দস্তারবন্দী ও আন্তর্জাতিক ইসলামী মহাসম্মেলনে মাওলানা মামুনুল হক

জাতীয়, ধর্ম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 9 January 2025, 24 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, ১৯৭২ সাল বাংলাদেশের জন্য কলঙ্কের বছর। ৭২ সালে এমন এক চেতনা ও সংবিধান তৈরি করা হয়েছিল যা ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ছিনতাই করা হয়েছে।

banner

আরও পড়ুন
লন্ডন পৌঁছেছেন বেগম খালেদা জিয়া

৯ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরে অবস্থিত হেফাজতের মহাসচিব আল্লামা সাজিদুর রহমানের প্রতিষ্ঠিত জামিয়া দারুল আরকাম আল ইসলামিয়া মাদরাসায় অনুষ্ঠিত দস্তারবন্দী ও আন্তর্জাতিক ইসলামী মহাসম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আরও পড়ুন
ডিবিতে আয়নাঘর থাকবে না, থাকবে না ভাতের হোটেলও: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আল্লামা সাজিদুর রহমানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক মুফতি খলিল আহমদ কাসেমীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেন, বাংলাদেশ-ইসলাম এক সূত্রে গাথা। বাংলাদেশে ইসলাম বিপন্ন হলে স্বাধীনতা টিকবে না। যারা ইসলামবিদ্বেষী তারাই বাংলাদেশের শত্রু। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের গৌরবময় বছর এবং ১৯৭২ সাল বাংলাদেশের জন্য কলঙ্কের বছর। ৭২ সাল কলঙ্কের কারণ, এ বছরের শেখ মুজিবুর রহমান নতুন চেতনা তৈরি করেছিলেন যা ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ছিনতাই করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান ৯ মাস পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি ছিলেন। স্বাধীনতার পর তিনি বাংলাদেশে না এসে, চলে গেলেন লন্ডনে। সেখান থেকে বাংলাদেশে না এসে চলে গেলে ভারতের নয়াদিল্লি। দেখা করলেন তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে। তখন ইন্দিরা গান্ধী শেখ মুজিবুর রহমান এর মুজিব কোটে কিছু নীতিকথা লিখে একটি চিরকুট ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন। সেই চিরকুটের কথা ছিল বাংলাদেশের গোলামির জিঞ্জির, স্বাধীনতা যুদ্ধের কৃতিত্ব ও চেতনাকে ছিনতাই করার মন্ত্র। তাই ৭২ সালের সংবিধান চার নীতি ভারতের সংবিধান থেকে পাচারকৃত।

আরও পড়ুন
ডালিম খেলে কী কী উপকার হয়?

মামুনুল হক বলেন, ১৯৭০ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে জাতির সঙ্গে শেখ মুজিবুর রহমান অঙ্গীকার করেছিলেন কোরআন ও সুন্নাহবিরোধী কোনো আইন তৈরি করবেন না। ৭২-এর সংবিধান করতে গিয়ে শেখ মুজিবুর রহমান অঙ্গীকার ভুলে গেছেন। তাই বলি ৭২ এর সংবিধান গাদ্দারের সংবিধান, মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার সংবিধান, বাংলাদেশকে ধ্বংস করার সংবিধান। সংবিধানে চার মূলনীতির এক নীতি ধর্ম নিরপেক্ষতা মতবাদ বাংলাদেশে ছিল না। এই নীতি ভারত থেকে আমদানি করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার সুনাম করে মামুনুল হক বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছিলেন। সকল রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতাদের ঐক্যবদ্ধ করেছেন। সেখানে ভারত আধিপত্যের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সর্বকালের নজিরবিহীন ঐক্য গড়ে তোলা হয়েছে। আমরাও ঘোষণা করতে চাই ভারতীয় আধিপত্যবাদ রুখতে সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতার মূলনীতি দিল্লিতে পাঠিয়ে দিতে হবে।

এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন হেফাজত ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব ও খতিবে বাঙাল আল্লামা জুনায়েদ আল হাবিব, মুফতি শাখাওয়াত হোসেন রাজি প্রমুখ।

Leave a Reply

থানায় ওসির ঝুলন্ত লাশ

অনলাইন ডেস্ক : শরীয়তপুরের জাজিরায় থানায় ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে Read more

বাংলাদেশে শিল্প কারখানা স্থানান্তরের জন্য তুরস্কের…

অনলাইন ডেস্ক : প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশে Read more

ভিসা ছাড়াই আরো দুই দেশে যাওয়া…

অনলাইন ডেস্ক : এখন থেকে ভিসা ছাড়াই তিমুর-লেস্তে যেতে পারবেন Read more

অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকদের বিদায় সংবর্ধনা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার বড়াইল হোসাইনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত Read more

দস্তারবন্দী ও আন্তর্জাতিক ইসলামী মহাসম্মেলনে মাওলানা…

চলারপথে রিপোর্ট : বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক Read more

শীতে সুস্থ থাকতে যেসব বীজ খেতে…

অনলাইন ডেস্ক : শীতের দিনগুলিতে অনেকের সর্দি, কাশি, জ্বর এর Read more

ক্যালিফোর্নিয়ায় দাবানলে ৫ জনের প্রাণহানি

হাকিকুল ইসলাম খোকন : যুক্তরাষ্ট্র এর ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেসে Read more

ডালিম খেলে কী কী উপকার হয়?

অনলাইন ডেস্ক : ডালিম উপকারী ফল হিসেবে সকলেই এটা কম Read more

২-০ গোলে জিতে ফাইনালে বার্সেলোনা

অনলাইন ডেস্ক : বার্সেলোনা কচি-কাঁচার দল। স্প্যানিশ সুপার কাপের সেমিফাইনালে Read more

ঋতাভরীর পাত্র কে?

অনলাইন ডেস্ক : প্রেমের জালে ঋতাভরী চক্রবর্তী। আভাস মিলছিলো আগেই। Read more

কোথায় হানিমুন যাচ্ছেন অভিনেত্রী উর্বী

অনলাইন ডেস্ক : বাংলা নাটকের নতুন মুখ অভিনেত্রী প্রিয়ন্তী উর্বী। Read more

ইউক্রেনে বোমা হামলায় নিহত ১৩

অনলাইন ডেস্ক : ইউক্রেনে বোমা হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এতে কমপক্ষে Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 1 September 2024, 196 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ভর্তুকি মূল্যে নিম্ন আয়ের কার্ডধারী মানুষের মধ্যে টিসিবির পণ্য সামগ্রী বিক্রয় শুরু হয়েছে। আজ ১ সেপ্টেম্বর রোববার সকাল ১০টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদ চত্বরে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মুক্তা গোস্বামী বিক্রয় কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।

banner

প্রত্যেক কার্ডধারীকে ৬০ টাকা কেজি দরে ২ কেজি করে মশুর ডাল, ১০০ টাকা দরে ২ লিটার সয়াবিন তেল ও ৩০ টাকা কেজি দরে ৫ কেজি চাল দেয়া হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মুক্তা গোস্বামী বলেন, সদর উপজেলার স্বল্প আয় ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মধ্যে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে।

পৌরসভায় ৪৯৫২ জন সহ সদর উপজেলায় ১৬৬১৮ জন নিম্ন আয়ের কার্ডধারী মানুষের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির এই পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে।

রোববার পৌর এলাকার সদর উপজেলা পরিষদ চত্ত্বর, কালভৈরব, কারখানাঘাট-আনন্দবাজার ও শেরপুর ঈদগাহ মাঠে এই টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। পরে পর্যায়ক্রমে সদর উপজেলার ইউনিয়ন পর্যায়ে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হবে।

টিসিবির পণ্য নিয়ে কেউ দুর্নীতি করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এসময় সদর উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ ইসমাইল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

কাজিপাড়ায় পুকুর থেকে কসাইয়ের মরদেহ উদ্ধার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 29 March 2023, 1238 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
পুকুর থেকে রাসেল (৪৩) নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ ২৯ মার্চ বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শহরের কাজিপাড়া দরগাহ মহল্লার একটি পুকুর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

banner

রাসেল একই পাড়ার মৌলভীহাটির হাবিবুর রহমানের ছেলে। পেশায় তিনি কসাই ছিলেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম জানান, রাসেল শখের বশে মাঝে মাঝে মাছ ধরতেন। মঙ্গলবার রাতে মাছ ধরার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। এরপর আর তার সঙ্গে পরিবারের যোগাযোগ হয়নি। সকালে দরগাহ মহল্লার একটি পুকুরে তার মরদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে তদন্তের জন্যে পাঠায়।

তিনি আরো জানান, সে কিভাবে মারা গেছে তা এখন বলা সম্ভব নয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও তদন্ত শেষে মৃত্যুর রহস্য উদঘাটিত হবে বলে প্রত্যাশা করছি।

অগ্নিসন্ত্রাসের মাধ্যমে কিছুই অর্জন করা যায় না: প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, রাজনীতি, 21 November 2023, 852 Views,
ছবি: সংগৃহীত

অনলাইন ডেস্ক :
বিএনপি ও জামায়াতের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অগ্নিসন্ত্রাসের মাধ্যমে কিছুই অর্জন করা যায় না। এটা অন্যায়। কোনো কিছু অর্জন করতে হলে জনগণের শক্তির প্রয়োজন। সে জন্য অগ্নিসন্ত্রাসের পথ পরিহার করে জনগণের কল্যাণে কাজ করার এবং তাদের পাশে থাকা প্রয়োজন। তিনি বলেন, তাদের চেতনা জাগ্রত হোক যে, মানুষকে পুড়িয়ে মেরে কোনো কিছু অর্জন করা যায় না। জনগণের অকল্যাণ করে, তাদের পুড়িয়ে মেরে কিছু অর্জন করা যায় না- অন্তত এই বিষয়টা যেন যারা এগুলো করছে তারা বুঝতে পারেন। খবর- বাসস

banner

আজ ২১ নভেম্বর মঙ্গলবার সকালে সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০২৩ উপলক্ষে ঢাকা সেনানিবাসের আর্মি মাল্টি পারপাস কমপ্লেক্সে ‘মুক্তিযুদ্ধে খেতাবপ্রাপ্ত নির্বাচিত মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের উত্তরাধিকারীগণকে সংবর্ধনা প্রদান’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে সশস্ত্র বাহিনীর সর্বোচ্চ শান্তিকালীন পদকপ্রাপ্ত সদস্যদের পদকে ভূষিত করেন।

তিনি বলেন, অগ্নিসন্ত্রাস, জ্বালাও-পোড়াও মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তোলে। আমি জানি না, একজন মানুষ কীভাবে আরেকটা জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারে। এমনটি দেখেছিলাম ৭১ সালে। তখন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বস্তিতে আগুন দিতো। আর মানুষ বেরিয়ে এলে সঙ্গে সঙ্গে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারত। দুঃখের বিষয় এরপর ২০১৩-১৪ সালে এবং ইদানীং সেই অগ্নিসন্ত্রাস শুরু করেছে। পোড়া মানুষগুলোর ক্ষতবিক্ষত দেহ এবং তাদের আত্মচিৎকার ও পরিবারগুলো কী অবস্থায় আছে।

৭৫ এর পর হারাতে বসা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে তাঁর সরকার আবার ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে লাখো বাঙালি স্বাধীনতার জন্য নিজের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছিল, পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর সেই স্লোগানও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। যে ৭ মার্চের ভাষণ এ দেশের মানুষকে উজ্জীবিত করেছিল, সেই ভাষণও নিষিদ্ধ ছিল। কিন্তু আজ সেই ভাষণ আন্তর্জাতিক প্রামাণ্য দলিল হিসেবে স্থান পেয়েছে। আড়াই হাজার বছরে সামরিক-বেসামরিক নেতারা যত ভাষণ দিয়েছে, জাতির পিতার ৭ মার্চের ভাষণ তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে, এটুকু আমরা করতে পেরেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি চিহ্নগুলো চিহ্নিত, যেখানে গণকবর আছে সেগুলো সংরক্ষণ করা, স্মৃতিস্তম্ভ গড়ে তোলার পাশাপাশি প্রত্যেকটি উপজেলায় আমরা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স তৈরি করেছি। সেখানে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন স্মৃতি ধরে রাখার জন্য মিউজিয়াম হবে। ইতিহাস থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে।

সরকারপ্রধান বলেন, নতুন প্রজন্মকে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও বীরত্বের ইতিহাস জানানো দরকার। স্বাধীনতা পেয়েছি বলেই আজকে আমরা নিজেদের পরিচয় দিতে পারি। কিন্তু একসময় সেটা পারিনি। এখন আমাদের স্বাধীন দেশে আমরা স্বাধীনভাবে চলতে পারি।

তিনি বলেন, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী শুধু দেশে নয়, বিদেশ শান্তিরক্ষা মিশনে বিরাট অবদান রেখে যাচ্ছে। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ইতোমধ্যে অনেকে জীবন দিয়েছেন। তাঁদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে সকালে প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০২৩ উপলক্ষে ঢাকা সেনানিবাসে শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

প্রধানমন্ত্রী শিখা অনির্বাণে পৌঁছলে সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম. নাজমুল হাসান, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আবদুল হান্নান এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান তাঁকে স্বাগত জানান। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধানমন্ত্রী সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে যান। সেখানে তাঁর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক এবং তিন বাহিনীর প্রধান তাঁর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর অকুতোভয় সদস্যরা এবং বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ সম্মিলিতভাবে দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সমন্বিত আক্রমণ সূচনা করে। সেই আক্রমণের ফলে আমাদের বিজয় ত্বরান্বিত হয় এবং ফলশ্রুতিতে আমরা স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ অর্জন করি।

তিনি এ সময় মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে তাঁর সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারই প্রথম ২০০০ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানি ভাতা প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। বর্তমানে ২ লাখ ৩৭ হাজার ৪৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা বা তাঁদের উত্তরাধিকারীকে মুক্তিযোদ্ধা সম্মানি ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের উত্তরাধিকারীদের বছরে দু’টি উৎসব ভাতা, বিজয় দিবস ভাতা এবং নববর্ষ ভাতা তাঁদের নিজ নিজ একাউন্টে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সরাসরি প্রদান করা হচ্ছে। যুদ্ধাহত ও শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে সম্মানী ভাতা ও উৎসব ভাতা প্রদান করা হচ্ছে।

২০২১-২২ অর্থবছর হতে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি ভাতা ২০ হাজার টাকায় উন্নীত করার পাশাপাশি সকল মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও নাতি-নাতনিদেরকে মেধাভিত্তিক স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু ছাত্রবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ের উপর প্রতি বছর পিএইচডি ডিগ্রির জন্য বৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। এরসঙ্গে খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিজ জেলা ছাড়া সার্কিট হাউস অথবা ডাক বাংলোয় অবস্থান, সরকারি পরিবহনে সর্বোচ্চ শ্রেণিতে বিনামূল্যে চলাচল, বাংলাদেশ বিমানের অভ্যন্তরীণ রুটে বছরে একবার ফ্রি যাতায়াত এবং আন্তর্জাতিক যেকোনো রুটে ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহারসহ বিনা ভাড়ায় বছরে দুইবার যাতায়াত করতে পারছেন। খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বহনকারী গাড়ি টোল ফ্রি, পর্যটন কর্পোরেশের হোটেল ও মোটেলে বিনা ভাড়ায় বছরে একবার দুই রাত যাপন এবং জেলা পরিষদ ডাক বাংলোতে সপরিবারে অবস্থান করার সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধার উত্তরাধিকারীরা রেশন, বিদ্যুৎ, গ্যাস ইত্যাদি সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সশস্ত্র বাহিনী হতে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, বর্হিবিশ্বের যে সকল বরেণ্য রাষ্ট্রনায়ক, রাজনীতিবিদ, দার্শনিক, শিল্পী-সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, বিশিষ্ট নাগরিক এবং সংগঠন বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে ঐতিহাসিক অবদান রেখেছেন তাঁদের সম্মাননা প্রদানের লক্ষ্যে পর্যায়ক্রমে ‘বাংলাদেশ স্বাধীনতা সম্মাননা’, ‘বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা’ এবং ‘মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা’ প্রদান করা হচ্ছে। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্যদের সন্তানদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের গতি অব্যাহত রেখেই দেশকে আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। সেটাই আমাদের লক্ষ্য। ইতিহাস থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে এবং ভবিষ্যতের দিকে আমরা এগিয়ে যাব জ্ঞানভিত্তিক প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে আমরা শিক্ষা-দীক্ষায় এগিয়ে যাব। বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বে আমাদের স্থান করে নেব।

‘বিগত ১৫ বছরে বাংলাদেশের অনেক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ,’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। কারণ, আমাদের উন্নয়ন শহরকেন্দ্রিক নয়, প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল পর্যায় পর্যন্ত আমরা উন্নয়নের ছোঁয়া পৌঁছে দিতে পেরেছি। তিনি বলেন, তাঁর সরকার নানা ধরনের ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে দেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা এনে দিতে পেরেছে। বাংলাদেশ ২০২৬ সাল থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যাত্রা শুরু করবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা এর প্রস্তুতি নিচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট দেশে পরিণত করতে কাজ করে যাচ্ছে। এ সময় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং তিন বাহিনীর প্রধান মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

বৈশ্বিক যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ছে : প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, 18 March 2024, 426 Views,
সংগৃহীত

অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বৈশ্বিক যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে দেশে মুদ্রাস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ছে।’

banner

আজ ১৮ মার্চ সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস ২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে আওয়ামী লীগ। আমরা ইফতার পার্টি করব না, সাধারণ মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দেব। বিএনপি শুধু ইফতার পার্টি খায় আর আওয়ামী লীগ শুধু খাওয়ায়। সারা বাংলাদেশে একমাত্র আওয়ামী লীগ এবং আমাদের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও আমাদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা সাধারণ মানুষের মাঝে ইফতার বিলি করছে।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপি ইফতার পার্টিতে গিয়ে আল্লাহ-রাসুলের নাম না নিয়ে আওয়ামী লীগের গিবত গায়। নিজেরা ইফতার খায়, আওয়ামী লীগের গিবত গায়। আর কবে আওয়ামী লীগকে উৎখাত করবে সেই স্বপ্ন দেখে।’

ডিবি পরিচয়ে বাসায় তল্লাশির ঘটনায় গ্রেফতার ৪

জাতীয়, 16 September 2023, 667 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
আশুলিয়ায় ডিবি পুলিশ পরিচয়ে এক ব্যক্তিকে মারধর করে তুলে নেয়ার সন্দেহে চারজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয়রা। এসময় তাদের ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকারও জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী।

banner

মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আজ ১৬ সেপ্টেম্বর শনিবার দুপুরে আসামিদের আশুলিয়া থানা থেকে ঢাকা আদালতে পাঠানো হয়।

এর আগে গতকাল বিকালে আশুলিয়ার ডেন্ডাবর এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকার মৃত আবুল হাশেমের ছেলে শেখ মো. মোজাম্মেল হক (৫৫), ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া থানার আলতাফ আলীর ছেলে সোহেল রানা (৩৮), গাজীপুরের কাপাসিয়ার সাহাবুদ্দীনের ছেলে আবু বক্কর সিদ্দীক (৪৮) এবং ফরিদপুরের বোয়ালমারী থানাধীন হাটখোলার চড় এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে মো. সুলতান (৩৩)। তারা সকলেই বর্তমানে গাজীপুরের কোনাবাড়ি এলাকায় বসবাস করছেন।

ভুক্তভোগী আলমগীর হোসেন (৩০) নীলফামারী জেলার ডিমলা থানাধীন ছামিনুর ওরফে আমিনুরের ছেলে।

বর্তমানে আশুলিয়ার ডেন্ডাবর কবরস্থান রোডে ভাড়া বাসায় বসবাস করেন। পেশায় রেন্ট এ কার চালক।

মামলার সূত্রে জানা যায়, ১৫ সেপ্টেম্বর বিকালে ভুক্তভোগীর ভাড়া বাসায় একটি প্রাইভটে কার নিয়ে উপস্থিত হয় আটককৃতরা। তারা ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ভুক্তভোগীকে মারধর করে গাড়িতে তুলে নিয়ে যেতে চাইলে পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ হয়।

এসময় স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ পরিচয় দেয়া চারজনকে আটক করে থানায় খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

ভুক্তভোগী আলমগীর হোসেন জানান, অভিযুক্তরা কেউ-ই তার পূর্বপরিচিত নয়। তার ধারণা, পুলিশ পরিচয়ে তাকে তুলে নিয়ে মুক্তিপণ দাবি করতে চেয়েছিল আসামিরা।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও আশুলিয়া থানার পুলিশ উপ-পরিদর্শক শরীফ আহমেদ জানান, ভুক্তভোগীর বাসা গিয়ে নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয়।

তবে কোনো পরিচয়পত্র দেখাতে পারেনি ভুক্তভোগী পরিবারকে।

তারা বিষয়টি স্থানীয়দের জানালে, তারা আটক করে পুলিশের খবর দেয়। এর ভেতরে অন্য কোনো ঘটনা আছে কিনা? সবগুলো বিষয় মাথা রেখে তদন্ত করা হচ্ছে।