চলারপথে রিপোর্ট :
অন্তর্বর্তী সরকার ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার খবরে আখাউড়ায় আনন্দ মিছিল করেছে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
২৩ অক্টোবর বুধবার রাত ১০টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া পৌরশহরের সড়ক বাজারে বিএনপির অফিসের সামনে থেকে মিছিলটি বের হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ কওে সংক্ষিপ্ত পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সরকারের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায় উপজেলা ছাত্রদলসহ বিএনপির নেতাকর্মীরা।
এ সময় জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি জিয়াউল হাসান খান (সানী), আখাউড়া উপজেলার ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব মোবারক হোসেন জীবন, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক পলাশ ও আবির হোসেন টিপ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, বুধবার রাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে সই করেন জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক শাখা-২-এর সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন।
স্টাফ রিপোর্টার :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে দু’পক্ষের মারামারির দুই মাস পর আহত হারুন মিয়া (৬০) নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন। তিনি তার নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শনিবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে হারুন মিয়া হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে সে মারা যায়। গত অক্টোবর মাসে প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুত্বর ভাবে আহত হয়েছিলেন হারুন মিয়া। হারুন মিয়ার মৃত্যুর পর উপজেলার পত্তন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক দুধ মিয়ার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। হারুন মিয়া উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের লক্ষীমুড়া গ্রামে মৃত কিতাব আলীর ছেলে। হাসপাতাল ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত লক্ষীমুড়া গ্রামের মৃত কিতাব আলীর ছেলে হারুন মিয়ার পরিবার ও মৃত সোবহান মিয়ার ছেলে করিম মিয়ার পরিবারের জমিতে গরুর ঘাস খাওয়াকে কেন্দ্র করে বিরোধ চলে আসছিল। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে করিম মিয়ার পক্ষের লোকেরা হারুন মিয়াসহ তার পরিবারের ৪-৫ জনকে পিটিয়ে জখম করে। তারপর বিজয়নগর থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার পর করিম মিয়ার লোকজন হারুন মিয়াকে হত্যা করার হুমকি দেন? পরবর্তীতে স্থানীয় চেয়ারম্যান দু’পক্ষের লোকদেরকে ডেকে তা আপস করার চেষ্টা করেন। পরে হারুন মিয়া তার ছেলে-ভাতিজাকে নিয়ে বাড়িতে যাওয়ার পথিমধ্যে শেখ হাসিনা সড়কের উত্তর পাশে করিম মিয়ার লোকজন অতর্কিতভাবে তাদের উপর হামলা করেন। তাতে হারুন মিয়ার একটি হাত ও একটি পা ভেঙ্গে যায়। পরে তাদেরকে জেলা সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। হারুন মিয়ার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে এক মাস হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়। পরবর্তীতে বাড়িতে তার চিকিৎসা চলে।
এলাকাবাসী সূত্রে আরও জানা যায়- এই হামলার ইন্দনদাতা পত্তন ইউনিয়ন আওয়ামিলীগ সাধারণ সম্পাদক দুধ মিয়া।
নিহত হারুন মিয়ার ভাতিজা সোহেল বলেন, দুধ মিয়া সরাসরি করিম মিয়ার পক্ষে নিয়েছে। যার কারণে আমার চাচা হারুন মিয়ার উপর হামলা হয়েছে। আমার চাচার হত্যা সাথে দুধ মিয়া জড়িত। দুধ মিয়াসহ যারা আমার চাচাকে হত্যা করেছে তাদের ফাঁসির দাবি জানায়।
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, একজন মারা গেছেন বলে শুনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লাশ জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে আছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যু রহস্য উন্মোচন হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়া পৌরশহরের খড়মপুস্থ প্রখ্যাত আউলিয়া হযরত শাহ্ সৈয়দ আহাম্মদ গেছু দারাজ (র.) প্রকাশ্য শাহ্পীর কেল্লা শহীদ (র.) মাজার শরীফের বার্ষিক ওরশের বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ১২টা ৩ মিনিটে বিশ্ববাসীর কল্যাণ কামনা করে মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন মাজার শরীফ জামে মসজিদের খতীব হাফেজ মাওঃ মোঃ লুৎফুর রহমান খাদেম।
প্রায় ২৫ মিনিট ধরে চলা মোনাজাতে লক্ষাধিক মানুষ অংশ নেয়। মোনাজাতে ওরশে এসে ট্রেন দূর্ঘটনায় নিহত ৪ জনের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়। এসময় ১৫ আগষ্ট কালরাতে শাহাদাৎবরনকারী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সকল শহীদের জন্য দোয়া কামনা করা হয়। দেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি এবং বিশ^বাসীর কল্যাণ কামনা করা হয়। আগামী ১৬ আগস্ট ওরশের সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে।
এর আগে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ সাইফুল ইসলাম, আখাউড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক তাকজিল খলিফা কাজল, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মাজার কমিটির সিনিয়র সহ সভাপতি অংগ্যজাই মারমা, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, মাজার কমিটির সম্পাদক মোঃ রফিকুল ইসলাম খাদেম মিন্টু, মাজার কমিটির সদস্য ও পৌর কাউন্সিলর তাকদির খান খাদেম প্রমুখ। এদিকে ১০ আগস্ট ওরশে এসে ট্রেন দুর্ঘটায় নিহত হওয়া ৪ মাজার ভক্তের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিবে মাজার কমিটি। ওরশের আনুষ্ঠানিকতা শেষে নিহতদের পরিবারের হাতে সহায়তার অর্থ তুলে দেওয়া হবে।
নিহতরা হলেন নরসিংদী জেলার মাধবদি থানার নোয়াকান্দি গ্রামের গাজী মিয়ার পুত্রে শুকুর মিয়া (৬০), একই জেলার পলাশ উপজেলার মোতালেব মিয়ার পুত্র মোজাম্মেল, (২০), নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াই হাজার উপজেলার চিলকান্দি গ্রামের তমিজ উদ্দিনের ছেলেমতি ভূইয়া (৫৫) এবং নোয়াখালি জেলার দক্ষিণ হাতিয়ার পূর্ব সোনাদিয়া গ্রামের ইদ্রিস মিয়ার ছেলে কামাল উদ্দিন হৃদয় (৪০)।
এ ব্যপারে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মাজার শরীফ পরিচালনা কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি অংগ্যজাই মারমা বলেন, প্রথমেই নিহতদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। ১৬ আগষ্ট ওরশ শেষ হবে। তারপর নিহতদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে সহায়তার অর্থ হস্তান্তর করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. ইদ্রিস মিয়াকে মদ পাচারের সময় আটক করেছে র্যাব-৯ ব্রাহ্মণবাড়িয়া ক্যাম্পের একটি টিম।
আটক মো. ইদ্রিস মিয়া আখাউড়ার দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ৮ সেপ্টেম্বর রবিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সুলতান পুর এলাকা থেকে ২৪ বোতল বিদেশী মদসহ তাকে আটক করে র্যাব সদস্যরা।
এসময় ইদ্রিস মেম্বারের এক সহযোগী মো. সায়মন মিয়াকে ও আটক করা হয়েছে। তারা দুজনেই সীমান্তবর্তী আবদুল্লাহ পুর গ্রামের বাসিন্দা।
র্যাব-৯ ব্রাহ্মণবাড়িয়া ক্যাম্পের অধিনায়ক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, ২৪ বোতল বিদেশি মদ পাচারের সময় তাদেরকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্দে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
মাদক পাচারের ঘটনায় বাংলাদেশ রেলওয়ে থানা পুলিশের এক এএসআইসহ দু’জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ওই অভিযুক্ত দুই পুলিশ মিলে আন্ত:নগর ট্রেনে করে আখাউড়া থেকে ময়মনসিংহে গাঁজা পাচার করছিলেন।
এরা হলেন ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানায় কর্মরত কনস্টেবল সোহেল রানা (২৬) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া রেলওয়ে থানায় কর্মরত এএসআই তারেক আলী। এরমধ্যে সোহেল রানার কাছ থেকে তিন কেজি নয়শ’ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়। রেলওয়ে পুলিশের হাতে গ্রেফতারের পর সে জানায়, তারেক আলীর কাছ থেকে সে গাঁজা বুঝে নেয়।
আখাউড়া রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জসিম উদ্দিন খন্দকার বলেন, তারেক আলীকে বরখাস্ত করার কথা জানানো হয়েছে। তবে কি কারণে বরখাস্ত হয়েছে সেটি আমি জানি না। গাঁজা পাচারের সঙ্গে তার জড়িত থাকার বিষয়টিও আমার জানা নেই।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়া বন্যা পরিস্থিতি এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। এ অবস্থায় আজ ২৬ আগস্ট সোমবার বেলা সোয়া ১২টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে পুরোদমে যাত্রী পারাপার শুরু হয়েছে। এর আগে যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিলো তাদেরকে গতকাল রবিবার বিকেলে বিশেষ ব্যবস্থায় যাওয়া-আসা করতে দেওয়া হয়। এতে যাত্রীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে। সকালে বন্দর দিয়ে একটি মিনি ট্রাকে করে মাছ রপ্তানি হয়। তবে আর কোনো পণ্য আমদানি-রপ্তানি হতে দেখা যায়নি। আখাউড়া উপজেলার গাজীর বাজার এলাকায় বেইলি সেতু ধসে যাওয়ায় বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালু হতে কিছু সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়িরা।
এদিকে যাত্রী পারাপার শুরু হতে পারে-এমন খবরে সকাল থেকেই লোকজন বন্দর এলাকায় এসে জড়ো হয়। বেলা ১১টার দিকে বিজিবি’র ব্যারিয়ারের সামনে ৩০-৪০জন যাত্রীকে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। এর আগে যাত্রীরা কাস্টমসের কাজ সারেন। বেলা সোয়া ১২টায় তাদেরকে ইমিগ্রেশন এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হয়। এ সময় দু’দেশ থেকে যাত্রী যাওয়া-আসা করতে দেখা যায়।
যাত্রী পারাপার শুরুর পর অনেককে হয়রানি করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। বিশেষ করে বাংলাদেশ থেকে যারা ওপারে যাচ্ছেন তাদেরকে হয়রানি করতে দেখা যায়। কর্মরত স্থানের অনাপতিপত্র, টুরিস্ট ভিসা নিয়ে ডাক্তার দেখাতে যাওয়া ইত্যাদি বিষয় নিয়ে অনেককে দীর্ঘ সময় আটকে রাখা হয়। আবার কিছু সময় পর তাদেরকে ছেড়ে দিতেও দেখা যায়। এসব বিষয় নিয়ে যাত্রীরা বার বারই ইমিগ্রেশন পুলিশের ইনচার্জের কক্ষে ভিড় করছিলেন। মূলত ওনার নির্দেশনাতেই সব কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছিল।
ভারত থেকে ফিরে আসা নরসিংদীতে চাকরিরত শরীয়তপুর জেলার বাসিন্দা মো. স্বপন সাংবাদিকদের বলেন, গত কয়েকদিন অনেক কষ্ট করেছি। যে টাকা নিয়ে গেছি সেটা শেষ হয়ে গেছিলো। কোনো রকমে ওখানে দিন পার করছি।
আশুগঞ্জের বাবুল মিয়া, সিলেটের সুুধাংশু নামে আরো দুই ব্যক্তি বন্যার কারণে আটকে থাকায় তাদের কষ্টের কথা বর্ণনা দেন। আগরতলাতেও বেশ বন্যা হয়েছে। যে কারণে সব মিলিয়ে তাদেরকে সেখানে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে।
আখাউড়া স্থল বন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশের ইনচার্জ (ওসি) মো. খায়রুল আলম বলেন, বন্যার পানি আরো আগে নেমে গেলে যন্ত্রপাতি ঠিকঠাক করতে সময় লেগে যায়। প্রকৌশলী এসে সবকিছু ঠিক করার ৫দিন পর বেলা সোয়া ১২টা থেকে যাত্রী পারাপার শুরু হয়। তবে উপরের নির্দেশনা থাকায় অনেক যাত্রীর বিষয়ে খোঁজ নিতে হচ্ছে। তাদেও যাচাই-বাছাই শেষে যেতে দেওয়া হচ্ছে।