অনলাইন ডেস্ক :
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু চৌধুরী বলেন, আজকে অনেকেই স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পতনের আন্দোলনের ক্রেডিট নিতে চায়। অথচ তারা আন্দোলন শুরুর অনেক পরে এসেছে। তারা জানে না বিদেশে কিভাবে আন্দোলন হয়েছে। লন্ডন, ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্যে কিভাবে আন্দোলন হয়েছে তারা জানে না। ই আন্দোলন ড্রাইভ করেছে বিএনপি। এই আন্দোলনের মূল চালিকাশক্তি ছিলেন তারেক রহমান ও বেগম খালেদা জিয়া।
আজ ২২ জানুয়ারি বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ইতিহাস সংরক্ষণ না করলে তা ভবিষ্যৎ ইতিহাসে জায়গা পাবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, প্রবাসীদের এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ বই বা ডকুমেন্ট করে জাতির সামনে তুলে ধরতে হবে। এই প্রক্রিয়ায় বিএনপি সর্বোচ্চ সহায়তা করবে।
আলোচনা সভায় প্রবাসীরা জাতীয় সংসদ ও মন্ত্রী সভায় তাদের প্রতিনিধিত্বের দাবি তুলে ধরেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ সম্রাট, গিয়াস আহমেদ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুল লতিফ জুলি, সুইডেন বিএনপির সাবেক সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ, ফ্লোরিডা বিএনপির সভাপতি এমরান হক চাকলাদার, আব্দুল খান হারুন, অস্ট্রেলিয়া স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতিব মুসলেমউদ্দীন হাওলাদার আরিফ প্রমুখ।
ঢাকা।।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ ছাত্রলীগের নতুন কমিটি অনুমোদন করেছেন।কমিটিতে সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালিদ আসিফ ইনান দায়িত্ব পেয়েছেন। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর অর্পিত ক্ষমতা বলে আগামী দুই বছরের জন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয়,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের কমিটি অনুমোদন দিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার রাতে গণভবন থেকে বের হয়ে সভাপতির পক্ষে কমিটি ঘোষণা করেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাজহারুল করিম, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত দায়িত্ব পেয়েছেন। অপরদিকে ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার সভাপতি রিয়াজ মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক সাগর আহমেদ এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণে সভাপতি রাজীবুল ইসলাম ও সম্পাদক সজল কুণ্ডু দায়িত্ব পেয়েছেন।আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বহুল প্রতীক্ষিত ৩০তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে ৬ ডিসেম্বর। এই সম্মেলন ঘিরে নতুন নেতৃত্বের অপেক্ষায় ছিল ছাত্রলীগ। তবে ছাত্রলীগের সম্মেলনে প্রথম অধিবেশন শেষে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক জানিয়ে দেন ছাত্রলীগের নতুন কমিটি আজই ঘোষণা করা হচ্ছে না। ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের আগে শেখ হাসিনা কমিটির চূড়ান্ত অনুমোদন দেবেন বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। ২০১৭ সালে ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলনের পর মো. রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে সভাপতি ও গোলাম রাব্বানীকে সাধারণ সম্পাদক করে দুই বছর মেয়াদি ছাত্রলীগের কমিটি করা হয়। কিন্তু চাঁদাবাজিসহ আরও কয়েকটি অভিযোগের কারণে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে তাদের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ১ নম্বর সহ-সভাপতি আল নাহিয়ান জয় সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং ১ নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান। এর পর ২০২০ সালের জানুয়ারিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে এই দুই নেতাকে ভারমুক্ত করার প্রস্তাব দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সেই প্রস্তাবে শেখ হাসিনা সম্মতির ভিত্তিতে পূর্ণ দায়িত্বে পূর্ণ মেয়াদ পার করেন তারা।
চলারপথে রিপোর্ট :
পুলিশ সুপার পদমর্যাদার ২৪ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১১ জনকে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) পদে বদলি করা হয়। অন্যদের পুলিশের অন্যান্য বিভাগে পদায়ন করা হয়েছে। আজ ১৭ জুলাই সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এ বিষয়ে আলাদা দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
পুলিশ সুপার পদে বদলি: সিনিয়র সহকারী সচিব মাহাবুর রহমান শেখ সাক্ষরিত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী- ঢাকার বিশেষ শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার আজিম-উল-আহসানকে ঝিনাইদহ, ঢাকা পুলিশ অধিদপ্তরের এআইজি মনজুর রহমানকে মৌলভীবাজার, ঢাকা টুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার সৈকত শাহীনকে বান্দরবান, বান্দরবান পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলামকে নাটোর, নাটোর পুলিশ সুপার সাইফুর রহমানকে রাজশাহী, অপরাধ তদন্ত বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধরকে খাগড়াছড়ি, ঢাকা মেটোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার উত্তম প্রসাদ পাঠককে ঠাকুরগাঁও, ঢাকার বিশেষ শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার জি এম আব্দুল কালাম আজাদকে রাজবাড়ী, ঢাকা মেটোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার আবুল হাসনাত খানকে বাগেরহাট, ঢাকা মেটোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার তারেক বিন রশিদকে লক্ষ্মীপুর এবং শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামানকে জামালপুরে পুলিশ সুপার পদে বদলি করা হয়েছে।
অন্যান্য বিভাগে বদলি: একই কর্মকর্তার অপর প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে- বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার আশিকুর রহমানকে ঢাকার বিশেষ শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার, মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়াকে হাইওয়ে পুলিশের পুলিশ সুপার, রাজশাহী পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেনকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার, খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার নাইমুল হককে ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার, ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেনকে অপরাধ তদন্ত বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার, রাজবাড়ী পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামানকে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার, জামালপুর পুলিশ সুপার নাছির আহমেদকে সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি অফিসের পুলিশ সুপার, বাগেরহাটের পুলিশ কে এম আরিফুল হককে রাজশাহী মহানগরের উপপুলিশ কমিশনার, লক্ষ্মীপুর পুলিশ সুপার মাহফুজ্জামান আশরাফকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের পুলিশ সুপার, পিরোজপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলামকে ঢাকা বিশেষ শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার, পুলিশ অধিদপ্তর ঢাকার (টিআর) পুলিশ সুপার শামীমা আক্তারকে ঢাকা স্পেশাল সিকিউরিটি অ্যান্ড প্রটেকশনের পুলিশ সুপার, পুলিশ স্টাফ কলেজের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) সরকার ওমর ফারুককে রাজশাহী মহানগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার এবং পুলিশ অধিদপ্তর ঢাকার (টিআর) পুলিশ সুপার তাহিয়াত আহমেদ চৌধুরীকে সিলেট মহানগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার পদে বদলি করা হয়েছে।
জনস্বার্থে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
প্রসঙ্গত, এক মাস পেরোতেই আবার পুলিশের মাঠ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন পদে রদবদল হলো। আগের দিন রোববার ১৬ উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ও ৩৫ অতিরিক্ত ডিআইজির পদমর্যাদার কর্মকর্তা বদলি হয়েছেন। এর মধ্যে রাজশাহী, রংপুর ও বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজিসহ একই পদমর্যাদার ১৩ কর্মকর্তারও কর্মস্থল বদল করা হয়েছে। রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এ বিষয়ে আলাদা দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
এর আগে গত ১৩ জুন পুলিশের ডিআইজি পদমর্যাদার সাত কর্মকর্তা এবং পুলিশ সুপার (এসপি) পদমর্যাদার ২২ কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছিল। নির্বাচনের আগে পুলিশের মাঠ প্রশাসনে এই রদবদলকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ পদক্ষেপ বলে অনেকে মনে করছেন। পুলিশ সদরদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, এসপি পদে রদবদল হলে ২৫তম ও ২৭তম ব্যাচের কর্মকর্তারা অগ্রাধিকার পাবেন। এ ছাড়া ২৮ ব্যাচের একটি বড় অংশ দীর্ঘদিন ধরে পদোন্নতিপ্রত্যাশী।
এদিকে, পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের ৭২০ কর্মকর্তার পদোন্নতি চেয়েছে পুলিশ সদরদপ্তর। এরই মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়। প্রস্তাবটি পাওয়ার পর তা মূল্যায়নের জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শূন্য পদ না থাকলেও সুপারনিউমারারি বা সংখ্যাতিরিক্ত পদোন্নতি দিয়ে ইনসিটু (পদোন্নতির পরও আগের পদে দায়িত্ব পালন) করা যেতে পারে।
অনলাইন ডেস্ক :
আসন্ন রোজায় বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি মজুদদারি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি নতুন সরকারের নির্বাচনি ইশতেহার বাস্তবায়ন এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ‘দক্ষ ও স্মার্ট প্রশাসন’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
আজ ৩ মার্চ রবিবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সরকার প্রধানের এসব নির্দেশনা আসে।
বাজার নিয়ন্ত্রণে মাঠ প্রশাসনকে উদ্যোগী হওয়ার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের সব থেকে লক্ষ্য রাখতে হবে, আমাদের বাজার পরিস্থিতি কেমন। আর তাছাড়া সামনে রোজা আসছে, এই রমজান মাসে কিছু কিছু ব্যবসায়ী থাকে যারা মজুদদারি করে দাম বাড়িয়ে কিছু মুনাফা লুটতে চায়। সেই দিকে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে।
“কারণ এটা আশু করণীয় একটা কাজ আমাদের। কোথাও যেন ভোক্তাদের কোনো হয়রানি হতে না হয়, সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। আমাদের উৎপাদন বাড়াতে হবে। পরনির্ভরশীলতা আমাদের কমাতে হবে এবং এটা যে আমরা পারি, এটা আমরা অনেক ক্ষেত্রে প্রমাণ করেছি। কাজেই সেদিকে নজর রাখা দরকার।”
শেখ হাসিনা বলেন, “সরবরাহের ক্ষেত্রেও কখনো শোনা যায়, কখনও সেটা নিয়ে নানা সমস্যা সৃষ্টি হয়, একটা কৃত্রিম সমস্যার সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হয়। মজুদদারি করে পচিয়ে ফেলবে, কিন্তু বাজারে দেবে না। এরকম একটা অবস্থার সৃষ্টি হয়। সেই দিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি এবং কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।
“রমজান মাস সামনে রেখেই আমি বললাম, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য যেন সাধারণ মানুষের কাছে যথাযথভাবে পৌঁছাতে পারে। সেই ব্যবস্থার দিকে সকলকে নজর দিতে হবে।”
খাদ্যে ভেজাল বন্ধে নজর রাখার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “রোজা এলে এই সমস্যাগুলো বেশি দেখা যায়। খাদ্যে নানা রকম সমস্যা করে, এগুলোর ওপর নজর দিতে হবে।”
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার বিষয়ে দিক নির্দেশনা দিতে গিয়ে জেলা প্রশাসকদের সামনে ‘কিশোর গ্যাং’ নিয়েও কথা বলেন সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, “ইতোমধ্যে কয়েকটি সমস্যা আমরা দেখতে পাচ্ছি। কিশোর গ্যাং, যখন ছেলেমেয়েরা স্কুলে যাবে পড়াশোনা করবে, সেই সময়ে এই কিশের গ্যাং। যখন করোনাভাইরাসের অতিমারী সব থেকে বেশি, সে সময়ে এটা সামনে এসেছে। প্রত্যেকটা এলাকাভিত্তিক যে ছেলেমেয়েরা, যারা শিক্ষাগ্রহণ করবে? তারা কেন এই ধরনের গ্যাং হবে? তারা কেন এই ধরনের অসামাজিক কাজে বা ছিনতাই খুন ডাকাতিতে লিপ্ত হবে? সে সমস্ত বিষয় নজরদারি করা একান্তভাবে অপরিহার্য।
“আমাদের কমিশনারবৃন্দ এবং জেলা প্রশাসকবৃন্দ, একেবারে উপজেলা পর্যন্ত, ইউনিয়ন পর্যন্ত স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছেৃ সেখানে ছেলেমেয়েরা কী কী কাজ করছে, জঙ্গিবাদ, মাদক অথবা এই কিশোর গ্যাংয়ের মধ্যে যুক্ত হচ্ছে কি না, সেদিকে একটু নজরদারি বাড়াতে হবে। আমার মনে হয়, পরিবারকে একটু সচেতন করতে পারলে, এই জিনিসগুলো কমবে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “শুধু গ্রেপ্তার করে, ধরে লাভ নেই। কারণ গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠালে জেলেৃ অপরাধীদের সঙ্গে মিশে এরা আরও খারাপ হয়ে যায়। সে কারণে গোড়া থেকে আমাদের ধরতে হবে। পরিবার থেকেই শুরু করতে হবে। বিশেষ করে স্কুল কলেজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেই শুরু করতে হবে। ছেলেমেয়েরা যেন এই পথে যেতে না পারে।”
পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকা যেন কোনোভাবে অস্থির না হয়, সে দিকেও নজর রাখতে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের তাগিদ দেন সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, “আমরা পার্বত্য চট্রগ্রামে শান্তি চুক্তি করেছি। আমরা কিন্তু অন্য কোনো দেশের সাহায়তা নিইনি। কারণ তারা আমার দেশের নাগরিক। আমি ৮১ সালে দেশে ফিরে আসার পর থেকে এ ব্যপারে যথেষ্ট সচেতন ছিলাম। আমাদের দলের পক্ষ থেকে আমরা একটা বিশেষ কমিটি করে দিয়েছিলাম। যার মাধ্যমে ওই অঞ্চলে কী সমস্যা, কেন এই অবস্থার সৃষ্টি হলে, কী কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল ১৯৭৬ সালের পর থেকেৃ সেগুলো জেনে আমরা দীর্ঘ দিন কাজ করেছি।
“যারা বিক্ষুব্ধ ছিল, তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি এবং যখন ১৯৯৬ এ ক্ষমতায় এসেছি, তখন সংসদে কমিটি করেছি। পাশাপাশি আমি নিজেও এদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে আমরা একটা শান্তি চুক্তি করতে সক্ষম হয়েছি। শুধু শান্তি চুক্তি না, সেখানে যারা অস্ত্রধারী ছিল, ১৮০০ অস্ত্রধারী, প্রকাশ্যে আমার সামনে তারা অস্ত্র সারেন্ডার করেছে। পৃথিবীর বহু দেশে শান্তি চুক্তি হয়েছে, কিন্তু আমাদেরটা ছিল অনন্য ঘটনা।“
শেখ হাসিনা বলেন, “এ ধরনের ঘটনা কমই ঘটে যে অস্ত্র সারেন্ডার করে। পর্বত্য চট্টগ্রামে খুব উন্নয়নের কাজ চলছে। অর্থ সামাজিক উন্নয়ন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন সেগুলো আমরা করে যাচ্ছি। আমাদের এখানে বর্ডার লাইন ছিল না, সেখানে কোনো বর্ডার পোস্ট ছিলো না। আমরা নতুন করে সেখানে বর্ডার পোস্ট তৈরি করা শুরু করে দিয়েছি।
“পার্বত্য চট্টগ্রামে এখনও কিছু কিছু দুর্ঘটনা ঘটে। এই বিষয়েও সকলকে নজর দিতে হবে। সেখানে কোনো রকম যেন অশান্ত পরিবেশ অবার ফিরে না আসে। সেখানে শান্তি সৌহার্দ্যপূর্ণ অবস্থা যেন বিরাজমান হয়। এরা বিশেষ আইনে চলে, সেদিকে লক্ষ্য রেখেও তাদের সার্বিক বিবেচনায় দৃষ্টি দিতে হবে।”
সর্বজনীন পেনশন স্কিমে আসতে মানুষকে সচেতন করার জন্য ডিসিদের তাগিদ দেন সরকারপ্রধান। পাশাপাশি কৃষি উৎপাদন যেন বৃদ্ধি পায়, সে বিষয়ে নজর দিতে বলেন।
তিনি বলেন, “আমাদের এলাকাভিক্তিক কিছু উৎপাদিত পণ্য আছে। সেগুলোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে উৎপাদন বাড়ানো এবং কোয়ালিটিটা দেখা, সেই বিষয়ে নজর দেওয়া দরকার।”
প্রকল্প নেওয়ার ক্ষেত্রে মানুষের কতটুকু কাজে আসবে, সে বিষয়টি আগে বিবেচনায় নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘শুধু প্রকল্প প্রণয়ন এবং প্রকল্প বাস্তবায়নই নয়, সাধারণ মানুষ কতটুকু উপকৃত হবে? আর্থিকভাবে দেশ কতটুকু স্বচ্ছল হবে? সে অঞ্চলের মানুষের কতটুকু আর্থসামাজিক উন্নতি হবে? সেসব বিবেচনা করেই প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। শুধুমাত্র বড়সড় একটা টাকার অংক আর একটা প্রকল্প, সেই প্রকল্প কিন্তু আমি গ্রহণ করি না।”
গ্রামীণ অর্থনীতিকে যত বেশি শক্তিশালী করা যায়, গ্রামের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা যেন বাড়ানো যায়, সেদিকে দৃষ্টি দিতে জেলা প্রশাসকদের প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
শিশু-কিশোর ও যুবকদের খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করার তাগিদ দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, “একবার যখন জঙ্গিবাদ সন্ত্রাস শুরু হল, আমাদের দেশে একটামাত্র ঘটনাই ঘটেছিল, সেটা খুব তাড়াতাড়ি সমাধান করতে পেরেছি। কিন্তু অনেকগুলো মানুষকে আমরা বাঁচাতে পারিনি।”
এরপর যে ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত কমিটি করে অভিভাবকদের সচেতন করা শুরু হয়েছিল, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “পাশাপাশি যুব সমাজকে ব্যস্ত রাখার জন্য বা শিশু কিশোরদের ব্যস্ত রাখার জন্য ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার বিভিন্ন কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত রাখতে হবে।”
উন্নয়নশীল দেশের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আগ থেকে প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জাতির পিতা যেখানে স্বল্পোন্নত দেশ রেখে গিয়েছিলেন, সেখান থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা নিয়ে যাত্রা শুরু করব ২০২৬ সালে। এখন থেকে সেই প্রস্তুতিটা নিতে হবে।”
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্য শেষে ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। পরে বক্তব্য দেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, সিনিয়র সচিব ও সচিবরা, বিভাগীয় কমিশনাররা, জেলা প্রশাসকরা উপস্থিত ছিলেন সম্মেলনে।
সম্মেলনের বিভিন্ন কার্য-অধিবেশন হবে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে। সরকারের নীতি-নির্ধারক ও জেলা প্রশাসকদের মধ্যে সামনাসামনি মতবিনিময় এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য প্রতি বছর ডিসি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির দুই নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় বিএনপি। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কেন্দ্রীয় বিএনপির নয়াপল্টনের কার্যালয়ে কারণ দর্শানোর লিখিত জবাব দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
১৩ জানুয়ারি সোমবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে তাদেরকে কারণ দর্শানো হয়েছে।
বিএনপির দুই নেতা হলেন : জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক খোকন। তারা দু’জনই জেলা বিএনপির ৩২ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।
জানা গেছে, কমিটির নেতৃত্ব নিয়ে বিরোধের জেরে জেলা বিএনপি দুই ভাগে বিভক্ত। আগামী ১৮ জানুয়ারি জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন। রবিবার হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি ও জহিরুল হক খোকনের নেতৃত্বে জেলা বিএনপির একটি বড় অংশ সমাবেশ করে সম্মেলন প্রতিহতের ঘোষণা দেন।
কারণ দর্শানোর নোটিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার উজানভাটি রেস্টুরেন্টে জাতীয় নির্বাহী ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্ল্যাহ বুলু, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোস্তাক মিয়া, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল মান্নান, সদস্য সচিব সিরাজুল ইসলাম, সদস্য হাফিজুর রহমান মোল্লা ও জহিরুল হকের সমন্বয়ে একটি যৌথ এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে হাফিজুর রহমান মোল্লা ও জহিরুল হকের পক্ষ থেকে কিছু দাবি উত্থাপিত হয়। দাবিগুলো আলোচনার ভিত্তিতে যে সিদ্ধান্ত হয় সেটি বাস্তবায়নের আগে হাফিজুর রহমান মোল্লা ও জহিরুল হক সম্মেলন বিরোধী সভা-সমাবেশ করে যাচ্ছেন। যা সম্পূর্ণরূপে সংগঠন বিরোধী কার্যকলাপ। কেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তার যথাযথ কারণ জানাতে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে একটি লিখিত জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জহিরুল হক বলেন, আমরা সংগঠন ও সম্মেলন বিরোধী কোনো সমাবেশ করিনি। গতকাল রবিবার আমরা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতে ৩১ দফা দাবি বাস্তবায়নে সমাবেশ করেছি। সেটিই ব্যানারে লেখা ছিল। আমরা কোনো শর্ত ভঙ্গ করিনি বরং আমাদেরকে কারণ দর্শানো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে হচ্ছে।
অনলাইন ডেস্ক :
বঙ্গবন্ধুকন্যা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কারাবন্দী দিবস আজ। ১/১১-এর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বিভিন্ন মিথ্যা-বানোয়াট, হয়রানি ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই বঙ্গবন্ধু কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
ওই সময় শেখ হাসিনার মুক্তির দাবিতে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ২৫ লাখ গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে জমা দেয়। এসব দাবির প্রেক্ষিতে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার শেখ হাসিনাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। শেখ হাসিনার মুক্তির মধ্য দিয়ে এদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরায় ফিরে আসে। যুগপৎভাবে বিকাশ ঘটে গণতন্ত্র ও উন্নয়নের।
সেদিন ভোরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় দুই সহস্রাধিক সদস্য সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে শেখ হাসিনার ধানমন্ডিস্থ বাসভবন সুধা সদন ঘেরাও করে। সেই সময় শেখ হাসিনা ফজরের নামাজ আদায় করছিলেন। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে যৌথবাহিনীর সদস্যরা শেখ হাসিনাকে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করে সুধা সদন থেকে বের করে নিয়ে আসে এবং যৌথবাহিনীর সদস্যরা বন্দি অবস্থায় তাঁকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করে। তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নীলনকশা অনুযায়ী আদালতের কার্যক্রম শুরু হওয়ার নির্ধারিত সময়ের প্রায় দুই ঘণ্টা আগেই আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার জামিন আবেদন আইন বহির্ভূতভাবে না মঞ্জুর করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট।
শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে বাংলার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারকে অবরুদ্ধ করার অপপ্রয়াস চালায় তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার। শেখ হাসিনা আদালতের গেটে দাঁড়িয়ে প্রায় ৩৬ মিনিটের অগ্নিঝরা বক্তৃতার মাধ্যমে তৎকালীন সরকারের হীন-রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন।
গ্রেফতার পূর্ব মুহূর্তে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশবাসীর উদ্দেশ্যে একটি চিঠির মাধ্যমে দেশের জনগণ এবং আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদেরকে গণতন্ত্র রক্ষায় মনোবল না হারিয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার আহ্বান জানান।
আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠন ও গণতন্ত্রপ্রত্যাশী দেশবাসীর ক্রমাগত প্রতিরোধ আন্দোলন, বঙ্গবন্ধুকন্যার আপোষহীন ও দৃঢ় মনোভাব এবং দেশবাসীর অনড় দাবীর পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৮ সালের ১১ জুন দীর্ঘ ১১ মাস কারাভোগ ও নানামুখী ষড়যন্ত্রের পর তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার শেখ হাসিনাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।