চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগরে জোনাকী বেগম (৩৫) নামে এক গৃহবধূর লাশ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনাটি ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে।
২৪ মে শুক্রবার রাত ৮টার দিকে নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওই গৃহবধূকে নিয়ে আসেন স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন। মারা গেছে শুনে মরদেহ হাসপাতালের বেডে রেখে পালিয়ে যান তারা।
নিহত জোনাকী বেগম নাসিরনগর উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের শ্রীঘর গ্রামের তালুকদার বাড়ির ছাদেক মিয়ার মেয়ে ও একই ইউনিয়নের একই গ্রামের বাসিন্দা মাঝি বাড়ির আল আমিন মিয়ার স্ত্রী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় পাঁচ বছর পূর্বে তালুকদার বাড়ির জোনাকি বেগমের সঙ্গে বিয়ে হয় মাঝি বাড়ির আল- আমিনের। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য নির্যাতন করতো আল-আমিন ও তার পরিবারের লোকজন। এ নিয়ে একাধিকবার সালিশও হয়েছে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নেতৃত্বে।
ঘটনার দিন আবারও যৌতুকের জন্য নির্যাতন চালায় আল-আমিন ও তার পরিবারের লোকজন। নির্যাতনের ফলে জোনাকি মারা যায়। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মারা গেছে শুনে লাশ রেখে পালিয়ে যায় স্বামীর পরিবারের লোকজন।
নিহতের বোন শিমু বেগম জানান, আমার বোনকে তার স্বামী ও পরিবারের লোকজন প্রায়ই যৌতুকের জন্য নির্যাতন করতো। আমরা একাধিকবার যৌতুক দিয়েছি। কিন্তু তার আরো যৌতুক লাগবে। আমার বোনকে মেরে হাসপাতালে লাশ রেখে তারা পালিয়ে গেছে।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সোহাগ রানা জানান, হাসপাতাল থেকে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হবে। আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগরে দুইশত বছরের পুরনো খাল ভরাট করায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় তিনশত পরিবার। বিষয়টি নিয়ে গ্রামবাসীর পক্ষে গত ১৯ জুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বারাবর লিখিত অভিযোগ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা কালন চৌধুরী। অভিযোগের পরও জলাবদ্ধতার সমস্যা সমাধান না হওয়ায় বিপাকে গ্রামবাসী।
লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের ফুলপুর গ্রামের মান্নান মিয়া, রুহুল আমীন, সোলমান মিয়াসহ কয়েকজন প্রভাবশালী লোক মিলে কয়েক বছর পূর্বে খালটি ভরাট করেন। ভরাটের সময় গ্রামের অন্যান্যরা বাধা দিলে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা (ড্রেন নির্মাণ) করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কৌশলে খালটি ভরাট করা হয়। কিন্তু পরবর্তীতে তারা সেখানে কোন ড্রেন নির্মাণ না করে সরু পাইপের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা করে। এতে করে সামান্য বৃষ্টি হলেই গ্রামে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।
শুক্রবার সরেজমিন ফুলপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, পানিতে ডুবে আছে বাড়ির উঠান, গবাদি পশুর খড় আর রান্নার চুলা। পানিবন্দি থাকায় স্কুলে যেতে পারছেনা শিক্ষার্থীরা। বাড়ির সামনে থাকা আবাদি জমিগুলো ডুবে আছে। সাপ, জোঁক সহ অন্যান্য বিষাক্ত প্রাণীর ভয়ে শিশুদের নিয়ে আতংকিত অভিভাবকরা।
ফুলপুর গ্রামের কৃষক ছুরুক মিয়া বলেন, খাল ভরাট করায় জমে থাকা পানিতে আমার গরুর খড়, রান্নার চুলা পানিতে ডুবে গেছে। আমি কিছুই করতে পারছি না। আমি কৃষক মানুষ, কৃষি না করলে খাব কি। এভাবে পানি জমে থাকলে বাড়িঘর ছেড়ে রাস্তায় উঠা লাগবে।
গ্রামের বাসিন্দা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.জামাল উদ্দিন জানান, আমরা জন্মের পর থেকেই দেখছি এখানে খাল ছিল। এখন খাল ভরাট করার কারণে গ্রামে পানি জমে আছে। ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছে না। আমরা চাই খাল উদ্ধার করে জলাবদ্ধতার সমস্যার সমাধান করা হোক।
খাল ভরাটের বিষয়ে অভিযুক্তদের মধ্যে মান্নান মিয়া বলেন, আমাদের ব্যক্তি মালিকানা জায়গা আমরা ভরাট করেছি। গ্রামবাসীর কথা চিন্তা করে পানি নিষ্কাশনের জন্য পাইপও বসিয়েছি।
সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পুতুল রানী দাস বলেন, খাল ভরাট করার বিষয়টি আমি শুনেছি। আশা করছি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে দ্রুত জলাবদ্ধতার নিরসন হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোনাববর হোসেন বলেন, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা ওই জায়গা পরিদর্শন করেছি। আশা করছি দ্রুততম সময়ে সমস্যার সমাধান হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
“নিরাপদ মাছে ভরবো দেশ, গড়বো স্মার্ট বাংলাদেশ” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে নাসিরনগরে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ২৪ জুলাই সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টায় উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সাথে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
নাসিরনগর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ২ হাজার ৬৩২ টি পুকুরে ১ হাজার ৫৭৮ জন মৎস্য চাষি মাছ চাষ করছেন। বর্তমানে উপজেলায় মাছের চাহিদা ১৩ হাজার ৪৭৩ মেট্রিক টন এবং উৎপাদন হচ্ছে ১৩ হাজার ৯৭৩ মেট্রিক টন। তবে গত অর্থ বছরে উৎপাদন ছিল ১৩ হাজার ৩০৮ মেট্রিক টন। গত বছরের চেয়ে এবছর ৬৬৫ মেট্রিক টন উৎপাদন বেড়েছে।
নাসিরনগর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শুভ্র সরকার বলেন, আধুনিক মাছ চাষের দিকে চাষিরা ঝুঁকছে, নতুন নতুন মাছ চাষি তৈরি হচ্ছে। আমরা কিছু বিল নার্সারি করেছি। আবার রেনু থেকে পোনা করে সেই পোনা বিলে অবমুক্ত করছি। এতে মাছের উৎপাদনও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন নাসিরনগর প্রেসক্লাবের সভাপতি ও ভোরের ডাক প্রতিনিধি সুজিত কুমার চক্রবর্তী, সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক সংবাদ প্রতিনিধি মোজাম্মেল হক সবুজ, দৈনিক যায়যায়দিন প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, সমকাল প্রতিনিধি মুরাদ মৃধা, আজকের পত্রিকা প্রতিনিধি বরুণ সরকার, এশিয়ান টিভি প্রতিনিধি আব্দুল হান্নান।
চলারপথে রিপোর্ট :
জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে নাসিরনগরে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের নাসিরনগর সদর ইউনিয়ন শাখার ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ২২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকালে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন নাসিরনগর সদর ইউনিয়ন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগের সম্মেলনের প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক মীর জসিম উদ্দিন ।
জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্ধোধন করেন উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি নির্মল চন্দ্র চৌধুরী ।
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির যুগ্ম আহবায়ক সুশেন ঘোষ ও মো: শাকিল আব্বাসের সঞ্চালনায় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বদরুদ্দোজা মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম। এছাড়া প্রধান বক্তা ছিলেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সাখাওয়াত হোসেন।
এ সময়ে আরও বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অসীম কুমার পাল, সাধারণ সম্পাদক মো. লতিফ হোসেন, উপজেলা চেয়ারম্যান রাফি উদ্দিন আহমেদ, নাসিরনগর সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো.ওয়াহেদ উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক তপন রায় চৌধুরী ও নাসিরনগর সদর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান পুতুল রানী দাস।
এছাড়াও সম্মলনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ালীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ লিয়াকত আব্বাস টিপু, উপজেলা মহিলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক রুবিনা আক্তার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক বশীর আল হেলাল, সাবেক সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অরুনজ্যোতি ভট্টাচার্য, উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ভানু চন্দ্র দেব। উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এইচএম শুভ সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক রাহুল রায়সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে সন্ধ্যার পর বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ ৫নং নাসিরনগর সদর ইউনিয়নের নতুন সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন মীর জসিম উদ্দিন এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন সুশেন ঘোষ ।
নাসিরনগর প্রতিনিধি :
নাসিনরনগরে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করেছেন শেখ জহির উদ্দিন তুন্নান। তিনি পেশায় প্রকৌশলী ও নাসিরনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রাফিউদ্দিন আহমেদের ছেলে। বিয়ের দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে তুন্নান হেলিকপ্টারে করে বিয়ে করেছেন।
কনে লিগার সুলতানা লিসা ও একজন প্রকৌশলী। তিনি নাসিরনগর উপজেলা সদরের সাবেক স্বাস্থ্য পরিদর্শক হাবিবুর রহমানের মেয়ে।
আজ ১৩ ফেব্রুয়ারি সোমবার দুপুরে বর তুন্নান কয়েকজন বরযাত্রী নিয়ে তার গ্রামের বাড়ি নাছিরপুর থেকে হেলিকপ্টার চড়ে নাসিরনগর আশুতোষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে অবতরন করেন। সেখান থেকে ঘোড়ার গাড়িতে করে কনের গ্রামে পৌছান।
বিয়ের পর বিকেলে তুন্নান নববধূকে নিয়ে ঘোড়ার গাড়িতে করে আশুতোষ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে যান। সেখান থেকে হেলিকপ্টারে করে নাসিরনগর প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ের মাঠে অবতরণ করেন। এদিকে হেলিকপ্টারে বিয়ে হওয়া নব দম্পতিকে দেখতে ভিড় করে শত শত উৎসুক জনতা। উপচেপড়া মানুষের ভীড় সামলাতে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে পুলিশ।
এ ব্যাপারে প্রকৌশলী শেখ জহির উদ্দিন তুন্নান জানান, বিয়ের দিনটাকে স্মরণীয় করে রাখতেই হেলিকপ্টারে করে বিয়ে করেছি।
এ ব্যাপারে নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ হাবিবুল্লাহ সরকারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বিষয়টির নিশ্চিত করেছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগরে পাগলা কুকুরে কামড়ে নারী পুরুষসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। সোমবার বিকাল থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত উপজেলার ফান্দাউক ইউনিয়নের ফান্দাউক গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। উত্তেজিত জনতা একটি কুকুরকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।
স্খানীয়রা ও কুকুরের কামড়ে আক্রান্তরা জানায়, গত সোমবার দুপুরে উপজেলার ফান্দাউক গ্রামে একটি বেওয়ারিশ কুকুর আসে। পরে কুকুরটি রাস্তায় যাকে পেয়েছে তাকেই কামরায়। প্রথমদিন কুকুরটি ১৩ জনকে কামড়িয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
মঙ্গলবার ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত কুকুরটি আরো ৭ জনকে কামড়ায়। আক্রান্তদেরকে নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা অভিজিৎ রায় জানান, ১৪ জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। আমাদের হাসপাতালে অ্যান্টি রেবিস ভ্যাকসিন নেই তবে ইমিউনোগ্লোবুলিন ডোজ রয়েছে। ৩ জন এ ডোজ নিয়েছেন।