চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর আব্দুল জব্বার স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে জোরপূূর্বকভাবে ‘পদত্যাগ’ করানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এলাকার প্রভাবশালীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে এ ঘটনায় অধ্যক্ষকে স্বপদে পুনর্বহালের দাবিতে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা এলাকায় বিক্ষোভ করে আন্দোলনে নেমেছে।
এদিকে এ ঘটনার পর আজ ৩ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার সকল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উদ্বিগ্ন প্রধান শিক্ষকেরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সাথে দেখা করে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে এর প্রতিকার চেয়েছেন।
এ বিষয়ে নবীনগর ইচ্ছাময়ী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাউছার বেগম সাংবাদিকদের বলেন, আগামী বৃহস্পতিবার এ ঘটনার প্রতিবাদে উপজেলার সকল শিক্ষকদের নিয়ে মানববন্ধন করে আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
জানা গেছে, উপজেলার কৃষ্ণনগর আব্দুল জব্বার স্কুল এন্ড কলেজে রবিবার আনুমানিক বেলা ১১টার দিকে জাহাঙ্গীর আলম খানের নেতৃত্বে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী লোক অধ্যক্ষের কক্ষে প্রবেশ করেন। তারা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছে জানতে চান, আমরা কেন আসছি আপনি নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন? জবাবে অধ্যক্ষ ‘না’ বলার পরই তারা উচ্চস্বরে চেঁচিয়ে তাকে এক্ষুণি পদত্যাগ করতে চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন।
অধ্যক্ষ তখন বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি ইউএনওর সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও আগত ব্যক্তিরা তাকে সেই সময়টুকু দিতে চাননি। এক পর্যায়ে লোকজনের প্রচন্ড চাপে পড়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফেরদাউসুর রহমান একটি সাদা কাগজে ‘পদত্যাগ’ করে কলেজ থেকে চলে যান।
গভর্ণিং বডির সভাপতি বরাবর লেখা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের ওই পদত্যাগপত্রে অবশ্য কোনো ধরণের কারণ উল্লেখ করা হয়নি।
এদিকে এ ঘটনার কিছুক্ষণ পরই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষকে পুনর্বহালের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে বিদ্যালয়ের সামনে স্লোগান দিতে থাকে। গত সোমবারও বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের পুনর্বহালের দাবিতে এলাকায় দিনভর বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী ক্ষোভের সঙ্গে বলে, সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমাদের প্রিন্সিপাল স্যারকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে জোরপূর্বক পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে। আমরা স্যারকে স্বপদে বহাল দেখতে চাই। অন্যথায় আমাদের আন্দোলন চলবে।
এ বিষয়ে ফেরদাউসুর রহমান বলেন, জাহাঙ্গীর আলম খানের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন বহিরাগত তখন আমাকে পদত্যাগের জন্য ধমকাচ্ছিলেন। তাদের সাথে কোন শিক্ষার্থী ছিলো না। এদের মারমুখী আচরণে আমি এক পর্যায়ে প্রাণ বাঁচাতে বাধ্য হয়ে সাদা কাগজে পদত্যাগপত্র লিখে দেই। নয়তো আমাকে ওরা তখনই প্রাণে মেরে ফেলতো। বিষয়টি পরে ইউএনও মহোদয়কে লিখিতভাবে জানিয়েছি।
এ বিষয়ে পদত্যাগে বাধ্য করানো নেতৃত্ব দেয়া জাহাঙ্গীর আলম খানের সঙ্গে একাধিকবার চেষ্টা করেও কথা বলা যায়নি। তবে ওইদিন পদত্যাগে বাধ্য করানো লোকদের মধ্যে একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ একজন দুর্নীতিবাজ। তিনি নিজেকে আওয়ামী লীগের একজন নেতা হিসেবে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। তার এক যুগের আমলের রেজাল্ট দেখলেই সেটি বুঝা যাবে। এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে তার পদত্যাগ চাইছিলেন।
নবীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তানভীর ফরহাদ শামীম বলেন, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে তাকে এই পদত্যাগ করানো হয়েছে বলে শুনেছি। তবে সরকারি পরিপত্র জারির পর জোরপূর্বকভাবে এ ধরণের পদত্যাগ গ্রহণযোগ্য নয়। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
মনি চৌধুরী (২২) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্বামী মেহেদীসহ পরিবারের লোকজন ঘরে তালা দিয়ে পালিয়ে গেছে। এ ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামে।
আজ ২৮ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার লাশ ময়না তদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মৃত মনি চৌধুরীর পিতা মহাব্বত চৌধুরী বাদী হয়ে নবীনগর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একই গ্রামের ফারুক মিয়ার ছেলে মেহেদী (২৪) এর সাথে মনি চৌধুরীর বিয়ে হয়। তাদের ঘরে তিন বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বেকার স্বামীর সংসারে প্রায়ই পারিবারিক কলহ লেগে থাকতো। ঘটনার পর থেকে মৃত মনি চৌধুরীর তিন বছরের মেয়ে মুনতাহারসহ তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
নিহতের বাবা মহাব্বত চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, বৃহস্পতিবার রাত অনুমানিক ১১ টার দিকে মনি এর শাশুরী ফোন করে আমাকে জানায় মনি হঠাৎ করে মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছে, তাই তাকে নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়েছে। খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে মনিকে মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে জানায়, মনিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তিনি তার মেয়ের সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, লাশ ময়না তদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ১৪ অক্টোবর শনিবার বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিকন ফার্মাসিটিক্যালস এর কর্ণধার এবাদুল করিম বুলবুল এম.পি। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন নবীনগর উপজেলার পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মনিরুজ্জামান, ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সাদেক, শিউলি রহমান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ সদস্য নাসির উদ্দিন, এডভোকেট সুজিত কুমার দেব, নবীনগর মহিলা ডিগ্রি কলেজ প্রিন্সিপাল ইয়াবের হাসান জামিল, বীর আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম, প্রণয় কুমার ভদ্র পিন্টু উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য সাইফুর রহমান সোহেল পৌর আওয়ামী লীগের সদস্য শামীম রেজা মডেল প্রেসক্লাব সভাপতি আবু কাউসার, প্রেসক্লাব সিনিয়র সহ সভাপতি আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া মিনাজ ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক আবু সাঈদ, বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি মনির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম জনি প্রমুখ। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর ফরহাদ শামীম।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু মুসা। বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ১৭ টি ইভেন্টে বিদ্যালয়ের ছয় শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়। পরে প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ৫১জনের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।পুরস্কার তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি এবাদুল করিম বুলবুল। এ ছাড়াও একই অনুষ্ঠানে গত ২০২৩ সালের মেধা বৃত্তি পরীক্ষায় নবীনগর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালযয়ের ১৫ জন বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী শিক্ষার্থীকে মেধা পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ময়নাল হোসেন চৌধুরী।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার কুড়িঘর গ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে জমকালো আয়োজনে ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা। স্থানীয় সংস্কৃতি ও গ্রামীণ ঐতিহ্য ধরে রাখার লক্ষ্যে আজ ১৮ এপ্রিল শুক্রবার বিকেলে ৩টা থেকে কুড়িঘর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে লাঠি খেলা দেখতে জড়ো হন হাজার হাজার মানুষ।
“লাঠির ছন্দে শপথ করি, মাদক ছাড়া জীবন গড়ি” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে খেলাটি উদ্বোধন করবেন নবীনগর প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ হোসেন শান্তি। খেলায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক নজরুল ইসলাম, প্রধান আকর্ষণ ছিলেন নাটঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আক্তারুমুজ্জামান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দীন আহমেদ মহিন, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শ্যামা প্রসাদ চক্রবর্তী শ্যামল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইদুল আলম সোরাফ, আনন্দ টিভির প্রতিনিধি আবু কাউছার, বাংলা টিভির প্রতিনিধি পিয়াল হাসান রিয়াজ, কুড়িঘর উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ মাসুদুর রহমান, ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু হানিফ মোল্লা, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, সাংবাদিক সফর আলী, সাংবাদিক মমিনুল হক রুবেল, সাংবাদিক অলিহ উল্লাহ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে মোঃ নান্নু মিয়ার সভাপতিত্বে খেলা শেষে অতিথিদেরকে সম্মাননা ক্রেস্ট ও বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
আয়োজকরা জানান, এই ঐতিহ্যবাহী খেলাকে টিকিয়ে রাখতে এবং নতুন প্রজন্মের কাছে এর পরিচিতি বাড়াতে তারা নিয়মিতভাবে এই ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকেন। খেলা পরিচালনা করেন মোঃ জাকির সর্দার।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর ফরহাদ শামীমের বদলির প্রতিবাদে উপজেলা সর্বস্তরের শিক্ষার্থীদের ব্যানারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ৪ অক্টোবর শুক্রবার সকাল সকাল ১০ টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর প্রেসক্লাবের সামনে শিক্ষার্থীর সহ বিভিন্ন পেশার লোকজন মানববন্ধনে অংশ গ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের সময় তিনি শিক্ষার্থীদের পাশে সার্বক্ষণিক ছিলেন। আন্দোলনে আহতদের অর্থ সহায়তা প্রদান করেছেন এবং হাসপাতালে গিয়ে তাদের খোঁজ খবর নিয়েছেন। আন্দোলনের পর যে সব ছাত্র ট্রাফিক কন্ট্রোলের কাজ করেছে, তাদেরকে উপজেলা প্রশাসন থেকে আপ্যায়নের ব্যবস্থা করেছেন।
বক্তারা সরকারের প্রতি দাবি জানিয়ে বলেন, ইউএনও তানভীর ফরহাদ শামীমের বদলির আদেশ অবিলম্বে বাতিল করা হোক এবং তাকে পুনরায় বহাল করা হোক। নতুবা আরো কঠিন কর্মসূচি দেওয়া হবে।