চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়া থেকে হত্যা, অস্ত্র, মাদক ও গরু চুরিসহ ১৯ মামলার পলাতক আসামি খোকন মিয়া (৪৪)-কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারের সময় সে মাজারে ঘুমাচ্ছিল।
আজ ১১ জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার খড়মপুর কেল্লা শহীদ (র.) মাজার থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে সদর মডেল থানার পুলিশ।
আসামি খোকন সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের কাছাইট গ্রামের মৃত আব্দুল হাশিমের ছেলে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন চন্দ্র বনিক জানান, খোকন মিয়া পুলিশের তালিকাভুক্ত কুখ্যাত আসামি। সে মাদক, গরু চুরি, হত্যা, অস্ত্রসহ ১৯ টি মামলার পলাতক ও পরোয়ানাভুক্ত আসামি। গত কোরবানির ঈদের আগেও সে একটি খামার থেকে চারটি গরু চুরি করেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে আখাউড়ায় মাজারে গাঁজা সেবন করে ঘুমাচ্ছিল খোকন। তখন তাকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরো জানান, গ্রেফতার খোকনকে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করতে রিমান্ড আবেদন করা হবে।
চলারপথে নিউজ :
সৌদি আরব প্রবাসী মুবাশ্বির ঈদের পর ২৬ এপ্রিল ছুটিতে বাড়িতে আসার কথা ছিল। পরিবারের সবাই আনন্দে উদ্বেল হয়ে তার আগমনের অপেক্ষার প্রহর গুণছিল। কিন্তু যে দিন আসার কথা তার আগের দিন তার মৃত্যু সংবাদ পেল পরিবার। মুহুর্তের মধ্যেই সব আনন্দ ফিকে হয়ে পরিবারের নেমে এলো বিষাদের ছায়া। মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকেই স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে আকাশ বাতাস। এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া।
গতকাল মঙ্গলবার স্ট্রোক করে মারা যায় সে। নিহত মুবাশ্বির ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের গাজীর বাজারের ব্যবসায়ী ও সাহেব নগর গ্রামের আবু জাহের ভূঁইয়ার ছেলে।
মুবাশ্বিরের পঞ্চাশোর্ধ্ব মা রোকেয়া বেগম আহাজারি করে কাঁদছিলেন ‘তোমরা আমার বুকের মানিককে আমার বুকে ফিরিয়ে দাও’।
নিহত মুব্বাশির ভূঁইয়ার ছোট ভাই মুকাদ্দেস ভুঁইয়া জানান গত ৪ বছর আগে পরিবারের সুখের আশায় সৌদি আরব পাড়ি জমিয়েছিল মুব্বাশির ভূঁইয়া। এরই মধ্যে গত ৬ মাস আগে দেশে এসে ছুটি কাটিয়ে আবার প্রবাসে চলে যান। ঈদের পর ছুটিতে দেশে আসার কথা ছিল। সে অনুযায়ী দেশে আসার সকল প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছিল।
আজ ২৬ এপ্রিল বুধবার দেশে আসার কথা ছিল। আমি গাড়ি ভাড়া করে রেখে ছিলাম রাতে ঢাকা এয়ারপোর্টে গিয়ে দুপুরের মধ্যে তাকে নিয়ে বাড়ি আসব। এর একদিন আগেই স্ট্রোক করে মারা যান তিনি। কথা গুলো বলার সময় কন্ঠ জড়িয়ে আসে তার।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ জালাল উদ্দিন বলেন, নিহত মুবাশ্বির আমার এলাকার সাহেবনগর গ্রামের বাসিন্দা। তার মৃত্যু সংবাদটি আমি পেয়েছি। আমি তার পরিবারের খোঁজ খবর রাখছি। আমি তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে আফজাল হোসেন জুম্মান (৩৪) নামে এক চোরাকারবারীকে আটক করা হয়েছে।
এসময় তার বাড়ি থেকে ২৭৯ পিস ভারতীয় শাড়ি, ৭৫০ পিস রং ফর্সারকারী ক্রিম, ২টি ল্যাপটপ ও ২টি মোবাইল উদ্ধার করেছে। ২ অক্টোবর বুধবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের দ্বিজয়পুর গ্রামের বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়। সে ওই গ্রামের মুখলেছুর রহমানের পুত্র।
অভিযানকালে জুম্মানের বাড়ি থেকে দেশীয় ২টি চাকু ও ১টি দা জব্ধ করা হয়।
আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুল হাসিম বলেন, আটক জুম্মানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের পূর্বক তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বিয়ে, গায়ে হলুদ, পুজা, খেলা-ধুলা বা মিছিলে বাদ্য বাজানোর জন্য ডাক পরে তাদের। কাঁধে ঢোল ঝুলিয়ে দু’হাতে ঢাকে কাঠির বারি দিয়ে ছন্দের আওয়াজ তুলেন। সেই ছন্দে মানুষ নেচে গেয়ে আনন্দ করে। মানুষকে আনন্দ দিয়েই চলে ঢুলিদের সংসার। পুজা এলেই কদর বাড়ে তাদের। ঢাকের বাদ্য ছাড়া পুজার আনন্দ যেন অসম্পূর্ণ। তাই আসছে দুর্গাপুজায় বাদ্য বাজানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার উত্তর ইউনিয়নের করুয়াতলী ঋষিদাস পাড়ার ঢুলিরা। শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দূর্গাপুজা।
সোমবার দুপুরে ঋষি পাড়ায় ঢুকতেই কানে আসে ঢোলের আওয়াজ টেম-টে টেটেম..টেম.। সেই আওয়াজের ছন্দে শিহরণ জাগায়। মনে করিয়ে দেয় পুজা আসছে। উঠানে গিয়ে দেখা যায় বাদ্যযন্ত্র পরখ করে নিচ্ছেন ঢুলিরা। কেউ বা আঙ্গুলের আলতো ঁেছায়ায় ঢোলে তাল তুলছেন। তাদের চোখে মুখে আনন্দের ঝিলিক।
ঢুলিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পারিবারিক ঐতিহ্য ঢাক-ঢোল বাদ্য-বাজনার পেশা ধরে রেখেছে ঋষিদাস পাড়ার ৫/৬টি পরিবার। বিয়ে-গায়ে হলুদ, পুজাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ঢাক বাজিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে তারা। তাছাড়া ঢাক-ঢোল মেরামত আর মাঝে মধ্যে বাদ্যযন্ত্র বিক্রি করেও কিছু আয় হয়। তা দিয়েই চলে সংসার। তবে তাদের ভাষ্য, দিন দিন আয় রোজগার কমে যাচ্ছে। তবু বাপ-দাদার পেশা বলে আকড়ে ধরে রেখেছেন।
ঢুলির সর্দার বিশাম্বর ঋসি প্রায় ৫০ বছর ধরে ঢাক-ডোল বাজাচ্ছেন। তিনি বলেন, আমার বাবা ঢুলি ছিলেন। ১০/১২ বছর বয়স থেকে বাবার সাথে ঢোল বাজাতে বিভিন্ন জায়গায় যেতাম। এভাবেই ঢোল বাজানো শিখি। শখ থেকেই ঢোল বাজানো পেশা হয়ে গেছে। বাবার মৃত্যুর পর থেকে আমি বাবার পেশা ধরে রেখেছি। প্রায় ৫০ বছর ধরে ঢাক-ঢোল বাজানোর সাথে জড়িত আছি। ২ মেয়ে বিয়ে দিয়েছি। তিন ছেলে আছে তারাও আমার সাথে বাজনা বাজায়।
তিনি আরও বলেন, বছরের অন্য সময় বিয়ে-গায়ে হলুদ, মিছিলে বাদ্য বাজনার ডাক পরে। বছরের ২০/২৫টি অনুষ্ঠান করতে পারি। তবে পুজার সময় কাজের চাপ বাড়ে। এবার দুর্গাপুজায় ৪টি মন্ডপে কাজ পেয়েছি। একটি মন্ডপে ১০/১২ হাজার টাকা পাওয়া যায়। লোকজনকে দিয়ে নিজের কিছু থাকে। বাপ-দাদা এ পেশায় ছিল। আমিও করছি। আমার ছেলেরাও করবে। তিনি বলেন আয় রোজগারের পাশাপাশি, ভক্ত-বৃন্দ আনন্দ পায় এটাই আমাদের আনন্দ।
কথা হয় রাখাল ঋসির সাথে। তিনি বলেন, ৬৫ বছর বয়স হয়েছে। ছোট বেলা থেকেই ঢাক-ডোল বাজাই। পুজার সময় রোজগার বেশি হয়। তাই সারা বছর পুজার জন্য অপেক্ষা করি। ঢাক বাজাতে বিভিন্ন জেলাতে চলে যাই। পুজাতে ঢাক বাজিয়ে বেশি আনন্দ পাই। তিনি আরও বলেন, বিয়ে-গায়ে হলুদ, মিছিলে ২/৩ হাজার টাকা পাওয়া যাই। এভাবেই আমাদের সংসার চলে। বয়স হয়েছে। জানি না আর কত দিন ঢোল বাজানোর কাজ করতে পারবো। আখাউড়া উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব সাংবাদিক বিশ^জিত পাল বাবু বলেন, পুজার একটি অন্যতম অনুষঙ্গ বাদ্য যন্ত্রের ব্যবহার। এটি আদিকাল থেকেই ছিল। এখনও আছে। তবে আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে আয়ের স্বল্পতার কারণে অনেকেই এ পেশা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। ঋষিদাস পাড়ার কয়েকটি পরিবার পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রেখে কোন রকমে টিকে আছে। আশা করি, সরকারসহ স্থানীয়রা তাদের প্রতি নজর দিবেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় ২ যুবককে আটক করেছে পুলিশ। ২৮ জুলাই শুক্রবার রাতে তাদের আটক করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ রাতেই দ্রুত বিচার আইনে মামলা নেয়।
আটককৃতরা হলেন, মাহাফুজ মিয়া (৭০) ও সুমন (২৯)। তারা সম্পর্কে বাবা-ছেলে।
এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যায় দি কমফোর্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এক নারী কর্মচারী ডাক্তারের ভিজিট চাইলে আটককৃত সুমন তাকে লাঞ্ছিত করে। পরে সুমনের নেতৃত্বে ২০/২৫ জন যুবক সংঘবদ্ধ হয়ে ওই নারী কর্মচারীকে তুলে নিতে আসে।
এসময় খবর পেয়ে কালের কণ্ঠের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি বিশ্বজিৎ পাল ছুটে এসে বাধা দিলে তাদয়ের ওপর হামলা চালায়। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে এলে তারা দ্রুত সটকে পড়ে। পরে পুলিশ রাতভর অভিযান চালিয়ে ঘটনার দুই মূলহোতাকে আটক করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আখাউড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুল ইসলাম বলেন, আটককৃতদের মামলাসহ আদালতে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
সুস্থ পৃথিবী গড়ে তুলতে মৈত্রীর বার্তা নিয়ে যৌথ সাইক্লিংয়ে অংশ নিতে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে ভারতীয় ১৬ সদস্যের একটি সাইক্লিং দল। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ভারতের উত্তর-পূর্ব ত্রিপুরা রাজ্য থেকে আগরতলা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন সীমান্ত পথে দলটি বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা সাইক্লিং কমিউনিটি দলটি সকালে আখাউড়া ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট সীমান্তের শূন্যরেখায় আসলে কুমিল্লার সাইক্লিং ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া রানার্স কমিউনিটির পক্ষ থেকে তাদেরকে ফুলেল অভ্যর্থনা জানানো হয়।
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সুদৃঢ় এবং সুস্থ পৃথিবী গড়ে তুলতে, পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখার বার্তা নিয়ে ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা সাইক্লিং কমিউনিটি এবং কুমিল্লার সাইক্লিং ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রানার্স কমিউনিটির যৌথ উদ্যোগে চার দিন এসব সাইক্লিস্টরা বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা সফর করবেন।
আগরতলা সাইক্লিস্ট কমিউনিটির প্রতিষ্ঠাতা ও এডমিন গোপেস দেবনাথ জানান, সুস্থ পৃথিবী গড়ে তুলতে, পরিবেশ দূষণ রোধ করতে ও প্লাস্টিকের ব্যবহার কমিয়ে পাশাপাশি পুনঃব্যবহার দিয়েই পৃথিবীর পরিবেশ সুস্থ রাখা অনেকাংশে সম্ভব। তাই আমাদের স্লোগান হলো- ‘বেঁচে থাকতে পৃথিবীকে বাঁচিয়ে রাখুন’।
তিনি আরও বলেন, সাইকেল পরিবেশবান্ধব। সাইকেল চালালে পরিবেশের কোনো দূষণ হয় না। পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখার বার্তা দিয়ে সাইক্লিস্টরা বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা ঘুরবেন।
অপরদিকে সাইক্লিস্টদের তরফে জানানো হয়, তারা একদিকে যেমন বিভিন্ন পর্যটন ঘুরে দেখবেন পাশাপাশি সাধারণ মানুষদের পরিবেশ দূষণের ভয়াবহতা এবং সাইকেল চালানোর সুফলের বিষয়ে তুলে ধরবেন। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের সৌন্দর্য যেমন দেখতে পারবেন তারা। তেমনি মৈত্রীর বার্তা ছড়িয়ে দেবেন। এসব ভেবে খুব বেশি উৎফুল্ল মনে হচ্ছে তাদের।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রানার্স কমিউনিটির প্রতিষ্ঠাতা ও অ্যাডমিন অলি আহাদ রতন জানান, সাইক্লিংয়ের এ টিম বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ, চাঁদপুরসহ বিভিন্ন জেলায় চার দিন ঘুরে কুমিল্লায় এক প্রীতি অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে ১৫ অক্টোবর কুমিল্লার বিবির বাজার ইমিগ্রেশন সীমান্তপথে রাজ্যে ফিরে যাবেন।