চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ সাবেক সদস্য মো. নাছির উদ্দিনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ২৭ অক্টোবর রোববার রাতে নবীনগর পৌর সদর ভূমি অফিসের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আজ ২৮ অক্টোবর সোমবার বিকেলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোহাম্মদ শামিম গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে বলেন, রোববার সন্ধ্যায় মো. নাছির উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে সোমবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
জানা যায়, গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের সংবাদে আন্দোলনকারীদের ভেতরে ঢুকে কতিপয় দুষ্কৃতকারী থানাসহ সরকারি দপ্তরে ভাঙচুর, লুটপাট ও পুলিশের ওপর আক্রমণ চালায়। এ ঘটনায় গত ১০ অক্টোবর পুলিশ বাদী হয়ে এক থেকে দেড় হাজার অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা নাছির উদ্দিনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে নবীনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, সহিংসতার ঘটনায় যাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে তাদের গ্রেফতার করা হবে।
প্রসঙ্গত, এই মামলায় বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগের আরো পাঁচ নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলেন- নবীনগর উপজেলার কাইতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সৈকত আলী, কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মলাই মিয়া, ছাত্রলীগ নেতা আমিনুল ইসলাম অনিক, জিনদপুর ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার বিল্লাল হোসেন ও লাউরফতেপুর ইউনিয়নের মেম্বার নাছর মিয়া।
চলারপথে রিপোর্ট :
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার বিটঘর (দঃপাড়া) গ্রামের তানজিল মাহমুদ সুজয় (১৯) এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের বাণিজ্য বিভাগের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ২.৫০ পেয়ে উত্তীর্ণ হন সুজয়। কিন্তু এই আনন্দের বার্তা কোন আনন্দই আনতে পারেনি তার পরিবারে। গত ৫ আগস্ট ঢাকার আশুলিয়ায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারায় সুজয়। পরিবারের একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ মা-বাবাসহ তার গোটা পরিবার।
‘আমাদের ছেলে এইচএসসি পরীক্ষায় পাস করেছে, কিন্তু সে তো আর নেই,’ ভেঙে পড়েন মা তাহমিনা আক্তার। ‘আমাদের জন্য অনেক কিছু করার স্বপ্ন ছিল ওর। কিন্তু সব শেষ। আমরা গরিব মানুষ, কীভাবে চলব? ছেলের বাবা আগে রোজগার করত, এখন আর পারে না। দুই মেয়ে আছে, তাদের মানুষ করতে হবে। আমরা সরকারের সাহায্য চাই।’
‘ছেলে বেঁচে নেই, তার এই ফলাফল দিয়ে কী হবে?’ প্রশ্ন বাবা শফিকুল ইসলামের। ‘নিজেরা না খেয়ে ছেলেকে পড়াশোনা করিয়েছি। ঢাকায় পড়তে পাঠিয়েছি। ওর অনেক স্বপ্ন ছিল। সব স্বপ্ন গুলি মুছে ফেলেছে। আমার একমাত্র ছেলে সুজয় সবসময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে।’
সুজয়ের দুই বোন, এনি ও স্বর্ণা, ভাইয়ের স্মৃতি আঁকড়ে বলে, ‘আমার ভাই দেশের জন্য শহীদ হয়েছে। শহীদ হয়ে বাংলাদেশকে নতুন করে স্বাধীনতা দিয়েছে। আমরা ভাইয়ের হত্যার বিচার চাই।’
সুজয়ের কলেজ বন্ধু সাগর শেখ বলেন, অত্যন্ত মেধাবী ও খুব সাহসী বন্ধু ছিল সে। এখনো তার স্মৃতি চোখে ভাসে। তার বন্ধু হতে পেরে আমি গর্বিত। আজ সে এইচএসসি পরীক্ষা উত্তীর্ণ হয়েছে কিন্তু আমার বন্ধু সুজয় আর নেই।’
প্রত্যক্ষদর্শী সুজয়ের নানা আল আমিন সরকার বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট সোমবারে সরকারের পতন ঘটলে সবার সাথে সুজয় আনন্দে আত্মহারা হয়ে উদযাপন করতে রাস্তায় নামলে পুলিশ এলোপাথারি গুলি করেলে সেখানে থাকা অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়, পরবর্তীতে তাকে সহ ১১জনকে একটি কাভার ভ্যানে তুলে পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দিলে সেখানে সকলেরই মৃত্যু হয়।’
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে জাল টাকা ছড়ানোর অভিযোগে জুরু মিয়া (৪৫) নামের এক ব্যক্তিকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আজ ২৬ মার্চ রবিবার বিকেলে উপজেলা সদরের চালের আড়ত থেকে তাকে আটক করা হয়। পরে তাকে এ সাজা দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
জুরু মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার পূর্বভাগ ইউনিয়নের বেল্লা গ্রামের নুরু মিয়ার ছেলে।
নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট একরামুল ছিদ্দিক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, জুরু মিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তিনি জাল নোট বহন ও বিনিময়ে করে প্রতারণা করে আসছেন। বিকেলে চারটি এক হাজার টাকার জাল নোট নিয়ে তিনি আড়তে চাল কিনতে যান। এসময় দোকানদাররা তাকে আটক করে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ তাকে আটকের পর আমি ঘটনাস্থলে যাই। আমাদের দেখে মুখে ঢুকিয়ে তিনি জাল টাকা খেয়ে ফেলার চেষ্টা করেন কিন্তু পারেননি। এ ঘটনায় জুরু মিয়াকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে ঐতিহাসিক সাতই মার্চ সতেরই মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহ তিন তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস এবং ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০২৩ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন উপলক্ষে আজ ০৫ মার্চ রবিবার উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক প্রস্তুুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রস্তুতিমূলক সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একরামুল সিদ্দিকের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মনিরুজ্জামান মনির, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন চৌধুরী সহান, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সাদেক, সহকারী কমিশনার ভূমি মাহমুদা জাহান, নবীনগর থানার ওসি তদন্ত মো. সোহেল , বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল আলম শাহন, দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি আবু কামাল খন্দকার, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোকারম হোসেন, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বুলবুল চৌধুরী, প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি আরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া মিনাজ, মাদক মুক্ত নবীনগর চাই ও মডেল প্রেসক্লাব সভাপতি মোঃ আবু কাওসার, শিক্ষক সমিতির সভাপতি এটিএম রেজাউল করিম সবুজ সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধান, দপ্তরের প্রধান এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সরকারি নির্দেশনার আলোকে প্রথমে ঐতিহাসিক সাতই মার্চ প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের ওপর শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। অতিথিগণ বলেন সকল শিক্ষার্থীদের মাঝে ঐতিহাসিক ভাষণের তাৎপর্য পৌঁছে দিতে হবে, সঠিক ইতিহাস উপস্থাপন করতে হবে।
পর্যায়ক্রমে ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ১০৩ তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস ২০২৩ যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের জন্য সকল প্রতিষ্ঠান এবং দপ্তরকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়, সকাল ১০ ঘটিকায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হবে। দিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণের পাশাপাশি উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির পক্ষ থেকে তিন দিনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে বলে নিশ্চিত করা হয়। ২৫ শে মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষে রাত ১০ঃ৩০ মিনিট হতে ১০ টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত ব্ল্যাকআউট থাকার সিদ্ধান্ত জানানো হয়। মহান ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন উপলক্ষে কুচ কাওয়াজ, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা সহ দিবসটিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করার সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে উপজেলা নাটঘর ইউনিয়নের বড়হিত গ্রামে জহির আলমের একটি গরুর গর্ভে দুই মাথাসহ চার চোখের অস্বাভাবিক একটি বাছুর জন্ম নিয়েছে। তবে জন্মের কিছুক্ষণ পরই বাছুরটি মারা যায়। একনজরে বাছুরটিকে দেখতে উৎসুক জনতার ভিড় জমেছে।
গতকাল ১৯ মে শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে ভেটেরিনারি পল্লী চিকিৎসক ওই গাভীর পেট কেটে বাছুরটি বের করেন।
এদিকে বাছুরটিকে দেখতে আসা দর্শনার্থী শহিদুল মিয়া বলেন, এ ধরনের ঘটনা আমরা আগে কখনোই দেখিনি। এ প্রথমই এরকম ঘটনার সাক্ষী হলাম।
বাছুরের মালিক জহির আলমের স্ত্রী বলেন, আমার স্বামী পেশায় একজন ফার্নিচার মিস্ত্রী। আমার বাবা আমাকে লালন-পালন করার জন্য একটি গাভী কিনে দেন। গাভীটি প্রথমে একটি বাছুর জন্ম দেওয়ার পর আবার ৯ মাস পর গর্ভবতী হয়ে পড়ে। গতকাল রাত থেকে ওর প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়।
তিনি বলেন, সকালে বিষয়টি আমার চাচা শ্বশুরকে জানালে তিনি চিকিৎসককে অবগত করেন। পরে গাভীর পেট কেটে দুই মাথাসহ চার চোখের এ বাছুরটিকে বের করা হয়।
ভেটেরিনারি পল্লী চিকিৎসক ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, বাছুরটি জন্মের দুই/তিন মিনিট পরই মারা যায়। তবে গাভীটি সুস্থ রয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর উপজেলার নাটঘর গ্রামে আগুন লেগে এক কৃষকের দুই গরুসহ গোয়ালঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে ওই কৃ কের প্রায় ৮ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
আজ ১৮ আগস্ট রোববার (১৮ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার নাটঘরের আব্দুর রশিদ ডিলার বাড়ির কৃষক আব্দুর রহমানের গোয়ালঘরে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. হুমায়ূন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের বরাতে আব্দুর রহমানের চাচাতো ভাই মো. খোরশেদ আলম জানান, আজ সকালে গোবর পরিষ্কার করার জন্য রান্নাঘর থেকে বাঁশের পাত্র দিয়ে ছাই এনে গোয়ালঘরে রাখা হয়।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে সেই ছাই থেকে গোয়ালঘরে রাখা পাটে আগুন ধরে যায়। পরে মুহূর্তেই সেই আগুন পুরো ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। গোয়ালঘরে পাট ছাড়াও অনেক পাটখড়ি, লাকড়ি, চাল, চালের পাত্রে নগদ টাকা রাখা ছিল। স্থানীয়রা এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভাতে সক্ষম হলেও ততক্ষণে দুটি গরুসহ পুরো গোয়ালঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আগুনে প্রায় ৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এতে কৃষক পরিবারটি অসহায় হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে নবীনগর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভির ফরহাদ শামীমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বলেন, বিষয়টি জানলাম। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।