অনলাইন ডেস্ক :
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। এই পরোয়ানার প্রতি সমর্থন জানিয়েছে কানাডা। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, আমরা আন্তর্জাতিক আইনের পক্ষে দাঁড়াই এবং আন্তর্জাতিক আদালতের সব নিয়ম ও রায় মেনে চলব। এটি আমাদের পরিচয়ের অংশ।
আইসিসি গত বৃহস্পতিবার এই পরোয়ানা জারি করে। এতে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ এর অভিযোগ আনা হয়। এই অপরাধগুলো ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে সংঘটিত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। একইসঙ্গে হামাসের সামরিক প্রধান মোহাম্মদ দেইফের বিরুদ্ধেও পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
২২ নভেম্বর শুক্রবার যুক্তরাজ্যের সরকার ইঙ্গিত দেয়, বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাজ্যে গেলে তাকে আইসিসি পরোয়ানার ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হতে পারে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের মুখপাত্র জানান, যুক্তরাজ্য সব সময় তার আইনগত বাধ্যবাধকতা মেনে চলে, যা দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক আইনে নির্ধারিত। তবে নেতানিয়াহুকে গ্রেফতার করা হবে কি না, এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।
যুক্তরাজ্য ও কানাডার পাশাপাশি বেলজিয়াম, ফ্রান্স, নরওয়ে, সুইডেন, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং তুরস্কসহ আরো কয়েকটি দেশ আইসিসির এই পদক্ষেপকে সমর্থন করেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র এই পরোয়ানাকে ‘অযৌক্তিক’ বলে আখ্যা দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, আইসিসির এই সিদ্ধান্তে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে কোনো সমতুল্যতা নেই। আমরা সবসময় ইসরায়েলের পাশে থাকব।
অন্যদিকে, মার্কিন সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স এই পরোয়ানাকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, যে কোনো পক্ষের বেসামরিক নাগরিকদের ওপর নির্বিচার হামলা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন এবং মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনে।”
উল্লেখ্য, জি-সেভেন জোটের দেশগুলো—যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং যুক্তরাষ্ট্র—আইসিসির এই পদক্ষেপে বিভক্ত। কানাডা এবং যুক্তরাজ্য আইসিসির রায় মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দিলেও যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপকে নিন্দা জানিয়েছে। তবে আর্জেন্টিনা, অস্ট্রিয়া এবং হাঙ্গেরির মতো কিছু দেশ আইসিসির সিদ্ধান্তের সাথে দ্বিমত পোষণ করেছে।
আইসিসির এই পরোয়ানা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভিন্নমত তৈরি করেছে। একদিকে কিছু দেশ আইনের প্রতি আনুগত্য দেখাচ্ছে, অন্যদিকে কয়েকটি দেশ এই সিদ্ধান্তকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
অনলাইন ডেস্ক :
মহাকাশ স্টেশনকে আগামী বছর তিন থেকে ছয়টি মডিউলে প্রসারিত করার পরিকল্পনা করছে চীন। নাসার নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের (আইএসএস) মেয়াদও প্রায় শেষের দিকে। ২০৩০ সালের পরে আইএসএস বিলুপ্ত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তিয়াংগং বা সেলেস্টিয়াল প্যালেস নামে পরিচিত চীনের স্ব-নির্মিত মহাকাশ স্টেশনকে আইএসএস’র বিকল্প হিসাবে গড়ে তুলতে চাইছে দেশটি। এ বিষয়ে চীনের প্রধান মহাকাশ ঠিকাদারের একটি দল চায়না একাডেমি অব স্পেস টেকনোলজি (সিএএসটি) জানিয়েছে, চীনা মহাকাশ স্টেশনের কর্মক্ষম জীবনকাল হবে ১৫ বছরেরও বেশি। বুধবার আজারবাইজানের বাকুতে ৭৪তম আন্তর্জাতিক মহাকাশচারী কংগ্রেসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তিয়াংগং ২০২২ সালের শেষের দিক থেকে সম্পূর্ণরূপে চালু হয়েছে। ৪৫০ কিলোমিটার (২৮০ মাইল) পর্যন্ত কক্ষপথের উচ্চতায় সর্বাধিক তিনজন মহাকাশচারীকে ধারণ করতে পারে। ছয়টি মডিউলে সম্প্রসারণের পর এর ভর হবে পরে ১৮০ টন। যদিও তিয়াংগং এখনো নাসার ভরের মাত্র ৪০ শতাংশ।
অনলাইন ডেস্ক :
সিরিয়ার নতুন নেতা আহমেদ আল-শারার সাথে শুক্রবার দামেস্কে সাক্ষাত করেছেন ফ্রান্স ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। তবে সাক্ষাতে ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর জ্যাঁ-নোয়েল ব্যারোতের সাথে হাত মেলালেও জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যানালেনা বেয়ারবকের সাথে হাত মেলাননি আল-শারা। তিনি আগে আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি নামে পরিচিত ছিলেন।
রাজনীতির অভ্যর্থনার প্রোটোকলে হাত মেলানো খুব সাধারণ ঘটনা। কিন্তু এটি এড়িয়ে গেছেন সিরিয়ান নতুন প্রশাসনের প্রধান। যা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ আরবের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। জার্মান দৈনিক বিল্ড এই ঘটনাটিকে ‘হ্যান্ডশেক কেলেঙ্কারি’ আখ্যা দিয়েছে।
দ্য নিউ আরবের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ইউরোপের এই দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি সমর্থনের চিহ্ন হিসাবে সিরিয়া সফর করেছিলেন, যেখানে তারা গত মাসে বাশার আল-আসাদের শাসনের পতনের পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিকে সাহায্য করার জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।
এছাড়া জাতিগত ও ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলোর পাশাপাশি নারীদেরও সংবিধান প্রণয়ন প্রক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ সরকারে অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানাতে এই সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিল।
কিন্তু দামেস্কের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে পৌঁছানোর পর আল-শারা ব্যারোতের দিকে তার হাত বাড়িয়ে দিলেও বেয়ারবকের দিকে দেননি। বরং শারা এই সময় তার হাত বুকে রেখেছিলেন।
ইসলামের কিছু কঠোর ব্যাখ্যা বিপরীত লিঙ্গের লোকেদের মধ্যে শারীরিক যোগাযোগ নিষিদ্ধ করে যদি তারা বিবাহিত না হয়।
এই অবস্থা দেখে ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যারোত নিজেও আর আল-শারার দিকে হাত বাড়িয়ে দেননি, কিন্তু আল-শারা যখন হাতে মেলাতে এগিয়ে দেন তখন তিনিও হাত মেলান।
এ নিয়ে বেয়ারবক বলেন, ‘আমি যখন সেখানে যাচ্ছিলাম, তখন আমার কাছে স্পষ্ট ছিল যে স্বাভাবিকভাবেই হাত মেলানোর ঘটনা ঘটবে না। কিন্তু এটি একইভাবে স্পষ্ট ছিল, শুধু আমি নই, ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও এই বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করতেন। সে অনুযায়ী, ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও তাঁর হাত (আল-শারার দিকে) বাড়াননি।’
সিরিয়া একটি বহুজাতিক ও বিভিন্ন ধর্মের মানুষের রাষ্ট্র। এখানে কুর্দি, আর্মেনিয়ান, আসিরিয়ান, খ্রিস্টান, দ্রুজ, আলাউই শিয়া এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ সুন্নি আরবসহ বিভিন্ন গোষ্ঠী বসবাস করে। শারার দল সংখ্যালঘুদের অধিকার এবং স্বাধীনতা সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
বিদ্রোহী সংগঠন হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতা এক সময় আল-কায়েদার সাথে জড়িত ছিলো। বর্তমানে শারার প্রতিবেশীদের আশ্বস্ত করতে চাইছেন, এটি ইসলামি জঙ্গিবাদের শিকড় থেকে দূরে সরে গেছে।
হাকিকুল ইসলাম খোকন
কয়েক বছর ধরেই গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দিয়ে আসছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও তিনি সবসময় এই পথে হাঁটেন না। তবে যখন ব্যবস্থা নেন, তখনই ব্যর্থ হন। কিন্তু সম্প্রতি এবিসি নিউজ ১৫ মিলিয়ন ডলারের বদলে ট্রাম্পের সাথে একটি মানহানির মামলা মিটমাট করেছে।
এ ছাড়া আরো অসংখ্য গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তিনি ও তাঁর সহযোগীরা, যা ইঙ্গিত দিচ্ছে– দ্বিতীয়বার ক্ষমতা গ্রহণের পর মুক্ত সাংবাদিকতার স্বাধীনতা খর্ব করবেন তিনি।
এতে শঙ্কা দেখা দিয়েছে, তাঁর নেতৃত্বে গঠিত যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সরকারকে নিয়ে গণমাধ্যমগুলো স্বাধীনভাবে হয়তো কাজ করতে পারবে না। ট্রাম্প ইতোমধ্যে বলেছেন, যারা তাঁর সাথে অন্যায় করেছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেবেন।
গণমাধ্যম সুরক্ষা আইনজীবী ডেভিড কোরজেনিক বলেছেন, এই দেশে আইনের কোনো পরিবর্তন হয়নি। কিন্তু যা পরিবর্তিত হয়েছে, তা হলো সাংবাদিকতার পরিবেশ ও এটির বিরুদ্ধে বিদ্যমান শত্রুতার তীব্রতা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ট্রাম্পের দুই সহযোগী ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছেন, গণমাধ্যমের ওপর ট্রাম্প এবং তাঁর মিত্রদের চাপ বাড়ছে, এটির তীব্রতা বাড়তে থাকবে।
গত নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ট্রাম্প বিভিন্ন সভা-সমাবেশ ও অন্যান্য বক্তৃতায় গণমাধ্যমকে ১০০ বারের বেশি লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে বিষোদ্গার করেছেন। নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে ট্রাম্প নিউইয়র্ক টাইমসের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দেন। তাঁর নির্বাচনী প্রচারণা ক্যাম্প ওয়াশিংটন পোস্টের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দেয়। এ ছাড়া কমলা হ্যারিসকে নিয়ে সিবিএস নিউজের একটি অনুষ্ঠানে প্রতারণার অভিযোগ আনেন ট্রাম্প।
সর্বশেষ গত মঙ্গলবার নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে মামলা অব্যাহত রাখবেন। তিনি বলেন, এটি করতে আমাদের অনেক অর্থ খরচ হবে। কিন্তু আমাদের গণমাধ্যমকে শক্তিশালী করতে হবে। ট্রাম্পের মুখপাত্র স্টেভেন চিয়ুং বলেন, প্রেসিডেন্ট মিথ্যা ও অনৈতিক প্রতিবেদনের ওপর নজর দেবেন। যেগুলোতে সাধারণ মানুষের কোনো উপকার হয় না, যেগুলো শুধু রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য করা হয়।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের প্রতিনিধি সভায় সরকারের অর্থ ব্যয়-সংক্রান্ত একটি বিল আটকে দেন ট্রাম্প। এতে ট্রাম্পের সাথে জড়িত ছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ক। ওই ঘটনার পর প্রশ্ন ওঠে, ট্রাম্পকে সামনে রেখে প্রেসিডেন্টের সব দায়িত্ব মাস্ক পালন করবেন নাকি। তবে এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে এক সমাবেশে ট্রাম্প বলেছেন, না সে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিচ্ছে না। আমি তাঁর কাছে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব অপর্ণ করেছি– এমন তথ্য বিরোধীদের গুজব। আপনারা জানেন কেন মাস্ক প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না? কারণ তিনি এ দেশে জন্মগ্রহণ করেননি।
এদিকে দ্বিতীয় মেয়াদে শপথ নেওয়ার আগেই বিতর্কের সৃষ্টি করছেন ট্রাম্প। গত সপ্তাহে তিনি পানামা খাল দখলের হুমকি দেন। এবার তিনি হুমকি দিয়েছেন ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গ্রিনল্যান্ড দখলের। নিজের সামাজিক মাধ্যম ট্রুথে ট্রাম্প বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা এবং পুরো বিশ্বের স্বাধীনতার জন্য, যুক্তরাষ্ট্র মনে করে গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
১৯৭৯ সালে ডেনমার্ক থেকে স্বায়ত্তশাসন পেলেও বৈদেশিক সম্পর্ক, নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক বিষয়ে এখনও তাদের ওপর নির্ভরশীল ডেনমার্ক। ১৯৪৬ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যান গ্রিনল্যান্ডকে কেনার জন্য ডেনমার্ককে ১০০ মিলিয়ন ডলার সমমূল্যের স্বর্ণ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এর পর ২০১৯ সালে ট্রাম্পও এই দ্বীপটি কেনার প্রস্তাব দেন। এতে করে ডেনমার্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কূটনৈতিক দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছিল। এর জেরে ট্রাম্প ডেনমার্কে তাঁর আনুষ্ঠানিক সফরও বাতিল করেন।
অনলাইন ডেস্ক :
বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক নৈশভোজে যোগ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় থাইল্যান্ডের ব্যাংককের একটি হোটেলে এ নৈশভোজের আয়োজন করা হয়।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস নৈশভোজে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রর সঙ্গে ছবি তোলেন।
বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে আজ দুপুরে ব্যাংককে পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বিমানবন্দরে প্রধান উপদেষ্টাকে অভ্যর্থনা জানান থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সংযুক্ত মন্ত্রী জিরাপরন সিন্দোপারি।
অনলাইন ডেস্ক :
লাল-সবুজের পতাকা হাতে বিশ্ব ভ্রমণ করেছেন নাজমুন নাহার। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে তিনি ১৬৭টি দেশ ভ্রমণের রেকর্ড গড়েছেন। সর্বশেষ ক্যারিবীয় অঞ্চলের দেশ সেন্ট লুসিয়া ভ্রমণের মাধ্যমে এই কৃতিত্ব অর্জন করেন নাজমুন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী ফিলিপ জোসেফ পিয়ের এক বিশেষ সাক্ষাতে তাঁকে অভিনন্দন জানিয়ে ‘সুপার ব্রেভ গার্ল’ আখ্যা দেন।
ভ্রমণের নতুন রেকর্ড গড়ার পর নাজমুন নাহারকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেন্ট লুসিয়ার অন্যতম প্রধান পত্রিকা ‘দ্য ভয়েস’। খ্যাতনামা সাংবাদিক মার্বেলা অ্যান্থনির লেখায় তাঁর স্বপ্ন, সংগ্রাম ও বিশ্ব অভিযাত্রার কঠিন চ্যালেঞ্জের কথা উঠে এসেছে। নাজমুন নাহার দেশের সুনাম অক্ষুণ্ন রেখে এভাবেই গৌরবের সঙ্গে বাংলাদেশকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন বিশ্ববাসীর কাছে।
২০০০ সালে ভারতের ভূপালের পাঁচমারিতে ‘ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভেঞ্চার প্রোগ্রামে’ অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাঁর বিশ্ব ভ্রমণের সূচনা হয়। এর পর থেকে ছুটে বেড়াচ্ছেন বিভিন্ন দেশ। এই ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালের ১ জুন ১০০তম দেশ ভ্রমণের মাইলফলক স্পর্শ করেন জাম্বিয়া ও জিম্বাবুয়ের সীমান্তের ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাতের ওপর। ১৫০তম দেশ ভ্রমণের মাইলফলক সৃষ্টি করেন আফ্রিকার দেশ সাওতমে অ্যান্ড প্রিন্সিপ। ২০২৩ সালের মে মাস থেকে তিনি এবার অভিযাত্রা শুরু করেছেন দক্ষিণ আমেরিকার দেশ সুরিনাম ও গায়ানা থেকে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ ত্রিনিদাদ ও টোবাগো, গ্রেনাডা, সেন্ট ভিনসেন্ট এবং গ্রেনাডাইন, বার্বাডোস ও সেন্ট লুসিয়া পর্যন্ত।
২২ বছর ধরে এক দেশ থেকে আরেক দেশে বিভিন্ন জনপদের মাঝে বাংলাদেশের পতাকা তুলে ধরছেন নাজমুন নাহার। এ ছাড়া তিনি পরিবেশ রক্ষা ও বাল্যবিয়ে বন্ধের লক্ষ্যে বিশ্বজুড়ে মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরিতে কাজ করেন। নাজমুন বিভিন্ন দেশে ভ্রমণের সময় শান্তি ও ঐক্যের বার্তা পৌঁছে দেন এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশু ও তরুণদের উৎসাহিত করেন।
বেশিরভাগ দেশ সড়ক পথে ভ্রমণ করেছেন নাজমুন। ২২ বছরের বিশ্ব অভিযাত্রার মাঝে তিনি বহু প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়েছেন। মৃত্যুমুখে পড়েছেন বহুবার। তবুও একের পর এক দেশ ভ্রমণ করছেন লাল-সবুজ পতাকা হাতে। শিরোনাম হয়েছেন বিশ্ব গণমাধ্যমে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী, রাষ্ট্রপ্রধান, বিখ্যাত ব্যক্তিরা তাঁকে সংবর্ধনা দিয়েছেন।
বাংলাদেশের লক্ষ্মীপুর সদরে জন্ম নেওয়ায় নাজমুন নাহার সুইডেনের লুন্ড ইউনিভার্সিটি থেকে এশিয়ান স্টাডিজ বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। এ ছাড়া তিনি হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড এশিয়া বিষয়ে পড়াশোনা করেন দক্ষিণ কোরিয়ার সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে। নাজমুন নাহারের আশা, বাংলাদেশের পতাকা হাতে বিশ্বের সব দেশে যাবেন।