চলারপথে রিপোর্ট :
মুক্তিযোদ্ধার কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগে দুই নামধারী সাংবাদিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাত ১০টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বাসুদেব ইউনিয়নের জারুইলতলা গ্রাম থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ ৮ সেপ্টেম্বর রোববার সকালে তাদের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, জেলার বিজয়নগর উপজেলার মেরাশানী গ্রামের ভূইয়া বাড়ির ফজলে এলাহী ওরফে উজ্জ্বল ভূইয়া (৫০) ও একই উপজেলার সিঙ্গারবিল গ্রামের ইয়ানুর রহমান (৩৩)। উজ্জ্বল দৈনিক প্রথম বুলেটিং এর প্রতিনিধি। উজ্জ্বলের সহযোগী হলেন ইয়ানুর। উজ্জ্বলের হাতে দৈনিক প্রথম বুলেটিং এবং নিউজ টোয়েন্টিফোর লাইভের লগো মাইক্রোফোন ছিল।
এ ঘটনায় জারুইলতলা গ্রামের বাসিন্দা ও একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও প্রতারণার মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মোহাম্মদ জহিরুলের বাবা আবু জামাল একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। গত শনিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে সদর উপজেলার বাসুদেব ইউনিয়নের জারুইলতলা গ্রামে জহিরুলের বাড়িতে যান নামধারী সাংবাদিক উজ্জ্বল ও তার সহযোগী ইয়ানুর। কিন্তু বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জামালকে বাড়িতে না পেয়ে তারা ফিরে যান। পরে নামাজ পড়ে বাড়ি ফেরার পথে দুই নামধারী সাংবাদিকের সাথে মুক্তিযোদ্ধা আবু জামালের কথা হয়। এক পর্যায়ে তারা আবু জামালের বাড়ি যান। সেখানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন আবু জামাল। এক পর্যায়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জামাল মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বিভিন্ন নথিপত্র দেখালে সেগুলোর ছবি মোবাইল ফোনে তুলেন দুই কথিত সাংবাদিক।
সাক্ষাতকার শেষে কমান্ডার সনদপত্র কোথায় জানতে চান তারা। এমন কোনো সনদ হয় না বলে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু জামাল উত্তর দেন। এক পর্যায়ে পরিবারের সদস্যদের থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা জামালকে আড়ালে নিয়ে যান উজ্জ্বল। কথিত সাংবাদিক উজ্জ্বল দেশের পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে মুক্তিযোদ্ধার কাছে ১২ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন।
চাঁদা না দিলে মুক্তিযোদ্ধার নাম ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় দিয়ে দিবে বলে ভয় দেখান উজ্জ্বল। মুক্তিযোদ্ধা এক পর্যায়ে কথিত সাংবাদিক উজ্জ্বলকে ৫ হাজার টাকা দেন। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হলে মুক্তিযোদ্ধার ছেলে মোহাম্মদ জহিরুল স্থানীয়দের সাথে নিয়ে তাদের আটক করেন। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানতে পারেন তারা ভুয়া সাংবাদিক এবং সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে তারা চাঁদাবাজি করেন।
পরে জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এ ফোন করে তারা সহায়তা চান। রাতে পুলিশ পৌঁছে দুইজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। রোববার সকাল ১১টায় মুক্তিযোদ্ধার ছেলে বাদী হয়ে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মোজাফফর হোসেন বলেন, তারা সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের নাম ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় তুলে দিবে হুমকি দিয়ে চাঁদাবাজি করেছেন। মুক্তিযোদ্ধার ছেলের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৩টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন (আনারস) প্রতীক ৯২,৫৫২ ভোট পেয়ে বে-বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন (ঘোড়া) প্রতীক পেয়েছেন ১৮ হাজার ৪১৪ ভোট।
বিজয়নগর উপজেলায় জাবেদ আহমেদ (আনারস) প্রতীক ৪৫ হাজার ১৩৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি বর্তমান চেয়ারম্যান নাছিমা মুকাই আলী (ঘোড়া) প্রতীক পেয়েছেন ৩৮ হাজার ৯৮৫ ভোট।
নবীনগর উপজেলায় মো. ফারুক আহম্মেদ (আনারস) প্রতীক ৫৮ হাজার ৩৪৭ ভোট পেয়ে বে-সরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস পেয়েছেন ২৫ হাজার ৬৮১ ভোট।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের দায়িত্বশীল একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সূত্রটি জানায়, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইনশৃংখলা বাহিনী ছিলো তৎপর। বিভিন্ন অভিযোগে ১০৭ মামলায় ৩ লাখ ৮২ হাজার ৯ শত টাকা জরিমানা ও ৩৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাবার বাড়ি থেকে স্বামীর বাড়ি ফেরার পথে তিন শিশুকন্যাসহ খালেদা আক্তার রিতু নামে এক গৃহবধূ নিখোঁজ হয়েছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার সিঙ্গারবিলে ঘটনাটি ঘটেছে।
আজ ৮ জুন শনিবার দুপুরে এ ঘটনায় নিখোঁজ গৃহবধূর বাবা আব্দুল আউয়াল ভুঁইয়া বিজয়নগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। নিখোঁজ গৃহবধূ খালেদা আক্তার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের দ্বিজয়পুর গ্রামের আতাউর রহমান ভূঁইয়ার স্ত্রী। রিতুর বাবার বাড়ি বিজয়নগর উপজেলার মিরাশানী (ভূঁইয়া বাড়ি) গ্রামে। তার তিন শিশুকন্যা হলো- তাবাসসুম আক্তার (১০), তানিশা আক্তার (৭) এবং হুমায়রা আক্তার (৫)। এর আগে ৭ জুন শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় বাবার বাড়ি থেকে স্বামীর বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হন তারা।
নিখোঁজ গৃহবধূর স্বামী আতাউর রহমান ভূঁইয়া জানান, গত রবিবার তার স্ত্রী তিন কন্যাকে নিয়ে তাদের বাড়ি থেকে বিজয়নগর উপজেলার মিরাশানী (ভূঁইয়া বাড়ি) তার বাবার বাড়ি বেড়াতে যায়। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তারা আখাউড়ায় তাদের বাড়ির উদ্দেশ্যে পরিচিত এক অটোরিকশাযোগে বিজয়নগরের সিঙ্গারবিল বাজারে আসেন। পরে এ অটোরিকশা থেকে নেমে অজ্ঞাতপরিচয় অন্য একটি অটোরিকশাতে ওঠে। পরে সন্ধ্যা হয়ে গেলেও স্ত্রী ও সন্তান বাড়িতে না পৌঁছালে তিনি তার শ্বশুরকে ফোন করে জানতে পারেন তারা সকালেই বাড়ির উদ্দেশ্যে বেরিয়েছেন। তখন আশপাশের আত্মীয়-স্বজন, হাসপাতালসহ বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ করেও তাদের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
অটোচালক সুমন বলেন, আমি তাদের বাড়ির সামনে থেকে সিঙ্গাবিল বাজার পর্যন্ত নিয়ে আসি। পরে আখাউড়া বাইপাস পর্যন্ত যাওয়ার জন্য অন্য একটি অটোরিকশায় তুলে দেই।
বিজয়নগর থানার ওসি আসাদুল ইসলাম জিডি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এক গৃহবধূ তিন সন্তানসহ নিখোঁজের ঘটনায় দুপুরে একটি জিডি করেছে তার বাবা আব্দুল আউয়াল। বিষয়টি নিয়ে আমাদের তদন্ত চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বিজয়নগর উপজেলায় বাবার হাতে এনায়েতুল (২৪) নামে এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গতকাল ১ সেপ্টেম্বর রবিবার মধ্যরাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর নিহতের বাবা জয়নাল আবেদীন (৫৫) কে আটক করেছে পুলিশ।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ইসহাক মোল্লা গণমাধ্যমকে জানান, নিহত এনায়েতুল মাদকাসক্ত ছিল। সে মাদকের টাকার জন্যে পরিবারের সবাইকে চাপ দিয়ে সংসারে অশান্তি তৈরি করতো। টাকা না পেলে চুরিও করতো। এই অবস্থায় তার বাবা তাকে বিদেশ পাঠায়। কিন্তু সেখানে গিয়েও সে থাকেনি। দেশে ফিরে আবারও নেশার টাকার জন্যে উৎপাত শুরু করে। এনিয়ে পরিবারে অশান্তি চলছিল।
রবিবার রাতে এনায়েত ঘরে নেশার টাকার জন্যে ঝগড়া করে। এসময় পিতা পুত্রের মধ্যে বাকবিতন্ডা হলে এরই একপর্যায়ে এনায়েতের মাথায় রড দিয়ে আঘাত করে। এতে গুরুতর আহত হলে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্যে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পথে রাত দুইটার দিকে মারা যায়।
বিজয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহীদুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর নিহতের পিতাকে আটক করা হয়েছে। সকালে মরদেহ জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে ময়নাতদন্তের জন্যে প্রেরণ করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর থেকে নিখোঁজ গৃহবধু খাদিজা আক্তার ময়না (২৫) ঢাকা থেকে উদ্ধার হয়েছে।
ঢাকা কাফরুল থানা পুলিশের সহযোগিতায় বিজয়নগর থানা পুলিশ ২১ ফেব্রুয়ারি বুধবার রাতে কাফরুলের একটি বাসা থেকে তাকে উদ্ধার করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিজয়নগর থানার ওসি মোঃ আসাদুল ইসলাম।
এর আগে গত ১৮ জানুয়ারি স্বামীর বাড়ি বিজয়নগরের কাঞ্চনপুর থেকে ময়না নিখোজ হয় বলে ময়নার মা থানায় অভিযোগ করেন। অভিযোগের পর পুলিশ ময়নার শশুর শাশুড়ী ও ননদকে আটক করে।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, গৃহবধূ খাজিদা আক্তার ময়নার বাবা বাড়ি একই উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ছতুরপুর গ্রামে। সে ছতুরপুর গ্রামের সেলিম মিয়া বড় মেয়ে। প্রায় ৭ বছর পূর্বে একই উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামের মো: রমজান মিয়ার ছেলে রাসেল মিয়া সৌদি প্রবাসীর সাথে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। স্বামী প্রবাসে থাকলেও ওই গৃহবধূর তাবাচ্ছুব (৫) বছরের একটি কন্যা সন্তান নিয়ে বসবাস করতো স্বামীর বাড়িতে। গত ১৯ জানুয়ারি বিকাল ৩ টায় খাদিজা আক্তার ময়না (২৫) তার শ্বশুরবাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় ।
অজ্ঞাত স্থান ময়না স্বামীর কাছে একটি বার্তা পাঠিয়ে উদ্ধারের আবেদন করে। গৃহবধূ জানায়, আমারে কিভাবে ভুলে থাকতেছো, আমাকে কি বাঁচাইবানা, আমি কোথায় আছি বলতে পারছি না। চারপাশে পাহাড় আর প্রচন্ড ঠান্ডা। আম্মা (শাশুড়ি) এবং আপা(স্বামীর ছোট বোন) জানে আমি কোথায় আছি। আমার মোবাইল পপি আপা কোথায় জানি রাখছে। তুমি পপি আপার সাথে কথা বল। এখানে অনেক ঠান্ডা। স্বামীর কাছে ইমুর মাধ্যমে খাদিজা আক্তার ময়নার পাঠানো ভয়েস বার্তায় পরে স্বামী রাসেল মিয়া প্রবাস থেকে এ ভয়েস বার্তা ময়নার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। এরপরই ময়নার মা সুমি বেগম থানায় অভিযোগ করেন। তবে এটি অপহরণ নাকী স্বেচ্ছায় চলে যাওয়া নিয়ে রহস্য রয়েছে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই গাজী রবিউল ইসলাম বলেন, তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে গৃহবধূ ময়নাকে ঢাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। সে সুস্থ আছে। তাকে আদালতে নেয়া হবে। তদন্তের স্বার্থে আর কিছু বলতে পারছি না।