চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগরে চুরির অপবাদ দিয়ে সালিশ সভায় ২৫ বছর বয়সী এক নারীকে নির্যাতনের অভিযোগে বর্তমান ও সাবেক ইউপি সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল ১৩ জুলাই শনিবার রাতে উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রাম থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। আজ ১৪ জুলাই রবিবার দুপুরে গ্রেফতারকৃতদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড সদস্য ইসহাক মোল্লা ও একই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য হোসেন মিয়া।
বিজয়নগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাসান জামিল খান জানান, কয়েকদিন আগে উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের এক চৌকিদারের স্ত্রীকে চুরির অপবাদ দিয়ে সালিশী সভায় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন ভূইয়ার নির্দেশে বর্তমান ও সাবেক ইউপি সদস্যসহ কয়েকজন ওই নারীকে মারধোর করে। নির্যাতনের এই ভিডিও শনিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এরই প্রেক্ষিতে ভিডিও ফুটেজ দেখে সাবেক ও বর্তমান দুই ইউপি সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগরে শয়ন কক্ষে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে প্রবাসীর স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে। পরিবারটিতে শাশুড়ি ছাড়া ঘরে তেমন কেউ নেই। ফলে আত্মহত্যার মতো এমন ঘটনায় প্রতিবেশী ও পরিচিত বন্ধুবান্ধবরা হতবাক হয়ে গেছেন।
গতকাল ২১ এপ্রিল রবিবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার বুধন্তী ইউনিয়নের বুধন্তী গ্রামের পূর্বপাড়া নিহতের জাপান প্রবাসীর স্বামীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত তরুণী উপজেলার বুধন্তী ইউনিয়ন কেনা গ্রামের অলি আহমেদের মেয়ে ও বুধন্তী পূর্বপাড়ার জাপান প্রবাসী মো. তানভীর আহমেদের স্ত্রী মোসা. মুন্নী আক্তার (২৫)।
গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, দুই মাস আগে একে অপরকে পছন্দ করে বিয়ে করেন তারা। বিয়ের কিছু দিন পর স্বামী জাপানে চলে যায়। ইসলামপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রঞ্জন কুমার ঘোষ সাংবাদিকদের জানান, কিছু দিন আগে কেনা গ্রামের মুন্নীর সঙ্গে জাপান প্রবাসী তানভীরের বিয়ে হয়। সন্ধ্যায় সে স্বামীর ঘরের সিলিংফ্যানে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর আসল রহস্য জানা যাবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইল ব্যাটালিয়ন (২৫ বিজিবি) এক বিশেষ অভিযানে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় চোরাচালানি মালামাল আটক করে। আজ ৬ ডিসেম্বর শুক্রবার ভোরে সরাইল ব্যাটালিয়ন (২৫ বিজিবি) এর ব্রাহ্মণবাড়িয়া ট্রানজিট ক্যাম্পের বিশেষ টহলদল গোপন সূত্রের তথ্যের ভিত্তিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরা বাইপাস এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ভারতীয় বিভিন্ন প্রকার সিগারেট-৬৪৬ কার্টুন, ভারতীয় উন্নতমানের বিভিন্ন প্রকার চশমা- ১,৩৭০ পিস, ভারতীয় JHONSON BABY SOAP- ১,৭৫০ পিস, ভারতীয় KAVERI মেহেদী-২,৮৭০ পিস এবং ভারতীয় QUAKER OATS-৬৩ কেজি আটক করে।
আটককৃত ভারতীয় বিভিন্ন প্রকার চোরাচালানি মালামালের সিজার মূল্য তেতাল্লিশ লক্ষ চুয়াত্তর হাজার চারশত টাকা। আটককৃত ভারতীয় বিভিন্ন প্রকার চোরাচালানি মালামাল আখাউড়া কাস্টমস অফিসে জমা দেয়া হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্ত দিয়ে যাতে ভারত হতে যে কোন প্রকার চোরাচালানি মালামাল বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপারে সরাইল ব্যাটালিয়ন (২৫ বিজিবি) বদ্ধ পরিকর এবং অবৈধ চোরাচালানি মালামাল আটকে সরাইল ব্যাটালিয়ন (২৫ বিজিবি) এর অভিযান চলমান থাকবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ফলের স্বর্গ রাজ্য হিসেবে পরিচিত বিজয়নগর উপজেলা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর থেকে ভারতীয় সীমান্তঘেষা বিজয়নগর উপজেলার দূরত্ব প্রায় ৩৫ কিলোমিটার। প্রাকৃতিক ও নৈর্সগিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই বিজয়নগর উপজেলার টিলা ভূমির মাটি ফল চাষের জন্য খুবই উপযোগী। বর্তমানে দেশী ও বিদেশী অনেক ধরনের ফলই বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে এই বিজয়নগরে। সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে জানা গেছে প্রতি বছর এই উপজেলায় প্রায় ৫০ কোটি টাকার বিভিন্ন ফল বিক্রি করা হয়।
উৎপাদিত দেশী ফলের মধ্যে রয়েছে কাঁঠাল, আম, জাম, লিচু, পেয়ারা, মালটা, বড়ুই (বল সুন্দরী), কমলা ও লটকন। বিদেশী ফলের মধ্যে রয়েছে আপেল, আঙ্গুর, ড্রাগন ইত্যাদি। বর্তমানে বানিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে দামি আম ‘মিয়াজাকি’। মিয়াজাকি আমকে বাংলাদেশে সূর্যডিম আম বলা হয়।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর বিজয়নগর উপজেলায় ১৫ হেক্টর জমিতে লটকন, ৪২০ হেক্টর জমিতে লিচু, ৩৪০ হেক্টর জমিতে কাঁঠাল, ৬৫ হেক্টর জমিতে সবুজ মাল্টা, ৪২ হেক্টর জমিতে পেয়ারা ও ১৬ হেক্টর জমিতে লেবু চাষ করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছর বিজয়নগরে প্রায় ৮ কোটি টাকার বেশি কাঁঠাল, প্রায় ১৯ কোটি টাকার লিচু ও প্রায় ১৩ কোটি টাকার মালটা বিক্রি করা হয়। প্রায় ১ কোটি টাকার লটকন বিক্রি করা হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও পেয়ারা প্রায় সোয়া ৪ কোটি টাকা ও প্রায় ১ কোটি টাকার লেবু বিক্রি করা হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০০২ সাল থেকে বিজয়নগর উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে লিচুর আবাদ করা শুরু হয়। কম পরিশ্রমে বেশী লাভ হওয়ায় এখানকার ধানি জমি গুলোকেও লিচু বাগানে পরিনত করতে থাকেন চাষীরা।
চলতি বছর বিজয়নগর উপজেলার ৪২০ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ করা হয়েছে। প্রায় তিন শতাধিক লিচুর বাগান রয়েছে এই উপজেলায়। এখানকার লিচু মিষ্টি ও রসালো হওয়ায় দেশজুড়ে রয়েছে এই লিচুর আলাদা কদর। বিজয়নগরে চাষ করা হয় পাঁচ ধরনের লিচ। এর মধ্যে রয়েছে দেশী লিচু, এলাচি লিচু, চায়না লিচু, পাটনাই লিচু ও বোম্বাই লিচু।
বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর, বিষ্ণুপুর, কাঞ্চনপুর, খাটিঙ্গা, কাশিমপুর, সিঙ্গারবিল, চম্পকনগর, আদমপুর, কালাছড়া, মেরাশানী, সেজামুড়া, কামালমোড়া, নুরপুর, হরষপুর, মুকুন্দপুর, নোয়াগাঁও, অলিপুর, চান্দপুর, কাশিনগর, ছতুরপুর, রূপা, শান্তামোড়া, কামালপুর, কচুয়ামোড়া, ভিটিদাউপুর এলাকায় রয়েছে এই লিচুর বাগানগুলি। এ বছর বিজয়নগরে প্রায় ১৯ কোটি টাকার লিচু বিক্রি করা হয়েছে।
উপজেলার কামালমুড়া গ্রামের মোঃ শাহাবুদ্দিন বলেন, তার বাগানে থাকা ৭০ টি গাছের লিচু তিনি এ বছর ৬ লাখ টাকা বিক্রি করছেন। উপজেলার সেজামুড়া গ্রামের বাগান মালিক কাউছার ভূইয়া বলেন, তার ৪টি বাগানে থাকা ১৭০টি গাছের লিচু তিনি এ বছর প্রায় ১২ লাখ টাকা বিক্রি করেছেন।
উপজেলার মহেশপুর গ্রামের লিচুর চাষী মাসুদুল হাসান বলেন, তার বাগানে থাকা ৬০টি গাছের লিচু তিনি এ বছর ৬ লাখ টাকার লিচু বিক্রি করেছেন।
২০১৫ সাল থেকে বিজয়নগরে বাণিজ্যিকভাবে সবুজ মাল্টার চাষ শুরু হয়। গত বছর উপজেলার ৬৫ হেক্টর জমিতে সবুজ মাল্টার চাষ করা হয়। কৃষি বিভাগের প্রণোদনায় গত ২০১৬ সাল থেকে বারি-১ ও বারি-২ জাতের মাল্টা গাছের চারা রোপন করেন চাষীরা। শুরুতে রসালো এই ফলটির ফলন নিয়ে চাষীদের মধ্যে দ্বিধা-দ্বন্ধ থাকলে খরচ কম এবং ফলন ভালো হওয়ায় মাল্টার প্রতি আগ্রহ বাড়ে চাষীদের।
বর্তমানে উপজেলার পাহাড়পুর, চম্পকনগর, বিষ্ণুপুর ও সিঙ্গারবিল ইউনিয়নে রয়েছে ছোট বড় মিলিয়ে ৭৫৪টি মাল্টার বাগান। গত বছর বাগানগুলোতে মাল্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রায় ১৩ কোটি টাকার মাল্টা বিক্রি করা হয় বলে জানা গেছে।
উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের মেরাশানী গ্রামের মালটা বাগানের মালিক মোঃ সোহাগ ভূইয়া জানান, তার বাগানে ১২০টি মালটা গাছ আছে। গত বছর তিনি প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকার মালটা বিক্রি করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় প্রায় দুইশত বছর আগে বিজয়নগরে বাণিজ্যিকভাবে কাঁঠালের চাষ শুরু হয়। উৎপাদন খরচ ও পরিশ্রম কম হওয়ায় আস্তে আস্তে কাঁঠাল চাষে উদ্ধুদ্ধ হয় এখানকার চাষীরা। চলতি বছর বিজয়নগর উপজেলার বিজয়নগর উপজেলায় ৩৪০ হেক্টর জমিতে কাঁঠালের চাষ করা হয়েছে।
উপজেলার কালাছড়া, বিষ্ণুপুর, কাঞ্চনপুর, খাটিঙ্গা, কাশিমপুর, সিঙ্গারবিল, চম্পকনগর, মেরাশানী, কামালমোড়া, নুরপুর, কাশিমপুর, হরষপুর, ধোরানাল, মুকুন্দপুর, সেজামুড়া, নোয়াগাঁও এবং পত্তন এলাকায় রয়েছে প্রায় ৩ শতাধিক কাঠাল বাগান। চলতি বছর বিজয়নগরে প্রায় ৮ কোটি টাকার কাঁঠাল বিক্রি করা হয়েছে।
গত দুই বছর ধরে বিজয়নগরে লটকনের চাষ হলেও চলতি বছর থেকে বাণিজ্যিকভাবে লটকন চাষ করা হয়েছে। চলতি বছর উপজেলার প্রায় ১৫ হেক্টর জমিতে লটকন চাষ করা হয়। উপজেলার চম্পকনগর, মেরাশানি, সিঙ্গারবিল ও পাহাড়পুর এলাকায় রয়েছে লটকনের বাগান। উপজেলার ১৫ হেক্টর জমিতে লটকনের চাষ করা হলেও শুধু উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নেই রয়েছে প্রায় ১০ হেক্টর লটকনের বাগান।
মেরাশানী গ্রামের লটকন চাষী বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন বলেন, গত ৭/৮ বছর আগে তিনি ময়মনসিংহ জেলা থেকে ১০০ লটকনের চারা এনে একটি বাগান করি। প্রথমে যখন লকটকের বাগান করি এলাকার অনেকেই এনিয়ে হাসি-ঠাট্টা করেছেন। গত ২ বছর ধরে কিছু কিছু গাছে লটকন ধরা শুরু করলেও এবছর সব গাছে লটকন ধরেছে। তিনি বলেন, বাগান থেকে লক্ষাধিক টাকার উপর লটকন বিক্রি করতে পারবো বলে আশা করছি। তিনি বলেন, কৃষি অফিসের লোকজন সব সময় আমাকে পরামর্শ দিচ্ছেন। তবে সরকারিভাবে সহযোগিতা পেলে বানিজ্যিকভাবে আমি লটকনের চাষ করবো।
উপজেলার সিঙ্গার বিল গ্রামের লটকন বাগানের মালিক জাকির মিয়া বলেন, এ বছর লটকনের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতিদিন দূর-দুরান্ত থেকে পাইকারা এসে বাগান থেকেই লটকন কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, তার বাগান থেকে তিনি ২ লাখ টাকার লটকন বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করছেন।
একই এলাকার আবদুল হাসিম বলেন, তার বাগানে ১০০টি লটকন গাছ আছে। বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা এসে লটকন নিয়ে যাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ শাব্বির আহমেদ বলেন, বিজয়নগরের মাটি লটকন চাষের জন্য খুবই উপকারি। এই বছর বাণিজ্যিকভাবে উপজেলায় লকটন চাষ করা হয়েছে। উপজেলার ২০/২৫ জন চাষী ১৫ হেক্টর জমিতে লটকনের বাগান করেছেন। উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে বাগান মালিকদের সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগীতা দেয়া হচ্ছে। এ বছর উপজেলায় লটকনের বাম্পার ফলন হয়েছে। আশাকরি এ বছর উপজেলায় প্রায় ৮০ লাখ টাকার লটকন বিক্রি করতে পারবেন চাষীরা।
তিনি বলেন, লটকনের রয়েছে পুষ্টি ও ঔষধি গুণ। ভিটামিন “সি” তে ভরপুর এই ফল, যা প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় রাখা যায়। ১০০ গ্রাম পাকা লটকনে আছে খাদ্যশক্তি ৯১ কিলোক্যালোরি। এছাড়া আমিষ ১.৪২ গ্রাম, চর্বি ০.৪৫ গ্রাম, ভিটামিন-সি ৫৫ মিলিগ্রাম।
উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের বামুটিয়া গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন জানান, তার বাগানে মালটা, লটকন, কমলা, কয়েক জাতের আম, লিচু, পেঁপে, কাঁঠাল, ড্রাগন ও সৌদি আরবের খেজুর গাছ রয়েছে। “মিয়াজাকি” আম গাছও আছে তাঁর বাগানে। মিয়াজাকি আমকে বাংলাদেশে সূর্যডিম আম হিসেবে পরিচিত।
উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারি কৃষি অফিসার মোঃ হাদিউল ইসলাম সৃজন বলেন, ফলের জন্য উর্বর ভূমি বিজয়নগর উপজেলা। দেশি, বিদেশি সব জাতের ফলই এখানে বাণিজ্যিভাবে উৎপাদিত হচ্ছে। কৃষি অফিস থেকে সাধ্যমত সব ধরণের সহযোগিতা করা হয় চাষিদেরকে।
এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয়ের জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার মুন্সী তোফায়েল হোসেন বলেন, ফলের স্বর্গ রাজ্য হিসেবে পরিচিত বিজয়নগর উপজেলা। এই উপজেলায় দেশীয় ফল কাঁঠাল, আম, জাম, লিচু, পেয়ারা, মালটা, বড়ুই (বল সুন্দরী), কমলা ও লটকন উৎপাদরের পাশাপাশি বিদেশী ফল আপেল, আঙ্গুর, ড্রাগন ইত্যাদিও চাষ করা হচ্ছে। বর্তমানে বানিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে “মিয়াজাকি” আম। মিয়াজাকি আমকে বাংলাদেশে সূর্যডিম আম বলা হয়। তিনি বলেন, আমরা বর্তমানে সূর্যডিম আম চাষেই গুরুত্ব দিচ্ছি । এই আমটিকে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করে আগামী বছর দুয়েকের মধ্যে বাজারজাত করার জন্য আমরা কাজ করছি। তিনি বলেন, আমরা চাষীদেরকে বিভিন্নভাবে পরামর্শ ও সহযোগীতা করে থাকি। প্রতি বছর বিজয়নগরে প্রায় ৫০ কোটি টাকার বিভিন্ন ধরনের ফল বিক্রয় করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
আগামী ৫ জুন অনুষ্ঠিতব্য ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রীতি খন্দকার খন্দকার ওরফে হালিমা নিখোঁজ রয়েছেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে বিজয়নগর থানায় জিডি করা হয়েছে। গতকাল বুধবার তার স্বামী এই জিডি করেন।
গতকাল মঙ্গলবার বেলা ২টা থেকে বুধবার বিকেল সাড়ে তিনটায় এই রির্পোট লেখা পর্যন্ত প্রার্থীর কোন খবর পাওয়া যায়নি বলে মাসুদ খন্দকার জানিয়েছেন। তিনি জানান প্রচারণা চালাতে গিয়ে তিনি নিখোঁজ হন। তবে পুলিশ বলছে বিষয়টি সাজানো হতে পারে। তবে জিডির অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওসি আসাদুল ইসলাম।
প্রীতি খন্দকারের স্বামী মাসুদ খন্দকার বলেন, ৫ জুন বিজয়নগর উপজেলা নির্বাচনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে তার স্ত্রী মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে (পদ্মফুল প্রতীক) নির্বাচন করছেন। সার্ভার ক্রুটির কারণে প্রীতির মনোনয়ন জমা দিতে সমস্যা হওয়ার ফলে হাইকোর্ট থেকে প্রার্থীতা ফিরে পান তিনি। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার হরষপুর ইউনিয়নে দুইজন সহযোগী নিয়ে নির্বাচনি প্রচারনায় যান প্রীতি। হরষপুরের ঋষি পাড়ায় ঢুকে প্রচার করা অবস্থায় দুজন মহিলা বাহিরে আসেন আর প্রীতি ভোটারদের সাথে ভিতরে কথা বলছিলেন। ১০মিনিট ২০মিনিট পার হলেও যখন বের হচ্ছেনা বিধায় দুইজন মহিলা ভিতরে যান। ভিতরে গিয়ে প্রীতিকে খোঁজে পাচ্ছিলো না।
বিষয়টি সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ থানার ওসি মহোদয়কে অবগত করা হয়।
এ ব্যাপারে বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুল ইসলাম বলেন, প্রার্থীর স্বামী রাতে এসেছিলেন। তাকে নিয়ে রাতে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। যেখান থেকে নিখোঁজ হয়েছেন সেখানে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলেছি। স্থানীয়রা জানিয়েছেন প্রার্থী প্রচারে এসেছিলেন। তবে নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হচ্ছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
মোবাইল ছিনতাইয়ের অভিযোগ এনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এএইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে করা মামলা খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। গত ২৯ মে সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (তৃতীয়) আদালতের বিচারক আসমা জাহান নিপা মামলাটি খারিজ করে দেন। পাশাপাশি মামলার বাদী এবং বাদীপক্ষের আইনজীবীকে মামলাটির জন্য তিরস্কার করেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ২৫ মে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার সোনারামপুর গ্রামের মো. দলিলুর রহমানের ছেলে মো. আশিকুর রহমান ( ৪১) তার মোবাইল ছিনতাইয়ের অভিযোগে বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেন। পরবর্তীতে বিচারক অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমার বিরুদ্ধে একটি পক্ষ উদ্দেশ্যমূলকভাবে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা করে- যা বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট চক্রটি প্রশাসনের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে এবং সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে চক্রান্তের আশ্রয় নিয়েছে। উক্ত মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
উল্লেখ্য, গত ২১ ডিসেম্বর ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে মোবাইল ফোন হারান আশিকুর রহমান। এ বিষয়ে তিনি আশুগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে ওই মোবাইল ফোনটিতে ইউএনওর নামে রেজিস্ট্রেশনকৃত সিম ব্যবহৃত হচ্ছে।