চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় পুকুর থেকে ভাসমান অবস্থায় মো. জুনায়েদ মোস্তফা (১০) নামে এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ ১৪ জুন শুক্রবার বিকাল ৪টার দিকে উপজেলা শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজের পুকুর থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে আখাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। মৃত মো. জুনায়েদ মোস্তফা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলা ফুলবাড়িয়া গ্রামের মিয়া বাড়ির জলিল মিয়ার ছেলে। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, মৃত জুনায়েদ মোস্তফার পরিবার কলেজ পাড়া এলাকায় অস্থায়ী ভাবে বসবাস করতো।
চলারপথে নিউজ :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া: পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে টানা পাঁচ ছুটি শেষে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
২৬ এপ্রিল বুধবার সকালে বাংলাদেশ থেকে মাছ, রডসহ বিভিন্ন পণ্য রপ্তানির মধ্যদিয়ে কার্যক্রম শুরু হয়।
এতে বন্দরে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।
আখাউড়া স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বলেন, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে উভয় দেশের ব্যবসায়ী নেতাদের সিদ্ধান্তে গত ২১ এপ্রিল থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচ দিন আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি-রপ্তানির কার্যক্রম বন্ধ ছিল। ছুটি শেষে সকাল থেকে বন্দর দিয়ে আবারও পণ্য আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য শুরু হয়েছে।
আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ইনচার্জ স্বপন চন্দ্র দাস জানান, ছুটির সময়ে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ থাকলেও আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে সীমান্ত পথে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের চলাচল স্বাভাবিক ছিল।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যসহ উত্তর-পূর্ব ভারতের সাতটি পাহাড়ি রাজ্যে পাথর, ছোট বড় মাছ, প্লাস্টিক সামগ্রী ও সিমেন্টসহ অর্ধশতাধিক পণ্য রপ্তানি করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ২০২২ উপলক্ষে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সেরা নির্বাচিত করেছেন উপজেলা প্রশাসন। এরমধ্যে ৩ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান, তিনজনকে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান প্রধান, তিনজন শ্রেষ্ঠ শিক্ষকসহ আরো কিছু ক্যাটাগরিতে সেরার স্বীকৃতি প্রদান করেছে।
সম্প্রতি এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে আখাউড়া উপজেলা প্রশাসন।
স্কুল পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান হয়েছেন কাজী মোঃ তারেক। তিনি উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের আমোদাবাদ আলহাজ্ব শাহ্আলম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
কাজী মোঃ তারেক উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত একজন অভিজ্ঞ ও দক্ষ শিক্ষক। তিনি এম.এ, এম.এড, ডিগ্রীর পাশাপাশি আইন বিষয়ে এল.এল.বি, এল.এল.এম এবং এস.এইচ.আর.এল ডিগ্রী অর্জন করেছেন। তিনি অত্যন্ত দক্ষতা, যোগ্যতা ও সুনামের সাথে বিদ্যালয়ে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়া সত্বেও বিদ্যালয়ের ফলাফল ও অন্যান্য কার্যক্রম সন্তোষজনক।
কলেজ পর্যায়ে আখাউড়া ক্যামব্রিয়ান কলেজের অধ্যক্ষ গৌবিন্দ চন্দ্র রায় ও মাদ্রাসা পর্যায়ে টনকি ছাদেকুল উলুম আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. আব্দুল কাইউম শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান প্রধান হয়েছেন।
তাছাড়া শ্রেষ্ঠ শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান হিসেবে আখাউড়া ক্যামব্রিয়ান কলেজ (কলেজ পর্যায়), নাছরীন নবী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (স্কুল পর্যায়) ও টনকি ছাদেকুল উলুম আলিম মাদ্রাসাকে (মাদ্রাসা পর্যায়) নির্বাচিত করা হয়।
কলেজ পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শ্রেণী শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন আখাউড়া শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজের প্রভাষক (ইংরেজি) ফয়জুন্নেসা লিজা। স্কুল পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন দেবগ্রাম সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (বিজ্ঞান) মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ খান ও মাদ্রাসা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শ্রেণি শিক্ষক হয়েছেন টনকি ছাদেকুল উলুম আলিম মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক (আরবি) মো. রেজাউল কবির।
শ্রেষ্ঠ স্কাউট শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. সেলিম। শ্রেষ্ঠ গার্ল গাইড শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন নাছরীন নবী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কাজী সাফিয়া খাতুন।
শ্রেষ্ঠ রোভার শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন আখাউড়া শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজের প্রভাষক (রসায়ন) এ জেড এম শামসুল আরেফিন। শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থী হিসেবে দেবগ্রাম সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী অদ্বীপ্ত চক্রবর্তী, টনকি ছাদেকুল উলুম আলিম মাদ্রাসার আলিম প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মারিয়া আক্তার ও আখাউড়া ক্যামব্রিয়ান কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসলিমা খানমকে নির্বাচিত করা হয়।
শ্রেষ্ঠ স্কাউট নির্বাচিত হয়েছেন দেবগ্রাম সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. ইমতিয়াজুর রহমান। শ্রেষ্ঠ রোভার নির্বাচিত হয়েছেন আখাউড়া শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. ইমন।
শ্রেষ্ঠ স্কাউট গ্রুপ নির্বাচিত হয়েছেন মো. ইমতিয়াজুর রহমান ও তার দল। তারা দেবগ্রাম সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। এ ব্যাপারে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অংগ্যজাই মারমা বলেন, বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে আবেদনের পরিপেক্ষিতে তাদেরকে নির্বাচিত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন সম্পর্কে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ধরনের আগ্রহ সৃষ্টি হবে।
স্টাফ রিপোর্টার:
বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) আরো ১০টি পণ্যকে মান সনদের আওতায় এনেছে। বিএসটিআই’র সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী কাউন্সিলের ৩৭তম সভায় বাধ্যতামূলক মান সনদের তালিকায় ১০টি নতুন পণ্যকে মান সনদের অন্তর্ভূক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রোববার রাজধানীর তেজগাঁওস্থ বিএসটিআই’র প্রাধন কার্যালয়ে এই প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী কাউন্সিলের এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। শিল্পমন্ত্রী ও বিএসটিআই কাউন্সিলের চেয়ারম্যান নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এ সভায় সভাপতিত্ব করেন। নতুন যে ১০টি পণ্য মান সনদের আওতায় আনা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে ডিসপোজেবল ডায়াপারস, ফেসওয়াস, পেট্রোলয়িাম জেলি, রুটি (ফ্ল্যাটব্রেড/ টরটিলা), এ্যারোসলস, গিজার, শেভিং ফোম/জেল, আই কেয়ার, হেয়ার ডাইস লিকুইড ও শু-পলিশিং লিকুইড। বর্তমানে বিএসটিআই’র বাধ্যতামূলক মান সনদের আওতাভুক্ত পণ্যের সংখ্যা ২২৯টি। বিএসটিআই কাউন্সিলের প্রথম ভাইস চেয়ারম্যান শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি, দ্বিতীয় ভাইস চেয়ারম্যান শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া, এ সভায় শিল্প, স্বরাষ্ট্র, অর্থ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, বাণিজ্য, বস্ত্র ও পাট, তথ্য, কৃষি, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, আইসিটি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, তথ্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ টেলিভিশন, কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, বিসিএসআইআর, আমদানি ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রক, ইপিবি এবং এমসিসিআই, ক্যাবসহ কাউন্সিলের সদস্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। বিএসটিআই’র মহাপরিচালক ও কাউন্সিলের সদস্য সচিব মোঃ আবদুস সাত্তার এ সভা পরিচালনা করেন।
সভাপতির বক্তৃতায় শিল্পমন্ত্রী বলেন, বিএসটিআই সকলের জন্য একটি আস্থার জায়গা তৈরি করেছে। পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে বিএসটিআইকে আরও সক্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। অভ্যন্তরীণ বাজার এবং রপ্তানির ক্ষেত্রে পণ্যের গুণগত মান নিয়ন্ত্রণ করা এবং মানসম্মত পণ্য উৎপাদনে সহায়ক ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি বলেন, বর্তমান বিশ্বে হালাল পণ্যের সার্টিফিকেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিএসটিআইকে পণ্যের হালাল সার্টিফিকেশনের ক্ষেত্রে গুণগত মান ঠিক রেখে এগিয়ে যেতে হবে।
জনগণের স্বার্থ রক্ষার্থে প্রয়োজনে বিএসটিআইকে আরও কঠোর ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানিয়ে কাউন্সিলের প্রথম ভাইস চেয়ারম্যান ও শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, ব্যবসায়ীরা করোনা মহামারিকে পূঁজি করে অতিরিক্ত মুনাফা করেছে। তারা পণ্যে ভেজাল দিচ্ছে, সিন্ডিকেট করছে। তিনি বলেন, ১৭ কোটি মানুষকে রক্ষায় বিএসটিআইকে দায়িত্ব নিতে হবে। স্বাস্থ্যসম্মত খাবার নিশ্চিত করতে হবে। এ লক্ষ্যে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয় রেখে পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে বিএসটিআইকে কাজ করতে হবে।
কাউন্সিল সভার পরে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বিএসটিআই’র ৯১ জন নবনিযুক্ত কর্মকর্তার নিয়োগ, যোগদান এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, বিএসটিআই’র মহাপরিচালক, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জনেন্দ্র নাথ সরকারসহ শিল্প মন্ত্রণালয় এবং বিএসটিআই’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়া স্থলবন্দরে গত দুই বছর ধরে গুদমে পড়ে থেকে পচে নষ্ট হয়ে গেছে ভারত থেকে আমদানি করা ২২৮ টন গম। যা এখন পশুখাদ্য হিসেবেও ব্যবহারের উপযোগী নয় বলে জানিয়েছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। ফলে গমের আমদানিমূল্য বাবদ ক্ষতির পরিমাণ অন্তত ৮০ লাখ টাকা। দফায় দফায় চিঠি দেওয়ার পরও আমদানিকারক গমগুলো ছাড়াতে আগ্রহী না হওয়ায় বিপাকে পড়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় গমগুলো ধ্বংসকরণের প্রস্তুতি নিচ্ছে শুল্ক কর্তৃপক্ষ। যদিও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের দাবি, শুল্ক কর্তৃপক্ষের গড়িমসির কারণেই নির্ধারিত সময়ে গমগুলো খালাস করা যায়নি।
সংশ্লষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২০২১ সালের আগস্ট থেকে প্রথমবারের মতো আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে গম আমদানি শুরু হয়। মূলত ব্যবসায়ীদের চাহিদা মতো পণ্য আমদানির সুযোগ না থাকায় অনুমোদিত পণ্য আমদানি করে ভালো মুনাফা করতে না পারায় বন্দর দিয়ে কম পণ্য আমদানি করেন ব্যবসায়ীরা।
তবে, শুল্কমুক্ত হওয়ায় ২০২১ সালের আগস্ট থেকে গম আমদানির মাধ্যমেই সচল ছিল আমদানি বাণিজ্য। যদিও ২০২২ সালের মে মাসে গম রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত সরকার। তবে নিষেধাজ্ঞার পরও কয়েক মাস পর্যন্ত পূর্বের খোলা এলসির গমগুলো আমদানি হয় আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে। ২০২১-২২ অর্থবছরে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ৮৮ হাজার ৫২৪ মেট্রিক টন গম আমদানি হয়।
২০২২ সালে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে প্রায় সাড়ে ১১ হাজার টন গম আমদানি করে চট্টগ্রামের আলম ট্রেডার্স। প্রতিটন গমের আমদানি মূল্য ছিল ৩২৫ থেকে ৩৫০ মার্কিন ডলার। বাজারে চাহিদা থাকায় আমদানির পরপরই গমগুলো খালাস করে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। তবে ওই বছরের জুনে ভারতের ভারী বর্ষণের কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় গম আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে আগস্ট থেকে আবারও বন্দরে আসতে থাকে আটকে পড়া গমের চালান।
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের দাবি, পশ্চিমবঙ্গের রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান ভালো গমের সঙ্গে বৃষ্টিতে ভেজা গমও পাঠায়। যার পরিমাণ প্রায় ২২৮ টন। তাই ভালো গমগুলো প্রথমে খালাস করে পরবর্তীতে ভেজা গমগুলো ছাড়াতে গেলে আটকে দেয় শুল্ক কর্তৃপক্ষ। তাদের গড়িমসির কারণে নির্ধারিত সময়ে খালাস না করতে পারায় দীর্ঘসময় গুদামে পড়ে নষ্ট হতে থাকে গমগুলো। এসব গমে পোকা ধরেছে এবং পচে যাওয়ায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
আলম ট্রেডার্সের আখাউড়া স্থলবন্দর প্রতিনিধি মো. আক্তার হোসেন বলেন, গমগুলো ভেজা হওয়ায় রফতানিকারকের সাথে সমঝোতার ভিত্তিতে খালাসের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শুল্ক কর্তৃপক্ষ ছাড় দিব-দিচ্ছি করতে করতে গমগুলো আর নির্ধারিত সময়ে খালাস করা যায়নি। ফলশ্রুতিতে অবহেলায় গুদামে পড়ে থেকেই সবগুলো গম পচে নষ্ট হয়েগেছে। এগুলো এখন আর ছাড়ানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই, কারণ পশুখাদ্য হিসেবেও ব্যবহারের উপযুক্ত নেই গমগুলো।
এদিকে, দীর্ঘদিন ধরে গমগুলো গুদামে ফেলে রাখায় বিপাকে পড়েছে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ। গুদাম ভাড়া বাবদ পাওনা হয়েছে কয়েক লাখ টাকা। যা আর আদায়ের কোনো সম্ভাবনাও দেখছে না কর্তৃপক্ষ। এছাড়া গুদামে অন্য কোনো পণ্যও রাখা যাচ্ছে না। তবে গুদাম খালি করার লক্ষ্যে গমগুলো ধ্বংসের উদ্যোগ নিয়েছে শুল্ক কর্তৃপক্ষ।
আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, সবগুলো গমে পোকা ধরেছে এবং দুর্গন্ধও ছড়াচ্ছে। তবে আমদানিকারক গমগুলো আর ছাড়াতে আগ্রহী নয়। ফলে গুদামও খালি করা যাচ্ছে না। এতে করে বন্দর কর্তৃপক্ষও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এছাড়া বন্দরের বিদ্যমান সড়কটি চারলেন উন্নীতকরণ কাজের জন্য গুদামটি ভাঙা পড়বে। তাই দ্রুত গুদাম খালি করা প্রয়োজন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশনের সহকারী কমিশনার মো. ইমরান হোসেন বলেন, গমগুলো ভেজা এবং নিম্নমানের ছিল। তাই আমদানি নীতিবর্হিভূত হওয়ায় তখন ছাড় দেওয়া যায়নি। পরবর্তীতে আমদানিকারককে চিঠি দেওয়া হলেও গমগুলো খালাসে আগ্রহী নয় বলে জানায়। গমগুলো পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহারের উপযোগী কিনা- সেটি পরীক্ষা করে দেখার জন্য নমুনা পাঠানো হয়েছিল। পরীক্ষার রিপোর্টে বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ না করায় আবার রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। নতুন রিপোর্ট এলেই গমগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করে ধ্বংসের প্রক্রিয়া শুরু হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, বিএনপির শুভবুদ্ধির উদয় হোক। তারা ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড ছেড়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে সরকারের কোনো আপত্তি থাকবে না।
আজ ২৪ নভেম্বর শুক্রবার দুপুরে ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া খরমপুর কেল্লা শহীদের মাজার জিয়ারতকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, নির্বাচন নিয়ে বিএনপির কিছু বলার থাকলে তারা ইলেকশন কমিশনকে বলুক। কমিশন সেটি বিবেচনা করবে।
মন্ত্রী বলেন, যদি বিএনপি নির্বাচনে আসতে চায় আমরা তাদের সব সময় অভিনন্দন জানাই। ধ্বংসাত্মক কাজ ছেড়ে সাংবিধানিক পথে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা থাকবে।
এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অংগ্যজাই মারমা, কসবা-আখাউড়া সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপার মো. দেলোয়ার হোসেন, আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুল ইসলাম, আখাউড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার বাহার মালদার প্রমুখ।