চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে মদ্যপান করিয়ে এক বন্ধু অপর বন্ধুকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে খুন করেছে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা নিহতদের লাশ উদ্ধার করেছে। পাশাপাশি ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুই জনকে আটক করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছে। ১১ আগস্ট রোববার রাত ৯টার দিকে নবীনগর পৌরসভার নারায়ণপুর গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটেছে।
জানা যায়, নবীনগর পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ড নারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা ইসমাইল মিয়ার ছেলে ওয়ার্কশপ মিস্ত্রি রাহিম (২২) ও একই মহল্লার বাসিন্দা পল্লী বিদ্যুতের ইলেকট্রিশিয়ান জামাল পাশার দুই ছেলে শাকিল (২২) ও ফারুক (২০) তিনজনই ঘনিষ্ঠ বন্ধু। পার্টি দেওয়ার কথা বলে এরা তিন বন্ধু রোববার রাত সাড়ে ৮টায় নিউ টাউন নামে পরিচিত নারায়ণপুর পূর্বপাড়া জামাল পাশার বাগানবাড়িতে একটি দোচালা ঘরে একত্রিত হয়ে মদ্য পান করে। অতিরিক্ত মদ্য পান করে রাহিম মাতাল হয়ে যায়। এ তাদের মাঝে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় শাকিল ও মারুফ তাদের ঘরে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে রাহিমের বুকে পেটে ও মাথায় প্রায় ২০টি আঘাত করে তাকে নৃশংসভাবে খুন করে। রাহিমকে খুন করে শাকিল ও মারুফ দুই ভাই লাশের পাশেই বসে ছিল। পরে আশপাশের লোকজন থেকে নবীনগর ক্যাম্পে থাকা সেনাবাহিনী খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে রাত ১২টায় নিহতের লাশসহ শাকিল ও মারুফকে আটক করে নবীনগর থানা পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছে। শাকিল ও মারুফ পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি।
শাকিল ও মারুফের মা জায়েদা বেগম জানান, রাহিম আমার ছেলেদের বন্ধু ছিল। রাত ৮ দিকে আমার দুই ছেলে ঘর থেকে বের হয়ে গেছে। রাহিমের মায়ের চিৎকার শুনে আমি ঘর থেকে বের হয়ে খুনের কথা জানতে পেরেছি।
নিহত রাহিমের মা রত্না বেগম জানান, আমার ছেলে দুপুরেও ভাত খায়নি, মাগরিবের পর খাবার খেয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেছে। আর ফিরে আসে নাই, রাত ৯টা বেজে গেল, বাড়িতে না আসায় তার মোবাইলে ফোন দিলাম, ফোন বন্ধ বলে। এর কিছুক্ষণ জানতে পারি আমার ছেলেরে মাইরা লাইছে জামালের দুই পোলা। গিয়া দেখি মাটিতে আমার কলিজার ধন ঘুমিয়ে আছে।
নবীনগর থানার অফিসার্স ইনচার্জ মাহবুব আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খুনের সাথে জড়িত দুই জন আটক রয়েছে। লাশ ও রক্ত মাখা ছুরিসহ আরও কিছু আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য আজ ১২ আগস্ট সোমবার সকালে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া শুরু হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে দুর্বৃত্তদের গুলিতে ৫ জন বালু মহলের ইজারাদার ও শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ১ সেপ্টেম্বর রবিবার সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের সোনাবালুয়া ঘাটে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রায় শতাধিক গুলির আওয়াজে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আহত চারজনকে নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে।
অন্য ১জনকে উপজেলার সলিমগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা হলেন কবির মিয়া (৪৫), সফিদ মিয়া (৪০), খলিল মিয়া (৪২), ফারুক মিয়া ও আলকাছ মিয়া (৩৬)। তারা সবাই উপজেলার ধরাভাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা।
এলাকাবাসী ও বালুমহল ইজারাদার সূত্রে জানা যায়, নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের জাফরাবাদ মৌজায় অবস্থিত মেঘনা নদী থেকে সম্প্রতি প্রায় ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বালু উত্তোলনের ইজারা পায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মুন্সি এন্টারপ্রাইজ।
ইজারা পাওয়ার পর থেকে মেঘনা নদীর জাফরাবাদ ও নতুন চর বালু মহালের বালু উত্তোলন শুরু করে। তবে মেঘনা নদীর ওপর প্রান্ত অবস্থিত নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার কিছু লোক এই এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করতে মোটা অংকের টাকা চাঁদা দিতে হবে বলে বারবার দাবি করে আসছিলেন। ইজারাদার থেকে চাঁদার টাকা না পেয়ে গত দুদিন থেকে অবৈধভাবে ৬টি ড্রেজার দিয়ে চুরি করে বালু উত্তোলন করে নিয়ে যাচ্ছিল দুর্বৃত্তরা। তখন স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়ে শরণাপন্ন হন ইজারাদার কর্তৃপক্ষ।
তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে দুর্বৃত্ত সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা রবিবার সন্ধ্যায় ২/৩টি স্পিডবোটযোগে এসে বালু মহালের ক্যাশ কাউন্টারে হামলা চালায়। এ সময় শ্রমিকদের ওপর অতর্কিতভাবে এলোপাথাড়ি গুলি ছুঁড়ে ৫ জনকে গুরুতর আহত করে।
নবীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আফজাল হোসাইন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘ঘটনাটি আমরা শুনেছি, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
নবীনগর প্রতিনিধি :
নবীনদের জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হোক প্রাথমিক শিক্ষা, এই শ্লোগানে আজ ৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার নবীনগরে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষকদেরকে শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়।উক্ত নবীন বরণ অনুষ্ঠানে শিক্ষক সমিতির সভাপতি এটিএম রেজাউল করিম সবুজের সভাপতিত্বে নবীন বরণ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একরামুল সিদ্দিক।
বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বুলবুল চৌধুরী, সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল কাইয়ুুম, মোঃ মনসুর আলী, মতিউর রহমান, নবীনগর মডেল প্রেসক্লাব সভাপতি মোঃ আবু কাওছার, অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন প্রাথমিক স্কুলের সদ্য নিযয়োগ প্রাপ্ত শিক্ষকদের অধিকাংশই উচ্চশিক্ষিত। আপনারা জাতি গড়ার কারিগর, আপনাদের মাধ্যমে আমাদের সন্তানরা সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে গয়ে উঠবে। আপনাদের মেধা এবং শ্রম দিযয়ে এই উপজেলার শিক্ষা ব্যবস্থায় এবং আধুনিক শিক্ষার প্রসার ঘটাতে আপনারা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক সমিতির সকল নেতৃবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
চলারপথে রিপোর্ট :
আগামীতে দায়িত্ব পেলে উন্নয়নের পাশপাশি উপজেলায় ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবো। আমার পাঁচ বছর আমলে সারা উপজেলায় মেঘা মেঘা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে উপজেলাকে উন্নয়নের রোল মডেল তৈয়ার করেছি।এখনো আমার অনেক প্রকল্পের কাজ অসমাপ্ত রয়েছে।আমি আবার এম.পি’র দায়িত্ব পেলে আমার অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করে উপজেলাকে এগিয়ে নিয়ে যাবো। আমি ১৩ শত কোটি টাকার কাজ করেছি।আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আপনাদেরকে আমার পাশে চাই।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার লাউর ফতেহপুর ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী আহাম্মদপুর এ এইচ এস উচ্চ বিদ্যালয়ের কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক এমপি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফয়জুর রহমান বাদল এসব কথা বলেন ।এর আগে তিনি ফতেহপুর বাজার ও বাশারুক মোড়ে পৃথক দু’টি পথসভা করেন।
এ সময় এ এইচ এস উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার বশির উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও জাকির হোসেন মাষ্টারের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন চৌধুরী শাহান, ডাক্তার মিজানুর রহমান, লাউর ফতেহপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, জহির উদ্দিন চৌধুরী সিদ্দিক টিটু, আব্দুর রহমান, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল আলম কন্টেকক্টার, নাজমুল আলম মঞ্জু মাষ্টার, বীর মুক্তিযোদ্ধ সুবেদার জাহের মিয়া, নুরুল আমীন সরকার, সাবেক মেম্বার মাহাবুব আলম, মুতিউর রহমান কানন, বর্তমান মেম্বার মামুন চানমনি সরকার, গিয়াস উদ্দিন, লাউর ফতেহপুর ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি ইয়ার হোসেন মাষ্টার, ইঞ্জিনিয়ার নাছির উদ্দিন প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে ফেসবুক লাইভে এসে নিজ ঘরে গলায় রশি পেঁচিয়ে আব্দুর রশিদ (৩০) নামে এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন।
আজ ১১ জুলাই বৃহস্পতিবার ভোরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার বিদ্যাকুট ইউনিয়নের সেমন্তঘর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ওই যুবক সেমন্তঘর উত্তর পাড়ার মো. জালাল মিয়ার ছেলে। নিহত আব্দুর রশিদ এর ফেসবুক ওয়ালে ৬ মিনিটের ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৩টায় তার ফেসবুক লাইভে আসেন। এর আগে তিনি তার ঘরের সিলিংয়ে একটি রশি বেঁধে রাখেন। লাইভ চালু করে তিনি একটি টেবিলে উঠে গলায় রশি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, সে চট্টগ্রামে বেকারির মালামাল সরবরাহ করত। চট্টগ্রাম থেকে বাড়িতে এসে তার নিজ ঘরে তার ফেসবুক ওয়াল থেকে লাইভে এসে ঘরের সিলিং এর সাথে দড়ি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে।
শিবপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আবু বক্কর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, রশিদের লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় তার নিজ ঘর থেকে উদ্ধার করি। পরিবার সূত্রে জানতে পারি, সে মাদকাসক্ত ছিল। সকালে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠানো হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আবহমান গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী নিপুণ বাসা তৈরিতে দক্ষ কারিগর বাবুই পাখি ও এর বাসা এখন আর আগের মত চোখে পড়ে না। পরিবেশ বিপর্যয়, জলবায়ু পরিবর্তন, বন উজার, নতুন বনায়নে বাসযোগ্য পরিবেশ ও খাদ্যের অভাব, নির্বিচারে তালগাছ কর্তন, অসাধু শিকারীর ফাঁদসহ বহুবিধ কারণে কালের আবর্তে প্রকৃতির স্থপতি, বয়ন শিল্পী এবং সামাজিক বন্ধনের প্রতিচ্ছবি বাবুই পাখি ও এর দৃষ্টিনন্দন বাসা ক্রমান্বয়ে হারিয়ে যাচ্ছে।
আজ থেকে ১৫-২০ বছর আগেও গ্রাম-গঞ্জে ব্যাপক ভাবে বাবুই পাখির বাসা চোখে পড়ত। নিরীহ, শান্ত প্রকৃতির এই বাবুই পাখি উচু এবং নিরিবিলি পরিবেশে বাসা তৈরি করে। এরা গ্রাম-গঞ্জের তাল, সুপারি, নারিকেল, খেজুর গাছে বাসা তৈরি করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। এ সব গাছের সংকটে মাঝে মাঝে হিজল গাছেও বাসা বাধতে দেখা যায়। কিন্তু কালের বিবর্তনে বড় বড় গাছ নিধন ও পাখি শিকারের কারণে পরিবেশ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে বাবুই পাখি। উঁচু তাল, নারিকেল ও খেজুর গাছে বাসা বাঁধলেও এ সব গাছ বিলুপ্ত হওয়ায় বাবুই পাখিও হারিয়ে যেতে বসেছে প্রকৃতি থেকে। এই পাখি বাসা তৈরির কাজে ব্যবহার করে খড়ের ফালি, ধানের পাতা, তালের কঁচি পাতা, ঝাউ ও কাঁশবনের লতা। চমৎকার আকৃতির এই বাসা বিশেষ করে তাল গাছের ডালে এমন ভাবে সাটানো থাকে যাতে কোনো ঝড়-তুফানে সহসাই ছিড়ে না পড়ে। এদের বাসা শুধু শৈল্পিক নিদর্শনই নয়, মানুষের মনে চিন্তার খোরাক জোগায় এবং স্বাবলম্বী হতে উৎসাহিত করে। ঠোট দিয়ে বাবুই পাখি আন্তর ছড়ায়। পেট দিয়ে ঘঁষে তা আবার মসৃণ করে। বাসা বানাতে শুরুতই দুটি নিম্নমুখী গর্ত করে থাকে। পরে তা একদিকে বন্ধ করে ডিম পাড়ার জায়গা করে। অন্যদিকে লম্বা করে প্রবেশ ও প্রস্থান পথ তৈরি করে। ব্যালেন্স করার জন্য বাসার ভিতরে কাদার প্রলেপ দেয়। আধুনিক যুগে যা বড়ই যুক্তি সংগত। বাসার ভিতরে ঠিক মাঝখানে একটি আড়া তৈরি করে বাবুই পাখি। কি অপূর্ব বিজ্ঞান সম্মত চেতোনাবোধ। ছোট হলেও বুদ্ধিতে সব পাখিকে হার মানায়।
বাবুই ডিমে তা দেয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যে বাচ্চা ফোটে। কৃষকের ধান ঘরে ওঠার মৌসুম হল বাবুই পাখির প্রজনন মৌসুম। বাবুই পাখির বাসা শুধু শৈল্পিক নিদর্শনই না, মানুষকে আত্মনির্ভশীল হতে উৎসাহ দেয়। কৃষ্ণনগর গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি অলেক মিয়া বলেন- “গত কয়েক বছর ধরে তাদের গ্রামের কয়েকটি তালগাছে বাবুই পাখিন বাসা দেখছেন। পাখি ও পাখির বাসা দেখতে এবং কিচির মিচির শব্দ শুনতে খুবই ভাল লাগে। গৃহিনী আসমা বেগম বলেন- তাদের বাড়ির সামনের তাল গাছে বাবুই পাখি বাসা বানিয়েছে। সাংস্কৃতিককর্মী মাহমুদ জানান- দিন দিন তাল গাছ নিধনের ফলে বাবুই পাখি আজ বিলুপ্তির পথে। তাই বড় বড় তাল গাছ রক্ষা ও নতুন করে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে পাখি সংরক্ষণের দাবি জানান তিনি। সুর সম্রাট আলাউদ্দীন খাঁ ডিগ্রি কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, “সারাবিশ্বে বাবুই পাখির প্রজাতির সংখ্যা ১১৭টি। তবে বাংলাদেশে তিন প্রজাতির বাবুই পাখির বাস।
তিনি আরও বলেন- বাবুই পাখির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো রাতের বেলায় ঘর আলোকিত করার জন্য এরা জোনাকি পোকা ধরে নিয়ে বাসায় রাখে এবং সকাল হলে আবার তাদের ছেড়ে দেয়। ধান, চাল, গম ও পোকা-মাকড় প্রভৃতি তাদের প্রধান খাবার। বাবুই পাখির জন্মগত ভাবেই শৈল্পিক দক্ষতা থাকে। কি ভাবে বাসা বাঁধবে এটা তারা তাদের মায়ের কাছ থেকেই শিখে নেয়। এই গুণ অন্য পাখির মধ্যে নেই। এরা সমাজবদ্ধ ভাবে বসবাস করে বলে তাদের সামাজিক পাখিও বলা হয়। এরা শস্য দানা, ধান, গম ইত্যাদি খেয়ে জীবনধারণ করে। তিনি বলেন, এ পাখির মধ্যে একটি বৈজ্ঞানিক গুণও আছে। পুরুষ পাখিরা বিশ্রামের জন্য বাসা বাঁধে আর নারী পাখিরা বাসা বাঁধে ডিম ফুটানো ও বাচ্চা সংরক্ষণের জন্য। যখন বাচ্চা ফোটার সময় হয় তখন মা পাখিরা এক টুকরা গোবর নিয়ে বাসায় রাখে। যাতে ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করে বাচ্চাদের ক্ষতি করতে না পারে”।