ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট সরকার আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে। তাতে বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মীদের সহযোগিতা ছিল। গত ১৫ বছর বিএনপির নেতাদের অনেক জেল জুলুম খাটতে হয়েছে। কেউ বাড়িতে থাকতে পারেনি। আমরা চাইনা আমাদের মত মিথ্যা মামলায় কেউ হয়রানির শিকার হন।
গতকাল ২৯ নভেম্বর শুক্রবার বিকালে বুধন্তি ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল।
তিনি বলেন, যারা অপরাধী তাদের বিচার করতে হবে। আমরা ৩১ দফার বাস্তবায়ন চাই এবং বর্তমান সরকারকে সব ধরণের সহায়তা করব। যত দ্রুত সম্ভব একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকার কে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিবেন।
বুধন্তি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে ও আজিজুর রহমান হেলালের পরিচালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন সাবেক পিপি শফিকুল ইসলাম, এড. তরিকুল ইসলাম রুমা, নিয়ামুল হক,উপজেলা বিএনপির আহবায়ক জমির দস্তগীর, সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন, ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি নাজমুল হক, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক রাসেল মিয়া, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক রেজুয়ানুল হক শিষ, ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি কামাল মিয়া, সাধারণ সম্পাদক মিজানুল ইসলাম, কাজী সজল মিয়া, হামিদুল হক খোকা, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি নয়ন মিয়া প্রমুখ।
অনলাইন ডেস্ক :
অবশেষে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ১০ মে শনিবার রাতে উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে দলটির যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
গণহত্যার অভিযোগে আওয়ামী লীগের বিচার ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবিতে চলমান বিক্ষোভের দু’দিনের মাথায় সরকারের পক্ষ থেকে এ ঘোষণা এলো। এর আগে গত বছরের অক্টোবরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধ করা হয়।
বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধনী অনুমোদিত হয়েছে। সংশোধনী অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কোনো রাজনৈতিক দল, তার অঙ্গসংগঠন বা সমর্থক গোষ্ঠীকে শাস্তি দিতে পারবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিচার কার্যসম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে সাইবার স্পেসসহ আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরিপত্র পরবর্তী কর্মদিবসে জারি করা হবে। একইসাথে আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করে প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
এ সময় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও তথ্য এবং সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের ঘোষণা আসার পর সারা দেশে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণের খবর পাওয়া গেছে। তবে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ। ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি সবাইকে রাজপথ না ছাড়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আপনারা কেউ রাজপথ ছাড়বেন না। সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা আমাদের মতামত আনুষ্ঠানিকভাবে জানাব। সে পর্যন্ত অবস্থান ত্যাগ করবেন না।’ এর দুই ঘণ্টা আগে তিনি ফেসবুকে লেখেন, ‘তিন দফার একটি দফাও বাস্তবায়ন না হলে আমরা রাজপথ ছাড়ব না।’
গত বুধবার সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ দেশ ছাড়ার পর বৃহস্পতিবার রাত থেকে আওয়ামী লীগের বিচার ও রাষ্ট্রদ্রোহী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করাসহ তিন দফা দাবিতে রাজপথে গণজমায়েত ও বিক্ষোভ শুরু করে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ছাত্র-জনতা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ না ছাড়ার ঘোষণা দেন এনসিপি নেতারা। ইসলামী ছাত্রশিবির, ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (আপ বাংলাদেশ), হেফাজতে ইসলাম, জুলাই মঞ্চসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও বিক্ষোভে যোগ দেন।
এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল শুক্রবার এক বিবৃতিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিটি সরকার গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে। মানবতাবিরোধী অপরাধের সাথে জড়িত সংগঠনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে সংশোধনী আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের নেতা ও সমর্থকদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিষয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদন সরকার বিবেচনায় রাখছে। সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানানো হয়।
এদিকে তিন দফা দাবি আদায়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্যের ব্যানারে বিক্ষোভ কর্মসূচি অব্যাহত রাখে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ছাত্র-জনতা। এমন পরিস্থিতিতে শনিবার রাত ৮টায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জরুরি বৈঠকে বসে উপদেষ্টা পরিষদ। এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ জানান, এক ঘণ্টার মধ্যে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ঘোষণা না এলে আবারও ‘মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি পালন করা হবে। এক ঘণ্টার মধ্যে ঘোষণা না আসায় রাত ৯টার কিছু আগে যমুনা অভিমুখে যাত্রা শুরু করে আন্দোলনকারীরা। পুলিশের বাধায় তারা ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে অবস্থান নেন। তখনো উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক চলছিল। সাড়ে ৮টার মধ্যে সিদ্ধান্ত আসার কথা থাকলেও বৈঠক চলে রাত পৌনে ১১টা পর্যন্ত। ১১টায় সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের বিষয়টি জানান আইন উপদেষ্টা।
এদিকে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে গতকাল প্রধান উপদেষ্টার সরকারি ভবন যমুনায় কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়। শনিবার সাড়ে ৮টার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য বাড়তে দেখা যায়। প্রধান ফটকের ভিতরে সেনাবাহিনী ও তার সামনে পুলিশের অবস্থান দেখা যায়। পাশে ছিল র্যাব। গেটের বাইরেও ছিল কড়া প্রহরা। সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রচুর সদস্য ঘুরতে দেখা যায়। এদিন দিনভর সচিবালয় এলাকায়ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রস্তুতি আগেই নিয়ে রেখেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গতকাল দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগকে দ্রুত নিষিদ্ধের উদ্যোগ নিতে সন্ত্রাস দমন আইনের প্রয়োগ হতে পারে। বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভিতরে ভিতরে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। উচ্চপর্যায়ের নির্দেশনা পাওয়া মাত্র দ্রুতগতিতে তা বাস্তবায়ন করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, জামায়াতকে যেভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, দ্রুত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে একই আইন প্রয়োগ করা হবে। সব প্রস্তুতি আছে, ওপরের গ্রিন সিগন্যাল পেলে প্রজ্ঞাপনের উদ্যোগ নেবে। তবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন বা ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন ব্যবহারের ইঙ্গিতও দেন কেউ কেউ।
এর আগে ২০১৩ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হাইকোর্ট জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে। কারণ হিসেবে দলটির গঠনতন্ত্র দেশের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক বলে উল্লেখ করা হয়। ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকার দেশব্যাপী আন্দোলনের সময় সহিংসতা উসকে দেওয়ার অভিযোগে জামায়াতকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় নিষিদ্ধ করে। একই বছর জামায়াতের ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরও নিষিদ্ধ হয়। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রমাণের অভাবে এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আগামী ৫ জুন চতুর্থধাপে অনুষ্ঠিতব্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সদর উপজেলা, বিজয়নগর উপজেলা ও নবীনগর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ২০জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগের ১২জন, বিএনপির ৩জন ও স্বতন্ত্র ৫জন রয়েছেন। এর মধ্যে সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, বিজয়নগরে ৬জন এবং নবীনগর উপজেলায় ৯জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন সদর উপজেলা পরিষদের বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোঃ লোকমান হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জাতীয় বীর আবদুল কুদ্দুস মাখনের অনুজ মোঃ হেলাল উদ্দিন, সৌদি আরবের রিয়াদস্থ আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কাজী সেলিম রেজা, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন ও স্বতন্ত্র আবদুল কারিম।
এছাড়াও সদর উপজেলা পরিষদে ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
বিজয়নগর উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেত্রী নাছিমা মুকাই আলী (নাছিমা লুৎফুর রহমান), উপজেলা বিএনপির সাবেক যুুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মোঃ রফিকুল ইসলাম, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক ও উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মোঃ আল জাবেদ।
অন্যান্য প্রার্থীরা হলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান নাছিমা মুকাই আলীর দেবর মোশাহেদ হোসেন ও বক্তিগত সহকারী হারুনুর রশিদ এবং যুবদল নেতা মোঃ আল জাবেদের ব্যক্তিগত সহকারী মুজিবুর রহমান।
এছাড়াও বিজয়নগর উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৯জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
নবীনগর উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন আওয়ামীলীগের ৭ নেতা, বিএনপির ১ নেতা ও একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী। প্রার্থীরা হলেন, উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও মতিঝিল থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক কাজী জহির উদ্দিন সিদ্দিক টিটো, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক অধ্যাপক নুরুন্নাহার বেগম, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য এইচ.এম. আল আমিন আহমেদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক হাবিবুর রহমান, নরসিংদী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহ আলম, বিএনপির সমর্থক ফারুক আহমেদ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ আবদুল মতিন।
এছাড়াও নবীনগর উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৯ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
মালয়েশিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার হরষপুর ইউনিয়নের এক্তারপুর গ্রামের আপন দুই ভাইসহ চারজন নিহত হয়েছে।
গত বুধবার (ঈদের দিন) বাংলাদেশের সময় দুপুর ১২টায় (মালয়েশিয়ার সময় সকাল সাড়ে ১০টায়) এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, এক্তারপুর গ্রামের করিম সর্দারের ছেলে মোঃ আবদুল্লাহ (২৫) ও হাফেজ মোঃ হুমায়ূন কবির ওরফে সোহেল (২৭), একই এলাকার মোঃ শাহাব উদ্দিনে ছেলে মোঃ সোহেল (২৫) ও মোহাম্মদ আলীর ছেলে মোহাম্মদ আশকর আলী- (৪০)।
নিহতদের পারিবারিক সূত্র জানায়, ঈদ-উল ফিতরের নামাজ আদায় করে গাড়ি নিয়ে মালয়েশিয়ার ক্যামেরুন থেকে কুয়ালালামপুরে যাওয়ার পথে তাদের গাড়িটির চাক্কা ফেটে গেলে গাড়িটি ধীর গতিতে চলতে থাকে। এমন সময় পিছনে থাকা মালবাহী একপি লড়ি গাড়িটিকে ধাক্কা দিলে সাথে সাথেই গাড়িটি দুমড়ে-মুচরে গিয়ে ৩ জনের মৃত্যু হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় একজনকে হাসপাতালে নেয়ার পথে সে মারা যায়।
এদিকে সন্তানদের মৃত্যুর খবর পেয়ে পরিবারের চলছে শোকের মাতম। পরিবার গুলোতে ঈদের আনন্দ যেন বিষাদে পরিণত হয়। আহাজারি করে সরকারের কাছে নিজের সন্তানদের লাশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানান তারা।
এ ব্যাপারে হরষপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ অলিউল্লাহ বলেন, মোঃ আবদুল্লাহ, হাফেজ মোঃ হুমায়ূন ওরফে সোহেল এবং মোঃ সোহেল আমার ভাতিজা, এবং আশকর আলী আমার গ্রামের জামাই হয়। ঈদের দিন নামাজ শেষে ঘুরতে গিয়ে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তারা মারা গেছেন। আমরা এই শোক সইতে পারছিনা। সরকারের কাছে আমাদের আবেদন, পরিবারের কাছে যেন লাশ গুলা ফিরিয়ে দেয়াহয়।
এ ব্যাপারে বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি আমি স্থানীয়ভাবে জানতে পেরেছি। লাশ যখন দেশে আসবে থানার পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগীতা করা হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
বর্তমান সরকারের নানামুখী উদ্দ্যগে শিগগিরই দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ সংকটে পড়লে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হৃদয়ে আঘাত লাগে। সামনে পবিত্র রমজান মাস, অচিরেই আমরা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে পারব। আস্থা হারাবেন না। বিএনপি’র কথায় কান দেবেন না।’
ওবায়দুল কাদের আজ ২৭ জানুয়ারি শনিবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত শান্তি ও গণতন্ত্র সমাবেশে একথা বলেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এই সমাবেশের আয়োজন করে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের সঞ্চলনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন ও এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক প্রমুখ।
বিপুল ভোটে আওয়ামী লীগ নির্বাচিত হয়েছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিদেশিদের ভয় দেখান? ৪১.৮ শতাংশ ভোটারের ভোটে সরকার গঠিত হয়েছে। এই সরকার জনগণের সরকার, নির্বাচিত সরকার। যেখানে ২৮টি দল অংশ নিয়েছে।
তিনি বলেন, সরকারকে যারা বিদেশিদের ভয় দেখায়, তাদের দেশপ্রেম নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। চীন-ভারত-রাশিয়া আমাদের বন্ধু হতে পারে, কিন্তু আমাদের সরকারকে কোনো বিদেশি শক্তি ক্ষমতায় বসায়নি। দেশের মানুষের বিপুল ভোটে এ সরকার নির্বাচিত হয়েছে। শেখ হাসিনা মহান আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পান না।
বিএনপির আন্দোলন কবে হবে- প্রশ্ন রেখে ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৫ বছর গেল, সামনে আরও ৫ বছর। লন্ডনের তারেক রহমানে আর কারো আস্থা নেই। নেতাকর্মীরা এখন আর তারেকের ফরমায়েশে কান দেয় না। আগামী ৩০ জানুয়ারি বিএনপির কালো পতাকা মিছিল কর্মসূচির দিনও সারা দেশে নেতাকর্মীদের মাঠে থাকার নির্দেশনা দিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, কালো পতাকা মানে শোকের মিছিল। এ আরেক ভুয়া কর্মসূচি। ৩০ তারিখে আবার ডেকেছে, সেটাও ভুয়া। আপনারা সবাই ৩০ জানুয়ারি সকাল থেকে মাঠে থাকবেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ৩০ তারিখ পতাকা হাতে ‘শান্তি, গণতন্ত্র ও উন্নয়ন’ সমাবেশে অংশ নেবেন। তারা সতর্ক পাহারায় থাকবেন।
বিএনপিকে ‘অপ-সাম্প্রদায়িক শক্তি’ হিসেবে অভিহিত করে- ওবায়দুল কাদের বলেন, এদের আমরা আর বাড়তে দিতে পারি না, এদের রুখতে হবে। স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে এদের মোকাবিলা করতে হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচনের খেলা শেষ, এখন খেলা রাজনীতির। দুর্নীতির বিরুদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধেও খেলা হবে। খেলা হবে হরতাল ও আগুন-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। ৩০ তারিখ আবার কালো পতাকা মিছিল। সে দিন আপনারা লাল-সবুজের পতাকা নিয়ে গণতন্ত্র, শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করবেন।
সমাবেশে বক্তব্য প্রদানকালে বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্য করে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কালো পতাকা কাকে দেখাবে? বিএনপির উচিত ছিল, নেতারা যারা ব্যর্থ কর্মসূচি দিয়েছে, তাদের কালো পতাকা দেখিয়ে তৃণমূল নেতাদের নেতৃত্বে নিয়ে আসা। এখন বিএনপিকে আগামী পাঁচ বছর নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি বলেন, নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য এমন কোনো হীন কাজ নেই, যা তারা (বিএনপি) করেনি। বিদেশি ষড়যন্ত্রসহ সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করেছি। আজকে আমাদের আনন্দের দিন, পঞ্চমবারের মতো আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আবার সরকার এসেছে। এতে দক্ষিণ আওয়ামী লীগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
আন্তর্জাতিক বিশ্ব এই সরকারকে সমর্থন জানাচ্ছে জানিয়ে কামরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশকে একটি স্মার্ট বাংলাদেশ করার প্রত্যয় নিয়ে শেখ হাসিনা এগিয়ে যাচ্ছে। বিএনপি নির্বাচনে না এসে, নির্বাচন বন্ধ করার চেষ্টা করে, মানুষ পুড়িয়ে মেরে যে অপরাধ করেছে- সে অপরাধের বোধ তাদের হবে। তারা হয় তাদের ভুল স্বীকার করে রাজনীতি থেকে বিদায় নেবে, না হয় জনগণের কাছে ভুল স্বীকার করে আবার রাজনীতিতে আসবে।
জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে বিএনপিকে কালো পতাকা দেখিয়ে দিয়েছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিভিন্ন রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধান শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। বাংলাদেশের মানুষ শেখ হাসিনাকে নির্বাচিত করেছে। বিএনপি কালো পতাকা কাকে দেখাতে চায়? জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে বিএনপিকে কালো পতাকা দেখিয়ে দিয়েছে। তাদের আন্দোলনে বিদেশিরা সাড়া দেয়নি। দেশের জনগণ তাদের কালো পতাকা দেখিয়েছে।
মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, নির্বাচন কোনো দল বয়কট করলে কিছু যায় আসে না। নির্বাচনে এই দেশের জনগণের অংশগ্রহণ বলে দেয় তাদের ষড়যন্ত্র বানচাল হয়ে গেছে। যতক্ষণ জনগণ থাকে ততক্ষণ বানচাল করার কোনো সুযোগ নেই। বাংলাদেশের মানুষ উন্নয়ন চায়, এই অপশক্তির বিলীন দেখতে চায়। সূত্র : বাসস
অনলাইন ডেস্ক :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের মনোনয়নের জন্য দ্বিতীয় দিনে আগ্রহী প্রার্থীদের মধ্যে মোট এক হাজার ২১২টি দলীয় ফরম বিক্রি করেছে আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে অনলাইনে বিক্রি হয়েছে ৩২টি।
এ নিয়ে দুই দিনে ক্ষমতাসীন দলটির মোট মনোনয়ন ফরম বিক্রি হলো দুই হাজার ২৭৬টি।
আজ ১৯ নভেম্বর রবিবার দ্বিতীয় দিনের ফরম বিক্রি শেষে আওয়ামী লীগের দপ্তর থেকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এবার আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন ফরমের মূল্য ৫০ হাজার টাকা। সে অনুযায়ী দ্বিতীয় দিনে সরাসরি বিক্রি হয়েছে ছয় কোটি ছয় লাখ টাকা। আর অনলাইনে ১৬ লাখ টাকার মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে।
এর আগে ১৮ নভেম্বর শনিবার প্রথম দিন মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয় এক হাজার ৬৪টি।
আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম বিক্রি চলবে আগামী ২১ নভেম্বর মঙ্গলবার পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের জন্য আগ্রহী প্রার্থীদের ফরম সংগ্রহ ও জমা দিতে হবে। ফরম সংগ্রহ ও জমা কার্যক্রম চলবে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।