অনলাইন ডেস্ক :
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ নিয়ে নির্বাচন কমিশন সংস্কার থেকে কোন রকম বাধা দেয়া হচ্ছে না কিংবা কোন রকম বাধার সৃষ্টি করা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার।
আজ ১৯ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার বিষয়ে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।
বদিউল আলম মজুমদার আরও বলেন, সব দলের অংশগ্রহণের মধ্যদিয়ে একটি অংশগ্রহণমূলক, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হউক, সেই সুপারিশ করবে নির্বাচন সংস্কার কমিশন।
তিনি বলেন, নির্বাচনে অযোগ্য না হলে সবার অংশগ্রহণের সুযোগ থাকা উচিত। সংস্কার কমিশন চায় সব দলের অংশগ্রহণে অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন হউক, এমন প্রত্যাশাই করেন তারা।
এসময় জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ জেলা-মহানগর সুজনের সভাপতি, বিভাগীয় সমন্বয়কসহ সুজনের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস গ্যাস ফিল্ডে স্থাপন করা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিফলক উদ্বোধন করা হয়েছে।
আজ ৯ আগস্ট বুধবার দুপুরে তিতাস গ্যাস ফিল্ডের ১নং কূপে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে স্মৃতি ফলকটির উদ্বোধন করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
জ্বালানি নিরাপত্তায় বঙ্গবন্ধুর অবদান স্মরণীয় করে রাখতেই তার স্মৃতিফলক স্থাপন করা হয়েছে। জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস উপলক্ষ্যে তিতাস গ্যাস ফিল্ডসহ পাঁচটি গ্যাস ফিল্ডে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিফলক স্থাপন করা হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে শাহাদাত বরণের মাত্র ছয় দিন আগে বঙ্গবন্ধুর পাঁচটি গ্যাস ফিল্ড কেনার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তেই সোনার বাংলা গড়ার ভিত তৈরি হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শিতার জন্যই অর্থনৈতিকভাবে বিশ্ব-দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেডের (বিজিএসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সুলতান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্রনাথ সরকার ও পরিচালক (প্রশাসন) আলতাফ হোসেন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. রুহুল আমিন প্রমুখ।
স্মৃতিফলক উদ্বোধনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান বলেন, সকল কূপ থেকেই গ্যাস উত্তোলনের জন্য স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে যেসব কূপ বন্ধ আছে, সেগুলো জরুরি ভিত্তিতে চালুর কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া তিতাসের নতুন আরও কিছু কূপ অনুসন্ধান এবং বর্তমানে যে স্তর রয়েছে তারচেয়ে আরও গভীরে গিয়ে গ্যাস উত্তোলনের চেষ্টা করছি আমরা।
অনুষ্ঠানে বিজিএফসিএল, পেট্রোবাংলা, গ্যাস ফিল্ডস এবং বাপেক্সের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান শেল অয়েলের কাছ থেকে তিতাস, বাখরাবাদ, রশিদপুর, হবিগঞ্জ ও কৈলাশটিলা গ্যাস ফিল্ড কিনে রাষ্ট্রীয় মালিকানাভুক্ত করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর কেনা পাঁচটি গ্যাস ফিল্ডের মধ্যে তিনটি পরিচালিত হচ্ছে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেডের অধীনে। আর পাঁচটি গ্যাস ফিল্ডে বর্তমানে মজুত আছে ৫ দশমিক ২৩ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। যার বাজারমূল্য ৩ লাখ ১৭ হাজার কোটি টাকা।
জায়েদুল কবির ভাঙ্গি, আঞ্চলিক প্রতিনিধি, গাজীপুর :
রাত পোহালেই ৭ জুন শনিবার পবিত্র ঈদুল আযহা। ঈদযাত্রার শেষ দিনে গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে আজ ৬ জুন শুক্রবার সকাল থেকেই গাড়ি ও মানুষের ঢল নেমেছে।
ফলে আজ ৬ জুন সকালে গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানজটের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে ঘরমুখো মানুষকে। সকাল ৭টার দিকে ভোগড়া বাইপাস মোড় ও চান্দনা-চৌরাস্তা এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে ফ্লাইওয়ের মধ্যে ঘরমুখো যাত্রীবাহী সকল গাড়ি অনেকটা ঠাঁই দাড়িয়ে রয়েছে দীর্ঘক্ষণ ধরে। যাত্রীদের অনেকেই গাড়ির ভেতরে গরমে অতিষ্ঠ ও দীর্ঘক্ষনের অপেক্ষায় বিরক্ত হয়ে রাস্তা তথা ফ্লাইওয়েতে নেমে যান। কখন গাড়ি চলবে সেই সময় গুনতে থাকেন।
নেত্রকোনাগামী নেত্র পরিবহনের এক বাসযাত্রী আবুল কালাম ৫বছরের শিশুসন্তান নিয়ে শুক্রবার ভোর চার দিকে ঢাকা থেকে রওনা হয়ে সকাল ৭টার দিকে গাজীপুরের ভোগড়া বাইপাস মোড়ের ফ্লাইওয়েতে পৌঁছে যানজটের কবলে চল্লিশ মিনিট ধরে বাসে বসে আছেন। তার শিশুসন্তানটি গরমে অতিষ্ঠি হয়ে কান্না শুরু করলে নিচে নেমে অপেক্ষা করতে থাকেন।
ময়মনসিংহ থেকে পিকআপ যোগে মুরগী পরিবহন করে রাজধানী যাচ্ছিলেন ব্যবসায়ী আকরাম হোসেন। তিনি জানান, শুক্রবার সকালে গাজীপুরের চৌরাস্তা এলাকায় পৌঁছানোর চার কিলোমিটার আগে থেকেই যানজটে আটকা পড়েন। যানজটের কবলে পড়ে গরমে ইতোমধ্যে তার ২০টির মতো মুরগী মারা গেছে। বৃহস্পতিবারও একই কারণে তার ১৮টি মুরগী মারা যায়। যানজট মানুষের যেমন ভোগান্তি বাড়াচ্ছে, অন্যদিকে মানুষ আর্থিক ক্ষতিরও শিকার হচ্ছে।
গাজীপুরের চান্দনা-চৌরাস্তা এলাকায় বিকল্প যান মোটরবাইকও যাত্রী পরিবহণ করছে। এখানকার মোটর বাইকচালক জনি জানান, বৃহস্পতিবার যানজটের মধ্যেও যাত্রী নিয়ে চলা গেছে। কিন্তু শুক্রবার সকালে এমন একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে যে চান্দনা-চৌরাস্তা এলাকায় খালি দেহ নিয়ে পার হওয়ার মতো অবস্থা নেই। তারপরও বিকল্প পথে যাত্রী নিয়ে তারা যেতে পেরেছেন। কিন্তু অন্য পরিবহণকে দীর্ঘক্ষণ একই জায়গায় দাড়িয়ে থাকতে হয়েছে।
ঢাকার হৃদরোগ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সযোগে রোগী নিয়ে ফিরছিলেন আলী। তিনিও শুক্রবার সকলে গাজীপুরের ভোগড়া ফ্লাইওয়েতে যানজটে আটকা পড়েন। প্রায় চল্লিশ মিনিট একইস্থলে দাঁড়িয়ে থেকে তিনি গালাগালি শুরু করেন পুলিশকে। কিন্তু আশেপাশে কোন পুলিশ ছিলো না। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমরা এ ভোগান্তি থেকে কবে রক্ষা পাব। দীর্ঘক্ষণ গরমের মধ্যে আটকা পড়ে রোগীও অসুস্থ্য হয়ে উঠেছে।
এদিকে, সকালে গাজীপুরের টঙ্গীর স্টেশনরোডের উত্তরে চেরেগ আলী এলাকার পর থেকে চান্দনা চৌরাস্তার তেলিপাড়া পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যানবাহনের দীর্ঘ সারি লক্ষ্য করা গেছে।
এছাড়া একইসময়ে কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক এলাকা থেকে চন্দ্রা মোড় পর্যন্ত যানবাহনের দীর্ঘ লাইন রয়েছে। বৃহস্পতিবার বা তার আগে যারা বাড়ি যেতে পারেননি তারা আজ শুক্রবার সকাল থেকে রওনা হয়েছেন। ভোর থেকেই তারা ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে জড়ো হয়ে অপেক্ষা করছেন বাস কিংবা গণপরিবহনের জন্য। যে যেভাবে পারছেন ট্রাক কিংবা পিকআপে করেও গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।
রংপুর থেকে ছেড়ে আসা বাসের চালক আবুল কাশেম জানান, গতকাল যেসব বাস গাজীপুর থেকে ছেড়ে উত্তরাঞ্চলে গিয়েছিল তারা কালিয়াকৈর-চন্দ্রা মোড়, টাঙ্গাইল এবং যমুনা সেতুর উভয় প্রান্তে ব্যাপক যানজটের কবলে পড়ে। তাই নির্ধারিত সময়ের চাইতেও অধিক সময় লেগেছে গন্তব্যে পৌঁছাতে। এছাড়া যাত্রী নামিয়ে গাজীপুরে ফিরতেও অনেক সময় লেগেছে। যার কারণে আজ শুক্রবার সকাল থেকেই বাসের সংখ্যা তুলনামূলক কমে গেছে।
গাজীপুর মহানগরের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. আক্তারুজ্জামান জানিয়েছেন, আজ ভোরে চান্দনা-চৌরাস্তা এলাকায় একটি লরি বিকল পয়ে পড়লে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহন আটকা পড়ে গাড়ির দীর্ঘ লাইন সৃষ্টি হয় প্রায় এক ঘন্টা পর লরিটি উদ্ধার করলে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। তবে এর এক ঘন্টা পরও গাড়ির চাপ কমেনি। এদিকে মনোযোগ দিতে গিয়ে কারা বেশি ভাড়া নিচ্ছে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়নি। সকাল সাড়ে ৯টার দিকেও গাজীপুরের চান্দনা-চৌরাস্তা এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ঘরমুখো মানুষ ও যানবাহনের প্রচন্ড ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
কালিয়াকৈর পল্লীবিদ্যুৎ এলাকার পোশাক শ্রমিক অনোয়ার হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার ‘‘কারখানা ছুটি হয়েছে দুপুরে। এরপর শুক্রবার সকালে গ্রামের বাড়ি বগুড়ায় যাওয়ার জন্য অটোরিকশায় চন্দ্রায় যাই৷ সেখানে গিয়ে দেখি হাজার হাজার যাত্রী। কোন বাস-গাড়ি খালি নেই। কখন বাস পাব আর কখন বাড়ি পৌঁছব জানি না।’’ নাওজোর হাইওয়ে পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সওগাতুল আলম বলেন, বৃহস্পতিবার ‘‘দুপুরে কলকারখানা ছুটির পর বিকেলে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মৌচাক, চন্দ্রা মোড় ও সফিপুর এলাকায় যাত্রীদের ঢল নামে। শুক্রবার সকালেও একই অবস্থা চলছে। যানবাহন সঙ্কটে কিছুটা ভোগান্তি হচ্ছে। মহাসড়কে যানবাহনের চাপ রয়েছে।’’
ওসি সওগাতুল আলম বলেন, বৃহস্পতিবারের তুলনায় আজ সকালে সড়কে গণপরিবহন ও যাত্রীসংখ্যা বেড়েছে। তবে যাত্রীর তুলনায় গণপরিবহনের সংখ্যা কম। শুক্রবার সকালে যাত্রীদের একটু চাপ বেশি থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চাপ কমে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক তরিকুল ইসলাম জানান, গাজীপুর চান্দনা চৌরাস্তায় সকাল থেকেই যাত্রীদের ভিড় থাকায় যানবাহনের চাপ রয়েছে। তবে বেলা বাড়ার সাথে সাথে সেই চাপ কমে আসবে।
অনলাইন ডেস্ক :
ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢলে লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করেছে। আজ ১৩ জুলাই বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও সন্ধ্যায় ৬টায় সেটি বিপৎসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডালিয়া পয়েন্টে পানি পরিমাপক কর্মকর্তা নূর ইসলাম।
এ দিকে পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে দেওয়ায় ব্যারেজের ভাটিতে থাকা লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী চরাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে এসব এলাকায় বন্যার আশঙ্কা করছেন নদীপাড়ের মানুষ।
নওগাঁ প্রতিনিধি :
নওগাঁর রাণীনগরের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী রক্তদহ বিল। বিলের আশপাশে ৪০টি গ্রামের মানুষের বসবাস। এই মানুষদের চলাচলের একমাত্র ভরসা মেঠো পথের শেষে খেয়াঘাটের নৌকা। বিলে পানি যতদিন থাকে, ততদিন নৌকায় পারাপার আর যখন পানি থাকে না, তখন প্রয়োজনীয় কর্ম সমাধান করতে ৪০-৫০ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে নওগাঁ, বগুড়া, রাণীনগর ও আদমদীঘিতে যেতে হয়।
এতে করে বছরের পর বছর চরম দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে জীবনযাপন করে আসতে হচ্ছে এই অঞ্চলের লাখো মানুষদের। কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে যুগের পর যুগ। হাজার চেষ্টাতে এই অঞ্চলের মানুষদের ভাগ্যে খেয়াঘাটে একটি ব্রিজ জোটেনি। ফলে আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার সুফল থেকেও বঞ্চিত এই কৃষিপ্রধান অঞ্চল।
বোদলা গ্রামের বাসিন্দা সাইদুর রহমান মুহরী জানান, মাধ্যমিক পর্যায়ের একাধিক পাঠ্যবইয়েও এই বিলের ইতিহাস লিপিবদ্ধ আছে। কয়েক হাজার বিঘা জমি নিয়ে এই বিল অবস্থিত। বিলের পূর্বপাশে নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কৃষি প্রধান অঞ্চল বোদলা, পালশা, কৃষ্ণপুর, তেবাড়িয়াসহ ৪০টি গ্রাম অবস্থিত। এই মানুষদের সহজেই নওগাঁ, বগুড়া, রাণীনগর, আদমদীঘি, সান্তাহারে চলাচলের সহজপথ হচ্ছে বিলের মধ্য দিয়ে রাস্তা। বিলের মধ্য একটি ব্রিজ না হওয়ার কারণে মেঠোপথ দিয়েই খেয়াঘাটে পারাপার হতে হয়। পারাপারের জন্য খেয়াঘাটে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় নৌকার জন্য। এই অঞ্চলের মানুষদের হাতে দুই থেকে তিন ঘণ্টা সময় হাতে বেশি নিয়ে অন্যত্র যেতে হয়। একটি ব্রিজের অভাবে এখনো এই অঞ্চলের মানুষদের প্রাচীন যুগে বসবাস করতে হচ্ছে। দিনের বেলায় ঘাটে এসে নৌকা পাওয়া গেলেও রাতের বেলায় ৪০-৫০ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে এই অঞ্চলের মানুষদের নিজের বাড়িতে ফিরতে হয়। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় শিক্ষার্থী ও জরুরি রোগীদের। অনেক প্রসূতিদের হাসপাতালে নেওয়ার পথে এই খেয়াঘাটে এসেই প্রসব হয়ে যায়।
উপজেলার তেবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা বাদশা বলেন, এই বিলের একপ্রান্তে শত বছরের ঐতিহাসিক কোসমুড়ির দরগা রয়েছে। যেখানে বিভিন্ন মানত পূরণ করতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ এসে থাকে। এছাড়াও বর্ষাকালে এই বিলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে অনেক দর্শনার্থীরা এসে থাকেন। তাই এই ঘাটে একটি ব্রিজ হলে এই বিল পর্যটকদের কাছে একটি আকর্ষণীয় স্পট হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। ফলে এখানে অনেক বেকার মানুষের কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি হবে।
নওগাঁ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী তোফায়েল আহমেদ বলেন, আমার জানা মতে ব্রিজ নির্মাণের সকল প্রক্রিয়া প্রায় শেষের দিকে। সকল বিভাগীয় প্রক্রিয়া শেষে অর্থ বরাদ্দ পেলেই ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে। আমি আশাবাদী দ্রুত এই অঞ্চলের মানুষদের শত বছরের স্বপ্নের ব্রিজ নির্মাণের সুখবর দ্রুতই পাওয়া যাবে।
নওগাঁ-৬ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন বলেন, চীনের হুয়াংহু নদীর মতো এই রক্তবিলও এই অঞ্চলের মানুষের জন্য একটি দুঃখ। এই ঘাটে একটি ব্রিজ এই অঞ্চলটিকে আমুল বদলে দিতে পারে। আমিও সংশ্লিষ্ট বিভাগকে একাধিকবার ব্রিজ নির্মাণের জন্য যাবতীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য তাগাদা দিয়েছি। দ্রুত ব্রিজ নির্মাণের সুখবর পাওয়া যাবে।
চলারপথে ডেস্ক :
সংশ্লিষ্ট আইন ও নীতিমালা অনুযায়ী মানসম্পন্ন শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা না করায় একটি মেডিকেল কলেজের অনুমোদন বাতিল এবং ৫টির কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
আজ ৫ ফেব্রুয়ারি রবিবার জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গার প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলো সরকারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে মানসম্পন্ন শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারায় ৫টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত এবং একটি মেডিকেল কলেজের অনুমোদন বাতিল করা হয়েছে। ইতোপূর্বে কয়েকটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ পরিচালনা নীতিমালার ব্যত্যয় ঘটিয়ে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করায় শিক্ষার্থী প্রতি পাঁচ লাখ টাকা করে জরিমানা আদায় করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করা হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে বর্তমানে ৭৬টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। এর মধ্যে নাইটিংগেল মেডিকেল কলেজ (আশুলিয়া), নর্দার্ন ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ (ঢাকা), নর্দার্ন প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ (রংপুর), আইচি মেডিকেল কলেজ (উত্তরা) এবং শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজের (রাজশাহী) কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। আর কেয়ার মেডিকেল কলেজের অনুমোদন বাতিল করা হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বেসরকারি মেডিকেল কলেজের কার্যক্রম স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর তদারকি করে। একইসঙ্গে অধিভুক্ত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও তদারকি করা হয়। এছাড়া বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজ আইন-২০২২ এবং বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপন ও পরিচালনা নীতিমালা, ২০১১ (সংশোধিত) অনুযায়ী গঠিত কমিটির মাধ্যমে মেডিকেল কলেজের শিক্ষার মান তদারকি করা হয়।