চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জে ট্রেনের ধাক্কায় মাথায় আঘাত পেয়ে অজ্ঞাতনামা (৬৫) এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। আজ ১৯ নভেম্বর মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে থানাধীন আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহরে রেললাইন এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির (আইসি) এসআই (নি.) সুব্রত বিশ্বাস জানান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মঙ্গলবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে থানাধীন তালশহর এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় অজ্ঞাত এক বৃদ্ধা মারা যায়। লাশ উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে রাখা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ওই বৃদ্ধার লাশের পরিচয় শনাক্তের জন্য পিবিআইকে ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিতে বলা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন আওয়ামী লীগের আশুগঞ্জ উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি মো. আনিসুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ৪ আগস্ট সোমবার বিকেল ২টা ৪৫ মিনিটের দিকে আশুগঞ্জ বন্দর এলাকার বিওসি ঘাট থেকে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চলমান ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’-এর আওতায় এই অভিযান পরিচালিত হয়।
আনিসুর রহমান আওয়ামী লীগের মনোনয়নে আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের প্রথম নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন।
আশুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. খায়রুল আলম বলেন, গোপন সূত্রের তথ্যের ভিত্তিতে বিওসি ঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র, নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন আওয়ামী লীগের পক্ষে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগ রয়েছে। আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা এবং আশুগঞ্জ থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে একাধিক মামলা রয়েছে।
ওসি আরো বলেন, আটক হওয়া আনিসুর রহমান বর্তমানে আশুগঞ্জ থানার হেফাজতে রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
দাফন সম্পন্ন
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের লক্ষীমুড়া গ্রামের নিহত হারুন মিয়ার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। রোববার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় মনিপুর বন্দরবাজার বালুর মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় স্থানীয় হারুন মিয়ার আত্মীয় স্বজনসহ সহস্রাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করে। এর আগে শনিবার (১০ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে হারুন মিয়া নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরদিন দুপুরে ময়নাতদন্তের পর হারুন মিয়ার মরদেহে এসে পৌঁছায় তার নিজ এলাকায়। মরদেহ পৌঁছার পর থেকেই স্থানীদের ভিড় বাড়ে তার বাড়িতে। এরপর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। জানাজায় উপস্থিত ছিলেন, বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাজু আহমেদ, পত্তন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, আওয়ামীলীগ নেতা হৃদয় আহমেদ জালাল, সাবেক মেম্বার সেলিম মিয়া, হোসেন মিয়া, মাওলানা সিরাজ আকরামসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা। নিহত হারুন মিয়ার ভাতিজা সোহেল বলেন, দুধ মিয়া সরাসরি করিম মিয়ার পক্ষে নিয়েছে। যার কারণে আমার চাচা হারুন মিয়া হত্যার শিকার হয়েছে। আমার চাচার হত্যার সাথে দুধ মিয়া জড়িত। দুধ মিয়াসহ যারা আমার চাচাকে হত্যা করেছে তাদের ফাঁসির দাবি জানাই।
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ জানান, শান্তিপূর্ণ ভাবে হারুন মিয়ার জানাযা সম্পন্ন হয়েছে। এলাকায় স্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অভিযুক্ত আসামীদের দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে তিনি জানান।
আশুগঞ্জ প্রতিনিধি :
আশুগঞ্জ উপজেলায় সিঁদ কেটে ঘরে ঢুকে মা ও দুই সন্তানকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। আশুগঞ্জ উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের খোলাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে স্থানীয়রা তিনজনকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠান।
আহতরা হলেন- মনির হোসেনের স্ত্রী আকলিমা (৩৫), তার দুই সন্তান মোহাম্মদ (৮) ও মারিয়া (৬)।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মনির মিয়া ইটভাটা শ্রমিক। গ্রামের অন্য বাড়িঘর থেকে মনির মিয়ার বাড়িটি কিছুটা দূরে। সেখানে চারচালা টিনের ঘর ও মেঝে কাঁচা অবস্থায় আছে। ইট তৈরির মৌসুম থাকায় তিনি ভাটায় আছেন। বাড়িতে শুধু তার স্ত্রী ও দুই শিশুসন্তান থাকে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুর রউফ বলেন, বুধবার রাতের কোনো এক সময় ঘরের সিঁদ কেটে ভেতরে ঢুকে মনিরের স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। সকালে এলাকাবাসীর মাধ্যমে খবর পেয়ে এসে দেখি তিনজন রক্তাক্ত ও অচেতন অবস্থায় বিছানায় পড়ে আছে। তাদের দ্রুত স্থানীয়দের দিয়ে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠানো হয়।
আব্দুর রউফ আরো বলেন, তিনজনকে কুপিয়ে জখম করলেও ঘরের কোনো জিনিস নেয়নি। বিষয়টি রহস্যজনক মনে হচ্ছে। পুলিশকে খবর দিয়েছি।
এ বিষয়ে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজাদ রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে স্থানীয় আলম ব্রাদার্স এগ্রো ফুড এবং এস আলম এগ্রো ফুড নামের দুটি ডায়ার মিল (বয়লার) পরিবেশের ক্ষতি করে চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
তাদের মিলের কালো ধোঁয়ার সঙ্গে উড়ন্ত ছাই ও দূষিত কালো পানি মিল ঘেঁষা খালে পড়ে ভরাট হওয়ার পাশাপাশি কৃষি জমিরও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
এতে ওই মিলগুলোর পাশে থাকা জমির ধান এখন হুমকির মুখে। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়াসহ ডায়ার মিল দুটি অন্যত্র সরিয়ে নিতে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগসহ আবেদন জানিয়েছে গ্রামবাসী।
গ্রামবাসীর দেওয়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, আশুগঞ্জ উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের খড়িয়ালা গ্রামে আবাসিক এলাকায় আলম ব্রাদার্স এগ্রো ফুড এবং এস আলম এগ্রো ফুড নামের দুটি ডায়ার মিল (বয়লার) স্থাপন করা হয়েছে। যা পরিবেশ সম্মত না হওয়ায় মিল থেকে উড়ন্ত ছাই ও ধূলা বাতাসের সঙ্গে উড়ে গ্রামবাসীর জন জীবনে অসুবিধার সৃষ্টি করছে। এতে শিশু, বৃদ্ধসহ নানা বয়সী মানুষ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। এছাড়াও মিলের গরম পানি ও ছাই পার্শ্ববর্তী খালে পড়ে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ফলে খালটি দিয়ে এখন কোনোভাবেই পানি প্রবাহিত হচ্ছে না। এতে মিলের গরম পানি ও ছাইয়ের কারণে কৃষিজমির ফসল নষ্ট হচ্ছে। গ্রামবাসী বিষয়টি মিল মালিকদের বার বার জানালেও তারা তাতে কর্ণপাত করেনি। বরং উল্টো গ্রামবাসীকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি-ধমকি দিয়ে বে-আইনিভাবে মিলের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
সরেজমিন খড়িয়ালা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ধানি জমির পাশেই রয়েছে একটি সরকারি খাল। এর পাশেই গড়ে তোলা হয়েছে ওই মিল। মিলের পেছন অংশে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি খালটি পোড়া ধানের কালো ছাইয়ের স্তূপ জমে ভরাট হয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে পড়েছে। এতে কৃষকরা জমি চাষের সময় খালের পানি ব্যবহার করতে পারছে না। এছাড়াও মিলের চিমনি দিয়ে অনবরত নির্গত হচ্ছে কালো ধোঁয়া।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ফরিদা বেগম বলেন, আমি ৩৭ শতক জমিতে ধানের চাষ করেছিলাম কিন্তু মিলের ছাইয়ের কারণে তা নষ্ট হয়ে গেছে। শুধু আমার জমিই নয় খালের পাশে থাকা অনেক জমির ধান এখন হুমকির মুখে।
তিনি আরো বলেন, এখানে একটি ডোবা রয়েছে সেখানে চাষের জন্য মাছ ছাড়া হলে সেগুলোও মারা যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা রাকিব মিয়া বলেন, মিলের কালো দূষিত ধোঁয়ার কারণে গ্রামের মানুষের অনেক কষ্ট হচ্ছে। সাদা কাপড় পড়ে থাকা যায় না। এছাড়া সরকারি যে খালটি ছাইয়ের কারণে ভরাট হয়ে গেছে সেটি মেঘনা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত। কিন্তু ভরাটের কারণে পানি প্রবাহিত হচ্ছে না। আমরা এ থেকে মুক্তি চাই।
মো. ফয়সাল বলেন, ছাই এবং দূষিত পানিতে খালটির এখন করুণ অবস্থা। কৃষকরা জামি চাষ করার জন্য খালের পানি ব্যবহার করতে পারছে না। এতে করে জমিগুলো এখন নষ্ট হওয়ার পথে। আমরা খালটিকে পুনরায় আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সরকারের দৃষ্টি কামনা করছি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আলম ব্রাদার্স এগ্রো ফুড এবং এস আলম এগ্রো ফুডের মালিক আলম মিয়া জানান, আশুগঞ্জে ৪০টি ডায়ার মিল রয়েছে। আমরা এই সমিতির আওতাভুক্ত। আমাদের পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র আছে। আমরা পরিবেশের সব আইন কানুন মেনেই মিল পরিচালনা করছি। তারা অন্য বিরোধের জেরে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. খালেদ হাসান বলেন, এ বিষয়ে আমাদের হাতে একটি অভিযোগ এসেছে। দ্রুত সরেজমিন তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে ভারতীয় পুরোহিতের কটূক্তি এবং সেই বক্তব্যকে বিজেপির এক নেতার সমর্থন দেওয়ার প্রতিবাদে আশুগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ৪ অক্টোবর শুক্রবার জুমার নামাজের পর ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ গোলচত্বর থেকে আশুগঞ্জ উপজেলা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত ও ছাত্র জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিলটি বের আশুগঞ্জ রেলগেইট হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আবার গোল চত্বর এসে মিছিলটি শেষ করে শুরু হয় প্রতিবাদ সমাবেশ।
প্রতিবাদ সমাবেশে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আহ্বায়ক এফরান সিদ্দিকি ঈশানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মুফতি রেদোয়ান হোসেন আল কাদ্বেরীর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি বক্তব্য রাখেন আশুগঞ্জ উপজেলা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতে সভাপতি অধ্যক্ষ আলহাজ্ব কাজী মোঃ মহিউদ্দিন মোল্লা।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন মাওলানা জোবায়ের আল মাহমুদ, মাওলানা শফিকুল ইসলাম, ক্বারী আল আমিন আল ক্বাদেরী, ফখরুল ইসলাম নিহামী, খন্দকার আনিসুর রহমান আল ক্বাদেরী, খন্দকার বাবুল শাহ, মিজানুল রহমান, সোহাগ মিয়া, জোবায়েদ মোল্লা, নুর মোহাম্মদ জামান, আলাউদ্দিন আহম্মেদ, ফয়সাল আহমেদ, মোহাম্মদ মারুফ, আদিব, শ্রাবণ, রাসেল ইসলাম, মারুফ খান, রাহাদ, আমানত উল্লাহ, মোহাম্মদ মোহন, ফাহিমসহ বিশেষ ব্যক্তিবর্গ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘গত আগস্ট মাসে রাসুল (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তি করেন ভারতের মহারাষ্ট্রের হিন্দু পুরোহিত রামগিরি মহারাজ। তাঁকে সমর্থন করেছেন বিজেপির বিধায়ক নীতেশ রানে। এ দু’জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হলেও এখনো রাজ্য সরকার তাঁদের গ্রেফতার করেনি। এর প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে মহারাষ্ট্রের মুসলিম জনতা। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। মহানবীকে অবমাননাকারীদের গ্রেফতার করে সঠিক বিচারের দাবি জানাই।’