ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান

আন্তর্জাতিক, 6 July 2024, 511 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
ইরানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন সংস্কারপন্থী মাসুদ পেজেশকিয়ান। তিনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির আশীর্বাদপুষ্ট রক্ষণশীল সাঈদ জালিলিকে বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে ইরানের ১৪তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। খবর আল-জাজিরার

banner

ইরানের নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্যানুসারে, প্রথম দফার নির্বাচনে সংস্কারপন্থী হিসেবে পরিচিত মাসুদ পেজেশকিয়ান ১ কোটি ৪ লাখ ১৫ হাজারে বেশি ভোট পেয়ে এগিয়েছিলেন। প্রতিদ্বন্দ্বী খামেনি সমর্থিত কট্টরপন্থী সাঈদ জালিলি পেয়েছিলেন ৯৪ লাখ ৭৩ হাজার ২৯৮ ভোট।

ইরানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, দ্বিতীয় দফার ভোটে মাসুদ পেজেশকিয়ান পেয়েছেন প্রায় ১ কোটি ৬৩ লাখ ভোট। বিপরীতে তার প্রতিদ্বন্দ্বী সাঈদ জালিলি পেয়েছেন মাত্র ১ কোটি ৩০ লাখের বেশি ভোট। অর্থাৎ মাসুদ পেজেশকিয়ান প্রায় ৩৩ লাখ ভোটের ব্যবধানে খামেনি সমর্থিত প্রার্থী সাঈদ জালিলিকে হারিয়েছেন।

গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম দফায় কোনো প্রার্থীই ৫০ শতাংশের বেশি ভোট নিশ্চিত করতে পারেননি। তাই নিয়ম অনুসারে নির্বাচন গড়ায় দ্বিতীয় দফায় তথা রান-অফে। এই রান-অফে অংশ নেন প্রথম দফার নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া দুই প্রার্থী মাসুদ পেজেশকিয়ান ও সাঈদ জালিলি।

কট্টরপন্থীদের ব্যাপক নির্বাচনী প্রচারণার মাঝে নারীর অধিকার, অধিক সামাজিক স্বাধীনতা, পশ্চিমের সঙ্গে বৈরিতায় সতর্কতা ও অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন মধ্যপন্থী মাসুদ পেজেশকিয়ান।

মাসুদ পেজেশকিয়ানের বয়স ৬৯ বছর। তিনি হৃদ্‌রোগবিষয়ক সার্জন। ইরানের পার্লামেন্টে ২০০৮ সাল থেকে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় তাবরিজ শহরের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন তিনি। ইরানের প্রধান সংস্কারপন্থী জোট তাঁকে সমর্থন দিয়েছে। সাবেক দুই সংস্কারপন্থী প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ খাতামি ও হাসান রুহানিরও সমর্থন পেয়েছেন তিনি।

অন্যদিকে ৫৮ বছর বয়সী জালিলি পশ্চিমাবিরোধী অবস্থানে অনড়। তিনি কট্টরপন্থী সমর্থকদের যথেষ্ট সমর্থন ধরে রেখেছেন। অন্য রক্ষণশীল নেতাদের কাছ থেকেও সমর্থন পেয়েছেন তিনি।

Leave a Reply

ইটালি প্রবাসী দিদারের মা আনোয়ারা বেগমের…

শফিকুল ইসলাম বাদল : ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের বিরামপুর Read more

কসবায় মায়ের অভিযোগে ছেলের কারাদণ্ড

চলারপথে রিপোর্ট : মাদকাসক্ত ছেলের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে Read more
ফাইল ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

চলারপথে রিপোর্ট : পুকুরের পানিতে ডুবে ইসরাত জাহান নোভা (৯) Read more

ইরান কখনও আপোস করবে না: আয়াতুল্লাহ…

অনলাইন ডেস্ক : জায়নবাদীদের সাথে ইরান কখনও আপোস করবে না Read more
ফাইল ছবি

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক পাঁচ দিনের…

অনলাইন ডেস্ক : রাজধানীর শাহবাগ ও পল্টন মডেল থানার পৃথক Read more
ফাইল ছবি

প্রতারণা করে জুলাই অভ্যুত্থানের সুবিধা নিলে…

অনলাইন ডেস্ক : জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদের পরিবার এবং আহতদের কল্যাণ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩৮ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় নাগরিক…

দুলাল মিয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর Read more

কারাগারে হাজতির মৃত্যু

দুলাল মিয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে জুনায়েদ মিয়া (৩২) নামে Read more

আখাউড়ায় কৃষকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা

চলারপথে রিপোর্ট : কৃষকদের সেচ দক্ষতা বাড়াতে পানি ব্যবহারকারী গ্রুপের Read more

ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের ১১তম ব্যাচের ওরিয়েন্টেশন

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য: রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের Read more

স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে…

অনলাইন ডেস্ক : স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে অনশন Read more

ইরানে ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানালো ২১…

অনলাইন ডেস্ক : ইরানে ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানিয়েছে মিশরসহ ২১টি Read more

ডব্লিউএইচও থেকে বেরিয়ে যেতে নির্বাহী আদেশে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সই

আন্তর্জাতিক, 21 January 2025, 302 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া হিসেবে একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০ জানুয়ারি সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার পর ট্রাম্প বেশ কিছু নির্বাহী আদেশে সই করেন। এর মধ্যে ডব্লিউএইচও থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেরিয়ে যাওয়া সংক্রান্ত আদেশও রয়েছে।

banner

দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাহী আদেশে সইয়ের পর বলেন, ওহহ, এটা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় এতো দিন অন্য দেশের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্র ‘অন্যায্য পরিমাণে’ অর্থ প্রদান করেছে।

সিএনএনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, এর আগে ২০২০ সালের জুলাইয়ে ট্রাম্পের প্রথম প্রশাসন আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে এনেছিল। ওই সময় বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়েছিল।

নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপটি অপ্রত্যাশিত নয়। ডোনাল্ড ট্রাম্প কার্যত ২০২০ সাল থেকেই ডব্লিউএইচও’র বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছেন। সেসময় তিনি করোনভাইরাস মহামারি নিয়ে সংস্থাটিকে আক্রমণ করেছিলেন এবং এই সংস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের তহবিল বন্ধ করার হুমকিও দিয়েছিলেন।

এরই জেরে ২০২০ সালের জুলাই মাসে বৈশ্বিক এই সংস্থাটি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করার জন্য আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

চোখের পানিতে ভিজল আরাফাত ময়দান

আন্তর্জাতিক, 27 June 2023, 1171 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
এ এক অভূতপূর্ব দৃশ। নিজের পাপের বোঝার কথা স্মরণ করে লাখ লাখ মুসল্লির অবিরল অশ্রুধারায় ভিজেছে ঐতিহাসিক আরাফাত ময়দান। তাঁদের ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে আরাফাত ময়দান প্রকম্পিত হয়েছে।

banner

আজ ২৭ জুন মঙ্গলবার এ ময়দানে যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পবিত্র হজ পালন করেছেন হজযাত্রীরা। এসময় হাজিদের কেউই চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি। তাঁরা নিজেদের আত্মশুদ্ধি ও পাপমুক্তির আকুল বাসনার পাশাপাশি মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনায় মহান আল্লাহর কাছে অঝোরে কেঁদে বুক ভাসিয়েছেন। নামাজ আদায় করার পাশাপাশি অন্যান্য ইবাদত বন্দেগিতে মশগুল থেকেছেন।

মহান আল্লাহর অশেষ রহমত ও নৈকট্য লাভের আশায় সার্বক্ষণিক জিকির করেছেন। প্রায় সারাক্ষণ তালবিয়া পড়েছেন। আল্লাহ তায়ালার আনুগত্য প্রকাশ করছেন।

এর আগে, পবিত্র হজ পালনের জন্য মহান আল্লাহর দরবারে হাজিরা দিতে সৌদি আরবে আসা বিশ্বের ২৫ লাখ মুসল্লি হজের দ্বিতীয় রুকন আদায়ের জন্য সোমবার সূর্যোদয়ের পর মিনা থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে আরাফাতের ময়দানে সমবেত হন। সূর্যাস্ত পর্যন্ত এই ময়দানেই অবস্থান করেন তাঁরা। আরাফাতের দিনকে মনে করা হয় বছরের শ্রেষ্ঠ দিন। এদিন মহান আল্লাহ বান্দাদের পাপ মাফ করে দেন।

করোনা মহামারি পেছনে ফেলে এবার হজ আবার আগের রূপে ফিরে এসেছে। বলা হচ্ছে, এবারের হজে সবচেয়ে বেশি মুসল্লি এসেছেন। এই সংখ্যা ২৬ লাখেরও বেশি।

ঐতিহাসিক আরাফাত ময়দানের তিন দিকে জাবাল বা পাহাড়। এই পাহাড়ের নাম রহমতের পাহাড় (জাবালে রহমত)। দোয়া কবুলের স্থান হওয়ায় কোনো কোনো হজযাত্রী জাবালে রহমত পাহাড়ে উঠেও ইবাদত বন্দেগিতে মশগুল ছিলেন। কোনো কোনো হজযাত্রী আরাফাত ময়দানে যাঁর যাঁর মতো সুবিধাজনক জায়গা বেছে ইবাদত বন্দেগী করেছেন। আরাফাত ময়দানে একটি উঁচু পিলার রয়েছে। এই পিলারটিও দোয়া কবুলের স্থান। আদি পিতা হজরত আদম (আ.) এবং আদি মা হাওয়া (আ.) আরাফাতের ময়দানে এসে পুনর্মিলনের সুযোগ পেয়েছিলেন। এ জন্য তাঁরা এই ময়দানেই মহান আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ছিলেন।

পাকিস্তানের ২৬ বছর বয়সী শিক্ষার্থী উসমান আরশাদ ৬ মাস হেঁটে এবার পবিত্র হজে এসেছেন। আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত হতে পেরে বাকরুদ্ধ তিনি। আর মিশরীয় ব্যবসায়ী ইয়াহিয়া আল ঘানামের আবেগ যেন হৃদয় ছোঁয়া। তিনি চোখের পানি সংবরণ করতে পারছেন না কিছুতেই। বললেন, পবিত্র হজে এসে গত ১৫ দিনে আমি দৈনিক এক ঘণ্টার বেশি ঘুমাইনি।

আরাফাত ময়দানের মসজিদে নামিরা থেকে জোহরের নামাজের আগে মিম্বরে দাঁড়িয়ে আরবি ভাষায় হজের খুতবা পাঠ করা হয়। এবার খুতবা দিয়েছেন শায়খ ড. ইউসুফ বিন মোহাম্মদ। তিনি নামাজেও ইমামতি করেছেন। হজের খুতবা বাংলাসহ প্রায় ১৪টি ভাষায় অনুবাদ করে শুনানো হয়েছে।

খুতবার পর মসজিদে নামিরায় সমবেত মুসলমানরা এক আজান এবং দুই ইকামতে জোহর ও আছরের নামাজ এক সঙ্গে জামাতে আদায় করেন। মসজিদে নামিরা থেকে দূরে অবস্থান করা হজযাত্রীরা জোহর এবং আছরের নামাজ আলাদাভাবে আদায় করেন নিজেদের তাঁবুতে।

তাঁরা সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্তের পর কিছু সময় পর্যন্ত অবস্থান করেন আরাফাতের ময়দানে। সূর্য অস্ত যাওয়ার কিছু সময় পরে মাগরিবের নামাজ আদায় না করেই আরাফাত ময়দান থেকে হজযাত্রীরা প্রায় আট কিলোমিটার দূরে মুজদালিফার উদ্দেশে রওয়ানা দেন। মুজদালিফায় গিয়ে এশার নামাজের সময় এক সঙ্গে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করেন। পরে সেখানেই খোলা আকাশের নীচে বিস্তীর্ণ খোলা মাঠে রাত যাপন করেন তাঁরা। রাতে প্রতীকী শয়তানের উদ্দেশে নিক্ষেপের জন্য সংগ্রহ করেন ৭০টি পাথর।

আরাফাত ময়দানে আসার আগে হজযাত্রীরা গত ৮ জিলহজ পবিত্র হজ পালনের প্রথম আনুষ্ঠানিকতার অংশ হিসেবে দু’দিকে পাহাড় পরিবেষ্টিত এলাকা মিনায় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত তাঁবুতে অবস্থান করেন। হজযাত্রীদের মধ্যে পুরুষরা হজের প্রথম রুকন ইহরাম (শরীরের নিচের অংশে আড়াই হাত বহরের আড়াই গজের এক টুকরা কাপড় আর গায়ে জড়িয়ে নেওয়ার জন্য একই বহরের তিন গজের এক টুকরা সাদা রংয়ের সেলাইবিহীন কাপড়) পরিধান অবস্থায় রয়েছেন। নারীরা আছেন পর্দায় আচ্ছাদিত। তাঁরা আগামী ১২ জিলহজ পর্যন্ত মিনা ও মক্কায় অবস্থান করবেন।

বুধবার ফজরের নামাজ আদায়ের পর সূর্যোদয়ের আগে কিছু সময় অবশ্যই মুজদালিফায় অবস্থান করবেন হাজিরা। এরপর তাঁরা যাবেন মিনায়। সেখানে মিনার জামারায় (শয়তানের উদ্দেশে পাথর ছোঁড়ার স্থান) বড় শয়তানের উদ্দেশে প্রতীকী সাতটি পাথর নিক্ষেপ শেষে পশু কোরবানি এবং রাসুলুল্লাহর (সা.) আদর্শ অনুসরণে পুরুষরা মাথা মুণ্ডন করে গোসল করবেন। নারীরা চুলের অগ্রভাগ থেকে প্রায় এক ইঞ্চি পরিমাণ চুল কাটবেন। এরপর হাজীরা সেলাইবিহীন ইহরাম খুলে ফেলবেন এবং পশু কোরবানি দেবেন। পরে তাঁরা হজের তৃতীয় অর্থাৎ শেষ রুকন আদায়ের জন্য মিনা থেকে মক্কায় গিয়ে সুবহে সাদিকের পর থেকে কাবা শরীফ তাওয়াফ করবেন।

কাবা শরীফের সামনের দুই পাহাড় সাফা ও মারওয়ায় সাতবার ‘সাঈ’ (দৌড়ানো) করবেন। সেখান থেকে তাঁরা আবার ফিরে যাবেন মিনায়, নিজেদের তাঁবুতে। হজযাত্রীরা ১১ জিলহজ আবার মিনার জামারায় গিয়ে জোহরের নামাজের পর থেকে পর্যায়ক্রমে ছোট, মধ্যম ও বড় শয়তানকে সাতটি করে ২১টি পাথর নিক্ষেপ করবেন। একইভাবে ১২ জিলহজ আবারও ছোট, মধ্যম ও বড় শয়তানকে ২১টি পাথর নিক্ষেপের পর সন্ধ্যার আগে তাঁরা মিনা ত্যাগ করবেন। পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে সৌদি আরবের হিজরি বর্ষপঞ্জী অনুযায়ী ১০ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত যে কোনো সময়ে কাবা শরীফকে ফরজ তাওয়াফের মধ্য দিয়ে।

শেখ হাসিনার সঙ্গে জেলেনস্কির বৈঠক

আন্তর্জাতিক, জাতীয়, 17 February 2024, 1372 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
জার্মানিতে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের ফাঁকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকে উভয় নেতা দ্বিপক্ষীয় ও বৈশ্বিক ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেন বলে জানা গেছে।

banner

আজ ১৭ ফেব্রুয়ারি শনিবার সকালে হোটেল বায়েরিসচার হোফের সম্মেলনস্থলে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকে দুই নেতা বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছেন।

জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ ও বৈঠকের আগে জার্মানির অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন বিষয়ক ফেডারেল মন্ত্রী একই স্থানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

এর আগে সকালে সম্মেলনস্থলে নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। এ ছাড়া বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বৈঠক করেছেন।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন ২০২৪-এ যোগ দিতে তিন দিনের সরকারি সফরে ১৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় মিউনিখে পৌঁছেন।

সফর শেষে শেখ হাসিনা আগামীকাল রাতে মিউনিখ ত্যাগ করবেন। ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা পৌঁছার কথা রয়েছে।

জামিন নিয়ে পালিয়েছেন ই-অরেঞ্জের সোহেল রানা

আন্তর্জাতিক, 22 January 2023, 1253 Views,

ডেস্ক :
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের প্রতারণায় অভিযুক্ত বনানী থানার পরিদর্শক সোহেল রানা ভারতে জামিন পেয়ে পালিয়ে গেছেন। ভারতের মেখলিগঞ্জ থানায় প্রতি সপ্তাহে সশরীরে থানায় হাজিরা দেওয়ার শর্তে জামিন পেয়েছিলেন তিনি।

banner

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোচবিহার জেলার পুলিশ সুপার সুমিত কুমার। এর আগে এক প্রতিবেদনের মাধ্যেম দেশটির পুলিশ সদর দপ্তর হাইকোর্টকে জানায় সোহেল রানা বর্তমানে আলীপুরের প্রেসিডেন্সি জেলে রয়েছেন। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায় তিনি ৪২ দিন ধরে সেখানে নেই।

পুলিশ জানায়, অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গত বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চ তার সাজা ঘোষণা করেন। এরপর থেকে তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেলেই ছিলেন। কিন্তু জেলে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত বছরের ডিসেম্বর মাসে জামিনের আবেদন করেন সোহেল। পরে মেখলিগঞ্জ থানায় প্রতি সপ্তাহে সশরীরে হাজিরা এবং থানা এলাকার বাইরে যাওয়া যাবে না এমন শর্তে একই বছরের ৮ ডিসেম্বর তার জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।

পুলিশ আরো জানায়, জামিন পাওয়ার পর থানায় এসে হাজিরা দেওয়ার পরিবর্তে তিনি একটি ই-মেইলের মাধ্যমে জানান শারীরিক অবস্থার অবনতির জন্য তাকে উন্নত চিকিৎসা নিতে থানা এলাকার বাইরে যেতে হচ্ছে। এ বিষয়ে কোচবিহার জেলা সদর হাসপাতালের চিকিৎসা সংক্রান্ত কিছু কাগজও থানায় ই-মেইল করেন তিনি। এরপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

ই-অরেঞ্জ কাণ্ডের পর ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের পর শিলিগুড়ি হয়ে নেপালে এক বোনের কাছে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন সোহেল রানা। ভূটান-নেপাল ও বাংলাদেশ সীমানা ঘেরা শিলিগুড়ি করিডোর থেকে কোচবিহারের মেখলিগঞ্জ মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে। উন্মুক্ত ভারত-নেপাল সীমান্তের সুযোগ নিয়ে ফের নেপালে পালানোর চেষ্টা করতে পারে বলে ধারণা পুলিশের।

‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত আরাফাত ময়দান

আন্তর্জাতিক, 15 June 2024, 614 Views,

অনলাইন ডেস্ক :

banner

‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত সৌদির আরাফাত ময়দান। পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতায় আজ ১৫ জুন শনিবার সৌদি আরবের মক্কা নগরী থেকে ২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে আরাফাতের ময়দানে সমবেত হয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা লাখ লাখ হাজি।

আরবি বর্ষপঞ্জি অনুসারে ৯ জিলহজ। এটি পবিত্র ‘আরাফাত দিবস’ হিসেবেও পরিচিত। ঐতিহাসিক এই ময়দানে ইবাদত বন্দেগি আর দোয়া মোনাজাতে মশগুল হাজিরা। এদিন সকাল থেকে কণ্ঠে তাদের সমস্বরে উচ্চারিত হচ্ছে- ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইক লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্দা, ওয়ান্নি মাতা লাকা ওয়াল্মুল্ক্, লা শারিকা লাকা’। এর বাংলা অর্থ ‘আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার’।

সাদা দুই টুকরা কাপড়ে শরীর ঢেকে হজযাত্রীরা আজ শনিবার মিনায় ফজরের নামাজ আদায়ের পর থেকেই পবিত্র আরাফাতের ময়দানের উদ্দেশে রওনা করেন। এই আরাফাতের ময়দানেই মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) তাঁর বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন। সেই স্মৃতি বুকে ধারণ করে মুসলিমরা সমবেত হচ্ছেন এই পবিত্র প্রান্তরে।

গত ৮ জিলহজ শুক্রবার মক্কা থেকে পাঁচ থেকে আট কিলোমিটার পূর্বে মিনায় তাঁবুতে অবস্থান করেছেন হজযাত্রীরা। সেখানে ইবাদত বন্দেগিতে দিন ও রাত পার করেছেন তারা। সেখান থেকে আজ ভোরে তারা আল্লাহকে কাছে পাওয়ার এক তীব্র আকাক্সক্ষায় ছুটে এসেছেন আরাফাতের ময়দানে। মুহুর্মুহু উচ্চারণ করছেন- ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইক লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্দা, ওয়ান্নি মাতা লাকা ওয়াল্মুল্ক্, লা শারিকা লাকা’। এ এক অভূতপূর্ব দৃশ্য।

আরব নিউজ অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়, সারা বিশ্ব থেকে ২০ লাখের বেশি হজযাত্রী গত শুক্রবার মিনায় তারবিয়া দিবস কাটিয়েছেন। এদিন তারা হজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আরাফাত দিবসের প্রস্তুতি নেন। হজযাত্রীরা হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর দেখানো পথ অনুসরণ করে শনিবারের আরাফাত দিবসের জন্য তাদের চূড়ান্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন।

রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সি জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দক্ষ ট্রাফিক ও নিরাপত্তা পরিকল্পনা হজযাত্রীরা মসৃণভাবে হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে পারছেন। হজযাত্রীদের সুস্থতা নিশ্চিত করতে ৩৪ হাজারের বেশি চিকিৎসক, নার্স, ফার্মাসিস্ট এবং প্রশাসনিক কর্মীরা কাজ করেছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

১৮৯টি নিবেদিত হাসপাতাল, চিকিৎসা কেন্দ্র এবং মোবাইল ক্লিনিকের অসুস্থ হাজিদের পরিবহণে ৭৩০টি অ্যাম্বুলেন্স এবং সাতটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, গত ৭ জুন থেকে এসব চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে ১৮০ জন হজযাত্রীর হার্টে অস্ত্রোপচার এবং ৪৭০ জনেরও বেশি হাজির ডায়ালাইসিস করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার পর্যন্ত ৭০ হাজারের বেশি হজযাত্রী মন্ত্রণালয় প্রদত্ত বিভিন্ন চিকিৎসা পরিষেবা গ্রহণ করেছেন। তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায় মন্ত্রণালয় হজযাত্রীদের সূর্যের তাপ থেকে রক্ষা পেতে ছাতা ব্যবহার এবং প্রচুর পানি পান করার আহ্বান জানিয়েছে।

এদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হজ ও ওমরাহ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী তৌফিক আল-রাবিয়া বলেছেন, ‘পবিত্র স্থানগুলো সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আমরা হজ করতে আসা সবাইকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই।’

মিউনিসিপ্যাল, রুরাল ও আবাসন বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানায়, পবিত্র স্থানগুলোতে হাজিদের সহায়তায় তাদের ২২ হাজার কর্মী কাজ করছেন। এ ছাড়া ৮৮ হাজার ডাস্টবিন সরবরাহ করা হয়েছে।

আজ সারা দিন হাজিরা পবিত্র আরাফাতের ময়দানে আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও রহমত চেয়ে প্রার্থনা করবেন। এ ময়দানে অবস্থানকালে হজযাত্রীরা নামিরাহ মসজিদে জোহরের নামাজ আদায় করবেন। বিশ্বের লাখ লাখ হজযাত্রী সম্মিলিতভাবে আল্লাহর উপাসনায় নিজেদের নিমগ্ন রাখবেন। আজ সন্ধ্যায় হজযাত্রীরা মুজদালিফায় যাত্রা শুরু করবেন। এটি আরাফাত ও মিনার মধ্যে অবস্থিত একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। হজযাত্রীরা মুজদালিফায় রাত কাটাবেন এবং ছোট পাথর সংগ্রহ করবেন। মিনায় জামারাত স্তম্ভে শয়তানকে লক্ষ্য করে এসব পাথর নিক্ষেপ করবেন তারা।

(১০ জিলহজ) সৌদি আরবের স্থানীয় সময় রবিবার ভোরে ফজরের নামাজ শেষ করে আবার মিনায় ফিরে আসবেন হজযাত্রীরা। সেখানে জামারাত আল-আকাবায় পাথর নিক্ষেপ করার পর পশু কোরবানি করবেন তারা। এরপর তাওয়াফ আল-ইফাদাহ বা ফরজ তাওয়াফ করার জন্য মসজিদুল হারামে যাবেন। এই তাওয়াফ অবশ্য ১০ থেকে ১২ জিলহজের মধ্যে যেকোনো সময় করতে পারবেন তারা। এ সময় তারা কাবা শরিফ তাওয়াফ ও সাফা-মারওয়া সাঈ করবেন এবং মাথা মুণ্ডন করবেন। একবার এই পবিত্র কাজটি সম্পন্ন করার পর হজযাত্রীদের আর ইহরামের নিয়মের মধ্যে আবদ্ধ থাকতে হবে না। তারা সব হালাল (অনুমতিযোগ্য) কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত হতে পারবেন।

হজের অবশিষ্ট আচারগুলো সম্পন্ন করতে হজযাত্রীদের অবশ্যই আবার মিনায় ফিরে যেতে হবে। তাশরিকের দিনগুলোতে ১১, ১২ ও ১৩ জিলহজ হজযাত্রীদের মিনায় আরও দুটি কাজ করতে হবে। ১১ জিলহজ বিকেলে হজযাত্রীরা ২১টি ছোট পাথর সংগ্রহ করে তিন জামারাতে নিক্ষেপ করবেন। পাথর নিক্ষেপ শুরু হয় জামারাত আল-উলা দিয়ে, তারপর জামারাত আল-উস্তা এবং পরে জামারাত আল-আকাবা দিয়ে শেষ হয়।

মক্কা থেকে যাত্রা করার আগে হজযাত্রীদের তাওয়াফ আল-বিদা করতে হবে, যা বিদায়ী তাওয়াফ নামেও পরিচিত। এটি হজ সম্পন্ন করায় অত্যন্ত তাৎপর্য বহন করে এবং সব হজযাত্রীদের জন্য বাধ্যতামূলক।

সৌদি কর্মকর্তারা বলেছেন, ২০২৩ সালে ১৮ লাখের বেশি লোক হজ করতে দেশটিতে জড়ো হয়েছিলেন। করোনা মহামারির আগে ২০১৯ সালে ২৪ লাখের বেশি মুসলমান হজে অংশ নেন। এ বছর প্রায় ২০ লাখ মানুষ হজ পালন করছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো।