চলারপথে রিপোর্ট :
‘রাইতে ঘর থাইক্যা বাইর হইতে পারি না। সাদা সাদা কাপড় পইর্যা জিন বাড়িতে আইয়া ডর দেখায়। ঘরের চুলা ভাঙছে, দরজায়ও তালা দিছে।’ এক দমে কথাগুলো বলছিলেন হাবিবা আক্তার। তাঁর বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার আতুকুড়া গ্রামে। কিছুদিন আগেই এ গ্রামের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী জাজু আক্তার (১০) হত্যায় সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে গ্রেফতার হয় শিউলি আক্তার নামের এক নারী। এর পর থেকেই হাবিবার বাড়িতে জিনের উপদ্রব আর নেই। তবে আতঙ্ক কাটেনি তাঁর মতো গ্রামের অন্য বাসিন্দাদের।
আতুকুড়া গ্রামটি পড়েছে ফান্দাউক ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে। আতুকুড়া গ্রামেরই শাহ আলম মিয়ার মেয়ে জাজু আক্তার পড়ত আতুকুড়া মাস্টার কিন্ডারগার্টেনে। ২৯ সেপ্টেম্বর সকালে হঠাৎ নিখোঁজ হয় শিশুটি। সারাদিন খোঁজাখুঁজির পরও খোঁজ মেলেনি তার। আশপাশের এলাকার মসজিদের মাইকে জাজুর নিখোঁজ সংবাদ প্রচার করা হয়। দিন শেষে এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে জাজুকে জিনে নিয়ে গেছে। ওই দিন সন্ধ্যার পর বাড়ির পাশের খালে পাওয়া যায় শিশুটির লাশ। তার পরিবারের লোকজনও বিশ্বাস করতে শুরু করেন, জিনই হয়তো হত্যা করেছে তাদের মেয়েকে। কিন্তু নাসিরনগর থানা পুলিশ এ কুসংস্কারে বিশ্বাস করেনি। তারা তদন্ত শুরু করে সেই রাতেই।
পুলিশের পরামর্শে পরদিন থানায় মামলা করেন জাজুর বাবা শাহ আলম মিয়া। তিন দিন পর পুলিশ প্রতিবেশী কাজী মিয়ার স্ত্রী শিউলি (২৫) ও তার শ্বশুর দুধ মিয়াকে গ্রেফতার করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই চম্পক চক্রবর্তী আসামিদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ৭ অক্টোবর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলে জাজু হত্যার রহস্য বেরিয়ে আসে। ৯ অক্টোবর বুধবার রাতে নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল কাদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। জবানবন্দির সূত্র ধরে তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে শিউলি নিজেকে জিনের মা হিসেবে পরিচয় দেয়। দাবি করে, তার ওপর জিনের আসর আছে। কিন্তু জাজুর বাবা শাহ আলম এসব বিশ্বাস করতেন না। হত্যাকাণ্ডের এক সপ্তাহ আগে শিউলির বাড়িতে জিন নামানো হয়। সেখানে দাবি করা হয়, পাঁচ মণ মিষ্টি ও পাঁচটি গরু দিলে এলাকার সব সমস্যার সমাধান হবে। তবে এসব কুসংস্কারের প্রতিবাদ করেন শাহ আলম। এ কারণেই তাঁর মেয়ে জাজুকে শিউলির নেতৃত্বে হত্যা করা হয়।
গতকাল ১০ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকালে জাজুদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় সুনসান নীরবতা। তার বই-খাতা ও ব্যাগ পড়ে আছে ঘরে। মেয়ের মৃত্যুতে অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে গেছেন মা জুনু বেগম। মেয়ের কথা বলতে গিয়ে তাঁর চোখ ভিজে যায়। আক্ষেপ নিয়ে বলেন, ‘আমি বিচার চাই না, আমার ছোড মাইয়াডারে ফিরত চাই।’ জুনু-শাহ আলম দম্পতির বড় মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। স্বামীর বাড়িতে থাকেন। আর দুই ছেলে রয়েছে। তারাও বোন হত্যার পর আতঙ্কিত। একই এলাকার মরহম আলী বলেন, ‘বক্তব্য দিলে আমার বাড়ির ছোট ছোট বাচ্চাদের মাইরা ফেলতে পারে। জাজুরে মারনের পর খাইরুল নামে আরেকটা ছোড ছেলেরে মারতে চাইছিল।’
আরেক ভুক্তভোগী বিলকিস বলেন, ‘আমার ঘরে তিনজন জিন সাদা কাপড় পইরা ৯টা তালা দিয়া গেছে। চাবি সঙ্গে নিয়া গেছে। আমরা জানালা দিয়া সব দেখছি। কিন্তু ভয়ে ঘর থাইকা বের হই নাই।’
জাজু হত্যা মামলার তদন্তে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, জিনের ভয়ে দীর্ঘদিন গ্রামের অনেকে রাতে ঘর থেকে বের হতে পারেন না। এমনকি চক্রটি জিনের ভয় দেখিয়ে বহু মানুষের কাছ থেকে টাকা-পয়সা এবং গবাদি পশু হাতিয়ে নিয়েছে। ওসি আব্দুল কাদের বলেন, কয়েক বছর ধরে আতুকুড়া গ্রামের সাধারণ মানুষ বিকেলের পর ঘর থেকে বের হতেও পারতেন না। সন্ধ্যার পরপরই কারও ঘরের দরজায় তালা দেওয়া হতো। আবার কারও ঘরের দরজায় সাদা সুতা দিয়ে বাঁধা; কারও বাড়ির রান্না করার চুলা ভেঙে রাখত। এ ছাড়া কারও ঘরের টিনের চালায় ইট ছোড়া হতো।
এ পুলিশ কর্মকর্তার ভাষ্য, মূলত স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াতেই শিউলির কিছু লোক এসব অপকর্ম করে আসছিল। এসব কুসংস্কারের বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিবাদ করেন জাজুর বাবা শাহ আলম। এর জের ধরে তাঁর মেয়েকে তুলে নিয়ে হত্যা করা হয়।
মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কনসালট্যান্ট ডা. মাসুক আল মারজান বলেন, একটি সংঘবদ্ধ চক্র জিন-ভূতের কল্পকাহিনি বানিয়ে তাবিজ ও পানি বিক্রি করে আসছে। এর ফলে মানুষ হত্যা থেকে শুরু করে ধর্ষণের ঘটনাও ঘটছে। বিষয়টিকে সামাজিক অবক্ষয় হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। তাঁর মতে, এ থেকে মুক্তি পেতে হলে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মাঝে সুশিক্ষা পৌঁছে দিতে হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের সংসদ সদস্য ও নৌকা প্রার্থী বদরুদ্দোজ্জা মো. ফরহাদ হোসেন সংগ্রামকে হুমকি দেওয়া আওয়ামী লীগ নেত্রী রোমা আক্তারকে শোকজ করা হয়েছে। ৩০ ডিসেম্বর শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ সংসদীয় আসনের নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান ও সিনিয়র সহকারী জজ মোহাম্মদ রেজাউল হক এই বিষয়ে শোকজ করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ওই আদালতের পেশকার শাহজাহান বলেন, রোমা আক্তারকে ৩১ ডিসেম্বর বিকেল পাঁচটার মধ্যে সংশ্লিষ্ট আদালতে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
অনুসন্ধান কমিটির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, রোমা আক্তারের দেওয়া বক্তব্য গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর ৭৭ (১) অনুচ্ছেদ ও সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮ এর ১১ বিধির সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন মর্মে কমিটির নিকট প্রতীয়মান হয়।
গত বুধবার রাতে নাসিরনগর উপজেলা সদরে স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামানের সমর্থনে আয়োজিত নির্বাচনী সভা থেকে এ হুমকি দেওয়া হয়। সভায় স্বতন্ত্র প্রার্থী একরামুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। রোমা আক্তার উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় নেতা নাজির মিয়ার স্ত্রী।
এ সময় রোমা আক্তারকে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা নাসিরনগরের মানুষ সহজ সরল মানুষ। দাঙ্গা হাঙ্গামা চাই না। আমাদের নেতৃবৃন্দ যে জেল খেটেছেন সেটা আমাদের কলঙ্ক। আপনাদের কাছে আকুল আবেদন ভোট দিয়ে অধিকার ছিনিয়ে নিবেন। উনি যে বেইজ্জতি করেছেন তার জন্য ধিক্কার জানাই। তীব্র নিন্দা জানাই। তিনি মুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে হয়রানি করেছেন। উনি নাসিরনগর এসেছেন প্রবীণ নেতৃবৃন্দের নাম মুছে ফেলার জন্য। আরে নাম মুছে ফেলা এত সহজ নয়। এটা কাগজে লেখা নাম নয়। মানুষের হৃদয়ে লেখা নাম, মুছে ফেলতে পারবেন না। তবে আপনার নাম কেন, সাত তারিখের পর নাসিরনগরের মাটিতে আমরা আপনাকে পা রাখতে দেবো না।’
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে উপজেলা পরিষদ নিবার্চন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য করার লক্ষ্যে ভোট গ্রহনকারী কর্মকর্তাদের তিনদিন ব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু হয়েছে।
আজ ২ মে বৃহস্পতিবার সকালে নাসিরনগর উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে ও স্থানীয় আশুতোষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা নির্বাচন অফিস প্রিজাউডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও পুলিং কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের আয়োজন করেন।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী কর্মশালায় ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও জেলা রির্টানিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাদেকুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নিবার্চন সমন্বয়কারী মোঃ ইমরানুল হক ভূইয়া, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রির্টানিং কর্মকর্তা মোঃ শহীদুল ইসলাম ও নবীনগর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ আজগর আলী।
প্রথমদিন প্রশিক্ষণে ১০৩ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, ২৪০ জন সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা এবং ৪৪৩ জন পোলিং কর্মকর্তা অংশগ্রহন করেন।
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান ভোট গ্রহন কর্মকর্তাদের অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নিজ নিজ দায়িত্ব, কর্তব্য সততা এবং নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি করণীয় সর্ম্পকে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রির্টানিং কর্মকর্তা মোঃ শহীদুল ইসলাম জানান, আগামী ৮ মে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ লক্ষ্যে ১০৩ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা,৭১২ জন সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা এবং ১৪২৬ জন পোলিং কর্মকর্তাদের দুই শিফটে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, নাসিরনগর উপজেলায় ৯৩টি কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ভোটার ২ লাখ ৫৬ হাজার ২৬৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৩৫ হাজার ৫শ ১৯ জন ও মহিলা ভোটার ১ লাখ ২০ হাজার ৭শ ৪৫ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গ ২ জন।
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেমকে (৭৩) রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাত ৯টার দিকে উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামে নিজ বাসভবনে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। পারিবারিক সূত্র জানায়, আবুল হাশেম দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। গত শনিবার রাতে নিজ বাসভবনে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। গতকাল রোববার দুপুরে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের মাঠে তাকে নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মুহাম্মদ সরওয়ার উদ্দীনের নেতৃত্বে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেয়া হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. ইসমত আলী, সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ৫ ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
পাবলিক লাইব্রেরিতে এসে বই পড়ায় পুরস্কৃত করা হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলায় ১২ শিক্ষার্থীকে। এপ্রিল মাসে লাইব্রেরিতে সর্বাধিক উপস্থিত হয়ে বই পড়ায় পুরস্কৃত করা হয় তাদের।
আজ ১৫ মে বুধবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ ইমরানুল হক ভূঁইয়া শিক্ষার্থীদের হাতে এ পুরষ্কার তুলে দেন। পুরস্কার পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে বালিকা ক্যাটাগরিতে যৌথভাবে প্রথম হয়েছেন ছাত্রী সাদিয়া বুশরা, হাফসা বেগম, সুমাইয়া আফরিন, ২য় হয়েছেন ইসরাত জাহান ও সৃষ্টি রায় এবং ৩য় হয়েছে সানিয়া আক্তার ও মহিমা রায়। বালক ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়েছেন পৃথিবী দাস সূর্য্য, ২য় স্নেহাল গোপ পান্না, সৌমক রায়, গগনদীপ কুন্ডু, ৩য় হয়েছেন শয়ন গোপ। জানা যায়, আগে উপজেলার লাইব্রেরিতে আগে তেমন পাঠক ছিলো না। জরাজীর্ণ ভবনে নানান রকমের বই থাকলেও গড়ে এক বা দুইজন শিক্ষার্থী এখানে আসতেন। পাঠক ফেরাতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত সপ্তাহব্যাপী বই মেলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘোষণা দিয়েছিলেন লাইব্রেরিতে সর্বাধিক উপস্থিত ব্যক্তি পাবেন পুরস্কার। সেই ঘোষণায় বেড়েছে নাসিরনগর পাবলিক লাইব্রেরিতে পাঠক উপস্থিতি।
এ উপলক্ষে পুরষ্কার প্রদান অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চাতলপাড় ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক মানিরুল হোসাইন, নাসিরনগর আশুতোষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিম, নাসিরনগর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অজিত কুমার দাস, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি শুভ সিদ্দীক, গণমাধ্যমকর্মী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, সুজিত কুমার চক্রবর্তী প্রমুখ।
এ সময় মুহাম্মদ ইমরানুল হক ভূঁইয়া বলেন, বাংলাদেশের অনেক উপজেলায় পাবলিক লাইব্রেরি নেই। এটি নাসিরনগরের সৌভাগ্য যে উপজেলায় একটি পাবলিক লাইব্রেরি আছে। আমি উপজেলায় যোগদানের পর লাইব্রেরি ভিজিট করতে গিয়ে দেখতে পাই প্রতিদিন পাঠক সংখ্যা খুবই কম। পরে ফেব্রুয়ারি মাসে আয়োজিত অমর একুশে বইমেলায় আমি ঘোষণা দিয়েছিলাম পাবলিক লাইব্রেরিতে যারা সর্বাধিক দিন উপস্থিত থেকে সর্বোচ্চ বই পড়বেন, তারা আমার পক্ষ থেকে পুরস্কার পাবেন। পাশাপাশি লাইব্রেরিটি সংস্কার করা হচ্ছে। ঘোষণা অনুযায়ী এপ্রিল মাসে সর্বাধিক দিন উপস্থিত থেকে সর্বোচ্চ বইয়ের পাঠকদেরকে আমরা পুরস্কৃত করেছি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে সর্বজনীন পেনশন স্কিম সুষ্ঠু ও সফলভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উপজেলা পর্যায়ে উদ্বুদ্ধকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ২২ এপ্রিল সোমবার সকালে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্তি জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
এ সময় সর্বজনীন পেনশন স্কিম একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন প্রান্তিক মানুষের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয় একদিন বড় সম্পদে পরিণত হবে। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহবানে সাড়া দিয়ে সকলকে এই পেনশন স্কিমের আওতায় আসার আহবান জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ইমরানুল হক ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যার মো: রাফি উদ্দিন আহমেদ, সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ মোনাব্বর হোসেন, থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ সোহাগ রানা। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: নুরে আলমের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম ভূঁইয়া, চাতলপাড় ইউপি চেয়ারম্যান মো: রফিকুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষক মো: আবদুর রহিম, প্রেসক্লাব সভাপতি সুজিত কুমার চক্রবর্তী, এনজিও প্রতিনিধি মো: আবু সাঈদ, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি কুতুবুল আলম পাটোয়ারি প্রমুখ।
সভায় বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, ইউনিয়ন সচিব, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (ইউজিসি) উদ্যোক্তা, শিক্ষক, সাংবাদিক, সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের প্রতিনিধি, এনজিও প্রতিনিধি, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।