অনলাইন ডেস্ক :
বিদ্রোহী যোদ্ধাদের আক্রমণের মুখে ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক ছেড়েছেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। তার দেশ ছাড়ার পর দেশটির প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জালালি বলেছেন, জনগণের দ্বারা নির্বাচিত যেকোনো নেতৃত্বকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। আজ ৮ ডিসেম্বর রবিবার এসব কথা বলেন তিনি। খবর-আল জাজিরার
তিনি জানান, নিজের বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার কোন পরিকল্পনা নেই তার। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সচল রাখতে কাজ করবেন।
প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জালালি আরও বলেন, এই দেশটি একটি স্বাভাবিক দেশ হতে পারে যেটি তার প্রতিবেশী এবং বিশ্বের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করে। তবে এটি সিরিয়ার জনগণের দ্বারা নির্বাচিত যেকোনো নেতৃত্বের ওপর নির্ভর করে। আমরা এটিকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত এবং সম্ভাব্য সব ধরনের প্রস্তাব দিতে প্রস্তুত। এসময় জনগণকে সরকারি সম্পত্তি রক্ষার আহ্বানও জানান তিনি।
এদিকে বিদ্রোহী দলের প্রধান জানিয়েছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর না হওয়া পর্যন্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো প্রধানমন্ত্রীর অধীনে থাকবে।
সিরিয়ার বিরোধী গোষ্ঠীগুলো সংক্ষিপ্ত এক বিবৃতিতে বলছে, ‘আমাদের বাহিনী রাজধানী দামেস্কে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। আমরা সেদনায়া কারাগারে অত্যাচারের যুগের সমাপ্তি ঘোষণা করছি। এই কারাগারের সব বন্দীদের মুক্ত করে দিয়েছি।’
চলার পথে অনলাইন ডেস্ক:
পিরোজপুরের নাজিরপুরের সফিকুল ইসলাম ওরফে শফিউল্লাহ শেখ। ভাগ্য বদলাতে ১৩ লাখ টাকায় ইতালি যাওয়ার জন্য চুক্তি করেন। প্রথমে সাত লাখ টাকা দেন; পরবর্তীসময়ে আরও পাঁচ লাখ টাকা দেওয়ার কথা ছিল। ইতালি যাওয়ার কথা বলে প্রথমে দুবাই, পরে সিরিয়া হয়ে লিবিয়ার ‘গেম ঘর’ নামক টর্চাল সেলে নিয়ে শফিউল্লাহকে নির্যাতন করতো একটি সংঘবদ্ধ মানবপাচারকারী চক্র। চলতি বছরের ২৮ অক্টোবর রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও ডেমরা থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মানবপাচারকারী চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা (তেজগাঁও) বিভাগ। একই সঙ্গে অপহৃত শফিউল্লাহকে লিবিয়া থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
রাজধানীর গুলিস্তানে নুরুজ্জামান রাজুর একটি মোবাইল ফোন মেরামতের দোকান ছিল। ইউরোপে একটি উন্নত জীবন শুরুর আশায় ২৯ বছর বয়সী এই তরুণ তার দোকান প্রায় ১২ লাখ টাকায় বিক্রি করেন। চলতি বছরের মার্চে দেশ ছেড়ে চলে যান স্বপ্নের দেশ ইতালি। মানবপাচারকারী চক্র তাকে প্রথমে দুবাই ও পরে লিবিয়ায় পাঠায়। কিন্তু রাজু লিবিয়ার বেনগাজিতে পৌঁছানোর পর তার যাত্রা হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। সেখানে তিনি গত আট মাস ‘গেম ঘরে’।
এভাবেই রাজুর বাবা আমিনুল ইসলাম তার ছেলের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার করুণ বর্ণনা দেন। আমিনুল বলেন, ‘আমি প্রতি দু-তিনদিন পরপর আমার ছেলের কাছ থেকে ফোন পাই। গেম ঘরের লোকরা মুক্তিপণের জন্য রাজুকে নির্যাতন করছে। সে সাহায্যের জন্য কান্নাকাটি করে কিন্তু আমি অসহায়।’
রাজুর বাবা আরও বলেন, ১০ লাখ টাকা চেয়ে ছেলের নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়েছে। যখন আমি বলেছিলাম আমার কাছে এতো টাকা নেই, তখন একজন বাংলাদেশি নিজেকে শরীফ বলে পরিচয় দিয়ে আমাকে ফোন করে ৭ লাখ টাকায় চুক্তি করা হয়েছে বলে জানান।
পরে সম্পত্তি বিক্রি করে ও ঋণ নিয়ে আমিনুল ইসলাম সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা দিয়ে রফাদফা করে শরীফের মাধ্যমে। এরপর নভেম্বর মাসে তিনি দুটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও একটি মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠান। টাকা দেওয়ার পরেও আমিনুলের ছেলে রাজুর কপালে মুক্তি মেলেনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লার শরীফ হোসেন। এই মানবপাচার চক্রের মূলহোতা। তিনি থাকেন লিবিয়ার বেনগাজিতে। লিবিয়ায় অবস্থান করা বাংলাদেশি লোকজন তাকে সমীহ করেন। কারণ, তিনি সেখানে ‘মাফিয়া শরীফ’ নামে পরিচিত। এই শরীফ সেখানে বসে ‘গেম ঘর’র মালিক। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ইউরোপে পাঠানোর কথা বলে শরীফের চক্র লোকজনকে লিবিয়া নিয়ে ‘গেম ঘর’ এ আটকে রেখে নির্যাতন চালায় এবং বাংলাদেশে ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নেয়। তবে সেই গেম ঘরের চাবি থাকে মাদারীপুর জেলার বাসিন্দা তাজনাহার রিক্তা নামে এক নারীর কাছে।
ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) মানবপাচারের একটি মামলা তদন্ত করতে গিয়ে এই গেম ঘরের তথ্য পেয়েছে। বাংলাদেশ থেকে হাজার মাইল দূরে সেই ‘গেম ঘর’ এ নির্মম নির্যাতনের শিকার কয়েকশ বাংলাদেশি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, মাদারীপুরে অবস্থানকারী রিক্তার হাতে শরীফ মাফিয়ার চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিলেই গেম ঘর থেকে পাচার হওয়া ব্যক্তিদের মুক্তি মেলে। লিবিয়ার গেম ঘর থেকে মুক্তি পাওয়ার সেই চাবি আগে থাকতো শরীফের স্ত্রী সুমি আক্তারের কাছে। এই সুমি গত নভেম্বরে লিবিয়ায় মাফিয়া স্বামীর রাজ্যে চলে গেছেন। এরপর সেই দায়িত্ব পান রিক্তা। সম্পর্কে সুমির ভাবি রিক্তা।
সিটিটিসি জানায়, বাংলাদেশ থেকে অবৈধপথে ইউরোপ নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ার গেম ঘরে আটকে রাখার চক্রগুলোর মধ্যে শরীফ হোসেন অন্যতম। তাকে বেনগাজিতে সবাই মাফিয়া হিসেবে চেনে। ফরিদপুর, মাদারীপুর ও শরীয়তপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় এই চক্র ছড়িয়ে রয়েছে। তাদের চক্রে নারী সদস্যও রয়েছে।
সিটিটিসির ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, শরীফ ও রিক্তা চক্রের মোবাইল ব্যাংকিংসহ বিভিন্ন ব্যাংকে শতাধিক অ্যাকাউন্টের তথ্য মিলেছে। এর মধ্যে ৭০টি অ্যাকাউন্ট তারা যাচাই করে দেখেছেন।
এতে দেখা গেছে, ওই অ্যাকাউন্টগুলোতে গত দুই বছরে অন্তত ৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজনকে লিবিয়ায় পাচার, সেখানে গেম ঘরে আটকে ও জিম্মি নাটক সাজিয়ে ভিকটিম পরিবারগুলো থেকে এই টাকা আদায় করে শরীফ চক্র।
সিটিটিসির আরেক কর্মকর্তা বলেন, লিবিয়ায় মাফিয়া শরীফের গেম ঘরে কয়েক মাস ধরে তিন শতাধিক বাংলাদেশি বন্দি অবস্থায় রয়েছে। তাদের ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি নেওয়ার কথা বলে সেখানে নিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। তবে অবৈধ অভিবাসী অনুপ্রবেশে দেশটির নৌ সীমান্তে কড়াকড়ির কারণে কেউ যেতে পারছেন না। এ অবস্থায় শরীফ জিম্মির নাটক সাজিয়ে বাংলাদেশে থাকা ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন।
ওই কর্মকর্তা বলেন, গেম ঘরে আটক থাকা লোকদের খাওয়ার খরচও তাদের স্বজনরা বাংলাদেশ থেকে পাঠান। মাসে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা খাওয়া খরচ হিসেবে শরীফের লোকদের হাতে তুলে দিতে হচ্ছে।
এডিসি তৌহিদুল ইসলাম বলেন, গত নভেম্বরে শরীফ দেশেই ছিলেন। তার বিষয়ে তথ্য পেয়ে তাকে গ্রেফতারে উদ্যোগও নেওয়া হয়। তবে ৩০ নভেম্বর দুই স্ত্রী সুমি আক্তার ও হালিমা বেগমকে নিয়ে তিনি দেশ ছাড়েন। এরপরই রিক্তা শরীফের হয়ে দেশে সমন্বয়কের দায়িত্ব পান। তবে শরীফের পুরো পরিবার, তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনও এই পাচার চক্রে জড়িত। এরই মধ্যে কয়েকজনকে গ্রেফতার করে চক্রের কার্যক্রম নিয়ে বেশকিছু তথ্য মিলেছে।
এই কর্মকর্তা বলেন, শরীফের বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর (এনসিবি) শাখায় তারা চিঠি লিখবেন, যাতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাকে দেশে ফেরানো যায়। তার গেম ঘরে থাকা বন্দিদের কীভাবে মুক্ত করা যায়, সে বিষয়েও পরামর্শ করা হবে।
দেশ থেকে যেভাবে যে রুটে পাচার ॥ সিটিটিসি কর্মকর্তারা বলছেন, শরীফ চক্রের দালালরা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে। দালালরা ইউরোপ যেতে ইচ্ছুক লোকজনকে খুঁজে বের করে। এরপর তাদের কাছ থেকে প্রথম দফায় ৩ থেকে ৪ লাখ করে টাকা নেয়। প্রলোভন দেখানো হয়, এক সপ্তাহের মধ্যে বৈধভাবে বড় জাহাজে করে ইতালি পাঠানো হবে। এরপর ইউরোপ যেতে ইচ্ছুক লোকজনকে প্রথমে বৈধভাবে (ভ্রমণ ভিসায়) দুবাই, মিশর বা তুরস্ক পাঠানো হয়। এসব দেশেও শরীফের চক্রের লোকজন রয়েছে।
তারা বাংলাদেশ থেকে পাঠানো লোকজনকে রিসিভ করে নিজেদের কাছে রাখে। এরপর সুযোগ মতো লিবিয়ার বেনগাজিতে পাঠানো হয়। সেখানে শরীফ ও তার দুই স্ত্রীসহ তাদের মাফিয়া চক্রের লোকজন রিসিভ করে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে নেয়। এরপর শুরু হয় গেম ঘরের খেলা।
সিটিটিসির কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম জানান, তাদের কাছে তথ্য রয়েছে, নভেম্বরে শরীফ দুই স্ত্রীকে নিয়ে লিবিয়ায় নিজের ডেরায় চলে গেলেও প্রথম স্ত্রী হালিমা বেগম সেখানে মারা যান। শরীফ তার পরিবারের কাছে দাবি করেছেন, হালিমা স্ট্রোক করে মারা গেছেন। তবে তাকে মেরে ফেলা হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। শরীফকে দেশে ফেরাতে পারলে এসব প্রশ্নের উত্তর মিলবে।
শরীফ চক্রের স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে লিবিয়া হয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে গেছেন, বর্তমানে লিবিয়ায় শরীফের গেম ঘরে রয়েছেন- এমন অন্তত ছয় ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তাদের মধ্যে শরীয়তপুর জেলার বাসিন্দা সোহরাব হোসেন গেম ঘর থেকে লিবিয়া যাওয়ার পথে নৌকাডুবির পর আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংস্থার মাধ্যমে উদ্ধার হয়ে দেশে ফেরেন। তিনি বলেন, তারা স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে প্রথমে ৪ লাখ টাকায় লিবিয়া যান। সেখানে তাদের একটি বাসায় রাখা হলেও কয়েকদিন পর জাহাজে তুলে দেওয়ার কথা বলে সমুদ্রের অদূরে একটি গুদামঘরের মতো বাসায় নেওয়া হয় তাকেসহ কয়েকজনকে। সেখানে তার মতো আরও কয়েকজনকে দেখতে পান। এটিই গেম ঘর নামে পরিচিত। এখান থেকেই সাগরে ছোট ছোট নৌকায় তুলে দেওয়া হয়, তাকেও একইভাবে তুলে দেওয়া হয়েছিল। যদিও তাকে বলা হয়েছিল, বড় জাহাজে ইতালি নেওয়া হবে। সেই কথা বলে তার পরিবারের কাছ থেকে আরও ৬ লাখ টাকা নেওয়া হয়। তবে স্থানীয় দালাল চক্রটি তার এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় তিনি নাম বলতে রাজি হননি।
শরীফের গেম ঘরে জিম্মি অবস্থা থেকে উদ্ধার হয়ে বিভিন্ন সময়ে দেশে ফেরা লোকজন পুলিশকে বলেছে, তাদের বাসা থেকে গেম ঘরে নেওয়ার সময়ে লিবিয়ার স্থানীয় পুলিশ বা দেশটির সন্ত্রাসী চক্র তুলে নিয়ে যায়। অনেককে গেম ঘর থেকেও তুলে নেওয়া হয়। এরপর শরীফ ও তার লোকজন দেশে থাকা দালালদের মাধ্যমে পরিবার ও স্বজনদের জানিয়ে দেন এবং তাদের মুক্ত করতে ৫ থেকে ৮ লাখ টাকা দাবি করেন।
মাদারীপুরের শিবচরের একজন বাসিন্দা রহিম শেখ গত জুলাইয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি পৌঁছতে পেরেছেন। তিনি ইমো অ্যাপসে সম্প্রতি এই প্রতিবেদককে বলেন, তাকে এক সপ্তাহের মধ্যে বড় জাহাজে ইতালি নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি ছয় মাস লিবিয়ায় থাকেন। এর মধ্যে মাফিয়াদের হাতে একবার জিম্মি হন। কিন্তু নিজের এলাকায় টাকা দেওয়ার পর মুক্ত হন। যদিও তার জিম্মি বা অপহরণ হওয়ার বিষয়টি পরিবারকে তিনি জানাতে পারেনি। যারা জিম্মি করে, অপহরণ করে তারাই ভুক্তভোগীদের পরিবারকে বলে, ভয় দেখিয়ে ও নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়।
লেনদেন ইতালিতে, হুন্ডি হয়ে আসে দেশে ॥ সিটিটিসির ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম এডিসি তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ইতালিতেও মাফিয়া শরীফের একটা সিন্ডিকেট রয়েছে। তারা অবৈধভাবে ইউরোপে লোক পাঠিয়ে অন্তত ৫ কোটি টাকা পাচারের তথ্য পেলেও এর বাইরে বড় অঙ্কের টাকার লেনদেন হয় ইতালিতে। পরে সেই টাকা হুন্ডির মাধ্যমে আসে দেশে। মূলহোতা শরীফের বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর (এনসিবি) শাখায় চিঠি পাঠানো হবে। যাতে গেম ঘরে থাকা বাংলাদেশিদের উদ্ধার করা যায়।
বিদেশ যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশি তরুণ-যুবকদের উদ্দেশ্যে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, উন্নত জীবন-যাপনের জন্য দালালরা ইউরোপ যেতে ইচ্ছুক লোকজনকে টার্গেট করে। প্রলোভন দেখানো হয়, বৈধভাবে বড় জাহাজে ইতালি পাঠানো হবে। এরপর ইউরোপ যেতে ইচ্ছুক লোকজনকে প্রথমে বৈধভাবে (ভ্রমণ ভিসায়) দুবাই, মিশর বা তুরস্ক পাঠানো হবে। এসব প্রলোভন থেকে নিজেকে ও পচিরিতদের সতর্ক করতে হবে। অন্যথায় মাসের পর মাস গেম ঘরে থেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে দেশে থাকা পরিবারের কষ্টার্জিত সম্পদ বিনষ্ট হবে।
সূত্র : জাগো নিউজ ২৪.কম
অনলাইন ডেস্ক :
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ব্যাপক আকারে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে নারী-শিশুসহ নিহত ২৩২ ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। ভয়াবহ এ হামলায় আহত হয়েছেন অসংখ্য ফিলিস্তিনি। আজ ১৮ মার্চ মঙ্গলবার সকালে কাতারভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল-জাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।
গাজা কর্তৃপক্ষ জানায়, উপত্যকার বিভিন্ন এলাকায় ইসরাইলি হামলায় মৃতের সংখ্যা ২৩২ ছাড়িয়েছে। নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে শিশুরাও রয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অসংখ্য মানুষ।
আল-জাজিরার প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, স্থানীয় সময় ১৭ মার্চ সোমবার রাতে গাজার কেন্দ্রীয় শহর দেইর আল-বালাহ, গাজা সিটি, খান ইউনিস ও রাফাহ অঞ্চলের একাধিক স্থাপনায় ব্যাপক আকারে বিমান হামলা চালায় নেতানিয়াহুর বাহিনী। এতে আবাসিক ভবনসহ বেশ কিছু অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্তের পাশাপাশি হতাহত হয়েছেন অসংখ্য মানুষ, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। যুদ্ধবিরতির চুক্তির পর এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা।
যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর আলোচনায় অগ্রগতি না হওয়ায় সামরিক অভিযান পুনরায় শুরু করা হয়েছে। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীর অনুমোদনেই এই হামলার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয় বলে জানা গেছে। এছাড়া ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে আলোচনা করেই ইসরাইল এ হামলা চালিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে হোয়াইট হাউস।
মার্কিন মধ্যস্থতায় গাজার সাময়িক যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর চেষ্টা চলছিল। তবে বন্দি বিনিময়সহ গুরুত্বপূর্ণ শর্ত নিয়ে মতপার্থক্য থাকায় আলোচনায় সাফল্য আসেনি। এতে সামরিক উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে।
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানায়, তারা আগের চেয়ে আরো শক্তিশালী সামরিক অভিযান পরিচালনা করবে। স্থল অভিযানেরও হুমকি দিয়েছে তেল আবিব। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সংঘাতের এই নতুন ধাপে গাজায় মানবিক পরিস্থিতি আরো জটিল আকার ধারণ করবে।
অনলাইন ডেস্ক :
আর্জেন্টিনার ১৯৭৮ বিশ্বকাপজয়ী দলের ফুটবলার লুইস গালভান মারা গেছেন। ৫ মে সোমবার ৭৭ বছর বয়সে তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে আর্জেন্টাইন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এএফএ)। এক বিবৃতিতে এএফএ জানিয়েছে, এই কঠিন সময়ে এএফএ এবং এর নেতৃত্ব তার পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের প্রতি হৃদয় থেকে সমবেদনা জানাচ্ছে।
আর্জেন্টিনার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, কয়েক সপ্তাহ আগে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে কর্দোবার রেইনা ফাবিওলা ক্লিনিকে ভর্তি হয়েছিলেন গালভান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত ১৯৭৮ বিশ্বকাপের ফাইনালে নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা। সেই ফাইনালে সেন্টার-ব্যাক পজিশনে খেলেছিলেন গালভান।
এরপর ১৯৮২ সালে স্পেনে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপেও খেলেছিলেন এই সেন্টারব্যাক। ১৯৮৩ সালে আন্তর্জাতিক ফুটবল ছাড়ার আগে ৩৪বার আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে জড়িয়েছেন তিনি।
১৯৭০ সালে আর্জেন্টিনার ক্লাব তালেরেস দে কর্দোবায় ফুটবল ক্যারিয়ারে হাতেখড়ি গালভানের। টানা ১২ বছর পর্যন্ত ক্লাবটির হয়ে খেলেন তিনি। মাঝে বলিভিয়ার ক্লাব বলিভারে খেলে ১৯৮৬ সালে আবার শৈশবের ক্লাবে ফেরেন। দুই দফায় ১৭ মৌসুমে ক্লাবটির হয়ে ৫০৩টি ম্যাচ খেলেন, যা ক্লাবটির হয়ে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলার রেকর্ড।
অনলাইন ডেস্ক :
দ্বিতীয় মেয়াদে আজ ২০ জানুয়ারি সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিনেই যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ব্যবস্থার ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। নির্বাচনী প্রচারণার সময় দেওয়া এই মূল প্রতিশ্রুতিটি দ্রুত পূরণ করার অঙ্গীকার করেছেন ট্রাম্প।
ক্ষমতা গ্রহণের একদিন আগে রবিবার ওয়াশিংটনে এক সমাবেশে ডোনাল্ড ট্রাম্প হাজার হাজার সমর্থকের উদ্দেশে এ কথা জানান।
ক্যাপিটাল ওয়ান এরিনাতে আয়োজিত ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ বিজয় সমাবেশে সমবেতদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, “কাল (সোমবার) সূর্যাস্তের সময় থেকে আমাদের দেশে অনুপ্রবেশ থামবে।”
নির্বাচনী প্রচার চলার সময় ট্রাম্প বারবারই বলেছেন, প্রেসিডেন্ট হলে তিনি অবৈধ অভিবাসীদের বিতাড়িত করতে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন তৎপরতা শুরু করবেন। এই পদক্ষেপের আওতায় লাখ লাখ অবৈধ অভিবাসীকে বিতাড়িত করা হবে।
ট্রাম্প বলেন, “এটা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক আন্দোলন। ৭৫ দিন আগে, আমরা ঐতিহাসিক রাজনৈতিক বিজয় অর্জন করেছি। আমাদের দেশ কখনও এমনটা দেখেনি। সোমবার থেকে, আমি ঐতিহাসিক শক্তি প্রয়োগ করে ব্যবস্থা নেব এবং আমাদের দেশের প্রতিটি সংকটের সমাধান করব।”
২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি পর এটি ওয়াশিংটনে দেওয়া ট্রাম্পের প্রথম বড় ভাষণ। ওই ভাষণের পর ট্রাম্পের সমর্থকেরা ক্যাপিটল হিলে হামলা চালাতে উদ্বুদ্ধ হয়েছিল। এবার ট্রাম্প বলেছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিলে ক্যাপিটল হিলে হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত দেড় হাজারের বেশি মানুষকে ক্ষমা করে দেবেন।
আজ সোমবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর ভাষণ দেবেন ট্রাম্প। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প কী কী পরিকল্পনা করছেন, তার আভাস তিনি ওই ভাষণে দেবেন বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্র: রয়টার্স
অনলাইন ডেস্ক :
ইসলাম এমন একটি ধর্ম যা প্রতিদিন সম্প্রসারিত হচ্ছে। বিশ্বের নানা প্রান্তে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ ইসলাম গ্রহণ করছেন। এই সংখ্যাটি ইউরোপ আমেরিকাতে উল্লেখ্য করার মতো। তেমনি একটি ঘটনা ঘটেছে লন্ডনে।
জানা যায়, মুসলিমদের মাঝে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন পিসি পল। তিনি ব্রিটিশ পুলিশের কর্মকর্তা। এ সময় মুসলিমদের কর্মকাণ্ড তাকে সন্তুষ্ট করেছে। অবশেষে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন।
ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পর তিনি বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, আমার মনে কোনো সন্দেহ নেই, আল্লাহ এক, মুহাম্মদ (সা.) তার রাসুল ও প্রিয় বান্দা। আমি এখানে শুধু পুলিশ কর্মকর্তা নই। কারও ভাই, কারও চাচা, কারও ছেলে আবার কারও ভাতিজা এবং একজন বন্ধু। ইসলাম গ্রহণ করতে পেরে আমি গর্বিত। ‘আমি ইসলামকে বেছে নিইনি। আল্লাহ আমাকে মনোনীত করেছেন।’
পল বলেন, সবাই আমাকে বলতেন যে আমি একদিন মুসলিম হবো। কিন্তু কেউ আমাকে জোর করেনি। পরে আমি কোরআন পড়া শুরু করি। এরপর আমি ইসলামের দিকে মনোনিবেশ করি। এটি মনোমুগ্ধকর ও শান্তির ধর্ম।
লন্ডনের এই পুলিশ কর্মকর্তা ১৬ বছর ধরে এজওয়্যার রোডে স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের সাথে কাজ করছেন।
পল বলেন, আমি এখানে ১৬ বছর ধরে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছি। গত জানুয়ারিতে আমি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছি। আলহামদুলিল্লাহ, আমি খুশি।
তিনি বলেন, আমার কাজ হলো সম্প্রদায়ের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা। আমি তাদের সবাইকে চিনি। শিশু, যুবক, বৃদ্ধ সবাইকে। এটা আসলে একটা বড় পরিবারের মতো।
ব্রিটিশ এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ৫ মাসে আমি দুইবার কোরআন পড়েছি। আমি কোনো নামাজে অনুপস্থিত ছিলাম না।
লোকেরা জিজ্ঞাসা করে- কেন আমি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলাম? আমার উত্তর হলো- আমি ইসলাম ধর্মকে বেছে নিইনি। আল্লাহ আমাকে বেছে নিয়েছেন। সূত্র: টিআরটি