চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে চার ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে নবীনগর থানা পুলিশ। গতকাল ২৩ নভেম্বর শনিবার রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের সীতারামপুর ব্রিজের উপর অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন জাহাঙ্গীর (২৮), মোঃ আব্দুল হাদি, মেরাজুল ইসলাম (২৫) মোঃ আবুল কালাম (৩০)। তাদের বাড়ি নরসিংদী রায়পুরা উপজেলার মনিপুর গ্রামে।
পুলিশ জানায়, নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের সীতারামপুর মনতলা সেতুর ওপর শনিবার রাতে অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল একদল ডাকাতরা। খবর পেয়ে নবীনগর থানা পুলিশ ওই সেতুতে অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ দুটি দেশীয় তৈরি পাইপগান (বন্দুক) ও ৪ রাউন্ড কার্তুজসহ ৪ ডাকাতকে আটক করতে সক্ষম হয়।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক বলেন, গ্রেফতারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে। ডাকাতদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও ডাকাতি আইনে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার কাইতলা উত্তর ইউনিয়নের নারুই গ্রাম থেকে জামায়াত ইসলামী ও শিবিরের ৭ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ ৩১ মে শুক্রবার সকাল ১১টায় ওই এলাকার আব্দুর রশিদের বাড়ি থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো: নবীনগর উপজেলার আব্দুর রশিদ (৬৫), বাদল মিয়া (৪৮), শাহিন ইসলাম (২৪), সদর উপজেলার ডা. আবু হানিফ (৬৫), সাহেদ আলম (২১), বাঞ্ছারামপুর উপজেলার আলম (৫৩) ও আশুগঞ্জ উপজেলার মো. মামুন মিয়া (৩৭)।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুব আলম জানান, এলাকায় নাশকতা সৃষ্টি ও আসন্ন নবীনগর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য উপজেলার নারুই গ্রামের রশিদ মিয়ার বাড়িতে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করা জামায়াত-শিবিরের নেতারা একত্রিত হয়ে গোপন বৈঠক করছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই গ্রামে পুলিশ অভিযান চালিয়ে জামায়েত ইসলামী ও শিবিরের ৭ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সেখান থেকে কয়েকজন পালিয়ে যান। ঘটনাস্থল থেকে বৈঠকর ব্যানার, নির্বাচন বিরোধী লিফলেট জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় নবীনগর থানায় মামলা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের শনিবার আদালতে সোপর্দ করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযানে বিটঘর টু শিবপুরগামী রাস্তার উপর থেকে বিদেশি ৪৬ বোতল মদসহ বাইজিদ জমাদ্দার (২৪) নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আজ ৫ অক্টোবর মঙ্গলবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলায় কর্তব্যরত এসআই (নিঃ) আক্কাস আলী সঙ্গীয় অফিসার মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করে। বাইজিদ জমাদ্দার কসবা উপজেলার ব্রাহ্মণগ্রাম (সানখোলা)’ র মৃত মোতালেব এর ছেলে।
গ্রেফতারকৃতের বিরুদ্ধে নবীনগর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ তে মামলা রুজু করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর উপজেলার অবসর প্রাপ্ত সৈনিক সমাজ কল্যাণ সমিতির ৪৩ বছর পূর্তি ও ঈদ পুর্নমিলনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ১৫ জুলাই শনিবার দুপুরে নবীনগর মহিলা ডিগ্রি কলেজ মাঠে বীর মুক্তিযোদ্ধা সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার ও সমিতির সভাপতি আবু জাহের এর সভাপতিত্বে ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিনের সঞ্চালনায় প্রধাণ অতিথির বক্তব্য রাখেন আগরতলা সরযন্ত্র মামলার আসামী সার্জেন্ট মুজিবুর রহমানের ছেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া —৫ আসনের সাবেক এমপি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফয়জুর রহমান বাদল।
এ সময় তিনি বলেন উপজেলার অবসর প্রাপ্ত সেনা সদস্যদের সন্তানরা সহ হতদরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া খরচের জন্য সাধ্যমত সহযোগিতা করে যাবেন, এছাড়াও উপজেলার হত দরিদ্র যে কোনো মানুষের চিকিৎসা সেবার জন্য তিনি সহযোগিতা করনে।আগামী দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন পেলে তার পাশে থাকার জন্য উপস্থিত অবসর সেনা সদস্যদের আহবান করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা অবসর প্রাপ্ত লেফটেন্টে কর্ণেল মো. জি.আর জাহাঙ্গীর, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দিন চৌধুরী সাহান, রফিকুল ইসলাম, এনামুল হক প্রমুখ। অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিক ভাবে সংগঠনে সাবেক এমপি ফয়জুর রহমান বাদলকে আজীবন সদস্য ঘোষণা করা হয় এবং সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রধান অতিথিকে ক্রেস তুলে দেন সভাপতি।
চলারপথে রিপোর্ট :
কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক কে এম মামুন অর রশীদ আজ ২৪ আগস্ট শনিবার নবীনগর প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। এসময় তিনি দেশে বন্যা কবলিত মানুষের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে সকলকে তাদের পাশে দাঁড়াবার আহবান জানান।
আলোচনা কালে তিনি আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের চিত্র তুলে ধরে বলেন, এই ফ্যাসিবাদি দলটি রাষ্টের প্রতিটি স্তম্ভ ও প্রতিটি সেক্টরকে দুর্নীতির আতুড়ঘর বানিয়েছে। তাদের দুঃশাসনে পঙ্গু হওয়া অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সময় প্রয়োজন।
তিনি অন্তর্বর্তীকালিন সরকার রাষ্ট্রের সংস্কারের মধ্য দিয়ে একটা যৌক্তিক সময়ের নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের মধ্যে দিয়ে জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন বলে প্রত্যাশা করেন।
তিনি বলেন, আমি আমার জন্মভূমি নবীনগরে তৃণমুল রাজনীতি থেকে উঠে এসে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে এসেছি। আমি নবীনগরবাসির পাশে থাকতে চাই। আমি দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী। বিএনপি বড় দল হিসাবে গ্রুপিং থাকবে, প্রতিযোগিতা থাকবে, গ্রুপিং না থাকলে নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন হয় না ঠিক কিন্তু দলের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে আমরা ঐক্যবদ্ধ। দল যাকেই মনোনয়ন দিবে তার পক্ষেই আমরা কাজ করব। মতবিনিময়কালে তিনি প্রেসক্লাবের উন্নয়নে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে দাতা সদস্য হওয়ার ঘোষণা দেন।
প্রেসক্লাবের সভাপতি শ্যামা প্রসাদ চক্রবর্তী শ্যামল মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন।
সাধারণ সম্পাদক সাইদুল আলম সৌরাফের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সদস্য সাদেকুল হক সাদির, উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক জহিরুল হক জুরু মিয়া, কৃষক দলের সদস্য সচিব আনোয়ার হোসেন বাবুল, পৌর কৃষক দলের সদস্য সচিব আনোয়ার খান, বিএনপি নেতা রাজন দে, কৃষক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আব্দুর রহিম ও সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।
চলারপথে রিপোর্ট :
সুবিন্যস্থ বেণি জুড়ে গাছে দুলছে আশ্চর্য সুন্দর হিজল ফুল। দেখে মুগ্ধ না হয়ে পারা যায় না। প্রতি বছর বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরের হাওড় বেষ্টিত ভাটির অঞ্চলে এ ফুলের দেখা মিলে, এখন সেই সময়। রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতায় ঘুরে ফিরেই এসেছে হিজলের কথা। কবির ভাষায়- “চোখে তার হিজল কাঠের রক্তিম/চিতা জ্বলে”। একই ভাবে হিজল বনে ঘুঘু দেখে উচ্ছ্বসিত কবি লিখেছেন- “পৃথিবীর সব ঘুঘু ডাকিতেছে হিজলের বনে”। অবশ্য কবিতার বাইরে বাস্তবে হিজল গাছের সংখ্যা অনেক কমে গেছে। গণসংগীত শিল্পী হেমাঙ্গ বিশ্বাস সুরে সুরে বলেছেন- “হাওড়ের পানি নাই রে হেথায়, নাই রে তাজা মাছ/বিলের বুকে ডালা মেলা, নাই রে হিজল গাছ”। অর্থাৎ দিন দিন হিজল গাছের সংখ্যা কমছে। বর্তমানে গাছটি প্রায় দুর্লভ। এ গাছটি সংস্কৃত নাম নিচুল, এ ছাড়াও জলন্ত ও নন্দীক্রান্ত নামেও পরিচিত। হিজল গাছের বৈজ্ঞানিক নাম- Barringtonia acutangula। এটি Lecythidaceae পরিবারের সদস্য। এটি বাংলাদেশের ভাটির অঞ্চলে বহুকাল ধরে টিকে থাকলেও এর আদি নিবাস অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া এবং ভারত। গাছ মাঝারি আকারের, উচ্চতা ৫-১০ মিটার পর্যন্ত, এর ডালপালা থাকে ছড়ানো, বাকল যথেষ্ট পুরো, ঘনছাই রঙের হয়ে থাকে, বীজ থেকে গাছ হয়। খাল, বিল, নদী, ডোবা, হাওর ইত্যাদি জায়গায় দেখতে পাওয়া যায়। এটি পানির নিচে কয়েক মাস জীবিত থাকতে পারে। এ গাছের মূল আকর্ষণ লাল ও গোলাপি রঙের ছোট ছোট ফুল, ফুলের আছে মিষ্টি ঘ্রাণ। উদ্ভিদবিদ দ্বিজেন শর্মার বর্ণনা মতে- “ফুলের মঞ্জুরী ৬-১৫ ইঞ্চি লম্বা। বহুপুষ্পিক ফুলের বৈশিষ্ট্যে হিজল অনন্য”।
হিজল বীজের অনেক ঔষুধি গুনাগুন আছে- মাথা ও কপাল ব্যথা হলে হিজল বীজ শুকিয়ে গুড়া করে দুই চামচ পরিমাণ এক কাপ দুধসহ সকালে এবং বিকেলে খেলে মাথা ব্যাথা কমে যায়। পেটে গ্যাস হলে, ঢেকুর উঠলে, পেট ফাঁপা হলে হিজল বীজ চূর্ণ করে গরম মসলা সহ খেলে কিছুক্ষনের মধ্যে সেই সমস্যা চলে যায়। চোখ উঠলে, চোখ লাল হলে, চুলকায়, পানি পড়ে। সেই সময় বীজ নিয়ে পাথরে ঘসে চন্দনের মত চোখের চারি পাশে লাগিয়ে দিলে কিছুক্ষণ রাখার পর ছোট নেকড়া ভিজিয়ে মুছে দিলে যন্ত্রণা কমে যায়। হিজল ফুল গভীর রাতে ফুটে, সকাল হতে না হতেই ঝড়ে যায়। হিজল সাধারণত জলমগ্ন বা জলসংলগ্ন অঞ্চলে ভাল হয়। তাই নবীনগরের ভাটির অঞ্চলের গ্রামীণ ঐতিহ্যের অংশ হয়ে আছে টিকে আছে হিজল গাছ। নদী সংলগ্ন গ্রাম গুলোতে নৌকা দিয়ে গেলে চোখে পড়ে অপূর্ব হিজল গাছের সারি কারন- হিজলের আবাস নিচু এলাকা/ হাওড় অঞ্চল।
নবীনগরের মত দেশের হাওড় বেষ্টিত সাত জেলার ৪০টি উপজেলায় কম বেশি প্রায় প্রতি গ্রামেই দেখা যায় হিজল। নিচু জলাঅঞ্চলে মাছের অভয়রাণ্য তৈরিতে এই গাছের ডাল ব্যবহৃত হয়। ভরা বর্ষায় নবীনগরের ভাটি অঞ্চলে বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার সময় নৌকা থেকে চারপাশে তাকালে থৈ থৈ জলের মধ্যে দেখা যায় হিজল গাছ। যেন ঘাটে নৌকা লাগতেই স্বাগত জানাচ্ছে হিজলের ফুল। স্থানীয়দের খুব চেনা এ গাছটি শুকনো মৌসুমেও দিব্যি থাকে। এমনকি রাজধানী শহরের একাধিক উদ্যানেও দেখা যায় হিজল গাছ। বর্তমানে কিছু সরকারি বেসরকারি প্র্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে এ গাছ লাগানো হচ্ছে। হিজলের প্রাণশক্তি অনেক বেশি, দীর্ঘজীবী গাছ, বিধ্বংসী বন্যা কিংবা তীব্র খরাও একে কুপোকাত করতে পারে না। জল এবং স্থল দুই জায়গাতেই এরা সাবলীল, এদের এই আলাদা বৈশিষ্ট্য ও অভিযোজনের কারনে হিজল সবার দৃষ্টি কাড়ে।