চলারপথে রিপোর্ট :
আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার বিভিন্ন পূ্জামণ্ডপ পরিদর্শন করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান।
৫ অক্টোবর শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যে নাসিরনগর উপজেলা দত্তবাড়ি পূ্জামণ্ডপ এবং আন্দ্রাবহর পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেছেন।
পরিদর্শকালে পুলিশ সুপার মন্দির কমিটি ও পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দসহ সনাতন ধর্মাবলম্বী সাথে আলোচনা করেন এবং দুর্গাপূজার প্রস্তুতি সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন।
এসময় নাসিরনগর থানার অফিসার ইনচার্জ সহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ মিডিয়া উইংস থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
মুরাদ মৃধা, নাসিরনগর :
নাসিরনগর আশুতোষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা-২০২৫ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ২৩ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ের হল রুমে প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুর রহিম সভাপতিত্বে বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
নুরুল আলমের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন, সহকারী প্রধান শিক্ষক অরবিন্দু ঘোপ।
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, ম্যানিজিং কমিটি সদস্য সৈয়দ আশরাফুল আবদাল মোকাল্লিদো, রফিকুল ইসলাম খান, রিমা আক্তার, শিক্ষক আসাদুজ্জামান ভুইয়া,অমরিত লাল সরকার, চন্দন কুমার দেব প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
চারপাশে সবুজ। ঠিক মাঝখানে লাল। ওপর থেকে দেখলে মনে হবে এ যেন বাংলাদেশের পতাকা। নাসিরনগর উপজেলায় ভূমি ও গৃহহীনদের জন্য একটি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরের চিত্র এটি। উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের উত্তর লক্ষ্মীপুর গ্রামে এটি করা হয়েছে।
নাসিরনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফখরুল ইসলাম জানান, উত্তর লক্ষ্মীপুরে এ আশ্রয়ণ প্রকল্পে ১৪০টি পরিবারের জন্য ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এসব ঘরসহ ভূমি পেয়েছেন বিধবা নারী, স্বামী পরিত্যক্তা, ভিক্ষুক, প্রতিবন্ধী ও গৃহহীনরা। ঘরগুলো দৃষ্টিনন্দন করতে চাল লাগানো হয়েছে জাতীয় পতাকার আদলে লাল-সবুজে। ২২ মার্চ বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে এগুলো হস্তান্তর করা হবে।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় ৬৬২টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পাচ্ছে নতুন ঘর। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বুধবার এসব ঘর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আশ্রয়ণ প্রকল্পের চতুর্থ ধাপে প্রধানমন্ত্রী ঘর হস্তান্তরের পর জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে ছয়টি উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম জানান, মুজিববর্ষে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ‘ক’ শ্রেণির ভূমিহীন (যাদের জমি নেই, ঘরও নেই) তাদের পুনর্বাসনের জন্য চতুর্থ পর্যায়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চতুর্থ ধাপে ৬৬২টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার ঘর পাবে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর এসব পরিবারকে ঘরের চাবি ও দলিল বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
এরমধ্যে সদর উপজেলায় ১০৫টি, বাঞ্ছারামপুরে ১২৬টি, নবীনগরে ১০০টি, আখাউড়ায় আটটি, সরাইলে ৪৯টি, আশুগঞ্জে ২০টি ও নাসিরনগর উপজেলায় ২৫৪টি পরিবার রয়েছে। এরই মধ্যে সুবিধাভোগী ভূমি ও গৃহহীনদের নামে ভূমির দলিল নিবন্ধন করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আরো জানান, দুই কক্ষবিশিষ্ট আধাপাকা ঘরগুলো একই নকশায় তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি ঘরে ব্যয় হয়েছে দুই লাখ ৮৪ হাজার ৫০০ টাকা।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কয়েকটি জেলার ১০ কর্মকর্তাকে বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্থায়ীভাবে চাকুরি চাকরিচ্যুৎ করা হয়। এরই প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট জেলার বিদ্যুৎ সাময়িক বন্ধ করে রাখা হয়েছে। দাবি আদায় না হলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে না বলে নিশ্চিত করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মো. আমজাদ হোসেন।
বহিষ্কারাদেশে উল্লেখ করা হয়, পল্লী বিদ্যুৎ খাতকে অস্থিতিশীল করায় নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড এর নির্দেশনার প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন এবং দাপ্তরিক শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যকলাপে লিপ্ত থাকায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চাকরি বিধি ১৯৯২ (সংশোধিত, ২০১২) অনুযায়ী চাকরি হতে অব্যাহতি দেয়া হলো।
চাকরি হতে স্থায়ী বহিস্কৃতরা হলো- ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ২ এর সহকারী জেনারেল ম্যানেজার মো. সালাহ উদ্দিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. আসাদুজ্জামান ভূইয়া, নেত্রকোনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী ম্যানেজার মনির হেসেন, মাগুরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. রাহাত, ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ১ এর সহকারী জেনারেল ম্যানেজার আব্দুল হাকিম, কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ৪ এর সিনিয়র সহকারী জেনারেল ম্যানেজার মো. জাকির হোসেন, নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ওয়্যারিং পরিদর্শক সালাম জাবেদ, বরিশাল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজারমো. হুমায়ুন কবীর, মুন্সিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী জেনারেল ম্যানেজার রাজন কুমার দাস ও কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ১ এর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার দিপক কুমার সিংহ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্রে জানা যায়, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৪৫ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী দেশের ৮০ ভাগ অঞ্চলের প্রায় ১৪ কোটি মানুষকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করেন। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের দ্বৈতশাসন ৪৭ বছর ধরে চলমান আছে। তাদের শোষণ, বৈষম্য ও নিপীড়ন থেকে মুক্তির জন্য আরইবি-পবিস একীভূতকরণসহ অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়ন এবং সব অনিয়মিত ও চুক্তিভিত্তিক কর্মচারীদের নিয়মিতকরণের ২ দফা দাবি তোলা হয়। বিদ্যুৎ সচিবসহ প্রধান উপদেষ্টার দাবি তাদের দাবিকে যৌক্তিক বললেও বাস্তবায়ন না করে উল্টো আমাদের ১০ কর্মকর্তাকে চাকুরি থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয় এবং একজনকে আইসিটি আইনে গ্রেফতার করা হয়। যা আমাদের উদ্বিগ্ন করেছে।
নাসিরনগর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার মো. আমজাদ হোসেন বলেন, আরইবির লোকজনের কেনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জন্য নির্মাণসামগ্রী থেকে শুরু করে সব মালামাল খুবই নিম্নমানের। এসবের কারণে ভূতুড়ে বিল আসে। এর দায় আসে আমাদের ওপর। আমরা এসবের প্রতিবাদ করায় আমাদের ১০ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। চাকরি থেকে বহিষ্কার করা ১০ কর্মকর্তার সব মামলা বাতিল করে সসম্মানে চাকরিতে পূনর্বহালসহ আমাদের যৌক্তিক সকল দাবি না মানলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে।
মুরাদ মৃধা, নাসিরনগর :
আজ ১৪ জানুয়ারি যথাযোগ্য উৎসাহ উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে নাসিরনগরে হিন্দু ধর্মাবলম্বী জনগণ তাদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব মকর সংক্রান্তি উদযাপন করেছে ।
এ এলাকার শত বছরের প্রচলিত রীতি অনুযায়ী পৌষের শেষ রাতে কিশোর ও যুবকরা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে খোলা যায়গায় তৈরি করে ছোট ছোট কুড়ে ঘর, সেখানে ভালো খাবার খেয়ে নেচে গেয়ে আনন্দ করে সারা রাত। মাঘের ১ম ভোরে স্নান করে এই ঘর আগুনে পুড়ে এর তাপ দিয়ে আগুন পোহানোর মাধ্যমে সুচনা করে নতুন মাসের। রীতি অনুযায়ী প্রতিটি বাড়িতে সকালে তৈরি করা হয় নানান জাতের পিঠা, এরপর পর শুরু হয় দান/ লোট উৎসব। গ্রামের বিভিন্ন সমাজের লোকজন নিজ নিজ এলাকায় ঢোল, করতাল, হারমোনিয়াম ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্র নিয়ে দল বেধে ধর্মীয় সংগীত পরিবেশন করতে করতে বাড়ি বাড়ি যায় আর সবাই বিভিন্ন ধরনের ফল, বাতাসা তিল্লাই ইত্যাদি সামগ্রী দান/লোট দিলে শিশু, কিশোর ও যুব সমাজের মাঝে ব্যাপক আবেগ-আনন্দের সৃষ্টি হয়। এখানকার কোন কোন এলাকায় হিন্দুদের পাশাপাশি মুসলমান জনগনও ভাগাভাগি করে এই আনন্দ।
হিন্দু ধর্মালম্বীরা বিশ্বাস করে মকর সংক্রান্তিতে স্নান ও দান অত্যন্ত শুভ ও ফলদায়ক। দেশের বিভিন্ন স্থানে অঞ্চল ভেদে পৌষ সংক্রান্তি, পোঙ্গল, উত্তরায়ন ইত্যাদি আলাদা আলাদা নামে উদযাপিত হয় এই অনুষ্ঠানটি।