চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা মিলনায়তনে বসুন্ধরা গ্রুপের অর্থায়নে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন ৭৩তম সুদ ও সার্ভিস চার্জ মুক্ত ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। সর্ব সাধারনের জীবন-যাত্রার মান স্বাভাবিক রাখতে বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন ঋণ বিতরণ করে যাচ্ছে।
আজ ২৪ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের ঋণ বিতরণের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের উপদেষ্টা ও ইষ্ট ওয়েষ্ট মিডিয়া গ্রুপের প্রকাশক ময়নাল হোসেন চৌধুরী, বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এম নাসিমুল হাই এফসিএস।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের ডিজিএম মাইমূন কবির, বসুন্ধরা শুভসংঘের পরিচালক জাকারিয়া জামান, মাইটিভি ও দৈনিক ইত্তেফাক প্রতিকার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা প্রতিনিধি এম এ আওয়াল, বাঞ্ছারামপুর সরকারি কলেজের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. চাঁন মিয়া সরকার, বসুন্ধরা ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপক মো. মোশাররফ হোসেন, সিনিয়র অফিসার আমির হোসেন আনোয়ার, জুনিয়র অফিসার শাহজাহান, মোহাম্মদ বাছির প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে ঋণ বিতরণের পূর্বে এম নাসিমুল হাই এফসিএস বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান সাহেব অসহায় অস্বচ্ছল মানুষদের নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য এই প্রকল্প হাতে নিয়েছিলেন ২০০৫ সালে। প্রকল্প শুরুর হওয়ার পর থেকেই বসুন্ধরা গ্রুপ ধারাবাহিকভাবে মানুষের কল্যাণে সুদ ও সার্ভিস চার্জ মুক্ত ঋণ বিতরণ করছে।
নদী এলাকা বাঞ্ছারামপুরের মানুষ গুলো ঋণ গ্রহণ করে, যেভাবে বিনিয়োগ করছে তারা বেশিদিন আর অস্বচ্ছল থাকবে না। তাদের স্বচ্ছল করে তোলাই গ্রুপের একমাত্র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
অনুষ্ঠানে ঋণ বিতরণের পূর্বে ময়নাল হোসেন চৌধুরীর বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপ সুদ ও সার্ভিস চার্জমুক্ত ঋণ বিতরণসহ গরীব অসহায় লোকদের মাঝে ওষুধসহ স্বাস্থ্য সেবা বিনামূল্যে প্রদান করে থাকে। গরীব ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে মাসিক উপবৃত্তি প্রদান করছে। যাতে অর্থের অভাবে কোনো শিক্ষার্থী ঝরে না যায় এবং উচ্চ শিক্ষা অর্জন করতে পারে। গরীব মেয়েদের মাঝে প্রশিক্ষণসহ সেলাই মেশিন বিতরণ করে।
বসুন্ধরা গ্রুপ এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে যাতে করে তৃণমূল মানুষকে সামনে এগিয়ে নিয়ে আসতে পারে। বসুন্ধরা গ্রুপ চাচ্ছে গ্রামের অসহায় ও হতদরিদ্র মানুষ গুলোর অর্থনীতির চিত্র পাল্টে দিতে।
তিনি বলেন, বসুন্ধরা ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রদত্ত ঋণের টাকা কোনো প্রকার অবৈধ কাজে বিনিয়োগ করা যাবে না। বসুন্ধরা গ্রুপ দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করে। দেশের অসহায় ও হতদরিদ্রদের মাঝে বিভিন্ন ক্লান্তিকালে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় বসুন্ধরা গ্রুপ।
দেশে মহামারি, বন্যাসহ অস্থিতিশীল পরিবেশে বসুন্ধরা সরাসরি আর্থিক সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় সারা বাংলার বিভিন্ন এলাকার হতদরিদ্র ও ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের মাঝে।
আজ ৪৮১ জন উপকারভোগীর মাঝে ৭৮ লাখ ৫ হাজার টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে প্রথমবারে ৫৬ জনকে ১৫ হাজার টাক করে ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা, দ্বিতীয়বারে ৩০৭জনকে ১৫ হাজার টাকা করে ৪৬ লাখ ৫ হাজার এবং তৃতীয়বারে ১১৮ জনকে ২০ হাজার টাকা করে ২৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা ঋণ প্রদান করা হয়। এই ঋণ শুধুমাত্র নারীদের মাঝে বিতরণ করা হয় যা দিয়ে হাঁস-মুরগী, গরু-ছাগল এবং শাক-সবজি চাষসহ ৩২ প্রকার কাজে মহিলারা এই ঋণের অর্থ বিনিয়োগ করে খুবই উপকার পাচ্ছে। ২০০৫ সাল থেকে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান এর সরাসরি তত্ত্বাধানে নিয়মিত ঋণ দিয়ে যাচ্ছে। এই ঋণের পরিধি প্রথম দিকে শুধু বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সীমাবদ্ধ থাকলেও বর্তমানে তা পাশ্ববর্তী উপজেলা হোমনা ও নবীনগরে বিস্তার লাভ করেছে।
মিরপুর গ্রামের রোহেলা বেগম (৩০) বলেন, ‘আমার স্বামী নাই। বসুন্ধরার টেহা নিয়া হাঁস-মুরগি পাইলা অনেক লাভবান হইছি। এখন খাওয়া দাওয়ার কোন সমস্যা নাই। আল্লাহ কাছে দোয়া করি বসুন্ধরারা যেন ভালো থাকে।’
চলারপথে রিপোর্ট :
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বিএনপির সহনশীলতায় বিশ্বাস করে, শান্তিপ্রিয় বসবাসে বিশ্বাস করে। বাঞ্ছারামপুর বিএনপির নৈরাজ্য এবং লুটপাটের কোন ইতিহাস নেই। অতীতে ফ্যাসিস্ট সরকার নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে তাদের বিচার অবশ্যই বাংলার মাটিতে হবে। আমি প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে বলবো ছাত্রদল নেতা নয়ন হত্যার দোসরদের অবশ্যই বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। বাঞ্ছারামপুরের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের কখনোই ঠাঁই হবে না। ইতিমধ্যে ছাত্র জনতা অপরাধ ও নৈরাজ্যকারীদের প্রতিহত করেছে। বাঞ্ছারামপুরের মাটিতে বিএনপি ঐক্যবদ্ধ আছে। নৈরাজ্যকারীরা আবারো বাঞ্ছারামপুরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে তার দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিতে প্রস্তুত আছে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুরে শেখ হাসিনাসহ তার দোসরদের বিচারের দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশ।
আজ ৭ সেপ্টেম্বর শনিবার দুপুরে বাঞ্ছারামপুর উপজেলার কড়িকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়র মাঠে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা বিএনপির সদস্য আব্দুল্লাহ আল মহসিনের সঞ্চালনায় ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক লিয়াকত আলী ফরিদের সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন, বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব একেএম ভিপি মুসা, উপজেলা যুবদলের আহবায়ক হারুনুর রশিদ, উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শুকরি সেলিম, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, পৌর যুবদলের সদস্য সচিব ফয়সাল বিন ইউসুফ সামী, সাবেক ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম, আব্দুল করিম চেয়ারম্যান, আব্দুল আইয়ুম, শাখাওয়াত হোসেন, দেলোয়ার হোসেন সবুজ, আব্দুল মতিন, সেলিম আখতার, রফিকুল ইসলাম সেন্টু, জাহাঙ্গীর চেয়ারম্যান, আব্দুল করিম, মোঃ মুজিবুর রহমান প্রমুখ।
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বাধীনতা কাপ মহিলা ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টের পুরস্কার বিতরণ সোমবার দুপুরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। গভ. মডেল গার্লস উচ্চ বিদ্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে খেলো বাংলাদেশে স্পোর্টস সোসাইটি ও ভারত-বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মৈত্রী পরিষদ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। খেলো বাংলাদেশে স্পোর্টস সোসাইটি’র প্রধান উপদেষ্টা আ. ফ. ম কাউসার এমরানের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব জাবেদ রহিম বিজন। বিশেষ অতিথি ছিলেন, গভ. মডেল গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষক পারভীন আক্তার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি দীপক চৌধুরী বাপ্পী, সহ-সভাপতি বিশ্বজিৎ পাল বাবু, প্রেসক্লাবের সাবেক আইসিটি সম্পাদক মুজিবুর রহমান খান, ভারত-বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মৈত্রী পরিষদ এর সভাপতি করবী চক্রবর্তী, সাধারন সম্পাদক সঞ্জয় দাস। সুষ্মিতা সাহার সঞ্চালনায় এতে স্বাগত বক্তব্য দেন খেলো বাংলাদেশে স্পোর্টস সোসাইটির সাধারন সম্পাদক শিশির সিকদার।
ব্যাডমিন্টন খেলায় এককে রূপালী চ্যাম্পিয়ন, অনিতা রানার আপ হন। দ্বৈতে রূপালী ও নন্দিনি চ্যাম্পিয়ন এবং জান্নাত ও লিটা রানার আপ হন। এককে ম্যান অব দ্যা ম্যাচ রূপালী ও দ্বৈতে জান্নাত। অতিথিরা খেলোয়ারড়দের হাতে নগদ টাকা ও ক্রেস্ট তুলে দেন।
এ সময় বক্তারা বলেন, ‘খেলো স্পোর্টস সোসাইটি নারীদের নিয়ে ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন খেলার মতো যেসব আয়োজন করছে সত্যিই প্রশংসনীয়। নারীদেরকে এগিয়ে নিতে হলে আমাদেরকে সুযোগ করে দিতে হবে। নারীরা এখন সমানতালে এগিয়ে চলছে’।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুরে ফেনসিডিলসহ একজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বাঞ্ছারামপুর উপজেলার কালিকাপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ফেনসিডিলসহ তাকে গ্রেফতার করা হয়
গ্রেফতার ছানাউল্লাহ (৪৫) জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মীরবাড়ী (কালিকাপুর) এলাকার বাসিন্দা।
আজ ২৮ জুন শুক্রবার দুপুরে র্যাব-৯, সিলেট ক্যাম্পের মিডিয়া অফিসার সহকারী পুলিশ সুপার মো. মশিহুর রহমান সোহেলের স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে উল্লেখ হয়, বৃহস্পতিবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার কালিকাপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে কালিকাপুর এলাকার ছানাউল্লাহর বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার বসতঘর তল্লাশি করে ৬৮ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়। সে এলাকার একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে বাঞ্ছারামপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
দাফন সম্পন্ন
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের লক্ষীমুড়া গ্রামের নিহত হারুন মিয়ার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। রোববার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় মনিপুর বন্দরবাজার বালুর মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় স্থানীয় হারুন মিয়ার আত্মীয় স্বজনসহ সহস্রাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করে। এর আগে শনিবার (১০ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে হারুন মিয়া নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরদিন দুপুরে ময়নাতদন্তের পর হারুন মিয়ার মরদেহে এসে পৌঁছায় তার নিজ এলাকায়। মরদেহ পৌঁছার পর থেকেই স্থানীদের ভিড় বাড়ে তার বাড়িতে। এরপর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। জানাজায় উপস্থিত ছিলেন, বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাজু আহমেদ, পত্তন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, আওয়ামীলীগ নেতা হৃদয় আহমেদ জালাল, সাবেক মেম্বার সেলিম মিয়া, হোসেন মিয়া, মাওলানা সিরাজ আকরামসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা। নিহত হারুন মিয়ার ভাতিজা সোহেল বলেন, দুধ মিয়া সরাসরি করিম মিয়ার পক্ষে নিয়েছে। যার কারণে আমার চাচা হারুন মিয়া হত্যার শিকার হয়েছে। আমার চাচার হত্যার সাথে দুধ মিয়া জড়িত। দুধ মিয়াসহ যারা আমার চাচাকে হত্যা করেছে তাদের ফাঁসির দাবি জানাই।
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ জানান, শান্তিপূর্ণ ভাবে হারুন মিয়ার জানাযা সম্পন্ন হয়েছে। এলাকায় স্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অভিযুক্ত আসামীদের দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে তিনি জানান।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলামকে ২১ মাস আগে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে করা এক মামলায় রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। আজ ২১ আগস্ট বুধবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চতুর্থ আদালতের বিচারক সাদেকুর রহমান তাঁর ৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ক্যাপ্টেন (অব.) তাজুল ইসলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। তিনি ২০০৮ সাল থেকে টানা চার মেয়াদে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। এর আগে তিনি ১৯৯৬ সালে একই আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০৯ সালের শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রিসভার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি। একই সঙ্গে তিনি দলটির মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদকও ছিলেন। পরে কমিটি থেকে বাদ পড়েন। গতকাল ২০ আগস্ট মঙ্গলবার রাতে তাজুল ইসলামকে রাজধানীর বনশ্রী এলাকা থেকে আটক করে পুলিশ।
পুলিশ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০২২ সালের ১৯ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুরে মিছিল বের করাকে কেন্দ্র করে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। ওই সংঘর্ষ চলাকালে উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সহ-সভাপতি রফিকুল পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। ওই দিন সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি।
এ ঘটনায় ২০২২ সালের ২০ নভেম্বর বাঞ্ছারামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আফজাল হোসেন বাদী হয়ে ৩০২ ধারাসহ (হত্যা) বিভিন্ন ধারায় বিএনপির ১৭ জন নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১০০ থেকে ১২০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ওই মামলার এজাহারে সাবেক সংসদ সদস্য তাজুলের নাম নেই, তবে এই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ দুপুরে রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ।
জানতে চাইলে জেলা ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সহিদুল ইসলাম বলেন, ছাত্রদল নেতা নিহত হওয়ার ঘটনায় পেছন থেকে ইন্ধনদাতা হিসেবে তাজুল ইসলামের জড়িত থাকার বিষয়ে তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। এ কারণে অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে তাঁকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
ওসি সহিদুল ইসলাম বলেন, ওই মামলায় জেলা গোয়েন্দা শাখার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল আহমেদ ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। আদালতে ৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। এর আগে একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে তিনি ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ পুলিশ কর্মকর্তারা তাঁকে ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে আসেন।
সরেজমিন দেখা গেছে, আজ দুপুরে তাজুল ইসলামকে পুলিশের বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট পরিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চতুর্থ আদালতে তোলা হয়। এ সময় আদালতের ভেতর বিএনপির আইনজীবীরা ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদনের জন্য হইচই করেন। আওয়ামী লীগের চারজন আইনজীবী সেখানে উপস্থিত হলেও পরিস্থিতি অনুকুলে না থাকায় কোনো কথা বলেননি। একপর্যায়ে তাঁরা এজলাস ত্যাগ করে চলে যান। তিনটায় আদালতের রায়ের পর প্রিজন ভ্যানে তুলে পুলিশ তাঁকে আদালত থেকে নিয়ে যায়। এ সময় বিএনপির আইনজীবীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন।
কয়েকজন আইনজীবী বলেন, আদালত প্রথমে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আইনজীবীদের হইচইয়ের কারণে পরে ৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি কামরুজ্জামান মামুন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারেকুল ইসলাম খান ও জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি আইনজীবী আবদুর রহিম বলেন, ছাত্রদল নেতা রফিকুল হত্যা মামলায় তাজুল ইসলামের ইন্ধন রয়েছে। সে সময় থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ গ্রহণ করেনি। আদালতে পুলিশসহ ৬০ জনের বেশি আসামি করে মামলা দিলেও তা খারিজ হয়ে যায়।
এদিকে তাজুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের খবরে আজ দুপুরে বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় আনন্দমিছিল করেছে উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। দুপুরে উপজেলার মুসা মার্কেট থেকে কেন্দ্রীয় কৃষক দলের নেতাকর্মীরা আনন্দমিছিল বের করে উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করেন।
এতে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান, উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল মহসিন, সদস্য সাখাওয়াত হোসেন, আবদুল করিম, দেলোয়ার হোসেন, আবদুল করিম, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক হারুন অর রশিদ প্রমুখ।