চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে রাতের আঁধারে কৃষি জমি থেকে অবৈধভাবে ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কাটার দায়ে মফিজুল হক ও নাঈম ইসলাম নামে দুই ব্যক্তিকে কারাদন্ড-জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমান আদালত। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ মোশারফ হোসাইন উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের ধরন্তি বিলে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে কারাদন্ড ও জরিমানা করেন।
এদের মধ্যে সরাইল উপজেলার আঁখিতারা গ্রামের মফিজুল হককে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার চর-চারতলা গ্রামের নাঈম ইসলামকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্র জানায়, সম্প্রতি কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় সরকারি ও মালিকানাধীন কৃষি জমিতে ভেকু মেশিন লাগিয়ে গভীর গর্ত করে মাটি কেটে অন্যত্র বিক্রি করে আসছে।
স্থানীয়রা তাদেরকে বাঁধা দিলেও প্রভাবশালীরা তাদের বাঁধা উপেক্ষা করেন। খবর পেয়ে সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ মোশারফ হোসাইন উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের ধরন্তি বিলে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে কারাদন্ড ও জরিমানা করেন। এ সময় মাটি ভর্তি একটি ট্রাক জব্দ করা হয়।
অভিযান পরিচালনাকারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ মোশারফ হোসাইন বলেন, রাতে কালিকচ্ছ ইউনিয়নের ধরন্তি বিলে কৃষি জমি থেকে ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কাটার দায়ে অভিযান পরিচালনা করে দুই জনকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ১জনকে ২ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও অপরজনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযান কালে সেখান থেকে একটি ট্রাকও জব্দ করা হয়। এ সময় সরাইল থানা পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
চলাপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় উদীচী সরাইল উপজেলা শাখার আয়োজনে গোল টেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে রাজনীতিবিদ, শিল্পী, সাহিত্যিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষক, সাংবাদিক, লেখক, গবেষক ও কলামিস্টরা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা হয়েছে শিল্প সাহিত্য সংস্কৃতি ইভটিজিং মাদক ও বাল্যবিয়েসহ বিভিন্ন গুরূত্বপূর্ণ বিষয়ে। গতকাল শনিবার সকালে স্থানীয় পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে সংগঠনের সম্পাদক মো. সুমন পারভেজের সঞ্চালনায় সভাপতি মো. মোজাম্মেল পাঠানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সরাইল প্রেস ক্লাবের আজীবন সদস্য এডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা।
বক্তব্য রাখেন সরাইল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মৃধা আহমাদুল কামাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. আব্দুর রাশেদ, বাংলাদেশ আইন সমিতির সাবেক সভাপতি ও প্রেস ক্লাবের আজীবন সদস্য এড. কামরুজ্জামান আনসারী, শহীদ বুদ্ধিজীবীর সন্তান প্রেস ক্লাবের আজীবন সদস্য অ্যাড. সৈয়দ তানবির হোসেন কাউসার, উদীচী জেলা শাখার সভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম স্বপন, সম্পাদক মো. ফেরদৌস রহমান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, সরাইল প্রেস ক্লাবের সম্পাদক ও মহিলা কলেজের প্রভাষক মোহাম্মদ মাহবুব খান, সমাজসেবক ও কলামিস্ট মো. ফজলুল হক মৃধা, অরুয়াইল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আব্দুল হাকিম, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সরাইল শাখার সভাপতি দেবদাস সিংহ রায় ও উদীচীর সদস্য শিক্ষক দেওয়ান রওশন আরা লাকী প্রমুখ।
বক্তারা দীর্ঘদিন পর সরাইলে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানের আয়োজক স্থানীয় উদীচীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনা লালনকারী সংগঠনের নাম উদীচী। তারা নানা ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে দেশ ও মানুষের জন্য সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ মৌলবাদের বিরূদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে। তারা বারবার জঙ্গিবাদের উগ্র হামলার শিকার হয়েছে। রক্তাক্ত শরীরেও কখনো মাথা নত করে পিছু হটেনি উদীচী।
উদীচীর বৈঠক চলাকালে রঞ্জীত কুমার দেবনাথ ও আলমাসের নেতৃত্বে ত্রিতালের সকল শিক্ষার্থী শিল্পীরা আঞ্চলিক আর দেশাত্ববোধক গান গেয়ে অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে রেখেছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে উপনির্বাচনে আইনি প্রক্রিয়ায় মনোনয়ন পত্র বাতিল হওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ ইব্রাহিম সমর্থন জানিয়েছেন জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী এডভোকেট আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে। আজ ১৫ অক্টোবর রবিবার বিকালে সরাইল প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে তিনি এ সমর্থন ব্যক্ত করেন।
সরাইল প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ আইয়ুব খানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মাহবুব খান বাবুলের সঞ্চালনায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী মোঃ ইব্রাহিম। বক্তব্যে তিনি বলেন, সব নিয়ম কানুন মেনে উপনির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে গত ১১ অক্টোবর মনোনয়ন পত্র দাখিলের শেষ দিনে সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর কার্যালয়ে জমা দেন। পরদিন জেলা রিটার্নিং অফিসার এর কার্যালয়ে মনোনয়ন পত্র যাচাই-বাছাই শেষে ভূয়া স্বাক্ষর ও মৃত ব্যক্তির স্বাক্ষর দেওয়ার অভিযোগে তার মনোনয়ন পত্র বাতিল করা হয়।
আইনগত প্রক্রিয়ায় তার প্রার্থীতা বাতিল হওয়ার কথা স্বীকার করে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এডভোকেট আব্দুল হামিদ খান ভাসানীকে সমর্থন দিয়ে বলেন, আমার দাদা জাতীয় পার্টি করতেন। এর ধারাবাহিকতায় আমার বাবাও জাতীয়পার্টি করে গেছেন।
তিনি আরো বলেন, জাতীয় পার্টিতে আমার পদ পদবী নেই। তাই আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলাম। আগামীতে জাতীয় পার্টির পদ-পদবী নেওয়ার চেষ্টা করে পরবর্তীতে জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন চাইব।
এ সময় জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী এডভোজেট আব্দুক হামিদ খান ভাসানীসহ প্রেসক্লাবের অন্যান্য সংবাদকর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) সংসদীয় আসনে উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞা ৬ বার এমপি ছিলেন। এছাড়াও একবার প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। গত ৩০ সেপ্টেম্বর তার মৃত্যুতে মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) আসনটি শূন্য ঘোষণা করে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। পাশাপাশি উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। মনোনয়ন পত্র দাখিলের শেষ দিনে মোট ৬ জন প্রার্থী মনোনয়ন পত্র দাখিল করেন। এদের মধ্যে যাছাই বাছাইয়ে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু, স্বতন্ত্র পদে সাবেক দুইবারের এমপি এডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা, জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী এডভোকেট আব্দুল হামিদ ভাসানী, এনপিপি’র রাজ্জাক হোসেন ও জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম এই ৫ জনের প্রার্থীতা বৈধ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ ইব্রাহিম মিয়া এর প্রার্থীতা অবৈধ বলে ঘোষনা করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা। তফসিল অনুযায়ী আগামী ৫ নভেম্বর এ আসনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে ভোটের মাঠে নেমেছেন ধানের শীষ প্রতীকের সাবেক দুই সংসদ সদস্যের দুই সন্তান। তাঁরা হলেন বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের অন্যতম শীর্ষ নেতা প্রয়াত মুফতি ফজলুল হক আমিনীর ছেলে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা মো. আবুল হাসানাত আমিনী ও বিএনপির দলছুট সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার ছেলে তৃণমূল বিএনপির মাইনুল হাসান।
মাইনুল হাসান গত বৃহস্পতিবার সরাইলে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তরে মনোনয়নপত্র জমা দেন। এ সময় সহস্রাধিক অনুসারী-সমর্থক মোটর শোভাযাত্রাসহ উপজেলা সদরে প্রবেশ করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সরাইল সদর ইউপির চেয়ারম্যান ও উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল জব্বার, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক রিফাত বিন জিয়া। আবুল হাসানাতের পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন উপজেলা সদরের দুই বাসিন্দা; যারা আবুল হাসানাতে প্রার্থিতার প্রস্তাবকারী ও সমর্থনকারী হয়েছেন। ধানের শীষের সাবেক দুই সংসদ সদস্যের দুই পুত্র বর্তমানে নিজ দলীয় প্রতীকেই নির্বাচন করতে চান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন শাহজাহান আলম। এখানে জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন দলের ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে মোট ১৫ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
আবুল হাসানাত আমিনী ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের আমিনপুরের বাসিন্দা। পরিবার নিয়ে থাকেন ঢাকার লালবাগে। তিনি আগে ভোটার ছিলেন আমিনপুরের। তবে ২০১৫ সালে জাতীয় পরিচয়পত্রের ঠিকানা পরিবর্তন করে সরাইল উপজেলা সদরের হালুয়াপাড়ার বাসিন্দা হয়েছেন। তবে এখানে তাঁকে দেখা যায় না বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা।
সদ্য প্রয়াত উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া সরাইল উপজেলার প্রত্যন্ত হাওরবেষ্টিত পাকশিমুল ইউনিয়নের পরমানন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি দলত্যাগের আগপর্যন্ত বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ছিলেন। ছয়বারের মধ্যে চারবার ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটি চারদলীয় জোটের অন্যতম শীর্ষ নেতা মুফতি ফজলুল হক আমিনীকে ছেড়ে দেন আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। পরে সাত্তার টেকনোক্র্যাট প্রতিমন্ত্রী হন।
অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুফতি ফজলুল হক আমিনী ৪৩ হাজার ২৬১ ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হালিমকে পরাজিত করে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এর আগে তিনি একাধিকবার এ আসন থেকে বটগাছ এবং ঘড়ি প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছেন। ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে তিনি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক জাপার জিয়াউল হক মৃধার লাঙ্গল প্রতীকের কাছে ৪৯ হাজার ৩৯৯ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন।
সর্বশেষ ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া বিএনপির দলীয় প্রতীক নিয়ে জয়ী হন। গত ১১ ডিসেম্বর আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া বিএনপির দলীয় সিদ্ধান্তে জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর গত ১ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রত্যক্ষ সমর্থন নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হন। গত ৩০ সেপ্টেম্বর তাঁর মৃত্যুর পর ৫ নভেম্বর আবারও উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শাহজাহান আলম সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধাকে ২৪ হাজার ৪৬৪ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) উপজেলায় ইসলামী ঐক্যজোটের অবস্থান এখন খুব বেশি শক্তিশালী নয়। এলাকার কওমি মাদ্রাসাপন্থী লোকজন একসময় মুফতি ফজলুল হক আমিনীর অনুসারী ছিলেন। তাঁরাও এখন দুটি ধারায় বিভক্ত। বড় অংশটি বর্তমান নির্বাচন বিরোধী। এ কারণে এখানে ভোটার টানতে হাসানাত আমিনীকে বেগ পেতে হবে।
ইসলামী ঐক্যজোটের সরাইল উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবদুর রাকিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ছাড় না দিলে এখানে আমাদের পক্ষে জয়ী হওয়া সম্ভব নয়। তাঁরা আমাদের তুলে নেবেন (জয়ী করবে) বলেছেন।’ তিনি বলেন, সরাইল উপজেলায় ছোট-বড় সাড়ে তিন শতাধিক কওমি মাদ্রাসা আছে। তিনি দাবি করেন, অধিকাংশ মাদ্রাসার লোকজন তাঁদের পক্ষে আছেন।
তবে ইসলামী ঐক্যজোটের পুরোনো কমিটির একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এখানে কওমি মাদ্রাসাপন্থীদের ৯০ শতাংশ এ নির্বাচনের বিরোধী। তাই এ নির্বাচনে ইসলামী কোনো দলই ভোট টানতে পারবে না।
বিএনপি নেতা-কর্মী ও সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসন একসময় ধানের শীষের অন্যতম ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল। যার কারণে ছয়বার সংসদ সদস্য হন বিএনপি নেতা উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। তাঁর দল ত্যাগের পর ধানের শীষের সমর্থকেরা সাত্তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। তবে উপজেলার প্রত্যন্ত পাকশিমুল ও অরুয়াইল ইউনিয়নে এখনো সাত্তার ভক্তের সংখ্যা কম নয়। তাঁরা এখন মাইনুলের অনুসারী। এ কারণে এ দুটি ইউনিয়নে শক্ত ঘাঁটি হতে পারে মাইনুল হাসানের। আবার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের উপজেলা পর্যায়ের সাবেক দু-একজন নেতা-কর্মীকে মাইনুলের পক্ষে দেখা যায়।
মাইনুল হাসান বলেন, ‘আমি তৃণমূল বিএনপির প্রাথমিক সদস্য। আমাদের দলের জেলা বা উপজেলা কমিটি নেই। তবে আমার আব্বু এখানে ছয়বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন। তাঁর অনুসারীরা আমার পক্ষে কাজ করছেন। এ ছাড়া আমার এলাকার দু-তিনটি ইউনিয়ন আছে, যেখানে আমি একচেটিয়া ভোট পাব।’ তিনি দাবি করেন, বিএনপির অনেক নেতা-কর্মী প্রকাশ্যে তাঁর পক্ষে কাজ করছেন। বিএনপির প্রকৃত কর্মীরা বলছেন, তাঁরা উকিল সাত্তারের পরিবারে পাশে থাকবেন। তিনি আশা করছেন, এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে।
সরাইল উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লস্কর বলেন, ‘আমাদের কোনো নেতা-কর্মী এ নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যে নেই। এমনকি আমাদের কোনো ভোটারও ভোট দিতে যাবে না। যাঁরা এখন তৃণমূলে যাচ্ছেন, তাঁরা বহিষ্কৃত।’
চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইল উপজেলার শাহবাজপুরে পানিতে ডুবে দুই ভাইয়ের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ ১৩ অক্টোবর রোববার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের ধীতপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকাল ১২টার দিকে ধীতপুর গ্রামের ৪নং ওয়ার্ডের আক্কেল আলীর শিশু পুত্র ইনসাফ আলী (০৪) ও তার আপন ছোট ভাই আশরাফ আলীর শিশু পুত্র সাড়ে তিন বছরের আদিল নামক এই দুই শিশু বাড়ির পাশে খেলা করছিল। খেলার কোন এসময় পরিবারের সদস্যদের অজান্তে শিশুরা বাড়ির নিকট পুকুরের পানিতে তলিয়ে যায়। পরিবারের লোকজন তাদের দেখতে না পেয়ে আশ পাশ ও প্রতিবেশীদের বাড়িতে খোঁজাখুজি শুরু করে। পরে দুপুর ১টার দিকে বাড়ির পাশের পুকুরে তাদের মৃত দেহ ভেসে উঠে।
শাহবাজপুর ১০ নং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খাইরুল হুদা চৌধুরী বাদল পানিতে ডুবে শিশুদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
মানুষের জান মাল ও ইজ্জতের নিরাপত্তা দেয়াই পুলিশের কাজ। জনগণের সাথে পুলিশের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করার লক্ষেই কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল। পুলিশি সেবা জনগণের দোর গোড়ায় পৌঁছে দিতে আপডেট ব্যবস্থা হচ্ছে বিট পুলিশিং। তুচ্ছ ঘটনায় এই এলাকায় আর খুনের ঘটনা দেখতে চাই না। দয়া করে কেউ লাঠি বল্লম টেঁটা তীঁর, শল, ধনুক এই গুলো সংরক্ষণ করবেন না। কারণ রাগ বা উত্তেজিত হলে আপনারা এই অস্ত্র গুলো নিজের স্বজনদের উপর ব্যবহার করেন। আজকে আমার এই আহবানের পর কারো ঘরে দেশীয় অস্ত্র পাওয়া গেলেই আপনার বা আপনাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিবে পুলিশ। আপনার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলাও হতে পারে। প্রতিবেশী বা গ্রামের কারো সাথে বিরোধ হলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বা জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতা নিয়ে নিস্পত্তি করবেন। সম্ভব না হলে পুলিশের সহায়তা নিবেন। পুলিশ আপনাকে সহযোগিতা করতে সবসময় প্রস্তুত। সাবধান কেউ দাঙ্গায় জড়াবেন না। মাদক প্রতিরোধে পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করুন। আপনাদের যেকোন প্রয়োজনে পুলিশ সবসময় আপনাদের পাশে ছিল এবং থাকবে।
আজ ৩১ জানুয়ারি বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের কালিকচ্ছ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার চত্বরে সরাইল থানার আয়োজনে ‘ বিট পুলিশিং বাড়ি বাড়ি, নিরাপদ সমাজ গড়ি’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত বিট পুলিশিং সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোল্লেখিত কথা বলেছেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পিপিএম) মো. ইকবাল হোছাইন।
সরাইল থানার দ্বিতীয় কর্মকর্তা মো. জয়নাল উদ্দিনের সঞ্চালনায় ও অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ এমরানুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভায় বক্তব্য রাখেন- সহকারী পুলিশ সুপার (সরাইল সার্কেল) মো. রকিবুল ইসলাম, সরাইল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মৃধা আহমাদুল কামাল, কালিকচ্ছ ইউপি চেয়ারম্যান মো. ছায়েদ হোসেন, নোয়াগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান মো. মনসুর আহমেদ, সরাইল মহিলা কলেজের প্রভাষক ও প্রেসক্লাবের সাবেক সম্পাদক মোহাম্মদ মাহবুব খান, সাবেক দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ মাসুদ, ইউপি আ’লীগের সভাপতি মো. মুজিবুর রহমান, সম্পাদক মো. ইসমাঈল খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নান্নু মিয়া, আ’লীগ নেতা আবু শামীম মো. ছানা, আলী মিয়া ও আবদুর রহিম প্রমুখ।
বক্তারা মাদক, জুয়া ও দাঙ্গা বিষয়ে স্থানীয় বেশ কিছু সমস্যা তুলে ধরেন। মাদক, ডাকাতি ও দাঙ্গাসহ সকল প্রকার অপরাধমূলক কাজ প্রতিরোধে পুলিশের সাথে নিজেরাও দায়িত্ব পালনের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। সেই সাথে পুলিশকে সর্ব সময় তথ্য দিয়ে সহায়তার জন্যও আহবান জানিয়েছেন।