চলারপথে রিপোর্ট :
লালমাই পাহাড়ের ঢালুতে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে আনারসের চাষ হয়েছে। হানিকুইন জাতের আনারসে হাসছে পাহাড়ের সদর দক্ষিণ উপজেলার বড় ধর্মপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা। স্থানীয় কৃষকরা দুই হেক্টর জমিতে আনারসের চাষ করেছেন। প্রথমবারে ভালো ফলন পেয়ে খুশি তারা। এই ফল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন অন্য কৃষকরাও।
সরেজমিনে শনিবার বড় ধর্মপুরে গিয়ে দেখা যায়, উদ্যোক্তা আলী নেওয়াজ, আবদুর রশিদ ও তার সহযোগীরা বাগান থেকে আনারস কাটছেন। কেটে এনে বাগানের পাশে স্তুপ করছেন। পাহাড়ি উঁচু নিচু পথ পেরিয়ে ট্রাক্টর বাগানের পাশে এসে পৌঁছেছে। স্তুপ করা আনারস ট্রাক্টরে তুলে দেয়া হচ্ছে। সেই আনারস চলে যাবে পাহাড়ি এলাকা সংলগ্ন কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশের দুতিয়াপুর ফিলিং স্টেশনের পাশে। সেখানে খুচরা পাইকারি আনারস বিক্রি করা হয়। পাহাড়ে আনারস চাষ দেখতে প্রতিদিন উৎসুক মানুষ ভিড় করেন। আনারস কেটে জমিতেই অনেক ক্রেতা খেতে শুরু করেন। বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে আনারসের মিষ্টি ঘ্রাণ। আনারসের রসে ভিজে যায় ক্রেতার মুখ ও হাত।
স্থানীয় দুতিয়াপুরের ক্রেতা কামাল হোসেন বলেন, লালমাই পাহাড়ে একসাথে এতো জমিতে আর আনারস চাষ হতে দেখিনি। ভালো ফলন হয়েছে। স্থানীয়রাও সাশ্রয়ী মূল্যে আনারস ক্রয় করতে পারছেন।
দত্তপুর গ্রামের ক্রেতা আবদুল হাসান। তিনি বলেন, তিনি ভ্যানে আনারস ও পেয়ারা কেটে বিক্রি করেন। পাহাড়ের আনারসের স্বাদ ও গন্ধ ভালো হওয়ায় তিনি এখান থেকে আনারস কিনে নেন।
উদ্যোক্তা আলী নেয়াজ বলেন, অন্য সবজিতে বেশি সার ও কীটনাশক দিতে হয়। খরচ বেশি হয়। তাই আমরা এলাকার কয়েকজন কৃষক মিলে আনারসের চাষ করেছি। এটাতে খরচ কম। কৃষি অফিস আমাদের পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেছে। প্রথম বছরে ভালো ফলন হয়েছে। ৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আড়াই লাখ টাকা বিক্রি করেছি। আশা করছি আরো ৬-৭ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবো। আমাদের দেখে অন্য কৃষকরাও আরনারস চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
উপ-সহকারী কৃষি অফিসার এম এম শাহারিয়ার ভূঁইয়া বলেন, এখানে হানিকুইন জাতের আনারসের ৬০ হাজার চারা লাগানো হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে আমরা উদ্যোক্তাদের পরামর্শ দিয়েছি। ফলন আসার পর মাঠ পরিদর্শন করে দেখেছি। ভালো ফলন হয়েছে। এতে কৃষক খুব খুশি।
উপজেলা কৃষি অফিসার জোনায়েদ কবির খান বলেন, লালমাই পাহাড়ের প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে আনারসের চাষ হয়েছে। তাদের সফলতা দেখে অন্য কৃষকরাও আগ্রহী হয়েছেন। লালমাই পাহাড়ের আনারস সম্প্রসারণের ভালো সম্ভাবনা রয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় সেপটিক ট্যাংক পরিষ্কার করতে নেমে প্রাণ হারালেন ২ ছেলেসহ বাবা। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার দক্ষিণ বহদ্দারকাটা গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- আনোয়ার হোসেন (৭০), তার ২ ছেলে শাহাদত হোসেন (৪৮) ও শহীদুল ইসলাম (২১)।
পুলিশ জানায়, সেফটি ট্যাংক পরিষ্কার করতে নেমে বিষক্রিয়ায় শাহাদাত ও শহীদুল ঘটনাস্থলে মারা যান। এসময় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন আনোয়ার হোসেন। তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত আড়াইটার দিকে তিনি মারা যান।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. ইউনুছ।
চলারপথে রিপোর্ট :
সিপিসি-১, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্প, র্যাব-৫, রাজশাহীর একটি আভিযানিক দল আজ ১২ সেপ্টেম্বর রাতে বিশেষ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানাধীন শ্যামপুর ইউনিয়নের বাজিতপুর পুরাতন গ্রামস্থ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ১। মোঃ তোজাম্মেল হক (৩৭) (মূলহোতা), পিতা- মোঃ ফয়েজ উদ্দিন, ২। মোঃ মাসুদ রানা (৪৫), পিতা- মৃত লায়েস উদ্দিন, উভয় সাং-বাজিতপুর (পুরাতন গ্রাম) , থানা- শিবগঞ্জ, জেলা- চাঁপাইনবাবগঞ্জদ্বয় কে ১০০(একশত) গ্রাম হেরোইন সহ গ্রেফতার করে।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায় উল্লেখিত আসামী মোঃ তোজাম্মেল হক মাদক বিক্রির উদ্দেশ্যে মাদক বহন করে অন্যত্র যাচ্ছে। এই সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব এর একটি চৌকস আভিযানিক দল শিবগঞ্জ থানার বাজিতপুর গ্রামে ফাঁকা রাস্তায় তাকে আটক করে।
আটকের পরে জিজ্ঞাসা বাদে সে জানায় যে, সে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে মাদক সংগ্রহ করে বিক্রির উদ্দেশ্যে মোঃ মাসুদ রানা এর বাড়ীতে হেফাজতে রাখে। আভিযানিক দলটি তাকে নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে উক্ত ব্যক্তির বাড়িতে গিয়ে নিরপেক্ষ সাক্ষীদের উপস্থিতিতে তল্লাশি করে তার ঘর থেকে ১০০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করে এবং তাকে আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে সে আরও জানা যায় যে মো: তোজাম্মেল হক প্রায়শঃই মাদক ক্রয় করে উক্ত ব্যক্তির কাছে হেফাজতে রেখে তার মাধ্যমে এলাকার বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করত।
উপরোক্ত ঘটনায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। র্যাব-বিশেষ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তা জানানো হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
আকস্মিক বন্যায় আফগানিস্তানে অন্তত ৩৩ জন নিহত হয়েছেন বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ২৭ জন। মূলত ভারী বর্ষণের জেরে আকস্মিক বন্যা দেখা দিলে হতাহতের এই ঘটনা ঘটে।
বাড়ির ছাদ ধসে পড়ার কারণে বেশিরভাগ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে জানানো হয়েছে। মূলত ব্যাপক বৃষ্টিপাতের জেরে শত শত বাড়িঘর ধ্বংস ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেছে।
এদিকে মানুষের পাশাপাশি গবাদি পশুদের অবস্থাও বিপর্যস্ত। প্রায় ২০০টি গৃহপালিত পশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মুখপাত্র। এছাড়া প্রায় ৮০০ হেক্টর কৃষি জমি ও ৬০০ কিলোমিটার রাস্তা ক্ষতির মুখে পড়েছে।
বন্যায় সবথেকে বেশি বিপর্যস্ত পশ্চিম ফারাহ, হেরাত, কান্দাহার ও জাবুল প্রদেশ। দেশটির আবহাওয়া দফতর সতর্ক করে জানিয়েছে, এখনই বিপর্যয় কাটার কোনো সম্ভাবনা নেই। আফগানিস্তানের বেশিরভাগ প্রদেশে আগামী দিনে আরও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে সতর্ক করা হয়েছে। ৩৪টি প্রদেশের সিংহভাগই এই বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হবে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
‘গাছ লাগিয়ে যত্ন করি সুস্থ প্রজন্মের দেশ গড়ি’ এই প্রতিপাদ্যে হবিগঞ্জে বৃক্ষরোপন অভিযান ও জেলা বৃক্ষমেলা ২০২৩ উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ ১৮ জুলাই মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসনের নিমতলায় হবিগঞ্জ বন বিভাগের আয়োজনে মেলার উদ্বোধন করেন সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট মোঃ আবু জাহির।
হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অন্যান্যের মাঝে পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলি, সিলেট বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক তারেক রহমান বক্তব্য দেন। পরে শহরে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হয়।
এর আগে অতিথিরা মেলার স্টল পরিদর্শন করেন। মেলায় ফুল, ফল, ওষুধিসহ বিভিন্ন জাতের গাছের চারা প্রদর্শন করা হয়েছে। এতে ২০ স্টল স্থাপন করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
পারিবারিক শত্রুতার জেরে নেত্রকোনার পূর্বধলার হিরনপুরে বড় ভাবিকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে দেবর। সেই সাথে গুরুতর যখম করেছে শিশু ভাতিজা আলিফকেও। আজ ৩ আগস্ট বৃহস্পতিবার দুপুরে পূর্বধলার কুমারকান্দা গ্রামের নিজ বসত ঘরে এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে।
পরিবারের বড় ছেলে খোকন একসময় বাদাম বিক্রি করলেও পরবর্তীতে বিদেশে গিয়ে অর্থ সম্পদ উপার্জন করা নিয়েই সৃষ্টি হয় দ্বন্দ্ব। প্রতিবেশী স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে অর্থ সম্পদ নিয়ে পাঁচ ভাই ও পিতা মাতার সাথে বিরোধ চলে আসছিল বড় ছেলে খোকন মিয়া ও তার স্ত্রী রানু আক্তারের।
এ বিরোধের জেরেই পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ঘরের ভেতর ধারাল ছুরি দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় রানু আক্তারকে।
নিহত রানু আক্তার পূর্বধলা উপজেলার জারিয়া গ্রামের শামসুদ্দিনের মেয়ে।
মৃতপ্রায় অবস্থায় আহত শিশু সন্তান আলিফকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এমন হত্যাকাণ্ডের খবরে ঘটনাস্থলে ভিড় করেন আশপাশের কয়েকটি গ্রামের অন্তত সহস্রাধিক নারী-পুরুষ। কান্নায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন নিহতের স্বামী ও স্বজনরা। হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তারা।
মূলত পিতা-মাতার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদেই এমন হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে ঘাতক সুজন মিয়া (৩০), রুবেল মিয়া (২৮) ও সুমন মিয়া (২৬)। হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে অন্যরা পালিয়ে গেলেও স্থানীয়রা ঘরের বাইরে থেকে তালাবদ্ধ করে দেওয়ায় পালাতে পারেনি সুজন ও তার মা।
হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন ঘাতক সুজন মিয়া। কিন্তু তার দাবি দীর্ঘদিনের পারিবারিক ক্ষোভ থেকে একাই এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।
এ ঘটনায় জড়িত ঘাতক সুজন ও মা রাবেয়া বেগম (৫৮)-কে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যান্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন পূর্বধলা থানার ওসি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, পারিবারিক বিরোধ থেকে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা প্রতিরোধে সামাজিক জনসচেতনতার পাশাপাশি সোচ্চার হতে হবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের। তবেই কমতে পারে এমন হত্যাকাণ্ড।