চলারপথে রিপোর্ট :
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য মো. জিয়াউল করিম খাঁন সাজু বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৩১ হাজার ২৪৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি বর্তমান চেয়ারম্যান মো. হানিফ মুন্সী পেয়েছেন ২৮ হাজার ৩৪০ ভোট।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তৃতীয়বারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন মো. সিরাজুল ইসলাম। বাঞ্ছারামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম ৮২ হাজার ৮১৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি আমিনুল ইসলাম তুষার পেয়েছেন দুই হাজার ১৬২।
জেলা পুলিশের দায়িত্বশীল একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সূত্রটি জানায়, কোনো উপজেলাতেই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ছিলো তৎপর। বিভিন্ন অভিযোগে নয়জনের সাজা দেওয়া হয়েছে।
স্টাফ রিপোর্টার:
গৌরব ও অহংকারের ১৬ ডিসেম্বর বাঙ্গালী জাতির মহান বিজয় দিবস। বিজয় দিবসে জাতি সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করবে স্বাধীনতার স্বপ্নপুরুষ, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে অকুতোভয় বীর মুক্তিযোদ্ধা, জীবন উৎসর্গকারী ও যুদ্ধাহত বীর সন্তানদের, যাঁদের ত্যাগে অর্জিত হয়েছে আমাদের কাঙ্খিত বিজয়; জাতি অর্জন করেছে লাল সবুজ পতাকা এবং স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষে মহান বিজয় দিবস-২০২২ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। আজ প্রত্যুষে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের ফারুকী পার্কে ৫০ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার মধ্যে রয়েছে- ফারুকী পার্কস্থ স্মৃতিসৌধে সরকারি-বেসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত বিভাগ/সংস্থা সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনতা কর্তৃক স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পন, সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সরকারি, বেসরকারি স্বায়ত্ব শাসিত এবং বেসরকারি ভবনে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৮টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিয়াজ মুহম্মদ স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবে জেলা প্রশাসন। এ সময় কুচকাওয়াজ ও অভিবাদন গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে সকাল সাড়ে ১০টায় একই মাঠে মোরগ লড়াই ও বেলা ১১টায় কারাতে প্রতিযোগিতা, একই মাঠে বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদেরকে সংবর্ধনা প্রদান এবং জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহার শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে বেলা ১১টায়। বেলা সাড়ে ১১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া মূক ও বধির নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় ও সরকারি শিশু পরিবারের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর জেলার সকল মসজিদে বাদ জোহর জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা এবং মুক্তিযুদ্ধে শহিদ ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিশেষ মোনাজাত এবং অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়সমূহে সুবিধাজনক সময়ে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি এদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সকল সরকারি হাসপাতাল, শিশু সদন, জেলখানা, এতিমখানা ও শিশু পরিবারে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে। বিকেল আড়াটায় ব্রাহ্মণবড়িয়া নিয়াজ মুহাম্মদ স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসন একাদশ বনাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা ও মুক্তিযোদ্ধা একাদশ দলের মধ্যে প্রীতি ফুটবল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হবে। বিকাল ৩টায় সরকারি মডেল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরষ্কার বিতরণ করা হবে। বিকেল সাড়ে ৫টায় মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে সাংস্কৃতিক ও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হবে।
মহান এ দিবসের সকল অনুষ্ঠানে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেশপ্রেমি মানুষের স্ববান্ধব উপস্থিতি কামনা করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম।
অনুরূপ কর্মসূচি জেলার সকল উপজেলায় পালিত হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সামাজিক বন্ধনকে সুসংহত করার লক্ষ্যে সামাজিক সম্প্রীতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ১৪ অক্টোবর শনিবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মো: শাহগীর আলম।
আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র বসাকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার শাখাওয়াত হোসেন, আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হানিফ মুন্সী, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) কাজী তাহমিনা শারমিন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লিমা সুলতানা, আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাহিদ আহমেদ। এসময় বক্তারা বলেন, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সামাজিক বন্ধনকে সুসংহত করার লক্ষ্যে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানান।
সমাবেশে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক, ইমাম, পুরোহিত ও শিক্ষকসহ সর্বস্তরের জনগণ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ক্যাপ্টেন (অব.) এবি তাজুল ইসলাম এমপি বলেছেন, বাঙ্গালী জাতির সকল অধিকার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয় আওয়ামী লীগ। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা হয়েছে বলেই আজ বাংলাদেশ স্বাধীন।
গতকাল ২৪ জুন শুক্রবার বিকালে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ কর্তৃক আয়োজিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এবি তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কারণেই জাতির জনকের নেতৃত্বে ভাষা আন্দোলন, ৭০-এর নির্বাচন এবং স্বাধীনতা সংগ্রামে বাঙ্গালী জাতি ঝাঁপিয়ে পড়ে সকল অধিকার ছিনিয়ে এনেছে।
তার সুযোগ্য কন্যা আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে উচ্চ মাত্রায় নিয়ে গেছে। সকল কিছু সম্ভব হয়েছে একমাত্র দেশের জনগণ আওয়ামী লীগকে ভালোবাসে বলে।’
তিনি আরো বলেন, ‘ষড়যন্ত্রকারীরা দেশে বিদেশে যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন সামনের নির্বাচনে জনগণ আবারও আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসাবে। জনগণ দেশের দায়িত্ব আওয়ামী লীগের হাতেই নিরাপদ মনে করে।
ক্যাপ্টেন (অব.) এবি তাজুল ইসলাম অডিটোরিয়ামে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন আহমেদ মহি, উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল ইসলাম, সহসভাপতি সায়েদুল ইসলাম বকুল ভূইয়া, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কবির হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী জাদিদ আল রহমান জনি, বাঞ্ছারামপুর পৌর মেয়র তফাজ্জল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম শহিদুল হক বাবুল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, কৃষকলীগ সভাপতি মিন্টুর রঞ্জন সাহা, স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি মাহমুদুল হাসান ভূইয়া, শ্রমিকলীগ আহ্বায়ক আ. আজিজ, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি এমএস রানা, সাধারণ সম্পাদক আ. রাজ্জাক, পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি হিমেল সরকার, সাধারণ সম্পাদক সামুয়েল আহমেদ, কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি মাসুদ রানা, সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান মাসুদ প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
গত ২১ ডিসেম্বর ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে মোবাইল ফোন হারিয়েছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার মো. আশিকুর রহমান। এ বিষয়ে তিনি আশুগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। পুলিশ তদন্তে বেরিয়ে আসে ওই মোবাইল ফোনটিতে ব্যবহৃত হচ্ছে জেলার বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ এইচ ইফরান উদ্দিন আহমেদের নামে রেজিস্ট্রেশন করা সিমকার্ড।
ইউএনও ইফরান উদ্দিন অবশ্য বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
শনিবার রাতে মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আমার নামে নিবন্ধিত থাকা বাংলালিংকের একটি সিম অফিসের কর্মচারী জালালকে দিয়েছিলাম। এনআইডি কার্ড পাচ্ছিল না, তার নামে সিম নিবন্ধন করা যাচ্ছিল না বলে আমারটা দেওয়া হয়। কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে কিনে আনা একটি মোবাইল ফোনে সে সিমটি ব্যবহার করে। বিষয়টি যে এত দূর গড়াবে বুঝতে পারিনি।
এ ঘটনায় ভবিষ্যতের জন্য আমার একটা শিক্ষা হয়ে গেল। আমাকে আরো সতর্ক হতে হবে।’
এদিকে আশিকুর রহমান বাদী হয়ে ইউএনওর বিরুদ্ধে গত বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। আদালত মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন।
আশিকুর রহমান জানিয়েছেন, মামলা দায়েরের পর থেকে তিনি বেশ চাপে আছেন। মোবাইল ফোনটি নিয়ে আসার জন্য থানা থেকে বলা হচ্ছে। কিন্তু এখন যেহেতু মামলা হয়েছে সেহেতু আদালতের মাধ্যমে বিষয়টির ফয়সালা হবে।
আশুগঞ্জ উপজেলার সোনারামপুর গ্রামের বাসিন্দা সাংবাদিক আশিকুর রহমান তার মামলায় ও এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলার সময় অভিযোগ করেন, গত বছরের ২১ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু শামার একটি ইটভাটার সামনে থেকে তার স্যামসাং ব্র্যান্ডের একটি মোবাইল ফোনসহ অন্যান্য জিনিস ছিনতাই হয়। তবে ছিনতাই মামলা পুলিশ নিতে চাইবে না বলে এ ঘটনায় চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি আশুগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
বিষয়টি তদন্ত করেন আশুগঞ্জ থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মুহাম্মদ মুজিবুর রহমান। পুলিশের তদন্তে মুঠোফোন ব্যবহারকারী হিসেবে আসামির নাম হিসেবে ইরফান উদ্দিনের (ইউএনও) নাম আসে।
আশিকুর রহমান বলেন, ‘মামলার আসামি হিসেবে ইউএনওর নাম আসার বিষয়টি আমিও নিশ্চিত হই। অফিস কর্মচারী ফয়সাল ফোনটি দেবে দেবে করে দেননি। উল্টো ফোনের কাগজপত্র দেওয়াসহ নানা কথা বলতে থাকেন। পরে আমি আদালতে মামলা দায়ের করি। মামলায় ইউএনওকে আসামি করা হয়েছে।’
হারিয়ে যাওয়া ফোন উদ্ধারের তদন্ত কর্মকর্তা মো. মুজিবুর রহমান বলেন, ‘ওই ফোনে ব্যবহার হওয়া সিমটি ইউএনওর নামে। বাদী অভিযোগ করেছিলেন ফোন হারিয়েছে। এখন একজন সেটি পেয়ে ফেরত দিয়েছে। বাদীকে বলার পর তিনি সেটি নিচ্ছেন না।’