অনলাইন ডেস্ক :
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও তার স্ত্রী সন্তানদের ব্যক্তিগত ও তাদের মালিকানাধীন সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট। একই সঙ্গে তাদের হিসাবের সব ধরনের লেনদেনের তথ্য চেয়েছে সংস্থাটি।
আজ ১৩ আগস্ট মঙ্গলবার বিএফআইইউ সংশ্লিষ্ট এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিএফআইইউয়ের পক্ষ থেকে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে আসাদুজ্জামান খাঁন, তার স্ত্রী লুৎফুল তাহমিনা খান, ছেলে সাফি মুদ্দাসির খান এবং মেয়ে সাফিয়া তাসনিম খানের নামে থাকা সব ধরনের ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক অ্যাকাউন্ট বন্ধ থাকবে। চিঠিতে আসাদুজ্জামান খাঁন ও তার পরিবারের নাম ও জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য দেওয়া হয়েছে।
অর্থ পাচার নিরোধসংক্রান্ত ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী এ আদেশ দিয়েছে বিএফআইইউ।
প্রাথমিকভাবে আগামী ৩০ দিন এসব হিসাবে কোনো ধরনের লেনদেন করতে পারবেন না সংশ্লিষ্টরা। পরবর্তীদের প্রয়োজনে জব্দ রাখার সময় আরো বাড়ানো হবে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
ট্রেন দুর্ঘটনা রোধে ‘রেলওয়ে সেফটি ডিভাইস’ উদ্ভাবন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন নাটোরের নলডাঙ্গার মাধনগরের মো. আবদুল্লাহ আল কাফি (১৮)। তিনি পশ্চিম মাধনগর জোয়ানপুর গ্রামের কৃষক বাবা মো. মাহবুব আলম হোসেন ও মা মোছা. পল্লব কান্তি সরদারের একমাত্র ছেলে।
শিক্ষার্থী কাফি পাবনা পলিটেকনিক ইনিস্টিউটের ইলেকট্রনিকস বিভাগের তৃতীয় সেমিস্টারের ছাত্র। ট্রেনে নাশকতা ও দুর্ঘটনার বিষয়টি মূল গুরুত্ব দিয়ে এই ডিভাইসটি উদ্ভাবন করেন তিনি।
ট্রেন দুর্ঘটনা রোধে উদ্ভাবনী চিন্তা মাথায় নিয়ে কাজ শুরু করে, কিছুদিনের মধ্যেই আসে উদ্ভাবনের সফলতা। ট্রেন দুর্ঘটনা পুরোপুরি রোধে তৈরি করে ফেলেন একটি পূর্ণাঙ্গ ‘রেলওয়ে সেফটি ডিভাইস’।
কাফির বাবা মো. মাহবুব আলম, মা পল্লব কান্তি সরদার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি মোস্তাফিজুর রহমান রকিসহ অনেকে জানান, রেলওয়ে সেফটি ডিভাইসটি দেখতে শত শত নারী-পুরুষ ভিড় করছে। ডিভাইসটি আরো গবেষণা করে রেলওয়ের বিভাগের মাধ্যমে স্থাপন করা হলে ট্রেন দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
তরুণ উদ্ভাবক আবদুল্লাহ আল কাফি জানান, রেলে কোথাও ভেঙে গেলে বা কাটা হলে, সিগনাল বেজে উঠবে ও অটোমেটিক্যালি-রেলওয়ে সেফটি ডিভাইসের মাধ্যমে স্টেশন মাষ্টারের কাছে ফোন চলে যাবে। যার ফলে আর ট্রেন দুর্ঘটনার সুযোগ থাকবে না।
রেলে দুর্ঘটনা রোধে মাত্র ১০ হাজার টাকা খরচ করে ‘রেলওয়ে সেফটি ডিভাইস’টি উদ্ভাবন করেন তিনি। তবে এই ডিভাইসটি আরো শক্তিশালী করার জন্য গবেষণা ও সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন কাফি ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
মাধনগর রেলওয়ে স্টেশনের কর্তব্যরত স্টেশন মাষ্টার মো. মমিন উদ্দিন প্রামানিক বলেন, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
চলারপথে ডেস্ক :
সরকারি চাকরিজীবীদের বাইরে দেশের সব প্রাপ্ত বয়স্ক নাগরিককে পেনশন-ব্যবস্থার আওতায় আনতে জাতীয় সংসদে বহুল আলোচিত ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা বিল-২০২৩’ পাস করা হয়েছে। তবে সরকারি চাকরিজীবীদের পৃথক গেজেট জারি করে এই পেনশন ব্যবস্থায় আনার সুযোগ বিলে রাখা হয়েছে। আজ ২৪ জানুয়ারি মঙ্গলবার সংসদের বৈঠকে বিলটি উত্থাপণ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বিলটি পাসের জন্য সংসদে উত্থাপন করেন। পরে এটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি করা হয়।
বিলটির বেশকিছু অসঙ্গতি তুলে ধরে বিরোধী দলীয় সদস্যরা সমালোচনা করেন। তারা বলেন, এটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এসব বিষয়ে তারা সংশোধণের প্রস্তাব করলেও তা কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়।
বিলে বলা হয়েছে, জাতীয় পরিচয়পত্রকে ভিত্তি ধরে সর্বজনীন পেনশনের আওতায় ১৮ বছর বা তার বেশি বয়স থেকে ৫০ বছর বয়সী সব বাংলাদেশি নাগরিক অংশ নিতে পারবেন। বিশেষ বিবেচনায় পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তিদেরও পেনশন স্কিমের আওতায় রাখার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তবে মাসিক পেনশন-সুবিধা পেতে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর চাঁদাদাতাকে ধারাবাহিকভাবে কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দিতে হবে। ১০ বছর চাদা দেওয়া শেষে তিনি যে বয়সে উপনীত হবেন, সে বয়স থেকে আজীবন পেনশন পাবেন। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীরাও এতে অংশ নিতে পারবেন।
এই চাঁদার হার কত হবে, তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। আইন হওয়ার পর সংশিতষ্ট কর্তৃপক্ষ এটি নির্ধারণ করবে। মাসিক বা ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে চাঁদা দেওয়া যাবে এবং অগ্রিম ও কিস্তিতেও চাঁদা দেওয়ার সুযোগ থাকবে।
পাস হওয়া বিলে বলা হয়েছে, চাঁদাদাতা ধারাবাহিকভাবে কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দিলে মাসিক পেনশন পাবেন। চাঁদাদাতার বয়স ৬০ বছর পূর্তিতে পেনশন তহবিলে পুঁঞ্জিভূত মুনাফাসহ জমার বিপরীতে পেনশন দেওয়া হবে। একজন পেনশনার আজীবন পেনশনুসুবিধা পাবেন। সরকার গেজেট জারি করে বাধ্যতামূলক না করা পর্যন্ত এই পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণ হবে ঐচ্ছিক।
বিলে বলা হয়েছে, পেনশনে থাকাকালীন কোনো ব্যক্তি ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে মারা গেলে তাঁর নমিনি অবশিষ্ট সময়ের জন্য (মূল পেনশনারের বয়স ৭৫ বছর পর্যন্ত) মাসিক পেনশন প্রাপ্য হবেন। চাঁদাদাতা কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দেওয়ার আগে মারা গেলে জমাকৃত অর্থ মুনাফাসহ তাঁর নমিনিকে ফেরত দেওয়া হবে।
পেনশন তহবিলে জমা দেওয়া অর্থ কোনো পর্যায়ে এককালীন তোলার প্রয়োজন পড়লে চাঁদাদাতা আবেদন করলে জমা দেওয়া অর্থের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ঋণ হিসেবে তুলতে পারবেন। যা ফিসহ পরিশোধ করতে হবে। পেনশন থেকে পাওয়া অর্থ আয়করমুক্ত থাকবে। পেনশনের জন্য নির্ধারিত চাঁদা বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য করে কর রেয়াতের জন্য বিবেচিত হবে।
বিলে বলা হয়েছে, নিম্ন আয়সীমার নিচের নাগরিকদের অথবা অসচ্ছল চাঁদাদাতার ক্ষেত্রে পেনশন তহবিলে মাসিক চাঁদার একটি অংশ সরকার অনুদান হিসেবে দিতে পারবে। বিলে সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতিতে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত অথবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অংশ নেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কর্মী ও প্রতিষ্ঠানের চাঁদার অংশ কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করবে। তবে সরকারি সিদ্ধান্ত না দেওয়া পর্যন্ত সরকারি ও আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিরা এই পেনশনুব্যবস্থার আওতাবহির্ভূত থাকবেন।
বিলে একটি জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। এই কর্তৃপক্ষের একজন নির্বাহী চেয়ারম্যান ও চারজন সদস্য থাকবেন। এঁদের নিয়োগ করবে সরকার।
বিলে ১৬ সদস্যের একটি পরিচালনা পর্ষদ গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। এর চেয়ারম্যান হবেন অর্থমন্ত্রী। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, অর্থ বিভাগের সচিব, এনবিআর চেয়ারম্যান, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি, এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি, উইমেন চেম্বাস অব কমার্সের সভাপতি এর সদস্য হবেন। পরিচালনা পর্ষদের সদস্যসচিব হবেন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান।
বিলে বলা হয়েছে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত এক বা একাধিক তপসিলি ব্যাংক জাতীয় পেনশন তহবিলের ব্যাংকার হিসেবে কাজ করবে।
বিরোধী দলীয় সদস্যদের সমালোচনা
বিল পাসের আগে আলোচনায় অংশ নিয়ে গণফোরাম সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, ‘উদ্যোগটি চমৎকার হলেও এই পেনশন ব্যবস্থায় সাধারণ মানুষের সাড়া পাওয়া যাবে না। কারণ সরকারি চাকুরিজীবীরা যেভাবে পেনশন পান তার সঙ্গে অনেক কিছুই সামাঞ্জস্যপূর্ণ নয়। মানুষ রিটার্ন কিভাবে পাবে তা পরিস্কার নয়। এটি অনেকটা ব্যাংকিং প্যাকেজের মত। এই বিলটি পাসের আগে সাধারণ মানুষের মতামত নেওয়া উচিত।’
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, “এই বিলটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সংবিধানে বলা হয়েছে, ‘সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার, অর্থাৎ বেকারত্ব, ব্যাধি বা পঙ্গুত্বজনিত কিংবা বৈধব্য, মাতাপিতৃহীনতা বা বার্ধক্যজনিত কিংবা অনুরূপ অন্যান্য পরিস্থিতিজনিত আয়ত্তাতীত কারণে অভাবগ্রস্ততার ক্ষেত্রে সরকারি সাহায্য লাভের অধিকার৷’ মানুষের কাছ থেকে চাদা নিয়ে সরকার আবার ফেরত দেবে। এই বিল পাস করার কোনো সুযোগ নেই।”
জাপার আরেক সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘এই পেনশন স্কিমে সরকারের অংশগ্রহণ কী? সরকারের কোনো অংশগ্রহণ নেই। এটা ব্যাংকের ডিপিএস স্কিমের মত। গুঞ্জন আছে, সরকারের টাকার অভাব হয়েছে। জনগণের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কী সরকার চলবে?’ টাকা পাচার, বিদেশে বাংলাদেশীদের বাড়ি কেনাসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করে মুজিবুল হক বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী কথা কম বলেন। বোবার শত্রু কম। কিন্তু অর্থমন্ত্রীর কানে কথা পৌঁছে কি না জানা নেই। তাঁর কোনো ফিডব্যাক, উদ্যোগ দেখা যায় না।’
জাপার আরেক সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘আপাতদৃষ্টিতে আইনটি ভাল। কিন্তু বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যেভাবে প্রভিডেন্ট করে এটি তার বাইরে কিছু বলে মনে হয় না। সরকার কী মুনাফা দেবে তা পরিস্কার নয়।’ তিনিও দাবি করেন, এই আইনটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
জাপার আরেক সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘শেয়ালের কাছে মুরগি বর্গা রাখার মত। মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখবে আর ব্যাংক দেদারছে টাকা বিদেশে পাচার করবে। ব্যাংকগুলো মানুষের আস্থা হারিয়েছে। এক ব্যাংকের পরিচালক আরেক ব্যাংক থেকে টাকা নিচ্ছে। ব্যাংকগুলো বারো ভুঁইয়াদের কাছে চলে গেছে। সব সুবিধা পাচ্ছেন ঋণখেলাপিরা।’ এসময় বিদেশে টাকা পাচার নিয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘দেখার কেউ নেই। যারা টাকা পাচার করছে তাদের উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।’
বিরোধী দলের সদস্যদের সমালোচনার জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘এই বিলটি আনার আগে অনেক আলোচনা করা হয়েছে। যাঁরা লিখিত মতামত দিয়েছিলেন তাদের মতামত আমলে নেওয়া হয়েছে। সংসদীয় কমিটিতেও বিলটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বিলটি গ্রহণযোগ্যতা পাবে বিবেচনায় এটি সংসদে আনা হয়েছে।’
এমপিদের আজীবন পেনশনের দাবি
বিলের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে স্বতন্ত্র সদস্য রেজাউল করিম বাবলু সাবেক সংসদ সদস্যদের আজীবন পেনশন স্কিম চালু করার দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘অফিসের পিয়ন, গার্ডরা পেনশন পেয়ে থাকে। এমপিদের জন্য এমন ভাতার দাবিতে সংসদে আগেও আলোচনা হয়েছে। যারা একবার সংসদ সদস্য হিসেবে পদ পাবে, তারা যেন আজীবন একটা পেনশন স্কিম পায়।’
বিলের সমালোচনা করে তিনি বলেন, তাঁর একজন শিক্ষক ৩৬ বছর চাকরি করার পরেও এখনও পেনশনের টাকা তুলতে পারেননি। জনগণ পেনশনের টাকা জমা দিবে কিন্তু তারা তো অফিসের বারান্দাই চেনে না। এই টাকার নিরাপত্তা কী? নতুন বিলে সেই নিশ্চয়তা নেই বলেও দাবি করেন তিনি।
চলারপথে ডেস্ক :
মাঘ সবে শুরু। দেশের উত্তরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকা কাঁপলেও তীব্র শীত পড়েছে মাত্র কয়েক দিন। এর মধ্যেই শীতের বিদায় ঘণ্টার পদধ্বনি। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মতো বেড়েছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, আগামী কিছুদিন রাতের পারদ সামান্য নামতে পারে। জাঁকিয়ে শীতের সম্ভাবনা তেমন নেই। ফেব্রুয়ারিতে মৃদু শৈত্যপ্রবাহের পর বিদায় নিতে পারে শীত।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান বলেন, বর্ষার মতো শীত নির্দিষ্ট নিয়মে বিদায় নেয় না। ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাপমাত্রা ওঠানামা করতে পারে। তবে জাঁকিয়ে শীত পড়ার মতো পরিস্থিতি আর হবে না বলেই মনে হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত শুক্রবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল শ্রীমঙ্গলে ৫.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয় তেঁতুলিয়ায় ৬.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে টেকনাফে ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের ২০টি জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে। কিছু এলাকায় শৈত্যপ্রবাহ আজ রবিবার থেকে প্রশমিত হতে পারে। আজ ২২ জানুয়ারি রবিবার সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
গত ৫ জানুয়ারি থেকে টানা ১৭ দিন দেশে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে। এর মধ্যে এক দিন ছিল তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। এ সময় উত্তরাঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করেছে। এ মৌসুমে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল গত শুক্রবার মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ওই এলাকায় শনিবার তাপমাত্রা বেড়ে হয়েছে ৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা আর না কমলে এ বছর শীতে ৫ দশমিক ৬ ডিগ্রির তাপমাত্রাই হবে রেকর্ড।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মানলে শীতের বিদায় নেওয়ার সময় হয়ে এসেছে। তবে এ বছর শীতের মেজাজ তেমন দুর্বল ছিল না। পৌষেই হিমেল হাওয়া আর ঠান্ডায় দেশ কেঁপেছে। ফলে আগেভাগেই শীত বিদায় নিচ্ছে। তবে শীতের চরিত্রে খামখেয়ালিপনা দেখা যাচ্ছে। আচমকা দু’দিনের শীতে কাবু হচ্ছে দেশ, তার পরেই এক লাফে পারদ উঠছে।
আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, জানুয়ারির শেষেই বিদায় নেবে শীত। তবে ঢাকার বাইরের জেলা বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে আরও কিছু দিন ঠান্ডা থাকবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, শীতের অকাল বিদায়ের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা বিষয় দায়ী। শীতকালে সাধারণভাবে আকাশ মেঘমুক্ত থাকে। ফলে দিনে ঝকঝকে রোদ পাওয়া যায়। মাটি গরম হয়। রাত হলেই সেই তাপ দ্রুত কমে ঠান্ডা হয় মাটি। তার সঙ্গে উত্তুরে হাওয়ার যুগলবন্দিতে কনকনে ঠান্ডা পড়ে।
চলারপথে রিপোর্ট :
চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদের আমেরিকান হাসপাতাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিক্রয় নিষিদ্ধ বিপুল পরিমাণ অনিবন্ধিত ওষুধ জব্দ করেছেন জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে থাকা মা ফার্মেসি, মা মেডিকেয়ার এবং স্বাগতা ফার্মেসি থেকে চীন, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের বিক্রয় নিষিদ্ধ প্রায় ৬ লাখ টাকার অনিবন্ধিত ওষুধ জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় তিন ফার্মেসিকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
আজ ১৯ জুন সোমবার অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে কেন্দ্রীয় চর্ম ও সামাজিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে (আমেরিকান হাসপাতাল) যৌথ অভিযান চালায় জেলা প্রশাসন ও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত। তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাঁরা পিলে চমকানোর মতো তথ্য-প্রমাণ পেয়েছেন। আমেরিকান হাসপাতালের পাশে থাকা তিনটি ফার্মেসি থেকে তাঁরা বিপুল পরিমাণ বিক্রয় নিষিদ্ধ ওষুধ জব্দ করেছেন। এ অপরাধে প্রত্যেক ফার্মেসিকে ২০ হাজার করে জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিষ্ঠান-সংশ্লিষ্টদের সতর্কও করা হয়েছে। তবে ফার্মেসি মালিকদের অভিযোগ, হাসপাতালের চিকিৎসকরাই অনিবন্ধিত ওষুধ রোগীদের ব্যবস্থাপত্রে লেখেন।
প্রতীক দত্ত জানান, অভিযানের সময় তাঁরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা বেশ কয়েকজন রোগীর সঙ্গে কথা বলেন। তাঁরা জানিয়েছেন, হাসপাতালের চিকিৎসকরাই এসব বিক্রয় নিষিদ্ধ ওষুধগুলো লেখেন। এসব ওষুধ কেবল এখানকার কয়েকটি ফার্মেসি ছাড়া বাইরে পাওয়া যায় না।
তিনি বলেন, ‘রোগীদের দেওয়া ব্যবস্থাপত্রে সরকারি হাসপাতালের স্লিপে বিভিন্ন অনিবন্ধিত ওষুধ লেখার প্রমাণও পেয়েছি আমরা। বিক্রয় নিষিদ্ধ এসব ওষুধ বিক্রি বাবদ চিকিৎসকরা মোটা অঙ্কের কমিশন পান বলে ফার্মেসি মালিকরা জানিয়েছেন। এ ছাড়া হাসপাতালের সব রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা পাশের মেডিলিভ নামক ল্যাবে করানোর জন্য চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন।’
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক এসএম সুলতানুল আরেফীন বলেন, অভিযানে জব্দ করা ওষুধগুলো ঔষধ প্রশাসনের নিবন্ধিত নয়। এসব ওষুধ কোনো ফার্মেসিতে বিক্রি করা যাবে না ও ডাক্তাররাও সেগুলো ব্যবস্থাপত্রে লিখতে পারবে না বলে আইনে উল্লেখ আছে। সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের এমন আচরণ চরম উদ্বেগের।
হাসপাতালের একজন সিনিয়র কনসালট্যান্ট বলেন, হাসপাতালকে ঘিরে দালালরা উঠেপড়ে লেগেছে। কয়েকজনকে এরই মধ্যে বেরও করে দেওয়া হয়েছে। এরা আগে রোগীদের হয়রানি করে বেনামি কিছু ক্রিম বিক্রি করে বাড়তি টাকা হাতিয়ে নিত। এরাই অনিবন্ধিত ওষুধ বিক্রির সঙ্গে জড়িত।
অনলাইন ডেস্ক :
অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করায় নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের সফলভাবে নির্বাচন পরিচালনার মাধ্যমে দেশে গণতান্ত্রিক শক্তি আরও সুদৃঢ় হয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয় হয়েছে দেশের জনগণের, জয় হয়েছে গণতন্ত্রের।
আজ ৩০ জানুয়ারি মঙ্গলবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণের শুরুতে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপতি।
নির্বাচনে জয়-পরাজয় থাকবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, জনগণের রায় মেনে নিয়ে গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রাখাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দেশের গণতন্ত্রের জন্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজন অত্যন্ত যুগান্তকারী ঘটনা, যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয় হয়েছে দেশের জনগণের, জয় হয়েছে গণতন্ত্রের।
তিনি বলেন, নির্বাচন ঘিরে একটি মহল সহিংসতা ও সংঘাত সৃষ্টি করে গণতন্ত্রের শান্ত-স্নিগ্ধ যাত্রাপথে বাধা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালিয়েছিল। তাদের গণতন্ত্র বিরোধী ও সহিংস কর্মকাণ্ড সাময়িকভাবে জনগণকে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে রাখলেও ভোটারদের ভোটদান থেকে বিরত রাখতে পারেনি। সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত ও সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্যই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের সব পদক্ষেপ সার্থক হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন বর্জনকারী দলগুলো সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করেছে। আমি আশা করি— ভবিষ্যতে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো সহিংসতা ও নৈরাজ্যের পথ পরিহার করে সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং জনগণ ও গণতন্ত্রের কল্যাণে অহিংস পন্থায় গঠনমূলক কর্মসূচি পালন করবে। সরকারও এক্ষেত্রে সংযত আচরণ করবে- এটাই সবার প্রত্যাশা।
১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের বর্বর হত্যাকাণ্ড ইতিহাসে সবচেয়ে বেদনাদায়ক অধ্যায় উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি নিহত বঙ্গবন্ধু পরিবারের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করেন।
মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচন পরবর্তী দেশে যে নৃশংস সহিংসতা হয়েছিল তা ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। এর মাধ্যমে আমাদের হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্যকে ভূলুণ্ঠিত করা হয়েছিল। কিন্তু ২০০৮ সালের নির্বাচনসহ পরবর্তীতে অনুষ্ঠিত সকল নির্বাচনে সহিংসতার পুনরাবৃত্তি থেকে মুক্তি পেয়েছি।
গণতন্ত্র ও উন্নয়নের নিষ্কণ্টক পথচলার জন্য রাজনৈতিক দলগুলো উদার ও গঠনমূলক মনোভাব নিয়ে জনগণের পাশে দাঁড়াবে এটাই দেশবাসীর প্রত্যাশা বলেও উল্লেখ করেন রাষ্ট্রপতি।