স্পোটর্স ডেস্ক :
৩০ বলে প্রয়োজন ছিল ৩০ রান। হাইনরিখ ক্লাসেন এক ওভারেই ম্যাচটাকে নিয়ে আসেন প্রায় দক্ষিণ আফ্রিকার হাতের মুঠোয়। ভারতের করা টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালের দলীয় সর্বোচ্চ ৭ উইকেটে ১৭৬ রানও তখন সহজ লক্ষ্য মনে হচ্ছিল। কিন্তু যশপ্রীত বুমরা তাদের সেই সহজ কাজটাকেই কঠিন করে তোলেন অবিশ্বাস্য বোলিংয়ে। ডেথ ওভারে ২ ওভারে মাত্র ৬ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়ে শেষ ওভারে সমীকরণটা কমিয়ে আনেন ১৬ রানে।
হার্দিক পান্ডিয়ার করা ওই ওভারের প্রথম বলটা ছিল ফুলটস। স্ট্রাইকে থাকা ডেভিড মিলার ঠিকঠাক মেরেছিলেনও। কিন্তু লং অফ বাউন্ডারিতে থাকা সূর্যকুমার যাদবের অবিশ্বাস্য রিলে ক্যাচে নিশ্চিত ছক্কাটাই হয়ে যায় আউট। জয় তখন উল্টো ভারতের হাতের মুঠোয়, টি–টোয়েন্টি শ্রেষ্ঠত্বের মুকুটটা আবার মাথায় উঠল বলে। শেষ ওভারে হার্দিক পান্ডিয়া সেই সুযোগ হাতছাড়া হতে দেননি। ওভারের পঞ্চম বলে কাগিসো রাবাদাকে আউট করলেন। শেষ ওভারে মাত্র ৮ রান দিলে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস শেষ হয় ৮ উইকেটে ১৬৯ রানে। ৭ রানের জয়ে ১৭ বছর পর দ্বিতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জিতল ভারত। প্রথম শিরোপা ২০০৭ সালে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরে।
ডেভিড মিলারের অবিশ্বাস্য চোখজোড়া দেখে মনের কথাগুলো আন্দাজ করা যায় এমন। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রীড়াঙ্গনে এখন প্রবাদটা বেশ পরিচিত।
দেশটির রেসলার ড্রিসুস ডু প্লেসিস কথাটা জনপ্রিয় করেছেন সম্প্রতি, অবশ্যই নিজেদের যন্ত্রণা বোঝাতে।
কিন্তু সূর্যকুমার যাদব কী ভাবছিলেন? শেষ ওভারে যখন ১৬ রান দরকার, অসহনীয় চাপ তখন ঘিরে থাকার কথা। এর মধ্যে বলটা ধরে ভেতরে রাখলেন সূর্য, নিজে বাউন্ডারির বাইরে গিয়ে ফিরে এসে নিলেন ক্যাচটা। আউট হলেন মিলার, নিশ্চিত হলো ভারতের বিশ্বকাপও।
অসহনীয় চাপ, বহুবার কাছে গিয়েও শিরোপা না জিততে পারার আফসোস, এত এত প্রত্যাশার শেষে দুঃখের কান্না; ভারতও কি কম ভুগেছে একটি বিশ্বকাপের জন্য? এক দশক অথবা তারও বেশি সময় আগে বিশ্বকাপ জেতা হয়েছিল তাদের। ২০১১ সালে ওয়াংখেড়েতে ‘ফিনিশেস থিংস অব ইন স্টাইল’ করে বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন মাহেন্দ্র সিং ধোনি। এরপর এবার। মাঝে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ছাড়া নেই আন্তর্জাতিক কোনো শিরোপাও। ক্রিকেট প্রায় ধর্ম যেখানে, তাদের জন্য কতটা হতাশার, ওই যন্ত্রণাই বা কে জানতে চেয়েছে এতদিন!
শনিবার রাতে বার্বাডোজে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৭ রানে হারিয়েছে ভারত। শুরুতে ব্যাট করে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭৬ রান করে ভারত। ওই রান তাড়া করতে নেমে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রানের বেশি করতে পারেনি প্রোটিয়ারা।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম আট বলের পাঁচটিতেই বাউন্ডারি পায় ভারত। মার্কো ইয়ানসেনের করা প্রথম ওভারে তিনটি বাউন্ডারি হাঁকান বিরাট কোহলি, আসে ১৫ রান। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে সবচেয়ে খরুচে প্রথম ওভার করেন ইয়ানসেন।
পরের ওভারে স্পিনার কেশভ মাহারাজকে নিয়ে আসেন প্রোটিয়া অধিনায়ক এইডেন মার্করাম। তাকে প্রথম দুই বলে বাউন্ডারি হাঁকান রোহিত। এক বল ডট দেওয়ার পরেরটিতেই উইকেট এনে দেন মাহারাজ। তাকে সুইপ করতে গেলে বল কিছুটা শূন্যে ভেসে ছিল, স্কয়ার লেগে নিচু হওয়া ক্যাচ দারুণভাবে নেন হেনরিখ ক্লাসেন। ৫ বলে ৯ রান করে ফিরতে হয় রোহিতকে।
মুখোমুখি হওয়া দ্বিতীয় বলে আউট হয়ে যান ঋষভ পান্তও। সুইপ করতে গিয়ে ব্যাটের আগায় লেগে বল উপরে উঠে যায়, সহজ ক্যাচ নেন কুইন্টন ডি কক। ২ বলে শূন্য রান করে আউট হন পান্ত। ভালো শুরুর পর হুট করেই খেই হারায় ভারত।
তাদের বিপদ আরও বাড়ে পঞ্চম ওভারের তৃতীয় বলে সূর্যকুমার যাদব আউট হলে। কাগিসো রাবাদার বলে ফাইন লেগে তার ক্যাচ নেন ক্লাসেন। ৪ বলে ৩ রান করে ফেরত যান সূর্য। এরপর পাঁচে অক্ষর প্যাটেলকে পাঠায় ভারত। তাদের এই কৌশল কাজে লাগে ভালোভাবেই।
বিরাট কোহলিকে সঙ্গে নিয়ে ইনিংস টানেন অক্ষর। সুযোগ পেলেই ছক্কা হাঁকিয়ে রানের চাকাও সচল রাখেন। কোহলির সঙ্গে তার জুটি ছাড়িয়ে যায় পঞ্চাশ রান। কিন্তু নিজের হাফ সেঞ্চুরি ছুতে পারেননি তিনি। অক্ষরের অলসতা ও কুইন্টন ডি ককের চতুরতায় কোহলির সঙ্গে তার জুটি ভাঙে।
রাবাদার বলে ফ্লিক করতে যান কোহলি। কিন্তু ঠিকঠাক টাইমিং হয়নি, বল থাকে উইকেটরক্ষকের কাছাকাছি। এর মধ্যে রান নেওয়ার চেষ্টা করেন অক্ষর, কিন্তু কোহলি ফিরিয়ে দেন তাকে। ফেরার জন্য যথেষ্ট সময় পেলেও দ্রুততা ছিল না অক্ষরের। উইকেটরক্ষকের জায়গা থেকে সরাসরি থ্রোতে নন স্ট্রাইক প্রান্তে স্টাম্প ভাঙেন ডি কক। ৩১ বলে ১টি চার ও চারটি ছক্কায় ৪৭ রান করে সাজঘরে ফেরত যান অক্ষর।
তার বিদায়ের পর হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন কোহলি। এই টুর্নামেন্টে প্রথমবার এই মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। আগের সাত ইনিংসে স্রেফ ৭৫ রান করেছিলেন, দুবার আউট হয়েছিলেন শূন্য রানে। ফাইনালে ৪৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন কোহলি।
ফিফটি পাওয়ার পর কিছুটা চালিয়ে খেলার চেষ্টা করেন কোহলি। হাফ সেঞ্চুরি পাওয়ার পরের ১১ বলে ১৬ রান আসে তার ব্যাট থেকে। মার্কো ইয়ানসেনের আগের বলে ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন। পরেরটি একটু স্লো করেন তিনি, এবার পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দেন রাবাদার হাতে।
কোহলির সঙ্গে পরে পঞ্চাশ পেরোনো জুটি হয়েছিল দুবেরও। ইনিংসের দুই বল বাকি থাকতে আউট হন দুবে। ১৬ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৭ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। শেষ বলে জাদেজাও আউট হন। তবে ততক্ষণে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান করে ফেলেছে ভারত। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে করা অস্ট্রেলিয়ার ১৭৩ রান টপকে তারা করে ১৭৬ রান।
রান তাড়ায় নেমে শুরুতেই স্বস্তি উবে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার। ভারতের হয়ে কাজটি যার করার কথা ছিল, করেছেন তিনিই। দুর্দান্ত এক ডেলেভারিতে রেজা হেনরিকসকে বোল্ড করে সাজঘরে ফিরিয়ে দেন জাসপ্রিত বুমরাহ। ৫ বল খেলে ৪ রান করে আউট হন রেজা।
দ্বিতীয় উইকেটের জন্যও খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি ভারতকে। আর্শদ্বীপের করা পরের ওভারে মার্করাম ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া দলকে টেনে তোলেন ডি কক, তার সঙ্গী হন ক্রিস্তিয়ান স্টাবস। পাওয়ার প্লের শুরুতে চাপে পড়া দলকে ছয় ওভারে ৪২ রান এনে দেন তারা।
যখন মনে হচ্ছিল স্টাবস-ডি কক জুটি জমে গেছে নবম ওভারে গিয়ে তখনই দুজনের জুটি ভাঙে। অক্ষরকে সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান স্টাবস। ২১ বলে ৩১ রান করে সাজঘরে ফেরত যান তিনি, ভাঙে ৩৮ বলে ৫৮ রানের জুটি। তার আউট হওয়ার পর হতাশায় নিজের ব্যাটে ঘুষি মারেন ডি কক।
কিন্তু তার পরের সঙ্গীকে নিয়েও দারুণভাবেই দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন তিনি। ভারতের ভয়ও বাড়তে থাকে। স্পিনের বিপক্ষে ভয়ঙ্কর ক্লাসেন নিজের সামর্থ্যের জানান দিতে শুরু করেন। কিন্তু এর আগেই সাজঘরে ফেরেন ডি কক। আর্শদ্বীপ সিংয়ের শর্ট বল তুলে মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনের কাছে কুলদ্বীপ যাদবের হাতে ক্যাচ দেন ডি কক। ওই বলের আগেই তাকে নেওয়া হয়েছিল পেছনে।
এরপর উইকেটে এসে ক্লাসেনের সঙ্গী হন ডেভিড মিলার। আরও একবার দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসকে নতুন প্রাণ দেন তিনি। এমনকি ম্যাচটাও নিয়ে আসেন হাতের মুঠোয়। শুরুটা হয় কুলদ্বীপের করা ১৪তম ওভারে। শেষ দুই বলে চার ও ছক্কা হাঁকান মিলার।
পরের ওভারে আসা অক্ষরকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে শুরু করেন ক্লাসেন। এরপর ওই ওভারে দুটি ছক্কা ও একটি চার হাঁকান তিনি। ওই ওভার থেকে আসে ২৪ রান। এই ওভারের আগে ৬ ওভারে দরকার ছিল ৫৪ রানের। অক্ষরের ওভারের পর সেটি হয়ে যায় ৩০ বলে ৩০ রান।
কিন্তু এই জায়গা থেকেও ম্যাচ আরও একবার মোড় নেয় উল্টোপথে। ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলানো ম্যাচে প্রাণ ফেরান হার্দিক পান্ডিয়া। তার করা ১৭তম ওভার শুরুর আগে কিছুটা সময় ব্যয় করে ভারত। মোমেন্টাম বদলে দেওয়ার চেষ্টা করেন, সেটি তারা পারেনও। পান্ডিয়ার অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ক্লাসেন। ২৭ বলে ২ চার ও ৫টি ছক্কায় ৫২ রান করে সাজঘরে ফেরত যান তিনি।
ক্লাসেনের বিদায়ের পর অনুমিতভাবেই কঠিন হয়ে পড়ে ম্যাচ। ১৮তম ওভারে এসে দুই রান দিয়ে ইয়ানসেনের উইকেট তুলে নেন বুমরাহ। পরের ওভারে ৪ রান দেন আর্শদ্বীপ। শেষ ওভারে ১৬ রানের সমীকরণ আসে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে।
তাদের জন্য তখনও সবচেয়ে বড় ভরসা মিলার। ৩০ বলে ৩০ থেকে ৬ বলে ১৬ রানের সমীকরণে চলে আসা ম্যাচেও তাদের একমাত্র আশা। কিন্তু প্রথম বলেই সেটি শেষ হয়ে যায়। হার্দিকের ফুলটস এগিয়ে এসে তুলে মেরেছিলেন মিলার। কিন্তু বাউন্ডারি লাইনে তখনই ওই অবিশ্বাস্য ক্যাচ নেন সূর্যকুমার।
এরপর বাকি পাঁচ বলে কেবল ৯ রানই করতে পেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আরও একবার ‘এত কাছে তবুও কত দূরে’র গল্প লেখা হয়েছে তাদের সঙ্গে। ভারতের বহু বহু অপেক্ষার ইতি ঘটেছে এক জয়ে। হয়তো সরেছে শত কোটির চাপিয়ে দেওয়া ভীষণ এক চাপও, শিরোপা না জেতার; দক্ষিণ আফ্রিকার মতো ভারতও বলতে পারে ‘আমরা যা জানি, তারা তো জানে না’!
ভারত: ২০ ওভারে ১৭৬/৭
দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ১৬৯/৮
ফল: ভারত ৭ রানে জয়ী
অনলাইন ডেস্ক :
দেখতে দেখতে এসেই গেল মহেন্দ্রক্ষণ। অপেক্ষার পালা শেষে। এবার মাঠের খেলা শুরু। আজ থেকে ভারতের মাটিতে ১০ দেশের জাতীয় দলকে নিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে ওয়ানাডে ক্রিকেট বিশ্বকাপ। এবারের আসরে অংশ নেওয়া দলগুলো হচ্ছে স্বাগতিক ভারতসহ বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড, বাংলাদেশ, অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, আফগানিস্তান, শ্রীলংকা ও নেদারল্যান্ডস। ভারতের ১০টি ভেন্যুতে ৪৬ দিনে মোট ৪৮টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। লিগপর্বে প্রতিটি দলই একে অপরের বিপক্ষে খেলবে। লিগপর্ব শেষে সেরা চার দল খেলবে সেমিফাইনালে। দুই সেমিফাইনালের দুই জয়ী দল ১৯ নভেম্বর আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে শিরোপা লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে।
আহমেদাবাদে আজ বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠছে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের এবারের আসরের। লর্ডসে ২০১৯ সালের স্মরণীয় ফাইনালের সুখস্মৃতি যেন ফিরে আসবে এই ম্যাচের মাধ্যমে। বাংলাদেশ সময় দুপুর আড়াইটায় শুরু হবে উদ্বোধনী ম্যাচটি। ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচটি দেখা যাবে গাজী টিভি ও টি স্পোর্টসে।
বাংলাদেশের বিশ্বকাপ শুরু হবে ৭ অক্টোবর, ধর্মশালার এইচপিসিএ স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের ম্যাচ দিয়ে। ১০ অক্টোবর নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচটিও বাংলাদেশ খেলবে এই ধর্মশালাতেই, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ম্যাচ দুটি সামনে রেখে বাংলাদেশ দল আসামের গোহাটি থেকে এরই মধ্যে হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায় পৌঁছে গেছে।
এদিকে, গুঞ্জন ছিল ভারতে অনুষ্ঠেয় ক্রিকেট বিশ্বকাপে হতে যাচ্ছে জমকালো উদ্বোধন। সময় ঘনিয়ে আসতে আসতে সেই খবরও বাতাসে মিলিয়ে গেল! দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, এবারের আসরে থাকছে না কোনো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। যদিও সর্বশেষ ২০১১ সালে এই উপমহাদেশ বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল। যার জমকালো উদ্বোধন হয়েছিল ঢাকায়। এবার অবশ্য তেমন কিছু হচ্ছে না। তবে বুধবার আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে হয়েছে ‘ক্যাপ্টেন্স ডে’ নামের পোশাকি ইভেন্ট। বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া ১০ দলের অধিনায়ক প্রেস কনফারেন্স ও ছবি তোলার আনুষ্ঠানিকতায় অংশ নেন। এদিকে, জশ বাটলারের ইংল্যান্ড ১০ দলের এই টুর্নামেন্টে শিরোপা ধরে রাখার অন্যতম ফেভারিট হিসেবেই মাঠে নামতে যাচ্ছে। একই সঙ্গে তারকা অল-রাউন্ডার বেন স্টোকসের ফেরা ইংলিশদের বাড়তি অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে। এ কারণেই এক লাখ ৩০ হাজার ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন বিশে^র সবচেয়ে বড় নরেন্দ্র মোদি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খেলতে নেমে ইংল্যান্ড বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নিজেদের প্রমাণে মুখিয়ে থাকবে।
ভারতের সাবেক অধিনায়ক সুনীল গাভাস্কারের বিশ্বাস, ২০০৭ সালে অস্ট্রেলিয়া টানা তিনবার বিশ^কাপ শিরোপা জয়ের যে রেকর্ড গড়েছিল, এরপর একমাত্র ইংল্যান্ডই পরপর দুই আসরে শিরোপা জয়ের অন্যতম দাবিদার। সহজেই তারা এবারও ফাইনালে পৌঁছতে সক্ষম হবে। এ সম্পর্কে সম্প্রতি ইন্ডিয়ান ব্রডকাস্টার স্টার স্পোর্টসে গাভাস্কার বলেছেন, ‘ইংল্যান্ডের টপ অর্ডারে যে পরিমাণ প্রতিভা আছে, তা অনেক দলেরই নেই। তাদের দলে দুই থেকে তিনজন বিশ্বমানের অল রাউন্ডার আছে, যারা ব্যাট ও বলহাতে যে কোনো সময় ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।’
ইংল্যান্ডের ফাস্ট বোলিং লাইন আপে রয়েছে- রেসি টপলি, ডেভিড উইলি, মার্ক উড ও ক্রিস ওকস। তাদের সঙ্গে আরও রয়েছেন স্টোকস, যিনি সম্প্রতি ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণার পর আবারও ফিরে এসেছেন। তবে এবারের বিশ্বকাপে তিনি দলে শুধুমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলছেন। ২০১৯ সালে ইয়ন মরগানের নেতৃত্বে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ জয়ের আটজন এবারের দলে আছেন। মরগানের অবসরের পর বাটলারের জন্য অধিনায়কের আসনে আসীন হওয়াটা সহজ ছিল। গত বছর তার নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টি-২০ বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছিল ইংল্যান্ড।
জশ বাটলার বলেন, বিশ্বকাপ শিরোপা অবশ্যই ধরে রাখতে চাই। যদিও আমরা নিজেদের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হিসেবে দেখছি না। এটা একটি নতুন টুর্নামেন্ট এবং আমরা সবাই জানি, এই আসরটা অত্যন্ত কঠিন হতে যাচ্ছে। কারণ এখানে বেশ কিছু শীর্ষ দল আছে। কিন্তু আমাদের দলও ভালো, ইংল্যান্ড একটি বিপজ্জনক দল। এই দলে বেশ কিছু অভিজ্ঞ খেলোয়াড় রয়েছে, যাদের ওপর অনায়াসেই নির্ভর করা যায়।’
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১৯ সালে লর্ডসের ফাইনাল ম্যাচটি টাই হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত সুপার ওভারে ম্যাচের ফলাফল নিষ্পত্তি না হওয়ায় বাউন্ডারি-কাউন্ট আইনে সেরা দল হিসেবে ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন হয়। চার বছর আগে বিশ^চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর থেকে দারুণ এক বেঞ্চমার্ক সেট করে চলেছে ইংল্যান্ড। গত বছর নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডেতে তারা ৪৯৮ রানের বিশ্বরেকর্ড গড়েছিল।
সব সময়ের মতই এবারও আন্ডারডগ হিসেবেই মাঠে নামতে যাচ্ছে নিউজিল্যান্ড। হাঁটুর ইনজুরির কারণে প্রথম ম্যাচে দলে থাকছেন না অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। ভারতীয় প্রিমিয়ার লিগে খেলতে গিয়ে হাঁটুর ইনজুরিতে পড়া সত্ত্বেও উইলিয়ামসন বিশ্বকাপ দলে অন্তর্ভুক্ত হন। কঠোর পরিশ্রম করে ফিট হয়ে দলে ফিরে আসার পর পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে ম্যাচজয়ী ৫৪ রানের ইনিংস খেলেছেন কিউই অধিনায়ক। ২০১৯ বিশ^কাপের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন উইলিয়ামসন। প্রস্তুতি ম্যাচের পর উইলিয়ামসন বলেছেন, ‘পাকিস্তান অত্যন্ত ভালো একটি দল। তাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা সবসময়ই আনন্দের। আমিও নিজেকে পরখ করে নেওয়ার চেষ্টা করেছি। সবকিছুই ভালোভাবে এগুচ্ছে। এখন মূল আসরে নিজেদের প্রমাণের অপেক্ষায় আছি।’
উইলিয়ামসনের অনুপস্থিতিতে আজ নিউজিল্যান্ডকে নেতৃত্ব দিবেন টম লাথাম। এদিকে বুড়ো আঙুলের ইনজুরির কারণে বিশ^কাপের কয়েকটি ম্যাচ মিস করতে যাচ্ছেন ফাস্ট বোলার টিম সাউদি। দুই সপ্তাহ আগে তার আঙুলে অস্ত্রোপচার করানো হয়েছে। দ্রুতই সে সুস্থ হয়ে উঠছে বলে জানিয়েছেন লাথাম।
এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ১২টি বিশ্বকাপের আটটিতেই সেমিফাইনালে খেলা নিউজিল্যান্ড তাদের প্রথম শিরোপা জয়ের জন্য মুখিয়ে আছে। ট্রেন্ট বোল্ট-সাউদির নেতৃত্বে বিশ্বমানের পেস আক্রমণের পাশাপাশি ভারতীয় টার্নিং পিচে মিচেল সান্টনার ও ইশ সোধির স্পিন ভালো সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। লাথামের নেতৃত্বে শেষ প্রস্তুত ম্যাচে নিউজিল্যান্ড সাত রানে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্বকাপের প্রস্তুতিটা ভালোভাবে সেরে নিয়েছে। লাথাম বলেন, ‘বিশ্বের সেরা দলের বিপক্ষে এখানে খেলতে হবে। প্রতি ম্যাচেই লক্ষ্য থাকতে হবে শেষ পর্যন্ত লড়ে যাওয়ার। তবে আমরা ভারতে আগামী কয়েকটি দিন দারুণভাবে উপভোগ করতে চাই। আর ম্যাচ বাই ম্যাচ আমরা এগিয়ে যেতে চাই।’ সংগৃহীত
অনলাইন ডেস্ক :
অর্জুন কাপুরের সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া নিয়ে এতদিন চুপই ছিলেন মালাইকা আরোরা। অবশেষে মুখ খুললেন তিনি। অর্জুন কাপুরের জন্মদিনে মালাইকার অনুপস্থিতি সেই খবরকে আরও পাকাপোক্ত করেছে। এদিকে মালাইকা একটি সাক্ষাতকারে প্রেমের সম্পর্ক আছে কি নেই- সেই বিষয়ে কিছু না বলে শুধুই বলেছেন যে, ‘প্রেমের ব্যাপারে আমি হাল ছাড়ি না। শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করে যাই।’
গত মাসে অর্জুন-মালাইকার বিচ্ছেদের খবর সামনে আসে। তবে ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছিল, বিচ্ছেদ হলেও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে তাদের মধ্যে। একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল তারা। মঙ্গলবার মাঝরাতে ছিল অর্জুনের এলাহি জন্মদিনের পার্টি। কিন্তু দেখা যায়নি অর্জুনের প্রেমিকা মালাইকা অরোরাকে।
ইনস্টাগ্রামে একটি ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা শেয়ার করেছেন মালাইকা। যাতে লেখা রয়েছে, ‘আমার সেই মানুষদের পছন্দ করি যাদের আমি চোখ বন্ধ করে এবং পিছনের দিকে না তাকিয়েও বিশ্বাস করতে পারি।’ এরপরই গুঞ্জন আরও দৃঢ় হয়। তাহলে দুজনের মধ্যে তিক্ততা দানা বেঁধেছে! প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের পর থেকে প্রেমের কারণেই অধিক চর্চিত মালাইকা। নিজের থেকে ১২ বছরের ছোট অর্জুন কাপুরের সঙ্গে তার প্রেম।
বলিউডে যুগলদের সম্পর্ক ভাঙা-গড়ার খবর প্রায়ই শিরোনামে উঠে আসে। গত মে মাসে সেই তালিকায় সংযোজন হয় ‘পাওয়ার কাপল’ মালাইকা আরোরা ও অর্জুন কাপুর। এখনও পর্যন্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় বা সংবাদমাধ্যমের সামনে নিজেদের বিচ্ছেদ নিয়ে কোনও কথা বলেননি অর্জুন বা মালাইকা কেউই। সূত্র : জি নিউজ।
অনলাইন ডেস্ক :
শ্রীলংকার বিপক্ষে ১১ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭৩ রানে ৩ উইকেট। জয় পেতে তখনও ৫৪ বলে ৫২ রান করতে হবে বাংলাদেশকে। এমন উইকেটে খুব একটা সহজ নয় এই কাজ। কেননা, খানিক আগেই শেষ ৩৬ বলে মোটে ২৪ রান তুলতে পেরেছিল লংকানরা। তাই শঙ্কা ছিলই। তবে সেই শঙ্কা দূর করার দায়িত্বটা কাঁধে তুলে নিলেন তাওহীদ হৃদয়। ইনিংসের ১২তম ওভারে লংকান অধিনায়ক ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্কাকে টানা তিনটি ছক্কা হাঁকালেন পরপর। চতুর্থ বলেই একই কাজ করতে গিয়ে বল মিস করলেন হৃদয়। লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফিরতে হলো তাকে। তবে ফেরার আগে ঠিকই ২০ বলে ৪০ রান করে দিয়ে গেছেন এমন উইকেটে। তাতেই জয়ের সুবাস পেয়ে যায় বাংলাদেশ।লিটন ও সাকিব দ্রুত ফিরলে খানিকটা শঙ্কাও জাগে হারের।
তবে সেই শঙ্কা আরও ঝেঁকে বসে মাহমুদউল্লাহকে রেখে পরপর রিশাদ ও তাসকিন ফিরলে। মনে হচ্ছিল মাহমুদউল্লাহ সুযোগ পাবেন তো শেষ পর্যন্ত। অবশেষে সুযোগটা পান তিনি। দাসুন শানাকার ১৯তম ওভারের প্রথম বলেই হাঁকান ছক্কা। দূর হয় সব শঙ্কা। বাংলাদেশ ম্যাচ জেতে ৬ বল ও ২ উইকেট হাতে রেখে। তাতে জয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু হয় নাজমুল শান্তর দলের।
এদিন বাংলাদেশের জয়ের রাস্তাটা প্রশস্ত করে দিয়ে গিয়েছিল বোলাররাই। ১৪ ওভারে দলীয় শত রান করা লংকানদের শেষ ৬ ওভারে আটকে দিয়েছিল মাত্র ২৪ রানে। তাতে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১২৫ রানের। টি টোয়েন্টিতে যে কোনো উইকেটেই যা অতি মামুলি। তবে সেই টার্গেটটাই কঠিন করে তুলেছিল বাংলাদেশে টপ অর্ডার ব্যাটাররা। পাওয়ার প্লের আগেই ২৮ রানে খুইয়ে ফেলেছিল ৩ উইকেট। তাতে খানিকটা শঙ্কাও উঁকি দিচ্ছিল হারের। তবে সেই শঙ্কা দায়িত্ব নিয়েই দূর করে গেছেন লিটন দাস ও তাওহীদ হৃদয়। চতুর্থ উইকেট জুটিতে দু’জনে মিলে জমা করেছেন ৬৩ রান।
এরপর অতি আগ্রাসী হতে গিয়ে হাসারাঙ্গার বলে ২০ বলে ৪০ রান করে ফিরতে হয় হৃদয়কে। এরপর লিটন ফিরে যান ৩৮ বলে ৩৬ রান করে। খানকি পর ১৪ বলে ৮ রান করে সাজঘরে ফিরে যান সাকিবও। তাতেই শঙ্কায় পড়ে যায় বাংলাদেশের জয়। এরপর তুষারার পরপর দুই বলে রিশাদ ও তাসকিন ফিরলে সেই শঙ্কা আরও বাড়ে। তবে দায়িত্ব নিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। খেলেছেন ১৩ বলে ১৬ রানের হার না মানা এক ইনিংস।
এর আগে, টসে জিতে শ্রীলংকাকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ। শুরুতে বাংলাদেশি বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে রানের চাকা সচল রেখেছিলেন দলটির ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা। যদিও অপর প্রান্ত থেকে নিয়মিত উইকেট পড়ছিল। এরপরও বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে ফেলেছিল শ্রীলংকা। ১৪ ওভারেই ছুঁয়েছিল দলীয় শত রান।
তবে নিশাঙ্কা ২৮ বলে ৪৭ রান করে ফিরলে বাকিরা হাঁটতে পারেনি তার দেখানো পথে। মাঝে উইকেটে ধনঞ্জয়া ও আসালাঙ্কা জমে উঠার চেষ্টা চালিয়েছেন মাত্র। তাতে অবশ্য খানিকটা ভয় ঝেঁকে বসেছিল বাংলাদেশের। তবে সেই ভয় দূর করেছেন রিশাদ। ১৬তম ওভারে এসে পরপর ফিরিয়েছেন আসালাঙ্কা ও হাসারাঙ্কাকে। তাতেই বড় সংগ্রহের স্বপ্নটা শেষ শ্রীলংকার। বাংলাদেশের বিপক্ষে শেষ পর্যন্ত লংকানদের ইনিংস থামে ৯ উইকেটে ১২৪ রানে।
বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজ ও রিশাদ। মুস্তাফিজ ৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে ১৭ রান খরচায় তুলেছেন ৩ উইকেট। অন্যদিকে ২২ রান খরচায় রিশাদের শিকার ৩ উইকেট। ২ উইকেট নিয়েছেন তাসকিন।
অনলাইন ডেস্ক :
সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতের বিপক্ষে বড় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে নেপালকে হারিয়ে যাত্রা শুরু করে সাইফুল বারী টিটুর শিষ্যরা। আজ ভারতকে উড়িয়ে দেয় ৩-১ গোলে। এই জয়ে সবার আগে ফাইনাল নিশ্চিত করল বাংলাদেশ।
নেপালের কাঠমান্ডুতে ম্যাচের শুরু থেকেই ভারতের ওপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকে বাংলাদেশ। যার ফলে ম্যাচের ৯ মিনিটেই আলপি আক্তারের গোলে এগিয়ে যায় লাল-সবুজরা। অনেকটা দূর থেকে নেওয়া আলপি আক্তারের শট ঝাপিয়ে তালুবন্দী করার চেষ্টা করেন ভারতের গোলরক্ষক সুরজমুনি কুমারি। তার হাতে লেগে বল জালে জড়ায়। অনেকটা ভাগ্যের জোরেই গোলটি এসেছে।
প্রথামার্ধে এক গোলের লিড নিয়েই বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ার্ধে সমতায় ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠে ভারত। ৫৫ মিনিটে সমতায় ফেরে তারা। ডানপ্রান্তে প্রায় বাইলাইন থেকে আনুশকা কুমারীর সরাসরি শট দূরের পোস্টের ভেতরে লেগে গোল হয়।
৭৮ মিনিটে দারুণ গোল করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেন সুরভী আকন্দ প্রীতি। মধ্যমাঠ থেকে বল পেয়ে দুই ডিফেন্ডারকে গতিতে পরাস্ত করে বক্সে ঢুকে গোলকিপারের পাশ দিয়ে লাল-সবুজ দলের মুখে আবারও হাসি ফিরিয়ে আনেন।
৮৯ মিনিটে বাংলাদেশ তৃতীয় গোল করে ভারতকে ম্যাচ থেকে পুরোপুরি ছিটকে দেয়। অনন্যা মুরমুর কর্নারে গোলকিপার ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে পারেনি, বলে চলে আসে পেছনে। সেখানে অন্য ডিফেন্ডারদের মাঝ থেকে অর্পিতা বিশ্বাস আলতো শটে জাল কাঁপান।
দুই ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ প্রথম দল হিসেবে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে। শেষ ম্যাচে ৮ মার্চ ভুটানের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ।
অনলাইন ডেস্ক :
ঢাকা টেস্টে আফগানিস্তানকে ৬৬২ রানের টার্গেট দিয়েছে বাংলাদেশ। পাহাড়সম এই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ২ উইকেট হারিয়ে ৪৫ রান সংগ্রহ করে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে আফগানিস্তান। জয়ের জন্য এখনো ৬১৭ রান প্রয়োজন আফগানদের। অন্যদিকে বাংলাদেশের প্রয়োজন ৮ উইকেট।
পাহাড়সম লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই উইকেট হারায় আফগানিস্তান। শরিফুল ইসলামের বলে এলবিডব্লিউ হন ইব্রাহিম জাদরান। পরের ওভারে তাসকিন আহমেদের পঞ্চম বলে আরেক ওপেনার আব্দুল মালিক ধরা পড়েন লিটন দাসের গ্লাভসে। ৫ রান করেন তিনি। ৭ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে সাবধানী খেলতে থাকে আফগানরা।
এরপর আফগানদের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে আসে অধিনায়ক হাশমাতুল্লাহ শাহিদির মাঠ ছাড়া। তাসকিন আহমেদের বাউন্সার সরাসরি তার হেলমেটে লাগে। হাশমতউল্লাহ পড়ে যান সঙ্গে সঙ্গেই। দৌড়ে ছুটে আসেন আফগান দলের ফিজিও। একপর্যায়ে স্ট্রেচারও ডাকেন আফগান ফিজিও। তবে সেটির প্রয়োজন পড়েনি। উঠে দাঁড়িয়ে হেঁটেই মাঠ ছাড়েন শাহিদি।
এর আগে প্রথম ইনিংসে দুর্দান্ত সেঞ্চুরির পর দ্বিতীয় ইনিংসেও দাপুটে সেঞ্চুরি করেছেন নাজমুল শান্ত। দুই বছরের বেশি সময় পরে টেস্ট সেঞ্চুরি পেয়েছেন মুমিনুল হক। এছাড়া জাকির হাসান ও লিটন দাসের ফিফটিতে দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেটে ৪২৫ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ। লিড নিয়েছে ৬৬২ রানের।
তৃতীয় দিন ব্যাট করতে নামা নাজমুল শান্ত ১৫১ বলে ১২৪ রানে আউট হন। ১৫টি চার মেরেছেন তিনি। এর আগে জাকির হাসান ৭১ রান করেছেন। পরে মুমিনুল হক সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে ১২১ রানে অপরাজিত থাকেন। লিটন দাসের ব্যাট থেকে আসে হার না মানা ৬৬ রানের ইনিংস।
ঢাকা টেস্টে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে প্রথমদিন ৫ উইকেটে ৩৬২ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু দ্বিতীয়দিন মাত্র ২০ রান যোগ করেই অলআউট হয় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। তবে বল হাতে স্বাগতিকরা ছিল দুর্দান্ত। মাত্র ১৪৬ রানে অলআউট করে দেয় আফগানদের। প্রথম ইনিংস থেকে ২৩৬ রানের লিড ঘরে তোলে।
প্রথম ইনিংসে নাজমুল শান্ত খেলেন ১৪৬ রানের ইনিংস। ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্ট সেঞ্চুরির ইনিংসটি সাজান ২৩টি চার ও দুটি ছক্কার শটে। এছাড়া মাহমুদুল জয় ৭৬ রান করেন। মুশফিক ও মেহেদি মিরাজ যথাক্রমে ৪৭ ও ৪৮ রান যোগ করেন।
জবাবে দেড়শ’ রানের আগে অলআউট হওয়া আফগানদের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেন মিডল অর্ডারের আফসার জাজাই। পাঁচে নামা নাসির জামালের ব্যাট থেকে আসে ৩৫ রান। এছাড়া করিম জানাত ২৩ রানের ইনিংস খেলেন।
বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস থেকে পাঁচ উইকেট তুলে নেন পেসার নিজাত মাসুদ। অভিষেক টেস্টে পাঁচ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েন তিনি। বাংলাদেশ দলের হয়ে পেসার এবাদত হোসেন চার উইকেট তুলে নেন। দুটি করে উইকেট নেন শরিফুল ইসলাম, মেহেদি মিরাজ ও তাইজুল ইসলাম।