চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইল উপজেলায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী মনোমুগ্ধকর লাঠি খেলা। লাঠি খেলার আয়োজনকে ঘিরে স্থানীয়দের মাঝে ছিল উৎসবের আমেজ। আজ ১২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়েনের তেরোকান্দা গ্রামের একটি বাড়িতে অনুষ্ঠিত হয় ঐতিহ্যবাহী এই প্রাচীন খেলা।
খেলায় ঢাক, ঢোল আর কাঁসার ঘন্টার শব্দে চারপাশে উৎসব মুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। বাদ্যের তালে তালে নেচে নেচে লাঠি খেলে অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করে তরুণ ও বর্ষিয়ান লাঠিয়ালরা। তারপরই চলে লাঠির কসরত। প্রতিপক্ষের লাঠির আঘাত থেকে নিজেকে রক্ষা ও তাকে আঘাত করতে ঝাঁপিয়ে পড়েন লাঠিয়ালরা।
এসব দৃশ্য দেখে আগত দর্শকরাও করতালির মাধ্যমে উৎসাহ যোগায় খেলোয়াড়দের। কালক্রমে হারিয়ে যাওয়া লাঠি খেলা দেখতে ভিড় করে নানা বয়সের নারী-পুরুষ। গ্রামীন এ ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলাকে টিকিয়ে রাখতে দরকার প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা এমনটাই মনে করেন দর্শনার্থীরা। বিকেল থেকে সন্ধ্যা অবধি চলা লাঠিখেলায় উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কয়েকটি লাঠিয়াল বাহিনী অংশগ্রহণ করে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচনে পাঁচ প্রার্থীর তিনজনই জামানত হারাচ্ছেন।
৫ নভেম্বর রবিবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপ-নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম।
তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগের কম পেলে প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। উপ-নির্বাচনেও যারা এক ভাগের কম ভোট পেয়েছেন তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপ-নির্বাচনে প্রাপ্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগ ১৩ হাজার ৫৪৪ ভোটের বেশি। তাই জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুল হামিদ লাঙল প্রতীকে ৩ হাজার ১৮৬, জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম জুয়েল গোলাপ ফুল প্রতীকে ৫৫১ এবং ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আব্দুর রাজ্জাক আম প্রতীকে ৭৩৯ ভোট পাওয়ায় তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া–২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে ৬৬ হাজার ৩১৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক মৃধা কলারছড়ি প্রতীকে পেয়েছেন ৩৭ হাজার ৫৭৭ ভোট।
অনলাইন ডেস্ক :
লিওনেল মেসি, লাউতারো মার্তিনেজের মতো তারকারা খেলোয়ার ছাড়াই আর্জেন্টিনাকে জয় উপহার দিলেন থিয়াগো আলমাদা। ডি-বক্সের বাইরে থেকে গতিময় শটে খুঁজে নিলেন জালের ঠিকানা। তাতে ২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিতের পথে এক পা দিয়ে রাখল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। আজ ২২ মার্চ শনিবার লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে উরুগুয়ের মাঠে ১-০ গোলে জিতেছে আর্জেন্টিনা। নিয়মানুযায়ী, কনমেবল থেকে আসন্ন ফিফা বিশ্বকাপে সরাসরি সুযোগ পাবে ৬ দল। পয়েন্ট টেবিলের সাত নম্বর দলের তুলনায় ১৫ পয়েন্ট এগিয়ে থাকায় পরের পাঁচ ম্যাচ থেকে মাত্র ১ পয়েন্ট পেলেই আর্জেন্টিনা নিশ্চিত করবে ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিট।
এদিন ৫৫ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের জন্য ছয়টি শট নেয় উরুগুয়ে, এর দুটি ছিল লক্ষ্যে। অন্য দিকে আর্জেন্টিনার ১২ শটের চারটি ছিল লক্ষ্যে। তবে দলকে সাফল্যের মুখ দেখতে অপেক্ষা করতে হয় ৬৮তম মিনিট পর্যন্ত। জুলিয়ান আলভারেজের কাছ থেকে বল পেয়ে জাল খুঁজে নেন আলমাদা। জাতীয় দলের হয়ে সাত ম্যাচ খেলে নিজের তৃতীয় গোল করলেন লিঁওর এ মিডফিল্ডার।
অবশ্য ঘরের মাঠ সেন্টেনারিও স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনাকে শুরু থেকে চেপে ধরে উরুগুয়ে। তবে গোলের জন্য প্রথম শট নেয় আর্জেন্টিনাই। ১৯তম মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে চেষ্টা করলেও শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি লিয়ান্দ্রো পারেদেস। আট মিনিট পর এনজো ফার্নান্দেজের দুর্বল বাঁকানো শট গ্লাভসে নেন উরুগুয়ে গোলরক্ষক সার্জিও রোচেত। দুই দল মিলিয়ে লক্ষ্যে এটাই প্রথম শট।
সফরকারীদের জমাটরক্ষণে একের পর এক আক্রমণ ব্যর্থ হয় উরুগুয়ে। ৩৩তম মিনিটে দূরপাল্লার শটে চেষ্টা করেন উরুগুয়ে মিডফিল্ডার জর্জিয়ান দে আরাকায়েস্তা। সতর্ক এমিলিয়ানো মার্তিনেজ ঝাঁপিয়ে গ্লাভসে নেন বল। ছয় মিনিট পর দুরূহ কোণ থেকে জুলিয়ানো সিমেওনের দারুণ শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন রোচেত।
ম্যাচের প্রথম কর্নারে হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি মেসির অনুপস্থিতিতে এই ম্যাচে আর্জেন্টিনা দলকে নেতৃত্ব দেওয়া নিকোলাস ওতামেন্দি। ৪৩তম মিনিটে আলমাদার শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান গোলরক্ষক রোচেত। ফিরতি বলে ফার্নান্দেজের শট স্লাইড করে ব্যর্থ করে দেন হোসে মারিয়ে হিমেনেস। নষ্ট হয় প্রথমার্ধের সবচেয়ে ভালো সুযোগ। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আক্রমণে সুযোগ পায় আর্জেন্টিনা। ৪৮তম মিনিটে আলমাদার চমৎকার শট কোনোমতে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন রোচেত। তিন মিনিট পর ৩৫ গজ দূর থেকে ফেদে ভালভের্দের শট যায় মার্তিনেজের গ্লাভসে। ৬২তম মিনিটে জিয়ালিয়ানো সিমিওনের শট পা দিয়ে ঠেকিয়ে আর্জেন্টিনার গোলের অপেক্ষা বাড়ান রোচেত।
পরের মিনিটে জুলিয়ান আলভারেজের দুর্দান্ত রক্ষণ চেরা পাসে আলমাদা একটু বাড়তি সময় নেওয়ার সুযোগ কাজে লাগিয়ে বেরিয়ে এসে ক্লিয়ার করেন উরুগুয়ে গোলরক্ষক। কিন্তু ছয় মিনিট পর আর দলকে রক্ষা করতে পারেননি রোচেত। আলভারেজের কাটব্যাকে বল পেয়ে ডি বক্সের বাইরে থেকে তীব্র গতির শটে জাল খুঁজে নেন আলমাদা। ঝাঁপিয়েও বলের নাগাল পাননি উরুগুয়ে গোলরক্ষক।
বাকি সময়ে গোলের পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করতে পারেনি কেউই। যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে অহেতুক ফাউল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন আর্জেন্টিনা ফরোয়ার্ড নিকো গঞ্জালেস। শেষ মুহূর্তে ১০ জনের দল নিয়ে পূর্ণ ৩ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে সফরকারীরা। অথচ বিশ্বকাপ বাছাইয়ের আগের দেখায় মেসিদের নিয়েই ঘরের মাঠে উরুগুয়ের কাছে ২-০ গোলে হেরেছিল আর্জেন্টিনা। সে দিক থেকে এটা প্রতিশোধেরও ম্যাচও ছিল। যেটা খুব ভালোভাবেই আদায় করলেন স্ক্যালোনির শিষ্যরা।
এ জয়ে শীর্ষে থাকা আর্জেন্টিনা দুইয়ে থাকা ইকুয়েডরের সঙ্গে ৬ আর সাতে থাকা বলিভিয়ার সঙ্গে পয়েন্ট ব্যবধান বেড়ে দাঁড়ালো ১৫। আগামী বুধবার ঘরের মাঠে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলের বিপক্ষে মাঠে নামবে আর্জেন্টিনা। সে ম্যাচে ১ পয়েন্ট পেলেই নিশ্চিত হয়ে যাবে বিশ্বকাপের পরের আসরে তাদের খেলা। অথবা বলিভিয়া পয়েন্ট খোয়ালেই নিশ্চিত হয়ে যাবে আলবিসেলেস্তেদের টিকিট।
লাতিন আমেরিকা অঞ্চলে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ১৩ ম্যাচে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে ১০ দলের মধ্যে শীর্ষে অবস্থান করছে আলবিসেলেস্তেরা। ২২ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে উঠে এসেছে একুয়েডর। ২১ পয়েন্ট নিয়ে তিনে আছে ব্রাজিল। ২০ পয়েন্ট নিয়ে পরের দুটি স্থানে যথাক্রমে উরুগুয়ে ও প্যারাগুয়ে। এদিকে টানা তিন হারে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে ছয়ে নেমে গেছে কলম্বিয়া। সাতে থাকা বলিভিয়ার ১৩ পয়েন্ট।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের ওবায়দুল্লাহ সড়কের পাশে আমিনপাড়া গ্রামে দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দি রয়েছে।
গতকাল সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে কয়েকজন প্রভাবশালী মিলে শাহবাজপুর আমিনপাড়া এলাকায় পানি নিস্কাশনের ড্রেইনসহ বিশাল এরিয়া নিয়ে কৃষিজমিতে মাঠি ভরাট করে হাউজিং প্রজেক্ট তৈরী করেছে। এই প্রজেক্টের পাশের সড়কের নীচে পানি নিস্কাশনের ড্রেন রয়েছে। এই ড্রেনের সামনেও মাটি ভরাট করা হয়েছে। তাই কোন কাজে আসছেনা ড্রেন। বৃষ্টির পানি জমে এলাকার রাস্তাঘাট, বাড়িঘর সহ কৃষি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। অত্যন্ত দুর্দশায় ভুগছেন আমিনপাড়ার লোকজন।
স্থানীয় ভুক্তভোগী হাজি শরিফ চৌধুরী, আলমগীর চৌধুরী ও শহিদ মিয়া চৌধুরী বলেন, পানি নিস্কাশনের ড্রেইনসহ জমিগুলোতে মাঠি ভরাট করার কারণে আমিনপাড়া ও যাদবপুর এলাকার বাড়িঘরসহ রাস্তায় পানি উঠে গেছে। এই পানি গুলো সরানোর ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলে কয়েক ধরে শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে আছে। এছাড়াও প্রায় শতবিঘা জমি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় আমরা কোন ফসল করতে পারছিনা। এ সমস্যায় তিনবছর ধরে ভুগছি। বিশেষ করে শিশুরা পানিতে ডুবে যাওয়ার আতংক রয়েছে।এছাড়া স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা স্কুল কলেজের যাইতে পারছে না।
ভুক্তভোগীরা বলেন, হাজি কুদ্দুছ, সিরাজ মিয়া, মামুন মিয়া ও গরু ফার্মের মালিক সিরাজ মিয়া এই প্রজেক্ট করে মানুষকে দুর্ভোগে ফেলেছেন।
এ বিষয়ে শাহবাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা চৌধুরী বাদল বলেন, আমিনপাড়া ও যাদবপুর এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে খুবই কষ্টে দিনযাপন করছেন। আগে কখনো এখানে জলাবদ্ধতা ছিল না। কয়েক বছর আগে কয়েকজন মিলে জমিগুলোতে প্লট আকারে বিক্রি করার জন্য মাটি ভরাট করে। এজন্য এই সমস্য হয়েছে। পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা না রেখে মাটি ভরাট করার জন্যই এ সমস্যায় কয়েক বছর ধরে ভুগছেন এলাকাবাসি। এছাড়াও পানি নিস্কাসনের নালাটি বন্দ হওয়ার জন্য এই সমস্য হয়েছে। এ বিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সরনাপন্ন হয়েছি।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মেজবা উল আলম ভূঁইয়া জানান, আমি বিষয়টি জেনেছি এর সমাধানের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া জন্য বলা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই তিতাস নদীতে ড্রেজারে কাটছে মাটি। সেই মাটি যাচ্ছে এক কিলোমিটার দূরে এশিয়া নামক ইটভাটায়। ভাটায় ব্যবহারের পরও ওই মাটি চড়া দামে অন্যত্র বিক্রি করছে একটি সিন্ডিকেট। ওদিকে স্বল্প প্রস্থের নদীর গভীরতা বাড়তে থাকায় দু’পাড়ের শতশত একর ফসলি জমি এখন হুমকির মুখে পড়েছে।
সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের চানপুর এলাকার নদী সংলগ্ন ফসলি মাঠে এমন হরিলুট করছে মাটি খেকোঁ চক্র। নদী ও মাটি খেকোঁ প্রভাশালী সিন্ডিকেটের কাছে অসহায় সেখানকার কৃষকরা। ভয়ে মুখ খোলার সাহসও করছেন না তারা।
সরজমিন অনুসন্ধান ও ভুক্তভোগী কৃষকরা জানায়, ধর্মতীর্থ এলাকার কৃষকরা বারবার নদী, ফসলি জমি ও মাটি খেঁকো একটি চক্রের শিকার হচ্ছেন। ওই চক্রটির কাজ হচ্ছে ইটভাটায় মাটি বিক্রির বাণিজ্য করা। এই লক্ষে তারা ধর্মতীর্থ চানপুর সহ অত্র এলাকার হাওরের ফসলি জমির মালিকদের টার্গেট করে। সহজ সরল কৃষকদের ফুসলিয়ে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ফসলি জমি ও গোচারণ ভূমির মাটি ক্রয় করে আসছে।
একটি জমি ক্রয় করে আশপাশের জমির মালিকদের বেকায়দায় ফেলে মাটি বিক্রি করতে বাধ্য করে ওই চক্রটি। হাওরের শতশত একর ফসলি জমি এখন চাষাবাদের অযোগ্য হয়ে পড়ে আছে। ফসলি জমির পর এখন তারা নদীর দিকে নজর দিয়েছেন। চানপুর মৌজায় তিতাস নদীতে গত ১৫ দিন ধরে ড্রেজার দিয়ে মাটি কেটে এক কিলোমিটার দূরে সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক সড়কের পাশে এশিয়া নামক ইটভাটায় নিচ্ছেন। সেখান থেকে ট্রাকে করে বিভিন্ন ইটভাটায় মাটি বিক্রি করছেন। ওদিকে ড্রেজারে লাগাতার মাটি উত্তোলন করায় নদীর গভীরতা অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এতে করে নদীর দু’পাড়ে শতশত একর ফসলি জমি এখন ভেঙ্গে নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। কৃষকদের আর্তনাদ ও প্রতিবাদ কোন আমলে নিচ্ছেন না প্রভাবশালী মাটি খেঁকোরা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে দেখা যায় নদীর মাঝখানে বিকট শব্দে চলছে ড্রেজার। প্রায় ৮-১২ ইঞ্চি প্রস্থের পাইপ দিয়ে এক কিলোমিটার দূরে মাটি যাচ্ছে। ড্রেজারের পরিদর্শক নুর নবী দাঁড়িয়ে আছেন। গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়েই ড্রেজারের কাছ থেকে দ্রুত সটকে পড়ার চেষ্টা করেন নুরনবী।
ড্রেজার চালক লাখাই থানার মো. ইসমাঈল মিয়া (৪০) নদীর মাটি ইটভাটায় যাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ঠিকাদার মফিজ মিয়া, হযরত আলী ও সাইজ উদ্দিন। আমরা শ্রমিক। ৪ জনের মধ্যে আমিসহ দু’জনের মাসিক বেতন ৪০ হাজার টাকা। অপর দু’জনের মাসিক বেতন ৩০ হাজার টাকা। অনুমতি বা বৈধ কাগজপত্র আছে কিনা আমরা জানি না।
ড্রেজার চালিয়ে নদীতে মাটি কাটাই আমাদের কাজ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সেখানকার একাধিক কৃষক সামনে পেছনে তাকিয়ে বলেন, তারা হাওরের ফসলি জমি খাইছে। এখন মাটি কেটে যেভাবে গভীর করছে নদীর পাড়ের ফসলি জমি গুলো ভেঙ্গে নদীতে পড়ে যাবে। আমরা শেষ। স্যার পারলে জমি গুলো রক্ষা করে আমাদের বাঁচান। আমাদের নাম লিখলে তারা মেরে ফেলবে। ঠিকাদার মফিজ মিয়া নদীর মাটি ইটভাটায় বিক্রির কথা স্বীকার করে বলেন, এশিয়া ইটভাটায় মাটি বিক্রি করছি। অনুমতির কথা দূর্গাচরণ দাদা বলতে পারবে। তিনিই কাজটি করছেন। আমরা শুধু দেখা শুনা করি।
দূর্গাচরণ দাস ও মাটি বিক্রির কথা স্বীকার করে বলেন, ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে নদী খননের অনুমতি এনেছি। সেখানে মাটি কাটার কথা বলা আছে। তবে ইটভাটায় বিক্রির কথা বলা নেই। এটি উন্নয়ন প্রকল্প। মাটি বিক্রি না করলে রাখব কোথায়? ফসলি জমির ক্ষতির জন্য আমি দায়বদ্ধ।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবা উল আলম ভূঁইয়া বলেন, দূর্গাচরণ দাস অনুমতির কোন কাগজ আমাকে দেখাতে পারেননি। অনুমতি ছাড়া উনি যা করছেন, তা করতে পারেন না। আমি উনাকে ড্রেজারে নদীতে মাটি কাটা বন্ধ রাখতে বলেছি। কথা না শুনলে আইনগত ব্যবস্থা নিব।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইল অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি ব্যাচ-৯৫ এর উদ্যোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো: শের আলম মিয়াকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। মো: শের আলম সরাইল অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি ৯৫ ব্যাচের ছাত্র হিসেবে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় তাঁকে ৯৫ ব্যাচের পক্ষ থেকে এ সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
অন্নদা এসএসসি ব্যাচ ৯৫ এর আহবায়ক মো: রফিক মিয়ার সভাপতিত্বে আজ ২৯ জুন শনিবার বিকালে সরাইল উপজেলা পরিষদের নবনির্মিত অডিটোরিয়ামে উক্ত সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো: বিল্লাল মিয়া।
বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা এডভোকেট আশরাফ উদ্দিন মন্তু, জেলা পরিষদ সদস্য পায়েল হোসেন মৃধা, সরাইল সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার, সরাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ আলী ও সরাইল রিপোর্টার ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মো: তাসলিম উদ্দিন।
সরাইল অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি ব্যাচ-৯৫ এর প্রাক্তন ছাত্র, একই বিদ্যালয়ের অন্যান্য ব্যাচের প্রাক্তন ছাত্র ও অন্যান্য শ্রেণি পেশার লোকজন উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। পরে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।