সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ পাঁচ কমিশনারের পদত্যাগ ঘোষণা

জাতীয়, 5 September 2024, 412 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (ইসি) আজ ৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার পদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছে। পদত্যাগ ঘোষণার আগে ‘বিদায়ী ব্রিফিং’–এ ভবিষ্যতের প্রতিটি সাধারণ নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন অনুষ্ঠানের পরামর্শ দিয়েছেন হাবিবুল আউয়াল। তাঁর আরও পরামর্শ, এ নির্বাচনে বিরতি দিয়ে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে হবে।

banner

হাবিবুল আউয়ালের ব্রিফিংয়ে পড়া লিখিত ভাষণের শব্দসংখ্যা ছিল সাত শতাধিক। লিখিত ভাষণের শেষে ‘নিজের অভিজ্ঞতার নিরিখে’ তিনি কিছু প্রস্তাবনা দেন। হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘বর্তমান ও অতীত থেকে আহৃত অভিজ্ঞতা, জ্ঞান ও উপলব্ধি থেকে ভবিষ্যতের জন্য কিছু প্রস্তাবনা সরকারের সদয় বিবেচনার জন্য রেখে যাওয়া কর্তব্য মনে করছি। বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর সমরূপতার কারণে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বমূলক (দলীয়–ভিত্তিক) নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশ আদর্শ ক্ষেত্র হতে পারে। সেই সঙ্গে নির্বাচন চার বা আটটি পর্বে, প্রতিটি পর্বের মাঝে তিন থেকে পাঁচ দিনের বিরতি রেখে, অনুষ্ঠান করা ব্যবস্থাপনার দিক থেকে সহজ ও সহায়ক হতে পারে। আমাদের প্রবর্তিত অনলাইনে নমিনেশন দাখিল অব্যাহত রেখে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় প্রযুক্তির ব্যবহার অপটিমাইজ করতে পারলে উত্তম হবে। প্রতিটি সাধারণ নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন অনুষ্ঠিত হলে উদ্দেশ্য অর্জন আরও সুনিশ্চিত হতে পারে।’

ভাষণে দেশের প্রতিটি নির্বাচনের ইতিহাস তুলে ধরেন হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, দেশের প্রথম সাংবিধানিক সাধারণ নির্বাচন ১৯৭৩ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই নির্বাচন নিয়েও বিতর্ক ছিল। ১৯৭৯ ও ১৯৮৭ সালের সাধারণ নির্বাচন সামরিক শাসনামলে হয়েছে। ফলাফল নিয়ে বিতর্ক ছিল। ১৯৯১ সালের নির্বাচন রাজনৈতিক রূপরেখার ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন হয়েছিল। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচন সাংবিধানিক নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন, সূক্ষ্ম বা স্থূল কারচুপির সীমিত সমালোচনা সত্ত্বেও সার্বিকভাবে গ্রহণযোগ্য হয়েছিল।

হাবিবুল আউয়াল আরো বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচন সেনাসমর্থিত নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই নির্বাচনে বিএনপি সংসদে মাত্র ২৭টি এবং আওয়ামী লীগ ২৩০টি আসন পেয়েছিল। নির্বাচন বিতর্কের ঊর্ধ্বে ছিল না। নিরাপদ প্রস্থান বিষয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে সেনাসমর্থিত অসামরিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দর–কষাকষির বিষয়টি প্রকাশ্য ছিল। সে প্রশ্নে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের অবস্থানও গোপন ছিল না। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচন সংবিধানমতে দলীয় সরকারের অধীন হয়েছে।

২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপিসহ অনেক দলই অংশগ্রহণ করেনি উল্লেখ করে হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘ফলে সেই নির্বাচনও ২০২৪ সালের অনুরূপ অন্তর্ভুক্তিমূলক ছিল না। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করে। আসন পেয়েছিল মাত্র ৬টি। পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগ পেয়েছিল ২৫৮টি। মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন। ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়েছে বর্তমান কমিশনের অধীন। ৪৪টি নিবন্ধিত দলের মধ্যে ২৮টি দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেও প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও সমমনা দলগুলো সেই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে। নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়নি। কমিশন বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য একাধিকবার আহ্বান করা সত্ত্বেও তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা না–করার বিষয়টি দলের নিজস্ব সিদ্ধান্তের বিষয়।’

হাবিবুল আউয়াল বলেন, নির্বাচন স্থগিত বা বাতিল করে দেওয়ার মতো কোনো সাংবিধানিক ভিত্তি ছিল না। সে কারণে অনেকেই কমিশনকে দোষারোপ করছেন। নির্বাচন কখন, কী কারণে, কত দিনের জন্য স্থগিত করা যাবে, তা–ও সংবিধানে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা আছে। অতীতে কখনোই কোনো কমিশন নির্বাচন বাতিল করে দিয়ে পদত্যাগ করেননি। সম্প্রতি ভেঙে দেওয়া সংসদের ২৯৯টি আসনে নির্বাচন প্রার্থীদের মধ্যে ব্যক্তিকেন্দ্রিক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে হয়েছে; দলের মধ্যে নয়। ২৯৯ আসনে ১ হাজার ৯৬৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।

পদত্যাগী সিইসির কথা, ‘নির্বাচন নিষ্পন্ন করা অতিশয় কঠিন একটি কর্মযজ্ঞ। নির্বাচন গ্রহণযোগ্য না হওয়ার সব দোষ বা দায়দায়িত্ব সব সময় কেবল নির্বাচন কমিশনের ওপর এককভাবে আরোপ করা হয়ে থাকে। একটি কমিশন না হয় অসৎ বা পক্ষপাতদুষ্ট হতে পারে; কিন্তু সব সময় সব কমিশনই অসৎ বা পক্ষপাতদুষ্ট হতে পারে না। কমিশন বিভিন্ন কারণে নির্ভেজাল গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে অক্ষম বা অসমর্থ হতে পারে। বিদ্যমান ব্যবস্থায় আমাদের বিশ্বাস, কেবল কমিশনের পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে অবাধ, নিরপেক্ষ, কালোটাকা ও পেশিশক্তি-বিবর্জিত এবং প্রশাসন-পুলিশের প্রভাবমুক্ত নির্বাচন নিশ্চিত করা যাবে না। নির্বাচনী পদ্ধতিতে দুর্ভেদ্য মৌলিক সংস্কার প্রয়োজন হবে। রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও আচরণে এবং বিশেষত প্রার্থীদের আচরণে পরিবর্তন প্রয়োজন হবে।’

হাবিবুল আউয়াল বলেন, ১৯৭৩ সাল থেকে হওয়া অতীতের অন্যান্য নির্বাচন ছাড়াও ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের বিতর্কিত বা সন্দিগ্ধ বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে কমিশন পরবর্তী সব নির্বাচন সতর্কতার সঙ্গে আয়োজনের চেষ্টা করেছে। জাতীয় ও স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন স্তরের নির্বাচনে দিনের বেলায় ব্যালট পেপার প্রেরণ, কিছু উপনির্বাচনে ভিডিও পর্যবেক্ষণ, ইভিএম ব্যবহার, দেশের সব জেলায় একই দিনে তবে প্রতিটি জেলার প্রশাসনিক সীমানার মাঝে তিন থেকে পাঁচ দিন বিরতি দিয়ে পাঁচ থেকে ছয়টি ধাপে নির্বাচন অনুষ্ঠান, সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যাপকভাবে রদবদল ইত্যাদি গৃহীত ব্যবস্থা নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুশৃঙ্খল করতে অনেকটাই সহায়ক হয়েছিল। নির্বাচন মূলত একদলীয় হওয়ার কারণে কারচুপি বা সরকারিভাবে প্রভাবিত করার প্রয়োজনও ছিল না। নির্বাচন দলের ভেতরেই হয়েছে; মধ্যে হয়নি। উইথইন হয়েছে, নট বিটুইন।

নিজেদের কমিশনের কর্মকাণ্ড নিয়ে হাবিবুল আউয়াল বলেন, কমিশন দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে দুই বছর সময়ে ইউনিয়ন পরিষদের ৯৯২টি, উপজেলা পরিষদের ৪৯৬টি, জেলা পরিষদের ৭১টি, পৌরসভার ৯০টি এবং সিটি করপোরেশনের ১৬টি নির্বাচন করেছে। নির্বাচনগুলোর সততা, সিদ্ধতা, নিরপেক্ষতা অবাধ হওয়া নিয়ে অতীতের মতো ব্যাপক বিতর্ক বা সমালোচনা হয়নি। উপনির্বাচনসহ জাতীয় সংসদের মোট ৩১৮টি আসনে কমিশন নির্বাচন করেছে। দলীয়ভাবে ইনক্লুসিভ না হওয়ার কারণে নির্বাচন বিতর্কিত হয়েছে। এটি সঠিক ও যৌক্তিক। কিন্তু বাংলাদেশের ৫৩ বছরের ইতিহাসে কোনো নির্বাচন কমিশন সংবিধান উপেক্ষা করে স্বেচ্ছায় নির্বাচন বাতিল করে দিয়ে পদত্যাগ করেছে এবং সেই কারণে নির্বাচন হয়নি-এমন উদাহরণ নেই। সরকার বারবার বলছে, ব্যাপক সংস্কারের মাধ্যমে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে। নির্বাচন বারবার ব্যর্থ হওয়ার প্রকৃত সত্য ও কারণ এ কথার মধ্যেই নিহিত।

হাবিবুল আউয়াল আরো বলেন, ‘কমিশনের সদস্যরা সংবিধান মেনে দায়িত্ব পালন করে থাকেন। আমাদের কর্মকালে আমরা গণমাধ্যম, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনীসহ আবশ্যক সবার সহযোগিতা পেয়েছি। কৃতজ্ঞচিত্তে তা স্মরণ করছি।’

Leave a Reply

ইটালি প্রবাসী দিদারের মা আনোয়ারা বেগমের…

শফিকুল ইসলাম বাদল : ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের বিরামপুর Read more

কসবায় মায়ের অভিযোগে ছেলের কারাদণ্ড

চলারপথে রিপোর্ট : মাদকাসক্ত ছেলের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে Read more
ফাইল ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

চলারপথে রিপোর্ট : পুকুরের পানিতে ডুবে ইসরাত জাহান নোভা (৯) Read more

ইরান কখনও আপোস করবে না: আয়াতুল্লাহ…

অনলাইন ডেস্ক : জায়নবাদীদের সাথে ইরান কখনও আপোস করবে না Read more
ফাইল ছবি

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক পাঁচ দিনের…

অনলাইন ডেস্ক : রাজধানীর শাহবাগ ও পল্টন মডেল থানার পৃথক Read more
ফাইল ছবি

প্রতারণা করে জুলাই অভ্যুত্থানের সুবিধা নিলে…

অনলাইন ডেস্ক : জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদের পরিবার এবং আহতদের কল্যাণ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩৮ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় নাগরিক…

দুলাল মিয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর Read more

কারাগারে হাজতির মৃত্যু

দুলাল মিয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে জুনায়েদ মিয়া (৩২) নামে Read more

আখাউড়ায় কৃষকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা

চলারপথে রিপোর্ট : কৃষকদের সেচ দক্ষতা বাড়াতে পানি ব্যবহারকারী গ্রুপের Read more

ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের ১১তম ব্যাচের ওরিয়েন্টেশন

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য: রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের Read more

স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে…

অনলাইন ডেস্ক : স্ত্রীর স্বীকৃতি দাবিতে সৌদি প্রবাসীর বাড়িতে অনশন Read more

ইরানে ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানালো ২১…

অনলাইন ডেস্ক : ইরানে ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানিয়েছে মিশরসহ ২১টি Read more

জুনাইদ আহমেদ পলকের ‘হারানো সোয়েটার’ পাওয়া গেছে

জাতীয়, 23 April 2025, 114 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
কারাগারে নিজের দুইটি সোয়েটার হারিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছিলেন স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। দাবি করেছিলেন, জামা-কাপড় না থাকায় তাকে আগামী শীতে অসুবিধায় পড়তে হবে। সোমবার আদালতে দাঁড়িয়েই তিনি এই অভিযোগ তোলেন।

banner

তবে, বিষয়টি অনুসন্ধান করে বিকেলেই কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, হারিয়ে যায়নি। সোয়েটারসহ অন্যান্য শীতের কাপড় কারাগারের স্টোররুমেই পাওয়া গেছে।

কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারের জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন গণমাধ্যমকে বলেন, পলকের জামাকাপড় একটি ব্যাগে রাখা ছিল। মালিক চিহ্নিত না হওয়ায় সেটি ফের স্টোরে রাখা হয়।

তদন্তে জানা যায়, সম্প্রতি পলকের স্ত্রী কারাগারে সাক্ষাৎ করতে গেলে, পলক নিজের কিছু শীতের কাপড় নিরাপত্তারক্ষীর কাছে স্ত্রীর হাতে দেওয়ার জন্য দেন। পরে অসাবধানতাবশত ব্যাগটি পড়ে থাকে। সেদিন সাক্ষাৎ শেষে কারা রক্ষীরা ব্যাগটি পড়ে থাকতে দেখে তা স্টোররুমে রেখে দেয়।

তবে আদালতে অভিযোগ ওঠার পর বিষয়টি নিয়ে কারা তত্ত্বাবধায়ক বলেন, আলোচনায় থাকার জন্য জুনাইদ আহমেদ পলক উদ্ভট সব দাবি করে থাকেন। সোয়েটার হারানোর অভিযোগ তারই একটি উদাহরণ। কারাগারে বন্দীর কোনো মালামাল হারানোর সুযোগ নেই।

এদিকে, পলকের আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন গণমাধ্যমে দাবি করেন, তার মক্কেল ডিভিশনের সুযোগ পাচ্ছেন না। কিন্তু কারা তত্ত্বাবধায়ক বলেন, পলক প্রথম শ্রেণির কারাবন্দী হিসেবে জেলকোড অনুযায়ী সব সুযোগ-সুবিধাই পাচ্ছেন। তার আইনজীবীর বক্তব্য সঠিক নয়।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১৪ আগস্ট গ্রেফতার হন জুনাইদ আহমেদ পলক। তার বিরুদ্ধে ছয়টি মামলায় মোট ৫৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়। এছাড়া সোমবার বিভিন্ন হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমু, শাজাহান খান, কামাল আহমেদ মজুমদার, আইনজীবী তুরিন আফরোজ এবং পলককে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের ফল প্রকাশ, পাস ৯৩৩৭

জাতীয়, 20 December 2023, 801 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রথম পর্বের (বরিশাল, সিলেট, রংপুর বিভাগ) লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। লিখিত পরীক্ষায় ৯ হাজার ৩৩৭ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন।

banner

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট www.mopme.gov.bd এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট www.dpe.gov.bd -তে ফলাফল পাওয়া যাবে। উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীরা মোবাইল ফোনেও মেসেজ পাবেন।

মৌখিক পরীক্ষার তারিখ পরবর্তীতে জানানো হবে। চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি এ পরীক্ষা সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।

গত ৮ ডিসেম্বর রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের ১৮ জেলায় একযোগে প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে আবেদন ৩ লাখ ৬০ হাজার ৬৯৭ জন।

এদিকে, অনিয়ম-জালিয়াতি এবং হরতাল-অবরোধের মধ্যে পরীক্ষা নেওয়ায় ১ লাখ ৫৮ হাজার প্রার্থী অনুপস্থিত দাবি করে পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন কিছু প্রার্থী। তারা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে লিখিত আবেদন এবং জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচিও করেছেন।

পাশাপাশি ৫৪ জন প্রার্থীর পক্ষে ফাতেমা আক্তার নামে একজন প্রার্থী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছেন। এ রিট নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ফল প্রকাশ ও নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত রাখতে দুই মন্ত্রণালয়সহ ১৩ অধিদপ্তর-দপ্তরে নোটিশও পাঠিয়েছেন। তবে নিয়োগ সংশ্লিষ্টরা এ নোটিশ পাননি বলে জানিয়েছেন।

মহান বিজয় দিবস আজ

জাতীয়, 16 December 2023, 902 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
‘পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত জ্বলন্ত/ ঘোষণার ধ্বনি-প্রতিধ্বনি তুলে/ নতুন নিশানা উড়িয়ে, দামামা বাজিয়ে দিগি¦দিক/ এই বাংলায়/ তোমাকে আসতেই হবে, হে স্বাধীনতা।’ কবি শামসুর রাহমানের এই কবিতা সত্যিই বাঙালির জীবনে সত্যি হয়ে এসেছে। কবি নির্মলেন্দু গুণের ভাষায় : ‘আমার ছিল না মুক্ত মাতৃভূমি/ শৃঙ্খলহীন স্বাধীন দেশ;/ শতবর্ষের শত সাধনায়/ পেয়েছি তোমায় বাংলাদেশ।’

banner

বাঙালির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অর্জন স্বাধীনতা প্রাপ্তির দিন আজ ১৬ ডিসেম্বর। একাত্তরের এই দিনটিতে বাংলার আকাশে-বাতাসে ধ্বনিত হয় ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান। সেই দিনটির ন্যায় আজ সেই শ্লোগান তুলবে পুরো জাতি। সর্বত্র উড়বে বিজয়ের লাল-সবুজ পতাকা।

বিজয়ের এইদিনে শপথ নেয়া হবে দেশ থেকে মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করার। শপথ নেয়া হবে স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অসম্মানকারীদের রুখে দেয়ার। শপথ নেয়া হবে দেশের উন্নয়ন ও প্রগতির পথে বাধাদানকারীদের সমূলে উচ্ছেদ করার।

নয় মাস সশস্ত্র সংগ্রামের পর উনিশ শ’ একাত্তরের এই দিনে ৯২ হাজার পাকিস্তানি সৈন্যবাহিনী ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) আত্মসমর্পণ করে। জন্ম নেয় স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। সেই বিজয়ের আনন্দে আজ বাংলার মানুষ ভাসবে।

সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের শুভ সূচনা হবে। হাজার হাজার মানুষের মিলনমেলা হবে ফারুকী পার্ক স্মৃতিসৌধ। সেখানে শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাবে সবাই। দিনভর বাংলার পথে-প্রান্তরে বাজবে বিজয়ের গান।
জাতি আজ স্মরণ করবে স্বাধীনতা সংগ্রামের মহান নায়ক বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে আরও দৃঢ়প্রত্যয়ী হবে নতুন প্রজন্ম। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় সমাধিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানাবে সর্বস্তরের মানুষ। কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করা হবে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে সহায়তাকারী বন্ধুরাষ্ট্র ভারতকে; যে দেশ এক কোটি মানুষকে আশ্রয় দিয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং আর সাহস জুগিয়েছিল।

আজ সরকারি ছুটি। যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি উদযাপনের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সারা দেশে সরকারি-বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উড়বে। ঘরের সামনে, ভবনের ছাদে কিংবা গাড়িতেও উড়বে লাল-সবুজের এই পতাকা।

হত্যার হুমকি: ব্যারিস্টার সুমনকে অজ্ঞাত ব্যক্তি যা জানিয়েছিলেন

জাতীয়, 30 June 2024, 520 Views,

অনলাইন ডেস্ক :

banner

অজ্ঞাতনামা চার-পাঁচজনের একটি গ্রুপ হত্যার জন্য মাঠে নেমেছে। নিজ নির্বাচনী এলাকার থানার ওসির মারফত বিষয়টি জানতে পেরে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন হবিগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।

আজ ৩০ জুন রবিবার সকালে তিনি বলেন, অজ্ঞাত এক ব্যক্তি আমাকে জানান, সিরিয়াল কিলারের একটি গ্রুপ বর্তমানে সক্রিয়। তারা আমাকে হত্যা করতে চান। আমি যেন আগামী ২-৩ দিন বাসা থেকে বের না হই।

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সংসদে থাকাকালীন আমার এলাকার যে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আছেন, তিনি আমাকে কল করে জানান, গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে। তাই বাড়ি আসার পর তার সঙ্গে যেন আমি একটু বসি।
পরে শুক্রবার বাড়ি যাওয়ার পর দুপুরে আমার সঙ্গে বসেছিলেন ওসি। তখন ওসি আমাকে একটি ম্যাসেজ দেখালেন। সেখানে ওসিকে একজন অজ্ঞাত ব্যক্তি ২-৩ দিন কল করেছেন। কিন্তু কলটি আমলে না নেয়ায় ওই ব্যক্তি ওসিকে একটি ম্যাসেজ করে জানান, তিনি আমার সঙ্গে কথা বলেতে চান। এছাড়া ম্যাসেজে দেখা গেছে, একটি কন্ট্রাক্ট কিলার গ্রুপ হায়ার করা হয়েছে। তারা বর্তমানে অ্যাক্টিভ।

তিনি আরও বলেন, ওসির ফোন দিয়ে আমি পরে অজ্ঞাত সেই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলি। তখন অজ্ঞাত ওই ব্যক্তি জানায়, তিনি নিজের পরিচয় এবং ঠিকানা দিতে চান না। এছাড়া তিনি নিজেও ওই কিলার গ্রুপের একজন সদস্য ছিলেন। যখন আমাকে হত্যার জন্য তার কাছে নাম আসে এবং সেই কাজ তাকে করতে হবে এমন নির্দেশনা আসে, তখন তিনি ওই কাজে অস্বীকৃতি জানান। কারণ, তার বাড়িও সিলেটে। তিনি আমার কাজকর্ম সম্পর্কে সব জানেন, তাই তিনি রাজি হননি বলেও আমাকে জানিয়েছেন।

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ফোনকলে ওই ব্যক্তি জানান, আমি যেন আগামী ২-৩ দিন বাসা থেকে বের না হই। কিন্তু এর আগেও আমি মৌখিকভাবে এবং পিএসের মাধ্যমে হুমকি পেয়েছি। কিন্তু সেগুলো আমলে নেইনি। তবে এবার যখন ওসির মাধ্যমে এসেছে, তখন আমার কাছে মনে হয়েছে এবার সিরিয়াসভাবে আমলে নিতে হবে।

তিনি জানান, ওই ঘটনার পর আমি শনিবার ঢাকায় চলে আসি। এরমধ্যে আমি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথাও বলেছি। পরে আমি শেরেবাংলা নগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করি।

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, আমি একজন সংসদ সদস্য। যখন আমার এলাকার ওসি কোনো এক মাধ্যমে জেনেছেন আমার লাইফ রিস্কে আছে, তখনই কিন্তু তার এসপি বা ডিআইজির সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল। এটা কি সত্যই হুমকি নাকি ভুয়া সেটি আমার কাছে আসার আগেই তাদের তদন্ত করে দেখা উচিত ছিল। আমাকে কেন জিডি করতে হলো?

তিনি বলেন, আমার প্রশ্ন হলো- আমার থ্রেট তো আমি জানি না, আমার আগে জেনেছেন ওসি। এরপর এটা এসপি বা ডিআইজিকে জানানো দরকার ছিল এবং আমি জানার আগেই আমাকে প্রোটেকশন দেয়ার কথা ছিল। এরপর আমাকে জানাতে পারতেন যে, ওই থ্রেটটা (হুমকি) রিয়েল নাকি ফেইক। কিন্তু ওসি আমাকে বলেছেন, আমার জিডি করতে হলো। এখন তো আমার জীবনের নিরাপত্তা নিজেকেই দিতে হচ্ছে। আমি বুঝি না, এই রাষ্ট্রযন্ত্র আসলেই কি আমাকে বাঁচায় রাখতে চায় কি না। কারণ, আমি যেখানে জিডি করেছি বা পুলিশ বিভাগকে জানিয়েছি, তারাই তো আমার আগে এ ঘটনা জেনেছে।

নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে বিশেষ সভা

জাতীয়, 12 October 2023, 845 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
বগুড়ায় নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে যাতে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে না পারে সে লক্ষ্যে বিশেষ সভা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন আয়োজিত আজ ১২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় সম্মেলন কক্ষে এ সভা করা হয়।

banner

এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, বগুড়ায় নিত্য পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি ও কৃত্রিম সংকট রোধে সকলে মিলে কাজ করতে হবে। যে সমস্ত কোল্ড স্টোরেজ মালিক এবং ব্যবসায়ীরা সরকারি মূল্যে বাজারে আলু দিচ্ছেন না তাদেরকে আবারো বলা হচ্ছে। এরপরও যদি ন্যায্য মুল্যে আলু না দেয়া হয় তাহলে ওইসব কোল্ড স্টোরেজ মালিক এবং ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রয়োজন হলে প্রশাসনের উদ্যোগে আলু কিনে বাজারে সরকারি নির্ধারিত মূল্যে বিক্রি করা হবে। বগুড়ার বাজারে কোন ভাবেই বেশি দামে আলু, পিয়াজ, ডিম ও সবজিসহ অন্যান্য পণ্য বিক্রি করতে দেয়া যাবে না। বাজার সিন্ডিকেট এবং কৃত্রিম সংকট রোধে বগুড়ার প্রশাসন নিয়মিত মনিটরিং করবে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মাদ আল মারুফ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোতাহার হোসেন, টিএমএসএস এর প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক ড. হোসনে আরা বেগম, কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তর বগুড়ার উপ-পরিচালক মো, মতলুবর রহমান, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বগুড়ার সহকারী পরিচালক ইফতেখারুল আলম রিজভী, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজা পারভীন, কোল্ড স্টোরেজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, বগুড়া চেম্বার অব কমার্সের সহ-সভাপতি এনামুল হক দুলাল। এসময় উপস্থিত ছিলেন বগুড়ার ১২টি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা, বগুড়া সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাইহান ওলিউল্লাহ সহ অন্যান্য থানার ওসি, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, কোন্ড স্টোরেজ মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন বাজার কমিটির নেতৃবৃন্দ, পাইকারী ও খুচরা ব্যবসায়ী এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ। সভায় বগুড়ার বাজার নিয়ন্ত্রনে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।