চলারপথে রিপোর্ট :
আজ ৬ জানুয়ারি সোমবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় জিরাভর্তি একটি ভারতীয় ট্রাক আখাউড়া স্থলবন্দরে এসে পৌঁছায়। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আমদানি পণ্যের এটিই প্রথম চালান। এর মধ্য দিয়ে বন্দরের আমদানি বাণিজ্য স্বাভাবিক হলো। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ৫ টন জিরা আমদানি করা হয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত বন্দর দিয়ে ভারত থেকে কোনো পণ্য আমদানি হয়নি। সোমবার মেসার্স পড়শী ইমপেক্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান ভারত থেকে ৫ টন জিরা আমদানি করেছে।
ভারতীয় প্রতিষ্ঠান এম. টি. ই. এক্সিম প্রাইভেট লিমিটেড প্রতি কেজি ৩ দশমিক ৪৯ ডলার মূল্যে এসব জিরা রফতানি করেছে।
আখাউড়া স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক মো. মাহমুদুল হাসান জানান, দীর্ঘদিন ধরে বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি অনিয়মিত ছিল। তবে চলতি অর্থবছরে প্রথমবারের মতো জিরা আমদানি হয়েছে। এর মাধ্যমে আমদানি বাণিজ্য আবারও সচল হলো।
চলারপথে রিপোর্ট :
দীর্ঘ ১৫ বছর পর আখাউড়া উপজেলায় প্রকাশ্যে মিছিল করেছে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা।
জেলা জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন সফল করার লক্ষ্যে আজ ১৪ অক্টোবর সোমবার সকালে উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী একটি মিছিল বের করে।
মিছিলটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া পৌরশহরের সড়ক বাজার, স্টেশন রোড ঘুরে মুক্ত মঞ্চের সামনে সমাবেশ করে।
আগামীকাল ১৫ অক্টোবর মঙ্গলবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন সফল করার লক্ষ্যে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন উপজেলা জামায়াতের আমীর মো. ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া, সেক্রেটারি মাওলানা মো. বোরহান উদ্দিন খান।
বক্তারা বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকার জামায়াতের ইসলামীর নেতাকর্মীদেরকে অনেক জুলুম নির্যাতন করেছে। ১৫ বছর পর প্রকাশ্যে মিছিল করতে পেরে আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শাহাদাতবরণকারী আবু সাঈদসহ সকল শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।
এ সময় পৌর জামায়াতের আমীর মো. মোরশেদ আলম, উপজেলা ছাত্র শিবিরের সভাপতি সিফাত উল্লাহ, সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ, শিক্ষক আব্দুর রহমান কাশগরি উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
অনলাইন ডেস্ক :
ইতিহাসের ভয়াবহতম অর্থনৈতিক বিপর্যয় পেরিয়ে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার পথে আরো এক ধাপ এগিয়েছে শ্রীলঙ্কা। ঋণের বিপরীতে সুদের হার কমানোর যে নির্দেশনা বৃহস্পতিবার দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক দিয়েছে— তাতেই মিলেছে দক্ষিণ এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্রটির অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, ১ জুন বৃহস্পতিবার দেশটির কেন্দ্রী ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংক ঋণের বিপরীতে সুদের হার ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ১৪ শতাংশ করার নির্দেশনা দিয়েছে। অর্থাৎ শ্রীলঙ্কার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো এখন থেকে ঋণের বিপরীতে আড়াই শতাংশ কম হারে সুদ কেটে রাখবে।
সামঞ্জস্য রক্ষা করতে অবশ্য সমপরিমাণ সুদের হার হ্রাস করা হয়েছে স্থায়ী আমানতের বিপরীতেও। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, এখন থেকে স্থায়ী আমানতের বিপরীতে ১৩ শতাংশ সুদ দেবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। আগে এই হার ছিল ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করে শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংক (সিবিএসএল) জানিয়েছে, ২৫০টি বেসিস পয়েন্টে ঋণের বিপরীতে সুদের হার কমানো হয়েছে। মূলত জাতীয় অর্থনীতিকে আরও সচল করতেই নেওয়া হয়েছে এ পদক্ষেপ।
অযৌক্তিক কর কাট-ছাঁট, অব্যবস্থাপনা, আয়ের তুলনায় ব্যয় বৃদ্ধি ও করোনা মহামারির সময়কার অর্থনৈতিক স্থবিরতার জেরে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে নেমে যাওয়ায় ২০২১ সালের শেষ দিকে ভয়াবহ অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে শ্রীলঙ্কা। দেশটির মূল্যস্ফীতি পৌঁছে যায় ৭০ শতাংশে। ডলারের মজুত না থাকায় খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানিও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল সে সময়।
রাজাপাকসে ভাইদের নেতৃত্বাধীন সরকারের অদক্ষতা ও অব্যবস্থাপনাই মূলত এজন্য দায়ী। জনগণের প্রবল বিক্ষোভে গত জুন মাসে রনিল বিক্রমাসিংহের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয় রাজাপাকসে সরকার। সেই থেকে একই সঙ্গে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট ও অর্থমন্ত্রী উভয় পদে থেকে দায়িত্ব পালন করছেন বিক্রমাসিংহে।
দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঋণদাতা সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে জরুরিভিত্তিতে ২৯০ কোটি ডলার ঋণের (বেইল আউট ঋণ) আবেদন করে বিক্রমাসিংহের সরকার। দেশটির অর্থনীতির গতিবিধি যাচাই শেষে গত মার্চে সেই ঋণ মঞ্জুর করে আইএমএফ।
কলোম্বভিত্তিক এশিয়া সিকিউরিটিজের ভাইস প্রেসিডেন্ট সঞ্জীওয়া ফেরনান্দো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ এই পদক্ষেপ নিয়ে রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা সম্ভবত চলমান এই অর্থনৈতিক সংকটের শেষ পর্যায়ে আছি।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিবিএসএল’র গভর্ণর পি. নন্দলাল বীরাসিংহে রয়টার্সকে বলেন, ‘আসলে সংকট থেকে উত্তরণের ব্যাপারটি ধাপে ধাপে ঘটে। আমরা কেউই বলতে পারি না যে আগামী কাল কিংবা আজ থেকে এক বা দু’সপ্তাহের মধ্যে আমরা সব ঠিক করে ফেলতে পারব।’
‘তবে বর্তমানের যে পরিস্থিতি, তা বিশ্লেষণ করে আমরা বলতে পারি – শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি সংকট থেকে উত্তরণের ধারাবাহিক পর্যায়ে প্রবেশ করেছে কিংবা শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক গতি ফিরে পাচ্ছে।’
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় পোষ্ট অফিসের সরকারি ৫টি গাছ টেন্ডার ছাড়া কর্তন করা হয়েছে। গাছের পরিমাপ, মূল্য নির্ধারণ এবং সরকারি অনুমতি না নিয়ে পোষ্ট মাস্টার আজহার উদ্দিন এসব মূল্যবান গাছ কর্তন করেছেন। গাছের কয়েকটি কান্ড এবং ঢালপালা পোষ্ট চত্বরের মাটিতে ফেলে রাখা হয়েছে। এর আগে বুধবার গাছগুলি কাটা হয়। তবে পোষ্ট মাস্টার আজহার উদ্দিন দাবি করে বলেন গাছ কাটার বিষয়ে বিভাগীয় অনুমতি রয়েছে।
জানা যায়, আখাউড়া পৌরশহরের প্রাণকেন্দ্র সড়ক বাজারে পোষ্ট অফিসের একতলা ভবন রয়েছে। পোষ্ট অফিস চত্বরে বেশ কিছু ফলজ ও বনজ গাছ রয়েছে। পোষ্ট মাষ্টার আজহার উদ্দিন এসব গাছ থেকে ৫টি গাছ কর্তন করেছেন। এরমধ্যে একটি গাছের গুড়ি থেকে বাকী গাছগুলো কান্ডের উপরের অর্ধাংশ ঢালপালাসহ কেটে ফেলেছেন। তবে গাছ কাটার জন্য পোষ্ট অফিস বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় বন বিভাগের কোন অনুমতি নেয়নি পোষ্ট মাস্টার।
আজ ২৩ মার্চ বৃহস্পতিবার সরজমিনে পোষ্ট অফিসে দেখা যায়, পোষ্ট অফিসের সামনের খোলা জায়গায় কিছু গাছের কান্ড এবং ঢালপালা রাখা হয়েছে। গাছ কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা পোষ্ট মাস্টার আজহার উদ্দিন বলেন, গাছের ঢালপালা বিদ্যুতের তারে পড়েছিল। এজন্য কেটে দিয়েছি। গাছ কাটার বিষয়ে বিভাগীয় অনুমতি রয়েছে। তবে, তিনি লিখিত কোন অনুমতি দেখাতে পারেন নি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা বন কর্মকর্তা গোলাম মোস্তাফা বলেন, গাছ কাটার বিষয়ে পোষ্ট অফিসের কোন চিঠি পাইনি। বিষয়টি আমি অবগত নই।
আখাউড়া উপজেলার সদ্য সাবেক বন কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, গাছ কাটতে হলে বন বিভাগকে অবগত করা হলে তারপর মাপঝোক করে মূল্য নির্ধারণ করা হয়। তারপর নিলাম কমিটি নিলাম দেওয়ার পর নিলাম প্রাপ্ত ব্যক্তি গাছ কাটবেন। এটাই নিয়ম।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ডাক বিভাগের কুমিল্লা ডেপুটি পোষ্ট মাস্টার জেনারেল (ডিপিএমজি) মোঃ মোজাম্মেল হক বলেন বৃষ্টির পানি যাতে ছাদে না পরে সেজন্য গাছের ঢালপালার ছেটে দেওয়ার নির্দেশনা আছে। তবে গাছ কাটার কোন অনুমতি দেওয়া হয়নি। বিষয়টি তদন্ত করার জন্য কসবা পোষ্ট মাস্টারকে নির্দেশ দিয়েছি।
অনলাইন ডেস্ক :
পাকিস্তানে একটি তিনতলা আবাসিক ভবন ধসে পড়ে নয় জন নিহত হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। আজ ১২ মার্চ মঙ্গলবার ভোরে পূর্ব পাঞ্জাব প্রদেশের শহর মুলতানে এই দুর্ঘটনা ঘটে। স্থানীয় মিডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুলতানের হারাম গেট এলাকায় একটি বহুতল পুরানো ভবন ধসে একজন শিশুসহ নয়জন নিহত হয়েছেন এবং আরো দুইজন আহত হয়েছেন।
জেলাটির জরুরি কর্মকর্তা ডাঃ কলিমুল্লাহ গণমাধ্যমকে জানান, ‘মুলতানের হারাম গেট এলাকায় একটি আবাসিক ভবন ধসে পড়ে এবং ১০ জন ধ্বংসাবশেষের নিচে আটকা পড়ে।
’ ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপ আশেপাশের বাড়িগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে। নিহতদের মধ্যে স্বামী-স্ত্রী, তাদের দুই ছেলে ও তাদের তিন মেয়েসহ একই পরিবারের সাত সদস্য রয়েছেন বলে জানা গেছে।
ভবনটি ধসে পরার পর জরুরি কর্মীরা ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়াদের উদ্ধারের জন্য চেষ্টা শুরু করেন। রেসকিউ ১১২২-এর আটটি গাড়ি এই উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়।
নয়টি মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। উদ্ধার কর্মীরা জানিয়েছেন, গুরুতর আহত অবস্থায় দুজনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
পাকিস্তানে ভবন ধসে পড়া সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানহীন উপকরণ দিয়ে ভবন নির্মাণ কারণে এই দুর্ঘটনাগুলো ঘটে থাকে।
সাধারনত খরচ কমাতে নিরাপত্তা নির্দেশিকাগুলো উপেক্ষা করা হয় সেখানে। ২০২০ সালের জুনে দেশটির বৃহত্তম শহর করাচিতে একটি অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিং ধসে ২২ জন নিহত হয়েছিল। সূত্র: আল-অ্যারাবিয়া, সামা টিভি
চলারপথে রিপোর্ট :
বহুল আকাঙ্ক্ষিত রেলপথ প্রকল্প যা বাংলাদেশের আখাউড়াকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলার সঙ্গে সংযুক্ত করতে যাচ্ছে। সেই মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায় দুইপাড়ের বাসিন্দারা উন্মুখ হয়ে তাকিয়ে আছেন সীমান্তের দিকে। শনিবার আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পটি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করবেন।
ওই দিন আখাউড়া-আগরতলা রেলপথে পরীক্ষামূলক বা ট্রায়াল ট্রেন চালাতে যাচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। আখাউড়া-আগরতলা রেলপথে ট্রায়াল রানের ট্রেনটি এখন পূর্বাঞ্চল রেলপথের আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে অপেক্ষা করছে।
শনিবার দুপুরে নতুন এ রেলপথ দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া রেল সেকশনের গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ভারতের উত্তর-পূর্ব ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা রেলওয়ে স্টেশনের নিশ্চিতপুর স্টেশনে যাবে একটি মালবাহী কন্টেইনার ট্রায়াল ট্রেন।
রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো) শহীদুল ইসলাম, পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন ও আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্প পরিচালক আবু জাফর মিয়া সম্প্রতি রেলপথ প্রকল্প পরিদর্শনে আসলে গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশন সুপারিন্টেনডেন্ট মো. নুরুন্নবী জানান, ঢাকার তেজগাঁও স্টেশন থেকে ট্রায়াল রান বা পরীক্ষামূলক ট্রেনটি ৩ সেপ্টেম্বর বিকালে আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে পৌঁছায়। ট্রেনটি ১১টি কোচ নিয়ে আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনে পৌঁছলে ট্রায়াল রান ট্রেনের কোচগুলোতে হলুদ ও বডিতে কালো রংয়ের কাজ করানো হয়েছে।
তিনি জানান, পরীক্ষামূলক বা ট্রায়াল রানের ট্রেনটি এখন আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশনের ৩ নম্বর প্লাটফর্মের ৮ নম্বর লাইনে রাখা হয়েছে। শুক্রবার সকালে ট্রায়াল রানের ট্রেনটি আখাউড়া স্টেশন থেকে গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হবে।
জানা গেছে, আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ উদ্বোধনের দিনক্ষণকে সামনে রেখে রেলপথ মন্ত্রী, সচিব, অতিরিক্ত সচিবসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রকল্প এলাকা ঘুরে গেছেন। শনিবার দুপুরে প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করেন রেলওয়ের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল। দলের নেতৃত্বে ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. ইয়াছিন। প্রতিনিধি দলে রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো) শহীদুল ইসলাম, পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন, আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্প পরিচালক আবু জাফর মিয়া, আখাউড়া-লাকসাম ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন প্রকল্পের পরিচালক মো. সুবক্তগীন, আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের কান্ট্রি হেড শরৎ শর্মাসহ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ইতোমধ্যে এ পথে একাধিকবার পরীক্ষামূলক গ্যাঙ্কার বা পরিদর্শন কার চলাচলও করেছে। প্রকল্পের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশন থেকে গ্যাঙ্কার বা পরিদর্শন কারে ভারত সীমান্তবর্তী শিবনগর পর্যন্ত ঘুরে দেখেছেন।
জানা যায়, ভারত-বাংলাদেশ রেলওয়ে সংযোগ প্রকল্পটি আখাউড়া-ঢাকা হয়ে আগরতলা এবং পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে ভ্রমণের সময় ও দূরত্ব কমিয়ে দেবে। প্রকল্পটি চালু হলে ৩১ ঘণ্টার পরিবর্তে সময় লাগবে ১০ ঘণ্টা এবং আগরতলা-কলকাতার দূরত্ব ১ হাজার ৬৫০ কিলোমিটার থেকে দূরত্ব দাঁড়াবে মাত্র ৫১৩ কিলোমিটার।
স্থানীয় বাসিন্দাদের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে রেলপথে বাণিজ্যের দ্বার খুলবে, কমবে পরিবহণ খরচ- এমনটাই দাবি করছেন রেলপথ মন্ত্রী ও সচিবসহ সংশ্লিষ্টরা।
আখাউড়া-আগরতলা সড়কপথের পর এবার আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ সংযোগে উন্মোচিত হবে বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যের নতুন দ্বার। রেলপথটি চালু হলে ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে পর্যটন এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়ে দিগন্তের সূচনা ঘটবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আখাউড়ার গঙ্গাসাগর থেকে আগরতলার নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণের জন্য ২০১৮ সালের ২১ মে ভারতের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই প্রকল্পের কাজ শুরু করে। দেড় বছরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও করোনা মহামারিসহ নানা সংকটের কারণে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্প পরিচালক আবু জাফর মিয়া বলেন, দুই দেশের এ রেলপথের মোট দৈর্ঘ্য ১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ রেলপথের বাংলাদেশ অংশে ৬ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার। পুরো অংশেই বসানো হয়েছে রেললাইন। ইতোমধ্যে প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৯৫ শতাংশের বেশি শেষ হয়েছে এবং শেষপর্যায়ের কাজ চলছে বলে ওই প্রকল্প পরিচালকের দাবি। তবে এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন ভবন এবং স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের কাজ।
এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ৪৭৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৫৭ কোটি ৫ লাখ টাকা এবং ভারতীয় ঋণ ৪২০ কোটি ৭৬ লাখ কোটি টাকা।
২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় এ রেলপথ নির্মাণের বিষয়ে উভয় দেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়।