ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল সফলে সংবাদ সম্মেলন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 30 May 2024, 592 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
আগামী ১ জুন শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় ভিটামিন “এ” প্লাস ক্যাম্পেইন। এদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরসহ নয় উপজেলায় পাঁচ লাখ ৪১ হাজার ৫২০ জন শিশুকে ভিটামিন “এ” প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। এর মধ্যে ছয় থেকে ১১ মাস বয়সি শিশুর সংখ্যা ৫৮ হাজার ৩০০ এবং ১২ মাস থেকে ৫৯ মাস বয়সি শিশুর সংখ্যা চার লাখ ৮৩ হাজার ২২০।

banner

আজ ৩০ মে বৃহস্পতিবার সকালে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন এই কর্মসূচি সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, স্বাস্থ্যখাতে দেশের অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে। চিকিৎসা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেকদূর এগিয়ে গেছে। কোভিডের টিকাদানে বাংলাদেশ সফলতা অর্জন করেছে।

সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন আরো বলেন, ভিটামিন “এ”প্লাস ক্যাপসুল শিশুদের রাতকানা ও অন্ধত্ব প্রতিরোধ করে। শিশুদের দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি নিশ্চিত করে। সকল ধরনের মৃত্যুর হার ২৪ শতাংশ হ্রাস করে। তিনি একটি সুস্থ শিশু ও সুস্থ জাতি গঠনে ভিটামিন “এ” প্লাস ক্যাম্পেইন সফল করার লক্ষ্যে গণমাধ্যম কর্মীসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন ডাঃ মাহমুদুল হাসান।

বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন ও সাধারন সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা। সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

ইটালি প্রবাসী দিদারের মা আনোয়ারা বেগমের…

শফিকুল ইসলাম বাদল : ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের বিরামপুর Read more

কসবায় মায়ের অভিযোগে ছেলের কারাদণ্ড

চলারপথে রিপোর্ট : মাদকাসক্ত ছেলের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে Read more
ফাইল ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

চলারপথে রিপোর্ট : পুকুরের পানিতে ডুবে ইসরাত জাহান নোভা (৯) Read more

ইরান কখনও আপোস করবে না: আয়াতুল্লাহ…

অনলাইন ডেস্ক : জায়নবাদীদের সাথে ইরান কখনও আপোস করবে না Read more
ফাইল ছবি

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক পাঁচ দিনের…

অনলাইন ডেস্ক : রাজধানীর শাহবাগ ও পল্টন মডেল থানার পৃথক Read more
ফাইল ছবি

প্রতারণা করে জুলাই অভ্যুত্থানের সুবিধা নিলে…

অনলাইন ডেস্ক : জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদের পরিবার এবং আহতদের কল্যাণ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩৮ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় নাগরিক…

দুলাল মিয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর Read more

কারাগারে হাজতির মৃত্যু

দুলাল মিয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে জুনায়েদ মিয়া (৩২) নামে Read more

আখাউড়ায় কৃষকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা

চলারপথে রিপোর্ট : কৃষকদের সেচ দক্ষতা বাড়াতে পানি ব্যবহারকারী গ্রুপের Read more

ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের ১১তম ব্যাচের ওরিয়েন্টেশন

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য: রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের Read more

স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে…

অনলাইন ডেস্ক : স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে অনশন Read more

ইরানে ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানালো ২১…

অনলাইন ডেস্ক : ইরানে ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানিয়েছে মিশরসহ ২১টি Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আমন ধানের বাম্পার ফলন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 27 November 2023, 898 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
চলতি মৌসুমে রোপা আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। এরইমধ্যে গ্রামাঞ্চলের ধান কাটা শুরু হয়েছে। সোনালী ধানের ফলন হওয়ায় অনেকটাই খুশি প্রান্তিক পর্যায়ে কৃষকেরা। তাদের দাবি সারসহ আনুসাঙ্গিক কৃষি পণ্যের দাম কমানো হলে ধান-চালের ন্যায্য মূল্য পাবে কৃষক। এতে করে অনাবাদি জমি গুলো সোনালী ধানের আভায় ভরিয়ে তুলবেন তারা।

banner

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি রোপা আমন মৌসুমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অঞ্চলে ব্রি-৭৫, ব্রি-৯০ বীনা-৭, বীনা-১৭, বিআর-২২ ও হাইব্রিড জাতিয় ধানের চাষাবাদ করা হয়েছে। আবাহাওয়া অনুকূলে থাকায় সোনালী ধানে ভরে উঠেছে ফসলি মাঠ। ফলন ভালো হওয়ায় খুশি প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকেরা।
কৃষকরা জানান, জমিতে সার, কীটনাশক, নিরানী, মই দেওয়াসহ সর্বশেষ ফসল কাটতে গিয়ে তাদের উৎপাদন খরচ অনেকটাই বেড়েছে।

কৃষকদের দাবি সার এবং কীটনাশকের দাম কমানো হলে ধানের উৎপাদন খরচ অর্ধেকে নেমে আসবে। এতে ধান-চাল বিক্রি করে কিছুটা হলেও লাভবান হবেন তারা। এছাড়া অনাবাদি জমি গুলোতেও বাড়বে ধানের উৎপাদন।

সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের নদ্দাপাড়া গ্রামের কৃষক মো. আমিন মিয়া বলেন, এবার জমিতে ধান অনেক ভালো হয়েছে। সারের দাম কমিয়ে চালের দামটা কিছুটা বৃদ্ধি করে দিলে কৃষকেরা অনেকটা লাভবান হতে পারবেন।

ঘাটুরার মো. ইয়াসিন নামে আরেক কৃষক বলেন, সার ও কীটনাশকের দাম বাড়ার কারণে আমরা কোনো রকম বেঁচে আছি। সার এবং কীটনাশকের দাম একটু কম হলে আমাদের যে অনাবাদি জমিগুলো আছে সেগুলোতে আমরা ধান চাষ করবো।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সুশান্ত সাহা জানান, চলতি রোপা আমন মৌসুমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অঞ্চলে ৫১ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে অতিরিক্ত ২০১০ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ হয়েছে। এবার আবাদ হয়েছে ৫৩ হাজার ৫১০ হেক্টর। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে কৃষকদের আয় বৃদ্ধি করা। যাতে উৎপাদন খরচ কমিয়ে লাভজনক ফসল করার জন্য আমরা কাজ করছি।

তিনি আরো জানান, এ বছর রোপা আমন ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৫৪ হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন। যার বাজার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৬৫ কোটি টাকা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিজ্ঞান শিক্ষার বর্তমান পরিস্থিতি শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 30 November 2024, 319 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
আজ ৩০ নভেম্বর শনিবার এসোসিয়েশন ফর সোশ্যাল সার্ভিস এন্ড ডেভেলপমেন্ট (এসসাড) এর আয়োজনে এবং বাংলাদেশ ফ্রিডম ফাউন্ডেশন (বিএফএফ) এর সহযোগিতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে “ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও আশুগঞ্জ উপজেলার মাধ্যমিক পর্যায়ে বিজ্ঞান শিক্ষার বর্তমান পরিস্থিতি এবং করণীয়” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

banner

মোঃ আবুল বসার মোল্লার সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক আঃ কাইয়ুম।

বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক বিভূতি ভূষণ দেবনাথ, চিনাইর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ একেএম শিবলী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আরজু মিয়া, জেলা সিপিবির সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাজিদুল ইসলাম, জেলা নারী মুক্তি সংসদের সভাপতি ফজিলাতুন নাহার, নাওঘাট মাদরাসার সুপার মোঃ আবুদর রউফ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মেহেরুন্নেছা মুনিয়া, শাহ আলম পালোয়ান প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আঃ কাইয়ূম বলেন, এই মুহুর্তে সবচেয়ে বড় সংকট বিজ্ঞানে পড়াশোনার পর যোগ্য সম্মানের। দেখা যায় যারা বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হয় অথবা গবেষণা করে তাদের যথাযোগ্য মর্যাদা প্রদান করা হয়না। প্রত্যন্ত অঞ্চলে তাদের চাকুরি করতে হয়। দেশে সুযোগ সুবিধাও নেই পর্যাপ্ত। হয়তো তাদের বিদেশ পাড়ি দিতে হয়, অথবা প্রশাসনের দিকে ঝুঁকতে হয়। তাই দরকার গবেষণায় বরাদ্দ বাড়ানো এবং বিজ্ঞান চর্চায় উৎসাহিত করা যায় এমন প্রকল্প হাতে নেয়া। এই জায়গা থেকে এসসাডের কার্যক্রম সত্যি প্রশংসার দাবি রাখে।

মোবাইলে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ : নারীসহ আটক ৯

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 8 April 2024, 622 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংঘবদ্ধ অপহরণ চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল রবিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে পৌর শহরের কাউতলী এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে আনিসুল হক নামে অপহৃত এক ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করা হয়।

banner

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কান্দিপাড়ার শাকিল প্রকাশ লায়ন শাকিল (৩৫), শাকিলের স্ত্রী হাবিবা আক্তার (২৯), শহরের শিমরাইলকান্দির এনামুল হক প্রকাশ জুয়েল (৩০), একই এলাকার জোনায়েদ (২৭), সাইমন ইসলাম প্রকাশ রাজু সিকদার (২৫), জেলার কসবা উপজেলার সাহাপুর গ্রামের জোনাকি প্রকাশ শিউলী (২৫), সদর উপজেলার কোড্ডা গ্রামের সৌরভ (২২), শহরের কলেজপাড়ার বাবুল মিয়া (৪৫) ও শহরতরীর বিরাসার গ্রামের পান্না চৌধুরী (৩০)।

পুলিশ জানায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের ব্যবসায়ী আনিসুল হকের সাথে মোবাইল ফোনে হাবিবা বেগমের পরিচয় হয়। তারা মোবাইল ফোনে কথা বলতেন। গত রবিবার সন্ধ্যার দিকে আনিসুল হক হাবিবা বেগমের সাথে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পাইকপাড়া (পানির ট্যাংক) সামনে দেখা করতে আসেন।

সেখানে আগে থেকে মাইক্রবাস নিয়ে উৎপেতে থাকা ৮/৯ জন অপহরণকারী কিছু বুঝে উঠার আগেই আনিসুল হককে মাইক্রোবাসে জোরপূর্বক তুলে শহরের কাউতলী এলাকার আলম ভবনের চতুর্থ তলায় নিয়ে যান। সেখানে তাকে আটকে রেখে মারধোর করেন। এক পর্যায়ে তার কাছে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। ১০ লাখ টাকা না দিলে তাকে হত্যা করে লাশ গুম করবে বলে হুমকি দেয়। শাকিলের স্ত্রী হাবিবা বেগম ব্যবসায়ী আনিসুল হককে টাকা না দিলে ধর্ষণ মামলা দিব বলে হুমকি দেয়। আনিসুল হক ভয়ে তার স্ত্রী ও তার মামাকে মুক্তিপণের টাকার বিষয়ে বললে, তারা টাকা জোগাড় করছে বলে অপহরণকারী দলকে জানায়। অপহরণকারীরা আনিসুল হকের কাছে থাকা১৫ হাজার ৫০০ টাকা তারা ছিনিয়ে নেয়।

খবর পেয়ে পুলিশ রাত সাড়ে ৯ টার দিকে শহরের কাউতলী গ্রামের আলম ভবনের চতুর্থ তলা থেকে ব্যবসায়ী আসিসুল হককে উদ্ধার করে ও সংবদ্ধ অপহরণ চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেফতার করে।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসলাম হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গ্রেপ্তারকৃত শাকিল কুখ্যাত অপহরনকারী, ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি ভাংচুরসহ একাধিক মামলার পরোয়ানাভুক্ত পলাতক আসামি। অপহরণ চক্রের মূলহোতা হচ্ছে শাকিল।

তিনি আরো জানান, এই চক্রে দুইজন নারী সদস্য রয়েছে, তাদের কাজ হচ্ছে বিভিন্ন জনের সাথে মোবাইল ফোনে সখ্য গড়ে তোলা। এক পর্যায়ে দেখা করতে আসলে তারা তাদের কে অপহরণ করে নিয়ে মুক্তিপণ আদায় করা। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ করণীয় বিষয়ে স্টেকহোল্ডার সভা অনুষ্ঠিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 28 February 2023, 1526 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে, বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের অংশিদারিত্বে ও বৃটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশ এর পিফোরডি প্রকল্পের আওতায় ডিষ্ট্রিক্ট পলিসি ফোরাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আয়োজনে বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে স্টেকহোল্ডার সভা আজ ২৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বিকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম।

banner

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডিষ্ট্রিক্ট পলিসি ফোরামের সভাপতি মোহাম্মদ আরজু মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ জয়নাল আবেদীন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ রুহুল আমিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ সাইফুল ইসলাম।

সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডিষ্ট্রিক্ট পলিসি ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শরীফউদ্দিন।

বাল্য বিবাহের প্রতিরোধ বিষয়ে আলোচনা করেন জেলা রেজিষ্টার লুৎফুল কবির, সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ফরহাদ হোসেন ভূঁইয়া, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রহিম বিজন, আ. ফ. ম কাউছার এমরান, অধ্যক্ষ সোপানুল ইসলাম, ইউপি চেয়ারম্যান আল আমিনুল হক পাভেল, প্রধান শিক্ষক মোঃ সাহিদুল ইসলাম, মোস্তফা কামাল, কাজী ইয়াহিয়া মাসুদ, পুরোহিত উজ্জ্বল চক্রবর্তী, ইপসার জেলা কো অর্ডিনেটর গোলাম সারওয়ার, পাদ্রী তিতাস দাস গুপ্ত প্রমুখ।

সভায় বক্তারা বাল্য বিবাহের কুফল তুলে ধরে বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান।

সভায় জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা, সাংবাদিক, শিক্ষক, এনজিও প্রতিনিধি, ইমাম, কাজী, পুরোহিত, পাদ্রী, ভুক্তভোগীগনসহ পিফরডি প্রকল্পের রিজিয়ন কো-অর্ডিনেটর মোঃ আলমগীর মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
ভায় সঞ্চালক ছিলেন ডিপিএফর সদস্য এস.এম শাহীন।

ফুটপাতে জমজমাট পিঠা ব্যবসা ক্রেতাদের উপচেপড়া ভীড়

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 18 January 2024, 721 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শীত পড়ার সাথে সাথেই জমে উঠেছে পিঠা ব্যবসা। শহরের বিভিন্ন ফুটপাতে প্রায় শতাধিক দোকানে সকাল থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চলে হরেক রকমের পিঠা বিক্রির ধূম।

banner

শহরের বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার মানুষ ফুটপাত থেকে পিঠা কিনে খায়। আবার কেউ কেউ অর্ডার দিয়ে পিঠা তৈরী করে বাড়িতে নিয়ে যায়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহরের বিভিন্ন ফুটপাতের বেশ কয়েকটি দোকানে সারা বছরই পিঠা বিক্রি করা হয়। তবে শীতকালে বেড়ে যায় পিঠার দোকানের সংখ্যা।

সরজমিনে দেখা গেছে, শীত পড়ার সাথে সাথে পৌর শহরের মেড্ডা বাসস্ট্যান্ড, কুমারশীল মোড়, লোকনাথ উদ্যানের সামনে (ট্যাংকের পাড়) শহরের কেন্দ্রস্থল কোর্ট রোডের পৌর সুপার মার্কেট, সিটি সেন্টারের সামনে, আধুনিক পৌর সুপার মার্কেটের সামনে, মসজিদ রোড, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের সামনে, মধ্যপাড়া বর্ডার বাজার, কাজীপাড়া সাবেরা সোবহান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সড়ক, রেলওয়ে স্টেশনের সামনে, কান্দিপাড়া মাদরাসা রোড, কাজীপাড়া জেলা ঈদগাহ ময়দানের সামনে, ডাঃ ফরিদুল হুদা রোড, টি.এ. রোড আশিক প্লাজার সামনে, মৌড়াইল ডাক বাংলার মোড়, জেলা পরিষদ মার্কেটের সামনে, কাউতলী জেলা পরিষদের মার্কেটের সামনে, সড়ক বাজারসহ শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন রাস্তার ফুটপাত ও শহরের বিভিন্ন মহল্লার মোড়ের পিঠা বিক্রি করা হয়।

পিঠা ব্যবসায়ী সকাল ১০টার পর থেকেই মাটির চুলা, এলপি গ্যাস ও কোরোসিনের চুলা ও বাক্স নিয়ে বসে যান ফুটপাতে। এসব দোকানে চিতল পিঠা চিতই), চুয়া পিঠা (মেরা পিঠা), ভাঁপা পিঠা, পোয়া পিঠা (তেলের পিঠা) ও পাটিসাপটা পিঠা করা হয়। তবে ক্রেতাদের কাছে চিতল পিঠা ও ভাপা পিঠারই কদর বেশী।

ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী খেজুরের গুড়, ধনেপাতা-কাঁচা মরিচ দিয়ে ভাঁপা পিঠা তৈরী করা হয়। এ ছাড়া চিতল পিঠার সাথে ক্রেতাদেরকে সরিষার ভর্তা ও সিদল শুটকির ভর্তা দেয়া হয়। ক্রেতারাও গরম গরম পিঠা পেয়ে খুশী।

প্রতিটি বড় সাইজের ভাঁপা পিঠা ১৫ টাকা ও ছোট সাইজের ভাঁপা পিঠা ১০ টাকা, চিতল পিঠা ১০ টাকা, ছোট সাইজের চিতই পিঠা ৫ টাকা করে বিক্রি করা হয়। এছাড়াও চুয়া পিঠা প্রতিটি ৫টাকা করে বিক্রি করা হয়।

শহরের শ্রমজীবী মানুষরাই মূলত এসব পিঠার ক্রেতা। এছাড়াও শহরে শপিং করতে আসা গৃহিনীরা চাহিদামতো পিঠা কিনে বাসায় নিয়ে যান। বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা থেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেকেই আসেন ফুটপাতে পিঠা কিনতে। সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চলে পিঠা-বেচা-বিক্রি।

শহরের আধুনিক সুপার মার্কেটের সামনের পিঠা বিক্রেতা আকবর আলী জানান, প্রতিদিন তিনি আড়াই থেকে তিন হাজার টাকার পিঠা বিক্রি করেন। এতে তার ৫০০/৬০০ টাকা লাভ হয়। তিনি বলেন, আগে তিনি প্রতিদিন ৫/৬ কেজির চালের গুঁড়ার পিঠা বিক্রি করলেও বর্তমানে ৭/৮ কেজি চালের গুড়ার পিঠা বিক্রি করতে পারেন। তিনি বলেন, প্রতিদিন সকাল ১১টার পর তিনি দোকান নিয়ে বসেন। রাত ১০/১১টা পর্যন্ত চলে তার বেচা-কেনা। তিনি বলেন, তার দোকানে চিতই ও ভাঁপা পিঠাই বেশী বিক্রি হয়। ধনে পাতা ও কাঁচা মরিচ দিয়ে তৈরী ভাঁপা পিঠা এবং নারকেল-খেজুরের গুড় দিয়ে তৈরী ভাঁপা পিঠার চাহিদাই বেশী। তিনি জানান, অনেকেই তার কাছ থেকে পিঠা কিনে বাসা-বাড়িতে নিয়ে যান।

শহরের কাজীপাড়ার জেলা ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন রাস্তার পাশের পিঠা বিক্রিতা আসমা বেগম বলেন, তিনি মূলত চিতই পিঠা বিক্রি করেন। তিনি বলেন, মহান আল্লাহতায়ালার কৃপায় বেচা-বিক্রি ভালো হচ্ছে। তিনি বলেন, চিতই পিঠার সাথে ক্রেতাদের চাহিদানুযায়ী সরিষার ভর্তা ও শুটকির ভর্তা দেন। তিনি বলেন, প্রতিদিন তিনি ৬/৭ কেজি চালের গুড়ার পিঠা বিক্রি করতে পারেন।

আধুনিক সুপার মার্কেটের সামনে পিঠা কিনতে আসা রফিক ও জুয়েল নামের দুই বন্ধু জানান, তাদের বাড়ি জেলার কসবা উপজেলার শাহপুর গ্রামে। তারা হোস্টেলে থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে পড়াশুনা করেন। তারা বলেন, শীতের দিনে বাড়িতে মা-চাচীরা তাদেরকে হরেক রকমের পিঠা বানিয়ে খাওয়াতেন। হোস্টেলে থাকায় তারা এখন মা-চাচীর হাতে তৈরী পিঠা খাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তারা বলেন, সুযোগ পেলেই তারা ফুটপাত থেকে চিতই পিঠা ও ভাঁপা পিঠা কিনে নিয়ে যান হোষ্টেলে।

পৌর এলাকার মেড্ডার বাসিন্দা শিপন মিয়া বলেন, তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করেন। পরিবার-পরিজন নিয়ে ইচ্ছে করলেই গ্রামের বাড়িতে যেতে পারেন না। তাই তিনি ফুটপাত থেকেই হরেক রকমের পিঠা কিনে বাসায় নিয়ে যান।

পুষ্প আক্তার নামে একজন মহিলা জানান, তিনি শপিং করতে মার্কেটে এসেছিলেন। শপিং শেষে বাসায় যাওয়ার সময় পরিবারের সদস্যদের জন্য পিঠা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।