চলারপথে রিপোর্ট :
সরাইলে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন আইন লঙ্ঘনের দায়ে অবৈধ ইটভাটার এক মালিককে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় ইট ভাটার আগুন নিভিয়ে দেওয়া হয়।
১৮ জানুয়ারি শনিবার দুপুরে সরাইল উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নে অবস্থিত ‘ভিআইবি ব্রিকস’ নামে অবৈধ ইটভাটায় এ অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসাইন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কার্যালয়ের পরিদর্শক রাকিবুল হাসান, সরাইল ফায়ার সার্ভিস, থানা পুলিশ ও আনসার সদস্যরা। অভিযুক্ত ইটভাটার মালিক হলেন উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের মো. আবুল হোসেনের ছেলে আব্দুর রহিম।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোশারফ হোসাইন গণমাধ্যমকে জানান, অভিযানে দেখা গেছে ভিআইবি ব্রিকসের কর্তৃপক্ষ পরিবেশগত ছাড়পত্র এবং লাইসেন্স দেখাতে পারেনি। এ কারণে পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩-এর ৪ ধারার লঙ্ঘনের দায়ে ১৪ ধারায় এই মালিককে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।তিনি আরো বলেন, অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালিত হয়েছে।
আজ ৭ মার্চ বৃহস্পতিবার সরাইল উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবা উল আলমের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পাবর্ত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মো. মঈন উদ্দিন মঈন এম.পি।
সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা মো. গোলাম মোস্তফার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন- মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. ইসমত আলী, সরাইল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিক উদ্দিন ঠাকুর, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী রোকেয়া বেগম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মাহফুজ আলী, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো. আমিন খান ও উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. শরীফ উদ্দিন।
বক্তারা বলেন, ৭১ এ ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসিক ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়ে জীবনের মায়া ছেড়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। আর ৫৩ বছর এখন রাজাকারের উত্তরসূরি ও তাদের স্বজনদের দ্বারা বিনাকারণে অন্যায় ভাবে হেনস্থা হচ্ছি। মুক্তিযোদ্ধা না হয়ে রাজাকার হলে কোটি কোটি রোজগার করতে পারতাম। আওয়ামী লীগের বড় নেতা হতে পারতাম। কারণ এখন দেখছি সরাইলে মুক্তিযোদ্ধার চেয়ে রাজাকারের উত্তরসূরিদের কদর ও সম্মান বেশী। এমন একটি গুরূত্বপূর্ণ দিবসের আলোচনা সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতারা অনুপস্থিত। তাড়াহুড়া করে ফুল দিয়ে পালিয়ে দ্রুত চলে যাওয়ার মতো নেতাদের দলে কোন প্রয়োজন নেই। সরাইলে আওয়ামী লীগের নেতারা নিজেদের স্বার্থে দল করেন। দলীয় জাতীয় অনুষ্ঠানের কোন গুরুত্ব উনাদের কাছে নেই। বক্তারা বলেন, ভাল না লাগলে দল ছেড়ে দিন। ষড়যন্ত্র আর কায়দা কানুন করে আওয়ামী লীগ করলে তৃণমূলে আপনাদের স্থান হবে না।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইলে মায়ের সঙ্গে অভিমান করে ট্যাবলেট খেয়ে পুষ্পিতা আক্তার (১৫) নামে এক মাদরাসা শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। গতকাল শুক্রবার রাত ১০টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পুষ্পিতা আক্তার মারা যান। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে রাখা হয়েছে।
পুষ্পিতা আক্তার সরাইল উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের পরমানন্দপুর গ্রামের মধ্যপাড়া এলাকার কাতার প্রবাসী কাঞ্চন মিয়ার মেয়ে। সে পদ্মফুল মহিলা মাদরাসার ৭ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী ছিলেন।
নিহতের চাচা আলফাজ উদ্দিন জানান, গত কয়েকদিন যাবত মাদ্রাসায় যাচ্ছিলো না পুষ্পিতা। তা নিয়ে মা-মেয়ের মধ্যে রাগ-অভিমান হয়। গত বৃহষ্পতিবার পুষ্পিতার মা আকলিমা বেগম মাদ্রাসায় যেতে বললে পুষ্পিতা যায়নি। তারপর পুষ্পিতা মায়ের সঙ্গে অভিমান করে কেঁরির ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে তাকে প্রথমে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরবর্তীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ঘাটুরা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পুষ্পিতা মারা যায়।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম জানান, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী মারা গেছে। মায়ের সঙ্গে অভিমান করে আত্মহত্যা করেছে। ময়নাতদন্তের পর নিহতের লাশ পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কৃতি সন্তান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর প্রয়াত মু. মুজিবুর রহমান স্মরণে আজ ১১ মার্চ শনিবার সকালে সরাইলে নাগরিক শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিকেলে উপজেলার অরুয়াইল বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে এলাকাবাসীর উদ্যোগে আয়োজিত নাগরিক শোক সভায় অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ রেজাউল করিম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে ও শিক্ষক শেখ সাদীর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি’র প্রোভিসি প্রকৌশলী মোঃ খলিলুর রহমান, নবীনগর সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোঃ নজির আহমেদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ ড. মো. ইব্রাহীম, আশা’র অপরেটিং অফিসার মোঃ এনামুল হক, বাংলাদেশ আইন সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান আনসারী, ঢাকাস্থ সরাইল সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মোঃ শাহজাহান, সরাইল প্রেসক্লাবের সম্পাদক মোহাম্মদ মাহবুব খান, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. সামছুল আলম, ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
নাগরিক শোক সভায় বক্তারা বলেন, মরহুম মু. মুজিবুর রহমান সারাটা জীবন মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন। তিনি সরাইল উপজেলার অরুয়াইল গ্রামের বাসিন্দা হলেও তিনি ছিলেন গোটা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গৌরব।
বক্তারা মু. মুজিবুর রহমানের স্মৃতিকে অম্লান করে রাখার জন্য তার নামে সরাইলে একটি স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণ, একটি স্মরণিকা প্রকাশ, তার পরিবারের সম্মতিক্রমে ‘মুজিবুর রহমান’ নামে একটি ফাউন্ডেশন গঠন ও তার নামে একটি স্মৃতি পরিষদ গঠন করার দাবি জানান।
চলারপথে রিপোর্ট :
বিভিন্ন ব্যক্তি, দালাল ও প্রতারকচক্রের সাথে অবৈধ আর্থিক লেনদেন থেকে বিরত থাকার জন্য সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি জারী করেছেন সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবা উল আলম ভূঁইয়া।
আজ ১৯ ফেব্রুয়ারি সোমবার বিকেল ২টার দিকে নিজের (ইউএনও সরাইল) ফেসবুক ভেরিফাইড আইডি থেকে তিনি এ বিজ্ঞাপ্তি প্রচার করেন। আর বিজ্ঞপ্তিটি মূহুর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে পড়ে। সাধারণ মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই ইউএনও’কে বাহবা জানাতে থাকেন। সর্বত্র আলোচনা হতে থাকে দালাল ও প্রতারকচক্রের নেপথ্যের নানা কাহিনী।
অনুসন্ধান, বিজ্ঞপ্তি ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, সরাইল উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরকে কেন্দ্র করে ভিন্ন পরিচয় ও লেবাচে রয়েছে দালাল/প্রতারকচক্র। এদের কাজই হচ্ছে ইউনিয়ন ও গ্রাম থেকে আসা লোকজনের বৈধ অবৈধ সকল কাজেই দালালি করে টুপাইস কামানো। দালাল চক্রের মধ্যে রয়েছে রাজনৈতিক দলের কথিত নেতা, কথিত সংবাদ কর্মী, সুশিল সমাজের কথিত সদস্য, অমুক ভাই তমুক আপার লোক পরিচয় দিয়ে নানা কৌশলে অর্থ হাতিয়ে নেয়া। এই গ্রুপের সদস্যদের নজর থাকে ইউএনও’র দপ্তর, থানা, হাসপাতাল, সাবরেজিষ্ট্রি অফিস, ভূমি অফিসসহ গুরূত্বপূর্ণ অফিস সমূহের দিকে। ইউএনও’র সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি প্রচারের পরই উপজেলা সদর ও ইউনিয়ন পর্যায়ে লোকজন এমন সব আলোচনায় মেতে ওঠেছেন। অনেকে বলছেন, বর্তমান ইউএনও স্যার সৎ মানুষ। উনি যোগদানের পরই ঘুষখোর লোকজনের মন খারাপ। তিনি সুযোগ পেলেই ঠিকাদারদের ডেভেলপমেন্ট কাজ গুলো সরজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করছেন। কাজের মান ভাল না হলে কঠোর নির্দেশনা দিয়ে আসছেন। স্বল্প সময়ে তিনি হয়ত বুঝে গেছেন উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের নাম ব্যবহার করে দালাল/প্রতারকচক্র অবৈধভাবে অর্থ কামাই করছে। তাই তিনি নিজের ফেসবুক আইডি থেকে এ বিষয়ে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন। এই বিজ্ঞপ্তিটি ফেসবুকে আসার সাথে সাথে কমেন্সে সাধারণ মানুষ ইউএনওকে ধন্যবাদ ও বাহবা জানাচ্ছেন। সেই সাথে ইউএনও’র প্রশংসা করে নানা ধরণের কমেন্স করছেন। সরাইল প্রেসক্লাবের সাবেক সম্পাদক তারিকুল ইসলাম কমেন্সে লিখেছেন-‘এবার সরাইলের সাধারণ মানুষের শান্তির বার্তা দিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয়। আশা করি বাস্তবায়নও হবে। নির্বাহী অফিসের নাম দিয়ে প্রতারনার মানে কি!!! উপজেলার কর্ণধার এ রকম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ প্রশংসার দাবিদার, যদি চিহ্নিতদের আইনের আওতায় আনেন। আমার সাংবাদিকতা জীবনে মনে হয় প্রথম দেখলাম এমন বিজ্ঞপ্তি। আমরা যাব কোথায়!!!…..’। ত্রিতাল সংগীত নিকেতনের অধ্যক্ষ সঞ্জিব কুমার দেবনাথ কমেন্সে লিখেছেন-‘বিষয়টি পুরোপুরি জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট এবং প্রশংসনীয়’। সরাইল মহিলা কলেজের প্রভাষক রূহুল আমিন রূবেল লিখেছেন, ‘যুযোপযোগী সিদ্ধান্ত। ধন্যবাদ উপজেলা প্রশাসনকে।’ সমাজকর্মী রওশন আলী লিখেছেন,‘নির্বাহী প্রশাসনের নাম ব্যবহার করে দালালী করা, প্রতারণা করা, এ তো বড়ো দু:সাহসিক কাজ! আশা করি সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয় এসব দালাল আর প্রতারক চক্রকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে পারলে সাধারণ সেবা প্রত্যাশী মানুষের অনেক উপকার হবে।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবা উল আলম ভূঁইয়া নিজের ফেসবুক আইডি থেকে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি পোষ্ট করার কথা স্বীকার করে বলেন, কারো বিরূদ্ধে কোন অভিযোগ নেই বা পাইনি। আমার ধারণা কোন ব্যক্তি বা চক্র নির্বাহী কর্মকর্তা বা দপ্তরের নাম ভাঙ্গিয়ে পাইয়ে দিবে, নিয়ে দিবে, করে দিবে বলে সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিতে পারে। এই ধরণের পাতানো ফাঁদে কেউ যেন পা না দেয় সচেতন করার জন্যই এই পোষ্ট দিয়েছি।