চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগর প্রেসক্লাবের ৩৮ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও ৩৯ তম বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে দুই দিনব্যাপি আনন্দ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত শুক্র ও শনিবার প্রেসক্লাব কার্যালয়ে ও মহিলা ডিগ্রি কলেজ মিলনায়তনে দুই দিনব্যাপি এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রেসক্লাব কার্যালয়ে ৩৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজীব চৌধুরী।
প্রধান অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির আহবায়ক অ্যাডভোকেট এমএ মান্নান।
বিশেষ অতিথি ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি)আবু মুছা, অফিসার ইনচার্জ আবদুর রাজ্জাক, প্রধান আলোচক প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি আবু কামাল খন্দকার।
প্রেসক্লাবের সভাপতি শ্যামা প্রসাদ চক্রবর্তী শ্যামল সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুল আলম সোরাফ এর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন রাসেল, প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য তৌহিদুল ইসলাম তৌহিদ, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম রাজু, পৌর বিএনপি সভাপতি ওবায়দুল হক লিটন, পৌর জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি সাইফুল ইসলাম বাশার, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মাহাবুব আলম লিটন, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি জালাল উদ্দিন মনির, মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি সাবেক সভাপতি মোর্শেদুল ইসলাম লিটন, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি রেজাউল করিম সবুজ, প্রেসক্লাবের সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি তাজুল ইসলাম চৌধুরী, প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি আরিফুল ইসলাম ভূইয়া মিনাজ, প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি জহিরুল হক বুলবুল প্রমুখ। দ্বিতীয় পর্বে শনিবার মহিলা কলেজ মিলনায়তনে প্রতিষ্ঠার ৩৯ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে নবীনগর প্রেসক্লাব পরিবারের মিলনমেলা অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজীব চৌধুরী।
উদ্বোধন শেষে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এরপর শিশুদের দৌড় প্রতিযোগিতা, স্মৃতি প্রতিযোগিতা ও মহিলাদের মিউজিক্যাল চেয়ার প্রতিযোগিতা, শেষে স্মৃতিচারণ আলোচনা সভা ও ক্রেস্ট ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজীব চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সহধর্মিনী প্রিয়াঙ্কা সরকার, অফিসার ইনচার্জ আবদুর রাজ্জাক, প্রেসক্লাবের উপদেষ্টা আবু কামাল খন্দকার, মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত)শুক্লা রানী ভট্টাচার্য, প্রতিষ্ঠাকালিন সদস্য জাকির হোসেন রাসেল, এম কে কিবরিয়া রিপন, তৌহিদুল ইসলাম, জাকারিয়া সরকার তসলিম, মোঃ মলাই মিয়া, মোঃ আতাউর রহমান। সভাপতিত্ব করেন শ্যামা প্রসাদ চক্রবর্তী শ্যামল। প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল আলম সোরাফ এর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, সাবেক সভাপতি মাহাবুব আলম লিটন, সাবেক সভাপতি জালাল উদ্দিন মনির, সিনিয়র সহ-সভাপতি আরিফুল ইসলাম ভূইয়া মিনাজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কান্তি কুমার ভট্টাচার্য, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান কল্লোল প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
মানবসম্প্রদায় মহান আল্লাহ তায়ালার সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জাতি। আল্লাহ তায়ালা মানব কে সৃষ্টি করেছেন শুধু তারই উপাসনা করতে। আর সেই উপাসনা শিক্ষা দিতে যোগে যুগে বহু নবী-রাসুল কে আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীতে পাঠিয়েছে। আকায়ে মাওলা হযরত মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগনের মাধ্যমে নবী-রাসুলের আগমনের দরজা বন্ধ হয়ে যায়। উত্তরসূরী হিসেবে রেখেগেছেন পীর, গাউস কুতুব, সূফি-সাধক গণকে। হযরত বড়পীর দস্তগীর আব্দুল কাদের জিলানী (রাঃ) থেকে শুরু হয়ে অদ্যবধী পীর, গাউস কুতুব, সূফি ও সাধক গণের ধারা চলছে আর কিয়ামতের পূর্ব পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত থাকবে। পৃথিবী বাসী আজ সেই মহান আল্লাহ তায়ালার উপাসনা কে ভুলে, নবী-রাসুল, পীর, গাউস কুতুব ও সূফি-সাধক গণের সূফিতথ্য কে ছেড়ে মনগড়া মতাদর্শে চলাচলের ফলে পৃথিবী জুড়ে বিশৃঙ্খলা বেড়েই চলছে। বিশেষ করে মরণ নাশক মাদকের ছোবলে যুবসমাজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে নেশাগ্রস্তদের দেখে অবাক হতে হচ্ছে। মাদকের গ্রহণের ফলে সমাজে বিশৃঙ্খলা আজ চরম পর্যায়ে। সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জাতি মানুষ আল্লাহ বিধান অমান্য করে সূফিতথ্য ও তাসাউফ কে ভুলে যাওয়ায় জীবন, সংসারে কালো ছায়া নেমে এসেছে। তাই মাদক নির্মূলসহ সমাজ ও রাষ্ট্রে শান্তি প্রতিষ্ঠাই তাসাউফ ভিত্তিক সূফিতথ্য অনুসরণের বিকল্প নেই।
ভৈরব এরফানিয়া দরবার শরীফের পীর পীরে তরিকত এ বি এম শাহ সূফি মাহবুব উল্লাহ এর সভাপতিত্বে ও নবীনগর পাক-হাজিপুর দরবার শরীফের পীর পীরে তরিকত মাওলানা মুহাম্মদ মোবারক আলীর সহ-সভাপতিত্বে ১০ ফেব্রুয়ারি শনিবার নবীনগর বীরগাঁও গাছতলা নজরদৌলত রউফশাহী দরবার শরীফের ২৮তম বাৎসরিক উরুছ বা ইছালে ছাওয়াব মাহফিলে দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা পীর ‘দরবার শরীফ চিলোকূট’ এর অন্যতম খলিফা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আত বাংলাদেশ এর প্রেসিডিয়াম সদস্য পীরে তরিকত অধ্যাপক মুফতি মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন আল-ক্বাদরী মোনাজাতের পূর্বে এ কথা বলেন।
হযরত বড়পীর দস্তগীর কুদ্দুছাছির রুহুল আজিজ এর রূহানী ফায়েজ হাছেল উপলক্ষে গত ২৮ বৎসর যাবৎ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অন্যতম আধ্যাতিক প্রাণ কেন্দ্র ‘দরবার শরীফ চিলোকূট’ এর পীর শাহ সূফি সৈয়দ আবদুর রউফ আল-ক্বাদরী (রহঃ) এর নির্দেশক্রমে মাহফিলটি অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও অসংখ্য আশেকে রাসূলগনের উপস্থিতিতে দেশবরেণ্য অসংখ্য পীর মশায়েখ ও আলেম ওলামা তরিকতের উপর নছিহত পেশ করেন।
দরবার শরীফের মুরিদ মাও. এমদাদুল হক বকশী ও মাও. মাসুম বিল্লার উপস্থাপনায় প্রধান অতিথি ছিলেন কুমিল্লা ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার মুহাদ্দিস উস্তাজুল উলামা মুফতিয়ে আজম আল্লামা অধ্যাপক শাহ মুহাম্মদ গোলাম মুস্তফা।
বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা সভাপতি ও কাজীপাড়া সৈয়দ আব্দুল বারী শাহ রহঃ মাজার শরীফের পীর, পীরে তরিকত সৈয়দ মুহাম্মদ নূরে আজম। প্রধান বক্তা ভাদুঘর জামিয়াতুল মাদিনা মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মাও. নূর মুহাম্মদ মাদানী। বিশেষ অতিথ ছিলেন মাও. মনিরুজ্জামান হানাফি, সরাইল পানিশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের হেড মাও. মুহাম্মদ ইছা রুহুল্লা আল-ক্বাদরী, পীরজাদা মাও. মোদ্দাসীর আল-ক্বাদরী, পীরজাদা আল আমিন হোসাইনী।
বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ইসলামী যুবসেনা কেন্দ্রীয় পরিষদের মানবাধিকার সম্পাদক যুবনেতা মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, মাও. ওয়ারেছ উদ্দিন হাসান বিল্লাহ, মাও. ইমাম হোসেন, মাও. আশরাফুল আমিন, মাও. নাজমুল ইসলাম মোজাহেদী, মাও. মাও. মহর আলী, মাও. রেজাউল করিম, হাফেজ মাও. হেলাল উদ্দিন, মাও. মনির হোসেন, হাফেজ শরিফুল ইসলাম, মাও. হামিদুল ইসলাম হেলালী, মাও. আনোয়ার হোসেন বিন নূর, মাও. হাবিবুর রহমান নূরী, মাও. রবিউল আলম হেলালী, হাফেজ আরাফাত সানিসহ প্রমুখ। মাহফিল শেষে ভোর রাত্রে হাজার হাজার ভক্ত-মুরিদানের উপস্থিতিতে দেশ-জাতি সহ মুসলিম বিশ্বের শান্তি কামনায় মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
দারিদ্র্যতা হারাতে পারেনি তাকে। কঠোর পরিশ্রম করে আজ সাফলতার স্বাদ পেয়েছে সে। বাড়িতে পড়ার জায়গা না থাকায় চাচার পাঠাগারে বসে পড়ত। কখনো দর্জির কাজ, কাঁথা সেলাই কখনো বা প্রাইভেট পড়িয়ে এসএসসি পরীক্ষায় ‘এ প্লাস’ পেয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সুমাইয়া আক্তার।
সুমাইয়া আক্তার জেলার নবীনগর পৌর শহরের সুহাতা এলাকার জীবন মিয়ার মেয়ে। সে এবার উপজেলার ভোলাচং হাই স্কুল থেকে মানবিক বিভাগ থেকে এ প্লাস এসএসসিতে উত্তীর্ণ হয়েছে।
জানা যায়, সুমাইয়া আক্তাররা দুই বোন। সে বড়, ছোট বোন উন্মে হানি চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী। সুমাইয়ার বাবা পেশায় একজন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালক। তার বাবা প্রায় সময় অসুস্থ থাকেন। সুমাইয়ার মা পারভীন আক্তার গৃহিনীর পাশাপাশি কাঁথা সেলাই করে পরিবার চালান। সুমাইয়া মায়ের সঙ্গে কাঁথা সেলাই করতেন। পাশপাশি দর্জির কাজ করত ও প্রাইভেট পড়াত। বাড়িতে পড়ার জায়গা না থাকায় চাচা স্বপন মিয়ার পাঠাগারে প্রায় সময় বসে নিরবে লেখাপড়া করত সুমাইয়া। কঠোর পরিশ্রমের পাশাপাশি সে প্রতিদিন গড়ে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা পড়ালেখা করত।
সুমাইয়ার চাচা স্বপন মিয়া বলেন, সুমাইয়াকে কখনো চাপ দেইনি যে এ প্লাস পেতে হবে। তাকে বলতাম সার্টিফিকেটের এ প্লাস না পেয়ে তোমার নিজের মধ্যে এ প্লাস এর যোগ্যতা অর্জন কর। সে সেভাবেই লেখাপড়া করেছে। সুরাইয়া প্রচুর পরিশ্রম করত, কাজের ফাঁকে প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা নিয়মিত লেখাপড়া করতো। পাঠাগারে সাধারণত রাতে ছেলেরা আসতো, সে নিজের মতো করে নিরবে বসে পড়ালেখা করতো। তার মধ্যে কোন দ্বিধা থাকত না, সে নিজের মতো করে পড়ার পরিবেশটা তৈরি করে নিতো।
তিনি আরো বলেন, আমাদের পরিবার থেকে এই প্রথম কেউ এ প্লাস পেয়েছে। এটি খুব সম্মানের। আমি তার জন্য সবার কাছে দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করি। সুরাইয়া যেন ভবিষ্যৎতে একজন ভালো মানুষ হয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করতে পারে সেটাই আমাদের প্রত্যাশা। সুমাইয়া গুঞ্জন পাঠাগারের আবৃত্তি বিভাগের পরিচালকও।
সুমাইয়া জানান, আমার চাচা স্বপন মিয়া পড়ালেখার ব্যাপারে সাহায্য সহযোগিতা করেছে। নিয়মিত ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা পড়ালেখা করেছি। স্কুলের শিক্ষকরা আমার পড়ালেখার খোঁজখবর নিতেন। আমি ভবিষ্যতে একজন শিক্ষক হতে চাই। সেই জন্য সকলের দোয়া কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ভোলাচং হাই স্কুলের শিক্ষক হেলাল উদ্দিন বলেন, সুমাইয়া মানবিক বিভাগ থেকে এ প্লাস পেয়েছেন। এতে আমরা ভীষণ খুশি। সামনে পড়ালেখার সুযোগ পেলে সে আরও ভালো রেজাল্ট করবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে ছামিয়া আক্তার (১৫) নামে এক কিশোরী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
২৩ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে নবীনগর উপজেলার লাউরফতেপুর ইউনিয়নের বাশারুক গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। রাত সাড়ে ৮টার দিকে কিশোরীর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
ছামিয়া আক্তার উপজেলার লাউরফতেপুর ইউনিয়নের বাশারুক গ্রামের বিল্লাল মাস্টার বাড়ির আবুল হোসেনের মেয়ে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাশারুক গ্রামের পাশ্ববর্তী গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে ছামিয়ার প্রেম ছিল। তারপর তারা পারিবারিক ভাবে বিয়ে করে। বিয়ের পর জানতে পারে ছামিয়ার স্বামী একজন মাদকসেবি। পরে ছামিয়া স্বামীর সঙ্গে রাগ করে বাপের বাড়িতে চলে আসে। স্বামী মাদকাসক্ত ও বাবা-মায়ের কটাক্ষ কথা সহ্য না করতে পেরে ছামিয়া সবার অগোচরে সকালে শোয়ার ঘরের তীরের সঙ্গে ওড়না পেছিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুব আলম জানান, সকালে এক কিশোরী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মোস্তফা কামালকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একটি হত্যা মামলার আসামী হিসেবে গতকাল ২৬ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহরের কালীবাড়ি মোড় থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত মোস্তফা কামাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিটি মডেল কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। তিনি জেলার নবীনগর উপজেলার বিটঘর গ্রামের বাসিন্দা।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারে পতনের পর শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিটি মডেল কলেজের অধ্যক্ষের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। পরে তিনি নবীনগর উপজেলার দানবীর মহেশ ভট্টাচার্য বিদ্যাপীঠের অধ্যক্ষ হন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্রে করে সারা দেশে হেফাজতে ইসলামের আন্দোলন হয়। ২৭ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নন্দনপুর বিসিক শিল্পনগরী এলাকায় গুলিতে নিহত হন বুধল ইউনিয়নের বুধল উত্তরপাড়ার কাউসার আহম্মেদ। এ ঘটনায় কাউসারের চাচা আকরাম হোসেন গত ১০ সেপ্টেম্বর সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীসহ ১৯৫ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলার আসামী মোস্তফা কামাল। এই মামলায় অজ্ঞাতনামা আরো ১০০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করা হয়। এদিকে মোস্তফা কামাল গ্রেফতার হওয়ার পর তাকে নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা আওয়ামী লীগের দুই নেতা বলেন, গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরির্তনের পর ১৩ সেপ্টেম্বর একটি সাদা কাগজে হাতে লিখে স্বাক্ষর করে জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করেন মোস্তফা কামাল। দায়িত্বশীল পদে থেকেও দলের কঠিন মুহুর্তে তিনি দলের পাশে থাকেননি, বরং নিজেকে বাঁচাতে দল ছেড়ে চলে গেছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করেও তার শেষ রক্ষা হয়নি।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন বলেন, একটি হত্যা মামলায় এজহারভুক্ত আসামি হওয়ায় আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তফা কামালকে বৃহস্পতিবার রাতে কালীবাড়ি মোড় থেকে গ্রেফতার করা হয়।
আজ ২৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।