চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ৩১ মে শুক্রবার সকালে উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে র্যালিটি বের হয়ে প্রধান সড়ক পর্যন্ত গিয়ে ফিরে আসে।
র্যালিতে প্রশাসনের কর্মকর্তা, শিক্ষক, চিকিৎসকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ অংশ নেয়।
পরে উপজেলা সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাবেয়া আক্তারের সভাপতিত্বে এসময় বক্তব্য রাখেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস.এম. রাহাতুল ইসলাম, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোঃ লুৎফুর রহমান, উপজেলা শিক্ষা অফিসার শাহ ইলিয়াস উদ্দিন, প্রধান শিক্ষক মো. মাহতবাব মিয়া, শিক্ষক দিলিপ দেবনাথ, মোঃ রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
বক্তারা তামাকের কুফল সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন। তামাক ব্যবহারে মানব দেহের ক্ষতি ও অর্থ অপচয় হয়। তামাক প্রতিরোধে আইনের প্রয়োগ বেশি দরকার বলে মনে করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ১৭ আগস্ট বৃহস্পতিবার সকালে আখাউড়া নাসরিন নবী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে উপজেলার ৩ টি কলেজের পরীক্ষার্থীরা বাংলা পরীক্ষায় অংশ নেয়। প্রথম দিনের পরীক্ষায় ৩ জন অনুপস্থিত ছিল।
জানা গেছে, এবছর আখাউড়া উপজেলার শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজ, জাহানারা হক মহিলা কলেজ এবং ক্যামব্রিয়ান কলেজের পুরাতন পরীক্ষার্থীসহ ৮১৩ জন পরীক্ষার্থী ছিল।
এরমধ্যে শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজের ৫০৫ জন, জাহানারা হক মহিলা কলেজের ১৯৯ জন এবং ক্যামব্রিয়ান কলেজের ১০৫ জন। বাকীরা পুরাতন পরীক্ষার্থী।
তবে, প্রথম দিন বাংলা পরীক্ষার্থী ছিল ৭৯৭ জন। এর মধ্যে ৭৯৪ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়। ৩ জন অনুপস্থিত ছিল। এবছর প্রথম বারের মতো কেন্দ্রে সিসির ক্যামেরায় স্থাপন করা হয়।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অংগ্যজাই মারমা এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন নকল মুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় কালের কণ্ঠ’র সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনার প্রতিবাদে ক্লিনিক গুলোতে কর্মবিরতি ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। কর্মসূচি থেকে সকল আসামিকে গ্রেফতারের জোর দাবি জানানো হয়।
এদিকে ঘটনার হোতা সুমন মিয়ার জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ ৬ আগস্ট রবিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে তার জামিন প্রার্থনা করা হলে নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো তার জামিন নামঞ্জুর হলো।
২৮ জুলাই আখাউড়া পৌর এলাকার রাধানগরের কমফোর্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসকের ভিজিট চাওয়ায় এক কর্মচারীকে অপহরণের চেষ্টা করা হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় দৈনিক কালের কণ্ঠ’র ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধির ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। তাকে বাঁচাতে গিয়ে আরো অন্তত পাঁচজন আহত হন।
এ ঘটনায় ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক আশীষ সাহা বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ২০-২৫ জনকে আসামি করে আখাউড়া থানায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের করেন। ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ পৌর এলাকার দেবগ্রামের (বরিশলের সাবেক বাসিন্দা) মাহফুজ মিয়া ও তার ছেলে সুমন মিয়াকে গ্রেপ্তার করে।
এদিকে হামলার ঘটনার প্রতিবাদ ও বাকি আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে রবিবার দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে কর্মবিরতি পালন করা হয়। বেলা ৩টার দিকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাধানগর চৌরাস্তা মোড়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিক মালিক সমিতির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে এ সময় বক্তব্য দেন কার্যকরী সদস্য মো. আব্দুল আওয়াল।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম সেলিম, সহসাধারণ সম্পাদক সুবল দাস, মো. রওশন মিয়া, পরিমল সাহা, কুদ্দুস মিয়া, শফিক মিয়া, বাবুল মিয়া, মো. পলাশ, জহর লাল চৌহান মো. আমীর, তুহিন মিয়া, দিব্যজিত পাল, বিশাল সাহা প্রমুখ। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদকব জহর লাল সাহা শারীরিক অসুস্থতায় উপস্থিত না থাকলেও কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। এ সময় বক্তারা অবিলম্বে বাকি আসামিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানান।
চলারপথে রিপোর্ট :
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতির কথা বলতেছে, বাংলাদেশও তো ভিসানীতির কথা বলতে পারে। ভিসানীতি দিছে তো কী হয়েছে?
আজ ২৭ জুন মঙ্গলবার বিকেলে আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী এ কথা বলেন।
আনিসুল হক বলেন, আমার সঙ্গে যখন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাম্বাসেডর সাহেবের কথা হয়েছে, তখন তিনি বললেন, আমি এসেছি ভিসানীতি কী তা বোঝাতে। আপনি কী বলবেন? আমি বললাম, এটা আওয়ামী লীগ বা বিএনপি যার বিরুদ্ধেই ব্যবহার করেন, সার্বভৌম দেশ হিসেবে আমি অপমানিত বোধ করেছি। কারণ, বাংলাদেশ একটি সার্বভৌম দেশ।
মন্ত্রী বলেন, তারপর বলেছি, আপনারা বলেছেন অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এটা করেছেন। আপনারা যদি পক্ষপাতিত্ব না করে এটা প্রয়োগ করেন, আমাদের আপত্তি নেই। আপনারা যদি একজনের বিরুদ্ধে এটা প্রয়োগ করেন, তাহলে অবশ্যই আমার কিছু বলার আছে। তারপর বলেছি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দেশ আপনার। আপনারা ভিসানীতি দিয়েছেন, তাতে আমার কিছু আসে যায় না।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের উন্নয়ন করেন বলেই কিন্তু অনেক সুদখোর, বিএনপির অনেক নেতা যারা দুর্নীতি করে পাঁচ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আপনারা আওয়ামী লীগের কর্মী, আপনারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কর্মী, আপনারা মুক্তিযুদ্ধ দেখা কর্মী, আপনাদের ঐক্যবদ্ধভাবে এই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হবে। বাংলাদেশের অস্তিত্ব নিয়ে আর কেউ খেলতে পারবে না।
সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজলসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় ২৭ ফেব্রুয়ারি বিকাল সাড়ে ৪টায় ৩২ কেজি গাঁজাসহ মাদক ব্যবসায়ী ২ সহোদরকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৯। গ্রেফতারকৃতরা হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের মৃত আবু সামার ছেলে মোঃ দুলাল মিয়া (৪৬) ও লোকমান মিয়া (৪২)। এই সময় মাদক বহনকারী দুটি সিএনজি জব্ধ করা হয়।
র্যাব-৯, সিপিসি -১, হবিগঞ্জ থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার বিকেলে র্যাব-৯ এর একটি আভিযানিক দল আখাউড়া উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের ধরখার বাস স্ট্যান্ড সংলগ্ন ভাই ভাই বেকারির সামনে অভিযান পরিচালনা করে দুটি সিএনজি থেকে ৩২ কেজি গাঁজাসহ তাদেরকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া, কসবা, বিজয়নগর উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত থেকে কম দামে গাজা সংগ্রহ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করত।
র্যাব-৯, সিপিসি-১ সূত্রে জানা যায়, আসামী লোকমান মিয়া একজন চিহ্নিত পেশাদার মাদক ব্যবসায়ী, তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন জেলায় একাধিক মাদকের মামলা রয়েছে, যা বর্তমানে বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন।
এ বিষয়ে র্যাব-৯, সিপিসি-১, হবিগঞ্জ ক্যাম্পের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মোহাম্মদ নাহিদ হাসান জানান, আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে গ্রেফতারকৃতদের’কে গাজা ও সিএনজিসহ আখাউড়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। মাদকের বিরুদ্ধে তাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান।
চলারপথে রিপোর্ট :
উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে স্থলপথে বাংলাদেশের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর। ভারতে পণ্য রপ্তানির পাশাপাশি যাত্রী পারাপারও হয়ে থাকে এ বন্দর দিয়ে। ধীরে ধীরে যাত্রীদের কাছে পছন্দের রুট হয়ে উঠছে আখাউড়া স্থলবন্দর। ফলে যাত্রীদের ভ্রমণ কর বাবদ সরকারের রাজস্ব আয়ও বাড়ছে। তবে যাত্রীর সঙ্গে রাজস্বের পরিমাণ বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত যাত্রীসেবা মিলছে না আখাউড়া স্থলবন্দরে। আন্তর্জাতিক এই স্থলপথের যাত্রীদের দুর্ভোগের শেষ নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৯৪ সাল থেকে আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশন দিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে পণ্য রপ্তানি বাণিজ্য চলছে। পরবর্তীতে বাণিজ্যিক গুরুত্ব বাড়ায় ২০০৮ সালে স্থল শুল্ক স্টেশন থেকে পূর্ণাঙ্গ বন্দর হিসেবে যাত্রা শুরু করে আখাউড়া স্থলবন্দর। বর্তমানে প্রতিদিন এক থেকে দেড় কোটি টাকার বরফায়িত মাছ, রড, সিমেন্ট, পাথর, তুলা, প্লাস্টিক ও কাঠের ফার্নিচারসহ বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি হয়ে থাকে। রপ্তানিকৃত পণ্য ত্রিপুরা থেকে সরবরাহ করা হয় উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্য রাজ্যগুলোতেও।
পণ্য রপ্তানি আয়ের পাশাপাশি সরকার যাত্রীদের ভ্রমণ কর বাবদও বিপুল রাজস্ব পায় আখাউড়া স্থলবন্দর থেকে। চিকিৎসা ও ভ্রমণের উদ্দেশ্যে প্রতিদিন আটশ থেকে এক হাজার যাত্রী আখাউড়া স্থলবন্দর ব্যবহার করে ভারত গমন করে থাকেন। বিভিন্ন উৎসবের সময় এই সংখ্যা প্রায় তিনগুণ হয়।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আখাউড়া স্থলবন্দর পার হলেই আগরতলা শহর। সেখান থেকে মাত্র মিনিট বিশেকের পথ পাড়ি দিলেই আগরতলা বিমানবন্দর। এছাড়া রেলস্টেশনও শহরের কাছাকাছি। এর ফলে আকাশ ও রেলপথ ব্যবহার করে বাংলাদেশি যাত্রীরা সহজে কলকাতা, গৌহাটি, দিল্লি, চেন্নাই, জয়পুর, গ্যাংটক ও শিলংসহ দেশটির পর্যটন শহরগুলোতে যাতায়াত করতে পারেন। এতে খরচও সাশ্রয় হয়। মূলত এসব কারণেই আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে যাত্রী পারাপার বাড়ছে। এছাড়া আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত নির্মাণাধীন চার লেনের জাতীয় মহাসড়কের কাজ শেষ হলে আখাউড়া স্থলবন্দর যাত্রী পাপারের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যস্ততম রুট হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশন কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যমতে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে পারাপার হয়েছেন দুই লাখ ৫৭ হাজারের কিছু বেশি যাত্রী। এ সময় যাত্রীদের ভ্রমণ কর বাবদ সরকার রাজস্ব পেয়েছে প্রায় আট কোটি টাকা। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বন্দর দিয়ে যাত্রী পারাপারের সংখ্যা ছিল প্রায় ৪৩ হাজার। সরকার রাজস্ব পেয়েছে দুই কোটি ৮০ লাখ টাকার কিছু বেশি। বিগত অর্থবছরে যাত্রীর ভ্রমণ কর পাঁচ শ টাকা থাকলেও চলতি অর্থবছর থেকে তা বাড়িয়ে এক হাজার টাকা করা হয়েছে। ভারতীয় যাত্রীরা বাংলাদেশ ভ্রমণের জন্যও এই কর দিতে হয়। তবে বন্দরে কাঙ্ক্ষিত যাত্রীসেবা না পাওয়ার অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
জরাজীর্ণ কাস্টমস ভবনের ছোট্ট এক কক্ষে কাস্টমসের কাজ শেষ করে যাত্রীদের আরেক ভবনে যেতে হয় ব্যাগেজ স্ক্যানিংয়ের জন্য। এরপর সেখান থেকে বিজিবি চৌকি পার হয়ে যেতে হয় ইমিগ্রেশন ভবনে। রুগ্ণ ইমিগ্রেশন ভবনটিও পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে আরও কয়েক বছর আগেই। তবুও ঝুঁকি নিয়ে এই ভবনে যাত্রীদের ইমিগ্রেশনের কাজ করা হয়।
ছোট্ট ইমিগ্রেশন ভবনের বেশির ভাগ অংশের পলেস্তারা খসে পড়েছে। এছাড়া পর্যাপ্ত জায়গা না পেয়ে ভবনের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় যাত্রীদের। পাশাপাশি যাত্রীদের জন্য সুপেয় পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেটের ব্যবস্থাও নেই।
আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে নিয়মিত যাতায়াতকারী যাত্রী আবুল কাশেম জানান, ঢাকা থেকে ভারতের সব শহরে ফ্লাইট সুবিধা নেই। এছাড়া ঢাকা থেকে ফ্লাইটে খরচও বেশি। এক্ষেত্রে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আগরতলা থেকে আকাশপথে ভারতের বিভিন্ন শহরে সহজেই যাতায়াত করা যায়। এতে সময় যেমন বাঁচে, তেমনি খরচও লাগে কম। ফলে আখাউড়া স্থলবন্দর ব্যবহার করেন তিনি। তবে আগরতলা স্থলবন্দরের তুলনায় আখাউড়া স্থলবন্দরে যাত্রীদের জন্য তেমন কোনো সেবা নেই।
ফজলে রাব্বি নামে আরেক যাত্রী জানান, ট্রলি সুবিধা না থাকায় যাত্রীদের লাগেজ বহনে সমস্যা হয়। এছাড়া ইমিগ্রেশন ভবনে যাত্রীদের জন্য সুপেয় পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট নেই। এতে করে নারী, শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। অথচ আগরতলা স্থলবন্দরে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এবং ব্যাগেজ স্ক্যানিং সুবিধা মিলে একই ছাদের নিচে। সেখানে যাত্রীদের জন্য আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।
আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে নিয়মিত যাতায়াতকারী মাহাবুবুর রহমান নামের এক যাত্রী জানান, ছোট্ট ইমিগ্রেশন ভবনে একসঙ্গে অনেক যাত্রী বসার সুবিধা নেই। ফলে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এতে গরমের সময় ভোগান্তি বাড়ে। এছাড়া বৃষ্টি হলে জমে হাঁটুপানি। এসব সমস্যা নিরসন করলে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে যাত্রী পারাপার আরও বাড়বে এবং সরকারও বেশি রাজস্ব পাবে বলে জানান তিনি।
যাত্রী দুর্ভোগ কমানোর পাশাপাশি যাত্রীদের কাঙ্ক্ষিত সেবা প্রদানের লক্ষ্যে আখাউড়া স্থলবন্দরে আধুনিক ইমিগ্রেশন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সংশ্লিষ্টরা। ২০১৬ সালে পুরাতন ইমিগ্রেশন ভবনের পাশে শুরু হয় ছয়তলা বিশিষ্ট নতুন ইমিগ্রেশন ভবনের নির্মাণকাজ। তবে আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন জটিলতায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) আপত্তিতে নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে ভবনের নকশা পরিবর্তন এবং দুইতলা ভবন নির্মাণের শর্তে নির্মাণকাজ শুরুর অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু একতলা করার পর ২০২০ সালের মাঝামাঝি সময়ে আবারও বাধা আসে বিএসএফের তরফ থেকে। ফলে এখনো বন্ধ রয়েছে নতুন ইমিগ্রেশন ভবনের নির্মাণকাজ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট পুলিশের পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) হাসান আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, আমরা নিজেরাও ঝুঁকি নিয়ে কাজ করি। যাত্রীদের দুর্ভোগ কমানোর জন্য ইমিগ্রেশন পুলিশ সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। নতুন ইমিগ্রেশন ভবনটি হয়ে গেলে যাত্রীরা এক ছাদের নিচেই সব ধরনের সেবা পাবেন। তখন আর দুর্ভোগ থাকবে না। তবে সীমান্ত আইন জটিলতায় ইমিগ্রেশন ভবনের নির্মাণকাজটি বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে দুই দেশের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা চলছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্মাণকাজ ফের শুরু হবে।