অনলাইন ডেস্ক :
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ-২০২৩ এর তৃতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ হয়েছে। এতে উত্তীর্ণ হয়েছে ৬ হাজার ৫৩১ জন।
আজ ৩১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ২১ জেলার ফল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
গত ২৮ মে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর (তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া) মৌখিক পরীক্ষাসহ নিয়োগপ্রক্রিয়া ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছিলেন হাইকোর্ট। এরপর মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণসংক্রান্ত হাইকোর্ট যে স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন, আপিল বিভাগ তা খারিজ করে দেন। এ প্রেক্ষিতে মৌখিক পরীক্ষা নেয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
তবে এই নিয়োগের জন্য লিখিত পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে গণমাধ্যমে আসা অভিযোগ অনুসন্ধান করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।
অনুসন্ধান করে তিন মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতেও বলা হয়। তবে তদন্ত কমিটি প্রশ্ন ফাঁসের প্রমাণ পায়নি বলে জানায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
২০২৩ সালের ১৪ জুন এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। গত ২৯ মার্চ এই দুই বিভাগের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের লিখিত (এমসিকিউ) পরীক্ষার ফল গত ২১ এপ্রিল প্রকাশ করা হয়। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার তৃতীয় ধাপের (৩টি পার্বত্য জেলা ছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ২১টি জেলা) লিখিত পরীক্ষার সংশোধিত ফল পরদিন প্রকাশ করা হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, সরকার বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তরিত করতে কাজ করছে। বর্জ্য থেকে সার উৎপাদনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হচ্ছে।
আজ ১৪ মার্চ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ইউএসএআইডি ও ঢাকা কলিং প্রজেক্টের প্রতিনিধি দলের সাথে বৈঠক শেষে গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে তিনি এ তথ্য জানান তিনি। প্রতিনিধি দলে ছিলেন ইউএসএইড’র প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট এসিসটেন্ট মারুফার ইয়াসমীন খান খাদিম, কাউন্টারপার্ট ইন্টারন্যাশনালের অ্যাডভোকেসি স্পেশালিস্ট ইফফাত জেরিন, দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র (ডিএসকে)’র নির্বাহী পরিচালন ডা. দিবালোক সিংহ, ইনসাইটস্-এর সিইও নিগার রহমান, কোয়ালিশন ফর দ্য আরবান পুওর (কাপ) পরিচালক (কর্মসূচি) মাহবুল হক, বারসিকের প্রকল্প ব্যবস্থাপক ফেরদৌস আহমেদ উজ্জল, বস্তিবাসীর অধিকার উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি হোসনে আরা বেগম রাফেজা প্রমুখ।
এ সময় মন্ত্রী বলেন, ২০২৫ সাল নাগাদ দেশে বিভিন্ন খাতে প্রতিদিন প্রায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য উৎপাদন হবে। ভবিষ্যতে শুধু শহর না, সকল এলাকার বর্জ্যেরই ব্যবস্থাপনা করতে হবে। এগুলো সংগ্রহ করে সরকারি এবং বেসরকারিভাবে সার উৎপাদনের কাজ শুরু হবে।
তিনি আরো বলেন, বর্জ্য থেকে মানসম্পন্ন সার পাওয়া গেলে আমরা আমদানি কেন করবো? বর্জ্য থেকে সার উৎপাদন শুরু হলে সার আমদানি কমে যাবে। এতে আমাদের অনেক বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের ১০০ কর্মদিবসের কর্মসূচির মধ্যে ন্যাশনাল ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক প্রণয়নের বিষয়টি অগ্রাধিকার পর্যায়ে আছে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পুরো ইকোসিস্টেমের দিকে আমরা তাকাচ্ছি। কিভাবে সেটার উন্নয়ন ও কার্যকর করা যায় তা ভাবা হচ্ছে।
আপাততঃ কঠিন বর্জ্য বা সলিড ওয়েস্ট নিয়ে কাজ হবে। পর্যায়ক্রমে মনুষ্য বর্জ্য, ট্যানারি বর্জ্য, ই-বর্জ্য, মেডিক্যাল বর্জ্য নিয়েও কাজ হবে। সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিককেও পুনর্ব্যবহার করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। ভবিষ্যতের প্রয়োজন বিবেচনায় এখন থেকেই জায়গা চিহ্নিত করে জমি অধিগ্রহণ করে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হবে।
সাভারের ট্যানারির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, সেখানকার বর্জ্য থেকে যে ক্রোমিয়াম পাওয়া যাচ্ছে, তা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ঝুঁকির।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের সাথে আলোচনা করে বিষয়টির সুরাহা করতে চায় পরিবেশ মন্ত্রণালয়।
বৈঠকে প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে বলা হয়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সুনির্দ্দিষ্ট কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। নির্বাচনের পর বর্তমান সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ১০০ দিনের কর্মসূচিতেও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য জাতীয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ফ্রেমওয়ার্ক প্রণয়ন, সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের উৎপাদন ব্যবহার হ্রাসে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, উৎপাদনকারীর সম্প্রসারিত দায়িত্বের (ইপিআর) খসড়া প্রস্তুতকরণ, প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধ, স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে কার্যকর পরিবীক্ষণের পরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে ওই সকল সুপারিশ বিবেচনায় নিয়েছে। যা বাস্তবায়নে ৯ দফা কর্মসূচি গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
আজ ১৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার সোনালী কাবিনের কবি খ্যাত আল মাহমুদের ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কবি আল মাহমুদ গবেষণা কেন্দ্র ও স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী স্মরণ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পৌর এলাকার মৌড়াইল কবরস্থানে কবি আল মাহমুদের কবর জিয়ারত ও দোয়ার মাধ্যমে কর্মসূচির শুরু হয়। এ দোয়া অনুষ্ঠানে কবি পরিবারের সদস্য, ভক্ত কবি-সাহিত্যিক ও কবি আল মাহমুদ গবেষণা কেন্দ্র ও স্মৃতিপরিষদের নেতাকর্মীসহ স্থানীয় লোকজন অংশ নেয়। তিন দিনব্যাপী চলবে স্মৃতি পরিষদের স্মরণোৎসব।
শনিবার বিকেলে স্মরণ উৎসবের প্রথমদিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নিয়াজ মুহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্মরণ উৎসব উদ্বোধন করেন কবি আল মাহমুদ গবেষণা কেন্দ্র ও স্মৃতি পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ এ. জেড. এম. আরিফ হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনষ্টিটিউটের মহাপরিচালক অধ্যাপক মো. আসাদুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন কবি ও গবেষক অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম খাদেম, কবি মনসুর আজিজ, কবি তাজ ইসলাম, কবি রহমান মজিদ, কবি সাদমান শাহিদ। বিশেষ আলোচক ছিলেন কবি ও গবেষক ইমরান মাহফুজ।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন কবি আল মাহমুদ গবেষণা কেন্দ্র ও স্মৃতি পরিষদের সভাপতি মো. ইব্রাহিম খান সাদত। কবির এ স্মরণ উৎসবে অংশ নেন কবির ছেলে মীর মোহাম্মদ মনির, মীর মোহাম্মদ আনিস ও বড় মেয়ে আতিয়া আমির, ছোট মেয়ে ফাতেমা মীরজিমি এবং তাদের ছেলে-মেয়েরাও অংশ নিয়েছেন।
আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সোনালি কাবিন আল মাহমুদের অমর সৃষ্টি। আর এটি বাংলা সাহিত্যে অনন্য সংযোজন। তারা বলেন, আল মাহমুদ শেকড় সন্ধানী কবি। তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি একাধারে ভাষা সৈনিক ও বীরমুক্তিযোদ্ধা। অথচ বিগত সময়ে তার উপর অনেক অবহেলা করা হয়েছে। তার মৃত লাশের সাথে রাজনীতি করা হয়েছে। তারা বলেন, একজন বীরমুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আল মাহমুদকে স্বীকৃতি দিতে হবে। আল মাহমুদকে পাঠ করতে হবে। তাকে ধারণ করতে হবে। বর্তমান প্রজন্মের উচিৎ আল মাহমুদকে বেশি বেশি করে চর্চা করা।
চলারপথে রিপোর্ট :
আজ ২০ এপ্রিল রাঙামাটির নানিয়ারচর বুড়িঘাটের চিংড়ি খালের ছোট দ্বীপে চির নিন্দ্রায় শায়িত থাকা বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফের শাহাদাৎ বার্ষিকী।
বাঙ্গালী জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালের এই দিনে বুড়িঘাটে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখ সমরে মর্টার শেলের আঘাতে শহীদ হয়েছিলেন।
উইকিপিডিয়ার তথ্যে ৮ ই এপ্রিল থাকলেও মূলত তারিখটি হবে ২০ এপ্রিল ১৯৭১।এই দিনটি নানিয়ারচরবাসীর জন্য রক্তে ঝরা দিন।
এ মহান বীর ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে ২০শে এপ্রিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন । ২৬মার্চ যুদ্ধ শুরু হলে সহকর্মীদের সঙ্গে তিনিও ছুটে আসেন পার্বত্য চট্টগ্রামে। রাঙামাটি জেলার নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাটে শত্রু বাহিনীর নৌযান একাই ধ্বংস করেন ।
বাঙালীর এই মহান যোদ্ধা ১৯৪৩ সালের পহেলা মে ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার পিতা ইমাম মুন্সি মেহেদি হাসান এবং মাতা মুকিদুন্নেসার ঘরে জন্মগ্রহণ করেন ।
পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর ২নং কমান্ডো ব্যাটেলিয়ানের দুই কোম্পানি সৈনিক ৭টি স্পিড বোট ও ২টি লঞ্চ রাঙামাটি-মহালছড়ি নৌপথের আশেপাশে অবস্থানরত মুক্তিবাহিনীর উপর আক্রমণ করে। ৬টি লঞ্চে অস্ত্র গোলাবারুদ মজুদ ও মর্টার সজ্জিত ছিলো। পাকিস্তানী বাহিনী মুক্তিবাহিনীর অবস্থান টের পাওয়া মাত্রই তাদের অবস্থানের উপর মর্টারের গোলাবর্ষণ শুরু করে। তাদের এই অতর্কিত আক্রমণে মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে।
এই সুযোগে হঠাৎ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কমান্ডো ব্যাটেলিয়নের দুই কোম্পানি সৈন্য, বেশ কয়েকটি স্পীড বোট এবং দুটি লঞ্চে করে বুড়িঘাট দখলের জন্য আক্রমন করে। মর্টার আর ভারী অস্ত্র দিয়ে চালানো আক্রমণে প্রতিহতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ। এই লড়াকু সৈনিকের একসময় পাকবাহিনীর মর্টারের গোলার আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় তার দেহ।
বাংলার অসীম সাহসী বীর মুন্সি আব্দুর রউফ এর দেহ পরবর্তীতে বীরমুক্তি যোদ্ধা দয়ালকৃষ্ণ চাকমা উদ্ধার করে বুড়িঘাটের চিংড়ি খাল সংলগ্ন টিলায় সমাহিত করেন।
১৯৯৬ সালে তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর)-এর উদ্যোগে সমাহিত স্থানটিতে নির্মিত করেন বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফের সমাধি সৌধ।
মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান বিবেচনা করে বাংলাদেশ সরকার তাকে বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত করেন এবং বাংলাদেশ রাইফেলস ১৯৭৩ সালে সিপাহী মুন্সি আব্দুর রউফকে ল্যান্স নায়েক পদে মরোণোত্তর পদবিতে পদোন্নতি প্রদান করেন, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ তার জীবনের বিনিময়ে রক্ষা করেন সহযোদ্ধার জীবন এবং পাকিস্তানী বাহিনীর বহু সৈন্যকে প্রতিহত করেছেন।
পার্বত্য অঞ্চলের দূর্গম নানিয়ারচর বুড়িঘাটে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া এই মহান বীরকে নিয়ে নানিয়ারচরবাসী গর্ববোধ করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
সৌদি আরবে পবিত্র মক্কায় ওমরাহ শেষে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের নিহত তিন বাংলাদেশির পরিবারে চলছে শোকের মাতম। সন্তান, নাতি-নাতনিকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে বৃদ্ধা মা আলেয়া বেগম। শুধু অবাক চোখে চেয়ে রয়েছেন ছেলে, নাতি-নাতনির ছবির দিকে; আর তার দুই চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে পানি।
সরেজমিনে আজ ৬ আগস্ট রবিবার নিহত মোবারক হোসেনের শহরের দক্ষিণ ঝিলটুলীর বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায়, সন্তান, নাতি-নাতনিকে হারিয়ে বৃদ্ধা আলেয়া বেগমের শুধু চোখ বেয়ে পানি ঝড়ছে। অসুস্থ আলেয়া বেগম কোনো কথাই বলতে পারছেন না। মোবাইলে ছেলে, নাতি নাতনিদের ছবির দিকে চেয়ে আছেন। এ ছাড়া বড় ভাইকে হারিয়ে ভাই-বোনদের আহাজারিতে পরিবেশ ভারি হয়ে উঠেছে।
সৌদি আরবে পবিত্র মক্কায় ওমরাহ পালন শেষে দাম্মামে নিজ বাড়িতে ফেরার পথে আরবের আল-কাসিম এলাকায় ৫ আগষ্ট বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টার দিকে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের তিন বাংলাদেশি মারা যান। নিহতরা হলেন মোবারক হোসেন (৪৮), তার ছেলে তানজিল আব্দুল্লাহ মাহি (১৫) ও মেয়ে মাহিয়া (১৩)। মাহি ওই দেশের নবম শ্রেণিতে ও মাহিয়া সপ্তম শ্রেণিতে পড়ালেখা করতো।
একই সময় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন মোবারক হোসেনের স্ত্রী শিখা আক্তার (৪০) ও বড় মেয়ে মিথিলা ফারজানা মীম (১৯)। উচ্চ শিক্ষার জন্য চলতি মাসের ২৩ তারিখ মীমের কানাডা যাওয়ার কথা ছিল। তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুর শহরের দক্ষিণ ঝিলটুলিতে ২০০৬ সাল থেকে বসবাস করে আসছেন শেখ মোহাম্মদ আলী। তিনি ৫ ছেলে ও ৩ মেয়ের জনক। ভাই বোনদের মধ্যে দ্বিতীয় মোবারক হোসেন।
পরিবার সূত্রে আরও জানা যায়, মোবারক হোসেন দারিদ্রতা ঘুচাতে বিশ বছর আগে পাড়ী জমান সৌদি আরবে। এরপর দুই ভাইকে নিয়েছেন সৌদি এবং এক ভাইকে পাঠিয়েছেন দুবাইয়ে। মোবারক হোসেন স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে সৌদি আরবের দাম্মাম শহরে বসবাস করতেন। সেখানে তার কার রিপেয়ার শপ (গাড়ী মেরামতের দোকান) রয়েছে।
মোবারক হোসেনের ছোট ভাই জাহাঙ্গির হোসেন বলেন, ৬ মাস আগে বড়ভাই ও তার স্ত্রী সন্তান দেশে এসে কিছুদিন থেকে পুনরায় সৌদি চলে যান। ভাইয়ের বড় মেয়ে মিথিলা ফারজানা মীমের ২৩ আগস্ট উচ্চ শিক্ষার জন্য কানাডায় যাওয়ার কথা ছিল। এ কারণে স্ত্রী, ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে ওমরাহ করতে যান তিনি। ফেরার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
মোবারক হোসেনের বাবা শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, আমার মোবারকের জন্যই আজ আমাদের অবস্থার উন্নতি। কি করলে আমরা একটু ভালো থাকবো, সব সময় ওর মাথায় এই চিন্তাই থাকতো। বলতো আব্বা আপনি কোনো চিন্তা করবেন না, যখন যা লাগবে আমাকে জানাবেন। আমার কোনো কিছুই চাওয়া লাগতো না ওর কাছে।
তিনি বলেন, সংবাদ পাওয়ার পর আমার ছেলের শ্যালক সৌদি চলে গেছেন। আমার ছেলে, নাতি-নাতনিদের মরদেহ দেশে আনার কথা বলেছি। ওদের এক নজর শেষ দেখা দেখতে চাই। সরকার যেন আমার ছেলে ও নাতিদের মরহেদ দেশে আনার ব্যবস্থা করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার বর্ষাপাড়া জাগ্রত সংঘের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৮ দলীয় ঐতিহ্যবাহী হা-ডু-ডু খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৪ অক্টোবর শনিবার সকাল থেকে উপজেলার সোনার বাংলা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দিনব্যাপী এ খেলা শুরু হয়।
জেলা প্রশাসক কাজী মাহাবুবুল আলম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ৮ দলীয় এ হাডুডু খেলার উদ্বোধন করেন।
এই হাডুডু খেলার ফাইনালে গোপালগঞ্জ সদর উপজেরার নকড়িরচর যুব সংঘ ২-১ গোলে টুঙ্গিপাড়া যুব সংঘকে পরাজিত করে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করেন।
বর্ষাপাড়া জাগ্রত সংঘের সভাপতি রুবেল বিশ্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর অ্যাসাইনমেন্ট অফিসার ও সোনার বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি আফরোজা বিনতে মনসুর (গাজী লিপি), হিরণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাজাহারুল আলম পান্না প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
প্রধানমন্ত্রীর অ্যাসাইনমেন্ট অফিসার ও সোনার বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি আফরোজা বিনতে মনসুর (গাজী লিপি) বলেন, খেলাধুলা শরীর ও মনকে ভালো রাখে। যুব সমাজ যাতে মাদক ও মন্দ কাজ থেকে দূরে থাকে তাই আমরা প্রতি বছরই এখানে হা-ডু-ডু, ভলিবলসহ বিভিন্ন প্রকার খেলার আয়োজন করে থাকি। আমাদের এ ধরণের খেলাধুলা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।