চলারপথে রিপোর্ট :
নদী ও প্রকৃতি সুরক্ষা সামাজিক আন্দোলন ‘তরী বাংলাদেশ’ এর উদ্যোগে আজ ১৫ অক্টোবর মঙ্গলবার ডেঙ্গু প্রতিরোধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের বিভিন্ন স্থানে জনসচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় শহরের পৌর কার্যালয়ের সম্মুখে লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ও পৌর প্রশাসক মোহাম্মদ রুহুল আমিন।
উদ্বোধন শেষে পৌর প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বক্তব্য রাখেন পৌর প্রশাসক মোহাম্মদ রুহুল আমিন, উপ-পরিচালক জেলা মহিলা অধিদপ্তর নিরূপা ভৌমিক, উপ পরিচালক কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সুশান্ত সাহা, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস মো. শামসুর রহমান, তরী বাংলাদেশ এর আহবায়ক শামীম আহমেদ, শহর পরিকল্পনাবিদ জান্নাতুল ফেরদৌস আরা এবং তরী বাংলাদেশ এর আহবায়ক কমিটির সদস্য খালেদা মুন্নী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সমাজ উন্নয়ন কর্মকর্তা মুখলেছুর রহমান। সভায় পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।
তরী বাংলাদেশ এর পক্ষে আরো উপস্থিত ছিলেন আহবায়ক কমিটির সদস্য হৃদয় কামাল, সোহেল রানা ভূইয়া, সুশান্ত পাল, আব্দুল হেকিম, সদস্য সঞ্জীব চন্দ্র সাহা,শাকিল আহমেদ, মো. মোশারফ হোসেন, মো. বাচ্চু মিয়া প্রমুখ।
সভায় বক্তারা ডেঙ্গুর ভয়াবহতা নিয়ে আলোচনা করেন এবং ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবার সহযোগিতা কামনা করেন। যার যার অবস্থান থেকে ব্যক্তি পর্যায়ে সচেতন হওয়ার গুরুত্ব তুলে ধরেন। জনস্বার্থে ডেঙ্গু প্রতিরোধে এই সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম এবং বিভিন্ন সময়ে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য ‘তরী বাংলাদেশ’ কে ধন্যবাদ জানান পৌর প্রশাসক মোহাম্মদ রুহুল আমিন।
তরী বাংলাদেশ এর আহবায়ক শামীম আহমেদ জানান – আমাদের ধারাবাহিক কাজের অংশ হিসেবে জনস্বার্থে এই সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম তরী বাংলাদেশ এর বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা শাখা সমূহের মাধ্যমে অব্যাহত থাকবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আইন-শৃংখলা কমিটির মাসিক সভা ১৪ মে রবিবার সকালে অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপত্বি করেন জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট হেলেনা পারভীনের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মোঃ শাখাওয়াত হোসেন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার, পৌর মেয়র মিসেস নায়ার কবির, সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ একরামউল্লাহ, পিপি অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম খোকন, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাহারুল ইসলাম মোল্লা, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মোঃ হেলাল উদ্দিন, জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাত প্রমুখ।
সভায় শহরের মসজিদ রোড ও পুরাতন কোর্ট রোডকে স্থায়ীভাবে ওয়ানওয়ে করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। নম্বরবিহীন ও ফিটনেসবিহীন যানবাহনগুলোতে যেন পেট্টোল পাম্পগুলো থেকে জ্বালানী সরবরাহ করা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখার জন্য পেট্টোল পাম্পের মালিকদেরকে খেয়াল রাখার আহবান জানানো হয়। সভায় টিকেট কালোবাজারী রোধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনকে সিসিটিভির আওতায় আনার ও রেলওয়ে স্টেশনের প্ল্যাটফরমে থাকা অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। সভায় নৌ-পথে ফিটনেসবিহীন নৌযান যাতে চলাচল করতে না পারে ও নৌযানগুলোতে লাইফ জ্যাকেটসহ যাত্রীদের সুরক্ষা সামগ্রী যাতে রাখা হয় তা নিশ্চিত করতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদেরকে নির্দেশনা দেয়া হয়।
সভায় দাঙ্গা-ফ্যাসাদ রোধে জেলার নাসিরনগর ও সরাইলে জেলা পুলিশের উদ্যোগে দেশীয় অস্ত্র অভিযানকে সাধুবাদ জানিয়ে জেলার সকল উপজেলায় দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার অভিযান চালানোর উপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
সভায় “নো হেলমেট, নো-ফুয়েল” সিদ্ধান্ত কার্যকর করার জন্য পেট্টোল পাম্প মালিকেদের কঠোরভাবে নির্দেশ দেয়া হয় এবং অবৈধ মোটর সাইকেলের বিরুদ্ধে অভিযান আরো জোরদার করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। সভায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সার্বিক আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি সন্তোষজনক। এই পরিস্থিতিকে ধরে রাখতে হবে।
তিনি মাদক বিরোধী অভিযান আরো জোরদার করার জন্য সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসারদেরকে নির্দেশনা দেন। তিনি বলেন, কেউ যাতে গুজব রটিয়ে কোন ধরনের বিশৃংখলার সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে।
সভায় সরকারি, বে-সরকারি পর্যায়ের শীর্ষ কর্মকর্তাগণ, সকল উপজেলার নির্বাহী অফিসারগণ, উপজেলা চেয়ারম্যান, মেয়র ও আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন জাহানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিভিন্ন সময়ে মাদকসহ বিভিন্ন আলামতের নিস্পত্তিকৃত মামলার পৌনে ৪কোটি টাকার মাদক ও বিভিন্ন আলামত কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে।
৮ জানুয়ারি বুধবার সন্ধ্যায় কুরুলিয়ার পাড়ে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সম্মুখে আধুনিক চুল্লি এবং ভারী যান (ভোল্ডোজার) ব্যবহার করে বিভিন্ন মাদক ও আলামত ধ্বংস করা হয়।
এসময় আলামত ধ্বংস কমিটির চেয়ারম্যান অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রোকেয়া আক্তার, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট স্বাগত স্বাম্য, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সামিউল আলম, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাখাওয়াত হোসেন, আদালতের পুলিশ পরিদর্শক হাবিবুল্লাহ, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও নাজির সুমনময় চৌধুরী এবং মালাখানার দায়িত্ব প্রাপ্ত পুলিশ উপ-পরিদর্শক যোবাইদুল হাসান ভূইয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ধ্বংসকৃত মাদক ও আলামতের মধ্যে রয়েছে ১ হাজার ১শত ৪ কেজি ১৩০ গ্রাম গাঁজা, ৫২ হাজার ৮শত ৪৮৯ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ২শত ৯২ বোতল ফেন্সিডিল, ২হাজার ৩শত ১৯ বোতল স্কফ সিরাজ, ৪শত ৯৮ বোতল বিদেশী মদ, ৩১ লিটার চোলাইমদ, ৪টি বিয়ার ক্যানসহ অন্যান্য ১০৪পিস।
চলারপথে রিপোর্ট :
ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বাররা (সদস্য) কোনো দলীয় প্রার্থী ছিলেননা- এমন দাবি করে পরিষদ বহাল রাখার দাবি জানানো হয়েছে। আজ ২০ অক্টোবর রবিবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে হওয়া এক মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়। পরে এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সংস্থা (বাইসস) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার উদ্যোগে বেলা ১১টার দিকে প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
ইউপি সদস্য মোহাস্মদ রফিকুল ইসলাম সবুজের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন মোহাম্মদ শাহীন, রাবিহার বেগম, দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ। পরে একই দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসকের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জেসমিন সুলতানা স্মারকলিপি গ্রহন করেন।
এ সময় বক্তারা বলেন, ‘স্থানীয় সরকার বিভাগের একেবারে তৃণমূল পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি হচ্ছেন ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যরা। আমরা দলীয় প্রার্থী ছিলাম না। ইউনিয়ন পরিষদ বিলুপ্ত করা হলে জনভোগান্তির সৃষ্টি হবে। আমরা আশা করবো জনভোগান্তি যেন না হয় সে চিন্তা করে ইউনিয়ন পরিষদ বহাল রাখা হবে।’
চলারপথে রিপোর্ট :
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের ৪ বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য যুদ্ধাহত বীরমুক্তিযোদ্ধা র. আ. ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। আজ ১১ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার বঙ্গভবনে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ দায়িত্ব বণ্টন করেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের এমপি র আ ম উবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরী। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৮৭২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন তিনি। আসনটি থেকে টানা চারবার নির্বাচিত হয়েছেন যুদ্ধাহত এ বীর মুক্তিযোদ্ধা। আগের মন্ত্রিসভায় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে কোনো মন্ত্রী ছিলেন না।
বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর জন্ম ১৯৫৫ সালের ১ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার চিনাইর গ্রামে। তার বাবা মো. আবদুর রউফ চৌধুরী ও মাতা মোসাম্মৎ হালিমা খাতুন চৌধুরী।
ঢাকা মাদরাসা-ই-আলিয়া থেকে ফাজিল পাস করে ভর্তি হন ঢাকা কলেজে। সেখান থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন তিনি। ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকা অবস্থায় ১৯৬৯ সালে তিনি ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন।
১৯৭০ সালে উবায়দুল মোক্তাদির ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সালে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন তিনি। যুদ্ধের ময়দানে পাকিস্তান বাহিনীর গুলিতে তার একটি পা আঘাতপ্রাপ্ত হয়।
স্বাধীন দেশের রাজনীতিতে ১৯৭৩-৭৪ সালে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং ১৯৭৫ সালে বাকশাল গঠন হলে ২১ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মনোনীত হন উবায়দুল। ১৯৭৫ সালের কালরাত্রিতে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার প্রতিবাদে ২০ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিলের নেতৃত্বদান ও ৪ নভেম্বর ঢাকার রাজপথে প্রথম প্রতিবাদ মিছিলের অন্যতম সংগঠক হিসেবে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন তিনি।
১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত সচিব ছিলেন। পরবর্তীতে সরকারি চাকরি ছেড়ে দিয়ে পুরোপুরি রাজনীতিতে মনোনিবেশ করেন।
২০১০ সালের ২২ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর আসনের এমপি অ্যাডভোকেট লুৎফুল হাই সাচ্চু মৃত্যুবরণ করলে উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দ্বিতীয়বার এবং ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টানা তৃতীয় বারের মতো এমপি নির্বাচিত হন। নবম জাতীয় সংসদে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, দশম জাতীয় সংসদে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং একাদশ জাতীয় সংসদে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটি গঠন নিয়ে দুই-গ্রুপের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল বিকেলে সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাকিবুল হাসান ও সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা দুটি দায়ের করেন। দুই মামলায় ৮২জন নেতা-কর্মীকে আসামী করা হয়।
এস.আই রাকিবুল হাসানের দায়েরকৃত মামলায় জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মাহমুদ, জেলা কৃষকদলের আহবায়ক আবু শামীম মোহাম্মদ আরিফ ওরফে ভিপি শামীম, জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক রুবেল চৌধুরী ফুজায়েল, সাবেক সদস্য সচিব মহসীন মিয়া, যুবদল কুমিল্লা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক তাজুল ইসলাম (ভিপি তাজু), জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক শাহীনুর রহমান শাহীন, সদস্য সচিব সমীর চক্রবর্তী, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি জহিরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহবায়ক ও পৌর কাউন্সিলর কাউছার মিয়া, যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক রুমেল উদ্দিন, আশুগঞ্জ উপজেলা যুবদলের আহবায়ক আলমগীর খাঁ, সদস্য সচিব সেলিম পারভেজ, সরাইল উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক শেখ জামাল হোসেন লস্কর ও যুগ্ম আহবায়ক শেখ জুনায়েদ আহমেদ উল্লেখযোগ্য। এই মামলায় অজ্ঞাতনামা আরো ১৩০ থেকে ১৫০জনকে আসামী করা হয়েছে।
এস.আই সাইফুল ইসলামের দায়েরকৃত মামলায় জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক রুবেল চৌধুরী ফুজায়েল, সাবেক সদস্য সচিব মহসীন মিয়া, বর্তমান আহবায়ক শাহীনুর রহমান শাহীন, সদস্য সচিব সমীর চক্রবর্তী, যুবদল নেতা তাজুল ইসলাম, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মাহমুদ, পৌর বিএনপির সভাপতি নজির আহাম্মেদ ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, জেলা কৃষকদলের আহবায়ক আবু শামীম মোহাম্মদ আরিফ, আশুগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক মারুফ আহম্মেদ ও যুগ্ম আহবায়ক মোঃ নাঈম, আশুগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব আল আরাফাত উল্লেখযোগ্য। এই মামলায় অজ্ঞাতনামা আরো ৫০-৬০জন নেতা-কর্মীকে আসামী করা হয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক (সহ-সভাপতি পদ মর্যাদা) মোঃ জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রদলের ৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে শাহীনুর রহমান শাহীনকে আহবায়ক ও সমীর চক্রবর্তীকে সদস্য সচিব করা হয়। ৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটিতে ৫জনকে যুগ্ম আহবায়ক করা হয়েছে। এরা হলেন এলভিন লস্কর, সাজিদ আহমেদ, রেজাউল হক শীষ, আবদুল গাফফার রিমন ও সাইফুল ইসলাম ফাহিম।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবন ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল ৭ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি অনুমোদন দেন। কমিটিকে আগামী ১ মাসের মধ্যে আহবায়ক কমিটিকে পূর্নাঙ্গ কমিটি করে কেন্দ্রীয় দপ্তরে জমা দেয়া নির্দেশ দেয়া হয়।
আহবায়ক কমিটিতে পদ পাওয়া ছাত্রদলের নেতারা সবাই লন্ডনে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ব্যক্তিগত সহকারী আবদুর রহমান ওরফে সানির বড় ভাই কবির আহমেদ ভূঁইয়ার অনুসারী। কবির আহমেদ ভূইয়া সদর উপজেলার বরিশল গ্রামের বাসিন্দা।
গত রবিবার রাতে প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সোমবার সকাল ১০টা শহরের লোকনাথ উদ্যানের সামনে (টেংকেরপাড়) সদ্য ঘোষিত জেলা ছাত্রদলের কমিটি আনন্দ মিছিল ও সদ্য বিদায়ী কমিটি সীমাহীন লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
পাল্টা-পাল্টি কমিটির ঘোষনা হওয়ায় সোমবার সকালে বিপুল সংখ্যক পুলিশ লোকনাথ উদ্যান (টেংকেরপাড়) মোতায়েন থাকায় সদ্য ঘোষিত কমিটির নেতৃবৃন্দ ও তাদের অনুসারীরা সোমবার সকাল ১০টার দিকে বিরাসার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জড়ো হয়। জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে ছাত্রদলের নেতা কর্মীরাও সেখানে এসে জড়ো হয়।
পরে সেখান থেকে একটি আনন্দ মিছিল বের করার প্রস্তুতি নেয়ার সময় বেলা ১১ টার দিকে জেলা ছাত্রদলের সদ্য বিদায়ী কমিটির আহবায়ক রুবেল চৌধুরী ফুজায়েলের নেতৃত্বে ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা সেখানে গিয়ে ককটেল বিস্ফোরণ শুরু করে। তখন সদ্য ঘোষিত কমিটির নেতৃবৃন্দ ও তাদের অনুসারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ সময় প্রায় ২০ মিনিট কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে সদ্য ঘোষিত কমিটির অনুসারীরা পুনরায় জড়ো হয়ে বিক্ষুব্ধদের ধাওয়া করে। সেখান থেকে দুই গ্রুপের নেতা-কর্মীরা পুনরায় খৈয়াসার-বিরাসার সড়কে আসার পর আবার ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এ সময় উভয় গ্রুপের নেতা-কর্মীরা পুনরায় ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটাতে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।
পরে জেলা ছাত্রদলের সদ্য ঘোষিত কমিটি, জেলা কৃষক দল ও যুবদলের নেতা-কর্মীরা শহরের মধ্যপাড়ার শান্তিবাগ এলাকায় একটি আনন্দ মিছিল বের করে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটি নিয়ে সোমবার নতুন কমিটি ও আগের কমিটির নেতাকর্মীদের মধ্যে হামলা, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, ককটেল বিস্ফোরণ, গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। সোমবারের ঘটনায় নতুন করে আরো দুটি মামলা হয়েছে। এ পর্যন্ত মোট তিনটি মামলা হয়েছে। এ পর্যন্ত মামলার ৭ আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।