দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশে সৌদি বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে গুরুত্ব

আন্তর্জাতিক, 1 July 2024, 654 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহানের নেতৃত্বে দু’দেশের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশে আরো সৌদি বিনিয়োগের বিষয় প্রাধান্য পেয়েছে।

banner

আজ ১ জুলাই সোমবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের অভাবনীয় উন্নয়ন-অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন। এ সময় বাংলাদেশে বিশেষত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে এবং দেশের অফশোর ব্যাংকিং ব্যবস্থায় সৌদি বিনিয়োগের বিষয়ে আলোচনা হয়।

প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মো. জাবেদ পাটোয়ারী, অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব ড. মু. নজরুল ইসলাম, মহাপরিচালক (পশ্চিম এশিয়া) মো. শফিকুর রহমান ও মহাপরিচালক (পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দপ্তর) মো. আরিফ নাজমুল হাসান এবং সৌদি কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে বাংলাদেশ-সৌদি আরব যৌথ ব্যবসায়িক পরিষদকে (জয়েন্ট বিজনেস কাউন্সিল-জেবিসি) দু’দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়নে তাদের কার্যক্রম আরও গতিশীল করার বিষয়ে জোর দেওয়া হয়। সৌদি আরব থেকে তেল আমদানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্তির বিষয়েও আলোচনা করেন তারা।

সৌদি আরবে ৩০ লাখ বাংলাদেশির কর্মসংস্থানের সুযোগ দেওয়ায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৌদি আরবের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। সৌদি আরবে বাংলাদেশি জনশক্তি রপ্তানিতে আরো স্বচ্ছতা আনা এবং স্বার্থান্বেষী মহলের শ্রমিক হয়রানি বন্ধে একটি যৌথ টাস্কফোর্স গঠনের বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সৌদি আরবে ব্যবসারত বাংলাদেশি প্রবাসীদের রেজিস্ট্রেশনের বিশেষ সুযোগ প্রদানের অনুরোধ জানান।

পাশাপাশি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সহায়তা চাইলে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী সহযোগিতার আশ্বাস দেন। বৈঠকে গাজাতে ইসরায়েলের বর্বরতা নিরসনকল্পে মুসলিম বিশ্বের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তারা।

দেড় ঘণ্টাব্যাপী হৃদ্যতাপূর্ণ বৈঠকে সৌদি যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রী মুহাম্মদ বিন সালমানের আসন্ন বাংলাদেশ সফরের বিষয়েও আলোচনা হয়। পাশাপাশি আগামী বছর সৌদি-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তীর যথাযথ উদযাপনে যৌথ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাংলাদেশ-সৌদি আরব যৌথ কমিশনের বৈঠককে মন্ত্রী পর্যায়ে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নেন তারা।

বৈঠক শেষে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সম্মানে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন তারা।

Leave a Reply

নবীনগরে সড়ক দুর্ঘটনায় একজন নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে প্রাইভেটকার ও ট্রাক্টরের সঙ্গে Read more

প্রতিপক্ষের হামলায় নারী নিহত, দুইজন আটক

চলারপথে রিপোর্ট : তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় খাইরুন Read more

গাজীপুরে মামা হত্যার আসামি ভাগিনা গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : গাজীপুরে আনিসুর রহমান হত্যার মামলার আসামি ভাগিনা Read more

সদর মডেল থানায় যোগদান করেই কঠোর…

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য : আজহারুল ইসলাম সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

চলারপথে রিপোর্ট : ফ্ল্যাট বাসা থেকে শরীর মীর (৪০) নামের Read more

নাসিরনগরে বাবাকে হত্যার ঘটনায় ছেলে আটক

চলারপথে রিপোর্ট : নাসিরনগরে আলম মিয়া (৬০) নামের এক ব্যবসায়ী Read more

আখাউড়ায় খেলাফত মজলিসের প্রার্থীর মতবিনিময়

মোঃ ইসমাইল: ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের খেলাফত মজলিস মনোনীত প্রার্থী Read more

৫০ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ৫০ কেজি গাঁজা ও ১টি সিএনজি উদ্ধারসহ Read more

কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপদসীমায়, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের…

অনলাইন ডেস্ক : বর্ষার শেষপ্রহরে নেমে আসা অবিরাম বৃষ্টি ও Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার নতুন ওসি আজহারুল…

চলারপথে রিপোর্ট : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে Read more

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে…

অনলাইন ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ঐতিহাসিক Read more

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : কুমিল্লার দাউদকান্দি বারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) Read more

সুইডেনে স্কুলে বন্দুক হামলায় ১০জন নিহত

আন্তর্জাতিক, 5 February 2025, 361 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
সুইডেনের কেন্দ্রীয় একটি স্কুলে বন্দুক হামলায় সন্দেহভাজন বন্দুকধারীসহ অন্তন ১০ জন নিহত হয়েছেন। এই হামলার ঘটনা ঘটে রাজধানী স্টকহোম থেকে ২০০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত ওরেব্রোর রিসবার্গস্কা স্কুলে। এ ঘটনাকে প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসন “সুইডেনের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ গণহত্যা” বলে বর্ণনা করেছেন।

banner

পুলিশ জানায়, হামলাকারী একজন পুরুষ এবং নিহতদের মাঝে তাকেও পাওয়া গেছে। তবে এর আগে তার কোনো অপরাধের ইতিহাস ছিল না। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি একাই এই হামলা চালিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

পুলিশ এর আগে সতর্ক করে দিয়েছিল যে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে কারণ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, যাদের মধ্যে অন্তত চারজনের অস্ত্রোপচার চলছে। পুলিশ প্রাথমিকভাবে জানিয়েছিল যে পাঁচজনকে গুলি করা হয়েছে এবং ঘটনাটি হত্যাচেষ্টা, অগ্নিসংযোগ এবং গুরুতর অস্ত্র অপরাধ হিসেবে তদন্ত করা হচ্ছে। পরে স্থানীয় গণমাধ্যম খবর দিতে শুরু করে যে বেশ কয়েকজন মারা গেছেন। এরপর পুলিশ জানায়, অন্তন ১০ জন নিহত হয়েছেন।

এর আগে স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৩৩ মিনিটে রিসবার্গস্কা স্কুল নামের – একটি প্রাপ্তবয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্রে – গুলি চালানোর খবর পায় পুলিশ। এ শিক্ষা কেন্দ্রটি এমন একটি ক্যাম্পাসে অবস্থিত যেখানে অন্যান্য স্কুলও রয়েছে। কেন্দ্রগুলোতে মূলত তারাই আসেন যারা প্রাথমিক বা মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করতে পারেননি। এ ঘটনা সম্পর্কে শিক্ষিকা লেনা ওয়ারেনমার্ক সুইডিশ পাবলিক রেডিও এসভিটিকে বলেন, তিনি স্কুলের কাছাকাছি প্রায় ১০টি গুলির শব্দ শুনেছেন।
সূত্র: বিবিসি

দায়িত্ব নিয়েই বাইডেন আমলের ৭৮টি নির্বাহী আদেশ বাতিল করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক, 21 January 2025, 410 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
‘কট্টর’ জো বাইডেনের আমলের ৭৮টি নির্বাহী আদেশ বাতিল করেছেন নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওয়াশিংটনের ক্যাপিটল ওয়ান অ্যারেনার মঞ্চে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথম ভাষণে বাইডেন আমলের সব নির্বাহী আদেশ বাতিল করার ঘোষণা দেন। এর কিছুক্ষণ পরই যেসব নির্বাহী আদেশে সই করেন তার শুরুতেই জো বাইডেন আমলের ৭৮টি নির্বাহী আদেশ বাতিল করেন। স্থগিতাদেশে সই করার পর ট্রাম্প জনতার উদ্দেশ্যে সেটি তুলে ধরে দেখান। এছাড়া প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার আদেশেও সই করেন ট্রাম্প।

banner

এর আগে ক্ষমতা ছাড়ার আগে শেষ মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ফৌজদারি মামলার হুমকিতে রয়েছেন এমন বেশ কয়েকজনকে ক্ষমা করে দেন। নিজের প্রথম ভাষণে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ওই আদেশও বাতিল হবে।

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত একটি আদেশেও সই করেছেন ট্রাম্প।

এর আগে ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল ভবনে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাকে শপথ পাঠ করান যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস। এ সময় বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, তার স্ত্রী জিল বাইডেনসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

সবার উপস্থিতিতে ধর্মীয় গ্রন্থ বাইবেলের ওপর হাত রেখে শপথ পাঠ করেন ৭৮ বছর বয়সী ট্রাম্প। তিনিই হলেন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বয়সে ক্ষমতায় বসা প্রেসিডেন্ট।

এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর আগে ২০১৭ সালে ক্যাপিটল ভবনের পাশে ন্যাশনাল মলে বিপুল আয়োজনে শপথ নিয়েছিলেন তিনি। তবে এবার বাদ সাধে তীব্র ঠান্ডা আবহাওয়া। সে কারণেই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ক্যাপিটল ভবনের ভেতরে। ৪০ বছর আগে ১৯৮৫ সালে একই কারণে ক্যাপিটল ভবনের ভেতরে শপথ নিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান।

ডোনাল্ড ট্রাম্প-ভলোদিমির জেলেনস্কির বৈঠকে বাগ্‌বিতণ্ডা, হয়নি চুক্তি সই

আন্তর্জাতিক, 1 March 2025, 338 Views,

হাকিকুল ইসলাম খোকন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে :
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধ ও খনিজ উপাদান হস্তান্তর সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য ওয়াশিংটন সফরে গিয়েছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে বৈঠকেই বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ওয়াশিংটন থেকে কোনো প্রকার চুক্তি স্বাক্ষর না করেই ফিরে গেছেন জেলেনস্কি।

banner

২৮ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তাদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। এই বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল, ইউক্রেনের খনিজ সম্পদে যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে একটি চুক্তি সই করা, শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়নি।

রাশিয়ার সাথে চলমান যুদ্ধে ইউক্রেন কয়েকশো কোটি ডলারের অস্ত্র ও অর্থ সহায়তা পেয়েছে, কিন্তু ২০ জানুয়ারি ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর পরিস্থিতি পাল্টে যায়। ট্রাম্প জেলেনস্কির বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য দোষারোপ করতে শুরু করেন। তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে সমালোচনা করে বলেন, তাকে শান্তি আলোচনা শুরু করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

এ উত্তেজনার কারণে পূর্বনির্ধারিত সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত না হয়ে শেষ পর্যন্ত হোয়াইট হাউস থেকে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বের হয়ে যান। ঘটনা পরিক্রমায়, দুই দেশের সম্পর্ক এবং বৈঠকের ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এবং পরিস্থিতি বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন অজানা দিক উন্মোচন করেছে।

এর আগে, সাংবাদিকদের সামনে এই বৈঠকে জেলেনস্কিকে একের পর আক্রমণ করে বক্তব্য দেন ট্রাম্প। জেলেনস্কি ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে জুয়া খেলছেন’ বলে অভিযোগ করে ট্রাম্প বলেন, আপনার দেশের মানুষ খুবই সাহসী; কিন্তু আপনাকে হয় (রাশিয়ার সাথে) একটি চুক্তি করতে হবে না হলে আমরা আর আপনাদের সাথে নেই। আর আমরা যদি না থাকি তাহলে আপনাকে একা লড়তে হবে।

ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে মতপার্থক্য একসময় চিৎকার-চ্যাঁচামেচির পর্যায়ে চলে যায়। ‘জেলেনস্কি যুদ্ধে হেরে যাচ্ছেন’ দাবি করে ট্রাম্প বলেন, মানুষ মারা পড়ছে। যুদ্ধের জন্য সেনার সংখ্যাও কমছে ক্রমশ। আপনার হাতে কার্ড (বিকল্প) নেই। একবার আমরা চুক্তি সই করলে আপনি ভালো অবস্থানে চলে যাবেন। কিন্তু আপনাকে আদৌ কৃতজ্ঞ মনে হচ্ছে না। সত্যি কথা বলতে কি এটা ভালো কোনো বিষয় নয়।

বৈঠকের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে বলেন, হোয়াইট হাউসে আজ (শুক্রবার) অর্থবহ মিটিং করেছি। এতো চাপ ও উত্তেজনার মধ্যে এমন কিছু শেখা গেছে, যা কথা না বললে কখনো বোঝা যেত না। আবেগের মধ্য দিয়ে যা বেরিয়ে আসে তা আশ্চর্যজনক, আমি স্থির হয়েছি যে জেলেনস্কি শান্তির জন্য প্রস্তুত না। এতে যদি আমেরিকা যুক্ত থাকে, কারণ তিনি মনে করেন আমাদের যুক্ত থাকার ফলে আলোচনায় তার একটা বড় সুবিধা হবে। আমি সুবিধা চাই না, শান্তি চাই।

ডোনাল্ড ট্রাম্প আরো বলেন, তিনি (জেলেনস্কি) যখন শান্তির জন্য প্রস্তুত হবেন, তখন তিনি আসতে পারেন। তিনি প্রিয় ওভাল অফিসে যুক্তরাষ্ট্রকে অসম্মান করেছেন।

বৈঠকের শুরুতে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের বিষয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন ইউক্রেনের সামরিক কর্মকর্তারা। যখন তাদের বাদানুবাদ চলছিল, তখন বৈঠকে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূতকে মাথায় হাত অবস্থায় দেখা গেছে।

সার্বিয়ায় স্কুলে বন্দুক হামলা, নিহত ৯

আন্তর্জাতিক, 3 May 2023, 1541 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
সার্বিয়ার একটি স্কুলে বন্দুক হামলা চালিয়ে আট সহপাঠী ও এক নিরাপত্তারক্ষীকে হত্যা করেছে শিক্ষার্থী। আহত হয়েছে এক শিক্ষক ও ছয় শিক্ষার্থী মিলিয়ে সাতজন।

banner

আজ ৩ মে বুধবার সকালে বেলগ্রেডের একটি স্কুলের শ্রেণিকক্ষে ঢুকে অতর্কিত গুলি চালায় এক শিক্ষার্থী। তার বয়স ১৪ বছর। সার্বিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

গুলি থেকে বেঁচে যাওয়া এক ছাত্রীর বাবা দেশটির টেলিভিশন চ্যানেল এন ওয়ানকে জানান, গুলির সময় তার মেয়ে ঘটনাস্থলে ছিল। সে পালাতে সক্ষম হয়। ছেলেটি প্রথমে শিক্ষককে গুলি করে, এরপর সে এলোপাথাড়ি গুলি ছুঁড়তে শুরু করে।

শিক্ষকের জীবন রক্ষায় চিকিৎসকরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান সেখানকার মেয়র মিলান নেদেলজকোভিচ।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এখন পর্যন্ত আট শিশু, এক নিরাপত্তাকর্মী নিহত হয়েছেন। এক শিক্ষক ও ছয় শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে৷ পুলিশ সপ্তম শ্রেনির এক ছাত্রকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে।

সার্বিয়ায় এ ধরনের হামলার ঘটনা সচরাচর ঘটে না। দেশটির বন্দুক আইনও তুলনামূলক কঠোর।

সূত্র: ডয়চে ভেলে

‘ইসরায়েল হত্যা করে, মিথ্যা বলে; তবুও পশ্চিমা মিডিয়া বিশ্বাস করে’

আন্তর্জাতিক, 7 April 2025, 275 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
গাজায় ফিলিস্তিন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ও সিভিল ডিফেন্সের ১৫ জন সদস্য নিহত হয়েছেন। তারা কেউ যোদ্ধা ছিলেন না, সন্ত্রাসীও ছিলেন না। তারা ছিলেন মানবিক সহায়তাকর্মী। যারা আহতদের পাশে দাঁড়াতে ছুটে গিয়েছিলেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অন্যের জীবন বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন।

banner

গত ২৩ মার্চ, দক্ষিণ গাজার রাফাহ এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনী একটি অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি সেবার গাড়িবহরে হামলা চালায়। এতে ৮ জন রেড ক্রিসেন্ট কর্মী, ৬ জন সিভিল ডিফেন্স সদস্য এবং ১ জন জাতিসংঘকর্মী নিহত হন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করে, যানবাহনগুলো ‘চিহ্নিত’ ছিল না এবং সন্ত্রাসী পরিবহন করছিল বলে সন্দেহ হয়েছিল। কিন্তু এটি ছিল একটি ‘মিথ্যা’।

নিহত চিকিৎসাকর্মী রিফাত রাদওয়ানের মোবাইল থেকে উদ্ধার হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, যানবাহনগুলোতে লাল আলো জ্বলছিল। পরিষ্কারভাবে চিহ্নিত ছিল এবং কোনো অস্ত্রের অস্তিত্ব ছিল না। রিফাতের মৃতদেহ একটি গণকবরে পাওয়া যায়, সেখানে আরও ১৩টি মরদেহ ছিল, যাদের কারও মাথায়, কারও বুকে গুলির চিহ্ন এবং অনেকের হাত ছিল বাঁধা।

মৃত্যুর পরও তাদের প্রমাণ করতে হয়েছে যে তারা সহায়তাকর্মী ছিলেন।

এতোকিছুর পরেও পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমগুলোর বেশিরভাগই প্রথমে ইসরায়েলের বক্তব্য প্রচার করছে: “ইসরায়েল বলছে…”, “আইডিএফ জানাচ্ছে…”, “একটি সামরিক সূত্র জানিয়েছে…”। বিষয়টা এমন যে, এই মিথ্যা শব্দগুচ্ছগুলো যেন রক্তমাখা চিকিৎসাকর্মীর ইউনিফর্ম থেকেও বেশি ‘প্রমাণস্বরূপ’ হয়ে ওঠে।

তবে, এটা কিন্তু কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটি একটি সংগঠিত ও পরিকল্পিত মিথ্যাচার। যে মিথ্যাচার তারা যুগ যুগ ধরে করে আসছে।

পশ্চিমা মিডিয়া আমাদেরকে তাই বিশ্বাস করাতে বাধ্য করে যা ইসরায়েল বলছে। এই অবস্থানে থেকে হাসপাতালকে প্রমাণ করতে হয় যে তারা হাসপাতাল, স্কুলকে প্রমাণ করতে হয় তারা শিশুদের স্কুল, আর শিশুদের প্রমাণ করতে হয় যে তারা সন্ত্রাসীদের ঢাল নয়। পশ্চিমা মিডিয়ার এই ব্যবস্থায় ফিলিস্তিনি অস্তিত্বকেই ‘হুমকি’ হিসেবে দেখা হয়।

এই অবস্থা, এই অবমূল্যায়ন, মানবিকতা ধ্বংসের নামান্তর।

গাজার বাসিন্দা হিসেবে আমি জানি রেড ক্রিসেন্টের ভেস্ট (পোষাক) কী বোঝায়। এই ভেস্ট বোঝায় যখন চারপাশে মৃত্যু আর ধ্বংস, তখনও কেউ সাহায্য করতে আসছে, আসছে জীবন বাঁচাতে। কিন্তু এখন সেই ভেস্ট পরা মানুষদের লাশ গণকবরে পাওয়া যায়।

আমরা শুধু শোক পালন করি না, আমাদের শোককেও প্রমাণ করতে হয়। আমরা শুধু মরদেহ কবর দেই না, বরং তাদের মৃত্যুকেও ‘নির্দোষ’ প্রমাণ করতে হয়।

এই ১৫ জন চিকিৎসাকর্মী ও উদ্ধারকর্মীর মৃত্যু আমাদের মনে করিয়ে দেয়, ফিলিস্তিনি হতে গেলে কেবল জীবন বাঁচানোই যথেষ্ট নয় বরং প্রমাণ করতে হয়, তোমরা মানুষ।

লেখক: আহমেদ নাজার
ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক বিশ্লেষক

সূত্র : আলজাজিরা।