চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার রামরাইল ইউনিয়নের আব্দুল মোনেম মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হোসনে আরা বেগমকে জোরপূর্বক কথিত পদত্যাগ প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে শিক্ষার্থীরা।
আজ ৮ সেপ্টেম্বর রোববার বিকেলে শিক্ষার্থীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির কাছে অধ্যক্ষের কথিত পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার চেয়ে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। এর আগে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসের সামনে জড়ো হন। এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানান, গত ১৯ আগষ্ট কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী বহিরাগত ছেলে মেয়েদের নিয়ে কলেজে প্রবেশ করে অধ্যক্ষকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে তাদের লেখা একটি কাগজে স্বাক্ষর করতে অধ্যক্ষকে বাধ্য করেন। যা অধ্যক্ষের পদত্যাগপত্র বলে তারা দাবি করে তারা। শিক্ষার্থীরা জানান, এই পদত্যাগ আমরা মানিনা, আমরা অধ্যক্ষকে স্বপদে বহাল চাই।
শিক্ষার্থীরা বলেন, অধ্যক্ষ হোসনে আরা বেগম কলেজে যোগদান করার পর কলেজের সার্বিক শিক্ষার মান বেড়েছে। তিনি কলেজের সার্বক্ষনিক লেখাপড়ার তদারকি করেন। আমরা তাকে স্বপদে বহাল চাই। তাই আমরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মোহাম্মদ সেলিম শেখের কাছে তাকে দ্রুত স্বপদে বহাল করার দাবি জানিয়েছি।
কলেজ শিক্ষার্থী আফজাল হোসেন, শরীফ উল্লাহ, মুজাহিদ আহমেদ বলেন, কলেজের কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী ষড়যন্ত্র করে অধ্যক্ষকে জোরপূর্বক পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর নিয়েছেন। আমরা এই পদত্যাগ মানি না।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মোহাম্মদ সেলিম শেখ বলেন, কলেজ অধ্যক্ষকে পূর্ণবহালের দাবিতে শিক্ষার্থীরা একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন। এই বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ব্যবসায়ী ফজলুল হকের কাছ থেকে ৩৫ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় মূলহোতা সহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আজ ২৮ মার্চ বৃহস্পতিবার ভোর রাতে নরসিংদী জেলার ব্রাহ্মণদী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার দক্ষিণ পৈরতলা এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার পূর্ব মেড্ডার হাবিবুর রহমানের ছেলে মোঃ এনায়েত উল্লাহ ও দক্ষিণ পৈরতলার রশিদ মিয়ার ছেলে মোঃ আকাশ মিয়া।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসলাম হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে বুধবার সকাল ১০ টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার পাইকপাড়া জামে মসজিদ এলাকা থেকে ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসায়ী ফজলুল হককে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
পরে তাকে মারধোর করে তার কাছ থেকে ৩৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে ফজলুল হককে শহরের পীরবাড়ি এলাকায় মাইক্রোবাস থেকে ফেলে দিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা এসে তাকে উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে আসেন। বিকেলে বিষয়টি জানাজানি হলে ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও দুর্বৃত্তদের গ্রেফতারে মাঠে নামে পুলিশের একাধিক টিম ও ডিবি পুলিশ।
পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় বৃহস্পতিবার ভোরে পুলিশ ঘটনার মূলহোতা এনায়েত উল্লাহকে নরসিংদী জেলার ব্রাহ্মণদী গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে। এ সময় পুলিশ তার কাছ থেকে ২ হাজার ইউরো উদ্ধার করে। পরে তার দেয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মাইক্রোবাসের চালক মোঃ আকাশ মিয়াকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার দক্ষিণ পৈরতলা থেকে গ্রেফতার করে। এ সময় তার বাড়ি থেকে ছিনতাইকাজে ব্যবহৃত কালো রঙের হাইয়েস মাইক্রোবাসটি জব্দ করা হয়।
এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসলাম হোসেন ঘটনায় জড়িত দুইজনকে গ্রেফতারের কথা স্বীকার করে বলেন, ছিনতাইকারীরা মাইক্রোবাস স্ট্যান্ডের নৈশ প্রহরী এরশাদের মাধ্যমে ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটি ভাড়া করে।
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, আসামীরা ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ফজলুল হকের পূর্ব পরিচিত। প্রধান আসামী এনায়েত উল্লাহ এক সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার মেড্ডায় বসবাস করতেন। তারা আগে থেকেই জানতেন ট্রাভেল ব্যবসায়ী ফজলুর রহমানের কাছে হুন্ডিসহ বিভিন্ন দেশে লোক পাঠানোর টাকা থাকে।
ছিনতাইকারীরা তাদের সোর্সের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়, ফজলুল হক টাকা নিয়ে কখন বের হবেন। এই তথ্য অনুযায়ী তারা আগে থেকে উৎপেতে থেকে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটায়। পুলিশ বাকী দুই আসামীকে গ্রেফতারের জন্য ও বাকি টাকা উদ্ধারের জন্য অভিযান চালাচ্ছে।
উল্লেখ, ব্যবসায়ীয় ফজলুল হক ঢাকায় ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসা করেন। তার গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের বাঘাউড়া গ্রামে।
এদিকে ছিনতাইয়ের শিকার ফজলুল হক জানান, জমি বিক্রির টাকা ব্যাংকে জমা দেওয়ার জন্য তিনি বুধবার সকালে বাসা থেকে রিকসাযোগে রওনা দেন। তিনি বাসা থেকে বের হয়ে পূর্ব পাইকপাড়া জামে মসজিদ রোডের সামনে আগে থেকে দাঁড়িয়ে থাকা কালো রঙের একটা মাইক্রোবাস থেকে তিন জন আমার রিকসা গতিরোধ করে। এদের মধ্যে এক জন ছিলো পুলিশের ড্রেস পড়া ও বাকী দুই জন ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে আমার নাম জানতে চায়।
নাম বলার সাথে সাথে তারা বলে আমার সাথে অবৈধ জিনিস আছে বলে জোড় করে আমাকে মাইক্রোবাসে তুলে। পরে তারা আমাকে বেধরক মারধর আমার সাথে থাকা ৩৫ লাখ ৭০ হাজার টাকার ব্যাগসহ নিয়ে আমাকে পীরবাড়ি এলাকার গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়। স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে আসে।
চলারপথে রিপোর্ট :
সারাদেশে চলমান ধর্ষণ, ছিনতাই ও ডাকাতিসহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ২৫ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সকালে জেলার সাবেরা সোবহান সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজ, ইউনাইটেড কলেজ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজসহ সর্বস্তরের সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়।
সকাল ১১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে দুপুর ১টা পর্যন্ত মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে তারা। সারা দেশব্যাপী ধর্ষণকারী, ডাকাত ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকার ও প্রশাসনের নিকট দাবির পাশাপাশি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে শিক্ষার্থীদের শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে শহর।
মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখেন শিক্ষার্থী ফাহিম মুনতাসির, মুনিয়া মাহিন অতিথি, জয়ন্তী বিশ্বাস, ফাইজান হাসনাত, তাসিন আরাফাত, নিশাত তাসনিম চৌধুরী, ওমর ফারুক প্রমূখ। বক্তারা বলেন, আবু সাইদ ও মুগ্ধদের রক্তের বিনিময়ে এই নতুন স্বাধীন বাংলাদেশ অর্জিত হয়েছে। অথচ সরকার ও প্রশাসন দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। যে কারণে সারাদেশে ধর্ষণ, ডাকাতি, ছিনতাই ও হত্যার মতো ঘটনা অতিতের চেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ায় আমরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবী করছি। এ অবস্থায় ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড নিশ্চিত করাসহ এসব অপরাধের সাথে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা। অন্যথায় আগামীদিনে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মাসুদ পারভেজ এর উপস্থিতিতে বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিভিন্ন সময়ে মাদকসহ বিভিন্ন আলামতের নিস্পত্তিকৃত মামলার ১ কোটি ২০ লক্ষাধিক টাকার মাদক ও আলামত এবং প্রায় সাড়ে ৫ হাজার নিস্পত্তিকৃত মামলার নথি ও ২০২২ ইং সনের সাড়ে ৮ হাজার পিটিশন ধ্বংস করা হয়েছে।
আজ ২৪ জানুয়ারি বুধবার সন্ধ্যায় কুরুলিয়ার পাড়ে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সম্মুখে আধুনিক চুল্লি এবং ভারী যান (ভোল্ডোজার) ব্যবহার করে বিভিন্ন মাদক ও আলামত ধংবস করা হয়।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন আলামত ধ্বংস কমিটির চেয়ারম্যান অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আফরিন আহমেদ হ্যাপী, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাদেকুর রহমান, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সামিউল আলম, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাকিবুল হাসান রকি, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাখাওয়াত হোসেন এবং মালাখানার দায়িত্ব প্রাপ্ত পুলিশ উপ-পরিদর্শক যোবাইদুল হাসান ভূঁইয়া।
ধ্বংসকৃত মাদক ও আলামতের মধ্যে রয়েছে গাঁজা ৫১০ কেজি ৪৬০ গ্রাম, ইয়াবা ট্যাবলেট ১১ হাজার ৫শত ৮০টি, ফেন্সিডিল ২শত ১৫ বোতল, স্কফ সিরাজ ৩শত ৯৯ বোতল, বিদেশী মদ ১০১ বোতল, বিয়ার ৬ক্যান।
এ সময় বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ মাসুদ পারভেজ বলেন, নিস্পত্তিকৃত মামলার মাদক বা আলামত ধ্বংসের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর উর্ধ্বগতির কারণে দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ। আস্তে আস্তে জিনিসপত্রের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। এদিকে ব্যবসায়ীরা যাতে মজুদ করে বাজারে কৃত্রিম সংকট না করতে পারে সেজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাজারগুলোতে নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও ভ্রাম্যমাণ আদালত অসাধু ব্যবসায়ীদের জরিমানা করছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাজারগুলোতে চালের দাম স্থিতিশীল পর্যায়ে থাকলেও শাক-সবজি ও মসলা জাতীয় দ্রব্য সামগ্রীর দাম চড়া।
শহরের সবচেয়ে বড় বাজার আনন্দ বাজারের বিশিষ্ট চাল ব্যবসায়ী মেসার্স সুমা ট্রেডার্সের পরিচালক মোঃ নাঈম হোসেন বলেন, বাজারে চালের কোন সংকট নেই। গত ৩ মাস ধরে চালের বাজার স্থিতিশীল। অন্যান্য বছরগুলোতে জুলাই-আগষ্ট মাসে বাজারে চালের যে দাম থাকে এবছর এই সময়ে চালের দাম আগের চেয়ে কম।
তিনি বলেন, বাজারে কাটারী ভোগ চাল ৫০ কেজির বস্তা ৩১০০টাকা, কাটারী নাজির চাল ৫০ কেজির বস্তা ৩০০০টাকা, ঘি-ভোগ চাল ৫০ কেজির বস্তা ২৯০০ টাকা, বিআর-২৮ চাল ৫০ কেজির বস্তা ২৫০০টাকা, বিআর-২৯ চাল ৫০ কেজির বস্তা ২৪৫০ টাকা, মিনিকেট চাল ৫০ কেজির বস্তা ২৮০০ টাকা,পাইজাম চাল ৫০ কেজির বস্তা ৩০০০ টাকা, নাজির শাইল চাল ৫০ কেজির বস্তা ৩০০০টাকা, বোরো চাল ৫০ কেজির বস্তা ৩৫০০ টাকা ও মোটা চাল ৫০ কেজির বস্তা ১৮০০টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
একই বাজারের আরেক চাল ব্যবসায়ী হাজী শামীম ট্রেডার্সের মালিক মোঃ শামীম হোসেন বলেন, গত ২ মাস ধরে বাজারে চালের দাম বাড়েনি। তিনি বলেন, বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন ধরনের বিআর-২৮ চাল ৫০ কেজির বস্তা ২৪৫০ থেকে ২৫০০ টাকা, বিআর-২৯ চাল ৫০ কেজির বস্তা ২৩৫০ থেকে ২৪০০ টাকা, বিভিন্ন ধরনের কাটারীভোগ চাল ৫০ কেজির বস্তা ২৯০০ থেকে ৩২০০ টাকা, বিভিন্ন ধরনের মিনিকেট চাল ৫০ কেজির বস্তা ৩২০০ টাকা থেকে ৩৫৫০ টাকা, নাজিরশাল চাল ৫০ কেজির বস্তা ৩০০০টাকা, বিভিন্ন ধরনের বোরো চাল ৫০ কেজির বস্তা ৩৬০০ থেকে ৩৭০০ টাকা ও বিভিন্ন ধরনের মোটা চাল ৫০ কেজির বস্তা ১৮০০ টাকা থেকে ২১০০টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
একই বাজারের মেসার্স শরীফ ট্রেডার্সের কর্ণধার মোঃ বাহার উদ্দিন বলেন, বাজারে অন্যান্য জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও চালের দাম বাড়েনি। গত প্রায় ৩ মাস ধরে চালের দাম স্থিতিশীল।
মোঃ বাহার উদ্দিন জানান, বাজারে বিভিন্ন ধরনের কাটারী ভোগ চাল ৫০ কেজির বস্তা ৩২০০ থেকে থেকে ৩৪০০টাকা, বিভিন্ন ধরনের ঘি ভোগ চাল ৫০ কেজির বস্তা ২৯০০ থেকে থেকে ৩১০০টাকা, বিভিন্ন ধরনের পাইজাম চাল ৫০ কেজির বস্তা ৩৪০০ থেকে থেকে ৩৬০০টাকা, বিভিন্ন ধরনের নাজিরশাল চাল ৫০ কেজির বস্তা ৩০০০ থেকে থেকে ৩৪০০টাকা, বিভিন্ন ধরনের বোরো চাল ৫০ কেজির বস্তা ৩৭০০ থেকে থেকে ৩৮০০ টাকা, বিভিন্ন ধরনের বিআর-২৮ চাল ৫০ কেজির বস্তা ২৩০০ থেকে থেকে ২৮০০টাকা, বিভিন্ন ধরনের বিআর ৪৯ চাল ৫০ কেজির বস্তা ২৫০০ থেকে থেকে ২৯০০ টাকা, বিভিন্ন ধরনের মিনিকেট চাল ৫০ কেজির বস্তা ৩০০০ থেকে থেকে ৩২০০ টাকা, দেশী বাসমতি চাল ৫০ কেজির বস্তা ৩৩০০ থেকে থেকে ৩৮০০টাকা, বালাম চাল ৫০ কেজির বস্তা ২৭০০ থেকে ৩০০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
তিনি জানান, বাজারে শুকনা দেশী মরিচ কেজি ৩৭০ থেকে ৩৯০ টাকা, ভারতীয় শুকনা মরিচ প্রতি কেজি ৪২০ থেকে ৪৬০ টাকা, হলুদ প্রতিকেজি প্রকার ভেদে ১৬০ টাকা থেকে ২০০ টাকা, ধনিয়া প্রতি কেজি ১৯০ টাকা থেকে ২৪০ টাকা, এলাচি প্রতি কেজি প্রকার ভেদে ১৫০০ টাকা থেকে ২৮০০টাকা, জিরা প্রতি কেজি ১০৭০ থেকে ১১০০টাকা, চিনি প্রতি কেজি ১২৮ থেকে ১৩৫টাকা, লবণ প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পিয়াজ দেশী প্রতি কেজি ৮০টাকা, পিয়াজ ভারতয়ি ৩৮/৪০টাকা, রসুন দেশী প্রতি কেজি ১৭০/১৯০ টাকা, রসুন ভারতীয় প্রতি কেজি ১৭৫/১৮৫ টাকা, আদা প্রতি কেজি ১৪০/১৭০ টাকা, আটা প্রতি কেজি ৪০/৪৫ টাকা, প্যাকেটজাত মসল্লা হলুদ (রাঁধুনী) ৫০০ গ্রাম ২৪০ টাকা, মরিচ (রাঁধুনী) ৫০০ গ্রাম ৪১০ টাকা, ধনিয়া (রাঁধুনী) ৫০০ গ্রাম ১৭৫ টাকা, জিরা (রাঁধুনী) ৫০০ গ্রাম ১০০০ টাকা, পোলাও চাল চাষী প্রতি কেজি ১৬০ টাকা, বিভিন্ন ধরনের সয়াবিন ৫ লিটার ৮৪০/৮৬০ টাকা, মুশরির ডাল প্রতি কেজি ৯০ টাকা থেকে ১৪০ টাকা, বুট ডাল প্রতি কেজি ৮০/ ৯০ টাকা, মুগ ডাল প্রতি কেজি ১২০/১৩০ টাকা, প্যাকেটজাত গুড়া দুধ ডানো ৫০০ গ্রাম ৪২৫, গুড়া দুধ মাস্ক ৫০০ গ্রাম ৪২৫, গুড়া দুধ ডিপ্লোমা ৫০০ গ্রাম ৪২৫, গুড়া দুধ ডানো পুষ্টি ৫০০ গ্রাম ৩৭০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
সবজির বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, টমেটো প্রতি কেজি ১৮০টাকা, সীম প্রতি কেজি ১৫০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৩০/৫০টাকা, ধনিয়া পাতা প্রতি কেজি ১২০টাকা, লেবু হালি ২০/৩০ টাকা, লাউ প্রতিপিস ৫০/৭০ টাকা, করলা কেজি ৭০ টাকা, জিঙ্গা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, পটল প্রতি কেজি ৩০ টাকা, বেগুন প্রতি কেজি ৪০ টাকা, কাঁচা কলা হালি ৩০/৩৫ টাকা, মুখী প্রতি কেজি ৬০টাকা, আলু প্রতি কেজি ৪০ টাকা, দেড়শ প্রতি কেজি ৪০টাকা, পেপে প্রতি কেজি ৪০টাকা, মুলা প্রতি কেজি ৪০টাকা, ঝালি কুমড়া প্রতি পিস ৪০/৫০টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে শহরের কাজীপাড়ার খলিলুর রহমান বলেন, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে আমরা দিশেহারা। ব্যবসায়ীরা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অজহাত দেখিয়ে তাদের মনগড়া মতো দাম বাড়াচ্ছে। আগে ৫০০ টাকা দিয়ে যে জিনিস কিনতাম, সেই জিনিস কিনতে এখন ১০০০/১২০০ টাকা লাগে।
পৌর এলাকার পশ্চিম মেড্ডার গৃহিনী শামসুন্নাহার বলেন, বাজারের জিনিসপত্রে দাম বাড়ছেই। একবার বাড়লে আর কমেনা। তিনি বলেন, এভাবে দাম বাড়তে থাকলে আমরা কি করব?
পৌর এলাকার বাগানবাড়ির বাসিন্দা লোকমান হোসেন বলেন, বাজারে যেতে ভয় করে। প্রতিদিনই নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। শহরের হালদারপাড়ার বাসিন্দা শামীম হোসেন বলেন, জিনিসপত্রের দাম বাড়ার কারনে এখন আর চাহিদামতো জিনিসপত্র কিনতে পারিনা। খুবই কষ্ট হচ্ছে আমাদের মধ্যে নিম্ন আয়ের মানুষদের।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সেলিম শেখ বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যাতে স্থিতিশীল পর্যায়ে থাকে সেজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব সময় বাজারে নজরদারী করা হয়। আমরা বাজারগুলো সব সময় মনিটরিং করি। কেউ যাতে পন্য সামগ্রী মজুদ করে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তাদেরকে জেল-জরিমানা করা হচ্ছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গুলি করে ছাত্রলীগ কর্মী আশরাফুল রহমান ওরফে ইজাজ (২২) হত্যার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ ও পুত্তলিকা দাহ করা হয়েছে।
আজ ২৯ জুন শনিবার বেলা ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন নিহতদের স্বজন ও বন্ধুরা। বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন শোভন, যুবনেতা শনিবার বেলা ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন নিহতদের স্বজন ও বন্ধুরা। মোহন, ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজহার উদ্দিন মিঠু, ছাত্রলীগ নেতা সামি আহমেদ নাবিল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি জুবায়ের হোসেন শ্রাবণসহ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ ভূইয়া।
সমাবেশে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নব-নির্বাচিত সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন শোভন বলেন, উপজেলা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে একটি মহলের ইশারায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের মেধাবী ছাত্র, ছাত্রলীগ কর্মী আশরাফ রহমান ইজাজকে গুলি করে হত্যা করা হয়। গত ২১ দিন ধরে মামলার প্রধান আসামি সহ আর কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। আসামীদেরকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, নিহত আশরাফুল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কলেজপাড়ার আমিনুর রহমানের ছেলে এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের স্নাতক (সম্মান) উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিনি জেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী এবং সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থী জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন ওরফে শোভনের (আনারস প্রতীক) পক্ষের কর্মী ছিলেন।
চতুর্থ ধাপে গত ৫ জুন বুধবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই দিন ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পর সন্ধ্যায় আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকেরা আনন্দমিছিল বের করেন। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে জেলা শহরের কলেজপাড়ায় ওই মিছিলে গুলি করা হয়। এতে মিছিলে থাকা ছাত্রলীগ কর্মী আশরাফুল রহমান গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। মিছিলে থাকা ছাত্রলীগের অপর একটি পক্ষ এই গুলি চালায়।
এ ঘটনায় হত্যা মামলা করা হয়। গত ৮ জুন হত্যাকারী হাসান আল ফারাবী জয়কে নেত্রকোণা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।