চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সাথে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। ১৭ জুলাই বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে এই ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় বেশ কয়েকজন কোটা আন্দোলনকারীসহ জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম রবিন আহত হয়। আহত সবার নাম জানা যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সারাদেশে কোটা আন্দোলনকারীদের উপর হামলার প্রতিবাদে বুধবার সকাল ১০টার দিকে কোটা সংস্কারের দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে কয়েকজন ছাত্রী ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের প্রধান ফটকের সামনে জড়ো হন। এক পর্যায়ে কলেজের প্রধান ফটকের পাশে তাঁরা বসে কোটা সংস্কারের দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগান দেন। এক পর্যায়ে সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা আফরিন কিছু মেয়েকে সাথে নিয়ে সেখানে পৌঁছে শিক্ষার্থীদের সরে যেতে বলেন। এ সময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সাধারণ শিক্ষার্থী ছাত্রীদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ, খারাপ অঙ্গভঙ্গি ও হুমকি দিয়ে তাদেরকে সেখান থেকে সরে যেতে বললেও তারা সরেননি।
এ সময় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল ও সাধারণ সম্পাদক এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন শোভন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের নিবৃত করার চেষ্টা করেন। এ সময় কলেজের সামনে ও কলেজপাড়ার লেবেল ক্রসিং এলাকায় ১০/১৫টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মোটর সাইকেলে লাঠিসোটা, কাঠের টুকরা, বৈঠা নিয়ে কলেজের সামনের সড়ক, লেবেল ক্রসিং এলাকা, নিউ মৌড়াইল ও কাউতলী এলাকায় মহড়া দেন। শিক্ষার্থীরা বেলা ১১টা পর্যন্ত সেখানে বসে কর্মসূচি পালন করে মিছিল নিয়ে চলে যান।
দুপুর ১২টার দিকে শহরের কাউতলী এলাকা থেকে আন্দোলনকারীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি স্টেডিয়াম এলাকায় আসার পর ছাত্রলীগের কর্মীরা তাদের বাঁধা দেয়। এতে আন্দোলকারীরা বিক্ষুদ্ধ হয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এসময় উভয়পক্ষের মধ্যে ব্যাপক ধাওয়া পালটা ধাওয়া হয়। এ সময় জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল আলম রবিন’সহ উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন আহত হয়। পরে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা লাঠিসোটা হাতে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেয়।
এ ব্যাপারে কলেজের সামনে বিক্ষোভ করা শিক্ষার্থী ফারহানা শারমিন বলেন, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা আমাদের ব্যানার টেনে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলেছে। আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে শ্লোগান দেয়াসহ তারা আমাদেরকে বিভিন্নভাবে অপমানিত করেছে। কারণ আমরা কোটার সংস্কারের দাবিতে এসেছি। আমার ভাই ও বোনের শরীরে থেকে যে রক্ত ঝড়েছে তার প্রতিবাদ জানাতে এসেছি।
এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহদাৎ হোসেন শোভন জানান, সাধারণ শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় আমরা আমাদের অবস্থান থেকে তাদের সহযোগিতা করেছি। তারা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে। তবে জামাত, বিএনপি ও শিবিরের কর্মীরা এই আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। দুপুরে তারা লাঠিসোটা ও ইটপাটকেল হাতে রাস্তায় নামে। এ সময় ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী তাদের থামাতে গেলে তাদের হামলায় ছাত্রলীগের দুই নেতা-কর্মী আহত হয়। তিনি আরো বলেন কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে তা প্রতিরোধ করা হবে।
এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের কোনো বাঁধা দেইনি। তাঁদের কোনো দাবি থাকলে তা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে দিতে বলেছি। তাদেরকে পানিসহ খাবার দেয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তাঁদের হামলায় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল আহত হয়েছে।
এদিকে বাদ যোহর শহরের লোকনাথ উদ্যানে (টেংকের পাড়) সারাদেশে নিহত ছাত্রলীগ নেতাদের মৃত্যুতে গায়েবী জানাযা পড়েছে ছাত্রলীগ। এতে জেলা আওয়ামীলীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) বিল্লাল হোসেন জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। পুলিশ সদস্যরা মাঠে কাজ করছে। ককটেল বিষ্ফোরণের ঘটনার তদন্ত চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে ৩ চেয়ারম্যান প্রার্থী ও ২ ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত।
আজ ১৬ মে বৃহস্পতিবার বিকেলে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ সেলিম শেখ এবং উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ মোনাব্বর হোসেন যৌথ অভিযান চালিয়ে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ হেলাল উদ্দিন, শাহাদাৎ হোসেন শোভন ও অ্যাড: লোকমান হোসেনকে ৩০ হাজার টাকা করে ৯০ হাজার টাকা এবং ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ইলিয়াস চৌধুরীকে ৫ হাজার টাকা এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী নাসিমা আক্তারকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা করেন।
এ ব্যাপারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ সেলিম শেখ জানান, আগামী ৫ জুন সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন।
২০ মে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। প্রতীক বরাদ্দের আগেই প্রার্থীরা জেলা শহরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যানার, ফেস্টুন, ও পোষ্টার ঝুলিয়ে আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন। তাই নির্বাচন আচরণ বিধি লঙ্ঘন করায় দায়ে তিন চেয়ারম্যান প্রার্থীকে ৩০ হাজার করে ৯০ হাজার ও এক ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীকে ৫ হাজার এবং এক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।
চলারপথে রিপোর্ট :
বিশ্ব নদী দিবসে তরী বাংলাদেশ এর র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আজ ২২ সেপ্টেম্বর রবিবার বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে নদী ও প্রকৃতি সুরক্ষা সামাজিক আন্দোলন তরী বাংলাদেশ এর বর্ণাঢ্য র্যালি দানবীর লোকনাথ রায় চৌধুরী ময়দান থেকে শুরু হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে শেষ হয়। র্যালি শেষে প্রেসক্লাব মিলনায়তনে তরী বাংলাদেশ এর আহবায়ক শামীম আহমেদ এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, নদীমাতৃক বাংলাদেশের সকল নদ-নদী দখল-দূষণ, নাব্যতা সংকটসহ নদীর বালু লুন্ঠনের মহোৎসব এখনই থামানো না গেলে বাংলাদেশের নদ নদীর অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে। যার জলন্ত উদাহরণ সাম্প্রতিক সময়ে হয়ে যাওয়া আকস্মিক বন্যার প্রকোপ। তিনি আরো বলেন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান একজন পরিবেশ কর্মী এবং দীর্ঘদিন যাবৎ নদী-প্রকৃতি সুরক্ষায় কাজ করছেন। আমরা আশা করি তিনি নদী সুরক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে উদ্যোগী হবেন।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি জাবেদ রহিম বিজন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি দীপক চৌধুরী বাপ্পী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর ডিগ্রি কলেজের কার্যকরী কমিটির সভাপতি এবিএম মোমিনুল হক, দৈনিক কুরুলিয়া সম্পাদক ইব্রাহিম খান সাদাত, সিনিয়র সাংবাদিক কাউসার ইমরান, কমরেড নজরুল ইসলাম, নারী নেত্রী ফজিলাতুন নাহার প্রমুখ।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন তরী বাংলাদেশ এর আহবায়ক কমিটির সদস্য খালেদা মুন্নী। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ফরহাদুল ইসলাম পারভেজ, সাংবাদিক হারুন আল রশিদ প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, ঐতিহ্যবাহী তিতাস নদীর শহরের অংশে সব ক’টি বাজারের বর্জ্য সরাসরি নদীতে যাচ্ছে এছাড়াও নদীর সাথে যুক্ত খালগুলো বিশেষ করে টাউনখাল দখল দূষণে বিলীন প্রায়।
পরিবেশ কর্মীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন কর্তৃক দখলদারদের চিহ্নিত করে তালিকা ও আংশিক উচ্ছেদ অভিযান হলেও দীর্ঘদিন তদারকি না থাকায় দখলদারেরা পুনঃদখলের পাঁয়তারা করছে।
তিতাস নদীর শিমরাইলকান্দি থাকে মেড্ডা পর্যন্ত দখলদারদের চিহ্নিত করলেও উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়নি। অনুরূপ লালপুর সড়কের পাশে থাকা প্রায় ১৪ কিলোমিটার খালে দখলদারদের চিহ্নিত করা হলেও উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়নি।
বিরাশার মোড়ে সরকারি খাল দখল করে অবৈধভাবে টিনশেড মার্কেট নির্মাণের ফলে বারোমাস জলাবদ্ধতা লেগে থাকে। এতে মারাত্বক জনদূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এসব বিষয় নিয়ে বিভিন্ন সময় আলোচনা হলেও সমাধান পাওয়া যায়নি। পানি উন্নউন বোর্ড কর্তৃক তিতাস নদী খননের কথা শোনা গেলেও মূলতঃ নদী থেকে বালু উত্তোলন আর বালুর ব্যবসা হয়েছে। নদীর বালু দিয়ে বিল ভরাট করা হয়েছে। উপশহরের নামে বিল লুণ্ঠনের পরিকল্পনা প্রায় শেষ পর্যায়ে। পৌরসভার পরিধি বৃদ্ধির জন্য শহরের উত্তর, দক্ষিণ ও পশ্চিমে পর্যাপ্ত জায়গা থাকলেও তিতাস নদীর পূর্বপাড় বিলের জায়গাকে অন্তর্ভুক্ত করার অপচেষ্টা চলছে। নদী রক্ষায় নদীর সীমানা নির্ধারণ, সঠিক খনন ও নৌপথ সচল রাখার গুরুত্বারোপ করেন বক্তারা। তাঁরা আরো বলেন বিলের মাঝ দিয়ে নির্মিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-বিজয়নগর সড়কের পাশে ফসলী জমি প্লট হিসেবে বেচাকেনা হচ্ছে এবং চটকদার বিজ্ঞাপন নানা মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে। কোথাও কোথাও প্লট ভরাটের কার্যক্রমও চলছে। যা পরিবেশ আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ। পরিশেষে বক্তারা জেলা নদী রক্ষা কমিটির আহবায়ক ও জেলা প্রশাসক হিসাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে মহোদয়ের কঠোর হস্তক্ষেপ প্রত্যাশা করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আবদুল মতিন শিপন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাজাপ্রাপ্ত আসামী, মাদক ব্যবসায়ীসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার রাতে সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী মোঃ ইমন মিয়া ওরফে সেলিম, গ্রেফতারী পরোয়ানার আসামী মোঃ আজিজুল হক (৩২) এবং মাদক ব্যবসায়ী মোঃ হাসান মিয়া (৪৫)।
আজ ৩ আগস্ট বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর মডেল থানা থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বুধবার রাতে দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী মোঃ ইমন মিয়া ওরফে সেলিমকে শহরের কান্দিপাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত সেলিম কান্দিপাড়ার কাউছার মিয়ার ছেলে। একই রাতে গ্রেফতারী পরোয়ানার আসামী মোঃ আজিজুল হককে গ্রেফতার করা হয়। সে সদর উপজেলার ররিশল গ্রামের শেখ আহাম্মদের ছেলে। এ ছাড়া ৩০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ মাদক ব্যবসায়ী হাসান মিয়াকে পৌর এলাকার সবুজবাগ থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত হাসান মিয়া আশুগঞ্জ উপজেলার খোলাপাড়ার মোঃ মহিউদ্দিন প্রকাশ মহিজ উদ্দিনের ছেলে। বর্তমানে সে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার মেড্ডা সবুজবাগ এলাকায় বসবাস করে। এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসলাম হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও লাইফ স্টাইল হেলথ এডুকেশন এন্ড প্রমোশনের উদ্যোগে আজ ২২ ফেব্রুয়ারি বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের মিলনায়তনে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
সিভিল সার্জন ডা. মোঃ একরাম উল্লাহর সভাপতিত্বে ও সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা নাজবাহুল ইসলামের পরিচালনায় বিষয় ভিত্তিক আলোচনা অংশ নেন লাইফ স্টাইল এডুকেশন এন্ড প্রমোশনের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোঃ মহিউদ্দিন মিয়া ও ডাঃ মাহমুদুল হাসান।
মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা, জেলা নাগরিক ফোরামের সভাপতি পীযুষ কান্তি আচার্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মনির হোসেন, পৌর কাউন্সিলর নিলুফার ইয়াসমিন, শেখ মাহফুজ, জেলা নাগরিক কমিটির সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম, মোঃ ইস্কান্দার মিয়া, নিউ মার্কেট ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি আবুল কালাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম।
সভাপতির বক্তব্যে সিভিল সার্জন ডা. মোঃ একরামউল্লাহ বলেন, নিরাপদ স্বাস্থ্য ও জীবনের জন্য নিরাপদ খাদ্য খুবই জরুরী। এ ব্যাপারে প্রত্যেক মানুষকেই নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। তিনি সমাজের বিশিষ্টজনদের নিরাপদ খাদ্য নিয়ে জনগণকে সচেতন করার আহবান জানান।
চলারপথে রিপোর্ট :
এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও বিভিন্ন বিষয়ে বিরোধের জের ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের কালিসীমা পশ্চিম পাড়ায় দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শাহআলমের অনুসারী ও একই ইউনিয়নের বাসিন্দা ও জেলা পরিষদের সদস্য মোঃ বাবুল মিয়ার অনুসারীদের মধ্যে গতকাল সোমবার সকালে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান, সাবেক চেয়ারম্যানসহ ৩৮জনকে গ্রেফতার করেছে তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করে পুলিশ। সোমবার রাতে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। এর মধ্যে ১৫জন নারী ও ২৩জন পুরুষ।
এ ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি মামলা দায়ের করেন সদর মডেল থানার এস.আই শওকত এবং একটি মামলা দায়ের করেন জেলা পরিষদের সদস্য মোঃ বাবুল মিয়ার অনুসারী মোঃ খায়রুল।
পুলিশের পক্ষে ১৫১ ধারা ফৌজধারী কার্যবিধি নিবারন মূলক মামলায় ৩৮ জনের বিরুদ্ধে এবং পুলিশ এ্যাসল্ট মামলায় ৭৩জনকে আসামী করা হয়। অপর দিকে খায়রুলের মামলায় ১২৩জনকে আসামী করা হয়।
১৫১ ধারা ফৌজধারী কার্যবিধি নিবারন মূলক মামলায় ৩৮ জন আসামী হলেন, নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শাহ আলম, সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল কাইয়ুম, সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন, ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার আরজু মিয়া, সাবেক মেম্বার মোঃ কামাল খাঁ, সাবেক মেম্বার আবদুল কুদ্দুস, ইউনিয়নের বাসিন্দা মনির হোসেন, মজিবুর রহমান, বেদন মিয়া, সফিকুল ইসলাম, হোসেন মিয়া, নূরুল ইসলাম, ইব্রাহিম মিয়া, বাদল মিয়া, মহিউদ্দিন মিয়া, বাছির মিয়া, মনিরুল ইসলাম, তাজু মিয়া, ইদন মিয়া, সিরাজ মিয়া, খায়ের আলী, মোঃ শামীম, আম্বিয়া খাতুন, আসমা বেগম, ববি বেগম, শিখা বেগম, লাভলী বেগম, রেখা আক্তার, রীমা বেগম, পারুল বেগম, পারভীন বেগম, নাদিয়া আক্তার, সাফিয়া খাতুন, নাহিয়া ইসলাম অন্তু, সেলিনা বেগম, রেবেকা সুলতানা ও রিমা বেগম।
স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও বিভিন্ন বিষয়ে বিরোধের জের ধরে নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শাহআলমের অনুসারী ও একই ইউনিয়নের বাসিন্দা ও জেলা পরিষদের সদস্য মোঃ বাবুল মিয়ার অনুসারীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিলো।
ইউপি চেয়ারম্যান শাহআলমের গ্রুপে আছেন ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ হোসেন ও ইউপি সদস্য মোঃ আরজু মিয়ার অনুসারীরা।
অপরদিকে জেলা পরিষদের সদস্য বাবুল মিয়ার গ্রুপে রয়েছেন ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ আবদুল কাইয়ূমের অনুসারীরা।
গত কয়েকদিন আগে মোঃ শাহআলম গ্রুপের বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক শওকতের ছেলে মিল্লাতকে মারধোর করে বাবুল মিয়ার অনুসারীরা। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মিমাংসা করার চেষ্টা করা হয়। গত রবিবার রাতে পুনরায় বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক শওকত এবং তার ছেলে মিল্লাতকে আবারো মারধোর করে বাবুলের অনুসারীরা।
এ ঘটনায় গ্রামে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি মিমাংসার জন্য সোমবার সকালে উভয়পক্ষকে সদর থানায় ডাকা হয়।
এরমধ্যেই বেলা সাড়ে ১১টার সময় দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে উভয়পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দফায় দফায় সংঘর্ষ চলাকালে দাঙ্গাবাজরা ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ও উভয়পক্ষের ২০টি বাড়ি ভাংচুর করে। সংঘর্ষ চলাকালে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে লাঠিপেটা, ১ রাউন্ড টিয়ারশেল এবং ৩৭ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসলাম হোসাইন বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমরা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান, সাবেক দুইজন চেয়ারম্যান, বর্তমান একজন ইউপি সদস্য, সাবেক ইউপি সদস্যসহ ৩৮জনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করেছি। বাকী আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।