ভারতকে হারিয়ে সিরিজে ১-১ সমতায় ফিরলো অস্ট্রেলিয়া

খেলাধুলা, 8 December 2024, 620 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
পার্থ টেস্টের ব্যর্থতা ভুলে অ্যাডিলেইডে ঘুরে দাঁড়াতে খুব একটা অসুবিধা হলো না অস্ট্রেলিয়ার। ১০ উইকেটের দাপুটে জয়ে সিরিজে ১-১ সমতা ফিরিয়েছে স্বাগতিকরা। ১৯ রানের লক্ষ্য পেরোতে কেবল ২০ বল লাগে তাদের। এর আগে প্যাট কামিন্সের তোপে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৭৫ রানেই গুটিয়ে যায় ভারত।

banner

মাত্র তিনদিনেই শেষ হলো দিবারাত্রির এই টেস্ট, যেখানে দুই দল খেলেছে মাত্র ১০৩১ বল। ভারত-অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি টেস্টে এটি সর্বনিম্ন।

শনিবার টেস্টের দ্বিতীয় দিনেই মূলত ভারতের হাত থেকে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় ম্যাচটি। ১২৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে তারা দিন শেষ করে। আজ ৮ ডিসেম্বর তৃতীয় দিনে খেলতে নেমে ১৭৫ রানে অলআউট হয় রোহিত শর্মার দল। কিন্তু প্রথম ইনিংসে অজিরা ১৫৭ রানের লিড নেওয়ায় তাদের পুঁজিটা দাঁড়ায় মাত্র ১৮ রানের।

মাত্র ১৯ রানের লক্ষ্য তাড়ায় অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনারের যে বেগ পাওয়ার কথা নয়, তারা খেলেছেন কেবল ২০ বল। নাথান ম্যাকসুইনি ১০ ও উসমান খাজা ৯ রানে অপরাজিত থেকে জয় নিশ্চিত করেছেন। ১০ উইকেটের বিশাল জয়ে সিরিজে সমতা ফেরাল প্যাট কামিন্সের দল।

Leave a Reply

গাজীপুরে মামা হত্যার আসামি ভাগিনা গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : গাজীপুরে আনিসুর রহমান হত্যার মামলার আসামি ভাগিনা Read more

সদর মডেল থানায় যোগদান করেই কঠোর…

সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য : আজহারুল ইসলাম সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

চলারপথে রিপোর্ট : ফ্ল্যাট বাসা থেকে শরীর মীর (৪০) নামের Read more

নাসিরনগরে বাবাকে হত্যার ঘটনায় ছেলে আটক

চলারপথে রিপোর্ট : নাসিরনগরে আলম মিয়া (৬০) নামের এক ব্যবসায়ী Read more

আখাউড়ায় খেলাফত মজলিসের প্রার্থীর মতবিনিময়

মোঃ ইসমাইল: ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের খেলাফত মজলিস মনোনীত প্রার্থী Read more

৫০ কেজি গাঁজাসহ একজন গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : ৫০ কেজি গাঁজা ও ১টি সিএনজি উদ্ধারসহ Read more

কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপদসীমায়, জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের…

অনলাইন ডেস্ক : বর্ষার শেষপ্রহরে নেমে আসা অবিরাম বৃষ্টি ও Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার নতুন ওসি আজহারুল…

চলারপথে রিপোর্ট : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে Read more

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে…

অনলাইন ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ঐতিহাসিক Read more

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : কুমিল্লার দাউদকান্দি বারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) Read more

মেক্সিকোতে যাত্রীবাহী বাসে ট্রেনের ধাক্কায় ১০জন…

অনলাইন ডেস্ক : মেক্সিকোর আটলাকোমুলকো শহরে একটি পণ্যবাহী ট্রেন ও Read more

কানাডায় বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

মুমিনুল হক : কানাডার টরেন্টোতে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে। Read more

ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের ফ্ল্যাট-জমি-গাড়ি জব্দের আদেশ

খেলাধুলা, জাতীয়, 21 January 2025, 713 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও মানিকগঞ্জ-১ আসনের সাবেক এমপি নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের রাজধানীর লালমাটিয়ায় দুই হাজার ৫২৩ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট, জমি ও তিনটি গাড়ি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একইসাথে তার ১২টি ব্যাংক হিসাব জব্দের আদেশও দেওয়া হয়েছে। আজ ২১ জানুয়ারি মঙ্গলবার এ আদেশ দেন ঢাকা মহানগর সিনিয়র বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত।

banner

এ দিন দুর্জয়ের এসব সম্পদ জব্দের আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক তাপস ভট্টাচার্য। শুনানি শেষে এ আবেদন আদালত মঞ্জুর করেন।

দুদকের সহকারী পরিচালক তাপস ভট্টাচার্য বলেন, এমপি থাকাকালে নাঈমুর রহমান দুর্জয় বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে মোট ১১ কোটি ২১ লাখ ৮১ হাজার ৭৯০ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। তিনি অপরাধমূলক অসদাচরণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে মানিকগঞ্জ পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেড থেকে মোট চার কোটি ২২ লাখ টাকা গ্রহণ করেন।

তিনি বলেন, দুর্জয়ের নিজের নামে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নয়টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ৪৭ কোটি ১৯ লাখ ৩৭ হাজার ৬৯০ টাকা জমা এবং ৪৬ কোটি ৪৬ লাখ ৬১ হাজার ৯৬০ টাকা তুলেছেন, যা সন্দেহজনক। তার বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

তদন্ত কর্মকর্তা আরো বলেন, বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, সাবেক এমপি নাঈমুর রহমান দুর্জয় বর্ণিত সম্পদসমূহ অন্যত্র হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার প্রচেষ্টা করছেন। তার স্থাবর সম্পদ ক্রোক ও অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।

এবারের অলিম্পিকে ২০৬টি দেশের অ্যাথলেট অংশ নিচ্ছে

খেলাধুলা, 26 July 2024, 709 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
খেলার দুনিয়ার সবকিছুকে ছাড়িয়ে যার অবস্থান। যেখানে সুযোগ পাওয়া প্রতিটি অ্যাথলেটের কাছে সর্বোচ্চ প্রাপ্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ তো আর এমনি এমনি বলা হয় না অলিম্পিককে। সেই মহাযজ্ঞের আনুষ্ঠানিক পর্দা উঠতে যাচ্ছে। প্রেমের শহর, ঐতিহ্যের শহর, সৌন্দর্যের শহর প্যারিসের কাঁধে এবার গুরুদায়িত্ব। বাংলাদেশ সময় আজ ২৬ জুলাই শুক্রবার জমকালো উদ্বোধনে শুরু হচ্ছে অলিম্পিক। কেমন হচ্ছে এবারের উদ্বোধন, কতজন অ্যাথলেটের মিলনমেলা হচ্ছে যাচ্ছে প্যারিসে? সিন নদীর তীরে চোখ রাখার আগে জেনে নেওয়া যাক- উদ্বোধনী অনুষ্ঠান কোথায়: অলিম্পিকের আয়োজক হিসেবে কোনও দেশের নাম থাকে না। থাকে শহরের নাম। এবারের অলিম্পিক হচ্ছে প্যারিসে। তো এই শহরের মূল ভেন্যু, অর্থাৎ প্রধান অ্যাথলেটিক স্টেডিয়ামে হওয়ার কথা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। যেটা হয়ে এসেছে আগের আসরগুলোতে। কিন্তু এই জায়গায় প্যারিস অলিম্পিক ব্যতিক্রম। মূল স্টেডিয়ামে নয়, এবারের অলিম্পিকের উদ্বোধন সিন নদীতে। ৬ থেকে ৭ হাজার অ্যাথলেট অস্টারলিটজ সেতু থেকে নৌকা ও বার্জে করে সিন নদীর ৬ কিলোমিটার পাড়ি দেবেন। উদ্বোধন দেখার জন্য প্রায় প্রায় ৫ লাখের বেশি দর্শকের জন্য বানানো হয়েছে বিশেষ স্ট্যান্ড। আগ্রহ যে তুঙ্গে সেটার প্রমাণ পাওয়া যায় ২ হাজার ৭০০ ইউরোর বেশি দামে টিকিট বিক্রির চিত্রে। উদ্বোধন কখন: শুক্রবার বাংলাদেশ সময় রাত ১১টা ৩০ মিনিটে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হবার কথা রয়েছে। প্রায় চার ঘণ্টাব্যাপী এই অনুষ্ঠানের বেশিরভাগ সময় দিনের আলোয়। তবে সূর্যাস্তের সময়ও রয়েছে আয়োজন। যাতে প্রেমের শহর হিসেবে পরিচিত প্যারিসের গোধূলির সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন দর্শকেরা। অনুষ্ঠানে কী রয়েছে: ঐতিহ্য মেনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সবার আগে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হবে অলিম্পিকের জন্মভূমি গ্রিসকে। এরপর শরণার্থী অলিম্পিক দলের পরিচিতি পর্ব। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশের পতাকায় অংশ নিতে পারবেন না রাশিয়া ও বেলারুশের অ্যাথলেটরা। তারা অংশ নেবেন ব্যক্তিগত পরিচয়ে। পরিচয় পর্ব শেষে রয়েছে বিনোদন পর্ব। এই অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা সাজিয়েছেন বিখ্যাত থিয়েটার পরিচালক টমাস জলি। অনুষ্ঠানটিকে ১২টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যেখানে ৩ হাজার নৃত্যশিল্পী, সংগীতশিল্পী ও বিনোদনকর্মী অংশ নেবেন। অংশগ্রহণকারী শিল্পীরা সিন নদীর তীরে, সেতুতে ও কাছাকাছি স্মৃতিস্তম্ভগুলোয় থাকবেন। খরচ কত: প্যারিস অলিম্পিক আয়োজক ঠিক কত খরচ হচ্ছে, সেটি নিশ্চিত করতে পারেনি ফ্রান্স। তবে ফ্রান্সের জাতীয় নিরীক্ষণ সংস্থার প্রধান পিয়েরে মসকোভিচি জানিয়েছেন, ৩০০ থেকে ৫০০ কোটি ইউরো খরচ হবে। মসকোভিচির বলেছেন, ‘অলিম্পিক আয়োজনের খরচ এখনও আমরা জানি না। এ গেমস আয়োজনে তিন, চার কিংবা পাঁচ শত কোটি ইউরো খরচ হতে পারে।’যদি এই খরচের পরিমাণ সত্যি হয়, তাহলে সেটি ফ্রান্সের অলিম্পিক বাজেট ছাড়িয়ে যাবে। কারণ অলিম্পিকের বাজেট করার সময় ফরাসি সরকার জানিয়েছিল, অলিম্পিক আয়োজনে তাদের বাজেট ধরা হয়েছে ২৪৪ কোটি ইউরো।
কতদিনের গেমস:
২৬ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হচ্ছে প্যারিস অলিম্পিক। তবে উদ্বোধনের আগেই শুরু হয়েছে বেশ কয়েকটি ইভেন্ট। এর মধ্যে ফুটবল অন্যতম।
তবে যদি আনুষ্ঠানিক সময়ের হিসাব টানা যায়, তাহলে প্যারিস অলিম্পিক চলবে ১৭ দিন। ২৬ জুলাই শুরু হয়ে পর্দা নামবে ১১ আগস্ট।
অ্যাথলেট সংখ্যা কত:
২০৬টি দেশের অ্যাথলেট অংশ নিচ্ছে এবারের অলিম্পিকে। আফ্রিকার ৫৪টি, ইউরোপের ৪৮টি, এশিয়ার ৪৪টি, আমেরিকার ৪১টি ও ওশেনিয়া অঞ্চলের ১৭টি দেশের সঙ্গে ব্যক্তিগত পরিচয় ও শরণার্থী দলের হয়ে অংশ নেবেন অ্যাথলেটরা। এবারের অলিম্পিকে ৩২টি খেলার ৩২৯টি ইভেন্টে প্রায় ৭ হাজার অ্যাথলেট অংশ নিচ্ছে পদকের লড়াইয়ে।
অলিম্পিক ফুটবল:
৩২টি খেলা নিয়ে সাজানো হয়েছে এবারের অলিম্পিক। অনেক আকর্ষণীয় খেলার মধ্যে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে ছেলের ফুটবল। এবারের প্রতিযোগিতায় স্বাগতিক ফ্রান্স ছাড়াও রয়েছে আর্জেন্টিনা, স্পেন, মরক্কো, মিশরের মতো দলগুলো। তবে সুযোগ পায়নি গত টোকিও অলিম্পিকের সোনাজয়ী ব্রাজিল।

banner

১৬ দল চার গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলবে প্রথম রাউন্ড। প্রত্যেক গ্রুপের শীর্ষ দুই দল নিশ্চিত করবে কোয়ার্টার ফাইনাল। এরপর চার দলের সেমিফাইনাল। জয়ী দুই দল খেলবে সোনার লড়াইয়ে। আর হেরে যাওয়ার দুই দল মুখোমুখি হবে ব্রোঞ্জের লড়াইয়ে। খেলাগুলো হবে ফ্রান্সের সাতটি ভেন্যুতে। প্রতিটি দলের স্কোয়াডে আছেন ২২ খেলোয়াড়। ১৮ জন মূল খেলোয়াড় ও ৪ জন বিকল্প। অলিম্পিক ফুটবল মূলত অনূর্ধ্ব-২৩ দলের লড়াই। তবে এই বয়সের উর্ধ্বে থাকা তিনজন খেলোয়াড়কে স্কোয়াডে রাখার অনুমোদন আছে। অর্থাৎ, ২৩ পেরিয়ে যাওয়া তিনজন খেলোয়াড় নিয়ে স্কোয়াড সাজিয়েছে সুযোগ পাওয়া ১৬ দল। আর্জেন্টিনা যেমন তাদের স্কোয়াডে রেখেছে হুলিয়ান আলভারেজ, নিকোলাস ওতামেন্দি ও থিয়াগো আলমাদাকে। মরক্কোর রেখেছে আশরাফ হাকিমিকে।

টাইগারদের সিরিজ জয়

খেলাধুলা, 7 May 2024, 810 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয়টিতেও জয় পেয়েছে টাইগাররা। এতে ৩-০ তে এগিয়ে থেকে সিরিজ জিতল নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

banner

আজ ৭ মে মঙ্গলবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। নির্ধারিত ওভারে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ১৬৫ রান তোলে টাইগাররা। জবাবে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৫৬ রান তোলে জিম্বাবুয়ে।

ব্যাট করতে নেমে তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন দাসের জুটিতে প্রথম ৩ ওভারে ২২ রান আসে বাংলাদেশের। কিন্তু চতুর্থ ওভারে গিয়ে লিটন দাস রীতিমতো পাগলামি শুরু করেন। ব্লেসিং মুজারাবানির দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে স্কুপ করতে গিয়েও সেটি ঠিকঠাক করতে পারেননি। টানা তৃতীয় বলে স্কুপ করতে গিয়ে বোল্ড হন লিটন। ১৫ বল খেলে ২ চারে কেবল ১২ রান করেন তিনি।
পরের ওভারে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ৪ বলে ৬ রান করে আউট হয়ে যান। এরপর উইকেটে এসে তানজিদ হাসান তামিমের সঙ্গী হন তাওহীদ হৃদয়। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে বাংলাদেশ তোলে ৪২ রান। দু’জনের ২৬ বলে ৩১ রানের জুটিতে আশা খুঁজে পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এই জুটি ভেঙে যায় ফারাজ আকরামের বলে। মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে ২২ বলে ২১ রান করে ফেরেন তানজিদ।

এই জুটি ভেঙে যাওয়ার পর হৃদয়ের সঙ্গী হয়ে দলকে টেনে নেন জাকের আলী অনিক। শুরুতে কিছুটা ধীরগতিতে খেললেও আস্তে আস্তে হাত খোলেন জাকের ও হৃদয়। ৩৪ বলে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে নিজের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি পান তাওহীদ হৃদয়। ১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ব্লেসিং মুজারাবানিকে স্কুপ করে চার হাঁকান হৃদয়। কিন্তু পরের বলেই তার ইয়র্কারে হয়ে যান বোল্ড। ৩৮ বলে ৫৭ রান করেন হৃদয়।

হৃদয়ের এক বল পর মুজারাবানির আরেক ইয়র্কারে বোল্ড হয়ে যান জাকের আলি অনিকও। ৩৪ বলে ৪৪ রান করেন তিনি। শেষ ওভারে ১৬ রান নেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও রিশাদ হোসেন। রিয়াদ ৯ ও রিশাদ ৬ রানে অপরাজিত থাকেন।

জিম্বাবুয়ের হয়ে ৪ ওভারে ১৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট তুলে নেন মুজারাবানি। একটি করে উইকেট পান ফারাজ আকরাম ও সিকান্দার রাজা।

রান তাড়ায় নেমে পাওয়ার প্লের ভেতরে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে জিম্বাবুয়ে। দলীয় ১৬ রানের মাথায় মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন তুলে নেন ওপেনার জয়লর্ড গাম্বিকে (৯)। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে বল হাতে নিয়েই উইকেটের দেখা পান তানজিম হাসান সাকিব। নিজেই ক্যাচ বানিয়ে ফেরান ব্রায়ান বেনেটকে (৫)।

পরের ওভারে ক্রেইগ আরভিনকে (৭) বোল্ড করেন সাইফউদ্দিন। রিশাদ হোসেনের ঘূর্ণিতে জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক সিকান্দার রাজা (১) গ্লাভসবন্দী হন উইকেটরক্ষক জাকের আলীর কাছে।

একপ্রান্তে উইকেট যাওয়ার মিছিলে আরেক প্রান্ত আগলে ছিলেন তাদিওয়ানাসে মারুমি। ২৬ বলে ৩১ রান করা এই ব্যাটারকে ফেরান মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। আগের ম্যাচের অভিষিক্ত জনাথন ক্যাম্পবেল এ ম্যাচেও ঝড়ো শুরু করেন। ১০ বলে ২১ রান করেন তিনি। টানা তৃতীয় বলে তানভীর ইসলামকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে বাউন্ডারির কাছে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি।

ক্যাম্পবেলের বিদায়ের পর জিম্বাবুয়ের হয়ে শেষ লড়াই করেন ফারাজ আকরাম। বাংলাদেশের মনে ভয়ও ধরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। শেষ ছয় ওভারে ৭৫ রান দরকার ছিল জিম্বাবুয়ের। সেখান থেকে শেষ ওভারে ২১ রানের সমীকরণে নিয়ে আসেন তারা। যদিও শেষ ওভারের প্রথম বলেই ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে ইয়র্কারে বোল্ড করেন সাইফউদ্দিন। পরে টানা দুই বলে বাউন্ডারি হজম করার পর স্লোয়ার বাউন্সারে ডট দেন তিনি। এরপর সিঙ্গেলস নিয়ে আকরামকে স্ট্রাইক দেন মুজারাবানি। শেষ বলে দুই রানের বেশি নিতে পারেননি তিনি। ১৯ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত থাকেন আকরাম।

নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ভুটানকে হারিয়েছিল ফাইনালে বাংলাদেশ

খেলাধুলা, 27 October 2024, 582 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
নেপালের কাঠমুন্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে ২৭ অক্টোবর রবিবার প্রথম সেমি-ফাইনালে ৭-১ গোলে জিতেছে বাংলাদেশ। নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের গত আসরে এই ভুটানকে ৮-০ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। যদিও গত আসরের থেকে এই ভুটান দল সম্পূর্ণ ভিন্ন। গ্রুপপর্বে দুই ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে ১৭ বার গোল দিয়েছে দলটি। এমন দলের বিপক্ষে ফাইনালে উঠার ম্যাচে তাই বাড়তি সতর্ক বাংলাদেশ। খেলেছে নিজেদের সেরা ফুটবলটাই। ফাইনালে পা রেখেছে সাফের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবেই। ভুটানকে সেমিফাইনালে উড়িয়ে দিয়েছে ৭-১ গোলের বড় ব্যবধানে।

banner

নেপালের দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে ফাইনালে যাওয়ার রাস্তাটা অবশ্য প্রথমার্ধেই পরিষ্কার করে রেখে গিয়েছিল সাবিনা খাতুনের দল। প্রথমার্ধেই ভুটানের জালে ৫ গোল দিয়েছিল সাবিনা-তহুরারা। বিরতির পর সেই ব্যবধান আরও বাড়বে সেটাই ছিল অনুমেয়। হয়েছেও তাই। তবে ফাইনালের আগে চোট সতর্কতায় কোচ পিটার বাটলার বেশ কয়েকজনকে উঠিয়ে নেওয়ায় ব্যবধানটা তত বড় হয়নি এই যা।

দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমে ম্যাচের ৫৭ মিনিটে প্রথম গোল পায় বাংলাদেশ। অনেকটা ফাকায় দাঁড়িয়ে ডি বক্সে ঢুকে বল জালে জড়ান তহুরা। পূরণ করেন হ্যাটট্রিক। এই গোলের পর মাঝে একাদশে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়। ৭১ মিনিটে গোল করেন মাসুরা পারভিন। সানজিদার নেওয়া কর্নার কিক দারুণ হেডে জালে জড়ান এই রক্ষণভাগের ফুটবলার। এরপর আর গোল না হলে ৭-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। নিশ্চিত করে আসরের ফাইনাল।

এর আগে, প্রথমার্ধের পুরো সময় জুড়ে দাপট ছিল বাংলাদেশের। ম্যাচের ৭ মিনিটে ডি বক্সের অনেক বাইরে থেকে দূর পাল্লার শটে জাল কাঁপালেন এই উইঙ্গার। বাংলাদেশ পেয়ে গেল জয়ের রসত। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি বাংলাদেশকে। ঋতুপর্ণার গোলের পর ১৪ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন তহুরা খাতুন। গোলরক্ষক খানিকটা সামনের দিকে থাকায় ডি বক্সের বাইরে থেকে শট নেন তিনি। তাতে গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে বল জালে জড়ায়।

২৪ মিনিটে সাবিনার গোলরক্ষককে ফাকি দেওয়া শট গোলপোস্টে বাধা পেয়ে ফিরে আসে। নিশ্চিত গোল মিস হওয়ায় হতাশায় মুখ লুকান সাবিনা। অবশ্য এর এক মিনিট না যেতেই বল জালে জড়িয়ে গোল আদায় করে নেন সাবিনা। বাংলাদেশ এগিয়ে যায় ৩-০ ব্যবধানে।

৩৪ মিনিটে আবারও তহুরার ম্যাজিক। বক্সের বাইরে থেকে বা পায়ের বুদ্ধিদীপ্ত শটে জাল কাঁপান তিনি। তাতে বাংলাদেশ এগিয়ে যায় ৪-০ ব্যবধানে। এক হালি গোল হজম করে ম্যাচ থেকে একরকম ছিটকে যায় ভুটান। এর দুই মিনিট না যেতেই ফের গোল। এবার গোলপোস্ট থেকে রুপনা চাকমার নেওয়া দূর পাল্লার শট মাঝ মাঠ থেকে দারুণ দক্ষতায় নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ভুটানের ফুটবলারদের কাটিয়ে গোল করে আসেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। পঞ্চম দফা এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।

খানিক পর অবশ্য এক গোল শোধ দিয়েছে ভুটান। দেখি লাজুম ৪০ মিনিটে এক গোল শোধ দেন। এ দফায় আর তাকে রুখতে পারেনি রুপনা। অনেকটা একাই পেয়ে গিয়েছিলেন রুপনাকে। সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল হয়নি লাজুমের। ব্যবধান কমিয়ে বিরতিতে যায় ভুটান। যদিও দ্বিতীয়ার্ধে আর দুই গোল হজম করতে হয়েছে তাদের। বাংলাদেশ ম্যাচ জিতেছে ৭-১ ব্যবধানে।

একই দিন দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মাঠে নামবে ভারত ও নেপাল। সেই ম্যাচের জয়ী দল আগামী বুধবার বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশের।

বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন ভারত

খেলাধুলা, 30 June 2024, 728 Views,

স্পোটর্স ডেস্ক :
৩০ বলে প্রয়োজন ছিল ৩০ রান। হাইনরিখ ক্লাসেন এক ওভারেই ম্যাচটাকে নিয়ে আসেন প্রায় দক্ষিণ আফ্রিকার হাতের মুঠোয়। ভারতের করা টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালের দলীয় সর্বোচ্চ ৭ উইকেটে ১৭৬ রানও তখন সহজ লক্ষ্য মনে হচ্ছিল। কিন্তু যশপ্রীত বুমরা তাদের সেই সহজ কাজটাকেই কঠিন করে তোলেন অবিশ্বাস্য বোলিংয়ে। ডেথ ওভারে ২ ওভারে মাত্র ৬ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়ে শেষ ওভারে সমীকরণটা কমিয়ে আনেন ১৬ রানে।

banner

হার্দিক পান্ডিয়ার করা ওই ওভারের প্রথম বলটা ছিল ফুলটস। স্ট্রাইকে থাকা ডেভিড মিলার ঠিকঠাক মেরেছিলেনও। কিন্তু লং অফ বাউন্ডারিতে থাকা সূর্যকুমার যাদবের অবিশ্বাস্য রিলে ক্যাচে নিশ্চিত ছক্কাটাই হয়ে যায় আউট। জয় তখন উল্টো ভারতের হাতের মুঠোয়, টি–টোয়েন্টি শ্রেষ্ঠত্বের মুকুটটা আবার মাথায় উঠল বলে। শেষ ওভারে হার্দিক পান্ডিয়া সেই সুযোগ হাতছাড়া হতে দেননি। ওভারের পঞ্চম বলে কাগিসো রাবাদাকে আউট করলেন। শেষ ওভারে মাত্র ৮ রান দিলে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস শেষ হয় ৮ উইকেটে ১৬৯ রানে। ৭ রানের জয়ে ১৭ বছর পর দ্বিতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জিতল ভারত। প্রথম শিরোপা ২০০৭ সালে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম আসরে।

ডেভিড মিলারের অবিশ্বাস্য চোখজোড়া দেখে মনের কথাগুলো আন্দাজ করা যায় এমন। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রীড়াঙ্গনে এখন প্রবাদটা বেশ পরিচিত।
দেশটির রেসলার ড্রিসুস ডু প্লেসিস কথাটা জনপ্রিয় করেছেন সম্প্রতি, অবশ্যই নিজেদের যন্ত্রণা বোঝাতে।

কিন্তু সূর্যকুমার যাদব কী ভাবছিলেন? শেষ ওভারে যখন ১৬ রান দরকার, অসহনীয় চাপ তখন ঘিরে থাকার কথা। এর মধ্যে বলটা ধরে ভেতরে রাখলেন সূর্য, নিজে বাউন্ডারির বাইরে গিয়ে ফিরে এসে নিলেন ক্যাচটা। আউট হলেন মিলার, নিশ্চিত হলো ভারতের বিশ্বকাপও।

অসহনীয় চাপ, বহুবার কাছে গিয়েও শিরোপা না জিততে পারার আফসোস, এত এত প্রত্যাশার শেষে দুঃখের কান্না; ভারতও কি কম ভুগেছে একটি বিশ্বকাপের জন্য? এক দশক অথবা তারও বেশি সময় আগে বিশ্বকাপ জেতা হয়েছিল তাদের। ২০১১ সালে ওয়াংখেড়েতে ‘ফিনিশেস থিংস অব ইন স্টাইল’ করে বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন মাহেন্দ্র সিং ধোনি। এরপর এবার। মাঝে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ছাড়া নেই আন্তর্জাতিক কোনো শিরোপাও। ক্রিকেট প্রায় ধর্ম যেখানে, তাদের জন্য কতটা হতাশার, ওই যন্ত্রণাই বা কে জানতে চেয়েছে এতদিন!

শনিবার রাতে বার্বাডোজে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৭ রানে হারিয়েছে ভারত। শুরুতে ব্যাট করে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৭৬ রান করে ভারত। ওই রান তাড়া করতে নেমে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রানের বেশি করতে পারেনি প্রোটিয়ারা।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম আট বলের পাঁচটিতেই বাউন্ডারি পায় ভারত। মার্কো ইয়ানসেনের করা প্রথম ওভারে তিনটি বাউন্ডারি হাঁকান বিরাট কোহলি, আসে ১৫ রান। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে সবচেয়ে খরুচে প্রথম ওভার করেন ইয়ানসেন।

পরের ওভারে স্পিনার কেশভ মাহারাজকে নিয়ে আসেন প্রোটিয়া অধিনায়ক এইডেন মার্করাম। তাকে প্রথম দুই বলে বাউন্ডারি হাঁকান রোহিত। এক বল ডট দেওয়ার পরেরটিতেই উইকেট এনে দেন মাহারাজ। তাকে সুইপ করতে গেলে বল কিছুটা শূন্যে ভেসে ছিল, স্কয়ার লেগে নিচু হওয়া ক্যাচ দারুণভাবে নেন হেনরিখ ক্লাসেন। ৫ বলে ৯ রান করে ফিরতে হয় রোহিতকে।

মুখোমুখি হওয়া দ্বিতীয় বলে আউট হয়ে যান ঋষভ পান্তও। সুইপ করতে গিয়ে ব্যাটের আগায় লেগে বল উপরে উঠে যায়, সহজ ক্যাচ নেন কুইন্টন ডি কক। ২ বলে শূন্য রান করে আউট হন পান্ত। ভালো শুরুর পর হুট করেই খেই হারায় ভারত।

তাদের বিপদ আরও বাড়ে পঞ্চম ওভারের তৃতীয় বলে সূর্যকুমার যাদব আউট হলে। কাগিসো রাবাদার বলে ফাইন লেগে তার ক্যাচ নেন ক্লাসেন। ৪ বলে ৩ রান করে ফেরত যান সূর্য। এরপর পাঁচে অক্ষর প্যাটেলকে পাঠায় ভারত। তাদের এই কৌশল কাজে লাগে ভালোভাবেই।

বিরাট কোহলিকে সঙ্গে নিয়ে ইনিংস টানেন অক্ষর। সুযোগ পেলেই ছক্কা হাঁকিয়ে রানের চাকাও সচল রাখেন। কোহলির সঙ্গে তার জুটি ছাড়িয়ে যায় পঞ্চাশ রান। কিন্তু নিজের হাফ সেঞ্চুরি ছুতে পারেননি তিনি। অক্ষরের অলসতা ও কুইন্টন ডি ককের চতুরতায় কোহলির সঙ্গে তার জুটি ভাঙে।

রাবাদার বলে ফ্লিক করতে যান কোহলি। কিন্তু ঠিকঠাক টাইমিং হয়নি, বল থাকে উইকেটরক্ষকের কাছাকাছি। এর মধ্যে রান নেওয়ার চেষ্টা করেন অক্ষর, কিন্তু কোহলি ফিরিয়ে দেন তাকে। ফেরার জন্য যথেষ্ট সময় পেলেও দ্রুততা ছিল না অক্ষরের। উইকেটরক্ষকের জায়গা থেকে সরাসরি থ্রোতে নন স্ট্রাইক প্রান্তে স্টাম্প ভাঙেন ডি কক। ৩১ বলে ১টি চার ও চারটি ছক্কায় ৪৭ রান করে সাজঘরে ফেরত যান অক্ষর।

তার বিদায়ের পর হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন কোহলি। এই টুর্নামেন্টে প্রথমবার এই মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। আগের সাত ইনিংসে স্রেফ ৭৫ রান করেছিলেন, দুবার আউট হয়েছিলেন শূন্য রানে। ফাইনালে ৪৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন কোহলি।

ফিফটি পাওয়ার পর কিছুটা চালিয়ে খেলার চেষ্টা করেন কোহলি। হাফ সেঞ্চুরি পাওয়ার পরের ১১ বলে ১৬ রান আসে তার ব্যাট থেকে। মার্কো ইয়ানসেনের আগের বলে ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন। পরেরটি একটু স্লো করেন তিনি, এবার পুল করতে গিয়ে ক্যাচ দেন রাবাদার হাতে।

কোহলির সঙ্গে পরে পঞ্চাশ পেরোনো জুটি হয়েছিল দুবেরও। ইনিংসের দুই বল বাকি থাকতে আউট হন দুবে। ১৬ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৭ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। শেষ বলে জাদেজাও আউট হন। তবে ততক্ষণে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান করে ফেলেছে ভারত। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে করা অস্ট্রেলিয়ার ১৭৩ রান টপকে তারা করে ১৭৬ রান।

রান তাড়ায় নেমে শুরুতেই স্বস্তি উবে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার। ভারতের হয়ে কাজটি যার করার কথা ছিল, করেছেন তিনিই। দুর্দান্ত এক ডেলেভারিতে রেজা হেনরিকসকে বোল্ড করে সাজঘরে ফিরিয়ে দেন জাসপ্রিত বুমরাহ। ৫ বল খেলে ৪ রান করে আউট হন রেজা।

দ্বিতীয় উইকেটের জন্যও খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি ভারতকে। আর্শদ্বীপের করা পরের ওভারে মার্করাম ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া দলকে টেনে তোলেন ডি কক, তার সঙ্গী হন ক্রিস্তিয়ান স্টাবস। পাওয়ার প্লের শুরুতে চাপে পড়া দলকে ছয় ওভারে ৪২ রান এনে দেন তারা।

যখন মনে হচ্ছিল স্টাবস-ডি কক জুটি জমে গেছে নবম ওভারে গিয়ে তখনই দুজনের জুটি ভাঙে। অক্ষরকে সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান স্টাবস। ২১ বলে ৩১ রান করে সাজঘরে ফেরত যান তিনি, ভাঙে ৩৮ বলে ৫৮ রানের জুটি। তার আউট হওয়ার পর হতাশায় নিজের ব্যাটে ঘুষি মারেন ডি কক।

কিন্তু তার পরের সঙ্গীকে নিয়েও দারুণভাবেই দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন তিনি। ভারতের ভয়ও বাড়তে থাকে। স্পিনের বিপক্ষে ভয়ঙ্কর ক্লাসেন নিজের সামর্থ্যের জানান দিতে শুরু করেন। কিন্তু এর আগেই সাজঘরে ফেরেন ডি কক। আর্শদ্বীপ সিংয়ের শর্ট বল তুলে মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনের কাছে কুলদ্বীপ যাদবের হাতে ক্যাচ দেন ডি কক। ওই বলের আগেই তাকে নেওয়া হয়েছিল পেছনে।

এরপর উইকেটে এসে ক্লাসেনের সঙ্গী হন ডেভিড মিলার। আরও একবার দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসকে নতুন প্রাণ দেন তিনি। এমনকি ম্যাচটাও নিয়ে আসেন হাতের মুঠোয়। শুরুটা হয় কুলদ্বীপের করা ১৪তম ওভারে। শেষ দুই বলে চার ও ছক্কা হাঁকান মিলার।

পরের ওভারে আসা অক্ষরকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে শুরু করেন ক্লাসেন। এরপর ওই ওভারে দুটি ছক্কা ও একটি চার হাঁকান তিনি। ওই ওভার থেকে আসে ২৪ রান। এই ওভারের আগে ৬ ওভারে দরকার ছিল ৫৪ রানের। অক্ষরের ওভারের পর সেটি হয়ে যায় ৩০ বলে ৩০ রান।

কিন্তু এই জায়গা থেকেও ম্যাচ আরও একবার মোড় নেয় উল্টোপথে। ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলানো ম্যাচে প্রাণ ফেরান হার্দিক পান্ডিয়া। তার করা ১৭তম ওভার শুরুর আগে কিছুটা সময় ব্যয় করে ভারত। মোমেন্টাম বদলে দেওয়ার চেষ্টা করেন, সেটি তারা পারেনও। পান্ডিয়ার অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ক্লাসেন। ২৭ বলে ২ চার ও ৫টি ছক্কায় ৫২ রান করে সাজঘরে ফেরত যান তিনি।

ক্লাসেনের বিদায়ের পর অনুমিতভাবেই কঠিন হয়ে পড়ে ম্যাচ। ১৮তম ওভারে এসে দুই রান দিয়ে ইয়ানসেনের উইকেট তুলে নেন বুমরাহ। পরের ওভারে ৪ রান দেন আর্শদ্বীপ। শেষ ওভারে ১৬ রানের সমীকরণ আসে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে।

তাদের জন্য তখনও সবচেয়ে বড় ভরসা মিলার। ৩০ বলে ৩০ থেকে ৬ বলে ১৬ রানের সমীকরণে চলে আসা ম্যাচেও তাদের একমাত্র আশা। কিন্তু প্রথম বলেই সেটি শেষ হয়ে যায়। হার্দিকের ফুলটস এগিয়ে এসে তুলে মেরেছিলেন মিলার। কিন্তু বাউন্ডারি লাইনে তখনই ওই অবিশ্বাস্য ক্যাচ নেন সূর্যকুমার।

এরপর বাকি পাঁচ বলে কেবল ৯ রানই করতে পেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আরও একবার ‘এত কাছে তবুও কত দূরে’র গল্প লেখা হয়েছে তাদের সঙ্গে। ভারতের বহু বহু অপেক্ষার ইতি ঘটেছে এক জয়ে। হয়তো সরেছে শত কোটির চাপিয়ে দেওয়া ভীষণ এক চাপও, শিরোপা না জেতার; দক্ষিণ আফ্রিকার মতো ভারতও বলতে পারে ‘আমরা যা জানি, তারা তো জানে না’!

ভারত: ২০ ওভারে ১৭৬/৭
দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ১৬৯/৮
ফল: ভারত ৭ রানে জয়ী