চলারপথে রিপোর্ট :
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম বলেছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোন ধরনের বৈষম্য মানা হবেনা। জেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুন্দর পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হবে।
আজ ২ অক্টোবর বুধবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে গভঃ মডেল গার্লস হাই স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম চালু করার বিষয়ে জেলার সাংবাদিক, শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের অভিভাবক, সম্বন্বয়ক ও সূধীজনদের সাথে আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশকে শান্তিপূর্ণভাবে চলতে দিতে হবে। কেউ পরিকল্পিতভাবে শিক্ষা ব্যবস্থা ধংস করে দিতে চায় কিনা সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। তিনি বলেন, দোষীদের শাস্তি দিতে হলে তদন্ত করে বের করতে হবে। তদন্তে কেউ দোষী প্রমানিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মাহমুদা আক্তারের সঞ্চলনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান, সেনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন বুলবুল আহমেদ, প্রেসক্লাবের সভাপতি জাবেদ রহিম বিজন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা, অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক মোঃ জাকির হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন বকুল, সাংবাদিক ইব্রাহিম খাঁন সাদাত, সাংবাদিক শাহাদৎ হোসেন, মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান, সমন্বয়ক সিয়াম, সমন্বয়ক শাহআলম, অভিভাবক মোঃ আজিম, মাহাবুবুর রহমান অভিভাবক অ্যাডভোকেট ইমরুল মুর্শিদ, তানজিনা আক্তার, শিক্ষার্থী শাবনুম শিখার মাতা, শিক্ষার্থী তানহার মাতা প্রমুখ।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, গত ৫ আগষ্ট সরকার পরিবর্তনের পর জেলার ৪২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অরাজকতা চলছে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকগনকে বের করে দিয়েছেন। কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের হাতে শিক্ষকগন নাজেহাল হয়েছেন। এই অবস্থা চলতে দেয়া যায়না। বক্তারা বলেন, সামনে স্কুলের ফাইনাল পরীক্ষা এই অবস্থায় গভঃ মডেল গার্লস হাই স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকতে পারেনা। বক্তারা আগামীকাল ৩ অক্টোবর বৃহস্পতিবারের মধ্যে গভঃ মডেল গার্লস হাই স্কুল খুলে দেয়ার দাবি জানান। বক্তারা বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে কোন অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ প্রমানিত হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে। এর আগে অভিযুক্ত শিক্ষকদেরকে পাঠদানের সুযোগ দিতে হবে।
বক্তারা বলেন, ৪২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেয়া শিক্ষকদেরকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরিয়ে আনতে হবে। ওইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোন শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি অনিয়ম প্রমাণিত হয় তাহলে তাদের বিরুদ্ধেও বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সভায় বুধবার গভঃ মডেল গার্লস হাই স্কুল খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
আলোচনা সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আবদুল্লাহ আল মামুন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সাইফুল ইসলাম, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সেলিম শেখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশে অদ্বৈত চর্চার অন্যতম পথিকৃৎ অধ্যাপক শান্তনু কায়সারকে মরণোত্তর ‘অদ্বৈত মল্লবর্মণ সাহিত্য পুরস্কার’-২০২৪ প্রদান করা হয়েছে।
২৩ মে বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন (পিপিএম)।
অদ্বৈত মল্লবর্মণ স্মৃতি গ্রন্থাগার ও গবেষণা কেন্দ্র আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গবেষণা কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, কবি, গীতিকার ও কবিতা বিষয়ক গবেষক মো. আ. কুদ্দূস।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সাহিত্য একাডেমির সভাপতি, অধ্যাপক শান্তনু কায়সারের দীর্ঘদিনের সহচর, বিশিষ্ট কবি ও গবেষক জয়দুল হোসেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশ তথা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অদ্বৈত চর্চার ইতিহাস, অদ্বৈত গবেষণায় অধ্যাপক শান্তনু কায়সারের অবদান এবং অদ্বৈত মল্লবর্মণ স্মৃতি গ্রন্থাগার ও গবেষণা কেন্দ্রের প্রয়োজনীয়তা ও কর্ম পরিধি নিয়ে বিশদ বক্তব্য উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমির সহকারী সম্পাদক কবি পিয়াস মজিদ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মাইদুল ইসলাম পঠান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাহিত্য-সংস্কৃতি অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে শান্তনু কায়সারের পরিবারের পক্ষে সম্মানজনক এ পুরস্কার গ্রহণ করেন তাঁর বড় ছেলে রাসেল রায়হান। এসময় অতিথিবৃন্দ তার হাতে সম্মাননা স্মারক, নগদ অর্থ ও সম্মাননাপত্র তুলে দেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ছোটকাগজ ‘প্লাটফর্ম’-সম্পাদক হেলাল উদ্দিন হৃদয় ও কিচিরমিচির সম্পাদক মনিরুল ইসলাম শ্রাবণ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে এই ধরনের কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন- প্রয়াত এ গুণীজনকে সম্মান প্রদর্শনের মাধ্যমে একই সাথে অদ্বৈত মল্লবর্মণ ও অধ্যাপক শান্তনু কায়সারের সম্পর্কে মানুষের জানার আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে। অনুষ্ঠানের সভাপতি মো. আ. কুদ্দূস বলেন- নতুন প্রজন্মের মাঝে অদ্বৈতর চিন্তা-চেতনাকে ছড়িয়ে দেওয়া এবং অদ্বৈত গবেষণায় দ্বার উন্মুক্ত রাখতে ভবিষ্যতেও আমাদের বিভিন্ন কার্যক্রম চলমান থাকবে।
২০২২ সালে মো. আ. কুদ্দূস প্রতিষ্ঠিত অদ্বৈত মল্লবর্মণ স্মৃতি গ্রন্থাগার ও গবেষণা কেন্দ্রের মাধ্যমে অদ্বৈতর জন্মভিটা গোকর্ণঘাটে ২০২৩ সালে প্রথম ও ২০২৪ সালে দ্বিতীয়বারের মতো তিন দিনব্যাপী অদ্বৈত গ্রন্থমেলা আয়োজন করা হয়েছিল। দুই বছরই দুইজন গুণী ব্যক্তিকে অদ্বৈত গবেষণায় অবদান রাখায় ‘অদ্বৈত মল্লবর্মণ সাহিত্য পুরস্কার’ প্রদান করা হয়। ২০২৩ সালে এ পুরস্কার লাভ করেন কবি ও গবেষক জয়দুল হোসেন। এ বছর ২০-২২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত এ মেলায় অধ্যাপক সান্তনু কায়সারকে এ পুরস্কার দেওয়ার কথা থাকলেও সে সময় তাঁর পরিবারের সদস্যরা বিদেশে অবস্থান করায় গতকাল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই পুরস্কার প্রদান করা হলো।
অনুষ্ঠানে তার বড় ছেলে রাসেল রায়হান অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন- আমার বাবা কর্ম ও ভালোলাগার সূত্রে দীর্ঘদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বসবাস করেছেন। আমাদের ভাই-বোনদের সকলের জন্ম ও বেড়ে ওঠা এই ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে। বাবা ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে এত বেশি থেকেছেন, আসা-যাওয়া করেছেন এবং কাজ করেছেন যে দেশের অনেকেই ভাবেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বুঝি তাঁর আসল বাড়ি। আজকে ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর এই সম্মান পেয়ে আমরা পরিবারের সদস্যরা গর্বিত ও আনন্দিত। বাবা বেঁচে থাকলে নিশ্চয়ই তিনিও গর্ব অনুভব করতেন। বক্তব্যে তিনি অদ্বৈত মল্লবর্মণ স্মৃতি গ্রন্থাগার ও গবেষণা কেন্দ্র এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
উল্লেখ্য, অধ্যাপক শান্তনু কায়সার ১৯৫০ সালের ৩০ ডিসেম্বর চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার সাজনমেঘ গ্রামের মুন্সী বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষে অধ্যাপনাকে জীবনের ব্রত হিসেবে নেন। একইসঙ্গে তিনি লেখালেখিতে মনোনিবেশ করেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে অধ্যাপনার সময় তিনি এখানকার সাহিত্য-সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় তিনি অদ্বৈত গবেষণা ও চর্চায় আত্মনিয়োগ করেন। একসময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছেড়ে গেলেও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই জেলার সঙ্গে তার নিবিড় সম্পর্ক ছিল। বিস্তর কর্মজীবনে বিভিন্ন বিষয়ে তিনি প্রায় ৪৫টি গ্রন্থ রচনা করেন। যার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বই অদ্বৈত গবেষণার উপর। ২০১৪ সালে প্রবন্ধ সাহিত্যে বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করা গুণী এই সাহিত্যিক ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
হামলা ও অগ্নিসংযোগে ধ্বংস স্তূপে পরিণত হওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
আজ ৭ আগস্ট বুধবার সকাল থেকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রেড ক্রিসন্টে ও মাদ্রাসার ছাত্ররা এই পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নেন।
এসময় তারা থানার বিভিন্ন ভবনের পুড়ে যাওয়া ও ভাংচুর করা ধ্বংসাবশেষ পরিস্কার করেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, শতাধিক শিক্ষার্থী শহর পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নিয়েছেন। রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা করার দায়িত্ব সবার। শিক্ষার্থীরা কোন প্রতিষ্ঠানে হামলা করেনি। তবে রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় সবাইকে সচেতন হওয়ার আহবান জানায় শিক্ষার্থীরা।
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের বিভিন্ন সড়কে আনসারের পাশাপাশি ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীরা। শহরের কাউতলীর মোড়, টি.এ রোড, সদর হাসপাতাল রোড, কুমারশীল মোড়, জেল রোড, কে দাস সড়কসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে তারা ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছেন। এতে সড়কে অনেকটা সুশৃঙ্খলতা ফিরে এসেছে। সাধারণ মানুষ ও চালকরা তাদের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাহিত্য একাডেমির তিন মাসব্যাপী আবৃত্তি কর্মশালা উদ্বোধন হয়েছে। আজ ২৫ আগস্ট শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পৌরশহরের গভ. মডেল গার্লস হাই স্কুলের মিলনায়তনে ‘সাহিত্য একাডেমি’র আয়োজনে এ কর্মশালা উদ্বোধন করা হয়।
কর্মশালা উদ্বোধন করেন সাহিত্য একাডেমির সভাপতি ও আবৃত্তি কর্মশালা’র সার্বিক তত্ত্বাবধায়ক কবি জয়দুল হোসেন।
প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট আবৃত্তি শিল্পী ও বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা অঞ্চল) আহসান উল্লাহ তমাল। আবৃত্তি কর্মশালা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ‘প্রমিত বাংলা শুদ্ধ উচ্চারণ ও আবৃত্তি চর্চা এখনো সাংগঠনিক গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ। এর থেকে বেরিয়ে আসার জন্যে সাংগঠনিক চর্চার পাশাপাশি স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শুদ্ধ উচ্চারণ ও আবৃত্তি চর্চা ছড়িয়ে দিতে হবে।’
কর্মশালা উদ্বোধক কবি জয়দুল হোসেন বলেন, ‘ব্যক্তি ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে শুদ্ধ উচ্চারণে কথা বলা পারস্পরিক ভাব বিনিময়ে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। শুদ্ধ উচ্চারণের চর্চা ছড়িয়ে দিতে আবৃত্তি সংগঠনগুলো যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে তার পাশাপাশি এর বাইরেও নানামুখী উদ্যোগ প্রয়োজন।’
প্রশিক্ষক ও আবৃত্তিকার আহসান উল্লাহ তমাল বলেন, ‘বর্তমানে আবৃত্তির সঙ্গে অসংখ্য তরুণ সম্পৃক্ত হচ্ছে। এটি আমাদের জন্যে খুব আশার বিষয়। কারণ সাংগঠনিকভাবে সৃজনশীলতার চর্চা মানুষের চিন্তার ক্ষেত্রকে প্রসারিত করে এবং সুন্দর ও সৃজনশীল চিন্তায় সহায়ক হয়।’
এছাড়াও সাহিত্য একাডেমি পরিচালিত শুদ্ধ উচ্চারণ ও আবৃত্তি কর্মশালা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নুসরাত জাহান বুশরা এর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন-সাহিত্য একাডেমির সাধারণ সম্পাদক ও কর্মশালার সমন্বয়ক নূরুল আমিন, সাহিত্য একাডেমির পরিচালক ফারুক আহমেদ ভুইয়া, খেলাঘর ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন সরকার, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদস্য সচিব সঞ্জীব ভট্টাচার্য, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ সিলেট অঞ্চলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মনির হোসেন, তরী বাংলাদেশ-এর আহ্বায়ক শামীম আহমেদ, সাহিত্য একাডেমির নির্বাহী সদস্য সোহেল আহাদ, খালেদা মুন্নী ও রিপন দেবনাথ, আবৃত্তি শিল্পী শারমিন সুলতানা প্রমুখ।
শিক্ষাঙ্গনে দলীয় রাজনীতির শাখা ও দলীয় আধিপত্যের অপচেষ্টা শিক্ষা ধ্বংসাত্মক- জীবন ধ্বংসাত্মক -দেশ ধ্বংসাত্মক অপরাধ ও গুন্ডাতন্ত্র মাত্র” বললেন- আল্লামা ইমাম হায়াত (মানবতার রাজনীতির প্রবর্তক)। শিক্ষাঙ্গনে দলীয় রাজনীতির শাখা ও দলীয় আধিপত্য বন্ধ ও নিষিদ্ধের দাবিতে বস্তুর উর্ধে মানব সত্তা ও মানবতার রাজনীতির প্রবক্তা আল্লামা ইমাম হায়াত এর দিকনির্দেশনায় আজ ২৮ সেপ্টেম্বর শনিবার- সকাল ১০টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন পালন করেছে ইনসানিয়াত বিপ্লব ( humanity revolution) স্টুডেন্ট ফ্রন্ট এর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ। উক্ত মানববন্ধন কর্মসূচিতে শেখ রাসেল এর সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন- মঞ্জু আহমেদ (আহবায়ক ইনসানিয়াত বিপ্লব স্টুডেন্ট ফ্রন্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা)। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ইনসানিয়াত বিপ্লব স্টুডেন্ট ফ্রন্টের উপদেষ্টা সদস্য আশরাফুল হক সুমন, নজরুল ইসলাম, শাহজাদ ভূইয়া, সালমা সাফিরাহ্।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন এস এম শাহিন, শরীফ মৃধা, রাহিম রায়হান, সাদিয়া জাহান রিতা, শেখ রোমাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে মানবতার রাজনীতির প্রবক্তা আল্লামা ইমাম হায়াত এর দেওয়া লিখিত বক্তব্য তুলে ধরে বক্তারা বলেন, আমরা সকল বস্তুর ঊর্ধ্বে স্রষ্টার নামে স্রষ্টার আলো মহান রাসুলের আলোকে জীবনের আত্মিক সত্যভিত্তিক ও সকল একক গোষ্ঠীবাদি ধর্মবাদি জাতিবাদি অপরাজনীতি বিরোধী মানবতা ভিত্তিক রাজনৈতিক দল বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লব সকল সর্বজনীন প্রতিষ্ঠানে দলীয় রাজনীতির শাখা মারাত্মক ক্ষতিকর ও অনধিকার অন্যায় মনে করি।
আমরা ইনসানিয়াত বিপ্লব মানবতার রাজনীতিকে জীবনের অবিচ্ছেদ্য বিষয় এবং অস্তিত্বের অবিচ্ছেদ্য বিষয় হিসেবে উপলব্ধি করি।
আমাদের বিশ্লেষণ ও উপলব্ধি এই যে- প্রাকৃতিক শক্তির পর রাজনীতিই জীবন, সম্পদ ও দুনিয়ার প্রধান নিয়ন্ত্রক ও চালিকা শক্তি বিধায় মানুষ দাবি করে অরাজনৈতিক হওয়া যায়না। অরাজনৈতিক হওয়া কিম্বা মানবতা বিরোধী কোনো একক গোষ্ঠীবাদি অপরাজনীতির অংশ হওয়া দুইটাই জীবন বুঝতে অক্ষমতা। নির্দলীয় হওয়া আর অরাজনৈতিক হওয়াও এক নয় ভিন্ন বিষয়।
আরো বলেন, আমরা ইনসানিয়াত বিপ্লব যে কোনো মানুষের জন্য জীবনের যে কোনো স্তরে অরাজনৈতিক হওয়া যেমন জীবন অস্বীকার হিসেবে উপলব্ধি করি তেমনি জীবনবিরোধী মানবতাবিধ্বংসী অপরাজনীতিকেও জীবন ধ্বংসাত্মক ও মানবতা ধ্বংসাত্মক বিষাক্ত আঁধার ও মানবতার বিরুদ্ধি অপরাধ উপলব্ধি করি।
আমরা ইনসানিয়াত বিপ্লব জীবন ও মানবতার রাজনীতিকে আলাদা কেও দেখিনা এবং জীবন ও মানবতার রাজনীতি একাকার হিসেবে উপলব্ধি করি।
আমরা ইনসানিয়াত বিপ্লব জীবন ও রাজনীতিকে যেমন আলাদা মনে করিনা তেমনি রাজনীতিও নাগরিকত্বকেও আলাদা মনে করিনা বরং একাকার হিসেবে উপলব্ধি করি।
আমরা ইনসানিয়াত বিপ্লব জীবনের অপরিহার্য মানবতার রাজনীতি বা যে কোনো রাজনীতি আর দলীয় রাজনীতির সাংগঠনিক বিষয়কেও এক নয় উপলব্ধি করি।
আমরা সব মত পথ আদর্শের যার যার রাজনৈতিক দর্শন ও দল নিয়ে চলার অধিকার যেমন স্বীকার করি তেমনি কোনো ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান- সরকার ও রাষ্ট্রের উপর বলপূর্বক কোনো ধর্ম- মত- পথ- মতবাদের রাজনীতি বা দলীয় আধিপত্য চাপিয়ে দিয়ে দস্যুতান্ত্রিক অপরাজনীতি ও জবরদখলের অপরাজনীতিকে চরম ঘৃনার সাথে জীবন মানবতা ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে চরম ধ্বংসাত্মক অপরাধ মনে করি।
আমরা ইনসানিয়াত বিপ্লব জীবনসত্যের অবিচ্ছেদ্য বিষয় হিসেবে জীবনের নিয়ন্ত্রক ও চালিকা শক্তি হিসেবে ও জীবনের ভালোমন্দের সাথে একাকার বিষয় হিসেবে রাজনীতিকে উপলব্ধি করি।
আমরা ইনসানিয়াত বিপ্লব সব মানুষের জন্য জীবনের উদীয়মান কাল থেকেই বিশেষভাবে ছাত্রজীবন থেকেই সুরাজনীতি ও কুরাজনীতি বুঝে সুরাজনীতির ধারক হওয়া জরুরী বিশ্বাস করি।
বর্তমান বিশ্বে বিভিন্ন ধর্মের নামে একক ধর্মরাষ্ট্রের নামে অধর্ম উগ্রবাদি হিংস্র সাম্প্রদায়িক রাজনীতি এবং একক জাতিবাদি উগ্রবাদি পাশবিক রাজনীতি- এই দুই একক গোষ্ঠীবাদি রাজনীতি জীবনের স্বাধীনতা ও মানবতার বিরুদ্ধে মারাত্মক বিপজ্জনক ও সংঘাতময় এবং জীবনের সকল সংকটের উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এছাড়াও বক্তব্যে বলেন, আমরা ইনসানিয়াত বিপ্লব বিশেষভাবে ছাত্রজীবনকে জীবন বুঝার- জীবনের সত্য ও মিথ্যার ধারা বুঝার-জীবনের সুপথ কুপথ বুঝার-জীবনের শত্রু মিত্র চিনার-জীবন ও রাষ্ট্রের সম্পর্ক বুঝার-জীবনের অধিকার স্বাধীনতা চাওয়া পাওয়া এবং শোষন- বঞ্চণা- রুদ্বতার কারন সকল অপশক্তির অপরাজনীতির ধারা বুঝার ও মানবতার মুক্তির পথ বুঝার জন্য জীবনের একাকার বিষয় হিসেবে এবং জীবন ও মানবতার সুরক্ষা হিসেবে জীবনের প্রাকৃতিক মানবতার রাজনীতির সক্রিয় একাকার ধারক দিশারী হওয়া অক্সিজেনের মত জরুরী মনে করি।
কিন্তু আমরা ইনসানিয়াত বিপ্লব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় কেন্দ্র, আদালত, রাষ্ট্রীয় বাহিনী, হসপিটাল, অফিস, কর্মস্থল, কল কারখানা, খেলাধুলা সাংস্কৃতিক অঙ্গন ইত্যাদি বিশেষ কাজের বিশেষ স্থান ও সর্বজনীন প্রতিষ্ঠান গুলোতে কোনো রাজনৈতিক দলের অফিসিয়াল শাখা সংগঠন ও দলীয় সংঘাত, দলীয় আধিপত্য বিস্তার, সরাসরি প্রকাশ্য দলীয় কর্মসূচী পালন করা খুবই ধ্বংসাত্মক অন্যায় অপরাজনীতি মনে করি।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের রাজনীতির চর্চা অবশ্যই থাকবে থাকতে হবে তবে সেটা হতে হবে কেবলমাত্র একাডেমিক ও সংঘাতমুক্ত এবং নিরাপদ সৌহার্দ্যমূলক।
প্রতিষ্ঠানে কোনো রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের দলীয় সাংগঠনিক মাঠের রাজনীতির কর্মসূচি ভয়ংকর ধ্বংসাত্মক যা কেবল গুন্ডাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করে প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য দলীয় রাজনীতি নয় এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সব অবাঞ্ছিত সংঘাত ও দলীয় আধিপত্য থেকে মুক্ত না রাখলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আসল উদ্দেশ্য ধ্বংস হয়ে অসৎ স্বার্থের বিপজ্জনক হাতিয়ার হয়ে যাবে।
যে কোনো বিষয় ভালো হলেও সব কিছুর যথার্থ স্থান- কাল- পাত্র না বুঝলে ভালো বিষয়ও পরিণতিতে ক্ষতিকর হয়ে যায়।
সর্বজনীন প্রতিষ্ঠান ও বিশেষ লক্ষ্যের বিশেষ প্রতিষ্ঠানে পরস্পর দ্বান্দ্বিক ও সংঘাতময় দলীয় রাজনীতির শাখা হলে প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংসাত্মক যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করা হয়।-প্রেস বিজ্ঞপ্তি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যুবলীগের ৩ টি শাখার সম্মেলন হলেও কোনটিরই কমিটি হয়নি। আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এসব কমিটি গঠনে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপির মতামতের ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন যুবলীগের নেতাকর্মীরা।
যুবলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য মোকতাদির চৌধুরী পরামর্শ করে পরবর্তীতে কমিটি দেবেন বলে কাউন্সিল অধিবেশন শেষে জানিয়ে দেন কেন্দ্রীয় নেতারা।
আজ ২৯ এপ্রিল শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও পৌর ইউনিটের সম্মেলন হয়।
বঙ্গবন্ধু স্কয়ারের আবদুল কুদ্দুস মাখন মুক্ত মঞ্চে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত্র সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি। সম্মানিত অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম। এছাড়া বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান চপল, সাধারণ সম্পাদক যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আল মামুন সরকার, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি হেলাল উদ্দিন, সহ-সভাপতি হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি অ্যাড. মাহবুবুল আলম খোকন ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন হয় সুর সম্রাট দি আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনে। কিন্তু কাউন্সিল অধিবেশনের পর কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। সদর উপজেলা যুবলীগ বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি আলী আজম জানান, বিকেলে কাউন্সিল অধিবেশন হয়েছে। সেখানে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, যুবলীগের কেন্দ্রীয় প্রেসিডেন্ট আমাদের নেতা মোকতাদির চৌধুরী এমপির পরামর্শক্রমে পরবর্তীতে কমিটি ঘোষণা দেবেন। এরআগে ২৮ এপ্রিল বিজয়নগর উপজেলা যুবলীগের সম্মেলন হয়। এ শাখার কমিটিও ঘোষণা পায়নি।
বিজয়নগরেও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এমপি মোকতাদির চৌধুরীর সাথে পরামশক্রমে কমিটি করা হবে বলে জানিয়েছিলেন। জেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস বলেন, যুবলীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সম্পাদক ব্যারিস্টার ফজলে নাঈম বলেছেন, এ আসনে আগামী নিবাচনে প্রাথী আমার শ্রদ্ধেয় চাচা মোকতাদির চৌধুরী। আমাদের যুবলীগের চেয়ারম্যান মোকতাদির চাচার সাথে পরামশ করে কমিটি ঘোষণা দেবেন।-প্রেস বিজ্ঞপ্তি