বাংলাদেশ সৃষ্টিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে: প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, 30 June 2024, 198 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কিত জ্ঞান-বিজ্ঞানের নিবিড় চর্চার পাশাপাশি আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশ সৃষ্টিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনবদ্য অবদান চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী’ উপলক্ষে আজ এক বাণীতে একথা বলেন তিনি।

আগামীকাল ১ জুলাই সোমবার প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঐতিহাসিক ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী’ পালিত হচ্ছে জেনে সন্তোষ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ উপলক্ষ্যে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন’।

তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের এ বছরের প্রতিপাদ্য-‘তরুণ প্রজন্মের দক্ষতা বৃদ্ধিতে উচ্চ শিক্ষা’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী জানান, ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারত ভেঙে অত্র অঞ্চলে যে রাষ্ট্র ব্যবস্থার সৃষ্টি হয়, সেই রাষ্ট্রটি বাংলা ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর নিরাপদ আবাসভূমি ছিল না – এ সত্যটি সবার আগে অনুধাবন করতে পেরেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের তৎকালীন তরুণ ছাত্র শেখ মুজিবুর রহমান, যিনি সবার আগে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলন গড়ে তুলতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন এবং কালক্রমে হয়ে উঠেছেন বাঙালি জাতির পিতা, ‘বঙ্গবন্ধু, বাঙালির ইতিহাসের মহানায়ক ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। সেই থেকে ইতিহাস-ঐতিহ্য সম্পর্কিত জ্ঞান ও বিজ্ঞানের নিবিড় চর্চা এবং দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সক্রিয় ভূমিকা রাখার পাশাপাশি ‘বাংলাদেশ’ নামক একটি জাতিরাষ্ট্র সৃষ্টিতে এ প্রতিষ্ঠানটির অনবদ্য অবদান চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ১৯৫২’র ভাষা-আন্দোলন, জাতির পিতা ঘোষিত ১৯৬৬’র ছয়-দফার ভিত্তিতে স্বায়ত্তশাসন আন্দোলন এবং তার (বঙ্গবন্ধু) আহ্বানে ১৯৭১’র মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং পরবর্তীকালে সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন, অসাম্প্রদায়িক সাংস্কৃতিক সত্তার বিকাশ ও দেশের গণমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক-কর্মচারীরা অগ্রভাগে থেকে অব্যাহতভাবে নেতৃত্ব প্রদান করছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার দূরদর্শী নির্দেশনায় ১৯৭৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয় অর্ডিন্যান্স ঘোষণার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন গঠন করা হয়, যার মূল বার্তা ছিল- বিশ্ববিদ্যালয়ে চিন্তার স্বাধীনতা ও মুক্ত-বুদ্ধি চর্চার পরিবেশ সৃষ্টি করা।

আওয়ামী লীগ যখনই সরকার গঠন করেছে তখনই জাতির পিতার শিক্ষা দর্শনের আলোকে দেশের শিক্ষা খাতের উন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে ১২টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, চিকিৎসা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১৬টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেকগুলো বিজ্ঞান ও গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করি। গবেষণা ও প্রযুক্তির জন্য অনুদান ১০০ কোটিতে উন্নীত করি। আমরা জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন, বঙ্গবন্ধু বৃত্তি এবং জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ এর প্রবর্তন করি।’

তিনি বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছরে ‘আমরা দেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ ও গুণগত মান বৃদ্ধিতে ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত আমরা ২৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং ৫৪টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছি। ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০’, ‘বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষার কৌশলী পরিকল্পনা: ২০১৮-২০৩০’ সহ প্রয়োজনীয় নীতিমালা এবং কলেজ পর্যায়ের উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে ২০২৩-২০৩১ মেয়াদি ন্যাশনাল স্ট্রাটেজিক প্ল্যান প্রণয়ন করেছি। আমরা বিদেশ থেকে মাস্টার্স ও পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের জন্য ‘প্রধানমন্ত্রী ফেলোশিপ’ প্রবর্তন করেছি।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মান নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিল এ্যাক্ট-২০১৬ পাস করেছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধি, দেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ রিসার্চ এন্ড এডুকেশন নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হয়েছে। এর ফলে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিভিন্ন ফ্যাকাল্টির ছাত্র ও শিক্ষক আন্তর্জাতিক একাডেমিক কমিউনিটি এবং তথ্য ভান্ডারের সাথে সংযুক্ত হওয়ার সুযোগ পেয়েছে।

তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা প্রসারের মাধ্যমে দেশপ্রেমে উজ্জীবিত ও চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সুবিধা আহরণে সক্ষম প্রজন্ম গড়ার লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের সরকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণার উন্নয়নে নানা উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। আমরা শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসিক সংকট নিরসনে হল ও ভবন নির্মাণ করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, ২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে শিক্ষা, গবেষণার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণে নতুন নতুন বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও গবেষণা কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৩টি অনুষদ, ১৩টি ইনস্টিটিউট, ৮৪টি বিভাগ, ৫৮টি ব্যুরো ও গবেষণা কেন্দ্র, ছাত্র-ছাত্রীদের ১৯টি আবাসিক হল, ৪টি হোস্টেল এবং ১৮৮টি উপাদানকল্প কলেজ ও ইনস্টিটিউট রয়েছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ৪৪ হাজার ৮৯৫ জন এবং পাঠদান ও গবেষণায় নিয়োজিত রয়েছেন প্রায় ১ হাজার ৯৮১ জন শিক্ষক। শেখ হাসিনা বলেন, অধিকতর উন্নত গবেষণার মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভবিষ্যতে যেকোনো সংকট উত্তরণে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে এবং দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষা-গবেষণা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তিসহ জ্ঞানের সকল শাখায় এগিয়ে যাবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রাক্তন শিক্ষার্থী হিসেবে তিনি আশা প্রকাশ করেন, ‘জ্ঞান ও আলোর পথের অভিযাত্রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নতুন দিগন্ত তৈরি করবে’।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দেশপ্রেম, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে তাদের অর্জিত জ্ঞান, মেধা-মনন ও সৃজনশীলতা প্রয়োগ করে ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ তথা তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নিজ নিজ অবস্থান থেকে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবেন।

তিনি ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী’ উপলক্ষে আয়োজিত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন। সূত্র: বাসস

Leave a Reply

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বচ্ছতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ৮৩…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা ও সঠিক প্রক্রিয়ায় ৮৩জন Read more

জননিরাপত্তার নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক ঐক্যমত…

চলারপথে রিপোর্ট : জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক ঐক্যমত একান্ত Read more

বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ গ্রেফতার ১

চলারপথে রিপোর্ট : বিজয়নগর উপজেলা থেকে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ ১ Read more

সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বাঞ্ছারামপুরে ১৪৪ ধারা…

চলারপথে রিপোর্ট : বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে উপজেলা ও Read more

বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশীজন ও…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় “বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশীজন ও Read more
ফাইল ছবি

আশুগঞ্জে ট্রেনের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জে ট্রেনের ধাক্কায় মাথায় আঘাত পেয়ে অজ্ঞাতনামা Read more

আখাউড়ায় বিনামূল্যে ধান বীজ বিতরণ চলারপথে রিপোর্ট : আখাউড়া উপজেলায় Read more

কুয়েতে সড়ক দুর্ঘটনায় আবু বাক্কার নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : কুয়েতে প্রাইভেটকার দুর্ঘটনায় শেখ আবু বাক্কার (৩৪) Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাস উল্টে যাত্রী নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : সরাইল উপজেলায় বাস উল্টে গোপী কান্ত ঘোষ Read more

ট্রাক-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ একজন নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে অটোরিকশার Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিশু নাট্যমের বিতর্ক প্রতিযোগিতা

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিশু নাট্যমের ৩৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে Read more

ইয়াবা ট্যাবলেটসহ দুই পাচারকারী গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জে ১হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ গোপাল রায় Read more

সেপ্টেম্বরের মধ্যে এআই আইনের খসড়া তৈরি হবে: আইনমন্ত্রী

জাতীয়, 21 March 2024, 391 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) আইনের খসড়া তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক।

তিনি বলেন, আইন করার জন্য আমাদের অভিজ্ঞতা এবং জ্ঞানেরও প্রয়োজন। এ আইনের খসড়া করার জন্য আমরা আজকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সে খসড়ায় কি কি থাকবে, সেটা নিয়ে আজকে আমরা আউটলাইনটা আলাপ করেছি। সেই আউটলাইন অনুযায়ী আমরা কাজ করবো।

আজ ২১ মার্চ বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

আইনমন্ত্রী বলেন, আমরা মনে করি আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই যেভাবে পৃথিবী বদলে দিচ্ছে, সেটার ব্যাপারে একটা আইন যেরকম সারা পৃথিবীতে চিন্তা করা হচ্ছে বাংলাদেশেও চিন্তা করা উচিত। সেই চিন্তা করার জন্যই আমরা আজকে প্রাথমিকভাবে বসেছিলাম। আজকে আইনের একটা আউটলাইন আমরা করলাম। এ বিষয়টা এত ব্যাপক এক দিনের আলোচনায় শেষ হবে না। এ আইনের মধ্যে যে জিনিসগুলো থাকা উচিত, মনুষ্যত্বের দিক থেকে যে বিষয়গুলো রক্ষা করা উচিত- সেগুলোর বিষয়ে আলোচনা করেছি। ‌সেই আলোচনা শুরু হলো এবং আলোচনা চলবে।

আউটলাইনে কি কি থাকছে- জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, এই মুহূর্তে সেটা আমরা বলতে চাই না। কারণ এটাও পরিবর্তনশীল। ‌বিষয়টা পর্যবেক্ষণ করার জন্য এবং অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য, অন্যান্য জায়গায় কি আইন হচ্ছে সেটা একটু পরীক্ষা করার জন্য এই সময়টুকু নিয়েছি। আমি বিশ্বাস করি এই সময়ের মধ্যে আমরা এই আইনটা তৈরি করতে পারব।

এই আইনের ফলে কি হবে জানতে চাইলে আনিসুল হক বলেন, এটি আমাদের কাছেও জিজ্ঞাস্য। এর কারণ হচ্ছে আমরা কতটুকু নিয়ন্ত্রণ করবো। এই জিনিসটুকু আমি বলতে পারি- মানুষের অধিকার সংরক্ষণের জন্য, সর্বক্ষেত্রে সেটা সংরক্ষণের জন্য, মানুষের সুবিধার জন্য এআইকে যাতে ব্যবহার করা যায় সেই চেষ্টাই আমরা করব।

এরপর ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, অত্যন্ত সময়োপযোগী একটি সিদ্ধান্ত আইনমন্ত্রী মহোদয় গ্রহণ করেছেন। গত ফেব্রুয়ারিতে তিনি আমাকে নির্দেশনা দেন যে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে আমরা কি ভাবছি ও আইন প্রণয়নের ব্যাপারে আমরা কতটা প্রস্তুত। উনার নির্দেশনা পাওয়ার পর আমরা তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা মহোদয়ের সঙ্গে আলোচনা করি এবং যারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে পড়াশোনা করেছেন তাদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা এ সিদ্ধান্তে উপনীত হই যে, ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ, স্মার্ট গভর্নেন্স, স্মার্ট অর্থনীতি করতে হলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে বাইপাস করে কিছু করতে পারবো না।

তিনি বলেন, এখন বড় একটা চ্যালেঞ্জ ও বড় একটা বিতর্ক হচ্ছে, আমরা কতটুকু উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করবো কতটুকু অপপ্রয়োগে নিয়ন্ত্রণ করবো। এ বিষয় নিয়ে আজকে আমরা আইনমন্ত্রী মহোদয়ের কাছে এসেছিলাম। আইনমন্ত্রী মহোদয়ও বললেন একটা আউটলাইন আমরা দাঁড় করিয়েছি। আগামী দিনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার পরিবর্তনটা কত দ্রুত হচ্ছে, এর ব্যবহারটা কতটুকু আমরা আমাদের অর্থনীতির সমৃদ্ধি আনার জন্য, কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য করতে পারি। বিদেশি বিনিয়োগ পাওয়ার জন্য রপ্তানি আয় বৃদ্ধির জন্য এটার কি কি ব্যবহার হতে পারে যেটা উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করবে, উদ্যোক্তাদের নতুন নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে দেবে।

জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, একই সঙ্গে বর্তমান বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যে ভয়ানক পরিণতি আশঙ্কা করা হচ্ছে যা বিভিন্ন গবেষক এবং উদ্ভাবক বলছেন, সেটাকে মাথায় রেখে আইনমন্ত্রী মহোদয় আমাদেরকে নির্দেশনা দিয়েছেন। একদিকে উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা করা এবং এটার যে অপপ্রয়োগ সেটার প্রতিরোধ করা। আমাদের জনগণ, জাতীয় নিরাপত্তা এবং বিশ্ব নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের কোনো অপপ্রয়োগ যাতে না হয় সেটাকে মাথায় রেখেই আমরা আইনটা প্রণয়ন করব। সেটার জন্য আমরা একটা সময় চেয়েছি। আইনমন্ত্রী আমাদেরকে যথেষ্ট সময় দিয়েছেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইন দেখেছি, পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের এক্সিকিউটিভ অর্ডার দেখেছি, দক্ষিণ কোরিয়াসহ যেসব দেশ গত ২০১৭ সাল থেকে বিভিন্ন পলিসি, গাইডলাইন, আইন করেছে সেগুলো স্টাডি করছি। পাশাপাশি বাংলাদেশের মেধাবী ছেলে-মেয়ে যারা পড়াশোনা করেছে এবং জানে বোঝে তাদের মতামত নিয়ে এবং স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে পরামর্শ করে মন্ত্রীর কাছে আবার আসবো।

দেয়াল চাপায় একই পরিবারের চারজন নিহত

জাতীয়, 17 November 2023, 531 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
কক্সবাজারের টেকনাফে অব্যাহত বর্ষণে পাহাড় ধসে মাটির দেয়াল চাপায় একই পরিবারের চারজন নিহত হয়েছেন।

আজ ১৭ নভেম্বর শুক্রবার ভোর ৪ টার দিকে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের মরিচ্যাঘোনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানান স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী।

নিহতরা হলেন টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড মৌলভী বাজার মরিচ্যাঘোনার ফকির আহমদের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (৫০) ছেলে সাইদুল মোস্তফা (২০) ও দুই মেয়ে নিলুপা (১৮) ও সাদিয়া (১১)।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে হাল্কা ও মাঝারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে হ্নীলা ইউনিয়নের মরিচ্যাঘোনা এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনায় মাটির দেয়াল চাপা পড়ে পাহাড়ের খাদে বসবাসকারি একই পরিবারের ৪ জন নিহত হয়। পরে খবর পেয়ে স্থানীয়রা চাপা পড়া মাটি সরিয়ে ৪ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করে।

টেকনাফ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী জানান, পাহাড়ের খণ্ড এসে বাড়ির পাশে পড়ে। এতে বাড়ির দেয়াল ধসে মাটি চাপায় হ্নীলায় একই পরিবারে চারজনের মৃত্যু হয়। নিহতের পরিবারকে প্রশাসনিক সহযোগিতা দেয়া হবে।

সংশোধিত শ্রম আইন আগামী অধিবেশনে পাস হবে: আইনমন্ত্রী

জাতীয়, 24 January 2024, 453 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
সংশোধিত শ্রম আইন আগামী অধিবেশনে পাস হবে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। আজ ২৪ জানুয়ারি বুধবার সচিবালয় শ্রম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

সব প্রক্রিয়া শেষ করে গত সরকারের শেষ সময়ে সংশোধিত শ্রম আইন জাতীয় সংসদে পাস হয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে গেলেও রাষ্ট্রপতি তা অনুমোদন দেননি। শেষ মুহূর্তে আইনের মধ্যে কিছু ত্রুটি ধরা পড়ায় সেটি অনুমোদন না দিয়ে ফেরত পাঠান রাষ্ট্রপতি।

মন্ত্রী বলেন, আইএলও’র (আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা) গভর্নিং বোর্ডের মিটিং আগামী মার্চ মাসে হবে। আমাদের যে অগ্রগতি এবং এই শ্রম আইনের ব্যাপারে কি সব কাজ করছি তার একটা ব্রিফিংয়ের জন্য আজকের মিটিংটা ছিল।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী এই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার নিয়েছেন। মন্ত্রণালয়কে তিনি কতটা গুরুত্ব সহকারে দেখেন তারই প্রতিফলন এটা। আমি প্রধানমন্ত্রীকে এ ব্যাপারে ব্রিফ করবো। প্রধানমন্ত্রীকে ব্রিফ করার পরই সবকিছুর আলোচনা আপনাদের সঙ্গে করতে পারি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা না বলে আমি আপনাদের কোনো তথ্য দিতে পারবো না।

সংশোধিত শ্রম আইন আগামী সংসদ অধিবেশনে উঠবে এবং পাস হবে কি না- জানতে চাইলে আনিসুল হক বলেন, অবশ্যই উঠবে, অবশ্যই পাস হবে।

শিল্প কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে শ্রমিকদের স্বাক্ষরের হার ১০ শতাংশ করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, এটা নিয়েও আজকে আমরা আলোচনা করেছি। এখানেও যে সিদ্ধান্ত সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এগিয়ে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর আগের নির্দেশনা অনুযায়ী একটা পরিবর্তন এনেছি, আমি খুব শিগগির প্রধানমন্ত্রীকে এটা নিয়ে ব্রিফ করবো।

স্বাক্ষরের হার ১০ শতাংশ করা আপনারা যৌক্তিক মনে করছেন কি না- এ বিষয়ে আনিসুল হক বলেন, শ্রমিক এবং এমপ্লয়াররা যেটা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত দেবেন, আমার মনে হয় আমাদের দেশের পরিবেশের জন্য সেটাই গ্রহণ করা সমীচীন হবে।

বিএনপির আমল বিবেচনা করে বিদেশিদের কথা বলা উচিত
গতকাল ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের বৈঠক ছিল। সেখানে তারা শ্রমিকদের কর্মপরিবেশ নিয়ে কথা বলেছে। অন্যদেশ শ্রমিকদের জীবনমান এবং কর্মপরিবেশ নিয়ে কথা বলে, আইনমন্ত্রী হিসেবে আপনি মনে করেন কি না শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের প্রয়োজন রয়েছে- এ বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে একটা দুর্ঘটনার পর যে মনোযোগ এই সরকার শ্রমিকদের কর্মপরিবেশ উন্নত করার জন্য দিয়েছে; এরকম অন্য কোনো দেশে নজির দেখানো খুব কঠিন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১১ বছরে শ্রমিকদের কর্মপরিবেশের জায়গায় আমূল পরিবর্তন হয়েছে এবং উন্নত হয়েছে। সেই জায়গায় যারা এটা নিয়ে কথা বলছেন, যে বিদেশিরা…আমার মনে হয় তাদের আরও এ ব্যাপারে… প্রথমে ২০০৩-২০০৪-২০০৫ সালে কি অবস্থা ছিল, সেটার চিত্র দেখে ২০১২ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত কি উন্নতি হয়েছে, সেটা বিবেচনা করতে হবে। এসব বিবেচনা করেই তাদের কথা বলা উচিত।

কম্বাইন হার্ভেস্টারের মাধ্যমে ধান কর্তন কার্যক্রম শুরু

জাতীয়, 18 June 2023, 773 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
পাবনা সদর উপজেলায় সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় বিতরণকৃত কম্বাইন হার্ভেস্টারের মাধ্যমে ধান কর্তন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আজ ১৮ জুন রবিবার সকালে উপজেলার ভাড়ারা ইউনিয়নের নলদহ গ্রামের একটি মাঠে এ কম্বাইন হার্ভেস্টারের মাধ্যমে ধান কর্তন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পাবনার উপ-পরিচালক ডক্টর জামাল উদ্দিন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি, পাবনার অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) মোঃ রোকনুজ্জামান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাহানা পারভীন লাবনী, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা এবং কৃষকগণ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাহানা পারভীন লাবনী জানান, উদ্বুদ্ধ করণের মাধ্যমে কৃষকের ৪০ একর জমিতে এবং সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় বীজ সহায়তার মাধ্যমে ৫০ একর জমির প্রকল্প থেকে সরবরাহকৃত অটোমেটিক বীজ বপন যন্ত্রের মাধ্যমে সমলয় চাষাবাদে প্রথম পর্যায়ে ট্রেতে বীজ বপনের মাধ্যমে চারা তৈরি করা হয়। যন্ত্রের সাহায্যে চারা তৈরি করে জমিতে রোপণ পাবনা সদর উপজেলায় এবারই প্রথম। পরবর্তীতে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে ধান রোপণ করা হয়।

তিনি আরো জানান, আধুনিক পদ্ধতি কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে ১ একর জায়গার ধান ১ ঘণ্টায় কাটা সম্ভব এবং এতে কৃষকের খরচ হবে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। যেখানে গতানুগতিক পদ্ধতিতে ১ একর জমির ধান কাটা থেকে মাড়াই পর্যন্ত ৫ জন লোকের প্রায় ৩ থেকে ৪ দিন সময় লাগবে, একই সাথে খরচ হবে প্রায় ২০ হাজার টাকা। বর্তমান সরকার শতকরা ৫০ ভাগ ভর্তুকিতে বিভিন্ন ধরনের কৃষি যন্ত্রপাতি কৃষকদের প্রদান করার ফলে যেমন সময়, শ্রম ও টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব হয়েছে কৃষকদের, তেমনি তারা লাভবান হচ্ছে। দেশের কৃষি সেক্টর যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে আধুনিকায়ন হচ্ছে। এভাবেই দেশের কৃষকরা স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট কৃষকে রূপান্তরিত হবেন।

তরুণরা দেশকে মনের মতো করে গড়তে পারবে : ড. ইউনূস

জাতীয়, 8 August 2024, 146 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :

তরুণরা এই দেশ স্বাধীন করতে পেরেছে, তারা এটা মনের মতো করে গড়তে পারবে বলে মন্তব্য করেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

তিনি বলেন, তরুণদের মধ্যে যে সৃজনশীলতা রয়েছে, সেটাকে কাজে লাগাতে পারবে। এখন আমাদের কাজ হলো তারা যে স্বাধীনতা অর্জন করে নিয়ে এসেছে তা আমাদের রক্ষা করা।

আজ ৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার ফ্রান্স থেকে দেশে ফিরেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বেলা ২টা ১০ মিনিটের দিকে তিনি ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান। এরপরই তিনি বিমানবন্দরে এসব কথা বলেন।

শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘তরুণদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। এরা এ দেশকে রক্ষা করেছে। তরুণরা দেশকে পুর্নজন্ম দিয়েছে।’

এসময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আজকে আমার আবু সাঈদের কথা মনে পড়ছে। যে আবু সাঈদের কথা দেশের প্রতিটি মানুষের মনে গেঁধে আছে। আবু সাঈদের গুলি খাওয়ার পর থেকে আর কোন তরুণ হার মনেনি। তারা বুক পেতে গুলি খেতে ভয় করেনি।’

‘আমাদের এই স্বাধীনতা রক্ষা করতেই হবে। আর এই বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার অর্থ হলো তার নিজের পরিবর্তন।’, বলেন তিনি।

শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘দেশবাসীর ওপরে বিশ্বাস রাখেন, ভরসা রাখেন, দেশের কোনো জায়গায় হামলা হবে না।’