চলারপথে রিপোর্ট :
চলমান ইসকন ইস্যুতে আখাউড়ায় উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ২৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা সম্মেলন কক্ষে সভায় প্রশাসনের কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ, শিক্ষক, সাংবাদিক, আলেম ওলামা ও হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার গাজালা পারভীন রুহির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির আহবায়ক জয়নাল আবেদীন আব্দু, পৌর বিএনপির আহবায়ক মোঃ সেলিম ভূইয়া, উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাঃ মোঃ বোরহান উদ্দিন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মকর্তা ডাঃ হিমেল খান, সাব ইন্সপেক্টর মোঃ ওয়াসিম, ইমাম পরিষদের সভাপতি মাঃ কাজী মাইনুদ্দিন, হেফাজতে ইসলামের পনেতা মাঃ বিল্লাল হোসেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা চন্দন ঘোষ, রাধা মাধব আখড়া মন্দিরের আহবায়ক সাংবাদিক বিশ্বজিৎ পাল প্রমুখ ।
হিন্দু নেতারা জানান, আখাউড়ায় ইসকনের সাংগঠনিক কার্যক্রম নাই। কিছু সংখ্যক ইসকনের ভক্ত আছে। তারা শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মীয় আচার পালন করে। তবে ইসকনের নামে কেউ অপরাধ করলে তদন্তের মাধ্যমে তাদের বিচার করা হোক।
বক্তারা বলেন, অপপ্রচার থেকে বিরত থাকতে হবে। সম্প্রীতি রক্ষায় সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। ফেক নিউজ শেয়ার না দেওয়ার পরামর্শ দেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। একটি সুযোগ সন্ধ্যানী মহল দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। আখাউড়াকে নিরাপদ রাখার জন্য সবাইকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। আইন হাতে তুলে না নেওয়ার আহবান জানানো হয়। বক্তারা চট্টগ্রামে এড. সাইফুল ইসলাম হত্যার বিচার দাবী করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ভাগ্য বদলের আশায় ১৭ বছর আগে সৌদি আরবে পাড়ি জমিয়েছিলেন ফায়েজ মিয়া। সেখানে দাম্মাম শহরে তিনি একটি বড় কোম্পানিতে কাজ করতেন। এবার দেশে এসে কোরবানির ঈদ করার কথা ছিল। এরই মধ্যে গত ১৪ মে কর্মস্থল সৌদি আরবের দাম্মামে হঠাৎ স্ট্রোক করে তিনি মারা যান। বুক ভরা আশা নিয়ে বিদেশ পাড়ি দেওয়া ফায়েজ বাড়ি ফিরেছেন ঠিকই কিন্তু জীবিত নয় কফিনবন্দি হয়ে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে ২১ দিনের মাথায় আজ ৪ জুন মঙ্গলবার দুপুরে তার মরদেহ নিজ জন্মভূমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ার তারাগনে আসলে অশ্রুসিক্ত নয়নে শেষ বিদায় দেন আত্মীয়স্বজনসহ প্রতিবেশী।
বাদ আছর আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের কালিনগর বাইতুল মামুর জামে মসজিদ মাঠে বাদ আসর জানাযা শেষে সাতপুকুরপাড়ে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়। এর আগে, ভোরে সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে সেখান থেকে পরিবারের সদস্যরা তার মরদেহ গ্রহণ করেন। এরপর সড়ক পথে নিহতের মরদেহ লাশবাহী একটি অ্যাম্বুল্যান্স করে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। নিহতের মরদেহ দুপুরে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে শুরু হয় শোকের মাতম। পরিবার-পরিজন আর স্বজনদের আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে ওঠে।
নিহতের মরদেহ এক নজর দেখেতে পাড়া প্রতিবেশী আত্মীয়স্বজনসহ এলাকার শত শত লোকজন তার বাড়িতে ভিড় করেন। ফায়েজ আখাউড়া পৌর শহরের তারাগন এলাকার মৃত আবুল কাশেমের ছেলে। তার পরিবারে স্ত্রী, ৩ মেয়ে ১ ছেলে রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় ১৭ বছর আগে ফয়েজ মিয়া সৌদি আরব পাড়ি জমান। সেখানে দাম্মাম শহরে তিনি একটি বড় কোম্পানিতে কাজ করতেন। সর্বশেষ গত প্রায় ৫ বছর আগে দেশে আসেন। এবার কোরবানির ঈদের আগে দেশে আসার কথা ছিল। গত ১৪ মে স্ট্রোক করে মায়াভরা এ পৃথিবী থেকে না ফেরার দেশে চলে যান।
চাচাতো ভাই আলাউদ্দিন বলেন, ফায়েজ একজন কর্মঠ লোক ছিল। দেশে থাকতে কাজ ছাড়া কিছুই বুঝতো না। পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি ফোটাতে অনেক কষ্ট করে বিদেশে যায়। এরপর এই পরিবারটা ভালই চলছিল। হঠাৎ করে এভাবে সে মারা যাবে তা কখনো ভাবতে পারছি না। দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে দুপুরে নিহতের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে এসেছে। বাদ আসর জানাযা নামাজ শেষে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।
মাওলানা হাফেজ নুরুল ইসলাম বাবুল বলেন, ফায়েজ খুব ভালো একজন মানুষ ছিল। ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতো বড় হওয়ার। এভাবে চলে যাবে তা কখনো ভাবতে পারিনি।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় বন্যা, অতিবৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক পর্যায়ের ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষীদের মাঝে বিনামূল্যে ১ হাজার ১৮০ কেজি রুই জাতীয় মাছের পোনা বিতরণ করা হয়েছে।
আজ ২৩ অক্টোবর বুধবার দুপুরে উপজেলা মৎস্য অফিসের উদ্যোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা আখাউড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত ১১৮ জন মৎস্য চাষীদের মাঝে রুই জাতীয় মাছের এসব পোনা বিতরণের আনুমানিকতার উদ্বোধন করা হয়েছে।
আখাউড়া উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের বন্যা, অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় জলাশয় ও পুকুর প্লাবিত হয়ে অনেক মৎস্য খামারী ক্ষতির সম্মুখীন হয়। ক্ষতিগ্রস্ত খামার, পুকুর ও দিঘীর সংখ্যা ছিল ৯৬২ জন। এরমধ্যে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ১১৮ জন প্রান্তিক মৎস্য চাষীর মাঝে ১০ কেজি করে মোট ১ হাজার ১৮০ কেজি কার্প জাতীয় মাছ রুই, মৃগেল, কাতলা, কালিবাউশ ও গনিয়া মাছের পোনা বিতরণ করা হয়েছে। প্রতি কেজিতে ৮০/৯০টি করে পোনা রয়েছে।
আজ প্রথম ধাপে ৩৫ জন প্রান্তিক পর্যায়ের ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষীদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। বাকী চাষীদের মাঝেও পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা রৌনক জাহান, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তানিয়া তাবাসসুম, মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রেজাউল করিম প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় হুজুরের উপর হামলা মামলায় আটক সুমন ও রিমনের পরিবার সংবাদ সম্মেলন করেছে। ১৪ মার্চ মঙ্গলবার দুপুরে চাওড়া দৌলতবাড়ি গ্রামে সুমনের নিজ বাড়িতে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে ওই ঘটনায় সুমন ও রিমনকে নির্দোষ দাবি করেন তাদের স্বজনরা। শারীরিক প্রতিবন্ধি হওয়ায় মানবিক কারণে তাদের জামিন এবং মামলা থেকে অব্যাহতির দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে সুমনের বৃদ্ধ পিতা-মাতা, স্ত্রী, শিশু সন্তান এবং রিপনের মা উপস্থিত ছিলেন। সুমন ও রিমন সম্পর্কে মামা-ভাগিনা।
এসময় সুমনের স্ত্রী লাকী আক্তার বলেন আমার স্বামী একটি হাত ও একটি পা ভেঙ্গে পঙ্গু অবস্থায় আছে। হুজুরের হামলার সাথে আমার স্বামী জড়িত নয়। চক্রান্ত করে তাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমার পঙ্গু স্বামীর জামিন এবং মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। আমার সংসারে রোজগার করার মতো কেউ নাই। ৪ টি শিশু সন্তান, বৃদ্ধ শশুড়-শাশুড়িসহ ১০/১২ জন মানুষ নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। সুমন ও রিমনের স্বজনরা আহজারি করে বলেন তাদের জামিন না হলে অনাহারে বিষ খেয়ে মরা ছাড়া উপায় থাকবে না।
এসময় রিমনের মা তাহমিনা আক্তার বলেন, আমার স্বামী নাই। ছেলে মেয়ে নিয়া বাবার বাড়িতে থাকি। হুজুরের হামলার ঘটনার সাথে আমার ছেলে জড়িত নয়। তাকে ফাঁসানো হয়েছে। বিজ্ঞ আদালতের কাছে আমার ছেলের জামিন ও মামলা থেকে অব্যাহতি প্রার্থনা করছি।
উল্লেখ্য, গত ৪ মার্চ শনিবার রাতে আখাউড়ার আজমপুর এলাকায় মুফতি শরীফুল ইসলাম নূরী নামে এক হুজুরের উপর হামলায় হয়। হামলা হুজুরের জিহ্বায় আঘাত লাগে। তিনি বিজয়নগর উপজেলার দৌলতবাড়ি একটি মাহফিল থেকে ফিরছিলেন। এ ঘটনায় সুমন ও রিমনসহ চারজনকে আটক করে র্যাব। বর্তমানে তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারের হাজতে আছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়া মুক্ত দিবস, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় প্রশাসনের প্রস্তুুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ২৯ নভেম্বর বুধবার সকালে আখাউড়া উপজেলা সম্মেলন কক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার অংগ্যজাই মারমার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কাশেম ভূঁইয়া।
সভায় বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, শিক্ষক, সাংবাদিক, আলেমসহ বিভিন্ন পেশার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রশান্ত চক্রবর্তী, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ জামসেদ শাহ, বীর মুক্তিযোদ্ধা বাহার মালদার প্রমুখ।
সভায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় অ্যাড. সিরাজুল হক পৌর মুক্ত মঞ্চে এক মিনিট নিরবতা, মোবমাতি প্রজ্জ্বলন, ৬ ডিসেম্বর আখাউড়া মুক্ত দিবসে উপজেলা ডাকঘরের সামনে সকাল ১০টায় জাতীয় ও মুক্তিযোদ্ধা পতাকা উত্তোলন, আলোচনা সভা। ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবসে আলোচনা সভা এবং ১৬ ডিসেম্বর সকালে ২১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচির সূচনা।
সুর্যোদয়ের সাথে সাথে স্থানীয় স্মৃতি সৌধে পুষ্প স্তবক অর্পন, বীর শ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তাফা কামালের সমাধিতে পুষ্প স্তবক অর্পন, কুচকাওয়াজ, মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়াও হাসপাতালে রোগীদের মাঝে উন্নত খাবার পরিবেশন, মসজিদ- মন্দির ও উপাসনালরে বিশেষ দোয়া প্রার্থনা করা হবে।
বিশেষ প্রতিনিধি :
ব্যবসায়ীদের দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর অবেশেষে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে সবজি রপ্তানি শুরু হয়েছে। আজ ৮ ফেব্রুয়ারি বুধবার তৃতীয় ধাপে পাঁচ মেট্রিক টন সবজি রপ্তানি হয়েছে ভারতে। এদিন দুপুরে বিভিন্ন সবজিবোঝাই একটি ট্রাক স্থলবন্দর দিয়ে আগরতলায় প্রবেশ করে। রপ্তানি পণ্য হিসেবে সবজিকে সম্ভাবনাময় মনে করছেন বন্দরের ব্যবসায়ী ও বন্দর কর্তৃপক্ষ।
স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে প্রথমবারের মতো সবজি রপ্তানি শুরু হয় ভারতে। এরপর বুধবার পর্যন্ত তিন ধাপে মোট ১৫ মেট্রিক টন সবজি রপ্তানি হয়েছে। প্রতি টন সবজি রপ্তানি হচ্ছে ৪০০ মার্কিন ডলারে। রপ্তানিকৃত সবজির মধ্যে আছে কচুর লতি, গাজর, পেঁয়াজ পাতা এবং উস্তা।
আখাউড়া স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী মো. নাসির উদ্দিন সবজিগুলো রপ্তানি করেছেন। তিনি মোট ২০ মেট্রিক টন সবজি রপ্তানি করবেন আগরতলায়।
নাসির উদ্দিন বলেন, আমাদের বন্দর দিয়ে আগে থেকেই সবজি রপ্তানির অনুমতি ছিল। আমরা দীর্ঘদিন ধরে সবজি রপ্তানির জন্য আগরতলার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করে আসছিলাম। এর প্রেক্ষিতে পরীক্ষামূলকভাবে ২০ টন সবজি রপ্তানি হচ্ছে। আশা করছি অন্যান্য পণ্যের মতোই নিয়মিত সবজি রপ্তানি হবে।
আখাউড়া স্থলবন্দরের সুপারিনটেনডেন্ট মো. সামাউল ইসলাম বলেন, রপ্তানি পণ্যের তালিকায় নতুন করে সবজি যুক্ত হয়েছে। এটি ব্যবসায়ী এবং বন্দর কর্তৃপক্ষের জন্য ইতিবাচক। নিয়মিত রপ্তানি হলে বন্দর কর্তৃপক্ষের রাজস্ব বাড়বে এবং সরকারও বৈদেশিক মুদ্রা পাবে।