চলারপথে রিপোর্ট :
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আশুগঞ্জে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা হাজী আক্তার হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ ১৯ অক্টোবর শনিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর ইউনিয়নের মৈশার গ্রাম থেকে আশুগঞ্জ থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক জয়নাল আবেদীনের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। আক্তার হোসেন ওই গ্রামের মৃত সৈয়দ হোসেনের ছেলে। তিনি তালশহর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি।
আশুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ বিল্লাল হোসেন জানান, আটক আক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে আশুগঞ্জ থানায় বিস্ফোরক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ তাকে আটক করতে সক্ষম হয়।
উল্লেখ্য, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে আশুগঞ্জ গোল চত্বর এলাকায় শিক্ষার্থীদের মিছিলে অতর্কিত হামলা চালায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। ওইদিন বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারী গুলিবিদ্ধ হন। পরে ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর আহতরা বাদী হয়ে বিষ্ফোরক আইনে ৫টি পৃথক মামলা দায়ের করে। আক্তার হোসেন এসব মামলার এজাহারভূক্ত আসামী। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাকে আদালতে প্রেরণের প্রস্তুতি চলছিল।
আশুগঞ্জ প্রতিনিধি :
তিনদিন পর ফের আশুগঞ্জে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, দোকানপাট-বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। আজ ১৮ জানুয়ারি বুধবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার দুর্গাপুরে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। খবর পেয়ে প্রথমে আশুগঞ্জ থানা পুলিশ ও পরে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ব্যাপক লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল ও শর্টগানের গুলি ছুঁড়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছেন। এর মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এসময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অন্তত ১৫ জনকে আটক করে। এখনো পুলিশের অভিযান চলছে। এদিকে ফায়ার সর্ভিসের দুটি দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌছে আগুন নিভানোর কাজ করে। দুর্গাপুর গ্রামের জারুর গোষ্ঠি (রাসেল চেয়ারম্যানের গোষ্ঠি গং) এবং বারঘরিয়া (মিজান মেম্বারের গোষ্ঠি গং) গোষ্ঠীর লোকজনের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, গত শুক্রবার ও শনিবারের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ১১১ জনের নাম উল্লেখসহ ৩০০- ৪০০ জনের নামে মামলা দায়ের করে। গ্রামের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এরই মধ্যে বুধবার সাড়ে ৭টার দিকে একদল দাঙ্গাবাজ অর্তকিতে দুর্গাপুর বাজারে হামলা চালিয়ে অন্তত ৩০টি দোকান, ৩-৪টি বাড়িঘর ও ২০টির বেশি খড়ের ডিবিতে অগ্নিসংযোগ করে। বেশ কয়েকটি দোকানও ভাংচুর করে। মূহুর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়লে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করলে সংঘর্ষকারীরা সেখানেও বাধা দেয়। পরে পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল ও শর্টগানের গুলি ছুড়ে সংঘর্ষকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। পরে গোটা গ্রামের বিভিন্ন পয়েন্টে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষকারীরা বিভিন্ন স্থানে খড়ের ডিবিতে আগুন লাগিয়ে এক ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করে। পুলিশ একদিকে গেলে অন্য দিকে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে অতিরিক্তি পুলিশ এলে বিভিন্ন দিক থেকে টিয়ারশেল, শর্টগানের গুলি ছুড়া শুরু ও ব্যাপক লাঠিচার্জ শুরু করে। এরপর সংঘর্ষকারীরা পিছু হটে এবং বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ আরো জানায়, সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন পুলিশসহ কমপক্ষে অর্ধ শতাধিক আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে বাহার নামে একজনসহ কয়েকজনের বল্লমের আঘাতে গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, গায়ে সিএনজির ধাক্কা লাগা নিয়ে উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের জারুর গোষ্ঠি (রাসেল চেয়ারম্যানের গোষ্ঠি গং) এবং বারঘরিয়া (মিজান মেম্বারের গোষ্ঠি গং) গোষ্ঠির লোকজনের মধ্যে গত শুক্রবার ও শনিবার দুদফা সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জে সর্বজনীন পেনশন স্কিম বিষয়ে অবহিতকরণ ও উদ্বুদ্ধকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবারসকালে উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বিভিন্ন শ্রেণী পেশার নাগরিকদের পেনশন স্ক্রিমে স্পট রেজিস্ট্রশন করানো হয়।
আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শ্যামল চন্দ্র বসাকের সভাপতিত্বে এ সময় পেনশন স্কিমের উপরে বক্তৃতা করেন সহকারি কমিশনার (ভূমি) কাজী তাহমিনা সারমিন, আশুগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের অ্যাকাডেমিক সুপারভাইজার শরীফুজ্জামান।
সভাপতির বক্তব্যে ইউএনও শ্যামল চন্দ্র বসাক বলেন, সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাংলাদেশের সব নাগরিকের টেকসই ভবিষ্যৎ আর্থ-সামাজিক সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় ইচ্ছে ও তার দূরদর্শী নেতৃত্বের বহিঃপ্রকাশ। সর্বজনীন পেনশন স্কীম চালু হলে কাউকে আর বৃদ্ধাশ্রমে যেতে হবে না। তিনি সকল স্তরের জনগণকে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের অন্তর্ভূক্ত হবার আহবান জানান।
চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জ উপজেলার আড়াইসিধায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ¦ মোঃ মঈন উদ্দিন মঈনকে গণসংবর্ধনা দিয়েছে আড়াইসিধা ইউনিয়নবাসী।
অনুষ্ঠানে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হন সাংসদ।
এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আলহাজ¦ মো মঈন উদ্দিন বলেন, ফুল পঁচে যায়, ফুলের ভালোবাসা নয়, আমি আপনাদের হৃদয়ে আত্মার আত্মীয় হয়ে থাকতে চাই। আপনারা আমাকে যেভাবে শ্রম, অর্থ ও সময় দিয়ে আমাকে সংসদে পাঠিয়েছেন তার ঋণ আমি শোধ করতে পারব না। এই ৫ টি বছর আপনাদের মাঝে কামলা হিসেবে থাকব।
২৩ জানুয়ারি মঙ্গলবার বিকেল থেকে গভীর রাত আশুগঞ্জ উপজেলার আড়াইসিধা কাদির ভূঁইয়া উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আড়াইসিধা ইউনিয়নবাসীর উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী সাধারণ সম্পাদক আবু নাছের আহমেদ, সহ-সভাপতি আলহাজ¦ আনিছুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুবেল শিকদার, সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমান কবীর, প্রবীন আওয়ামী নেতা হেবজুল বারি, আড়াইসিধা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সেলিম মিয়া, লালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোর্শেদ মাষ্টার, শরীরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাঈফ উদ্দিন, দূর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাসেল মিয়া, সাবেক চেয়ারম্যান জিয়াউল করিম খান সাজু, আশুগঞ্জ সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো সালাউদ্দিন, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেহানা মকবুল, সাধারণ সম্পাদক জোসনা চৌধুরী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আজহার ভুইয়া, সোহেল আলম, আরমান খন্দকার, সামসুল আলম, ইউপি মেম্বার শাহ আলী, নজরুল ইসলাম, কামাল মিয়া, উপজেলা আওয়ামী, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, আড়াইসিধার বিশেষ ব্যক্তিবর্গসহ জনসাধারণ উপস্থিত ছিলেন।
গণসংবর্ধনা শেষে দেশের খ্যাতনামা শিল্পী ফকির সাহাব উদ্দিন, ক্লোজআপ তারকা সাজুসহ নামকরা শিল্পীদের গানে গানে মুখরিত ছিল মঞ্চ।
চলারপথে রিপোর্ট :
মাছ ধরতে গিয়ে বিষাক্ত সাপের কামড়ে হেলাল মিয়া (৩৫) নামের এক যুবক গুরুতর আহত হয়েছে। ২৪ জুন সোমবার সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার লালপুর গ্রামে একটি বিলের জমিতে এ ঘটনা ঘটে।
আহত হেলাল লালপুর গ্রামের সাত্তার মিয়ার ছেলে। বর্তমানে সে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
আহতের স্বজনরা জানান, বিকেলে হেলাল মাছ ধরতে বাড়ির পাশে একটি বিলের জমিতে যায়। এ সময় একটি বিষাক্ত সাপ তার পা কামড়ে ধরে। পরে সে সাপটিকে ছাড়িয়ে বাড়িতে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর সে অসুস্থ হয়ে পড়লে ঘরের লোকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসে।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মেডিকেল অফিসার ডাক্তার আবিদ হাসান জানান, বিষাক্ত সাপে কাটা রোগীকে হাসাপাতালে আনার পর তার শরীরে এন্টিভেনম পুশ করা হয়। এতে তার শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে আসে। বর্তমানে সে শঙ্কামুক্ত।
চলারপথে রিপোর্ট :
নৌযান শ্রমিকদের ডাকা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটে ২৭ ডিসেম্বর শুক্রবার অচল ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জে নদী বন্দরের কার্যক্রম। চাঁদপুরে জাহাজে সাত শ্রমিক হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন এবং জড়িতদের বিচারসহ বিভিন্ন দাবিতে আজ ২৮ ডিসেম্বর শনিবারও চলছে অনির্দিষ্টকালের এ ধর্মঘট।
নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে অনির্দিষ্টকালের এই ধর্মঘটের ডাক দেয়। অনির্দিষ্টকালের এই ধর্মঘটের কারণে জেলার আশুগঞ্জ নদীবন্দরে আটকা পড়েছে মালবাহী কার্গো জাহাজ। বন্ধ রয়েছে পণ্য ওঠা-নামা। এতে বন্দরের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। বেকার হয়ে পড়েছেন বন্দরের শত শত শ্রমিক। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বন্দরের ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা। বন্দরের ব্যবসায়ীরা জানান, শ্রমিকদের আন্দোলনের কারণে বন্দরে সার, রড, সিমেন্ট নিয়ে আসা কার্গো জাহাজ থেকে পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে। বন্দরের কয়েক হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। এতে বিপুল অঙ্কের লোকসান গুনতে হবে।
আশুগঞ্জ নদীবন্দরে প্রতিদিন সার, রড, সিমেন্ট, ধান, চাল, পাথর, কয়লাসহ কোটি কোটি টাকার বিভিন্ন পণ্য নিয়ে অর্ধশত জাহাজ নোঙর করে। এসব পণ্য আশুগঞ্জ থেকে নদীপথে ঢাকা, চট্টগ্রাম, মোংলা, সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, নরসিংদী, কুমিল্লা, কিশোরগঞ্জসহ সারা দেশে যায়।
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ বাহার জানান, চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে হরিনা ঘাটের কাছে মাঝেরচর এলাকায় এম. ভি. আল-বাখেরা জাহাজে সন্ত্রাসী কায়দায় নির্মম হত্যাকাণ্ডে মাস্টারসহ সাতজন শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনার প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন, হত্যাকারীদের শনাক্ত করে গ্রেফতার, মৃত শ্রমিকদের প্রত্যেকের পরিবারকে সরকারিভাবে ২০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা, সকল নৌপথে সন্ত্রাস চাঁদাবাজি ডাকাতি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এখনো সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এজন্য বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে তৈল-গ্যাস, বালুসহ সকল প্রকার পণ্যবাহী নৌযানের শ্রমিকরা লাগাতার কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।