চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার ইব্রাহিমপুর ইউনিয়নের ইব্রাহিমপুর শাহ সুফি সাইয়্যেদ আজমত উল্লাহ (রঃ) ফাজিল মাদ্রাসায় সাঈদ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ২০ ডিসেম্বর শুক্রবার সকালে আয়োজিত এই ক্যাম্পে প্রায় ৩০০ অসহায় ও হতদরিদ্র মানুষকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ প্রদান করা হয়। ক্যাম্পের উদ্বোধন করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং সাঈদ ফাউন্ডেশনের কর্ণধার মো. সায়েদুল হক সাঈদ। তিনি নবীনগর মহিলা ডিগ্রি কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
আয়োজকরা জানান, নবীনগরের প্রতিটি ইউনিয়নে এ ধরনের ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প পরিচালনা করা হবে, যাতে সাধারণ মানুষ সহজেই চিকিৎসা সেবা পেতে পারেন। জাতীয় পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে এই কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে।
ক্যাম্পে আরো উপস্থিত ছিলেন ইব্রাহিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নোমান চৌধুরী, বড়াইল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোজাম্মেল হোসেন, ইব্রাহিমপুর মাদ্রাসার শিক্ষকসহ স্থানীয় বিএনপির নেতৃবৃন্দ।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় মেঘনা নদী থেকে অবাধে লুট হচ্ছে বালু। নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার একটি চক্র অবৈধভাবে প্রতিদিন অন্তত ২০ লাখ ফুট বালু উত্তোলন করছে। বালু লুটের ফলে নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলো যেমন ভাঙন ঝুঁকিতে, তেমনি বিপুল অঙ্কের রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। এছাড়া চড়া মূল্যে বালুমহাল ইজারা নেওয়া বৈধ ইজারাদার প্রতিষ্ঠানও বিপাকে পড়েছে। গত ২২ ডিসেম্বর এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে ইজারাদার প্রতিষ্ঠানটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে।
অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় প্রশাসন ও নৌপুলিশকে ম্যানেজ করেই দিনের পর দিন চলছে বালু লুট। এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার ধরাভাঙ্গা এলাকায়ও মেঘনা নদী থেকে বালু লুট করছে রায়পুরার আরেকটি চক্র।
আরও পড়ুন
শীগ্রই ‘কালনী এক্সপ্রেস’ ট্রেন যাত্রাবিরতি করবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মরিচাকান্দি এলাকায় মেঘনা নদী থেকে প্রতিদিন অন্তত ১০টি ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছে পার্শ্ববর্তী নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার একটি বালুখেকো চক্র। প্রতিদিন অন্তত ২০ লাখ ফুট বালু উত্তোলন করছে চক্রটি। যার বাজারমূল্য অন্তত প্রায় ৫০ লাখ টাকা। গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে অবাধে বালু লুট করে বিক্রি করছে ওই চক্রটি। রীতিমতো অস্ত্রে সজ্জিত ক্যাডার বাহিনীর পাহারায় দিনভর চলে বালু উত্তোলন। বালুখেকো চক্রের নেতৃত্বে রয়েছেন নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার আলোকবালী ইউনিয়ন যুবদল নেতা কাইয়ূম মিয়া। তার সাথে আছে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী। অবাধে বালু তোলার কারণে ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার মরিচাকান্দি, কানাইগর ও শান্তিনগর গ্রাম।
অপরদিকে, নবীনগর উপজেলার ধরাভাঙ্গা এলাকায় মেঘনা নদীতে ৫-৭টি ড্রেজার দিয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে রায়পুরা উপজেলার অপর একটি চক্র। স্থানীয় বিএনপির কয়েকজনকে নিয়ে এই চক্রের নেতৃত্ব দিচ্ছেন রায়পুরা উপজেলার মির্জাচর গ্রামের বাসিন্দা নূর ইসলাম। এই চক্রটি কয়েক মাস আগে নবীনগর উপজেলার চরলাপাং এলাকা থেকেও বালু উত্তোলন করে। পরবর্তীতে উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে পাঁচটি ড্রেজার জব্দ করে। সম্প্রতি ড্রেজারগুলো ছাড়ানোর পর আবারও ধরাভাঙ্গা এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন শুরু করেছে। অনিয়ন্ত্রিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলো। এসব গ্রামের বাসিন্দারা নদীগর্ভে ঘর-বাড়ি বিলীন হওয়ার আতঙ্কে আছেন।
আরও পড়ুন
কসবায় ৫শ টাকার জন্য ফুফাতো ভাইয়ের হাতে মামাতো ভাই খুন
এদিকে, মেঘনা নদীর জাফরাবাদ বালু মহালটি প্রায় ৭৫ কোটি টাকায় ইজারা নিয়ে বিপাকে পড়েছে মুন্সি এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। ইজারার এক বছরের মধ্যে ইতোমধ্য ৯ মাস পেরিয়ে গেছে। মূলত এই মহালে বালুর জন্য আসা ক্রেতাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রায়পুরার বালুখেকো চক্রটি নিজেদের কাছ থেকে বালু কেনার জন্য বাধ্য করছে বলে অভিযোগ করছে মুন্সি এন্টারপ্রাইজ। এর প্রতিবাদ করায় বালুমহাল সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত মুন্সি এন্টারপ্রাইজের কার্যালয়ে ওই চক্রটি কয়েকবার এসে হামলাও চালিয়েছে।
মুন্সি এন্টারপ্রাইজের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নবীর হোসেন জানান, বৈধ ইজারাদার হয়েও আমরা নদী থেকে ঠিকমতো বালু উত্তোলন করতে পারছি না। সরকারি কোষাগারে যে টাকা দিয়ে মহাল ইজারা নিয়েছি, মেয়াদ ফুরিয়ে আসলেও সেই টাকা তুলতে পারছি না। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের পাশাপাশি রায়পুরার ওই চক্রটি ক্রেতাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তাদের কাছ থেকে বালু কিনতে বাধ্য করে। যেহেতু তাদের ইজারা মূল্য দিতে হয়নি, সেহেতু তাদের পুরোটাই লাভ।
আরও পড়ুন
জমিতে সেচ দিতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নিহত ১
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম এর জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে। খুব দ্রুতই আমরা বড় রকমের অপারেশনে যাব। যেহেতু এটি বারবার হচ্ছে, সেজন্য শাস্তিও দ্বিগুণ হবে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো।
চলারপথে রিপোর্ট :
কসবায় গলিত ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিহীন অজ্ঞাত এক নারীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আজ ৭ জুলাই রোববার সকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে পুলিশ। নিহত ওই নারীর নাম রাবেয়া ইসলাম রাবু (৩৩)। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার রসুল্লাবাদ গ্রামের মৃত আলী আজম সরকারের মেয়ে। মাদক ব্যবসার জেরে তাকে হত্যা করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, জেলার কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের কাশিরামপুর গ্রামের মৃত সোনা মিয়ার ছেলে সামসুল ইসলাম প্রকাশ মিন্টু (৪৮), একই ইউনিয়নের রঘুরামপুর দক্ষিণপাড়ার মৃত সিরাজ মিয়ার ছেলে মো. আব্দুল আলীম (৪২) ও একই গ্রামের মৃত সামসু মিয়ার ছেলে মো. কুডু মিয়া (৩৮)।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) সোনাহর আলী জানান, গত ২ জুলাই কসবা উপজেলার বায়েক ইউপির কাশিরামপুরে পাহাড়ের ঢালে বাঁশঝাড়ের ভেতর থেকে মাথাবিহীন অর্ধগলিত একটি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
মরদেহটির হাত ও পায়ের তালুতে চামড়া না থাকায় ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। দৈহিক গড়ন পর্যালোচনা করে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়, এটি একটি নারীর মরদেহ এবং ৫-৭ দিন আগে হত্যা করা হয়েছে। পরবর্তীতে ঘটনাস্থল তল্লাশি করে কিছু আলামত পাওয়া যায় এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় নিহত নারীর নাম-পরিচয় পাওয়া যায়। তার পরিবারের লোকজনকে সংবাদ দিলে তারা এসে মরদেহ শনাক্ত করেন। এই ঘটনায় অজ্ঞাত আসামি করে নিহত রাবেয়া ইসলাম রাবুর ভাই বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
তিনি জানান, পুলিশ তদন্তে বায়েকের চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী সামসুল ইসলাম প্রকাশ মিন্টুকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কসবা থেকে গ্রেফতার করা হয় আব্দুল আলীম ও মো. কুডু মিয়াকে। ৬ জুলাই শনিবার বিকেলে তারা সবাই আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোনাহর আলী আরও জানান, পুলিশের কাছে তিন আসামি জানিয়েছেন তারা তিনজনই মাদক ব্যবসায়ী।
নিহত রাবেয়া ইসলাম রাবু মাদক পরিবহন করে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যেতেন। বেশ কিছুদিন আগে রাবু তাদের কাছ থেকে ১২ কেজি গাঁজা নিয়ে যান সরবরাহ করতে। কিন্তু সেই গাঁজার টাকা আর পোরিশোধ করেননি। এনিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য চলে আসছিল। এরই জেরে রাবুকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তারা। গত ২৫ জুলাই রাবু কসবায় আবারো মাদক নিতে এলে সামসুল ইসলাম প্রকাশ মিন্টু, আব্দুল আলীম ও মো. কুডু মিয়া তাকে ধরে বায়েকের সীমান্তবর্তী একটি পাহাড়ে নিয়ে যান। সেখানে রাবুকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে বাঁশের ঝোপে ফেলে চলে যান। নীরব এলাকা হওয়ায় মরদেহটি কারো নজরে পড়েনি। এক সপ্তাহ পর স্থানীয়রা মরদেহটি দেখতে পেয়ে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে সেটি উদ্ধার করে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে বাস ও ট্রলির মুখোমুখি সংঘর্ষে রুবেল সরকার (৪০) নামে এক যুবকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো দুজন। আজ ১০ মার্চ সোমবার সকালে উপজেলার রাধিকা সড়কের কনিকাড়া নামক স্থানে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। নিহত রুবেল ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন গৌরনগর গ্রামের বাসিন্দা রতন সরকারের ছেলে। আহত ২ যুবক হলেন- মো. অলি মিয়া ও এমদাদুল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এই সড়কের প্রতিনিয়তই প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটে।
সোমবার ভোর ৬টায় নবীনগর-রাধিকা সড়কে বাস ও ট্রলির মুখোমুখি সংঘর্ষে তিন জন গুরুতর আহত হন। পরে তাদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রুবেলকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত দুজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নবীনগর থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নবীনগর রাধিকা সড়কে বাস ও ট্রলির মুখোমুখি সংঘর্ষে এক যুবক নিহত হয়েছেন। তার পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ৬ ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২টি দেশীয় তৈরি একনলা বন্দুক, ৭টি কার্তুজ এবং ২টি দা উদ্ধার করা হয়। গতকাল ১৪ অক্টোবর সোমবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের ধারাভাঙ্গা গ্রাম থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
এরা হলেন নরসিংদী জেলার অলীপুর গ্রামের আরমান (৪২), একই গ্রামের কাজী তারেক (৩৪), আমজাদ হোসেন (২৭), সাজ্জাদ মনা (২২), আশরাফুল ইসলাম হিমেল (২০) ও আবু সাঈদ (২৭)।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে বালু মহালের সামনে থেকে একটি ইঞ্জিনচালিত স্পিডবোটসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়। বালু মহালসহ এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে ডাকাতি করার উদ্দেশ্যে তারা সংঘবদ্ধ হয়েছিলো। তাদের বিরুদ্ধে একটি ডাকাতি প্রস্তুতি মামলা ও একটি অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজ ১৫ অক্টোবর মঙ্গলবার সকালে আসামিদের আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।