্কুল শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। আজ ২৫ জুন রবিবার দুপুরে উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের হোরগাও এলাকায় পুকুরে পানিতে ডুবে তাদের মৃত্যু হয়।
মৃত স্কুল শিক্ষার্থীরা হলো-রূপগঞ্জ উপজেলার তারাব পৌরসভার গন্ধব্যপুর এলাকার রুকন উদ্দিনের মেয়ে আফসানা আক্তার মারিয়া, নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর এলাকার সালাম মিয়ার মেয়ে সুবর্না আক্তার, হবিগঞ্জ জেলার নবিগঞ্জ উপজেলার রোমান মিয়ার মেয়ে মারিয়া।
তারা সবাই বর্তমানে উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের হোরগাও এলাকার আক্তার মিয়া ও সোমা বেগমের বাড়ির ভাড়াটিয়া এবং হোরগাও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলেন।
মৃতের পরিবারের বরাত দিয়ে ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দুপুরে গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের হোরগাও এলাকার একটি পুকুরে তিনজন স্কুল শিক্ষার্থী গোসল করতে যায়। তাদের কেউই সাঁতার না জানায় পুকুরের পানিতে ডুবে যায়।
পরে স্থানীয় এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় ইউএস বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসকরা তাদের মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান তিনি।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আশেপাশের দেশ চাঁদে চলে যায়, আমরা কেন পিছিয়ে থাকব? ভবিষ্যতে বাংলাদেশ চাঁদেও যাবে। সেইভাবে আমরা দেশে দক্ষ ও স্মার্ট জনশক্তি গড়ে তুলব।
আজ ৭ সেপ্টেম্বর শনিবার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশের বিমানবন্দরের আধুনিকায়ন শুরু করে। আকাশপথে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় সংযোগ স্থাপনের পরিকল্পনা আছে সরকারের। কেউ যশোর থেকে সৈয়দপুর যাবে, সৈয়দপুর থেকে চট্টগ্রাম যাবে, কেউ যশোর থেকে কক্সবাজার যাবে অথবা কক্সবাজার থেকে যশোর যাবে, বিমানের মাধ্যমে হবে- এমন পরিকল্পনা আমাদের আছে। আগামীতে আন্তর্জাতিক এভিয়েশন হাব হবে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, মানুষের যোগাযোগ ব্যবসা-বাণিজ্য অর্থনীতি উন্নতির জন্য একান্ত অপরিহার্য। আধুনিক যুগের নৌপথ সড়কপথ রেলপথের সঙ্গে সঙ্গে আকাশপথ সেটাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বহন করে। বিশেষ করে, এদের সঙ্গে আমাদের যে যোগাযোগ সেই যোগাযোগের মূল বাহন হচ্ছে বিমান। অর্থাৎ আকাশ যাত্রাটা হচ্ছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সেটাকে গুরুত্ব দেই।
সরকারপ্রধান বলেন, ১৯৯৬ সালে আমি যখন সরকারে আসি তখন আমাদের বিমানবন্দরের কোনো বোডিং ব্রিজ ছিল না, পার্কিং লোড ছিল না, কিছুই ছিল না। আমরা সরকারে এসে বিমানবন্দরের উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছিলাম। চট্টগ্রাম ও সিলেটে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আমরা নির্মাণ করি। সঙ্গে শাহজালাল বিমানবন্দরের উন্নয়নের প্রকল্প গ্রহণ করি। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল এ সময়ে বিমানবন্দরের উন্নয়নের যাত্রা শুরু হয়। আমি সবাইকে অনুরোধ করব, যদি পারেন তাহলে ১৯৯৬ সালের আগ পর্যন্ত কী উন্নয়ন ছিল, সেটা একটু দেখবেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী সকাল ১০টা ১০ মিনিটে শাহজালাল বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল এরিয়ায় এসে পৌঁছান।
এ সময় দেশের গানের সঙ্গে মনোজ্ঞ নৃত্য পরিবেশন করে তাকে স্বাগত জানানো হয়। এরপর অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধাসংবলিত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩-এর বিভিন্ন অংশ ঘুরে ঘুরে দেখেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম. মফিদুর রহমানসহ বেবিচক ও মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেছিলেন। তৃতীয় টার্মিনালে একসঙ্গে ৩৭টি উড়োজাহাজ পার্ক করা যাবে। এছাড়াও বহুতল কার পার্কিংয়ে রাখা যাবে এক হাজার ৪৪টি গাড়ি। নতুন টার্মিনালে এক কোটি ২০ লাখ যাত্রীকে সেবা দেওয়া সম্ভব।
এর আগে ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর শাহজালাল বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পটির অনুমোদন দেয় একনেক। নির্মাণ কাজে অর্থায়ন করছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।
অনলাইন ডেস্ক :
গত ২৪ ঘণ্টায় (মঙ্গলবার সকাল আটটা পর্যন্ত) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরো চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে একজন ঢাকায় ও তিনজন ঢাকার বাইরে। এ নিয়ে নভেম্বরের চার সপ্তাহে মৃত্যু হয়েছে ২৬২ জনের। গত একদিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে ৯৫৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে ঢাকায় ২০১ জন ও ঢাকার বাইরে ৭৫৮ জন।
আজ ২৮ নভেম্বর মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে উল্লেখ করা হয়, এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এক হাজার ৬১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় ৯৩১ জন ও ঢাকার বাইরে ৬৭৯ জন। চলতি বছরের ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন তিন লাখ ১০ হাজার ৪৬ জন। এর মধ্যে ঢাকায় এক লাখ সাত হাজার ৪৯৯ জন ও ঢাকার বাইরে দুই লাখ দুই হাজার ৫৪৭ জন।
বর্তমানে সারা দেশে তিন হাজার ৫৬৭ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এর মধ্যে ঢাকায় এক হাজার জন ও ঢাকার বাইরে দুই হাজার ৫৬৭ জন। চলতি মাসের ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩৮ হাজার ৮৭১ জন।
চলতি বছরের এ পর্যন্ত তিন লাখ চার হাজার ৮৬৯ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় এক লাখ পাঁচ হাজার ৫৬৮ জন ও ঢাকার বাইরে এক লাখ ৯৯ হাজার ৩০১ জন।
গত বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৬২ হাজার ৩৮২ জন ও ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যান ২৮১ জন।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমারা বাঙালি, বাংলা ভাষায় কথা বলি, মায়ের ভাষায় কথা বলি। বাংলা একাডেমি আমাদের অনেক আন্দোলন-সংগ্রামের সূতিকাগার। বইমেলা আমাদের প্রাণের মেলা।
আজ ১ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকেলে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ফেব্রুয়ারি মাস আমাদের ভাষা আন্দোলনের মাস। এ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙালির সত্তা জাগ্রত হয়। এই পথ বেয়েই আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা। আমারা বাঙালি, বাংলা ভাষায় কথা বলি, মায়ের ভাষায় কথা বলি। এই অধিকারটাও আমাদের রক্ত দিয়ে অর্জন করতে হয়েছে।
বই হাতে নিয়ে পড়ার আনন্দ আলাদা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদিও এখন আমাদের যুগ হয়ে গেছে বিজ্ঞান-প্রযুক্তির যুগ। তবু বই প্রকাশ অবশ্যই থাকবে, এটা যাবে না। কারণ, হাতে নিয়ে বই পড়ার মধ্যে আলাদা একটা আনন্দ আছে। তবে আজকালকার ছেলে-মেয়েরা ট্যাবে বই পড়ে, আবার ল্যাপটপেও পড়ে।
এসময় নিজের স্কুল-কলেজ জীবনের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বেশ আফসোস করে বলেন, এখন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বইমেলায় আসায় কোনো মজা নেই। কারণ, স্বাধীনতা নেই। ডানে তাকাব নিরাপত্তা, বাঁয়েও নিরাপত্তা, পেছনে গেলে নিরাপত্তা, সামনে নিরাপত্তা; এই নিরাপত্তার বেড়াজালে স্বাধীনতাটাই হারিয়ে গেছে। এখানে আসলে মনে পড়ে স্কুল জীবনের কথা, ছোটবেলার কথা। এই প্রাঙ্গণের সঙ্গে সবকিছুই ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এখন সেই স্বাধীনতাটা নেই। জানি না কবে আবার স্বাধীনতা পাব।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার পথ অনুসরণ করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। স্বাধীনতার পর যখন জাতিসংঘ আমাদের স্বীকৃতি দিল, তিনি কিন্তু তখন সেখানে গিয়ে বাংলা ভাষায় ভাষণ দিয়েছিলেন। বাংলা ভাষায় ভাষণ অর্থাৎ বাংলাকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া। আমি আমার বাবার পথ অনুসরণ করে এই পর্যন্ত যতবার ভাষণ দিয়েছি, বাংলায় ভাষণ দিয়েছি।
ভাষা-সাহিত্য সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা উচিত মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রকাশকদের অনুরোধ করে বলব— শুধু কাগজে প্রকাশ করলে হবে না, ডিজিটাল মাধ্যমেও প্রকাশক হতে হবে। ডিজিটাল প্রকাশক হলে এটা শুধু দেশে নয়, বিদেশেও পৌঁছাবে। মনমানসিকতা পরিবর্তন করে আধুনিক প্রযুক্তিও রপ্ত করতে হবে। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারলে আমার এগিয়ে যাব।
অনুবাদ সাহিত্যের জন্য বাংলা একাডেমিকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, একসময় দাবি উঠেছিল— অনুবাদ করা যাবে না। কিন্তু আমি অনুবাদের পক্ষে। অনুবাদ যদি না হয় পৃথিবীর এত ভাষা আমরা কোথা থেকে জানব। একটা দেশকে, তার সংস্কৃতিকে জানতে হলে তার ভাষার মধ্য দিয়ে জানতে হবে।
এবারের মেলার মূল প্রতিপাদ্য ‘পড়ো বই গড়ো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’। বরাবরের মতো এবারও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে থাকছে মেলার আয়োজন।
মেলায় ৬৩৫ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান বরাদ্দ পেয়েছে ৯৩৭টি ইউনিট। এবার প্রকাশনা সংস্থা বেড়েছে ৩৪টি। একাডেমি প্রাঙ্গণে ১২০ প্রতিষ্ঠান ১৭৩টি ইউনিট এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৭৬৪ ইউনিট বরাদ্দ পেয়েছে ৫১৫ প্রতিষ্ঠান।
বইমেলার সময়সূচি
এবারের বইমেলা অধিবর্ষের বইমেলা। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেলা অনুষ্ঠিত হবে। ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। তবে রাত ৮টা ৩০ মিনিটের পর নতুন করে কেউ মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারবেন না। সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্র-শনিবার বইমেলা চলবে বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।
২১শে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের দিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে।