অবৈধ পথে ভারতে পালাতে গিয়ে জহিরুল ইসলাম আটক

কসবা, 24 September 2024, 86 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
কসবায় সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে পালানোর সময় জহিরুল ইসলাম (৪৫) নামে আটক করেছে কাজিয়াতলি বিওপি ক্যাম্পের বিজিবি সদস্যরা। ২৩ সেপ্টেম্বর সোমবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার গোপিনাথপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী গ্রাম সুতারমুড়া থেকে তাকে আটক করা হয়েছে। আটককৃত জহিরুল কুমিল্লা সদর উপজেলার ধর্মপুর এলাকার মৃত আব্দুল বারেকের ছেলে। পরে ওই রাতেই কুমিল্লা কতোয়ালী মডেল থানা পুলিশের নিকট তাকে সোপর্দ করা হয়েছে।

সুলতানপুর ব্যাটালিয়ন (৬০ বিজিবি) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান সোমবার রাতে কসবা উপজেলার গোপিনাথপুর ইউনিয়নের কাজিয়াতলি বিওপি’র টহল দল অবৈধ পথে ভারতে পালানোর সময় জহিরুল ইসলামকে আটক করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাসে সে কাজিয়াতলি সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পথে ভারতে পালানোর চেষ্টার কথা স্বীকার করে। তার নাম পরিচয় জানতে চাইলে সে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দেয়। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সে কুমিল্লা সদর উপজেলার ধর্মপুর এলাকার মৃত আব্দুল বারেকের ছেলে ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত কুমিল্লা সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম টুটুলের চাচাতো ভাই। চেয়ারম্যানের ভাই হিসেবে সে অনেক অপকর্মে জড়িত ছিলো। সে কুমিল্লার চিহ্নিত একজন সন্ত্রাসী। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্রদের দমন-পীড়নে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। তার বিরুদ্ধে কুমিল্লা কতোয়ালী মডেল থানায় ৪টি মামলা রয়েছে।

Leave a Reply

নবীনগরে অগ্নিকান্ডে ১২ দোকান ভস্মিভূত

চলারপথে রিপোর্ট : নবীনগরে একটি বিপণীবিতানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে Read more

মদসহ ভারতীয় নাগরিক আটক

চলারপথে রিপোর্ট : আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে অভিযান চালিয়ে বিদেশি Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বচ্ছতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ৮৩…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা ও সঠিক প্রক্রিয়ায় ৮৩জন Read more

জননিরাপত্তার নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক ঐক্যমত…

চলারপথে রিপোর্ট : জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য রাজনৈতিক ঐক্যমত একান্ত Read more

বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ গ্রেফতার ১

চলারপথে রিপোর্ট : বিজয়নগর উপজেলা থেকে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ ১ Read more

সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বাঞ্ছারামপুরে ১৪৪ ধারা…

চলারপথে রিপোর্ট : বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে উপজেলা ও Read more

বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশীজন ও…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় “বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশীজন ও Read more
ফাইল ছবি

আশুগঞ্জে ট্রেনের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জে ট্রেনের ধাক্কায় মাথায় আঘাত পেয়ে অজ্ঞাতনামা Read more

আখাউড়ায় বিনামূল্যে ধান বীজ বিতরণ চলারপথে রিপোর্ট : আখাউড়া উপজেলায় Read more

কুয়েতে সড়ক দুর্ঘটনায় আবু বাক্কার নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : কুয়েতে প্রাইভেটকার দুর্ঘটনায় শেখ আবু বাক্কার (৩৪) Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাস উল্টে যাত্রী নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : সরাইল উপজেলায় বাস উল্টে গোপী কান্ত ঘোষ Read more

ট্রাক-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ একজন নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে অটোরিকশার Read more

কসবায় তৃতীয় লিঙ্গের সোহেল রানা খুন : গ্রেফতার ১

কসবা, 5 July 2023, 703 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
কসবায় সোহেল রানা ওরফে দুষ্টু (২৪) হত্যাকান্ডের ঘটনায় তার প্রেমিক রাকিব (২৩)কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক রাকিবুল হাসানের কাছে সোহেল রানা ওরফে দুষ্টুকে হত্যার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে রাকিব। আদালতে রাকিব জানায় বাড়িতে চলে যাওয়ার কথা বলায় সে দুষ্টুকে পিটিয়ে হত্যা করে। গ্রেফতারকৃত রাকিব কসবা উপজেলার গুনিনপাড়া (কলেজপাড়া) এলাকার মোঃ নাছির মিয়ার ছেলে। সে পেশায় একজন ইজিবাইক চালক।

নিহত সোহেল রানা ওরফে দুষ্টু দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর উপজেলার সাবের আলীর সন্তান। সে কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামে ভাড়া বাসায় বসবাস করতো।

কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মহিউদ্দিন জানান, গত সোমবার রাতে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় কসবা থেকে ঘাতক রাকিবকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার বিকেলে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে পাঠানো হলে রাকিব বিজ্ঞ বিচারক রাকিবুল হাসানের কাছে ১৬৪ ধারায় হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি প্রদান করে।

জবানবন্দিতে রাকিব জানায়, দুষ্টু আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ গ্রামের অজান্তা হিজরাকে গুরু মানতেন। সেই সুবাধে দুষ্টু কসবা উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামে ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।

আনুমানিক ৭/৮ মাস আগে সোহেল রানা ওরফে দুষ্টুর রাকিবের পরিচয় হয়। ইজিবাইক চালানোর সূত্র ধরে সোহেল রানা ওরফে দুষ্টুর সাথে রাকিবের পরিচয় হয়। রাকিব দুষ্টুকে নিয়ে তার ইজিবাইক দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় নেওয়া-আসা করতো। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে রাকিব দুষ্টুর ভাড়া বাসায় আসা যাওয়া করতো।

গত ঈদ-উল আযহার পরদিন ৩০ জুন রাতে দুষ্টু রাকিবকে ফোন দেয়। ফোন পেয়ে রাকিব দুষ্টুর বাসায় যায়। সেখানে যাওয়ার পর দুষ্টু রাকিবকে জানায় সে দিনাজপুর নিজ বাসায় চলে যাবে। এই কথা শুনে রাকিব ক্ষিপ্ত হয়ে দুষ্টুকে গালাগাল করে। এনিয়ে দু’জনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এক পর্যায়ে রাকিব দুষ্টুর বাসা থেকে চলে আসলে দুষ্টুও রাকিবের পেছন পেছন আসে। পরে দুষ্টু গোপীনাথপুর এলাকার সেকান্দারপাড়ায় গেলে রাকিব একটি গাছের ঢাল দিয়ে দুষ্টুর মাথায় আঘাত করে। এতে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে রাকিব একটি ইটের ভাঙা অংশ দিয়ে আবারো দুষ্টুর মাথায় আঘাত করে। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুষ্টুকে রেখে রাকিব পালিয়ে যায় ও দুষ্টুর গুরু অজন্তার মাকে ফোন দিয়ে জানায় দুষ্টুর লাশ গোপীনাথপুর এলাকার সেকান্দারপাড়ায় পড়ে আছে। পরে সে ফোন বন্ধ করে দেয়।

কসবা-আখাউড়ায় শতাধিক মোটরসাইকেল আটক

আখাউড়া, কসবা, 20 May 2024, 500 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সতর্কতামূলক ব্যবস্থার অংশ হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া ও কসবা উপজেলায় আজ ২০ মে সোমবার বিকেলে মোটরসাইকেল আটকে অভিযান চালায় পুলিশ।

এ সময় শতাধিক মোটরসাইকেল আটক করা হয়।

আচরণবিধি অনুসারে, ১৯ মে রাত ১২টা থেকে ২২ মে রাত ১২টা নাগাদ ভোটের এলাকায় মোটর সাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

পুলিশ জানায়, সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কসবা পৌর এলাকার তেতৈয়া মোড়ে চেকপোস্ট বসানো হয়।

এরপর আখাউড়া পৌর এলাকার মায়াবী সিনেমা হল মোড় ও বাইপাস এলাকায় চেকপোস্ট বসানো হয়।

এ সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. বিল্লাল হোসেনসহ পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান সম্পর্কে পুলিশ সুপার জানান, অবৈধ মোটরসাইকেল এবং নির্বাচন কমিশনের স্টিকার ছাড়া মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া আছে। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যাদের বৈধ কাগজপত্র আছে তারা নির্বাচনের পর মোটরসাইকেল নিয়ে যেতে পারবেন।

আজ বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস

আখাউড়া, কসবা, জাতীয়, নাসিরনগর, বিজয়নগর, রাজনীতি, সরাইল, 9 January 2023, 6048 Views,
স্টাফ রিপোর্টার:
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ। পাকিস্তানের বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি তিনি সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে প্রত্যাবর্তন করেন। এর আগে ৮ জানুয়ারি পাকিস্তানের মিয়ানওয়ালি কারাগারে দীর্ঘ ৯ মাস কারাভোগের পর মুক্তি লাভ করেন তিনি। পরে তিনি পাকিস্তান থেকে লন্ডন যান। তারপর দিল্লী হয়ে ঢাকা ফেরেন বঙ্গবন্ধু। দিবসটি পালন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও দলের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করে বঙ্গবন্ধু সর্বস্তরের জনগণকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। স্বাধীনতা ঘোষণার অব্যবহিত পর পাকিস্তানের সামরিক শাসক জেনারেল ইয়াহিয়া খানের নির্দেশে তাকে গ্রেফতার করে তদানীন্তন পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে নিয়ে আটক রাখা হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে নয় মাস যুদ্ধের পর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হলেও ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে জাতি বিজয়ের পূর্ণ স্বাদ গ্রহণ করে।
জাতির পিতা পাকিস্তান থেকে ছাড়া পান ১৯৭২ সালের ৭ জানুয়ারি ভোর রাতে ইংরেজি হিসেবে ৮ জানুয়ারি। এদিন বঙ্গবন্ধু ও ড. কামাল হোসেনকে বিমানে তুলে দেওয়া হয়। সকাল সাড়ে ৬টায় তারা পৌঁছান লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে। বেলা ১০টার পর থেকে বঙ্গবন্ধু কথা বলেন, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ, তাজউদ্দিন আহমদ ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীসহ অনেকের সঙ্গে। পরে ব্রিটেনের বিমান বাহিনীর একটি বিমানে করে পরের দিন ৯ জানুয়ারি দেশের পথে যাত্রা করেন।
১০ জানুয়ারি সকালেই তিনি নামেন দিল্লীতে। সেখানে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভিভি গিরি, প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, সমগ্র মন্ত্রিসভা, শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধান এবং অন্যান্য অতিথি ও সেদেশের জনগণের কাছ থেকে উষ্ণ সংবর্ধনা লাভ করেন সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের পিতা শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু ভারতের নেতৃবৃন্দ এবং জনগণের কাছে তাদের অকৃপণ সাহায্যের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান। তার এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে আখ্যায়িত করেছিলেন ‘অন্ধকার হতে আলোর পথে যাত্রা হিসেবে।’
এদিন বেলা ১টা ৪১ মিনিটে তিনি ঢাকা এসে পৌঁছেন। চূড়ান্ত বিজয়ের পর ১০ জানুয়ারি বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুকে প্রাণঢালা সংবর্ধনা জানানোর জন্য প্রাণবন্ত অপেক্ষায় ছিল। আনন্দে আত্মহারা লাখ লাখ মানুষ ঢাকা বিমান বন্দর থেকে রেসকোর্স ময়দান পর্যন্ত তাঁকে স্বতঃস্ফূর্ত সংবর্ধনা জানান। বিকাল পাঁচটায় রেসকোর্স ময়দানে প্রায় ১০ লাখ লোকের উপস্থিতিতে তিনি ভাষণ দেন। পরের দিন দৈনিক ইত্তেফাক, সংবাদসহ বিভিন্ন পত্রিকায় বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিয়ে এভাবেই লিখা হয়- ‘স্বদেশের মাটি ছুঁয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসের নির্মাতা শিশুর মতো আবেগে আকুল হলেন। আনন্দ-বেদনার অশ্রুধারা নামলো তার দু’চোখ বেয়ে। প্রিয় নেতাকে ফিরে পেয়ে সেদিন সাড়ে সাত কোটি বাঙালি আনন্দাশ্রুতে সিক্ত হয়ে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু ধ্বনিতে প্রকম্পিত করে তোলে বাংলার আকাশ-বাতাস।’
জনগণ নন্দিত শেখ মুজিব সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দাঁড়িয়ে তাঁর ঐতিহাসিক ধ্রুপদি বক্তৃতায় বলেন, ‘যে মাটিকে আমি এত ভালবাসি, যে মানুষকে আমি এত ভালবাসি, যে জাতিকে আমি এত ভালবাসি, আমি জানতাম না সে বাংলায় আমি যেতে পারবো কিনা। আজ আমি বাংলায় ফিরে এসেছি বাংলার ভাইয়েদের কাছে, মায়েদের কাছে, বোনদের কাছে। বাংলা আমার স্বাধীন, বাংলাদেশ আজ স্বাধীন। সশ্রদ্ধ চিত্তে তিনি সবার ত্যাগের কথা স্মরণ করেন এবং সবাইকে দেশ গড়ার কাজে উদ্বুদ্ধ করে বলেন, ‘আজ থেকে আমার অনুরোধ, আজ থেকে আমার আদেশ, আজ থেকে আমার হুকুম ভাই হিসেবে, নেতা হিসেবে নয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে নয়। আমি তোমাদের ভাই, তোমরা আমার ভাই। এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি বাংলার মানুষ পেট ভরে ভাত না পায়, এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি বাংলার মা-বোনেরা কাপড় না পায়, এ স্বাধীনতা আমার পূর্ণ হবে না যদি এদেশের যুবক যারা আছে তারা চাকরি না পায়। মুক্তিবাহিনী, ছাত্র সমাজ তোমাদের মোবারকবাদ জানাই তোমরা গেরিলা হয়েছো, তোমরা রক্ত দিয়েছো, রক্ত বৃথা যাবে না, রক্ত বৃথা যায় নাই।
বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘একটা কথা-আজ থেকে বাংলায় যেন আর চুরি-ডাকাতি না হয়। বাংলায় যেন আর লুটতরাজ না হয়। বাংলায় যারা অন্য লোক আছে অন্য দেশের লোক, পশ্চিম পাকিস্তানের লোক বাংলায় কথা বলে না, তাদের বলছি তোমরা বাঙালি হয়ে যাও। আর আমি আমার ভাইদের বলছি তাদের উপর হাত তুলো না আমরা মানুষ, মানুষ ভালোবাসি। ‘তবে যারা দালালি করেছে যারা আমার লোকদের ঘরে ঢুকে হত্যা করেছে তাদের বিচার হবে এবং শাস্তি হবে’ উল্লেখ করে জাতির পিতা বলেন, ‘তাদের বাংলার স্বাধীন সরকারের হাতে ছেড়ে দেন, একজনকেও ক্ষমা করা হবে না। তবে আমি চাই স্বাধীন দেশে স্বাধীন আদালতে বিচার হয়ে এদের শাস্তি হবে। আমি দেখিয়ে দিতে চাই দুনিয়ার কাছে শান্তিপূর্ণ বাঙালি রক্ত দিতে জানে, শান্তিপূর্ণ বাঙালি শান্তি বজায় রাখতেও জানে।’ বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমায় আপনারা পেয়েছেন। আমি আসছি। জানতাম না আমার ফাঁসির হুকুম হয়ে গেছে। আমার সেলের পাশে আমার জন্য কবর খোড়া হয়েছিলো। আমি প্রস্তুত হয়েছিলাম, বলেছিলাম আমি বাঙালি, আমি মানুষ, আমি মুসলমান, মুসলমান একবার মরে দুইবার মরে না। আমি বলেছিলাম, আমার মৃত্যু আসে যদি আমি হাসতে হাসতে যাবো। আমার বাঙালি জাতকে অপমান করে যাবো না, তোমাদের কাছে ক্ষমা চাইবো না। এবং যাবার সময় বলে যাবো জয় বাংলা, স্বাধীন বাংলা, বাঙালি আমার জাতি, বাংলা আমার ভাষা, বাংলার মাটি আমার স্থান।’
বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসী সরকার তাঁর নির্দেশিত যুদ্ধ পরিচালনা করে। নয় মাসের যুদ্ধের এক পর্যায়ে বাঙালির মুক্তিযুদ্ধ চূড়ান্ত রূপ নিতে শুরু করে। ধীরে ধীরে স্বাধীনতা অর্জনের পথে মুক্তিযোদ্ধা, জনতা ও মিত্রবাহিনীর যৌথ আক্রমণ তীব্র হয়। জয় তখন সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় মাত্র। একই সাথে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে বিশ্বব্যাপী জনমত গড়ে তোলা হয় প্রবাসী সরকারের নেতৃত্বে। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হলে পাকিস্তানী বর্বর শাসকগোষ্ঠী বাধ্য হয় তাঁকে সসম্মানে মুক্তি দিতে।
১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন দেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে বাংলাদেশের মাটিতে প্রত্যাবর্তন করেন। এর আগে সরকার পরিচালনা করে অস্থায়ী প্রবাসী সরকার। ১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ২৩ সদস্য বিশিষ্ট আওয়ামী লীগের মন্ত্রিসভা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করে। ১৯৭২ সালের ২৩ মার্চ জারিকৃত প্রেসিডেন্সিয়াল আদেশ বলে গণপরিষদ গঠন করে নভেম্বর মাসের মধ্যেই দেশের জন্য একটি সংবিধান উপহার দেয়া হয় এবং যা ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়। বাসস।

ঝুঁকিতে সেতু : আখাউড়া-কসবা সড়কে যান চলাচল বন্ধ

আখাউড়া, কসবা, 23 August 2024, 205 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় তীব্র স্রোতের কারণে সেতু ধসের আশঙ্কায় কসবা উপজেলার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও আরো একটি সেতু ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তা ধসে গেলে পৌর এলাকার দেবগ্রামের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে।

ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দুই পাশে থাকা বৈদ্যুতিক খুঁটির মাটি সরে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে কয়েকটি এলাকা বিদ্যুৎহীন রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, পৌর এলাকার দেবগ্রাম ও মোগড়া ইউনিয়নের নয়াদিলের সংযোগস্থলের সেতু বৃহস্পতিবার রাত ৯টা থেকে ঝুঁকির মধ্য পড়ে। সেতুর এক পাশের দেয়াল ধসে পড়লে আতঙ্ক দেখা দেয়। পরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা গাছ ফেলে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।

এদিকে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে পৌর এলাকার দেবগ্রামে নতুন নির্মাণ হওয়া সেতুটির এক পাশ থেকে মাটি সরে যায়। এ অবস্থায় একপাশ দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। এখানেও দুটি বৈদ্যুতিক খুঁটির নিচ থেকে মাটি সরে গেছে।

এ বিষয়ে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) গাজালা পারভীন রুহি জানান, সেতুর বিষয়ে অবগত রয়েছি। ঝুঁকি থাকায় সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।

কসবা দিয়ে ভারতে পালাতে গিয়ে গ্রেফতার যুগ্ম সচিব কিবরিয়া এখন কারাগারে

কসবা, জাতীয়, 13 October 2024, 111 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
কসবা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় আটক যুগ্ম সচিব এ কে এম জি কিবরিয়া মজুমদারকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আজ ১৩ অক্টোবর রোববার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে গতকাল শনিবার অবৈধভাবে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় যুগ্ম সচিব এ কে এম জি কিবরিয়া মজুমদারকে আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। পরে পাসপোর্ট আইনে মামলা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অপরাধমূলক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অপরাধে পল্টন থানায় দায়ের করা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ আদালতে সোপর্দ করে কসবা থানা পুলিশ।

এ কে এম জি কিবরিয়া মজুমদার জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর অধীনে যুগ্ম সচিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কোমরকড়া গ্রামের বাসিন্দা।

বিজিবির পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের পুটিয়া এলাকায় আন্তর্জাতিক সীমারেখা সীমান্ত পিলার ২০৫০/৮-এস থেকে ৫০ গজ বাংলাদেশের ভেতরে পুটিয়া নামক স্থান থেকে এ কে এম জি কিবরিয়া মজুমদারকে আটক করা হয়। তিনি ভারতের অনুপ্রবেশের জন্য সীমান্ত এলাকায় ঘোরাঘুরি করছিলেন।

এ সময় সালদানদী বিওপির টহল দল তাকে আটক করে। বিজিবির ৬০ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক (সিও) লে. কর্ণেল এ এম জাবের বিন জব্বার বলেন, সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় যুগ্ম সচিব এ কে এম জি কিবরিয়া মজুমদারকে আটক করেছে বিজিবি। পাসপোর্ট ছাড়াই অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করার অপরাধে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের করার জন্য কসবা থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।

কসবা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জহিরুল হক কবির জানান, আটক যুগ্ম সচিব এ কে এম জি কিবরিয়া মজুমদারকে দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়। তার বিরুদ্ধে বিজিবির পক্ষ থেকে ১৯৭৩ সালের পাসপোর্ট আইনে মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অপরাধমূলক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অপরাধে পল্টন থানায় হত্যা মামলা রয়েছে। ওই দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।