চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে ড্রেজার দিয়ে ধানি জমি কেটে পুকুর বানানোর সময় মাটিচাপা পড়ে দুই শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
আজ ১১ জুলাই বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের সিদ্বেশরী গ্রামের ওই পুকুর থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।
নিহতরা হলেন, ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে দোলোয়ার (২৫), আসাদ আলীর ছেলে মনসুর আলী (২৭)।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে সিদ্বেশরী গ্রামের হাসান মিয়ার ভিটা বাড়ি ভরাটের জন্য ধানি জমি কেটে পুকুর করতে মাটি তুলছিলেন। বুধবার রাতে ড্রেজার দিয়ে খনন করার সময় তিন শ্রমিক মাটি ধসের নিচে চাপা পড়ে। তাৎক্ষণিক আতিকুল ইসলাম নামে একজন বের হয়ে আসলেও বাকি দুইজন মাটির নিচে চাপা পড়ে থাকেন। আজ দুপুরে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থল থেকে দুই জনের মরদেহ উদ্ধার করে।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরানুল ইসলাম জানান, নিহত দুইজনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ছাত্র জীবন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির প্রতি ঝোঁক ছিল তার। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক থাকা অবস্থায় ক্যাম্পাসে অল্প কদিনে সংগঠক হিসেবে নেতৃত্বের গুণাবলীর জন্য পরিচিতি পান ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী। এমবিবিএস শেষ করে নিজের শহর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ক্রিশ্চিয়ান মেডিকেল সেন্টারে চিফ মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। সাম্প্রতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা উপ-কমিটির সদস্য করা হয়েছে তাকে।
উপ-কমিটির সদস্য পদ প্রসঙ্গে ডা. আশীষ বলেন, ‘রাজনীতির মধ্যেই ছিলাম, সরকারের স্বাস্থ্য সুরক্ষা পলিসিতে যেখানে যখন আমি ও আমার প্রতিষ্ঠানের কাজ করার সুযোগ ছিল, আমরা ছিলাম। প্রধানমন্ত্রী প্রান্তিক মানুষের জন্য যে টেলিমেডিসিন সেবা গোঁটা বাংলাদেশ জুড়ে শুরু করেছিলেন, আমার প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ সে প্রকল্পের অন্যতম অংশীদার ছিল।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক প্রজ্ঞায় বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ এক নবশক্তিতে রূপান্তরিত হয়েছে। নবরুপের এ বাংলাদেশের ডিজিটাল অংশীদার ছিলাম, এখন স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে কর্মী হয়ে শ্রম দিব, এজন্য রাজনীতির মাঠে।’
তিনি আরো বলেন, ‘মূলধারার রাজনীতিতে থেকে একটা অঞ্চল বা গোষ্ঠীর আর্থ সামাজিক জীবনে যতটুকু ভূমিকা রাখতে যায়, একজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে তা সম্ভব নয়। গণমানুষ, জনস্বাস্থ্য বা গণশিক্ষা একটা জাতির সামগ্রিক আগ্রগতির হাতিয়ার। আমার স্বাস্থ্য সেবার গুণগত মান, সেবার পরিধি ও বিস্তার নিয়ে আগে থেকেই কাজ করছিলাম। উপ-কমিটির সদস্য পদ পাওয়ার পর থেকে দায়িত্ব বেড়েছে তা বুঝতে পারছি।’
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যদি নৌকার টিকিট পান তাহলে জনগণের প্রত্যাশা পূরণে আপনার ভূমিকা কী হবে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমি সামান্য কর্মী। এ অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে আমার আত্মার আত্মায়তা হয়েছে এখন তারই প্রতিফিলনে তারা হয়ত আমাকে চাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী যদি মনে করেন আমি যোগ্য অবশ্যই নির্বাচনের মাঠে আমাকে দেখা যাবে, তবে দল আমার ওপর যে দায়িত্ব দেবে তা পালন করে যাব।’
ডা. আশীষ বলেন, ‘কেন্দ্র থেকে সবাইকে মাঠে কাজ করতে বলা হয়েছে, আমি আমার পেশাগত জায়গা স্বাস্থ্য খাতে গত ১৪ বছরে সরকার যে অমূল পরিবর্তন করেছে তা একটা পরিসংখ্যান নিয়ে কাজ করছি। এটাকে নানা মাধ্যমে জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে চাই। শুধু মাত্র স্বাস্থ্য সুরক্ষার দিকে তাকালে বোঝা যায় শেখ হাসিনা আমাদের ভবিষ্যতের জন্য কেন এবং কতটা গুরুত্বপূর্ণ।’
ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী ১৯৯০ সালে সরাইল অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ১৯৯২ সালে নটর ডেম কলেজ থেকে স্টার মার্কস নিয়ে এইচএসএসি পাশ করেন। তিনি সরকারি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ক্রিশ্চিয়ান মেডিকেল সেন্টারে পেশাজীবনের হাতেখড়ি করেন। ২০০৪ সালে তিনি বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান আয়েশা মেমোরিয়াল হাসপাতলের পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন, প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে নিজেদের নাম পরিবর্তন করে ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ করেছে।
বিশেষ প্রতিনিধি :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ উপনির্বাচন নিয়ে ঘটছে একের পর এক নাটকীয়তা। আওয়ামী লীগের ৩ স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর পর তাদের পথ ধরে উপনির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জাতীয় পার্টির নেতা অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা।
আজ ১৮ জানুয়ারি বুধবার স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো জিয়াউল হক মৃধা স্বাক্ষরিত এক বিবৃতি থেকে এ তথ্য জানা যায়।
অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা এ আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে দু’বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, উপনির্বাচনের প্রচারণায় সম্মানিত ভোটারদের কাছে যে আশ্বাস দিয়ে আমি ভোট প্রার্থনা করবো উপনির্বাচনের স্বল্পতম সময়ে ভোটারদের কাছে দেওয়া সেই আশ্বাস ও ওয়াদা বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। তাই আমি সম্মানিত ভোটারদের সঙ্গে প্রতারণা করতে পারব না। তাই আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমার আসনের ভোটারদের ম্যান্ডেট নিয়ে জয়ী হয়ে আমার উন্নয়নের পরিকল্পনা ও আশ্বাস তথা আমার অসমাপ্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারব বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।
গত শনিবার আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র তিন প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৈঠক করে উপনির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। তারা হলেন- জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন মঈন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু।
চার হেভিওয়েট প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর পর বর্তমানে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন জাতীয় সংসদ ও বিএনপি থেকে সদ্য পদত্যাগী উকিল আবদুস সাত্তার ভুঁইয়া, জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী জাপার কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ ভাসানী, জাকের পার্টির প্রার্থী জহিরুল ইসলাম জুয়েল এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক সভাপতি ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবু আসিফ আহমেদ। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি এ আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে ফ্রি ভেটেরিনারি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার সদর ইউনিয়নের পশ্চিম কুট্টাপাড়া হাজী আজদু মিয়ার বাড়িতে এই ফ্রি ভেটেরিনারি মেডিকেল ক্যাম্পের আয়োজন করা হয়।
ফ্রি ভেটেরিনারি মেডিকেল ক্যাম্পের উদ্বোধন করেন উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ মনসুর।
সরাইল উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের আয়োজনে এই ক্যাম্পের পরিচালনায় ছিলেন ভেটেরিনারি সার্জন ডাঃ শ্যামল কুমার চৌধুরী ও ডা. মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন। এছাড়াও ক্যাম্পে উপস্থিত ছিলেন, সরাইল ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের সভাপতি মোহাম্মদ শফিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ কামরুল হাসান রিপন, সহ-সভাপতি তৌহিদ উল্লাহ খন্দকার, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ জীবন মিয়া ও মহামারী ওয়াসিম প্রমুখ।
ক্যাম্পেইনে বিনামূল্যে গবাদিপশু ফ্রি চিকিৎসা ও কৃমিনাশক বিতরণ, রুচিবর্ধক ওষুধ, ভিটামিন ট্যাবলেট ও ইনজেকশন স্যালাইন, চিকিৎসা ও পরামর্শ প্রদান করা হয়।
আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি ॥ সংশ্লিষ্টদেরকে নোটিশ
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ব্রোকেন স্টোন বা চূর্ণ পাথরের ঘোষণা দিয়ে ভারত থেকে আমদানি হয়েছে ২৭০০ টন পাথরের ধুলা (ডাস্ট)। মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানির অভিযোগে ছাড়পত্র মিলছে না কাস্টমসের। যে কারণে প্রায় এক মাস ধরে আখাউড়া স্থলবন্দরে এই ডাস্ট বা ধুলাগুলো পড়ে আছে। কাস্টমসের গঠিত তদন্ত কমিটিও ডাস্ট উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িরা দাবি করেছেন, এতে প্রতিদিন লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদেরকে। এ জন্য তারা কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে দায়ী করছেন। রপ্তানিমুখী আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে প্রথমবারের মতো চূর্ণপাথর আমদানি হয় গত ১৩ নভেম্বর। এরপর কয়েক দফায় মোট ২৭০০ টন আমদানি করে ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। এ প্রতিষ্ঠানটি আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত করার কাজের জন্য পাথর আমদানি করেছে। আমদানিকৃত চূর্ণপাথরগুলো প্রতি টন আমদানি হয়েছে ১৩ মার্কিন ডলারে। এগুলো বন্দর থেকে ছাড়ানোর কাজ পায় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট খলিফা এন্টারপ্রাইজ। তবে কাস্টমস থেকে ছাড়পত্র নিতেই বাঁধে বিপত্তি। প্রথমবারের মতো আমদানি হওয়ায় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ছাড়পত্র দেওয়ার কথা জানায় কাস্টমস। পরবর্তীতে এগুলো পরীক্ষা করে পাথরের বদলে ডাস্ট আনা হয়েছে জানিয়ে আটকে দেয়া হয়। ফলে প্রতিদিনই বন্দর কর্তৃপক্ষকে মাশুল বাবদ প্রায় ৩৬ হাজার টাকা গুনতে হচ্ছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে।
অভিযোগ উঠেছে- আমদারিকারক প্রতিষ্ঠান ভাঙা পাথরের ঘোষণা দিয়ে ডাস্ট এনেছে। এজন্য কাস্টমসের তরফ থেকে চার সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়। তদন্ত শেষে রিপোর্ট দেওয়া হয় ডাস্ট হিসেবে। তবে দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে বলে জানান কাস্টমসের কর্মকর্তারা।
এদিকে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে চূর্ণ পাথর বা ডাস্ট আমদানির অনুমতি না থাকায় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে তাদেরকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট খলিফা এন্টারপ্রাইজকেও কার্যার্থে একই চিঠি দেওয়া হয়। সিএন্ডএফ এর মালিক হলেন আখাউড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মো.তাকজিল খলিফা কাজল।
খলিফা এন্টার প্রাইজের প্রতিদিন নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা প্রথম দফা আনার পর বলা হয় সব আনার পর অনুমতি দেওয়া হবে। এখন বলা হচ্ছে এ ধরণের পাথরের অনুমতি নেই। এখন পাথর আটকে থাকায় আমরা লোকসানের মুখে পড়েছি।’
আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘তদন্ত করে আমদানি করা পণ্য ডাস্ট হিসেবে পাওয়া গেছে। এ ধরণের পণ্য আমদানির অনুমতি নেই। এখন এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন।’
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইল উপজেলায় স্বামীর দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে শাহিদা আক্তার (২৬) নামের এক গৃহবধূ মারা গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় তাঁকে জড়িয়ে ধরে দগ্ধ হয়েছে দেড় বছর বয়সী মেয়ে সন্তানটি। দগ্ধ হয়েছেন গৃহবধূর স্বামী আল-আমীন (৩০)। তাঁদের সবাইকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তির পর ১২ ডিসেম্বর মঙ্গলবার ওই গৃহবধূ মারা যান।
গত সোমবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার কালীকচ্ছ ইউনিয়নের মধ্যপাড়া গ্রামে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আল-আমীনসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন শাহিদার ছোট ভাই আবিদ মুন্সি। আল-আমীন ও তাঁর মেয়ে আলিফা আক্তার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি আছে। শাহিদার লাশ গতকাল রাতে গ্রামে দাফন করা হয়েছে।
পুলিশ, মামলার এজাহার ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আট বছর আগে উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের আলাই মুন্সির মেয়ে শাহিদা আক্তারের সঙ্গে মধ্যপাড়া গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে আল-আমীনের বিয়ে হয়। তাঁরা প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন। প্রথমে আল-আমীনের পরিবার বিয়ে মেনে নিতে না চাইলেও পরে যৌতুক পেয়ে মেনে নেয়। তাঁদের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে আছে। বিয়ের পর আল–আমীনকে যৌতুক দেওয়া হয় সাড়ে তিন লাখ টাকা। এ টাকায় আল-আমীন মধ্যপ্রাচ্যে যান। তিন বছর আগে দেশে ফিরে তিনি ভবঘুরে স্বভাবের হয়ে পড়েন। টাকার অভাব হলেই তিনি স্ত্রীকে মারধর করতেন। শাহিদার পরিবার থেকে একাধিকবার টাকাও দেওয়া হয়েছে তাঁকে। শাহিদাকে নিয়মিত মারধরের কারণে গ্রামে একাধিকবার সালিসও হয়েছে।
সোমবার সকালে টাকার জন্য শাহিদা আক্তারকে মারধর করতে থাকেন আল-আমীন। একপর্যায়ে নিজের মোটরসাইকেল থেকে পেট্রল বের করে শাহিদার গায়ে ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন তিনি। অগ্নিদগ্ধ শাহিদা যখন চিৎকার করছিলেন, তখন তাঁর দেড় বছরের শিশু আলিফাও চিৎকার দিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরে। এতে শিশু আলিফা দগ্ধ হয়। নিজের দেওয়া আগুনে আল-আমীনও দগ্ধ হন। গ্রামের লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে প্রথমে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভর্তি করেন। পরে অবস্থার অবনতি হলে তিনজনকেই সোমবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মামলার বাদী শাহিদার ছোট ভাই আবিদ মুন্সি বলেন, ‘যৌতুকের জন্য পাষণ্ড আল-আমীন আমার বোনকে আগুনে পুড়িয়ে মারছে। আমরা তার ফাঁসি চাই।’
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, অগ্নিদগ্ধ আল-আমীন শঙ্কামুক্ত হলেও তাঁর মেয়ে শঙ্কামুক্ত নয়। তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে। পুলিশের নজরদারিতে আল-আমীনের চিকিৎসা চলছে। সুস্থ হলে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।