চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় মোহন মিয়া (২৬) নামে এক যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ ৬ নভেম্বর বুধবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া পৌরশহরের তারাগন এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। নিহত মোহন মিয়া ওই এলাকার শফিকুল ইসলামের ছেলে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি মোহন মিয়ার স্ত্রী প্রবাসে যান। প্রতিদিনই তাদের মধ্যে নানা বিষয় নিয়ে কথা হতো। গত রাতে খাবার খেয়ে নিজ ঘরে ঘুমাতে যান মোহন মিয়া। সকালে ঘুম থেকে উঠতে দেরি হওয়ায় পরিবারের লোকজন তাকে ডাকাডাকি করে। কিন্তু ভেতর থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে জানালা দিয়ে দেখে টিনের ঘরের তীরের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় মোহন মিয়া ঝুলে আছেন। স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দিলে দ্রুত এসে সেখান থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহতের বাবা শফিকুল ইসলাম বলেন, কিছুদিন আগে মোহনের স্ত্রী সৌদি আরব গেছে। সন্ধ্যার দিকে তার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে শুনেছি। তাদের মধ্যে কোনো ঝামেলা ছিল কিনা বলতে পারছি না। তার একটা সন্তান রয়েছে। এভাবে সে মরে যাবে, তা কল্পনাও করতে পারছি না।
আখাউড়া থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল হাসিম বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহ থেকে এ ঘটনা ঘটেছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর বিস্তারিত জানা যাবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় আজ ৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকালে পৌরশহরের সড়ক বাজারে অভিযান চালিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখা অফিস।
আখাউড়া থানা পুলিশের সহযোগিতায় অভিযান পরিচালনা করেন জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মেহেদী হাসান।
এসময় তৈরি পোষাকের দোকান, কসমেটিক্স ও মাংসের দোকান অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানকালে রং ফর্সাকারী নিষিদ্ধ ক্রীম বিক্রির অপরাধে কসমেটিক্স ব্যবসায়ী ঝমঝম ষ্টোরকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা করা হয়। তাছাড়া এক দরের দোকান ব্যতীত তৈরি পোষাকে মূল্য ট্যাগ না লাগাতে ব্যবসায়ীদেরকে সতর্ক করা হয়। মাংসের দোকান মালিককদেরকে মাংসে কৃত্রিম রং ব্যবহার না করতে বলা হয় এবং মূল্য তালিকা টানানোর জন্য সচেতন কনে অভিযানকারী দল।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মেহেদী হাসান বলেন, সড়ক বাজারের অধিকাংশ কাপড়ের দোকানে কাপড়ের গায়ে মূল্য ট্যাগ লাগানো আছে। ক্রেতারা দরদাম করে ক্রয় করছেন। এক দরের দোকান না হলে এটা করা যাবে না এ ব্যপারে ব্যবসায়ীদেরকে সতর্ক করেছি। রং ফর্সাকারী নিষিদ্ধ ক্রীম বিক্রিয় করায় এক কসমেটিক্স ব্যবসায়ীকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
পবিত্র রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখে আমাদের অভিযান চলছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। এসময় উপস্থিত ছিলেন আখাউড়া থানার সাব ইন্সপেক্টর আবির।
চলারপথে রিপোর্ট :
আজ ৬ ডিসেম্বর আখাউড়া মুক্ত দিবস। দিবসটি উপলক্ষে আজ ৬ ডিসেম্বর শুক্রবার সকালে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মসূচির মধ্যে ছিল পুষ্পস্তবক অর্পণ, শোভাযাত্রা, জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও আলোচনা সভা। এর আগে মোমবাতি জ্বালিয়ে শহীদদের স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানানো হয়। সকাল সাড়ে ৯টায় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে কর্মসূচি শুরু হয়। পরে উপজেলা পরিষদ থেকে শোভাযাত্রা শুরু হয়ে পোস্ট অফিসের সামনে শেষ হয়। সেখানে জাতীয় সঙ্গীতের সুরে পতাকা উঠানো হয়। আখাউড়া উপজেলা প্রশাসন, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিএনপি, জামায়াত, সাংবাদিক, শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নেন।
১৯৭১ সালের এই দিনে পোস্ট অফিসের সামনেই জাতীয় পতাকা উঠানো হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি শাখাওয়াত হোসেন খান স্বাধীনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আখউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) গাজালা পারভীন রুহি।
বিশেষ অতিথি ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সজিব মিয়া, আখাউড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীন আব্দু, আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ছমিউদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার সৈয়দ জমশেদ শাহ, বীর মুক্তিযোদ্ধা বাহার মালদার, প্রেস ক্লাব সভাপতি মো. মানিক মিয়া, জামায়াত ইসলামের আমির মো. ইকবাল হোসেন, মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক ডা. এনামুল হক মামুন। বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মো. জালাল হোসেন মামুনের সঞ্চালনায় এতে স্বাগত বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের প্রধান উপদেষ্টা দীপংকর ঘোষ নয়ন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন থেকে তেলাওয়াত ও গীতা থেকে পাঠ করা হয়। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কবল থেকে আখাউড়া মুক্ত হয়। গত কয়েক বছর ধরে দিবসটি সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে পালিত হয়ে আসছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার ৩টি কলেজের ফল বিপর্যয় ঘটেছে। এসব কলেজের পাশের হার ৩১ থেকে ৫৯%। তিন কলেজ থেকে কেউ জিপিএ-৫ পায়নি। অপরদিকে ব্যক্তিগত ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত একটি কলেজ ২০জন জিপিএ-৫ সহ শতভাগ পাশ করেছে।
আজ ২৬ নভেম্বর রবিবার সারাদেশে একযোগে এইচএসসির ফল প্রকাশ হয়েছে।
প্রকাশিত ফলাফল ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, আখাউড়া শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজ থেকে ৫০৭ জন ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নেয়। পাশ করেছে ৩০৪ জন, অকৃতকার্য হয়েছে ২০৩ জন। জিপিএ-৫ নাই। শতকরা পাশের হার ৫৯.৯৬। আখাউড়া জাহানারা হক মহিলা কলেজ থেকে ১৯৮ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেছে ৬২ জন। অকৃতকার্য হয়েছে ১৩৬ জন। জিপিএ-৫ নাই। শতকরা পাশের হার ৩১.৩১। ছতুরা চান্দপুর স্কুল এন্ড কলেজ থেকে ৭৯ জন ছাত্রছাত্রী পরীক্ষা অংশ নিয়ে পাশে করেছে ২৯ জন। ফেল করেছে ৫০ জন। শতকরা পাশের হার ৩৬.৭১। এ কলেজে থেকেও কেউ জিপিএ-৫ পায়নি।
অপরদিকে আখাউড়া ক্যামব্রিয়ান কলেজ থেকে ১০৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাশ করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২০জন।
ফলাফল খারাপ হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে জাহানারা হক মহিলা কলেজের প্রভাষক সুভাষ চন্দ্র দাস বলেন, আমাদের এ ব্যাচটি খুব খারাপ ছিল। যারা অন্যান্য কলেজের ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়নি এমন কম পয়েন্টের ছাত্রীরা আমাদের কলেজে ভর্তি হয়। তাছাড়া ছাত্রীরা নিয়মিত ক্লাশ করেনি।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আবুল হোসেন বলেন, এ বছরের ব্যাচটি করোনার কারণে ভালোভাবে পড়ালেখা করতে পারেনি। এরা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এসএসসি পাশ করেছিল। তাছাড়া দুর্বল ছাত্রছাত্রীরা আখাউড়ায় ভর্তি হয়। এসব কারণে ফলাফল খারাপ হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আদর আলী (৩০) নামে এক যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
আজ ১৫ জুলাই সোমবার দুপুরে উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের ইদিলপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মৃত আদর আলী ওই গ্রামের নিদু মিয়ার ছেলে।
এ ঘটনায় কামরুল ইসলাম নামে আরো একজন গুরুতর আহত হন। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মৃত আদর আলীর স্ত্রী, ১ ছেলে ১ মেয়ে রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আদর আলী দুপুরের দিকে হাঁটতে হাঁটতে বাড়ি সংলগ্ন একটি ওয়ার্কশপে যান। ওই সময় ওয়ার্কশপের লোকজন সেখানে তাদের মতো করে কাজ করছেন। ওয়ার্কশপের ভেতরে প্রবেশ করতেই হঠাৎ অসাবধানতাবশত বিদ্যুতের তারে তার পা লেগে যায়। ওয়ার্কশপের মালিক কামরুল ইসলাম দেখেতে পেয়ে তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে তিনিও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। স্থানীয় লোকজন দেখে তাদের উদ্ধার করেন। এ সময় ঘটনাস্থলেই আদর আলী মারা যান।
গুরুতর আহত কমারুলকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নেয়া হলে অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়। আখাউড়া উপজেলার ধরখার ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য এনু মিয়া বলেন, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একজন ঘটনাস্থলে মারা যান এবং একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়া উপজেলার মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শরীরচর্চা শিক্ষক জেলা প্রশাসকের সামনে জাতীয় সংগীত শুদ্ধভাবে গাইতে না পারার ঘটনায় দেশজুড়ে সমালোচনার রেশ কাটতে না কাটতে আবারো নতুন করে আলোচনায় ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এবার পরীক্ষার হলে বসে এক শিক্ষার্থী টিকটক করে ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাড়ে; যা ইতোমধ্যে ভাইরালও হয়েছে।
বৃহস্পতিবারের ঘটনায় ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্টি হয়।
যদিও ঘটনার পর বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত এসএসসি পরীক্ষার্থী সাব্বির হোসেন ও তার অভিভাবককে ডেকে সতর্ক করেছেন মাত্র।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শশাংক রায় চৌধুরী সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পরীক্ষার হলে মোবাইল এলাও না। এ ঘটনায় ওই ছাত্রের অভিভাবককে ডাকা হয়েছে। পাশাপাশি আজ ৯ এপ্রিল রবিবার গণিত পরীক্ষার দিন হল থেকে অন্তত ১৫টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সঙ্গে বসে তাদের ব্যাপারে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।
জানা গেছে, আখাউড়া উপজেলার মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে আগত এসএসসি পরীক্ষার্থীদের চূড়ান্ত মডেল টেস্ট পরীক্ষা চলছে। গত বৃহস্পতিবার ছিল ইংরেজি দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা। ওই দিন শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন পরীক্ষা চলাকালীন হলে বসে টিকটক ভিডিও তৈরি করে তার ফেসবুকে আইডিতে আপলোড করে। পরীক্ষার হলে টিকটক ভিডিওর পনেরো সেকেন্ডের একটি ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়। এ নিয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্টি হয়।
পরীক্ষার হলে ধারণকৃত টিকটক ভিডিওটিতে দেখা যায়, যেখানে পরীক্ষার উত্তরপত্রসহ কেন্দ্রের ভেতরে বিভিন্ন চিত্র ফুটে উঠেছে একটি ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের মাধ্যমে।
আখাউড়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবুল হোসেন বলেন, এসএসসি পরীক্ষা সামনে রেখে কোনো বিদ্যালয়ে মডেল টেস্ট পরীক্ষার নামে পরীক্ষা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আবার পরীক্ষার হলে বসে মোবাইল ফোনে টিকটক ভিডিও ধারণের প্রশ্নই উঠে না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম সম্প্রতি উপজেলার মোগড়া উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে তিনি বিভিন্ন খোঁজখবর নেন। এ সময় শুদ্ধভাবে জাতীয় সংগীত গাইতে না পারায় জেলা প্রশাসক রাগান্বিত হয়ে ওই বিদ্যালয়ের শরীরচর্চা শিক্ষক মো. সোহরাব হোসেনের বেতন স্থগিত এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।