অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কিছু আইনি জটিলতা থাকলেও বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের জোর কূটনৈতিক তৎপরতা ও আইনি কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
আজ ২৬ জুন বুধবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে সংরক্ষিত আসনে আওয়ামী লীগের সদস্য ফরিদা ইয়াসমিনের এক লিখিত প্রশ্নের উত্তরে এ তথ্য জানান তিনি। প্রশ্নোত্তর পর্বটি টেবিলে উত্থাপিত হয়। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারিমন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একুশ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ একাধিক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি তারেক রহমানকে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কিছু আইনগত জটিলতা রয়েছে। তবে, সব জটিলতা আইনি প্রক্রিয়ায় নিরসন করে এই অপরাধীকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসা ও তাকে প্রাপ্য সাজার মুখোমুখি করার বিষয়ে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এ উদ্দেশ্য জোর কূটনৈতিক তৎপরতা ও আইনি কার্যক্রম একইসঙ্গে চলছে।
তিনি বলেন, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্দেশে কূটনৈতিক তৎপরতা ও আইনি কার্যক্রম একইসঙ্গে চলমান রয়েছে। যুক্তরাজ্য সরকারের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষার মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরগুলো এ উদ্দেশ্যেই কাজ করে যাচ্ছে।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় তারেক রহমান ওরফে তারেক জিয়াসহ ১৫ জন আসামি বর্তমানে পলাতক রয়েছে উল্লেখ করে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। বিদেশে পলাতক আসামি মওলানা তাজউদ্দীন, মো. হারিছ চৌধুরী (গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ বাংলাদেশের মাটিতে মারা গেছে) ও রাতুল আহম্মেদ বাবু ওরফে রাতুল বাবুদের বিরুদ্ধে ইন্টাপোলের রেড নোটিশ জারি করা আছে।
তিনি জানান, এছাড়াও পলাতক আসামিরা যেসব দেশে অবস্থান করছে সেসব দেশের সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে তাদের ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে এ বিষয়ে নানামুখী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সহযোগিতা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই বিভিন্ন সময়ে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানকে একাধিক চিঠি দিয়েছেন বলে সংসদকে জানান। তিনি আন্তর্জাতিক ফোরামে তাদের সঙ্গে স্বাক্ষাতে তাদের ব্যক্তিগত সহযোগিতাও কামনা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে খুনিদের অবস্থানের বিষয়ে আইনগত জটিলতা থাকায় এ বিষয়ে প্রত্যাশিত অগ্রগতি হয়নি। খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বর্তমানে প্রচলিত কূটনীতির পাশাপাশি সংশ্লিষ্টদেশগুলোর আইন অনুযায়ীও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা ও একুশ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত বিদেশে পলাতক আসামিদের দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তি কার্যকর করার লক্ষ্যে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশ জারি করা হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় কার্যকর করার বিষয়ে কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র, আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠান পরস্পরের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের মধ্যে মেজর (অব.) নূর চৌধুরী বর্তমানে সপরিবারে কানাডায়, আব্দুর রশিদ ও মেজর (বরখাস্ত) শরিফুল ইসলাম ডালিম পাকিস্তান বা লিবিয়ায়, লে, কর্নেল (অব.) রাশেদ চৌধুরী আমেরিকা এবং রিসালদার মোসলেহ উদ্দিন খান ভারতে অবস্থান করছে বলে জানা যায়। এছাড়া লে. কর্নেল (অব.) আজিজ পাশা জিম্বাবুয়ে অবস্থানকালে মারা যায় বলে জানা যায়।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে ফাঁসির আদেশপ্রাপ্ত ১২ জন আসামির মধ্যে ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে বলেও জানান সরকার প্রধান।
স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মো. আবদুল্লাহর প্রশ্নের লিখিত জবাবে সরকার প্রধান বলেন, ই-বর্জ্য ব্যবহার ও সঠিকভাবে রিসাইক্যাল করার লক্ষ্যে সরকার একটি কার্যকর নীতিমালা গ্রহণের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বিষয়ে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহের কার্যক্রম চলমান ও পরবর্তীতে অংশীজনের মতামত গ্রহণের মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হবে। ই-বর্জ্য রিসাইকেলের জন্য প্লান্ট তৈরি করা হবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
ভোলা-২ আসনের আলী আজমের প্রশ্নের লিখিত জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে ৫৭৫টি ইউনিটের মাধ্যমে ৩৩ লাখ ৫০ হাজার ২৭৪ জন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি শনাক্ত করে নিবন্ধন ও পরিচয়পত্র (সুবর্ণ নাগরিক কার্ড) প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে নারী প্রতিবন্ধী ১৩ লাখ ১২ হাজার ৫৯৪ জন।
ফরিদা ইয়াসমিনের অপর এক প্রশ্নের লিখিত জবাবে সংসদ নেতা জানান, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট হতে এ পর্যন্ত কল্যাণ অনুদান ও করোনাকালীন আর্থিক সহায়তা হিসেবে সারাদেশে ১৩ হাজার ৫৮২ জন সাংবাদিক ও সাংবাদিক পরিবারের মধ্যে ৪৫ কোটি ২৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বিএনপি নেতাদের আটক ও জামিন বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের বক্তব্যের ব্যাপারে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, এরমধ্যে কৃষিমন্ত্রী মহোদয় বলেছেন তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন তার উনার (কৃষিমন্ত্রীর) ব্যক্তিগত অভিমত। তা আমাদের দলের নয়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন এটা দলের অভিমত নয়। আইনমন্ত্রী দৃঢ়তার সাথে বলেন, বিএনপির নেতা যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদেরকে নির্দিষ্ট মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিচার এবং তাদের জামিনের ব্যপারে শুধু আদালত কথা বলতে পারে। আর কেউ নয়।
আজ ১৯ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ার সড়ক বাজারে নির্বাচনী গণসংযোগে এসে সাংবাদিকদের সাথে তিনি এসব কথা বলেন।
‘গণভবনের নির্দেশে আইন চলে আদালতের নির্দেশে নয়’ বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী’র এমন অভিযাগ প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, উনি (রিজভী) কোথায় বসে বসে বাণী ছাড়েন। উনার বাণীগুলো সম্পূর্ণ অসত্য, তথ্যভিত্তিক নয়। বাংলাদেশে বিচার বিভাগ স্বাধীন বলে তিনি মন্তব্য করে বলেন, যখন বিএনপি ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার পরিবারকে হত্যা করে এই দেশে স্বৈর শাসক চালাচ্ছিল তখন যেমন বিচার বিভাগকে করায়ত্ত করা হয়েছিল সেই অবস্থা এখন আর নাই।
কসবা-আখাউড়ার সংসদ সদস্য প্রার্থী আনিসুল হক বলেন, কসবা-আখাউড়ার জনগণের কাছে আমার চাওয়া হচ্ছে, তাদের ভালোবাসা। আমি গত ১০ বছর তাদের সেবা করেছি। তাদের ভালোবাসা পেয়েছি। কসবা আখাউড়ার উন্নয়নের জন্য যা কিছু করতে হয় তাই আমি করবো।
ষ্টেশনে এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামলীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক তাকজিল খলিফা কাজল, মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম. এ. মতিন, আখাউড়া উত্তর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ শাহজাহান, দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ জালাল উদ্দিন, যুবলীরে যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল মমিন বাবুল, ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাব উদ্দিন শাপলু, সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন নয়ন প্রমুখ।
পরে মন্ত্রী সড়ক বাজারে সাধারণ মানুষের সাথে গণসংযোগ করে লিফলেট ও ফুল দেন। গণনসংযোগ শেষে সেখান থেকে মন্ত্রী খড়মপুর কল্লা শাহ (র.) মাজার জিয়ারত করেন।
এর আগে তিনি বেলা ১২টায় ঢাকা থেকে মহানগর প্রভাতী ট্রেনে আখাউড়া রেলওয়ে জংশন ষ্টেশনে এসে পৌঁছেন।
এসময় ষ্টেশনে সহস্রাধিক আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগস অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীলা তাকে অভিনন্দন জানান। তিনি অপেক্ষমান নেতাকর্মীদেরকে কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার আহবান জানান।
অনলাইন ডেস্ক :
নতুন সরকার গঠনের পর প্রথম মন্ত্রিসভা বৈঠকে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের একগুচ্ছ নির্দেশনা দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ ১৫ জানুয়ারি সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নতুন সরকারের প্রথম আনুষ্ঠানিক মন্ত্রিসভা বৈঠক হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন।
বৈঠকের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, মন্ত্রিপরিষদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানানো হয়। প্রধানমন্ত্রী তার তরফ থেকে মন্ত্রীদের নির্দেশনা দিয়েছেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টির ওপর উনি (প্রধানমন্ত্রী) জোর দিয়েছেন তা হলো মুদ্রাস্ফীতি এবং দ্রব্যমূল্য। মুদ্রাস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য তিনি সর্বাত্মক প্রচেষ্টা নিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের নির্দেশনা দিয়েছেন। বিশেষত, আগামী রমজানে যেন দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং রমজানে যেসব পণ্যের চাহিদা বাড়ে, সেগুলোর সরবরাহ পরিস্থিতি যেন স্বাভাবিক থাকে সে ব্যাপারেও নির্দেশনা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নির্বাচনী যে ইশতেহার দেওয়া হয়েছিল, সে মোতাবেক সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ইশতেহারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত বিষয়গুলোকে ভিত্তি করে যেন কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয় এবং সেই কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ, বাস্তবায়ন ও মনিটরিং করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
সরকারপ্রধান কৃষি উৎপাদনের কথা বলেছেন জানিয়ে মাহবুব হোসেন বলেন, কৃষি উৎপাদন যেন কোনোভাবেই ব্যাহত না হয়, সেদিকে নজর রাখতে বলেছেন। কৃষিপণ্য সংরক্ষণে আরও সংরক্ষণাগার তৈরির নির্দেশনা দিয়েছেন। স্মার্ট বাংলাদেশের চারটি স্তম্ভ- স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট অর্থনীতি এবং স্মার্ট জনগণ। এই চারটি স্তম্ভকে ভিত্তি করে যে মন্ত্রণালয় যে অংশের সঙ্গে জড়িত সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা নিয়ে বাস্তবায়ন করতে নির্দেশনা দিয়েছেন।
‘যেসব প্রকল্প শেষ পর্যায়ে আছে, সেগুলো দ্রুত শেষ করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। যে প্রকল্প থেকে জনগণ সরাসরি উপকার পাবে সেগুলো দ্রুত নিতে বলেছেন। নতুন প্রকল্প নেওয়ার আগে সেটি কীভাবে জনগণের কল্যাণে লাগবে, তা খুব ভালোভাবে পরীক্ষা করতে বলছেন। সরকারি ক্রয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির কথা বলেছেন। জানিয়ে দিয়েছেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের কথাও। সব মন্ত্রণালয়কে একই নীতি অনুসরণ করতেও বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, সামাজিক নিরাপত্তার কর্মসূচি যেগুলো আছে সেগুলো যেন প্রকৃত উপকারভোগীরা পায়, তা নিশ্চিত করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী সরকারি শূন্য পদ পূরণের নির্দেশনা দিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, নারী উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়নে সাফল্যের যে ধারা তৈরি হয়েছে, সেটি যেন কোনো অবস্থাতেই ব্যাহত না হয় সেদিকে নজর দিতে বলেছেন।
‘রপ্তানি বহুমুখীকরণ এবং নতুন বাজার অনুসন্ধান করে সেখানে প্রবেশে কীভাবে সহায়তা করা যায় সে বিষয়েও নির্দেশনা দিয়েছেন। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য এবং কৃষিজাত পণ্য; গার্মেন্টস শিল্পের বিকাশে যেভাবে সহায়তা দেওয়া হয়েছিল- এই তিনটি ক্ষেত্রেও যেন বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে সে নির্দেশনাও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’
প্রধানমন্ত্রী তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর (আইসিটি) শিক্ষাকে বেশি গুরুত্ব দিতে বলেছেন জানিয়ে মাহবুব হোসেন বলেন, সেটি যেন কর্মমুখী হয়। ফিল্যান্সিং যেন আরও বাড়তে পারে, সেই নির্দেশনা দিয়েছেন। যুব সমাজকে খেলাধুলা ও সংস্কৃতিচর্চার সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে বিভিন্ন কর্মসূচি নিতে বলেছেন, যেন তারা মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ থেকে বিরত থাকতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী অগ্নিসন্ত্রাস ও নাশকতা সমন্বিতভাবে মোকাবিলা করার নির্দেশনা দিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্য সংক্রান্ত বিষয়ে মানুষের যে কষ্ট হচ্ছে, সেটি লাঘবের জন্য তিনি কার্যকর পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দিয়েছেন।
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে না- এ প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আজ মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠক হলো। সেখানে প্রধানমন্ত্রী সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন। দেখেন কাল থেকে কী হয়, কাল থেকে নিশ্চয়ই কার্যক্রম দেখবেন, আমি আশা করছি।
দুর্নীতি বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সুনির্দিষ্ট করে কী বলেছেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতি প্রতিরোধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করতে বলেছেন। সরকারি ক্রয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে বলেছেন।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, উনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন আরএমজিকে (তৈরি পোশাকশিল্পে) আমরা বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দিয়েছিলাম বলেই এ খাতে এত ভালো করেছি। চামড়া ও পাট এ দুটি কাঁচামাল আমাদের দেশেই হয়। এ দুটিকেও গার্মেন্টসের মতো সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার জন্য উনি বলেছেন। যেন এই তিনটি ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজারে আমরা সাফল্য অর্জন করতে পারি।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের রীতি হচ্ছে- প্রথম মন্ত্রিসভা বৈঠক যখন হয় তিনি (প্রধানমন্ত্রী) তখন তার কলিগদের অফিসিয়ালি একত্রে পান। তিনি তখন তার পক্ষ থেকে একটি প্রারম্ভিক বক্তব্য দেন। যেহেতু প্রথম মিটিং সে উপলক্ষে তিনি তার তরফ থেকে দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য দিয়েছেন। সেখানে তিনি যে বিষয়গুলোতে জোর দিয়েছেন সেগুলো আমি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করলাম।
চলারপথে রিপোর্ট :
রাজধানীর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে পানিতে ডুবে রাফি আহমেদ হিমেল (৮) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
আজ ১৩ অক্টোবর শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে কেরানীগঞ্জের সারিঘাট এলাকার খালে এ ঘটনা ঘটে।
মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
হাসপাতালে রাফির বাবা গাড়িচালক রায়হান মিয়া জানান, তারা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ইকুরিয়ায় থাকেন। দুপুরে ছেলেকে নিয়ে বাড়ির পাশে সারিঘাট খালে গোসল করতে যান। সেখানে গোসলের এক পর্যায়ে সাঁতার না জানা রাফি পানিতে তলিয়ে যায়। এরপর তার নজরে এলে পানির নিচ থেকে তাকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করেন।
স্বজনরা জানায়, দুই ভাইয়ের মধ্যে বড় রাফি। সে স্থানীয় একটি স্কুলে প্রথম শ্রেণিতে পড়তো।
চিকিৎসকের বরাত দিয়ে ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া জানান, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
সদ্য সমাপ্ত দেশের পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জনগণ নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পেরেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের আমলে সুষ্ঠু ভোট হয়, সিটি নির্বাচন এর প্রমাণ বলেও দাবি করেন তিনি।
আজ ৩ জুলাই সোমবার দুপুরে রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে দুই মেয়রকে শপথবাক্য পাঠ করান প্রধানমন্ত্রী। আর কাউন্সিলরদের শপথবাক্য পাঠ করান স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে গাজীপুর, খুলনা ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
গত ২১ জুন রাজশাহী ও সিলেটের সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপিসহ আরও কয়েকটি দলের ভোট বর্জনের মধ্যে দুই সিটিতেই মেয়র পদে অনেকটা সহজেই জয় পান নৌকার প্রার্থীরা।
রাজশাহীর মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন টানা দ্বিতীয়বারের মতো বিজয়ী হলেন। তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। আর সিলেটের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী লন্ডন আওয়ামী লীগের নেতা। তিনি দেশে এসে মনোনয়ন পেয়ে প্রথমেই সিলেটের নগরপিতা হয়ে বাজিমাত করলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক সময় ভোট মানেই ছিল জুলুম-যন্ত্রণা। এখন গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই জনগণ নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে। এই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের উন্নয়ন শুধু নগরভিত্তিক না। আমরা তৃণমূল পর্যায়ে উন্নয়ন পৌঁছে দিতে চাই। একদম গ্রামে উন্নয়ন পৌঁছে দিতে চাই।
নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের নিজ নিজ এলাকার উন্নয়নে মনোযোগী হওয়ার তাগিদ দেন সরকারপ্রধান। এ সময় তিনি রাজশাহী ও সিলেটের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে এর সমাধানের তাগিদ দেন।
মেয়র-কাউন্সিলরদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা একটি কথা মনে রাখবেন, জনগণের ভোটে আপনারা নির্বাচিত। এজন্য জনগণের কথা চিন্তা করতে হবে। আপনি যে দলেরই হোন না কেন।
এর আগে সকালে গাজীপুর, খুলনা ও বরিশালে নবনির্বাচিত মেয়র-কাউন্সিলরদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে অনেকে অন্য দলের লোকও আছেন। আমরা কিন্তু কে ভোট দিল না দিল সেটা দেখি না। দেশের সব জনগণের জন্য কাজ করি। আমি যা করি জনগণের জন্য করি, জনগণের কল্যাণে করি। আমি ঘর করে দিয়েছি, সেখানে কে ভোট দিল না দিল সেটা দেখিনি। সব উন্নয়নের ক্ষেত্রেই আমরা সেটা করি।
সবাইকে জনকল্যাণে কাজ করার তাগিদ দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, জনগণ আপনাদের স্বতস্ফূর্ত ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। মানুষের আকাঙ্ক্ষা আপনাদের পূরণ করতে হবে।
মেয়র-কাউন্সিলদের উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু আখ্যায়িত করে শেখ হাসিনা বলেন, উন্নয়ন আপনাদের ওপর নির্ভর করে। আমাকে তিনশ সিট দেখতে হয়। আপনারা নিজ নিজ এলাকা দেখবেন। আপনি আপনার এলাকা নিয়ে পরিকল্পনা করবেন। মানুষের ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে হবে।
এ সময় প্রত্যেক মেয়র-কাউন্সিলরকে নিজ নিজ এলাকার ড্রেনেজ ও পয়ঃনিষ্কাশনব্যবস্থা উন্নত করার তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি জানান, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের জন্য প্রচুর বরাদ্দ আছে। সেই বরাদ্দ যেন সঠিকভাবে কাজে লাগানো হয় সেই তাগিদ দেন তিনি।
অনলাইন ডেস্ক :
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি নিয়মিত বাণিজ্যিক ফ্লাইটে সাধারণ মানুষ বঙ্গবন্ধু কন্যার মহান হৃদয় ও মমতার এক অনন্য বৈশিষ্ট্য প্রত্যক্ষ করলেন। তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযাত্রী হিসেবে ভ্রমণ করছিলেন।
সুইজারল্যান্ডের জেনেভা থেকে দেশে ফেরার পথে ফ্লাইটের যাত্রীরা বিস্মিত ও আনন্দিত হন, যখন তারা দেখলেন যে, শেখ হাসিনা নিজেই তাদের সাথে দেখা করছেন। তিনি একের পর এক তাদের আসনে আসছেন ও বিমানের আরোহী সকলের সাথে কুশল বিনিময় করছেন।
শেখ হাসিনা জাতীয় পতাকাবাহী বিমানের বাণিজ্যিক ফ্লাইটে যাত্রীদের সাথে কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ফ্লাইটে তাদের আসনের পাশে প্রধানমন্ত্রীকে পেয়ে অনেকেই বিস্মিত ও অবাক হয়েছেন।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় মেয়ে শেখ হাসিনার সাথে ছবি তুলতে চাইলে তিনি অনেক যাত্রীর অনুরোধ মেনে নেন। তিনি বাচ্চাদের সাথেও খুব স্নেহের সাথে কথা বলেন ও তাদের সাথে কিছুক্ষণ মজার গল্প করেন এবং কয়েকটি শিশুকে কোলে তুলে নেন।
এ সময় কয়েকজন যাত্রী গত সাড়ে ১৪ বছরে দেশের উন্নয়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাদের মতামত তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রী ১৪-১৫ জুন অনুষ্ঠিত ‘ওয়ার্ল্ড অফ ওয়ার্ক সামিট : সোশ্যাল জাস্টিস ফর অল’- এ যোগদান শেষে সুইজারল্যান্ডের জেনেভা থেকে দেশে ফিরেছেন।
প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি নিয়মিত ফ্লাইট গতরাত ১টা ৫৫ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সূত্র : বাসস